মাসআলা নং--১০:
বারটি সময়ে নফল নামায পড়া নিষিদ্ধ তন্মধ্যে ৬, ১২ নম্বর ওয়াক্তে ফরয, ওয়াজিব, জানাযার নামায, সিজদায়ে তিলাওয়াত নিষিদ্ধ৷
★১: ফজর উদয় থেকে সূর্য উদয় পর্যন্ত মধ্যবর্তী সময়ে ফজরের দু'রাক'আত সুন্নাত ব্যতিত অন্য কোনো নফল নামায পড়া জায়িয নেই।
মাসআলা নং-১১: ফজর উদয়ের পূর্বে কোনো ব্যক্তি নফল নামায পড়ছিলো এক রাক'আত পড়তেই ফজর উদয় হল, তখন দ্বিতীয় রাক'আত পড়ে পূর্ণ করে নিবে। এই দু'রাক'আত ফজরের সুন্নাতের স্থলাভিষিক্ত হবে না, যদি চার রাক'আতের নিয়্যত করে থাকে এক রাক'আতের পর ফজর উদয় হল, তখন চার রাক'আত পূর্ণ করে নেবে, তখন পরের দুই রাক'আত ফজরের সুন্নাতের স্থলাভিষিক্ত হবে ।
→আল্লামা মোল্লা নিযামুদ্দীন বলখী, ফতোয়া ই হিন্দিয়া, কিতাবুস সালাত, ১/৫২ পৃ,
মাসআলা নং-১২: ফযরের নামাযের পর হতে সূর্য উদিত হওয়া পর্যন্ত যদি প্রচুর সময় বাকি থাকে যদিও ফযরের সুন্নাত ফরযের পূর্বে পড়েনি এখন পড়তে চাইলে জায়িয হবে না।
→আল্লামা মোল্লা নিযামুদ্দীন বলখী, ফতোয়া ই হিন্দিয়া, কিতাবুস সালাত, ১/৫২ পৃ,
মাসআলা নং-১৩: ফরযের পূর্বে ফযরের সুন্নাত আরম্ভ করার পর ভঙ্গ হয়ে গেলো, এখন ফরযের পর তা কাযা পড়তে চাইলে তাও জায়িয হবে না ।
→আল্লামা মোল্লা নিযামুদ্দীন বলখী, ফতোয়া ই হিন্দিয়া, কিতাবুস সালাত, ১/৫২ পৃ,
(২) নিজ মাযহাবের জামা'আতের একামত শুরু হলো, একামত হতে জামায়াত শেষ না হওয়া পর্যন্ত নফল, সুন্নাত পড়া মাকরূহে তাহরিমি। অবশ্য ফযরের নামায কায়িম হলো, ধারণা হচ্ছে সুন্নাত পড়ে নিয়ে তখনও জামায়াত পাওয়া যাবে, যদিও শেষ দিকে শরিক হয়। তখন জামায়াত থেকে একটু দূরে সরে সুন্নাত পড়ার পর জামা'আতে শরিক হবে, সুন্নাত পড়তে গিয়ে জামা'আত চলে যাওয়ার উপক্রম হলে তখন সুন্নাতের খেয়াল জামা'আত বর্জন করা নাজায়িয ও গুনাহ।
→আল্লামা মোল্লা নিযামুদ্দীন বলখী, ফতোয়া ই হিন্দিয়া, কিতাবুস সালাত, ১/৫৩ পৃ,
(৩) আসরের নামাযের পর হতে সূর্য নীল বর্ণ হওয়া পর্যন্ত নফল নামায নিষিদ্ধ, নফল নামায শুরু করার পর ভেঙে গেলে তা এ সময়ে কাযা পড়াও নিষিদ্ধ, যদি পড়ে তা যথেষ্ট হবে না কাযা দায়িত্ব থেকে রহিত হবে না।
→আল্লামা মোল্লা নিযামুদ্দীন বলখী, ফতোয়া ই হিন্দিয়া, কিতাবুস সালাত, ১/৫২ পৃ,
→আল্লামা হাসকাফি, দুররুল মুখতার, কিতাবুস সালাত, ২/৪৮ পৃ,
(৪) সূর্য অস্ত যাওয়ার পর থেকে মাগরিবের ফরয পর্যন্ত সর্ব প্রকার নফল নিষিদ্ধ ।
→আল্লামা মোল্লা নিযামুদ্দীন বলখী, ফতোয়া ই হিন্দিয়া, কিতাবুস সালাত, ১/৫২ পৃ,
→আল্লামা হাসকাফি, দুররুল মুখতার, কিতাবুস সালাত, ২/৪৬ পৃ,
তবে ইমাম ইবনুল হুমামের মতে কেবল ২ রাক'আত জায়িয।
→ইমাম ইবনুল হুমাম, ফতহুল কাদীর, কিতাবুস সালাত, বাবুল নাওয়াফেল, ১/৩৮৯ পৃ,
(৫) যে সময় ইমাম স্বীয় স্থান থেকে জুম'আর খোতবার জন্য দন্ডায়মান হবে সে সময় হতে জুম'আর ফরয শেষ হওয়া পর্যন্ত নফল ও সুন্নাত সমূহ মাকরূহ।
