একটি বদ অভ্যাস!

<div style="text-align: justify;">রাতে দেরি করে ঘুমানো। এই অভ্যাস টা মোটামুটি আমাদের সকলের মধ্যেই আছে।</div><div style="text-align: justify;">বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে এটা আমাদের নিত্যদিনকার শিডিউলে পরিণত হয়েছে। তবে আমাদের জানা উচিত বেশি রাত জাগা এবং সকালে দেরিতে ঘুম থেকে ওঠা আমাদের জন্য ক্ষতিকর। </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">আল্লাহ তায়ালা রাতকে বিশ্রামের জন্য সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন— 'আমি তোমাদের বিশ্রামের জন্য নিদ্রা দিয়েছি, তোমাদের জন্য রাত্রিকে করেছি আবরণস্বরূপ আর দিনকে বানিয়েছি তোমাদের কাজের জন্য।' [১]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">সারাদিনের ক্লান্তি দূর করে কোষগুলো পুনর্গঠন করতে ঘুমের বিকল্প নেই। রাসূলে আরাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম— এশার নামাজ এক-তৃতীয়াংশ রাত পরিমাণ দেরি করে পড়া পছন্দ করতেন, আর এশার আগে ঘুমানো এবং এশার পর না ঘুমিয়ে গল্পগুজব করা অপছন্দ করতেন। [২] রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবায়ে কেরামকেও এশার পর পর ঘুমিয়ে পরার আদেশ দিতেন।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">তদ্রূপ তিনি আমাদেরকে ভোরবেলায় ঘুম থেকে ওঠতে অনুপ্রাণিত করেছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম — ভোরবেলার কাজের জন্য বরকতের দোয়া করেছেন। </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">প্রিয় আক্বা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দোয়া করেছেন, 'হে আল্লাহ! আমার উম্মতের জন্য দিনের শুরুকে বরকতময় করুন।' এ জন্যই রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোনো যুদ্ধ অভিযানে বাহিনী পাঠানোর সময় দিনের শুরুতে পাঠাতেন। হাদীসটির বর্ণনাকারী বলেন— সখর রাযিআল্লাহু আনহুও তার ব্যবসায়ী কার্যক্রম ভোরবেলা শুরু করতেন। এতে তাঁর ব্যবসায় অনেক উন্নতি হয়। তিনি সীমাহীন প্রাচুর্য লাভ করেন। [৩]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">সকালে দেরিতে উঠা রিযিকে বরকত শূণ্যতা আর সফলতা থেকে বঞ্চিত হওয়ার একটি বড় কারণ। সফল ব্যক্তিদের অভ্যাসগুলোর মধ্যে ভোরবেলা ঘুম থেকে ওঠাও অন্যতম একটি অভ্যাস। আর আমার রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামই এর উত্তম নমুনা। তাঁর জীবনই আমাদের জন্য রোল মডেল।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">একদিন ফাতেমা রাযিআল্লাহু আনহা ভোরবেলায় ঘুমিয়ে ছিলেন। রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওনাকে দেখে পা মোবারক দিয়ে নাড়া দিলেন। বললেন— মা ওঠো! তোমার রবের দেয়া রিযক গ্রহণ করো। অলসদের দলভুক্ত হয়ো না। কেননা— রব তায়ালা সুবহে সাদিক এর সময় থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত বান্দাদের মধ্যে রিযক বন্টন করেন। [৪]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">আমার রাসূল যে কাজ গুলোর প্রতি উৎসাহীত করেছেন, নিঃসন্দেহে সেগুলোর মধ্যে কল্যাণ নিহিত। আর নিষিদ্ধ কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে— ক্ষতি। রাতে দেরি করে ঘুমানো এবং সকালে দেরি করে ঘুম থেকে ওঠার— বিষয়ে বিজ্ঞানও নানান রকম তথ্য দিয়েছে। </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ক্যান্সারবিষয়ক গবেষণা বিভাগ ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সারের তথ্য মতে, যখন সূর্যের আলো থাকে না তখন শরীরকে কাজ করতে বাধ্য করা বা জাগিয়ে রাখা শরীরে মেলাটনিন হরমোন তৈরিতে বাধা সৃষ্টি করে।