বিষয়ঃ গালিবাজ বক্তা
-মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসাইন কাদেরী
================
গালিবাজ বক্তা এ কথাটা লিখতেও লজ্জা লাগতেছে বক্তা কী করে গালিবাজ হয়? অথচ হাদিসে আছে, মুমিন কখনো দোষারোপকারী, অভিশাপদাতা, অশ্লীলভাষী ও গালিগালাজকারী হয় না। (তিরমিজি, হাদিস নং : ২০৪৩)
আরেক হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘মুসলিমকে গালি দেওয়া ফাসেকি [আল্লাহর অবাধ্যাচরণ] এবং তার সঙ্গে লড়াই ঝগড়া করা কুফরি। (বুখারি, হাদিস নং: ৬০৪৫, ৭০৭৬; তিরমিজি, হাদিস নং: ১৯৮৩)।
বক্তারা দাবী করেন তারা কুরান হাদীসের আলোকে সঠিক কথাগুলো বলেন কিন্তু শত্রুরা এগুলোকে গালি বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে, আমরা তাদের ভুলগুলো ধরিয়ে দিলে তারা বলে আমরা গালি দিয়েছি। আবার কেউ কেউ একটু আগ বাড়িয়ে বলেন যে কিছু মানুষকে গালি দেয়াই উচিত বরং তারা কিছু নির্দিষ্ট মানুষকে গালি দেয়ার পক্ষেও
কুরান হাদীসের দলীলও পেশ করেন।
দ্বীনের দাওয়াতি কাজে গালিগালাজ সম্পূর্ণ ইসলামবিরোধী কাজ। বিশুদ্ধ পদ্ধতি তো রাব্বুল আলামিন কুরানে কারিমেই বলে দিয়েছেন-,‘اُدۡعُ اِلٰی سَبِیۡلِ رَبِّکَ بِالۡحِکۡمَۃِ وَ الۡمَوۡعِظَۃِ الۡحَسَنَۃِ وَ جَادِلۡہُمۡ بِالَّتِیۡ ہِیَ اَحۡسَنُ ؕ اِنَّ رَبَّکَ ہُوَ اَعۡلَمُ بِمَنۡ ضَلَّ عَنۡ سَبِیۡلِہٖ وَ
ہُوَ اَعۡلَمُ بِالۡمُہۡتَدِیۡنَ ﴿۱۲۵
তোমরা আহ্বান করো তোমাদের রবের পথে, হিকমাহ (উত্তম কলা-কৌশল) এবং সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে, এবং তাদের সাথে ওই পন্থায় তর্ক করুন, যা সর্বাধিক উত্তম হয়। নিশ্চয় আপনার রব তাকে ভালভাবে জানেন, যে তাঁর পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে এবং তিনি ভালভাবে জানেন সৎপথ প্রাপ্তদেরকে। ’ (সুরা-১৬ নাহল, আয়াত: ১২৫)।
কেউ ভুল করলে, মন্দ কথা বললে, আপনার বিরুদ্ধে কিংবা ধর্ম নিয়ে না বুঝে অপব্যাখ্যা দিলে তাকেও কিভাবে মোকাবেলা করবেন সেটাও স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা শিখিয়ে দিয়েছেন- আল্লাহ তাআলা বলেন,-اِدۡفَعۡ بِالَّتِیۡ ہِیَ اَحۡسَنُ فَاِذَا الَّذِیۡ بَیۡنَکَ وَ بَیۡنَہٗ عَدَاوَۃٌ کَاَنَّہٗ وَلِیٌّ حَمِیۡمٌ
‘তুমি এমন উত্তমভাবে মন্দের মোকাবিলা করবে, যাতে তোমার সঙ্গে যার শত্রুতা রয়েছে সে–ও প্রাণের বন্ধু হয়ে যায়।’ (সুরা-৪১ হামিম সাজদাহ, আয়াত: ৩৪)। সুবহানাল্লাহ কী চমৎকার শিক্ষা!!
