তুর্কি নবঃজাগরণের পর্দার পিছনের কারিগর

<div style="text-align: justify;"><br><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgQj08m9Zn1PGLcgpYg21RF0Il7QAAHEb2YQnu7vJBh9br8VuXzP0Frt1YrT1TEig3lp4AsVJLjf-EvB8Ng-WyfuRGXC66nqro_jOFCFUyteodhttxNhLXvVQhMwdKFtINbYwRXlcALb3OV/s1600/FB_IMG_1608026045343.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="240" data-original-width="480" height="160" loading="lazy" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgQj08m9Zn1PGLcgpYg21RF0Il7QAAHEb2YQnu7vJBh9br8VuXzP0Frt1YrT1TEig3lp4AsVJLjf-EvB8Ng-WyfuRGXC66nqro_jOFCFUyteodhttxNhLXvVQhMwdKFtINbYwRXlcALb3OV/s1600-rw/FB_IMG_1608026045343.jpg" width="320"></a></div><br></div><div style="text-align: justify;">তুর্কি নবঃজাগরণের পর্দার পিছনের কারিগরঃ</div><div style="text-align: justify;">--------------------------  ----------------------------</div><div style="text-align: justify;">তুরস্ক!!শব্দটি শুনলেই কিছু বিষয় মনের স্ক্রীণে অজান্তেই  ভেসে উঠে। পর্যায়ক্রমিক কিছু শব্দবিন্যাস আপনা-আপনিই তৈরী হয়ে যায়।</div><div style="text-align: justify;">যেমন: খিলাফাত, ইসলামি শক্তি, সুফি স্বর্গ, উসমানী সম্রাজ্য,যোদ্ধা জাতী,বিশ্বযুদ্ধ,কামাল আতাতুর্ক, স্যেকুলারিজম, আদনান মেন্দেরেস সাথে বর্তমানের হালের এরদোয়ান।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">তুরস্ক, আমাদের দেশের মানুষের দৃষ্টিগোচরে আসে বছর দশেক আগে।বিশ্ব রাজনীতি,  বিভিন্ন দেশে মানবিক সহায়তা ও অন্যান্য কিছু প্রাসঙ্গিক কারণে।আমাদের চোখে তা হয়তো নতুন লাগছে,  কেননা পূর্বে আমাদের কাছে তথ্য ছিল না। </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অনেক কথা, অনেক অজানা তথ্য পড়ে আছে ইতিহাসের তলানীতে। সেই ইতিহাস ঘাটতে গিয়ে বেরিয়ে আসে চমক জাগানো সব তথ্য এবং চিন্তার মোড় ঘুরিয়ে দেয়া অনেক ঘটনা। ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় যে, আজকের তুরস্কের মুসলিম সমাজের উত্থান গল্পের শুরু সেই চল্লিশের দশকে। নব তুর্কির এই উত্থান গল্পের নায়কেরা সর্বদা আড়ালেই থেকে গিয়েছেন। স্বয়ং তার্কিতে খুব কম লোকই তাদের আলোচনা করে।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">চল্লিশের দশক!!!</div><div style="text-align: justify;">খিলাফাতের পতনের দুই দশক পর তুর্কিতে মুসলিমদের উত্থানের গল্প তৈরী হয়েছিলো। ইতিহাসের চলচিত্রের প্লট তৈরী হয়েছিলো।</div><div style="text-align: justify;">সেই প্লট তৈরী করছিলেন দুজন সুফি মানুষ।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">১:: শায়েখ আব্দুল_আজিজ_বাক্কানীঃ (১৮৯৫-১৯৫২)</div><div style="text-align: justify;">--উনার পরিবার কাজানের বাসিন্দা। উসমানী আমলে বিখ্যাত হালিল এফেন্দির কাছ থেকে কুর'আন ও হাদীসের শিক্ষাগ্রহণের পর তিনি কাজান চলে যান।বাবার মৃত্যুর পর ১৯০৯ সালে তিনি বুখারায় গমণ করেন। সেখানে ৫ বছর অবস্থানকালে সেসময়ের বিখ্যাত স্কলারের কাছ থেকে দ্বীনী শিক্ষা গ্রহণ করেন। বলশেভিক বিপ্লবের পর তিনি ইস্তাম্বুল ফিরে আসেন।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">২::  শায়েখ মেহমেত_জাহিদ_কতকুঃ (১৮৯৭-১৯৮০)</div><div style="text-align: justify;">-- উসমানী ও রাশিয়ার মধ্যকার যুদ্ধের পর তার পরিবার বুরসায় অভিবাসী হিসেবে আসেন। তিনি তার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা বুরসা থেকে সম্পন্ন করেন। বয়স যখন ১৮ তখন ১ম বিশ্বযুদ্ধের দরূণ সেনাবাহিনী থেকে তার ডাক আসে। যুদ্ধে উসমানী বাহিনীর পক্ষে সিরিয়ান ফ্রন্টে তিনি যুদ্ধ করেন। উনার বড় ভাই 'আহমেদ শাকির' জেরুজালেম এবং বিখ্যাত চানাক্কালেতে যুদ্ধের পর ২৮ বছর বয়সে শহীদ হন সম্মুখযুদ্ধে। যুদ্ধের পর তিনি ইস্তাম্বুল ফিরে আসেন।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">দুজনেই ছিলেন #সুফী_নকশাবন্দী তরিকার বিখ্যাত শায়েখ ও দরবেশ। তারা ছিলেন একে অপরের বন্ধু। একই সাথে পড়ালেখা করেছিলেন। একই সাথে তুরস্কের মাটিতে ইসলামকে পুনরায় উজ্জীবিত করার স্বপ্ন দেখেছিলেন এবং সেজন্য এমন কিছু যোগ্য ছাত্র ও শিষ্য তৈরী করেছিলেন যারা পুরো তার্কির চেহারা পালটে দিয়েছিলো।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">তৎকালীন তুর্কিতে সুফিদের যে ধারা ছিলো,</div><div style="text-align: justify;">সে ধারার ভিতর থেকেও এই দুজন ছিলেন ব্যতিক্রম। সুফিদের অন্যতম বৃহত তরিকার প্রধান (পীর/শায়েখ) হওয়ার পাশাপাশি মুসলিমদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণের গুরুত্ব সম্পর্কে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের বুঝাতেন।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">দুজনই ছিলেন তার্কির রাজনীতির ইতিহাসের অমর ব্যক্তিত্ব, ইসলামী আন্দোলন "মিল্লি গুরুশ" এর প্রতিষ্ঠাতা প্রফে.ড.নাজমুদ্দীন এরবাকানের উস্তাদ।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">শায়েখ মেহমেত জাহিদ প্রফে: এরবাকানের ব্যক্তিগত মেন্টর (পীর/মুরশিদ) হওয়া সত্ত্বেও ১৯৪৯-৫২ সালে তিনি শায়েখ আব্দুল আজিজ বাক্কানীর দ্বারা ব্যাপক প্রভাবিত হন। তার কাছ থেকে ইসলামের যে আধ্যাত্মিক শিক্ষা তিনি পেয়েছিলেন তা তার পরবর্তী জীবনে প্রতিফলিত হয়েছিল।সুফি শায়েখ বাক্কানী তার বন্ধু শায়েখ মেহমেদ জাহিদকে সাথে নিয়ে তুরস্কের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামী জযবা সম্পন্ন ছাত্রদেরকে একত্র করে শিক্ষা দিতেন। তাদের শিক্ষার প্রভাবে ছাত্ররা এতোবেশি উজ্জীবিত হয়েছিল যে তারা পুরো তুরস্কে ইসলামী পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য একধরণের নিরব গণদাবী তৈরী করেছিল। একধরণের বিপ্লবের আভাস পাওয়া যাচ্ছিল তার্কির আকাশে বাতাসে।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">মসজিদ প্রতিষ্ঠাঃ</div><div style="text-align: justify;">তখন ১৯৪৪ সাল!!</div><div style="text-align: justify;">সেক্যুলার সরকারের স্বর্ণযুগ।তার্কিশে আযান  দেয়া বাধ্যতামূলক করেছিলো।অনেক মসজিদকে  জেলখানায় পরিণত করেছিলো।এই দুই সুফির  প্রচেষ্টায় মানুষ জেগে উঠেছিল, বিশেষ করে যুবকেরা। মানুষের মধ্যে একধরণের বিপ্লবী আভাস পাওয়া যাচ্ছিলো। তাদের সাহসের লাভায় একটু উদগীরণের প্রয়োজন।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">সে উদগীরণের বিস্ফোরক হয়ে তার্কির মানুষের সামনে আসেন তাদের যোগ্য ছাত্র প্রফেসর এরবাকান। সে সময় তিনি ইস্তাম্বুল টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্টের ছাত্র। সেক্যুলারদের সেই স্বর্ণযুগে সেক্যুলারদের প্রাণকেন্দ্র ইস্তাম্বুল টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটিতে ছাত্র এরবাকান ভার্সিটির ইসলামী জযবা সম্পন্ন ছাত্রদের নিয়ে ভার্সিটিতে মসজিদ নির্মাণের দাবী আদায়ে নেমে পড়েন। শেষমেশ কর্তৃপক্ষ তার দাবী মেনে নেয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে মসজিদ নির্মাণ করে। ১৯৪৪ সালে নতুন একটি মসজিদ নির্মাণ পুরো তুর্কি সমাজকে নাড়িয়ে দেয়। মুসলিমদের আপন পরিচয় সম্পর্কে সজাগ করে তোলে।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">সুফি শায়েখ বাক্কানী আধ্যাত্মিক শিক্ষার পাশাপাশি দেশ ও জাতির জন্য কিছু করার প্রেরণা দিতেন সর্বদা। ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশনের উপর তিনি বেশী জোর দিয়েছিলেন। প্রাইভেট সেক্টরে নিজেদের উপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য ভার্সিটিতে পড়ার চেয়ে দেশ জাতি ও ইসলামের জন্য নিজেদেরকে যেন যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম হয় সে বিষয়কে প্রাধান্য দিতেন।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">সুফি শায়েখ আব্দুল আজীজ বাক্কানী ১৯৫২ সালে ইন্তেকালের পর, তরিকতের প্রধান হোন শায়েখ মেহমেত জাহিদ।শায়েখ জাহিদ পূর্ব থেকেই প্রফেসর এরবাকানের পীর ছিলেন। পরবর্তীতে এই মহান শায়েখের শিষ্য হওয়ার সৌভাগ্য হয় রেজাই কুতান, কুরকুত ওজাল, তেমেল কারামোল্লাওলু, তুরগুত ওজাল সহ প্রমুখ ব্যক্তিবর্গের।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">শায়েখ জাহিদ এবং তুরস্কের ১ম কারখানাঃ:: শায়েখ জাহিদ সর্বদা আক্ষেপ করতেন এই বলে,  "আজ আমার সামনে যে গাড়িগুলো চলছে, তা যদি আমরা নিজেরাই তৈরী করতে পারতাম তাহলে কতই না ভাল হতো। দেশের টাকা দেশের ভেতরেই থাকতো। বাইরে থেকে কেনার কোন প্রয়োজন হত না আর।" তাই তিনি তার সেরা ছাত্র নাজমুদ্দিন এরবাকানকে প্রচুর উৎসাহ উদ্দীপনা ও মোটিভেশন দিতেন। পরবর্তীতে তার প্রেরণায় এবং ৩০ বছরের তরুণ প্রফেসর এরবাকানের উদ্যোগে তুরস্কের মাটিতে ১ম মোটর উৎপাদন কারখানা প্রতিষ্ঠিত হয়। নাম দেয়া হয় গুমুশ মোটর। ১৯৫৬ সালে শায়েখ  জাহিদ তার বাসায় সে সময়ের তরুণ ইঞ্জিনিয়ার, উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী সহ প্রায় ২০ জন অতিথিকে আমন্ত্রণ করেন। তিনি তাদের সামনে ফ্যাক্টরী প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব, দেশের উন্নয়ন ও দেশের মানুষের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য উৎপাদন ব্যতীত অন্য কোন পথ যে নেই তা তুলে ধরেন। অতঃপর তিনি গুমুশ মোটরের প্রথম শেয়ার ১,০০০ লিরা দিয়ে কিনে নেন।