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">আর এই মেলাটনিনই মানুষের দেহে টিউমারের বৃদ্ধিকে রোধ করে। ফলে তাদের ধারণা, রাত জাগা মানুষদের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বেশি। যুক্তরাজ্যের এক দল গবেষকের মতে, যারা দেরিতে ঘুমায় ও দেরিতে ঘুম থেকে ওঠে, তাদের অকাল মৃত্যু ঝুঁকি বেড়ে যায়। যুক্তরাজ্যের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. পিরেঞ্জ লেভি বলেন— রাত জাগার বদ-অভ্যাস যারা গড়ে তুলেছে, তাদের ৯০ শতাংশই মানসিক রোগের শিকার। ৩০ শতাংশে থাকে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি। এছাড়া স্নায়বিক সমস্যা থেকে শুরু করে অন্ত্রের রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে বেড়ে যায়।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">তাছাড়া রাতে দেরিতে ঘুমানোর কারণে— খিটখিটে স্বভাব, বিষণ্ণতা, হঠাৎ ভীষণ রেগে যাওয়ার মতো অসুবিধের পাশাপাশি রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া, হার্টের সমস্যার মতো গুরুতর শারীরিক সমস্যার ঝুঁকি থাকে।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">সকালে দেরিতে ঘুম থেকে উঠার অপকারিতা সম্পর্কে— যুক্তরাজ্যের সুবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রোনোলজি বিভাগের অধ্যাপক জন রিচার্ডসন বলেন— আমরা দেখেছি, যারা দেরি করে ঘুম থেকে ওঠে তারা নানা ধরনের মানসিক ও শারীরিক জটিলতায় ভোগে। তাদের গড় আয়ু নিয়মিত সকালে উঠা মানুষের চেয়ে সাড়ে ছয় বছর কম।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">খুব ভোরে উঠা মানুষগুলো সবার থেকে আলাদা ও কর্মদক্ষ হয়ে থাকে। গবেষণায় দেখা যায়— যারা খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠে কিংবা রাতে কম ঘুমায়, অন্যদের তুলনায় তাদের আইকিউ ভালো হয়।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব শিক্ষার্থী ভোরবেলায়ই জাগতে পারে, তারা দেরিতে জাগ্রতদের চেয়ে বেশি নম্বর পায়। তাদের জিপিএ অন্যদের তুলনায় বেশি হয়। এই সাফল্যের পেছনে তারা বাড়তি উৎপাদনশীলতা এবং ভালো ঘুম হওয়াকেই কারণ হিসেবে উল্লেখ করে।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">যদি উপরোক্ত বদ অভ্যাস গুলো আমাদের মধ্যে পাওয়া যায় তাহলে আসুন আজই পরিবর্তন করি। এবল রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নির্দেশ মতো জীবন পরিচালনা করি।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">Reference:</div><div style="text-align: justify;">[১] সুরা নাবা, আয়াত: ৯-১১।</div><div style="text-align: justify;">[২] সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৯৯।</div><div style="text-align: justify;">[৩] আবু দাউদ, হাদিস: ২৬০৬।</div><div style="text-align: justify;">[৪] আত-তারগিব ওয়াত তারহিব, হাদিস: ২৬১৬।</div><div style="text-align: justify;">[৫] উল্লিখিত বৈজ্ঞানিক তথ্যগুলো গুগল থেকে সংগৃহীত। </div>

একটি বদ অভ্যাস!

রাতে দেরি করে ঘুমানো। এই অভ্যাস টা মোটামুটি আমাদের সকলের মধ্যেই আছে। বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে এটা আমাদের নিত্যদিনকার শিডিউলে পরিণত ...