জারজ, মাদারি, কুত্তা ইত্যাদি শব্দগুলো আমাদের দেশে জঘন্য ও নিকৃষ্ট গালি শব্দ হিসেবে বিবেচিত হয় অতএব একজন আলেম তথা নবীর ওয়ারিশের মুখে এমন শব্দ কথা কখনোই কাম্য হতে পারেনা।
বক্তা কিংবা শ্রোতা সবার এমন এক অবস্থা হয়েছে যে আমরা চিন্তাভাবনা ব্যতীত দ্রুত সিদ্ধান্তে চলে যাচ্ছি। এটাও উচিত নয়। প্রতিটি ঘটনার পেছনেই কারণ থাকে। সেই কারণ হতে পারে যৌক্তিক কিংবা অযৌক্তিক।
কারণ বিবেচনার আগে আমরা ব্যক্তির সম্পর্ককে প্রাধান্য দিয়ে কর্ম বিবেচনা করলে তা স্বার্থপরতার ঘৃণ্য চরিত্রের প্রকাশ বৈ ভীন্ন কিছু নয়।
আমরা কারো খারাপ কিছু প্রকাশ হলে আগে চিন্তা করি সে আমার দলের নাকি বিরোধী দলের? নিজের দলের হলে পজিটিভ ব্যাখ্যা খোঁজি আর বিরোধী দলের হলে এটার সাথে আরো কিছু সংযুক্ত করে বাতাসের সাথে ছড়িয়ে দিয়ে প্রচার করি। মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য হল নেতিবাচক বিষয়ে আগ্রহ বেশি। অপচন্দের মানুষের খারাপ কিছু প্রকাশিত হলে তিলকে তাল বানাতে এক মিনিট ও সময় নেয়না। কিন্তু এটা কোন মো'মিনের চরিত্র হতে পারেনা।
কারণ কারো মন্দ বিষয়ে প্রচারণা করা আল্লাহ পচন্দ করেন না। আল্লাহ বলেন- لَا یُحِبُّ اللّٰہُ الۡجَہۡرَ بِالسُّوۡٓءِ مِنَ الۡقَوۡلِ اِلَّا مَنۡ ظُلِمَ ؕ وَ کَانَ اللّٰہُ سَمِیۡعًا عَلِیۡ
“আল্লাহ্ কোন মন্দ বিষয় প্রকাশ করা পছন্দ করেন না। তবে কারো প্রতি জুলুম হয়ে থাকলে সে কথা আলাদা। আল্লাহ্ শ্রবণকারী,বিজ্ঞ”। [সূরা আন নিসা, ৪:১৪৮]
ইবনে আব্বাস (রা:) এই আয়াতের তাফসীরে বলেন: “আল্লাহ্ পছন্দ করেন না যে, আমরা একে অন্যের বিরুদ্ধে বদ্দোয়া বা মন্দ বিষয় প্রকাশ করি, যদি না আমাদের উপর অন্যায় করা হয়। তবে যদি কারো উপর জূলূম করা হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে এই ব্যাপারে আল্লাহ্র অনুমতি রয়েছে। তারপরও এই ব্যপারে ধৈর্য ধারন করাই উত্তম।” [তফসীর ইবনে কাসীর]
নবী করিম (সা.) এরশাদ করেছেন ‘যে-কেউ অন্যের দোষ গোপন রাখবে, আল্লাহ দুনিয়া ও আখেরাতে তার দোষ গোপন রাখবেন।’ (মুসলিম : ২৬৯৯)।
আমরা কুরান হাদীসের প্রকৃত শিক্ষা থেকে কত দূরে সরে গেছি আপনি নিজেকে দিয়েই চিন্তা করুন। কোন আলেমকে পচন্দ না হলে আমরা তাঁর পারিবারিক বিষয়ের গোপন কথাগুলোও প্রচার করতেছি। ভাইরাল করতেছি। হায় আফসোস! হায় আফসোস!