→আল্লামা হাসকাফি, দুররুল মুখতার, কিতাবুস সালাত, ২/৪৭ পৃ,
(৬) খোতবার সময় ১ম খোতবাহ হোক, বৃষ্টি প্রার্থনার খোতবাহ হোক, হজ্জ বা বিবাহের খোতবাহ হোক, খোতবাহ পাঠকালে সর্বপ্রকার নফল, এমনকি কাযা নামাযও নাজায়িয।
→আল্লামা হাসকাফি, দুররুল মুখতার, কিতাবুস সালাত, ২/৪৭ পৃ,
মাসআলা নং-১৪: জুম'আর সুন্নাত শুরু করলো এমতাবসস্থায় খতিব সাহেব খোতবাহ পাঠের জন্য দাঁড়ালেন, তখন চার রাক'আত পূর্ণ করে নিবে।
→আল্লামা মোল্লা নিযামুদ্দীন বলখী, ফতোয়া ই হিন্দিয়া, কিতাবুস সালাত, ১/৫৩ পৃ,
(৭) দুই ঈদের নামাযের পূর্বে নফল মাকরূহ, ঘর, ঈদগাহ বা মসজিদে যেখানেই হোক।
→আল্লামা মোল্লা নিযামুদ্দীন বলখী, ফতোয়া ই হিন্দিয়া, কিতাবুস সালাত, ১/৫৩ পৃ,
→আল্লামা হাসকাফি, দুররুল মুখতার, কিতাবুস সালাত, ২/৪৭ পৃ,
(৮) দুই ঈদের নামাযের পর নফল মাকরূহ, যদি ঈদগাহে বা মসজিদে হয়, তবে ঘরের মধ্যে পড়া মাকরূহ নয়।
→আল্লামা মোল্লা নিযামুদ্দীন বলখী, ফতোয়া ই হিন্দিয়া, কিতাবুস সালাত, ১/৫৩ পৃ,
→আল্লামা হাসকাফি, দুররুল মুখতার, কিতাবুস সালাত, ২/৫০ পৃ,
(৯) আরাফাতের যেখানে জোহর আসর একত্রে পড়া হয় তার মধ্যে বা তারপর সর্ব প্রকার সুন্নাত নফল মাকরূহ।
→আল্লামা হাসকাফি, দুররুল মুখতার, কিতাবুস সালাত, ২/৫০ পৃ,
(১০) মুযদালিফা যেখানে মাগরিব এশা একত্রে পড়া হয় তার মাঝখানে সুন্নাত ও নফল পড়া মাকরূহ, পরে পড়া মাকরূহ নয় ।
→আল্লামা মোল্লা নিযামুদ্দীন বলখী, ফতোয়া ই হিন্দিয়া, কিতাবুস সালাত, ১/৫৩ পৃ,
→আল্লামা হাসকাফি, দুররুল মুখতার, কিতাবুস সালাত, ২/৫০ পৃ,
(১১) ফরজের সময় যদি নিতান্ত সংকীর্ণ হয় সর্ব প্রকার নামায এমনকি ফযরের সুন্নাত, যোহরের সুন্নাতও মাকরূহ।
→আল্লামা হাসকাফি, দুররুল মুখতার, কিতাবুস সালাত, ২/৫০ পৃ,
(১২) মানবিক প্রয়োজন দূর না করে নামায পড়া মাকরূহ। যেমন- পায়খানা প্রশ্রাবের হাযত বা বায়ু নির্গত হওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পেলে তা সেরে নেবে। তবে সময় চলে গেলে নামায পড়ে নিবে।
→আল্লামা মোল্লা নিযামুদ্দীন বলখী, ফতোয়া ই হিন্দিয়া, কিতাবুস সালাত, ১/৫৩ পৃ,
অনুরূপভাবে খাবার সামনে আসল, তার আসক্তিও রয়েছে অথবা এমন কাজ উপস্থিত হল যা না করলে নামাযে একাগ্রতা থাকবেনা এমতাবস্থায় নামায পড়া মাকরূহ।
→আল্লামা মোল্লা নিযামুদ্দীন বলখী, ফতোয়া ই হিন্দিয়া, কিতাবুস সালাত, ১/৫৩ পৃ,
→আল্লামা হাসকাফি, দুররুল মুখতার, কিতাবুস সালাত, ২/৫১ পৃ,
মাসআলা নং-১৫: ফজর এবং যোহর এর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পুরো সময়ই মাকরুহ মুক্ত । অর্থাৎ, এ দু'ওয়াক্তের যেকোনো সময় নির্ধারিত নামায পড়লে মাকরুহ হবে না ।
→ইমাম ইবনে নুজাইম মিশরী, বাহরুর রায়েক, কিতাবুস সালাত, ১/৪৩২ পৃ,