Read more »

হযরত আবু বকর ও উমর (রা.) জান্নাতের মধ্যবয়সী লোকদের নেতা হবেন— হাদীস প্রসঙ্গ:

<p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">কিছু কিছু হাদীসে মুবারাকা আছে যেগুলো পরিবেশ-পরিস্থিতিতে প্রকাশ করা আবশ্যক হয়ে পড়ে।সেরকম কিছু একটা প্রকাশ করতে যাচ্ছি।<b>জান্নাতের সর্দার এর ব্যাপারে আমরা কমবেশি সবাই জানি যে,সৈয়্যদুনা ইমাম হাসান ও ইমাম হুসাইন عليهم السلام হলেন জান্নাতের যুবকদের সরদার,সৈয়্যদুশ শাবাবি আহলিল জান্নাহ!</b>এবং সেটা বর্ণিত আছে অসংখ্য কিতাবে।যেমন:—</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">১।তিরমিযী ৩৭৬৮।(৪১০১ মুয়াসসাসাতুর রিসালা)</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">২।সুনানু কুবরা লিন নাসায়ী ৮১৬৯ ও ৮৫২৫</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">৩।মুসনাদ আহমদ ১০৯৯৯,১১৫৯৪ </span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">৪।সহীহ ইবনে হাব্বান ৬৯৫৯</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">৫।তারিখে দামেষ্ক ৪/২৫৭</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">৬।ফাযায়েলুস সাহাবা,১৩৮৪,১৩৬৮ নং হাদীস,ইমাম আহমদ বিন হাম্বল</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">৭।মুজামুল কাবীর লিত-তাবারানী ৩/২৬,২/২৮</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">৮।আখবারে আসবাহান ২/৩৪৩,আবু নুয়াইম ইস্পাহানী</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">৯।তারিখে বাগদাদ,১১/৯০,৪/২০৮ খাতিবে বাগদাদী</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">১০।শরহুস সুন্নাহ লিল বাগাভী ১৪/১৩৮</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">১১।মাআরিফাতিল সাহাবা ১/১৪৪</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">১২।মুসান্নাফে আবি শায়বা ১২/৯৬</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">১৩।হিলইয়াতুল আওলিয়া ৫/৭১,আবু নুয়াইম ইস্পাহানী </span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">১৪।মা'আরিফাতুত তারিখ,২/৬৪৪,আল্লামা ফাসাওয়ী</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">১৫।মুশকিলুল আছার,২/৩৯৩,ইমাম ত্বাহাবী</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">১৬।মুস্তাদরাক লিল হাকেম, ৩/১৬৬</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">১৭।কাশফুল আসতার,৩/২৩৪,ইমাম নুরুদ্দীন হায়সামী</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">১৮।আল কামিল লিদ্ব দ্বুয়াফা,২/৬৩৮,ইমাম ইবনে আদী</span></p><p><span style="font-family: times;"><b></b></span></p><blockquote style="text-align: justify;"><b><span style="font-family: times;">'ফয়যুল ক্বদীর শরহে জামেউস সগীর' এ ৩/৪১৫ তে উল্লেখ আছে, ইমাম সূয়ুতী বলেন,হাদীসটি মুতাওয়াতির পর্যায়ে পৌঁছেছে।</span></b></blockquote><p></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">এবং এর সাথে একটা কথা জুড়ে দেয়া আছে যে,<b>"তাঁদের পিতা (অর্থাৎ আলী عليه السلام) তাদের চেয়ে উত্তম বা আফদ্বল।" ইমাম হায়সামী মাজমাউয যাওয়াইদের ৯ম খন্ডে ১৭২ পৃষ্ঠায় কয়েকটি হাদীস এনে প্রমাণ করে দিয়েছেন হাদীসটা সহিহ।</b></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">তবে কেউ যখন এই হাদীসগুলোর শব্দ নিয়ে খেলতে থাকে এবং আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহুল কারীম এর সর্বোপরি ফযিলতকে বাড়াতে গিয়ে শায়খাইনের উপরে তুলে ফেলে তখন প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তা তাফদ্বীলির (আলীকে অন্য সাহাবীদের উপর প্রাধান্য দেয়া) দিকে যায়।