এক রিক্সাওয়ালা ভাই চালাচ্ছিলেন তাঁর তিন চাকার রিক্সাটি।যাত্রীর সিটে ছিলেন যাত্রী।তিনি আমাদের মত সাধারণ নন।অনেক মূল্যবান একজন। ধন্য হয়েছেন সাবজে গুম্বদ দ্বীদারে।প্রবাসী ভাই।দেশে এসেছেন ছুটিতে।
ফোনে কথা বলছেন কারো সাথে এই বিষয়ে।মদিনা তৈয়বার নাম শুনতে-ই রিক্সাওয়ালা ভাই তাঁর তিন চাকার যন্ত্রটি থামিয়ে নিল।তাড়াহুড়ো করে চুমু খেল যাত্রী ভাইয়ের চক্ষুতে।
তিনি রাগান্বিত স্বরে বলতে লাগল,❝পাগল নাকি মিয়া❞? রিক্সাওয়ালা ভাই অশ্রুসিক্ত নয়নে উত্তর দিল, ❝জ্বী ভাইজান।উম্মাদ আমি।ছোটখাটো নয়,বড় মাপের।তাঁরই পাগল রাজা-বাদশা,ধনী-ফকির যার দুয়ারের ভিখারী।
আমি গরীব। টাকা-পয়সা যা কামাই তা দিয়ে কোনোরকম চলি।তৈয়বা যাওয়া স্বপ্ন ছাড়া কিছুই না।ভাইজান!আপনি সৌভাগ্যবান।তৈয়বা দ্বীদারে ধন্য হয়েছেন।আপনার আমার চক্ষু আগে এক থাকলেও এখন ভিন্ন।আকাশ-পাতালের ব্যবধান।আপনার পবিত্র চোখগুলো মদিনা তৈয়বা দেখে হয়েছে ধন্য,আর সেই দামী চক্ষু চুম্বন খেতে পেরে ধন্য আমি নগণ্য।মাফ করবেন ভাইজান।❞আহ!
যাত্রী ভাই বোবা হয়ে গেল।চোখগুলো টলমল করছে।লুকাতে চেয়েও লুকাতে পারেননি।পানি গড়িয়ে পড়ছে।মদীনাওয়ালার ডাক এল।রিক্সাওয়ালা ভাইটি হয়ে গেল মুনিবের কাছে মক্ববুল।যাত্রী ভাইয়ের মুখে তৈয়বা যাত্রার সুসংবাদ পেয়ে রিক্সাওয়ালা ভাইটি তাঁর ভাইকে বুকে জড়িয়ে কান্না শুরু করে দিল।দুইজনের চোখের দিকে তাকানো যাচ্ছিলো না।
[হযরত আনাস رضي الله عنه বর্ণনা করেছেন,নবী করিম ﷺ'র পবিত্র ইরশাদ মোবারক—
لا يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ حَتَّى أَكونَ أحَبَّ إِلَيْهِ مِنْ وَالِدِهِ وَوَلَدِه وَالنَّاسِ أَجْمَعينَ
তোমাদের মধ্যে থেকে কোনো ব্যক্তি ততক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ ঈমানদার হতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত আমি নবী তার কাছে তার পিতা-মাতা, ছেলে-মেয়ে ও সমস্ত মানুষ থেকে অধিক প্রিয় না হব।]
~শাহরিয়ার নয়ন