তাকওয়া ও আভিজাত্য- ৩

<div>'সফল ব্যক্তিদের প্রতিদিনকার ১০ টি অভ্যাস'— এসব টাইটেলে অসংখ্য ভিডিও আপনি ইউটিউবে পেয়ে যাবেন। আমরা জানতে চাই সফল ব্যক্তিদের জীবন-যাপন এর পদ্ধতি। আমরা চলতেও চাই সে-মতে।</div><div><br></div><div>আমিও আজ বলতে এসেছি একজন অসাধারণ ব্যক্তিত্বের কথা। সায়্যিদুনা ফারুকে আজম রাদ্বিআল্লাহু আনহু। যিনি ছিলেন ইসলাম জাহানের দ্বিতীয় খলিফা। যার রাজত্ব ছিল সূদুর প্রসারিত। তাঁর অসংখ্য ভালো অভ্যাসগুলোর মধ্যে একটি অভ্যাসের কথা প্রথম পর্বে লিখেছি। সেটা হলো— প্রতি রাতে গোপনে তিনি প্রজাদের দরজায় দরজায় গিয়ে তাদের খোঁজ-খবর নিতেন। কারো কোনো অসুবিধা-সমস্যা নজরে আসলে তার সমাধান করে দিতেন। আহ! যদি এই অসাধারণ ব্যক্তিত্বের অসাধারণ অভ্যাসটি আমাদের মধ্যে থাকত! ন্যায়-নিষ্ঠ শাসকদের উদাহরণে আজও ফারুকে আজমের নাম স্মরণ হয় পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে। </div><div><br></div><div>আজ আমাদের সমাজে দরিদ্রের জন্য রাষ্ট্র থেকে কোনো সহায়তা আসলে, সেটা তার হাতে পৌঁছানো পর্যন্ত— ৯০ শতাংশ কমে যায়! চুরি হয় হতদরিদ্রের সামান্য সম্পদটুকুও। কাউকে নামমাত্র ত্রাণ দিতে গেলেও, ১ কেজি চালে কমপক্ষে ৫০ টা সেলফি না তোলতে পারলে হয়তো ত্রাণ কবুলই হয় না! একবার চিন্তা করুন— সেই দরিদ্র ব্যক্তিটির জায়গায় তো আপনার মেয়ে-ছেলেও থাকতে পারতো! যদি থাকতো? এমন করতে পারতেন? </div><div><br></div><div>অধীনস্থদের সাথে আমাদের আচরণ কেমন হবে ইসলাম আমাদেরকে তা শিখিয়ে দিয়েছে। আল্লাহু আকবার! কেমন সীরাত ছিলো ইসলাম জাহানের খলিফার। যিনি গোপনে মানুষের খবর রাখতেন। সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করতেন। আর এর পেছনকার মূল রহস্যটা ছিল— তাকওয়া। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ছিলো তাঁর সকল প্রচেষ্টা। তাই তাকওয়া যখন আমাদের মধ্যে চলে আসবে— তখন জীবন-যাপন এর ধরণও পরিবর্তন হয়ে যাবে। সম্মানের সহিত বাঁচতে পারবো। বাহ্যিক ও আন্তরিক উভয় দিক থেকে হয়ে ওঠব— অভিজাত। </div><div><br></div><div>'তাকওয়া ও আভিজাত্য- ৩'</div><div>~স্বাধীন আহমেদ</div>

তাকওয়া ও আভিজাত্য- ৩

'সফল ব্যক্তিদের প্রতিদিনকার ১০ টি অভ্যাস'— এসব টাইটেলে অসংখ্য ভিডিও আপনি ইউটিউবে পেয়ে যাবেন। আমরা জানতে চাই সফল ব্যক্তিদের জীবন-যাপন...

Read more »

ফরয নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিত দোয়া! কেন?