তখন ব্যালেন্স করার জন্য সিদ্দিক-ফারুকের মানাকিব/জীবনাদর্শগুলোকে সামনে নিয়ে আসাই লাগে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">এই হাদীসের ব্যাখ্যায় উল্লেখ আছে,ইমাম জালালউদ্দিন সুয়ুতি ব্যাপারে বলেন—</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;"><b></b><b>وقال النووي في فتاويه وقال المُظهَّري معناه هما أفضل من مات شابا في سبيل الله من أصحاب الجنة</b></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">—"ইমাম নববী তার ফতোয়ার কিতাবে উল্লেখ করেন,মুযাহহারী বলেছেন,হাদীসটির অর্থ হলো সে সকল যুবক যারা আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হয়েছেন, জান্নাতের তাদের চেয়েও (হাসান-হুসাইন) মর্যাদাপূর্ণ হবেন।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">আরেকটু অগ্রসর হয়ে বলা হচ্ছে—</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">  <b>أو أنهما سيدا أهل الجنة سوى الأنبياء، والخلفاء الراشدين وذلك لأن أهل الجنة كلهم في سن واحد، وهو الشباب وليس فيهم شيخ ولا كهل،</b></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;"> — অথবা এও হতে পারে যে <b><span style="color: #cc0000;">উনারা (হাসান-হুসাইন عليهم السلام) নবীগণ এবং খুলাফায়ে রাশেদুনগণ ব্যতীত সবার সর্দার হবেন,</span></b>যেহেতু বেহেশতে সবার বয়স একই হবে এবং সেখানে কোনো বয়স্ক থাকবে না।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">[আল-ক্বুওতুল মুগতাযী আলা জামেউত তিরমিযী,১০১৯ পৃ:,ইমাম সূয়ুতি]</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">➤➤➤অন্যদিকে মুসনাদু আহমদ এর ৬০২ নং হাদীসে,মুয়াসসাসাতুর রিসালা হতে প্রকাশিত,বর্ণিত আছে—</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">«<b></b></span></p><blockquote><p style="text-align: justify;"><b><span style="font-family: times;">حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ، حَدَّثَنِي وَهْبُ بْنُ بَقِيَّةَ الْوَاسِطِيُّ، حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ يُونُسَ يَعْنِي الْيَمَامِيَّ، عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ الْيَمَامِيِّ، عَنِ الْحَسَنِ بْنِ زَيْدِ بْنِ حَسَنٍ، حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَلِيٍّ، قَالَ: كُنْتُ عِنْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَقْبَلَ أَبُو بَكْرٍ، وَعُمَرُ، فَقَالَ: " يَا عَلِيُّ، هَذَانِ سَيِّدَا كُهُولِ أَهْلِ الْجَنَّةِ، وَشَبَابِهَا بَعْدَ النَّبِيِّينَ وَالْمُرْسَلِينَ </span></b></p><p></p></blockquote><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">— আলী (রাঃ) বলেছেন,আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ এঁর কাছে ছিলাম। সহসা আবু বকর ও উমার رضي الله عنهم এলেন। তিনি ﷺ বললেন,হে আলী, এরা দু’জন নবী ও রাসূলগণের পর জান্নাতের যুবক ও প্রৌঢ়দের দুই নেতা।»</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">আল্লামা শায়খ শো'আইব আরনাউত্ব হানাফী রহ. বলেন,"<b>হাদীসটি বিশুদ্ধ এবং এর সনদ সুন্দর।" সবচাইতে মজার বিষয় হচ্ছে এই হাদীসটির সনদে আহলে বায়ত রয়েছেন</b>,হযরত হাসান তার পিতা হযরত যায়েদ হতে,হযরত যায়েদ তার পিতা হযরত হাসানে মুজতাবা হতে এবং হাসান উনার পিতা হযরত আলী عليهم السلام হতে এই হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">আবার তিরমিযীতে ৩৬৬৪,৩৬৬৫,৩৬৬৬ এর দ্বারা বিশুদ্ধ হিসেবে প্রমাণিত হয় যে নবীজী বলেন— </span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">«<b>هَذَانِ سَيِّدَا كُهُولِ أَهْلِ الْجَنَّةِ مِنَ الأَوَّلِينَ وَالآخِرِينَ إِلاَّ النَّبِيِّينَ وَالْمُرْسَلِينَ يَا عَلِيُّ لاَ تُخْبِرْهُمَا</b></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">—অতঃপর রাসূলুল্লাহ ﷺ (হযরত আবুবকর ও হযরত উমরকে দেখিয়ে) বললেন:—এরা দুজন জান্নাতে নবী-রাসূলগণ ছাড়া পূর্বাপর (সৰ্বকালের) পূর্ণ বয়স্কদের নেতা হবেন। হে ‘আলী!