আল্লাহ পাক বলেছেন সত্য নিশ্চিত না হয়ে ধারণা করে
কারো সম্পর্কে কিছু বলাও বড় পাপ। অথচ আমরা ফেসবুক পোস্ট পেয়ে সত্য-মিথ্যা যাচাই না করেই পোস্ট করতেছি, বিরোধী মতাদর্শের মানুষটিকে খারাপ প্রমাণের জন্য ভুল তথ্যকেও ভাইরাল করছি। অথচ আল্লাহ বলেন-
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اجۡتَنِبُوۡا کَثِیۡرًا مِّنَ الظَّنِّ ۫ اِنَّ بَعۡضَ الظَّنِّ اِثۡمٌ وَّ لَا تَجَسَّسُوۡا وَ لَا یَغۡتَبۡ بَّعۡضُکُمۡ بَعۡضًا ؕ اَیُحِبُّ اَحَدُکُمۡ اَنۡ یَّاۡکُلَ لَحۡمَ اَخِیۡہِ مَیۡتًا فَکَرِہۡتُمُوۡہُ ؕ وَ اتَّقُوا اللّٰہَ ؕ اِنَّ اللّٰہَ تَوَّابٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۱۲﴾
49:12 হে ঈমানদারগণ! তোমরা বহুবিধ অনুমান থেকে বিরত থাকো। নিশ্চয় কোন কোন অনুমান পাপ হয়ে যায় এবং দোষ তালাশ করো না আর একে অপরের গীবত করো না। তোমাদের মধ্যে কি কেউ এ কথা পছন্দ করবে যে, যে আপন মৃত ভাইয়ের গোশ্ত ভক্ষণ করবে? বস্তুত; এটা তোমাদের নিকট পছন্দীয় হবে না। এবং আল্লাহ্কে ভয় করো। নিশ্চয় আল্লাহ্ খুব তাওবা ক্ববূলকারী, দয়ালু।
(সুরা হুজরাত-১২)
যেমন - সাম্প্রতিক হাসানুর রহমান নক্সবন্দি হুজুরের পারিবারিক একটা বিষয় নিয়ে অনেকে ভাইরাল করতেছে। যারা ভাইরাল করতেছে তারা সত্যমিথ্যা যাচাই না করে মুদ্রার এক পিঠ বিবেচনা করেই করতেছে। কিছু অনলাইন পত্রিকা উনার চতুর্থ স্ত্রী বলে একটা মিথ্যাচার করেছে ব্যাস নক্সবন্দিকে যারা পচন্দ করেনা তারা যেন এক উপভোগ্য আলোচনার খোরাগ পেয়ে গেছে। পোস্টকারী কয়েকজনের কাছে জানতে চাইলাম আপনারা কি প্রমাণ দিতে পারবেন এটা তার চতুর্থ স্ত্রী ছিল? তাদের উত্তর ছিল অনলাইন পত্রিকার ছেপেছে এটাই। দেখেন সত্য-মিথ্যা যাচাই না করে এভাবেই তারা ধারণার বশবর্তী হয়ে কবিরা গুনাহে লিপ্ত হচ্ছে তারা নিজেরাও বুঝতেছেনা।
আমাদের মাঝে আরো একটা ভুল ধারণা হচ্ছে আমরা শুধু আমলের ওয়াজগুলোকেই সঠিক ও আসল ওয়াজ হিসেবে গ্রহণ করতেছি। এটা স্পষ্টত ইসলাম বিদ্বেষীদের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েই এমনটা হচ্ছে। ইবলিশ শয়তান এক্ষেত্রে শতভাগ সফল হয়েছে।
সঠিক আকীদার প্রচার এত লোপ পেয়েছে যে, এখন আকীদার কথা বললেই জঙ্গি,গঅং, কিংবা গালিবাজ তকমা লেগে যাচ্ছে। আমরা ভুলেই গেছি যে ইবলিশের লক্ষকোটি বছরের আমল বরবাদ হয়ে গিয়েছে তার বদ আকিদার কারণে।
قَالَ مَا مَنَعَکَ اَلَّا تَسۡجُدَ اِذۡ اَمَرۡتُکَ ؕ قَالَ اَنَا خَیۡرٌ مِّنۡہُ ۚ خَلَقۡتَنِیۡ مِنۡ نَّارٍ وَّ خَلَقۡتَہٗ مِنۡ طِیۡنٍ ﴿۱۲﴾
