হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, حدثنا عبد الله قال قرأت على أبي هذا الحديث وسمعته سماعا قال ثنا الأسود بن عامر ثنا شعبة قال عبد الله بن دينار أخبرني قال سمعت بن عمر يحدث عن النبي صلى الله عليه و سلم : في ليلة القدر قال من كان متحريها فليتحرها في ليلة سبع وعشرين
"নবী করীম ﷺ এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি লায়লাতুল কদর তালাশ বা অন্বেষণ করতে চায় সে যেন ২৭ রমজান তারিখে তালাশ করে।"
(মুসনাদে আহমদ, হাদিস নং- ৬৪৭৪)।
হজরত উবাই ইবনে কা'ব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত,حَدَّثَنا مُحَمَّدُ بْنُ مِهْرَانَ الرَّازِيُّ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا الْأَوْزَاعِيُّ، حَدَّثَنِي عَبْدَةُ، عَنْ زِرٍّ، قَالَ: سَمِعْتُ أُبَيَّ بْنَ كَعْبٍ، يَقُولُ: وَقِيلَ لَهُ إِنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ مَسْعُودٍ، يَقُولُ: "مَنْ قَامَ السَّنَةَ أَصَابَ لَيْلَةَ الْقَدْرِ"، فَقَالَ أُبَيٌّ: "وَاللهِ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ، إِنَّهَا لَفِي رَمَضَانَ، يَحْلِفُ مَا يَسْتَثْنِي، وَوَاللهِ إِنِّي لَأَعْلَمُ أَيُّ لَيْلَةٍ هِيَ، هِيَ اللَّيْلَةُ الَّتِي أَمَرَنَا بِهَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِقِيَامِهَا، هِيَ لَيْلَةُ صَبِيحَةِ سَبْعٍ وَعِشْرِينَ، وَأَمَارَتُهَا أَنْ تَطْلُعَ الشَّمْسُ فِي صَبِيحَةِ يَوْمِهَا بَيْضَاءَ لَا شُعَاعَ لَهَا
তিনি বলেন আমি নবী করীম ﷺ বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, লায়লাতুল কদর হলো ২৭ রমজানের রাত এবং এইদিন সূর্য সকাল বেলা পরিষ্কার হয়ে উদিত হবে তবে কোন কিরণ বিচ্ছুরিত হবে না।"
(সহীহ মুসলিম শরীফ, হাদিস নং- ৭৬২। দারু ইবনু জওজী, কায়রো মিশর থেকে প্রকাশিত।)
হজরত আবু বকর ওরবাক(র.) বলেন,
إن الله قسم ليالي هذه الشهور ، شهر رمضان على كلمات هذه السورة فلها بلغ السابعة والعشرين أشار إليها فقال هي وأيضا فإن ليلته ليلة القدر گزر ذكرها ثلاث مرات وهي تسعة أحرف فتحين شبعا وعشرين
"নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা এই মাস সমুহের রাতগুলোকে বণ্টন করেছেন। বিশেষ করে রামাযানুল মুবারকের রাতসমূহকে ভাগ করেছেন সূরা কদূরের বাক্যসমূহের ওপরে। আর যখন রামাযান মাসের রোযা ২৭ সংখ্যায় (দিনে) পৌঁছে তখনই ইঙ্গিত করে তিনি বলেছেন, এই সংখ্যার তারিখে লায়লাতুল কদর পাওয়া যাবে। কেননা, সূরা কদরে ‘লায়লাতুল কদর' শব্দটি তিনবার পুনঃউচ্চারিত হয়েছে। আর এতে রয়েছে ৯টি করে বর্ণ। অতএব এর সর্বমোট সংখ্যা দাঁড়ায় ২৭ টি। কাজেই লায়লাতুল কদূর হবে রামাযান মাসের ২৭ তারিখে।” যথা:
اِنَّاۤ اَنۡزَلۡنٰہُ فِیۡ لَیۡلَۃِ الۡقَدۡرِ ۚ﴿ۖ۱﴾
وَ مَاۤ اَدۡرٰىکَ مَا لَیۡلَۃُ الۡقَدۡرِ ؕ﴿۲﴾
لَیۡلَۃُ الۡقَدۡرِ ۬ۙ خَیۡرٌ مِّنۡ اَلۡفِ شَہۡرٍ ؕ﴿ؔ۳﴾
প্রত্যেক সম্বন্ধপদে ليلة القدر এ- ل ي ل ت ا ل ق د ر ৯টি বর্ণ ব্যবহৃত হয়েছে। আর এই পদটির উল্লেখ এসেছে তিনবার। অতএব, ৩×৯=২৭ গুণ ফল দাঁড়ায়। তাই লায়লাতুল কদূর ২৭ রামাযান তথা ২৬ রমজান দিবাগত রাতে হওয়ার সম্ভাবনা অধিক। "
(তাফসীরে কুরতুবী: ২০ তম খন্ড, পৃ: ১৩৫-১৩৭)
হযরত ওবাইদ ইব্ন ওয়াইর (র.) বলেন,
كنت ليلة السابع عشر في البحر فأخذت من مائه فوجدته عذبا سلسا
“আমি ২৭ রামাযানে সমুদ্রে ছিলাম। আমি সমুদ্রের পানি হাতে নিয়েছি পানি পেলাম মিষ্টি-কোমল"।
(তাফসীরে কুরতুবী, ২০ তম খন্ড, ১২৭ পৃ,)
সাহাবীগণের অভিমত:
হজরত উবাই ইবনে কা'ব (রা:), হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা:), হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা:), হজরত মাবিয়া (রা:) এর অভিমত হচ্ছে, শবে কদর ২৭ রমজান -এ।
বর্ণিত আছে, একবার হজরত ওমর ফারুক এ আজম (রা:) সাহাবায়ে কেরামকে একত্রিত করেছিলেন লায়লাতুল কদর বিষয়ে ফায়সালার জন্য। প্রত্যেক সাহাবী তাদের স্বতন্ত্র বক্তব্য তুলে ধরলেন। হজরত ওমর(রা:) শেষ পর্যায়ে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা:) কে মন্তব্য করতে বললেন, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা:) বললেন, আল্লাহ তাআলা সাত আসমান,সাত যমীন,সাত দিনে সৃষ্টি করেছেন, এতে গভীরভাবে চিন্তা করলে মনে হয়, লায়লাতুল কদর সাতের ঘরেই আছে। কাজেই লায়লাতুল কদর ২৭ হওয়াটাই যুক্তিযুক্ত।