এটা তাদেরকে জানাবে না।»</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">এরমধ্যে ৩৬৬৬ হাদীসটি ইমাম জয়নুল আবিদীন عليه السلام এর সূত্রে বর্ণিত।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">এই হাদীসটা আরো অনেক গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">১.আসসুন্নাহ,১৩২০নং হাদীস,ইমাম ইবনে আবী আসেম</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">২.আওসাত,৬৮৬৯নং,ইমাম ত্ববারানী</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">৩.শরহে মুশকিলুল আছার,১৯৬৩ এবং ১৯৬৬নং,ইমাম ত্বহাবী</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">৪.মুসনাদু বায্যার,২৩৯২নং হাদীস।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">৫.ইবনে মাজাহ, ৯৫ নং </span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">৬.মুসনাদু আহমদ,৬০২নং(মুয়াসসাসাতুর রিসালা)</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">৭.সহিহ ইবনে হিব্বান,৬৯০৪নং হাদীস</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">৮.মাজমাউয যাওয়াইদ,৯/৫৩,ইমাম নুরুদ্দীন হায়সামী</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">৯.খাতিবে বাগদাদী,১০/১৯২</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">➤এই 'কুহুল' বা 'বয়স্ক'দের হাদীস এর ব্যাপারে শায়খ আব্দুল হক্ব মুহাক্কিক আলাল ইত্বলাক মুহাদ্দিসে দেহলভী বলেন—</span></p><p style="text-align: right;"><span style="font-family: times;"><b></b></span></p><blockquote><p style="text-align: justify;"><b><span style="font-family: times;">ووصفهما بالكهولة باعتبار ما كانـوا في الدنيـا وإلا فلا كهل في الجنة فالمعنى: سيدا من مات كهلاً من المسلمين، وإذا كانا سيدي الكهول فأولى أن يكونا سيدي الشباب، كذا قالوا وقيل:أراد به ههنا الحليم العاقل، أي:يدخلهما الله الجنة حلماء وعقلاء</span></b></p><p style="text-align: right;"></p></blockquote><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">— 'কুহুল' বা বয়স্ক বলার দ্বারা এটা বুঝানো উদ্দেশ্য ঐ সকল মুসলমান যারা পৃথিবীতে (মরার আগে) বয়স্ক ছিল (মানে,বয়স্ক হয়ে মারা গিয়েছে)।কেননা জান্নাতে কোনো বয়স্ক ব্যক্তি নেই।সুতরাং শায়খাইনদের প্রতি 'বয়স্কদের সর্দার' শব্দের ব্যবহার দ্বারা বুঝা যায় যে,যে সকল মুসলিম বয়স্ক হয়ে মারা গিয়েছেন (শায়খাইনরা) তাদের সর্দার হবেন।আর উনারা যদি বয়স্কদের নেতা হোন তবে তারা যুবকদের সর্দার ও হবেন।একইভাবে বলা যায়,'বয়স্ক' দ্বারা পরিপূর্ণ আক্বলমান্দ (আক্বলসম্পন্ন বুঝায়), অর্থাৎ আল্লাহ সবাইকে আক্বলবান এবং হিলম (জ্ঞানে পরিপূর্ণতা) বানিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন (তাদের সর্দার হবেন শায়খাইন)।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">[লুমআতুত তানকীহ ফী শরহে মিশকাতুল মাসাবিহ,৯/৬৩১,শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী]</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">➤ইমাম আব্দুর রউফ আল মানাভী বলেন—</span></p><blockquote><p style="text-align: justify;"><b><span style="font-family: times;"> أن المراد بالكهل هنا الحليم الرئيس العاقل المعتمد عليه. يقال: فلان كهل بني فلان وكاهلهم، أي: عمدتهم في المهمات، وسيدهم في الملمات. </span></b></p></blockquote><p style="text-align: right;"><span style="font-family: times;"><b></b></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">— 'কুহুল বা বয়স্ক' এর অর্থ হলো 'হালিম' ব্যক্তি, উচ্চ পর্যায়ের বিবেকবান ব্যক্তি।