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">একজন সুফী দরবেশ, দরবারের পীর হয়ে  দেশের বড় বড় ইঞ্জিনিয়ার, ব্যবসায়ীদেরকে ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশনের গুরুত্ব বুঝাচ্ছেন; তার উপর দেশে তৈরীকৃত ১ম মোটর ফ্যাক্টরীর ১ম শেয়ারটিও তিনি নিজে কিনে নিচ্ছেন!!</div><div style="text-align: justify;">(কল্পনা করে দেখা যাক কেমন সেই মজলিশ)</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অতঃপর অতি অল্প সময়ের মধ্যে "গুমুশ ফ্যাক্টরী" ইউরোপের চেয়েও উন্নত ইঞ্জিন তৈরী করতে সক্ষম হয়। ইউরোপের জ্বালানি খরচের স্ট্যান্ডার্ড ছিল ঘন্টায় ৫.৬ লিটার।১মে গুমুশ ফ্যাক্টরী যে ইঞ্জিন বানায় তার জ্বলানি খরচ ছিল ঘন্টায় ৫.৭ লিটার।এক বছরের মাথায় গুমুশ ফ্যাক্টরীর তৈরীকৃত ইঞ্জিনের জ্বালানী খরচ ছিল ঘন্টায় ৫.৫ লিটার!! কিন্তু তার্কি সরকার (তৎকালীন ইসলামপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী সুলেমান দেমিরেল) তা প্রত্যাখ্যান করে এই বলে যে- ইঞ্জিনটি নাকি ইউরোপের স্ট্যান্ডার্ডএ হয়নি।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে- যে তুরস্কে ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান নেই, সেই তুরস্কের মাটিতে ৩০ বছরের এক যুবক ইউরোপের স্ট্যান্ডার্ডের কাছাকাছি একটি ইঞ্জিন (৫.৭ জ্বালানী ব্যয়) তৈরী করার পর তাকে যেখানে বাহবা দেয়ার কথা, সম্মান দেয়ার কথা, সহযোগিতা করার কথা, যেখানে তাদের উচিৎ ছিল এই প্রচেষ্টাকে দেশের মানুষের সামনে তুলে ধরে দেশের কোটি যুবককে উৎসাহিত করা, সেখানে উল্টো তা বাতিল করে  দমিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হল।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">যুক্তির বিচারে ১ম তৈরীকৃত ইঞ্জিন মানঃসম্মত হিসেবে স্বীকৃতি না দেয়ার কারণ ছিলো তাদের শর্তানুসারে গ্রহণযোগ্য,(যদিও তা অযৌক্তিক)।কিন্তু জ্বালানী ব্যয় যখন ৫.৫ লিটার করা হল অর্থাৎ রাষ্ট্রযন্ত্রে বসা লোকদের আদর্শ ইউরোপের স্ট্যান্ডার্ডকে যখন ছাড়িয়ে গেল তখন এই আবিষ্কারকে তো মাথায় তুলে নাচার কথা ছিল, কিন্তু তা না করে অজানা কারণে এটাকেও মানঃসম্মত হয়নি বলে, স্বীকৃতি দেয়া হল না!!</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">মিল্লি গুরুশ মুভমেন্টঃ</div><div style="text-align: justify;">(ইসলামী আন্দোলন)</div><div style="text-align: justify;">রাজনীতির এই মারপ্যাচের কাছে গুমুশ ফ্যক্টরী বারবার পরাজিত হচ্ছিলো।তখন শায়েখ জাহিদ রাজনীতিতে অংশগ্রহণের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলেন। উন্নয়নের ক্ষেত্রে এখন সবচেয়ে বড় বাধা রাজনৈতিক শক্তি।তিনি সুফি মানুষ তাই সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছিলেন রাজনীতির বাইরে থেকে কিছু করার। কিন্তু সম্ভব হয়নি। সেজন্য তার্কির বিভিন্ন সুফি তরিকার শায়েখদের(পীর)  সাথে আলোচনা করলেন। তৎকালীন সময়ে ইসলাম প্রচার যে হতো না, তা না। ব্যক্তিজীবনে ইসলামের প্রচার ও প্রসারের জন্য কাজ করছিল কয়েকটি দল। তাদের দাওয়াতের লক্ষ্য ছিল শুধুমাত্র ব্যক্তিগত আমল-আখলাক। কিন্তু সামাজিকভাবে কারও কোন চিন্তা-ভাবনা ছিল না আর রাষ্ট্রীয়ভাবে কিছু চিন্তা-ভাবনা করা কল্পনারও অতীত। </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">তখন পর্যন্ত তিনটি দল বড় আকারে ইসলামের  প্রচার ও প্রসার নিয়ে কাজ করতোঃ</div><div style="text-align: justify;">১- তরীকত পন্থিরা। এই আদি দলটি বরাবর ধারাবাহিক কাজ করে গেছে। এরা একটি নির্দিষ্ট সীমানার মধ্যে গোপনে কাজ করতো। তাদের কাজগুলো ছিল চিন্তার গন্ডীর ভেতরে। বাস্তবে  পদক্ষেপ নিতে পারতো না।</div><div style="text-align: justify;">২- নুরসীর অনুসারীরা। তারাও গোপনে গোপনে ইসলামের প্রচার করতো। তবে তারা কুর'আন ও হাদীসের পরিবর্তে অতিমাত্রায় বদিউজ্জামান সাঈদ নুরসী রচিত “রিসালায়ে নূর” এর উপর নির্ভরশীল।</div><div style="text-align: justify;">৩- অপরটি ছিল বুলগেরিয়া থেকে আগত আলেম সুলেয়মান হিলমী তুনাহান এর অনুসারীরা।তারা এখনো বিশ্বাস করেন যে, শুধুমাত্র কুর'আন তেলাওয়াতের মাধ্যমে দেশ ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে!</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">তাদের প্রত্যেকের কাজই ছিল গোপনে এবং তারা তাদের পরিচিত গন্ডীর ভেতরেই কাজ করতে পছন্দ করতো। সামাজিক বা রাজনৈতিক ভাবে কিছু করার সুযোগ ও চিন্তা ভাবনা তাদের মধ্যে ছিল না। তারা রাজনীতিতে অংশগ্রহণের বিষয়টিতে সংকীর্ণতার পরিচয় দেন। </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">কিন্তু রাষ্ট্রীয় শক্তি জনগণের ইসলামের কথা বলে দেশের ভেতরের সকল কিছু একটি নির্দিষ্ট গোষ্টীর কাছে হস্তান্তর করছিলো । ৬০ এর দশকে সাইপ্রাস নিয়ে সবচেয়ে বড় ক্রাইসিস দেখা দেয়। সেখানকার মুসলিমদের উপর গণহত্যা তুরস্কের ইসলামপন্থীদের বিচলিত করে তুলে। ওরা না কোন কথা বলতে পারছিল, না পারছিল কিছু করতে। রাষ্ট্র কয়েকবার মেকি অভিযানের নাম করে আবার ফিরে আসে। সেরকম সত্যিকারের কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করার ইচ্ছা পোষণ করেনি। যদিও সাইপ্রাস ইস্যুতে লৌহ কঠিন কথা বলে জনগণের আস্থা অর্জন করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী সুলেমান দেমিরেল। তিনি শুধু ওই কথা বলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলেন, বাস্তবে কিছু করে দেখাতে পারেন নি। দেশের ইসলামপন্থিরা তাদের ইসলামপ্রিয় নেতা সুলেয়মান দেমিরেলকে চিনতে দেরী করলেও প্রফেঃ এরবাকান ঠিকই তাকে পরখ করে নিয়েছিলেন গুমুশ ফ্যাক্টরী ও পরবর্তী কিছু ঘটনার মাধ্যমে। তিনি তার শায়েখকে সকল বিষয়ে অবহিত করার পর প্রস্তাব দেন আমাদের এখন রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রয়োজন। সকলের মধ্যেই এক ধরণের ভিন্ন চাওয়া-পাওয়া ও নতুন এক আন্দোলন শুরুর ইংগিত পাওয়া যাচ্ছিলো। রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্য আলেমদের সহযোগীতার দরকার ছিল খুব বেশি।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">সেই প্রেক্ষিতে শায়েখ জাহেদ আহমেদের ডাকে ১৯৬৮ সালের শেষ দিকে ৪০ জন শায়েখে   তরিকত নিয়ে তুরস্কের বিখ্যাত শহর কোনিয়াতে একত্রিত হন। তারা প্রায় এক সপ্তাহ ব্যাপি সম্মেলনে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন। অতঃপর সকলে সিদ্ধান্তে উপনীত হোন যে- “তুরস্কে একটি ইসলামী আন্দোলনের প্রয়োজন"।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">শায়েখ জাহিদ আহমেদ প্রস্তাব রাখেন- “তুরস্কের জনগণের নিকট আলেমদের গ্রহণযোগ্যতা এতোটা হয়নি যে লোকজন আমাদেরকে রাজনীতির ময়দানে ভালোভাবে গ্রহণ করবে। জনগণের মনঃমানসিকতা এখনো সেভাবে গড়ে উঠে নি। আমাদের প্রয়োজন কিছু যুবক যারা বর্তমান যুগের তুলনায় সবচেয়ে আধুনিক, বর্তমান টেকনোলোজি সম্পর্কে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে ওয়াকিবহাল, যাদের বেশ-ভূষা, আচার-আচরণ সর্বোত্তম। আমাদের দরকার ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার, দেশের উচ্চপদে আসীন কিছু যোগ্য লোক যাদের কাবিলিয়াত সম্পর্কে যেন কেউ প্রশ্ন তুলতে না পারে, সেই সাথে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়- তাদের সকলেই যেন ইসলাম সম্পর্কে ব্যাপক ও গভীর জ্ঞান রাখে।”</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অতঃপর শায়েখ জাহিদ আহমেদ সকল আলেমদের সামনে মিল্লি গুরুশ আন্দোলনের প্রধান হিসেবে প্রফেঃ ড.নাজমুদ্দিন এরবাকানের নাম প্রস্তাব করেন। কেননা শায়েখ জাহিদ আহমেদ যেসকল গুণের বর্ণনা করেছিলেন তার সবকটিই এরবাকানের মধ্যে বিদ্যমান ছিল। </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">প্রফেঃ এরবাকান একই সাথে বিজ্ঞানী, ইঞ্জিনিয়ার, গণিতবীদ, রাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সফল সভাপতি ছিলেন। অপরদিকে তিনি ছোটবেলা থেকেই শায়েখ  জাহিদের তত্ত্ববধানে কুর'আন, হাদীস, ফিকহ, দর্শন ইত্যাদি বিষয়ে ব্যাপক দক্ষতা লাভ করেছিলেন। উপরি পাওনা হিসেবে যোগ হয়েছিল নাজমুদ্দিন এরবাকানের উসমানী ভাষায় দক্ষতা ও উসমানীদের বিশাল সাহিত্য তার নখদর্পনে থাকা। সকল আলেমগণ শায়েখ  জাহিদের ইলম সম্পর্কে ভালোভাবেই জ্ঞাত ছিলেন। তাই তার প্রস্তাবে সকলের একমত হতে দেরী হয় নি। একমত হওয়ার পর প্রফেঃ  এরবাকানকে সম্মেলনের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। উস্তাদের কথায় এতবড় গুরুদায়িত্ব নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন প্রফেঃ এরবাকান। কিছু সময় চেয়ে নেন সকলের কাছ থেকে। আন্দোলনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এবং এই আন্দোলনের ভবিষ্যত প্রতিকূল পরিবেশ সম্পর্কে তিনি ভালোই অনুধাবন করতে পারছিলেন। প্রফেঃ এরবাকান সম্মেলনের ৪০ জন সুফির সাথে আলাদাভাবে ব্যক্তিগত যোগাযোগ করেন। এরপর তিনি তাদের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে মিল্লি গুরুশ আন্দোলনের গুরুদায়িত্ব নিজ কাধে নিয়ে নতুন যাত্রা শুরু করেন। ১০ জন জানবাজ সহযোদ্ধা নিয়ে নতুন তুর্কি দেশ তৈরীর সংগ্রামে নেমে পড়েন। তাদের উপর ভিত্তি করেই আজ তুরস্ক নিজের পায়ের তলার মাটিতে শক্তভাবে অবস্থান করতে পারছে। পরবর্তীতে তাদের কাজগুলোই স্বর্ণালী ইতিহাস হয়ে টিকে আছে তার্কির ইতিহাসে।