7:12 (তিনি) বললেন, “কোন বস্তু তোমাকে নিবৃত্ত করলো যে, তুমি সাজ্দা করলে না, যখন আমি তোমাকে নির্দেশ দিয়েছিলাম?’ (সে) বললো, ‘আমি তাঁর চেয়ে শ্রেষ্ঠ, আপনি আমাকে আগুন হতে সৃষ্টি করেছেন এবং তাকে মাটি হতে সৃষ্টি করেছেন’। (সূরা আরাফ-১২)
وَ اِذۡ قُلۡنَا لِلۡمَلٰٓئِکَۃِ اسۡجُدُوۡا لِاٰدَمَ فَسَجَدُوۡۤا اِلَّاۤ اِبۡلِیۡسَ ؕ اَبٰی وَ اسۡتَکۡبَرَ ٭۫ وَ کَانَ مِنَ الۡکٰفِرِیۡنَ ﴿۳۴﴾
2:34 এবং (স্মরণ করুন!) যখন আমি ফিরিশ্তাদেরকে নির্দেশ দিলাম, ‘তোমরা আদমকে সাজদা করো।’ তখন সবাই সাজদা করেছিলো, ইবলীস ব্যতীত; সে অমান্যকারী হলো ও অহংকার করলো এবং কাফির হয়ে গেলো। (সুরা বাকারা-৩৪)
অতএব আমাদেরকে আমলের চেয়েও আকীদার প্রতি অত্যাধিক গুরুত্ব দেয়া উচিত কেননা আকীদা নষ্ট হলে সকল আমল বরবাদ হয়ে যাবে। আকীদা(বিশ্বাস) বিভিন্ন কারণে নষ্ট হতে পারে এমন কি কারো ব্যবহারের এদিক সেদিক হলেও এটা নষ্ট হয়ে যাবে ফলে আকীদার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। আকীদার উপর ঈমান নির্ভর করে। সঠিক আকীদাপোষণকারীই ঈমানদার। ঈমান বিহীন আমলের কোন মূল্য নেই।
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَرۡفَعُوۡۤا اَصۡوَاتَکُمۡ فَوۡقَ صَوۡتِ النَّبِیِّ وَ لَا تَجۡہَرُوۡا لَہٗ بِالۡقَوۡلِ کَجَہۡرِ بَعۡضِکُمۡ لِبَعۡضٍ اَنۡ تَحۡبَطَ اَعۡمَالُکُمۡ وَ اَنۡتُمۡ لَا تَشۡعُرُوۡنَ ﴿۲﴾
49:2 হে ঈমানদারগণ! নিজেদের কন্ঠস্বরকে উচু করো না ওই অদৃশ্যের সংবাদদাতা (নবী)- এর কন্ঠস্বরের উপর এবং তাঁর সামনে চিৎকার করে কথা বলো না যেভাবে পরস্পরের মধ্যে একে অপরের সামনে চিৎকার করো যেন কখনো তোমাদের আমলসমূহ নিষ্ফল না হয়ে যায় আর তোমাদের খবর থাকবে না। (সুরা হুজরাত-২)
এই আয়াত আমাদেরকে বুঝিয়ে দিচ্ছে রাসুলের শানে ব্যবহারের ক্ষেত্রে কতটা সতর্ক থাকতে হবে।
রাসুলের শানে আঘাত আসে এমন ব্যবহারে সব আমল নষ্ট হয়ে যাবে তা স্পষ্ট উক্ত আয়াতে উল্লেখ আছে। রাসুলের ভালোবাসার নামই ঈমান। তিনিই ঈমানের রূহ।
হাদীস শরীফে এভাবে বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত মুমিন হতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত আমি তার কাছে তার পিতা ও সন্তানের চেয়ে, সকল মানুষের চেয়ে, এমনকি তার প্রাণের চেয়েও অধিক প্রিয় না হই। -সহীহ বুখারী, হাদীস : ৬৬৩২; সহীহ মুসলিম ১/৪৯,
কুরআন মজীদে আল্লাহ তায়ালা বলেন-
النَّبِيُّ أَوْلَى بِالْمُؤْمِنِينَ مِنْ أَنْفُسِهِمْ
অর্থাৎ নবীর সঙ্গে ঈমানদারের প্রাণেরও অধিক সম্পর্ক। তিনি তাদের সত্তা থেকেও তাদের কাছে অগ্রগণ্য। (সূরা আহযাব : ৬)
অতএব আকীদার বিষয়ের ওয়াজগুলোকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে শুনতে হবে। আর আকীদার ওয়াজ মানে যারা ভ্রান্ত আকীদা ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে তাদের ভ্রান্ত আকীদার স্বরূপ উন্মোচন করে কুরান হাদীসের সঠিক কথাগুলো বলা।