<div style="text-align: justify;">ফরয নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিত দোয়া! কেন? প্রিয়নবী কি করেছেন কখনো? প্রিয়নবী করেননি তো তোমরা কর কিভাবে? এজন্যেই তো তোমরা বিদআতী! এই তো তব কথা? তবে বন্ধু, ইক্করা' বিসমি রব্বিকাল্লাযি খালাক(পড় তব প্রভুর নামে, যিনি তোমায় সৃষ্টি করেছেন)।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">এক.</div><div style="text-align: justify;">"প্রিয়নবী করেননি তো তোমরা কর কিভাবে"? এই তো কথা! তবে বন্ধু, দেখাও তো একবার। জাস্ট একবার। প্রিয়নবী কোথায় একে নাজায়েয করেছেন? "প্রিয়নবী নাজায়েয করেননি তো তোমরা নাজায়েয কর কিভাবে?" এইসূত্রে ভাই, তোমরাও তো বিদআতী!</div><div style="text-align: justify;">প্রিয়নবী যে ফতোয়া দেননি, তা দেয়া যদি জায়েয হয়ে থাকে, তবে প্রিয়নবী যা করেননি, সাধারণত তা করা কেন জায়েয হবে না?</div><div style="text-align: justify;">প্রিয়নবী যা নাজায়েয করেননি, তা নাজায়েয করা যদি বৈধ হয়, তবে প্রিয়নবী যা করেননি, তা করা কেন বৈধ হবে না? কেন? কেন?</div><div style="text-align: justify;">(জাস্ট সুনির্দিষ্ট বিষয়ে বাড়তি-কমতি না হলেই হল। নিষিদ্ধের স্পষ্ট দলীল না থাকলেই হল।)</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">দুই.</div><div style="text-align: justify;">এই হাদীসটা দেখ তো!</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">হযরত আবু উমামাহ রা. হতে বর্ণিত,</div><div style="text-align: justify;">প্রিয়নবীকে প্রশ্ন করা হল, "কোন দোয়া সর্বাধিক শ্রবণ করা হয়?" প্রিয়নবী ইরশাদ করলেন, "শেষরাতের দোয়া ও ফরয সালাতের পরের দোয়া।"(সুনান তিরমিযী:৩৪৯৯)(1)</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">হ্যাঁ, হ্যাঁ। দোয়া। ফরয সালাতের পরের দোয়া। তবু বুঝি অস্বীকার করবে?</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">এখন হয়তো বলবে- কেবল দোয়ার কথাই তো বলা হয়েছে! সম্মিলিতভাবের কথা তো স্পষ্ট নয়!</div><div style="text-align: justify;">হ্যাঁ, সম্মিলিতভাবের কথা স্পষ্ট নয়! কিন্তু, দেখ ভাই, এখানে একা একার কথাও কি স্পষ্ট? তাও তো নয়। এখন একা একার দোয়া বৈধ হলে সম্মিলিতেরটা বৈধ হবে না কেন? কেন? কেন? দলীল কই? বরং সম্মিলিত দোয়ারই তো অধিক মর্তবা!</div><div style="text-align: justify;">দোয়া থাকলে, দোয়ার উত্তম পদ্ধতি তথা সম্মিলিত দোয়া কেন থাকতে পারবে না? কে একে নিষিদ্ধ করলো?</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">তিন.</div><div style="text-align: justify;">প্রিয়নবী কি আসলেই করেননি? এই হাদীসটি দেখ তো ভাই, বুঝো কিনা!</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">"বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবন যুবাইর রা. এক ব্যক্তিকে নামায শেষ হবার আগেই দু'হাত তুলে দোয়া করতে দেখে বললেন, নিশ্চয় আল্লাহর রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামায সমাপ্তির পূর্বে হাত তুলে দোয়া করতেন না।"</div><div style="text-align: justify;">(মাযমাউয যাওয়াইদ লিল হাইসামী:১৭৩৪৫)(2)</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">একটু নিরপেক্ষভাবে মাথা খাটাও ভাই। হাদীসটি থেকে কি বুঝা যাচ্ছে না যে, প্রিয়নবী নামায শেষ করে হাত তুলে দোয়া করতেন? নিশ্চয়ই তো বুঝা যাচ্ছে!</div><div style="text-align: justify;">তুমি না বুঝলে দোয়া কোরো না, ভাই! অসুবিধা নেই। (যেহেতু এটি আবশ্যক বিষয় নয়।)</div><div style="text-align: justify;">আর আমরা বুঝছি বলেই তো করছি! তোমাদের অসুবিধা কী? না বুঝলে চুপ থাকো! বর্জনীয় বিদআতের বুলি ঝেড়ে ভাই, ফিতনা করো না প্লিজ। লাকুম দ্বীনুকুম ওয়ালিয়া দ্বীন।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">এখন ভাবো, প্রিয়নবী দোয়া করবেন আর সাহাবীরা হাত গুটিয়ে বসে থাকবেন? নিশ্চয়ই না। বরং এক্ষেত্রে প্রিয়নবীকে অনুসরণই করেছেন তারা!