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">পরিশেষে…</div><div style="text-align: justify;">সুফি শায়েখ আব্দুল আজিজ বাক্কানী এবং সুফি শায়েখ মেহমেত জাহিদ কতকুর তৈরীকৃত এই ছাত্ররাই তুরস্কের ইসলামী জাগরণের পথিকৃত হিসেবে সকলের কাছে সমাদৃত হয়ে আছে। তাদের শিষ্যরাই তুরস্কে শিল্প বিপ্লব সঙ্ঘটিত করেছে। তাদেরই একজন ছাত্র ১ দিনের জন্য প্রধানমন্ত্রী হয়ে বিগত শতাব্দীর মুসলিমদের একমাত্র বিজয়াভিযান "সাইপ্রাস বিজয়-১৯৭৪" এর প্রধান সেনাপতির ভূমিকা পালন করেছিল। ওরা পুরো তুরস্কের মানুষকে তথা বিশ্ব মুসলিম উম্মাহকে জায়োনবাদীদের বিরুদ্ধে এক করেছিল। তাদের ছাত্ররাই বুক ফুলিয়ে আমেরিকাকে হুংকার দিয়ে বলেছিলে- “আমেরিকা!! তো আমার কী??</div><div style="text-align: justify;">(অর্থাৎ আমেরিকাকে আমরা গণায় ধরি না)</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">ইতিহাসের পাতায় হয়তো শায়েখ আব্দুল আজীজ এবং শায়েখ জাহিদের নাম তেমন জোরালোভাবে শোনা যাবে না। কিন্তু পর্দার আড়ালের এই দুই কারিগরই তুরস্কের মাটিতে এক সাহসী প্রজন্ম তৈরী করেছিলেন যে প্রজন্ম তার্কিসহ, পুরো ইউরোপ, আরব বিশ্ব এবং মধ্য-এশিয়ায় আলোড়ন তৈরী করেছিল। ৭০ এর দশকের পর থেকে তাদের ছাত্ররাই তার্কির রাজনীতির মাঠ দখল করে আছে। এ দুই মহান শিক্ষক নীরবে-নিভৃতে যোগ্য মানুষ তৈরীর কাজে নিয়োজিত ছিলেন। শায়েখ বা শিক্ষক  হিসেবে তারা সফল।সুফি শায়েখরা কখনোই লাইমলাইটে আসেন না। তারা পর্দার আড়ালের কারিগর! তাদের শিষ্যরা প্রকাশিত হয়।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">এই দুই মহান শায়েখকে আল্লাহ বেহেশতের সর্বোচ্চ স্থান দান করুণ। আমীন…</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">------------</div><div style="text-align: justify;">*তুরস্কের খিলাফত পরবর্তী রাজনীতির ইতিহাস জানতে পড়তে পারেন:- নাজমুদ্দিন এরবাকানঃ নতুন বিশ্বব্যবস্থার প্রস্তাবক ও মহান মুজাহিদ।</div><div style="text-align: justify;">©কালেক্টেড (মিম্বার)</div>

তুর্কি নবঃজাগরণের পর্দার পিছনের কারিগর

তুর্কি নবঃজাগরণের পর্দার পিছনের কারিগরঃ --------------------------  ---------------------------- তুরস্ক!!শব্দটি শুনলেই কিছু বিষয় মনের স্ক্...

Read more »

পাগড়ী বাঁধার ফযিলত

<div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"><b style="font-size: 1.25em;">পাগড়ী পরিধান করে নামাজ পড়ার ফজিলতঃ</b><br></div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">ইমাম সাখাভী (رحمة الله) এবং আল্লামা আজলুনী (رحمة الله) এ প্রসঙ্গ এর সমর্থনে দুটি হাদিস বর্ণনা করেছেন। হাদিস দুটি হলঃ</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">رواه الديلمي من حديث ابن عمر مرفوعا بلفظ: صلاة بعمامة تعدل بخمس و عشرين، جمة بعمامة أفضل من سبعين جمعة بلا عمامة. و من حديث أنس مرفوعا: الصلاة في العمامة عشرة ألف حسنة</div><div style="text-align: justify;">-"ইমাম দায়লামী (رحمة الله) তার “আল মুসনাদে ফিরদাউস” গ্রন্থে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (رضي الله عنه) হতে মারফু সূত্রে বর্ণনা করেছেন, রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন : "পাগড়ী পড়ে নামায পড়া পাগড়ীবিহীন হতে ২৫ গুণ উত্তম, আর পাগড়ী পড়ে এক জুমার জামাতের নামায পাগড়ী ছাড়া ৭০ জুমা হতে উত্তম বা সমতুল্য। হযরত আনাস বিন মালিক (رضي الله عنه) হতে মারফু সূত্রে অন্য আরেকটি বর্ণনা রয়েছে রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন, পাগড়ী পড়ে নামায পড়লে দশ হাজার নেকি রয়েছে”।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">ক. দায়লামী, মুসনাদিল ফিরদাউস,২/০৬পৃ. হাদিস:৩৮০৫, হযরত আনাস (رضي الله عنه) এর বর্ণনা।</div><div style="text-align: justify;">খ. দায়লামী,আল-ফিরদাউস,২১০৮পৃ হাদিস:২৫৭১, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (رضي الله عنه) এর সূত্রে।</div><div style="text-align: justify;">গ. ইমাম হাফেজ আব্দুর রহমান সাখাভী : মাকাসিদুল হাসানাহঃ ২৭১ পৃষ্ঠা।</div><div style="text-align: justify;">ঘ. ইমাম আলুনী : কাশফুল খাফা : ২/২৫ হাদিস : ১৬০১</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">👉 ইমাম সাখাভী (رحمة الله) এবং আল্লামা আলুনী মারফু সূত্রে বর্ণনা করেছেন। কিন্তু দ্বঈফ, হাসান, সহিহ কোন কিছুই তারা উল্লেখ করেন নি। তাই বুঝা গেল। হাদিসটির ব্যাপারে কোন মুহাদ্দিস মন্তব্য করেননি। তাদের নীরবতা দ্বারা বুঝা গেল। কমপক্ষে হাদিসটি দুর্বল হলেও ফাযায়েলে আমলের জন্য গ্রহনযােগ্য। কিন্তু আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর উক্ত হাদিস দুটিকে উল্লেখ করে মিথ্যা হাদিস বলে মন্তব্য করেছে। সে ইমাম সাখাভী এবং মুহাদ্দিস আজলুনী এর নাম দিয়ে দাবী করেছেন যে তারা নাকি হাদিস দুটিকে জাল বলেছেন। মা’যা আল্লাহ।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">👉 ইমাম সাখাভী ও ইমাম আলুনী মওদু বা বানােওয়াট তাদের কিতাবে বলেছেন। এমন কোন ইবারত বা কথা তাদের কিতাবে নেই। এজন্যই তারা মূল ইবারত উল্লেখ করেনি, এমন দুই ইমামের নামে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে মাত্র। অথচ ইমাম সাখাভী ও আল্লামা আজলুনী (رحمة الله) দুজনই হাদিসটিকে মারফু বলেছেন।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">🕋 অপর দিকে আল্লামা ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতি (رحمة الله) পাগড়ীর ফযীলত সম্পর্কে একটি হাদিস বা সনদ বর্ণনা করেন যে হাদিসটি হচ্ছে এভাবে,</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">عن جابر رضي الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه و سلم ركعتان بعمامة خير من سبعين ركعة بلا عمامة -</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">-“হযরত যাবের (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত : রাসূল (ﷺ) ইরশাদ ফরমান : পাগড়ীসহ দুরাকাত নামায, পাগড়ী ছাড়া ৭০ রাকাতের চেয়ে উত্তম।”</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">ক. ইমাম দায়লামীঃ মুসনাদুল ফিরদাউসঃ ২/২৬৫পৃ. হাদিস:৩২৩৩।</div><div style="text-align: justify;">খ. ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতি : জামিউস সগীর : ২/১৭ : হাদিস : ৪৪৬৮।</div><div style="text-align: justify;">গ. ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতি : জামিউল আহাদিস : ৪/৪২৬ : হাদিস : ১২৫৭৪।</div><div style="text-align: justify;">ঘ, আল্লামা শায়খ ইউসুফ নাবহানী: ফতহুল কাবির : ২/১৩০ পৃ:হাদিস:৬৬২৫।</div><div style="text-align: justify;">ঙ.আল্লামা ইমাম আজলুনী : কাশফুল খাফা : ২২৩ পৃ: হাদিস : ১৬০১চ. ইমাম সাখাভী : মাকাসিদুল হাসানা : পৃ: ২৭১ হাদিস : ২৯৮।</div><div style="text-align: justify;">চ. ইমাম সাখাভী : মাকাসিদুল হাসানা : পৃ: ২৭১ হাদিস : ২৯৮।</div><div style="text-align: justify;">ছ, আল্লামা মােল্লা আলী ক্বারী : নেহায়া :১/১৪৩পৃ.।</div><div style="text-align: justify;">জ. ইবনে হাজার মক্কী:আল-ফাওয়ায়িল আল ফিকহিয়্যাতুল কোবরাঃ১/১৭০পৃ.।</div><div style="text-align: justify;">ঝ.আব্দুল্লাহ সিরাজি,শরহে মুসলিমঃ২/৩৫পৃ.।</div><div style="text-align: justify;">ঞ.হাসান আবু ইসাবাহ,শরহে মুসলিমঃ২৬/২৮পৃ.</div><div style="text-align: justify;">ট.মুত্তাকি হিন্দীঃ কানযুল উম্মাল:১৫/৩০৬পৃহাদিস:৪১১৬</div><div style="text-align: justify;">ঠ. শাওকানী, ফাওয়াইদুল মওদুআত, ১/১৮৭পৃ. হাদিসঃ৩।</div><div style="text-align: justify;">ড. দরবেশ হুত, আস-সুনানিল মুত্তালিব,১/১৭১পৃ. হাদিস: ৮২৮।</div><div style="text-align: justify;">ঢ. আলুনী, কাশফুল খাফা, ৮৬পৃ. হাদিস : ১৭৮৪।