স্বাভাবিকভাবেই এখানে সেসব ব্যক্তিদের আলোচনা চলে আসবে যারা মানুষকে ভ্রান্ত আকিদার দিকে ধাবিত করতেছে।
সুতরাং কারো মতাদর্শ আকীদার জন্য হুমকি মনে হলে তাদের মতাদর্শ সম্পর্কে জাতিকে সচেতন করা আলেমদের এক নাম্বার আবশ্যকীয় দায়িত্ব ও কর্তব্য। এক্ষেত্রে হিকমা ও সুন্দর উপদেশ নীতি তথা কুরানের নীতি অপসরণ করা আবশ্যক। গালিগালাজ করে দ্বীন প্রচার করতে চাইলে বক্তা শ্রোতা উভয়েই গোমরাহিতে নিমজ্জিত হবে।
বর্তমানে ইসলাম নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীরা সবচাইতে বেশি আঘাত করছে আকীদার উপর। আকীদার কেন্দ্রবিন্দু রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিয়ে নানা ধরনের মতাদর্শের প্রচারণা হচ্ছে। যেহেতু রাসুলের ব্যাপারে সামান্য ভুল বিশ্বাস ঢুকাতে পারলেই সব আমল বরবাদ হবে সেহেতু বাতিলরা এক্ষেত্রেই নিজেদের কৌশলকে গুরুত্ব দিয়ে ব্যবহার করতেছে। আর সেজন্য ইসলামের মূলধারা আহলে সুন্নত ওয়াল জামাত বরাবরের মতই প্রায় প্রতিটি মাহফিলেই আকীদার ব্যাপারে বিশেষত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর শানমান ও ভালোবাসার বিষয়ে আলোচনা করেন।
যাদেরকে দেখবেন আকীদার ধারে কাছে নাই শুধু আমল আমল করে তাদের প্রচার প্রসার সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা অনুযায়ী হয়। তারা মিষ্টভাষী হয়। তাদের স্টুডিও পরিপাটি হয়। তারা উচ্চ শিক্ষিত হয়। তাদের প্রচার বেশি হয়। অনলাইন জগতে তারাই সেলিব্রিটি। কারণ তাদের পেছনে কোটি কোটি ডলার ইনভেস্টমেন্ট হয়। এদেরকে ব্যবহার করেই ইসলাম বিদ্বেষীরা ইসলামের বারোটা বাজিয়ে দিচ্ছে।
এরাই মুসলিম মিল্লাতের আসল বিশ্বাস ঘাতক।
হ্যাঁ আমলের ওয়াজ বাদ দেয়া যাবেনা। তবে আকীদার ওয়াজ ছেড়ে দেয়া যাবেনা। উভয়ের মধ্যে ব্যালেন্স তথা ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে আকিদা বিশুদ্ধ রাখা এটাও আমলের অংশ। এটা আমলে নফসি।
আমাদের আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টির উদ্দেশ্যই কে ভালো আমল করছি তা পরীক্ষা করার জন্য।
الَّذِیۡ خَلَقَ الۡمَوۡتَ وَ الۡحَیٰوۃَ لِیَبۡلُوَکُمۡ اَیُّکُمۡ اَحۡسَنُ عَمَلًا ؕ وَ ہُوَ الۡعَزِیۡزُ الۡغَفُوۡرُ ۙ﴿۲﴾
67:2 তিনি, যিনি মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমাদের পরীক্ষা হয়ে যায়- তোমাদের মধ্যে কার কর্ম অধিক উত্তম। এবং তিনিই মহা সম্মানিত, ক্ষমাশীল। (সুরা মুলক-০১)
আল্লাহ আমাদের সবাইকে বুঝার তাওফিক দান করুক -আ-মীইন বিহুরমাতি ছায়্যিদিল মুরসালীইন।