বসরা শহরে এক নেককার মহিলা বাস করতেন। যখন তাঁর মৃত্যু সময় ঘনিয়ে আসল, তখন তিনি সন্তানকে অছিয়ত করলেন, আমাকে ঐ কাপড় পরিয়ে দাফন করবে, যা পরে আমি রজব মাসে ইবাদত করতাম। অতঃপর একদিন তাঁর ইন্তিকাল হয়ে গেল। তাঁর ছেলে তাঁকে অন্য কাপড়ের কাফন পরিয়ে দাফন করে দিল।

কবরস্থান থেকে সে যখন ঘরে ফিরে আসল তখন এই অলৌকিক ঘটনা দেখে অবাক হয়ে গেল যে, সে যে কাফনের কাপড় দিয়ে তার মাকে দাফন করেছিল ঐ কাফনের কাপড় তার ঘরে পড়ে আছে, আর অছিয়তকৃত কাপড়টি আপন জায়গা থেকে অদৃশ্য হয়ে গেছে। এমনসময় অদৃশ্য থেকে আওয়াজ আসল! “তােমার কাফন ফেরত নাও! 

আমি তাঁর জন্য ঐ কাফনের ব্যবস্থা করেছি, (যার জন্য সে অছিয়ত করেছিল) যে ব্যক্তি রজবের রােযা রাখে, আমি তাকে তার কবরে কষ্টে রাখিনা।” (মুযহাতুল মাযালিছ, খণ্ড -১, পৃষ্ঠা-২০৮) 

সুবহানাল্লাহ! আল্লাহ তাআলার রহমত তাঁর উপর বর্ষিত হােক এবং তার সদকায় আমাদের বিনা হিসাবে ক্ষমা হােক। 

রজবের বিভিন্ন নাম ও মর্মার্থ “মুকাশাফাতুল কুলুব” এ বর্ণিত আছে: (রজব) শব্দটি মূলত (তারজীব) থেকে গৃহীত। এর অর্থ সম্মান করা। এটাকে (আল আছাব) অর্থাৎ সর্বাপেক্ষা বেশী দ্রুত প্রবাহমান এবং উচ্ছাসিতও বলা হয়, কারণ এ বরকতময় মাসে তাওবাকারীদের উপর রহমতের উচ্ছাস অতিমাত্রায় বৃদ্ধি পায়, আর ইবাদতকারীদের উপর ইবাদত কবুলের জ্যোতিরশ্মির স্রোত উপছে পড়ে।

এই মাসকে (আল আছাম্মু) অর্থাৎ সর্বাপেক্ষা বধিরও বলা হয়। কারণ এ মাসে যুদ্ধ বিগ্রহের কোন শব্দ শুনা যায় না। (মুকাশাফাতুল কুলুৰ, পৃষ্ঠা- ৩০১) “গুনইয়াতুত তালিবীন” এ রয়েছে এ মাসকে (শাহরে রজম) ও বলা হয়। কারণ এ মাসে শয়তানদেরকে রজম অর্থাৎ পাথর বর্ষণ করা হয়। এ মাসকে (আম্মু) অর্থাৎ অধিক বধিরও বলা হয়।

কারণ এ মাসে কোন জাতির উপর আল্লাহ তা'আলার আযাব অবতীর্ণ হওয়ার ব্যাপারে শুনা যায় নি। আল্লাহ তাআলা পূর্ববর্তী উম্মতদেরকে প্রতিটি মাসে আযাব দিয়েছেন কিন্তু এ মাসে কোন জাতিকে আযাব দেননি। (গুনইয়াতুত তালিবীন, পৃষ্ঠা- ২২৯) 

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে এই মাসের বরকতে ক্ষমা করে নেককারদের অন্তর্ভুক্ত বানিয়ে দিন। বেশি বেশি ইবাদত করার, গুণাহ থেকে বেঁচে থাকার তৌফিক দান করুন।


জাজাকাল্লাহু খাইরান

 স্বাধীন আহমেদ। 

Top