</div><div style="text-align: justify;">ণ. আলবানী : দ্বঈফু জামেঃ হাদিস :৩১২৯, ঘঈফ জামেউস সগীর, হাদিসঃ৩১২৯, দ্বঈফা,হাদিসঃ১২৮   </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">এটাই বুঝা গেলাে, উক্ত হাদীসের একজন রাবী দুর্বল হওয়াতে আমলের ব্যাপারে নিষেধ নেই। যা আমি কিতাবের শুরুতে আলােচনা করে এসেছি। অপরদিকে </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">👉 আল্লামা ইমাম আজলুনী (رحمة الله) উক্ত যাবের (رضي الله عنه) এর হাদীসের ব্যাপারে সর্বশেষ রায় পেশ করে বলে فهو غير موضوع </div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ- উক্ত হাদিসটি জাল নয়।</div><div style="text-align: justify;">[আল্লামা আলুনী : কাশফুল খাফা : ২/২৩ : হাদিস : ১৬০১]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">👉 তবে ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতি (رحمة الله) বলেন হাদিসটির একজন রাবী দুর্বল থাকায় সনদটি দুর্বল।</div><div style="text-align: justify;">[ইমাম সুয়তী : জামেউস্-সগীর : ২১৭ পৃ. হাদিস : ৪৪৬৮]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">সুতরাং একাধিক তরিকায় বর্ণিত হওয়ার কারণে হাদিসটি বর্ণনায় কমপক্ষে হাসান" এর মর্যাদা রাখে। এ ব্যাপারেও কিতাবের শুরুতে বিস্ত রিত আলােচনা করেছি। তাই বুঝা গেল যে ইমাম দায়লামী (রহ.) উক্ত বিষয়টির তিনটি সূত্র বর্ণনা করেছেন। এ পর্যন্ত আমি অধম তিনটি সূত্র আলােচনা করেছি। আমি অনুসন্ধান করে দেখেছি যে, </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">🕋 ইমাম ইবনে আসাকির (রহ.) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাঃ থেকে একটি হাদিস নিয়েছেন। যা উল্লেখিত প্রথম বর্ণনার মতই। হাদীস টি নিম্নরুপঃ</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">صلاة بلا عمامة، وجمعة يامة ثغيل سبعين جبنة بلا عمامة</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">-“নফল অথবা ফরয নামাজে পাগড়ী পড়ে নামাজ পড়া পাগড়ীবিহীন হতে ২৫ গুন উত্তম,আর পাগড়ী পরে এক জুমা পাগড়ীবিহীন ৭০ জুমা থেকে উত্তম।” তাই এই সনদটি গ্রহনযােগ্য,ইবনে উমরের ছেলে হযরত সালেম (رضي الله عنه) এ হাদিসটি বর্ণনাকারী।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">● ইবনে আসাকির,তারিখে দামেস্ক : ৩৭/৫৫ পৃহাদিস : ৪০১৯,</div><div style="text-align: justify;">● শায়খ ইউসুফ নাৰহনী,</div><div style="text-align: justify;">● শায়খ ইউসুফ নাৰহনী, ফাতহুল কাবীর,১৮৮ পৃ.হাদিসঃ৭৩২৮,</div><div style="text-align: justify;">● মুত্তাকী হিন্দী,কানযুল উম্মাল, ১৫/০৬. হাদিস : ৪১১৩৯</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">সূত্র, প্রমানিত হাদীস কে জাল বানানোর স্বরুপ উন্মোচন</div><div style="text-align: justify;">মুফতি মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বাহাদুর</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"><b>পাগড়ীর উপর কাপড় বা রুমাল প্রসঙ্গেঃ</b></div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">পাগড়ীর উপর রুমাল পরিধান করা ও পাগড়ী ছাড়া রুমাল পরিধান করা উভয়টাই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) উনার পবিত্র সুন্নত। অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি স্বয়ং নিজেই মাথা মুবারকে পাগড়ীর উপরে রুমাল পরিধান করতেন এবং পাগড়ী ছাড়াও রুমাল পরিধান করতেন।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">যেমন, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে,</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">قالت عائشة رضى الله تعالى عنها فبينا نحن يوما جلوس فى بيتنا فى نحر الظهيرة قال قائل لابى بكر رضى الله تعالى عنه هذا رسول الله صلى الله عليه وسلم مقبلا متقنعا.</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থ: ‘উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, একদা দ্বিপ্রহরের সময় আমরা আমাদের গৃহে বসা ছিলাম। তখন একজন আফদ্বালুন নাস বা’দাল আম্বিয়অ হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক আলাইহিস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে বললেন যে, “ওই যে মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি (পাগড়ীর উপর) রুমাল পরিধান করে মাথা মুবারক আবৃত করে আগমন করছেন।” [বুখারী শরীফ ২/৮৬৪, আহমদ, আবূ দাউদ শরীফ ৫৬৪, ফতহুল বারী ১০/২২৪, উমদাতুল কারী ২১/৩০৯, বযলুল মাযহুদ ৬/৫৩]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">উল্লেখ্য যে, উপরোক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে متقنعا  শব্দটি تقنع শব্দ থেকে এসেছে। আর تقنع শব্দের অর্থ হলো,</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">وضع شيى الزائد على الرأس فوق العمامة.</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থ: تقنع হলো মাথায় পাগড়ীর উপরে অতিরিক্ত একটি কাপড় (রুমাল) পরিধান করা।” [বুখারী শরীফ ২/৮৬৪, ফতহুল বারী ১০/২২৪, উমদাতুল কারী ২১/৩০৯]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">تقنع শব্দের ব্যাখ্যায় অনত্রে বলা হয়েছে,</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">تغطية الرأس واكثر الوجه برداء اوغيره.</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থ: “মাথা এবং চেহারার অধিকাংশ কোন চাদর অথবা অন্য কোন কাপড় (রুমাল) দিয়ে ঢেকে রাখা।” [বুখারী শরীফ ২/৮৬৪, ফতহুল বারী ১০/২২৪, উমদাতুল কারী ২১/৩০৮]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অন্য পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে,</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">عائشة رضى الله تعالى عنها قالت مااتى رسول الله صلى الله عليه وسلم احدا من نسائه الا متقنعا يرخى الثوب على راسه حياء.</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থ: উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি যখনই উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা কারো নিকট আসতেন তখন (রুমাল দিয়ে) মাথা মুবারক ঢেকে আসতেন। তিনি হায়ার কারণে স্বীয় মাথা মুবারকের উপর কাপড় (রুমাল) পরিধান করতেন।” [মসনদে আয়েশা, হাশীয়াদে আবূ দাউদ/২০৯]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"><b>ইমামাহ্ বা পাগড়ীর বর্ণনা ও ফযীলত</b></div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">ইমামাহ্ বা পাগড়ী পরিধান করা দায়িমী সুন্নত। কেননা আখিরী রসূল, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি দায়িমীভাবে পাগড়ী পরিধান করতেন। সেহেতু পাগড়ীর মধ্যে অনেক ফযীলত, মর্যাদা, মর্তবা পরিলক্ষিত হয়।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">পাগড়ী পরিধানকারীগণের উপর মহান আল্লাহ্ পাক উনার খাছ রহমত এবং ফেরেশ্তাগণের খাছ দোয়া বর্ষণ হয়।  পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে,</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">روى الطبرانى ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال ان الله وملائكته يصلون على صاحب العمائم يوم الجمعة. (بذل المجهود شرح ابى داؤد ج৬ ص- انوار المحمود ج২ ص اللباس والزينة ص مجمع الزوائد ج ص، الجمعة ج২ ص الميزان ج১ ص - كشف الخفاء ومزيل الالباس ج২ ص</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থ: “ইমাম তাবারানী (رحمة الله) থেকে বর্ণিত (তিনি বলেন) নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, অবশ্যই মহান আল্লাহ্ পাক তিনি পাগড়ী (দায়িমীভাবে) পরিধান কারীগণের উপর প্রতি জুমুয়ার দিবসে ছলাত বা খাছ রহমত এবং ফেরেশ্তাগণ খাছ দোয়া বর্ষণ করেন।”</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">[বযলুল মাজহুদ শরহে আবী দাউদ ৬ষ্ঠ জিঃ ৫১ পৃষ্ঠা, আনওয়ারুল মাহমুদ ২য় জিঃ ৪৪৬ পৃষ্ঠা, আল্ লিবাসু ওয়ায্ যীনাহ্ ১৩৫ পৃষ্ঠা, মাজমাউয্ যাওয়াইদ ৫ম জিঃ ১২০, ১২১ পৃষ্ঠা, আল জুমুয়াহ্ ২য় জিঃ ১৭৬ পৃষ্ঠা, আল মীযান ১ম জিঃ ২৯৩ পৃষ্ঠা, কাশফুল্ খফা ওয়া মুযীলুল্ ইলবাস ২য় জিঃ ৬৮ পৃষ্ঠা]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"><b>পাগড়ীসহ নামাযের ফযীলতঃ</b></div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">পাগড়ীসহ এক রাকায়াত নামায পাগড়ী ছাড়া সত্তর রাকায়াত নামায অপেক্ষা উত্তম। এ ছাড়াও বিভিন্ন রেওয়ায়েতে  বিভিন্নমূখী ফযীলতের কথা বর্ণিত আছে। সেগুলো হচ্ছে,</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">روى انه عليه السلام قال صلاة بعمامة افضل من سبعين صلاة بغير عمامة. مرقاة ج৮ ص</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থ: বর্ণিত আছে, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, পাগড়ীসহ এক ওয়াক্ত নামায পাগড়ী ছাড়া সত্তর ওয়াক্ত নামাযের থেকে উত্তম।” [মিরকাত ৮ম জিঃ, ২৫০ পৃষ্ঠা]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">ان ركعتين مع العمامة افضل من سبعين ركعة بدونها. حاشية سمائل الترمذى ص، هداسة العباد</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থ: “নিশ্চয়ই পাগড়ী পরিধান করে দু’রাকায়াত নামায আদায় করা, পাগড়ী ছাড়া সত্তর রাকায়াত নামায আদায় করার চেয়ে অধিক ফযীলতপূর্ণ।”