কোনো সম্প্রদায়ের 'কুহুল' গণের মধ্যে 'কুহুল' এর অর্থ হল তাদের কর্মকান্ডে সর্বোত সাহায্যকারী,তাদের পক্ষে বিপদাপদে ছত্রধারী তথা মুখপাত্র।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">[ফয়যুল ক্বদীর শরহে জামেউস সগীর মিন আহাদীছিল বাশিরিন নাযির,৬৮ নং হাদীসের ব্যাখ্যা]</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">➤ইমাম সূয়ুতি উল্লেখ করেন —</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;"><br /></span></p><p style="text-align: right;"><span style="font-family: times;"><b></b></span></p><blockquote style="text-align: justify;"><b><span style="font-family: times;">وقيل أراد بالكهل هنا الحليم العاقل أي أن الله يدخل أهل الجنة حلماء وعقلاء</span></b></blockquote><p></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">— 'কুহুল' বা বয়স্ক দ্বারা উদ্দেশ্য সেই সকল মানুষ যাদের আক্বল/বিবেক 'হালিম' পর্যায়ে পৌঁছেছে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;"> [আল-ক্বুওতুল মুগতাযী আলা জামেউত তিরমিযী,৯৮৭ পৃ:,ইমাম সূয়ুতি এবং</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;"> মুসনাদু আহমদ,৬০২নং হাদীসের হাশিয়ায় আল্লামা শোয়াইব আরনাউত্ব 'ফয়যুল ক্বদীর লিল মানাভী' এর উদ্ধৃতি হিসেবে উল্লেখ করেছেন,মুয়াসসাসাতুর রিসালাহ]</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">অর্থাৎ সর্বোচ্চ অধিষ্ঠানে থাকবেন নবী রসুলগণ,এরপর খুলাফায়ে রাশেদুনের গণ,এরপর সৈয়্যদুশ শাবাবি আহলিল জান্নাত ইমামাঈনিল হুমামাইন গণ।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">আমি এ বিষয়গুলো আনার একটাই উদ্দেশ্য। বর্তমানের কিছু তথাকথিত তাসাউফপন্থীরা তাফযিলীর দিকে এতো দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে যে,তারা এটা সহজে মেনেই নিতে চায়না যে শায়খাইন عليهم السلام উনারাও রূহানি ভাবে সমৃদ্ধ। একটা ছোটো উদাহরণ দিয়ে শেষ করি,কেবল সিদ্দিকের ব্যাপারে—</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">হযরত আব্দুল্লা ইবনে আব্বাস রাঃ এর ছাত্র হযরত মুজাহিদ রাঃ বলেন,«<b>ইন্নাল্লাহা ওয়ামালা ইকাতাহু……»"আয়াতটি নাযিল হওয়ার পর আবু বকর (রা.) আরয করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ﷺ আমাকে সম্পৃক্ত না করে আল্লাহ তা'আলা আপনার জন্য কোনো আয়াত নাযিল করেননি, শুধু এ আয়াত ছাড়া। এ প্রেক্ষিতে অবতীর্ণ হয়—«তিনিই যিনি তোমাদের প্রশংসা করেন এবং দো'আ ও ক্ষমা চান তোমাদের জন্য তাঁর ফিরিশতাগণ; যেন তিনি তোমাদেরকে অন্ধকার থেকে বের করে আনেন আলোর দিকে। আর তিনি মুমিনদের প্রতি পরম দয়ালু(আহযাব ৪২)।»</b></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">[তারিখুল খুলাফা,১২৭পৃষ্ঠা,ইমাম সূয়ুতি]</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">এই হাদীসটি সিদ্দিকে আকবর রাঃ এর রুহানিয়ত বুঝার জন্য মোর দ্যান এনাফ।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-family: times;">আহলে বায়ত এবং সাহাবীদের মধ্যে অপ্রয়োজনীয় তুলনা করা এবং অমুক বড় সমুক ছোট এগুলা আমাদের মধ্যে আক্বিদার ব্যাঘাত ঘটায়।জান্নাতের সর্দার হিসেবে যেই হোক,আমরা চাই উনাদের সোহবত-সংস্পর্শে থাকতে।আমরা না সাহাবীর রশি ছাড়বো,না আহলে বায়তের!দুটৈ প্যারালালি চালাতে না পারলে আপনার তাসাউফ আপনার বদ আক্বিদা/বদ মাযহাবের কারণ হবে।</span></p>

হযরত আবু বকর ও উমর (রা.) জান্নাতের মধ্যবয়সী লোকদের নেতা হবেন— হাদীস প্রসঙ্গ:

কিছু কিছু হাদীসে মুবারাকা আছে যেগুলো পরিবেশ-পরিস্থিতিতে প্রকাশ করা আবশ্যক হয়ে পড়ে।সেরকম কিছু একটা প্রকাশ করতে যাচ্ছি। জান্নাতের সর্দার এর ব্...

Read more »