</div><div style="text-align: justify;">আর প্রিয়নবীও দোয়ায় সবাইকে শামিল করেই করেছেন। যেহেতু তিনি ছিলেন ইমাম, আর এ ব্যাপারে ইরশাদ করেছেন, "কেউ কোনো দলের ইমামতি করে এমন করবে না যে, দোয়াতে অন্যদেরকে(মুসুল্লিদেরকে) বাদ দিয়ে কেবল নিজেকেই খাস করে। এমন করলে সে তাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করলো।"</div><div style="text-align: justify;">(সুনান তিরমিযী:৩৫৭)(3)</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ- ইমাম একা একা নয় বরং মুসুল্লিদেরকেও শামিল করে সম্মিলিত দোয়া করবে।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">চার.</div><div style="text-align: justify;">প্রিয়নবী তাসবীহ পড়তেন, দোয়া করতেন না। এই তো তোমার কথা? এবার তবে আমাদের কথা শুনো ভাই। "কী আশ্চর্য! হাদীসে যেখানে সরাসরি দোয়া শব্দ এসেছে, সেখানে তুমি করছো অস্বীকার! তবে তুমি হাদীস মানছো কই! হ্যাঁ, সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবারের হাদীস থাকায় সেগুলো যদি জায়েয হযে থাকে, তবে দোয়ার কথাও তো হাদীসে আছে! দোয়া জায়েয হবে না কেন!"</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">ও আচ্ছা, এখন বলছো, দোয়াই তাসবীহ! তবে ভাই, এই হাদীসটি দেখ তো! "প্রিয়নবী শুনলেন এক ব্যক্তি নামাযের পর হামদ, সানা ও দরুদ পড়লো। প্রিয়নবী তাকে বললেন, দোয়া কর, কবুল করা হবে। প্রার্থনা কর, প্রদান করা হবে।"(সুনানু নাসাঈ:১২৮৪)(4)</div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ নামাযের পর তাসবীহর যেমন আছে, আলাদা দোয়াও আছে। তবে তাসবীহ মানছো, দোয়া মানবে না কেন? কেন? কী দোষ দোয়ার!</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">আর দোয়া মানলেও দোয়ার উত্তম পদ্ধতি (সম্মিলিত) মানবে না কেন?</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">পাঁচ.</div><div style="text-align: justify;">হযরত সালমান ফারসি রা. হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, "একদল লোক নিজেদের হাত উঠিয়ে আল্লাহর নিকট কিছু চাইলে তিনি অবশ্যই তা কবুল করে নেন।"</div><div style="text-align: justify;">(মাযমাউয যাওয়াইদ লিল হাইসামী:১৭৩৪১)(5)</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ সম্মিলিত দোয়া একটি আলাদা সুন্নাহ। কিন্তু এর জন্য কি নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে? নিশ্চয়ই হয়নি। বরং সময়-সুযোগ হলে যেকোনো ক্ষণেই এটি করা যায়। তাই না? তবে ফরয সালাতের পরের সময়টা কী দোষ করলো?</div><div style="text-align: justify;">যেমন-</div><div style="text-align: justify;">সকালে যদি দরুদ পড়, দরুদের পর কুরআন পড়, কুরআনের পর আল্লাহ নামের যিকর কর- এ যদি তোমার নিত্যকার নিয়ম/অভ্যাস হয়, তবু কে তোমায় নিষেধ করবে? নিশ্চয় কেউই না। কারণ এক ইবাদতের পর সুযোগ হলে, ইচ্ছে হলে আরেক ইবাদত করাই যায়। দরুদের পর ইচ্ছে করলে কুরআন পাঠ, এরপর আল্লাহ নামের যিকর করাই যায়। এতে নিষিদ্ধতার কিছু নেই। ভাইরে, ঠিক তেমনি, সব বর্ণনা বাদ দিলেও, ফরয নামাযের পর তাসবীহ পাঠান্তে স্বতন্ত্র ইবাদত হিসেবে সম্মিলিত দোয়া করাই যায়। এতে নিষিদ্ধতার কিছু নেই।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">কারণ প্রিয়নবী সম্মিলিত দোয়ার জন্য যে সময়কে নিষিদ্ধ করেননি, যা নিষিদ্ধ হবার অন্য কোনো গ্রহণযোগ্য দলীলও নেই, তাকে তুমি-আমি নিষিদ্ধ করার কে?</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">(আজ এই পর্যন্ত। বাকীটা আরেকদিন।)</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">~ফা লা ক্ব</div>

ফরয নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিত দোয়া! কেন?

ফরয নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিত দোয়া! কেন? প্রিয়নবী কি করেছেন কখনো? প্রিয়নবী করেননি তো তোমরা কর কিভাবে? এজন্যেই তো তোমরা বিদআতী! এই তো তব ক...

Read more »