</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">নামাযের বাইরে পাগড়ী পরিধান করা সুন্নত হওয়ার ব্যাপারে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার সহীহ কিতাব “তিরমিযী শরীফ-এর” হাশিয়ায় উল্লেখ আছে,</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">ان لبس العمامة سنة</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থ: “নিঃসন্দেহে পাগড়ী পরিধান করা (দায়েমী) সুন্নত।” [হাশিয়ায়ে শামায়িলে তিরমিযী/৮]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">আর নামাযের মধ্যে পাগড়ী পরিধান করার ফযীলত সম্পর্কে উক্ত কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে যে,</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">ان ركعتين مع العمامة افضل من سبعين ركعة بدونها.</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থ: “নিশ্চয়ই পাগড়ী পরিধান করে দু’রাকায়াত নামায আদায় করা, পাগড়ী ছাড়া ৭০ রাকায়াত নামায আদায় করার চেয়ে অধিক ফযীলতপূর্ণ।” [হাশিয়ায়ে শামায়িলে তিরমিযী/৮]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">পাগড়ীর উল্লিখিত ফযীলত থেকে যেন উম্মত মাহরুম না হয় সে জন্য সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি বিশেষ গুরুত্ব সহকারে উম্মতদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন যে,</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">فاعتموا فان العمامة سيماء الاسلام وهى الحاجز بين المسلمين والمشركين.</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থ: “তোমরা পাগড়ী পরিধান কর। নিশ্চয়ই পাগড়ী পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার নির্দশন এবং তা মুসলমান ও মুশরিকদের মাঝে পার্থক্যকারী।” [যারকানী ৬ষ্ঠ জি:, ২৭২ পৃষ্ঠা, উমদাতুল ক্বারী, ২১ জি:, ৩০৮ পৃষ্ঠা, খাছায়িলুন নবী ৭৮ পৃষ্ঠা, তুহফাতুল আহওয়াজী ৫ম জি, ৪১২ পৃষ্ঠা]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন,</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">عليكم بالعمائم فانها سيماء الملئكة.</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থ: “তোমাদের জন্য পাগড়ী অবধারিত, কেননা তা ফেরেশতাগণ উনাদের নিদর্শন স্বরূপ।” [মিশকাত শরীফ/৩৩৭, ফাইদুল ক্বদীর ৪র্থ জি, ৪৫৪ পৃষ্ঠা, শুয়াবুল ঈমান লিল বাইহাক্বী ৫ম জি:, ১৭৬ পৃষ্ঠা]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"><b>ইমামাহ বা পাগড়ী পরিধান করা ফেরেশতাগণ এর নিদর্শন</b></div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">খালিক-মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">يمددكم ربكم بخمسة الاف من الملئكة مسومين.</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থ: “তোমাদের পালনকর্তা চিহ্নিত ঘোড়ার উপর পাঁচ হাজার ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা তোমাদের সাহায্যে পাঠাবেন।” [পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১২৫]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের পাগড়ী সম্পর্কে “তাফসীরগ্রন্থসমূহে” বিশদ আলোচনা এসেছে যা নিম্নে উপস্থাপন করা হলো।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">روى عن على بن ابى طالب وابن عباس وغيرهما ان الملائكة اعتمت بعمائم بيض قدارسلوها بين اكتافهم ذكره البيهقى عن ابن عباس وحكاه المهدوى عن الزجاج الا جبريل فانه كان بعمامة صفراء على مثل الزبير بن العوام. (تفسير القرطبى الجلد الثانى ص ১৯৬)</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থ: হযরত আলী ইবনে আবু তালিব (رضي الله عنه), হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) ও অন্যান্যদের থেকে বর্ণিত আছে- নিঃসন্দেহে ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা “সাদা পাগড়ী” পরিধান করেছিলেন যার শামলা উনাদের দু’কাধের মধ্যবর্তীস্থালে ছিল। বাইহাক্বী ইহা হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) উনার থেকে বর্ণনা করেছেন। আর হযরত মাহদুবী (رحمة الله) হযরত যুজাজ (رحمة الله) উনাদের থেকে বর্ণনা করেন, হযরত জিবরাইল আলাইহিস সালাম উনার পাগড়ী মুবারক হযরত যুবাইর ইবনে আউওয়াম (رضي الله عنه) উনার ন্যায় ঘিয়া রংয়ের ছিল।” [তাফসীরে কুরতুবী ২য় জিঃ ১৯৬ পৃষ্ঠা]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">واخرج ابن اسحاق والطبرانى عن ابن عباس رضى الله عنه قال كانت سيماء الملائكة يوم بدر عمائم بيضاء قد ارسلوها فى ظهورهم ويوم حنين عمائم حمراء. (فتح القدير الجلد الاول ص ৩৭৯)</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থ: “হযরত ইবনে ইসহাক ও তিবরানী (رحمة الله)মা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, বদর যুদ্ধের দিন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিশেষ চিহ্ন ছিল “সাদা পাগড়ী”। যার শ্যামলা উনাদের পিঠে ঝুলানো ছিল। আর হুনাইন যুদ্ধের দিন ছিল তাদের গন্ধম রংয়ের পাগড়ী।” [তাফসীরে ফতহুল ক্বাদীর ১ম জিঃ, ৩৭৯ পৃষ্ঠা]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">পবিত্র হাদীছ শরীফ এ ইরশাদ হয়েছে,</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">روى الطبرانى ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال ان الله وملائكته يصلون على صاحب العمائم يوم الجمعة- (بذل المجهود شرح ابى داؤد ج ص انوار المحمود ج ص اللباس والزينة ص - مجمع الزوائد ج ص الجمعة ج ص الميزان ج - كشف الخفاء ومزيل الالباس ج</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থ: “ইমাম তিবরানী (رحمة الله) উনার থেকে বর্ণিত (তিনি বলেন) নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, অবশ্যই মহান আল্লাহ্ পাক তিনি পাগড়ী (দায়িমীভাবে) পরিধানকারীগণের উপর প্রতি পবিত্র জুমুয়া উনার দিবসে ছলাত বা খাছ রহমত এবং ফেরেশ্তাগণ খাছ দোয়া বর্ষণ করেন।” [বযলুল মাজহুদ শরহে আবী দাউদ ৬ষ্ঠ জিঃ ৫১ পৃষ্ঠা, আনওয়ারুল মাহমুদ ২য় জিঃ ৪৪৬ পৃষ্ঠা, আল্ লিবাসু ওয়ায্ যীনাহ্ ১৩৫ পৃষ্ঠা, মাজমাউয্ যাওয়াইদ ৫ম জিঃ ১২০, ১২১ পৃষ্ঠা, আল জুমুআহ্ ২য় জিঃ ১৭৬ পৃষ্ঠা, আল মীযান ১ম জিঃ ২৯৩ পৃষ্ঠা, কাশফুল্ খফা ওয়া মুযীলুল্ ইলবাস ২য় জিঃ ৬৮ পৃষ্ঠা]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">قال النبى صلى الله عليه وسلم "تسوموا فان الملائكة قد تسومت"</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থ: “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি (বদর যুদ্ধের দিন হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদিয়াল্লাহু আনহুমগণকে) বলেছিলেন, “তোমরা চিহ্ন গ্রহণ কর অর্থাৎ পাগড়ী পরিধান কর। কেননা ফেরশ্তা আলাইহিমুস সালাম উনারা আজ বিশেষ চিহ্ন গ্রহণ করেছেন। অর্থাৎ পাগড়ী পরিধান করেছেন।” [তাফসীরে আহ্কামুল কুরআন লি ইবনিল আরাবী ১ম জিঃ ২৯৬ পৃষ্ঠা]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">عن عبد الرحمن بن عدى البهرانى عن اخيه عبد الاعلى بن عدى ان رسول الله صلى الله عليه وسلم دعا على بن ابى طالب رضى الله تعالى عنه يوم غد يرخم فعممه وارخى عذبة العمامة من خلفه ثم قال هكذا فاعتموا فان العمائم سيماء الاسلام- وهى الحاجز بين المسلمين والمشركين.</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থ: “হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আদিয়্যীল বাহরানী (رحمة الله) উনার ভাই হযরত আব্দুল আ’লা ইবনে আদি (رحمة الله) তিনি উনার হতে বর্ণনা করেন যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি ইমামুল আউওয়াল মিন আহলে বাইতি রসূলিল্লাহ হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে এক বৃষ্টির দিনে ডেকে উনার মাথা মুবারকে পাগড়ী বেঁধে তার শামলা পিছনে পিঠের উপর ঝুলিয়ে দিলেন। অতঃপর বললেন, তোমরা অনুরূপভাবে পাগড়ী পরিধান কর। কেননা নিশ্চয়ই পাগড়ী পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার বিশেষ নিদর্শন। আর এটা (পাগড়ী) মুসলমান ও মুশরিকদের মধ্যে পার্থক্যকারী। অর্থাৎ পাগড়ী পরা মুসলমানগণের নিদর্শন আর পাগড়ী পরা ছেড়ে দেয়া মুশরিকদের নিদর্শন।” [উমদাতুল কারী ২১তম জিঃ ৩০৮ পৃষ্ঠা, যুরকানী ৬ষ্ঠ জিঃ ২৭২ পৃষ্ঠা, খছাইলে নববী ৭৮ পৃষ্ঠা, তুহফাতুল আহওয়াযী ৫ম জিঃ ৪১২পৃষ্ঠা]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">عن ابى المليح بن اسامة عن ابيه رفعه اعتموا تزدادوا حلما (فتح البارى ج ১০ ص ২৮৩- خصائل النبوى ص ৭৮- المستدرك ج ৪ ص ১৯৩- كشف الغمة ج ১ ص ৯৪- اللباس والزينة ص ১২৫- مجمع الزوائد ج ৫ ص ১১৯- الكبير ج ১ ص ১৯৪- كشف الخفاء ومزيل الالباس ج ২ ص ৬৭)</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থ: “হযরত আবুল মুলাইহ্ ইবনে উসামাহ্ (رحمة الله) উনার পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমরা পাগড়ী পরিধান কর। এতে সহনশলীতা ও গাম্ভীর্যতা বৃদ্ধি পাবে।” [ফতহুল বারী ১০ম জিঃ ২৮৩ পৃষ্ঠা, খছাইলে নববী ৭৮ পৃষ্ঠা, আল্ মুসতাদ্রক ৪র্থ জিঃ ১৯৩ পৃষ্ঠা, কাশফুল গুম্মাহ্ ১ম জিঃ ৯৪ পৃষ্ঠা, আল্ লিবাসু ওয়ায্ যীনাহ্ ১২৫ পৃষ্ঠা, মাজমাউয্ যাওয়াইদ ৫ম জিঃ ১১৯ পৃষ্ঠা, আল্ কবীর ১ম জিঃ ১৯৪ পৃষ্ঠা, কাশফুল খফা ওয়া মুযীলুল্ ইলবাস ২য় জিঃ ৬৭ পৃষ্ঠা]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"><b>ইমামাহ্ বা পাগড়ী বাঁধা নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালাম উনাদের পবিত্র খাছ সুন্নত</b></div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">পাগড়ী যে শুধু ফেরেশ্তা আলাইহিমুস সালাম উনারা পরিধান করেন তা নয়, বরং মহান আল্লাহ পাক উনার সবচেয়ে প্রিয় এবং উনার নিকট সবচেয়ে বেশি সম্মানের অধিকারী নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালাম উনারা সকলেই পাগড়ী মুবারক পরিধান করতেন। যেমন, এ প্রসঙ্গে কিতাবে উল্লেখ আছে,</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">العمامة سنة الرأس وعادة الانبياء والسادة-) عارضة الاحوذى شرح ترمذى الجلد السابع ص ২৪৩)</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থ: পাগড়ী মাথায় পরিধান করা সুন্নত এবং সমস্ত আম্বিয়া আলাইহিমুস্ সালাম উনাদের বিশেষ অভ্যাসগত আমল। [আরিদাতুল আহওয়াজী শরহে তিরমিযী ৭ম জিঃ ২৪৩ পৃষ্ঠা]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"><b>হযরত হারুন আলাইহিস্ সালাম উনার ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক</b></div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">মহান আল্লাহ পাক উনার নবী হযরত হারুন আলাইহিস্ সালাম উনার সম্পর্কে পবিত্র কুরআন শরীফে মহান আল্লাহ্ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">ان ياتيكم التابوت فيه سكينة من ربكم وبقية مما ترك ال موسى وال هارون. سورة البقرة- ২৪৮)</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থ: (তালুতের নেতৃত্বের চিহ্ন হলো এই যে) “তোমাদের কাছে তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে একটা সিন্দুক আসবে। তোমাদের সন্তুষ্টির জন্য। আর তাতে থাকবে হযরত মুসা আলাইহিস্ সালাম ও হযরত হারুন আলাইহিস্ সালাম এবং উনাদের সন্তানগণের কিছু পরিত্যক্ত সামগ্রী। [পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২৪৮]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"><b>হযরত মুসা আলাইহিস্ সালাম উনার ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক</b></div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">মহান আল্লাহ পাক উনার নবী ও রসূল হযরত মুসা আলাইহিস্ সালাম উনার সম্পর্কে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ্ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">ان ياتيكم التابوت فيه سكينة من ربكم وبقية مما ترك ال موسى وال هارون. سورة البقرة- ২৪৮)</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থ: (তালুতের নেতৃত্বের চিহ্ন হলো এই যে) “তোমাদের কাছে তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে একটা সিন্দুক আসবে। তোমাদের সন্তুষ্টির জন্য। আর তাতে থাকবে হযরত মুসা আলাইহিস্ সালাম ও হযরত হারুন আলাইহিস্ সালাম এবং উনাদের সন্তানগণের কিছু পরিত্যক্ত সামগ্রী। [পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২৪৮]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার তাফসীরে হযরত মুসা আলাইহিস্ সালাম তিনি যে পাগড়ী পরিধান করেছিলেন তার প্রমাণ মিলে। নিম্নে এ বিষয়ে বিশ্ব বিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থ সমূহের সুষ্পষ্ট দলীল-আদিল্লা পেশ করা হলো-</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"> (فيه سكينة من ربكم وبقية مما ترك ال موسى وال هارون) وفى السكينة سبعة اقوال .......... والسادس انها رضاض الالواح وقفيز من فى طست من ذهب وعصا موسى وعمامته- قاله مقاتل- (تفسير زاد المسير فى علم التفسير الجلد الاول ص ২৫৯)</div><div style="text-align: justify;">অর্থঃ (তালুতের নেতৃত্বের নিদর্শন হল- তোমাদের কাছে একটা সিন্দুক আসবে তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে তোমাদের সন্তুষ্টির জন্য। আর তাতে থাকবে হযরত মুসা আলাইহিস্ সালাম ও হযরত হারুন আলাইহিস্ সালাম এবং উনাদের সন্তানগণের কিছু পরিত্যক্ত সামগ্রী।) এখানে فى السكينة (সিন্দুকের মধ্যে) এর ব্যাখ্যায় সাতটি মত রয়েছে, ষষ্ঠ মত হলো সেখানে ছিল লেখার সামগ্রী চূর্ণপাথর, স্বর্ণের তৈরি প্লেটে নেয়ামতপূর্ণ মান্না’র কিছু অংশ এবং হযরত হযরত মুসা আলাইহিস্ সালাম উনার লাঠি মুবারক ও ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক। [তাফসীরু যাদুল মাসীর ফী ইল্মিত তাফসীর ১ম জিঃ ২৫৯ পৃষ্ঠা]</div><div style="text-align: justify;">নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক (ﷺ) উনার</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"><b>সাধারণ সময়ের ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক</b></div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">عن عائشة رضى الله عنها ان رجلا اتى النبى صلى الله عليه وسلم على برذون وعليه عمامة طرفها بين كتفيه فسألت النبى صلى الله عليه وسلم عنه فقال رأيته ذالك جبريل عليه السلام- (مسند احمد بن حنبل الجلد السادس ص ১৪৮-১৫২)</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বর্ণনা করেন। একদা এক ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) উনার নিকট ‘বারজুন’ নামক স্থানে আসল, যখন উনার মাথা মুবারকে পাগড়ী ছিল, যার শামলা উনার দু’কাঁধের মাঝখানে ঝুলছিল। (উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন) আমি এ বিষয়ে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) উনাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি উত্তরে বললেন, আমি অনুরূপভাবে (পাগড়ী পড়তে) হযরত জিব্রাইল আলাইহিস্ সালাম উনাকে দেখেছি।” [মুসনাদে আহমদ ইবনে হাম্বল ৬ষ্ঠ জিঃ ১৪৮-১৫২ পৃষ্ঠা]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"><b>হুযূর পাক (ﷺ) এর নামাযের সময় পাগড়ী মুবারক</b></div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি দায়িমীভাবে পাগড়ী পরিধান করতেন। অর্থাৎ নামাযের বাইরে ও নামাযে উভয় অবস্থাতেই তিনি পাগড়ী ব্যবহার করতেন, তন্মধ্যে ঘরে অবস্থান কালে তিন হাত, পাঁচ ওয়াক্ত নামাযে সাত হাত এবং জুমুআ ও দুই ঈদের দিনে বার হাত পাগড়ী ব্যবহার করতেন। নিম্নে তার দলীল-আদিল্লা পেশ করা হল,</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">وكان عمامة النبى صلى الله عليه وسلم فى عامة الاحيان ثلاثة اذرع شرعية وفى الصلوة الخمس سبعة اذرع وفى الجمع والاعياد وحين الوفود اثنى عشر ذراعا- (اتوار المحمود الجلد الثانى ص</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থ: নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হযরত নবী করীম (ﷺ) উনার অধিকাংশ সময়ের (ঘরের ভিতরে) ব্যবহৃত পাগড়ী ছিল তিন হাত দীর্ঘ। পাঁচ ওয়াক্ত নামাযে ব্যবহৃত পাগড়ী ছিল সাত হাত। আর পবিত্র জুমুআ, ঈদের দিন এবং কোন দেশের প্রতিনিধির সাথে সাক্ষাতের সময় ব্যবহার করতেন বার হাত লম্বা পাগড়ী। [আনওয়ারুল মাহমুদ ২য় জিঃ ৪৪২ পৃষ্ঠা]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"><b>জিহাদ অবস্থায় ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক</b></div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি সর্বদাই পাগড়ী পরিধান করতেন। এমনকি জিহাদ অবস্থায়ও উনার মাথা মুবারকে পাগড়ী মুবারক থাকত। যেমন, মক্কা বিজয়ের দিন, তাবুক যুদ্ধে, খন্দক যুদ্ধে, সানিইয়াতুল হানযাল এবং অপরাপর যুদ্ধে উনার মাথা মুবারকে কালো পাগড়ী বাঁধা ছিল। নিম্নে এ সম্পর্কিত দলীলসমূহ উপস্থাপন করা হলো-</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">عن جابربن عبد الله الانصارى رضى الله عنه ان رسول الله صلى الله عليه وسلم دخل مكة وقال قتيبة دخل يوم فتح مكة وعليه عمامة سوداء. (مسلم شريف ج ১ ص ৪৩৯- مسلم بشرح النووى ج ৫ ص ১৩৩- شرح الابى والسنوسى ج ৪ ص ৪৬৭)</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থ: “হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ্ আল-আনছারী রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন যে, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি পবিত্র মক্কা শরীফে প্রবেশ করেন। কুতাইবা বলেন, যখন তিনি পবিত্র মক্কা বিজয়ের দিন পবিত্র মক্কা শরীফে প্রবেশ করেন, তখন উনার মাথা মুবারকে কালো পাগড়ী ছিল।” [মুসলিম শরীফ ১ম জিঃ ৪৩৯ পৃষ্ঠা, মুসলিম বি শরহিন নববী ৫ম জিঃ ১৩৩ পৃষ্ঠা, শরহুল উবাই ওয়াস্ সিনূসী ৪র্থ জিঃ ৪৬৭ পৃষ্ঠা]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"><b>রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যে পদ্ধতিতে পাগড়ী মুবারক পরিধান করেছেন</b></div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">নিচে এ বিষয়ে দলীলসমূহ পেশ করা হলো-</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">عن ابن سلام بن عبد الله بن سلام قال سألت ابن عمر كيف كان النبى صلى الله عليه وسلم يعتم؟ قال كان يدير العمامة على رأسه ويقورها من وؤائه ويرسل لها ذؤابة بين كتفبه<</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থ: হযরত ইবনে সালাম ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রদিয়াল্লাহু আনহু উনাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে, “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি কিভাবে পাগড়ী মুবারক বাঁধতেন?” উত্তরে তিনি বলেছিলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি পাগড়ীর একটি প্রান্ত মাথা মুবারকে পেঁচাতেন ও তারই শেষ প্রান্ত পিছনে উপরে গুঁজে দিতেন। আর পাগড়ীর শামলা উভয় কাঁধ মুবারক উনার মাঝখানে ঝুলাতেন।” [নাইলুল আউতার ২য় জিঃ ১১৩ পৃষ্ঠা, তুহফাতুল আহওয়াযী ৫ম জিঃ ৪১৩ পৃষ্ঠা]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"><b>হযরত ইমাম হাসান ইবনে আলী (রা) এর পাগড়ী মুবারক</b></div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">حدثنا ديناربن عمرو قال رأيت على الحسن عمامة سوداء</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থ: “হযরত দীনার ইবনে আমর (رحمة الله) উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ইমামুল ছানী মিন আহলে বাইতি রসূলিল্লাহ হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম উনার মাথা মুবারকে কালো পাগড়ী বাঁধা দেখেছি।” [মুছান্নাফু ইবনে আবী শাইবাহ ৮ম জিঃ ২৩৫ পৃষ্ঠা]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"><b>হযরত ইমাম হুসাইন ইবনে আলী (رضي الله عنه)-এর ইমামাহ বা পাগড়ী মুবারক</b></div><div style="text-align: justify;">عن ابى رزين قال خطبنا الحسين بن على يوم الجمعة وعليه عمامة سوداء></div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থ: “হযরত আবু রঝীন (رحمة الله) উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা ইমামুল ছালিছ মিন আহলে বাইতি রসূলিল্লাহ হযরত ইমাম হুসাইন ইবনে আলী আলাইহিস সালাম তিনি পবিত্র জুমুয়ার দিনে আমাদের উদ্দেশ্যে খুত্ববাহ্ মুবারক দিচ্ছিলেন এমতাবস্থায় যে, উনার মাথা মুবারকে কালো পাগড়ী বাঁধা ছিল।” [মুছান্নাফু ইবনে আবী শাইবাহ ৮ম জিঃ ২৩৭ পৃষ্ঠা]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"><b>হযরত ছাহাবায়ে কিরাম (রা.) উনারা ইমামাহ্ বা পাগড়ী পরিধান করতেন</b></div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">قال عبيد الله اخبرنا اشياخنا أنهم رأوا اصحاب النبى صلى الله عليه وسلم يعتمون ويرخونها بين اكتافهم.</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থঃ “হযরত উবাইদুল্লাহ্ (رحمة الله) তিনি বলেন, আমাকে আমার শায়খ বা উস্তাদগণ বলেছেন যে, নিশ্চয়ই উনারা হুযূর পাক (ﷺ) উনার হযরত ছাহাবায়ে কিরাম (رضي الله عنه) উনাদের মধ্যে যত জনেরই সাক্ষাত মুবারক লাভ করেছেন,  উনাদের প্রত্যেককেই পাগড়ী পরিধান করতে দেখেছেন। আর উনারা পাগড়ীর শামলা উনাদের দু’কাঁধের মাঝামাঝি ঝুলিয়ে রাখতেন।”  [মুছান্নাফু ইবনে আবী শাইবাহ্ ৮ম জিঃ ২৩৯ পৃষ্ঠা]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"><b>হযরত আবু বকর ছিদ্দীক (رضي الله عنه)-উনার ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক</b></div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">عن مرثد بن عبد الله اليزنى عن حميدبن غسيلة الصنابحى قال رأيت ابا بكر يمسح على الخمار.</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থ: “হযরত মারসাদ ইবনে আব্দুল্লাহ্ আল্ ইয়ায্নী (رحمة الله) তিনি হযরত হুমাইদ ইবনে গুসাইলাহ্ আছ্ছনাবিহী (رحمة الله) উনার হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন যে, আমি আমীরুল্ মু’মিনীন, খলীফাতুল্ মুসলিমীন, খলীফাতু রসূলিল্লাহ্ হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনাকে পাগড়ীর উপর মসেহ্ করতে দেখেছি।” [মুছান্নাফু ইবনে আবূ শাইবাহ্ ১ম জিঃ ২২ পৃষ্ঠা]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"><b>হযরত ওমর ফারুক আলাইহিস সালাম উনার ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক</b></div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">عن السائب بن يزيد قال رايت عمربن الخطاب يوم عيد معتما قدارخى عمامته من خلفه.</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থ: “হযরত সাইব ইবনে ইয়াযীদ (رحمة الله) উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ঈদের দিনে আমীরুল মু’মিনীন হযরত ফারূকে আ’যম আলাইহিস সালাম উনাকে পাগড়ী পরিহিত অবস্থায় দেখেছি যে, উনার পাগড়ী মুবারকের শামলা পিছনে (পিঠ মুবারকের উপর) প্রলম্বিত ছিল।” [শুয়াবুল ঈমান লিল্ বাইহাক্বী ৫ম জিঃ ১৭৪ পৃষ্ঠা]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"><b>হযরত উসমান যুন্ নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক</b></div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">عن سليمان بن ابى عبد الله قال ادركت المهاجرين الاولين يعتمون بعمائم كرابيس سود وبيض وحمر وخضر وصفر</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থ: “হযরত সুলাইমান ইবনে আবু আব্দুল্লাহ্ (رحمة الله) উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি (পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার) প্রথম দিকের সকল মুহাজিরীন (رضي الله عنه)ম উনাদের কালো, সাদা, গন্ধম, সবুজ ও ঘিয়া রংয়ের সূতী কাপড়ের ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক পরিধান করতে দেখেছি।” [মুছান্নাফু ইবনে আবী শাইবাহ্ ৮ম জিঃ ২৪১ পৃষ্ঠা]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"><b>হযরত মাওলা আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ উনার ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক</b></div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">عن عبد الله بن بشر رضى الله عنه قال بعث رسول الله صلى الله عليه وسلم على بن ابى طالب رضى الله عنه يوم خيبر فعممه بعمامة سوداء ارسلوها من ورائه وعن منكبه اليسرى.</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে বাশ্শার (رضي الله عنه) উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি খাইবার যুদ্ধের দিবস (খাইবারের উদ্দেশ্যে) ইমামুল আউওয়াল মিন আহলে বাইতি রসূলিল্লাহ হযরত আলী কাররমাল্লাহু ওয়াজজাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে পাঠানোর সময়  উনাকে কালো পাগড়ী মুবারক বেঁধে দেন। যার এক প্রান্ত (শামলা) পিছনে (পিঠের উপর) আর অপর প্রান্ত (শামলা) সামনে বাম কাঁধে ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন। [উমদাতুল ক্বারী ২১ জিঃ ৩০৭ পৃষ্ঠা, নাইলুল আউতার ২য় জিঃ ১১২ পৃষ্ঠা]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"><b>খাদিমুন্ নবী, হযরত আনাস বিন মালিক (رضي الله عنه) উনার ইমামাহ বা পাগড়ী মুবারক</b></div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">عن مسلم بن زياد قال رأيت اربعة من اصحاب النبى صلى الله عليه وسلم انس بن مالك وفضالة بن عبيد وابا المنيب وفروخ بن سيار او سياربن فروخ يرخون العمائم من خلفهم وثيابهم الى الكعبين.</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থ: “হযরত মুসলিম ইবনে যিয়াদ (رحمة الله) উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) উনার চারজন ছাহাবী (১) হযরত আনাস বিন মালিক (رضي الله عنه), (২) হযরত ফুযাইল ইবনে উবাইদ (رضي الله عنه), (৩) হযরত আবুল মুনীব (رضي الله عنه) এবং (৪) হযরত ফুররুখ ইবনে সিয়ার অথবা হযরত সিয়ার ইবনে ফুররুখ (رضي الله عنه)মা উনাদের সকলকেই এ অবস্থায় দেখেছি যে, উনারা উনাদের পাগড়ী মুবারকের শামলা পিছনে (পিঠের উপর) ঝুলিয়ে রাখতেন এবং উনাদের পোশাক (কাপড়)কে দু’পায়ের গিড়ার উপর পর্যন্ত ঝুলাতেন।” [শুয়াবুল ঈমান লিল বাইহাক্বী ৫ম জিঃ ১৭৬ পৃষ্ঠা]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"><b>আশেকে সুন্নত হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (رضي الله عنه) উনার ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারক</b></div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">عن عبد الله بن دينار عن عبد الله بن عمر ان رجلا من الاعراب لقيه بطريق مكة فسلم عليه عبد الله وحمله على حمار كان يركبه واعطاه عمامة كانت على رأسه.</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে দীনার (رحمة الله) তিনি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (رضي الله عنه) উনার থেকে বর্ণনা করেন যে, একদা পবিত্র মক্কা শরীফ উনার এক রাস্তায় হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (رضي الله عنه) উনার সঙ্গে এক বেদুঈন ব্যক্তির সাক্ষাত হল। হযরত আব্দুল্লাহ (رضي الله عنه) উনাকে সালাম তিনি দিলেন এবং তিনি যে গাধার পিঠে আরোহন করেছিলেন, তাকেও সেই গাধায় আরোহন করে নিলেন। অতঃপর তিনি উনার মাথার পাগড়ী উনাকে দান করলেন।” [মুসলিম শরীফ ২য় জিঃ ৩১৪ পৃষ্ঠা,  মুসলিম বি শরহিন নববী ৮ম জিঃ ১০৯ পৃষ্ঠা, শরহুল্ উবাই ওয়াস্ সিনূসী আলা মুসলিম ৮ম জিঃ ৪৯৬ পৃষ্ঠা, ফতহুল মুলহিম ৫ম জিঃ, মুসনাদু আহমদ ইবনে হাম্বল ২ম জিঃ ৯১ পৃষ্ঠা]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"><b>হযরত যায়িদ বিন্ সাবিত (رضي الله عنه) উনার ইমামাহ বা পাগড়ী মুবারক</b></div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">عن ثابت ابن عبيد قال رأيت زيد بن ثابت وعليه ازار ورداء وعمامة.</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থ: “হযরত সাবিক ইবনে উবাইদ (رحمة الله) উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত যায়িদ বিন সাবিত (رضي الله عنه) উনাকে দেখেছি যে, উনার (পড়নে) লুঙ্গি, (গায়ে) চাদর ও (মাথায়) পাগড়ী ছিল।” [মুছান্নাফু ইবনে আবী শাইবাহ ৮ম জিঃ ২৪১ পৃষ্ঠা]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"><b>ইমামাহ বা পাগড়ী পরিধানের আদব ও সুন্নত তরীক্বা</b></div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি হচ্ছেন প্রত্যেকের জন্য প্রত্যেক আমলের ব্যাপারে আদর্শ স্বরূপ। তাই পাগড়ী পরিধানের ব্যাপারেও উনারই তরীক্বা অনুসরণ-অনুকরণ করে সে অনুযায়ী পাগড়ী বাঁধতে হবে। নিম্নে পাগড়ী পরিধানের সুন্নত তরীক্বা এবং সে সম্পর্কিত দলীল-আদিল্লাহ বর্ণিত হলো-</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">প্রতিটি কাজ যেরূপ ‘তাসমিয়া’ পাঠ করে করা সুন্নত তদ্রুপ ইমামাহ বা পাগড়ী বাঁধার সময়ও ‘তাসমিয়া’ পাঠ করা সুন্নত। যেমন, এ প্রসঙ্গে কিতাবে উল্লেখ আছে,</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">بسم الله الرحمن الرحيم.</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">• "বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম" বলে পাগড়ী পরা সুন্নত। [সিফরুস সায়াদাত, যুরকানী ৬ষ্ঠ জিঃ ২০৮ পৃষ্ঠা]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">• পাগড়ী সূতী কাপড়ের হওয়া উত্তম (সুন্নত)। [শামাইলুন নবী (ﷺ)]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">• ওজুর সহিত ইমামাহ বা পাগড়ী বাঁধা উত্তম (সুন্নত)। [হুজ্জাতুত তাম্মাহ ফী লুবসিল ইমামাহ ৫৬ পৃষ্ঠা]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">• ক্বিবলামুখী হয়ে পাগড়ী বাঁধা উত্তম (সুন্নত)। [হুজ্জাতুত তাম্মাহ ফী লুবসিল ইমামাহ ৫৬ পৃষ্ঠা]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">• পাগড়ী ডান দিক থেকে বাঁধা শুরু করা সুন্নত। কেননা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি প্রত্যেক কাজ ডান দিক থেকে শুরু করা পছন্দ করতেন। [বুখারী শরীফ, ফতহুল বারী, উমদাতুল ক্বারী, ইরশাদুস সারী]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"><b>ইমামাহ্ বা পাগড়ী পরিধান করে দু’য়া পাঠ করা পবিত্র সুন্নত</b></div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি নতুন জামা ও পাগড়ী পরিধান করে দু’য়া পাঠ করতেন। যেমন পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ আছে, হযরত আবু সাঈদ খুদরী (رضي الله عنه) উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) তিনি যখন নতুন কাপড় পরিধান করতেন। তখন তার জামা অথবা পাগড়ী ইত্যাদি উল্লেখ করে নিম্নোক্ত দোয়া পাঠ করতেন:</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">اللهم لك الحمد انت كسوتنيه اسألك من خيره وخير ما صنع له واعوذ بك من شره وشر ما صنع له.</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থ: “আয় মহান আল্লাহ্ পাক! সমস্ত প্রশংসা আপনারই, আপনিই আমাকে এই কাপড় পরিধান করিয়েছেন। আমি আপনার কাছে এর কল্যাণ এবং ওই সমস্ত কল্যাণ কামনা করছি, যে উদ্দেশ্যে একে তৈরি করা হয়েছে। অনুরূপভাবে এর অকল্যাণ এবং ওই সমস্ত অকল্যাণ থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি, যে উদ্দেশ্যে তা তৈরি করা হয়েছে।”</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামিন এবং উনার প্রিয়তম রসূল সাইয়্যিদুল মুরসালিন, ইমামুল মুরসালিন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) উনারা যেন আমাদেরকে সমস্ত সুন্নতের সূক্ষ্ম অনুসরণ করার তৌফিক দান করেন। (আমীন)</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"><b>পাগড়ী পরিধানের ফযিলতঃ</b></div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">পুরুষের জন্যে পাগড়ি পরিধান করা “সুন্নতে মুসতামিররা” (চলমান সুন্নত)। সুন্নত বলতে মুস্তাহাব উদ্দেশ্য। কেউ পাগড়ি মাথায় দিলে সওয়াব পাবে। কেউ না পরলে গোনাহগারও হবে না।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">রাসুলে কারিম (ﷺ) ও অধিকাংশ সাহাবায়ে কেরাম পাগড়ি মাথায় দিতেন।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">সিরাত, ইতিহাস ও হাদিসের কিতাবে বিষয়টি সবিস্তারে উল্লেখ হয়েছে।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">❏ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (رضي الله عنه)কে কেউ প্রশ্ন করেছিলেন,</div><div style="text-align: justify;">يا أبا عبد الرحمن ! العمامة سنة؟</div><div style="text-align: justify;">হে আবু আব্দির রাহমান (ইবনে উমর রা.-এর উপ নাম) পাগড়ি কি সুন্নত ?</div><div style="text-align: justify;">قال نعم</div><div style="text-align: justify;">উত্তরে তিনি বলেন হ্যাঁ।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">[সূত্রঃ উমদাতুল ক্বারী খণ্ড ১৯ পৃষ্ঠা ৭১০]।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">কোন কোন আলেম এটাকে “পোশাকের সুন্নতও বলেছেন। যারা সুন্নাত বলেছেন, তারাও সুন্নাতে জায়েদা বলেছেন।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">(أقرب الوسائل إلى شرح الشمائل)</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">❏ শওকানী বলেন,</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">والاحاديث يدل على استحباب لبس العمامة</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">একাধিক সূত্রে হাদীসের বর্ণনা পাগড়ি পরিধান মুস্তাহাব প্রমাণ করে।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">( نيل الاوطار جلد٢ صفحة ١١٠)</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">❏ আল্লামা মুনাভী রহমাতুল্লাহি আলাইহি “ফয়যুল ক্বাদীর”এ বলেন, পাগড়ী পরিধান করা মুস্তাহাব।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">(درس ترمذى كتاب إللباس جاد ٩ صفحة ٣٤٣)</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">❏ আল্লামা ইবনুল হাজ্জ রহমাতুল্লাহি 'আলাইহি “মাদখাল” নামক কিতাবে পাগড়ি পরিধান করা মুবাহ বলেছেন।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">(الدعامة صفحة١٠١)</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">সুন্নত আদায়ের যে সওয়াব রয়েছে পাগড়ী সুন্নত মনে করে পরিধান করলে সেই সওয়াব হবে।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">উপরন্তু রাসুলে কারিম (ﷺ) পাগড়ি বাঁধার ব্যাপারে উদ্বুদ্ধও করেছেন।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">মুবারাক এক হাদিসে এসেছে :</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">عَلَيْكُمْ بِالْعَمَائِمِ فَإِنَّهَا سِيمَا الْمَلَائِكَةِ</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎঃ তোমরা পাগড়ি বাঁধো; কেননা তা ফেরেশতাদের প্রতীক।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">[সূত্রঃ শুআবুল ইমান, হাদিস নং- ৫৮৫১]।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">বদর যুদ্ধের দিন আল্লাহ তাআলা পাঁচ হাজার ফেরেশতা মুসলমানদের সাহায্যের জন্যে পাঠিয়েছিলেন। তাদের সবাই পাগড়িবাঁধা ছিল।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">❏ অন্য একটি হাদিসে এসেছে, রাসুলে মাকবুল (ﷺ) হযরত আলি রাদ্বিয়াল্লাহু অানহুকে ডেকে পাগড়ি বেঁধে দিলেন। অতঃপর বললেন :</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">فاعتموا فإن العمامة سيما الإسلام وهى حاجز بين المسلمين والمشركين</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ: পাগড়ি বাঁধো; কারণ, পাগড়ি ইসলামের নিদর্শন এবং কুফর ও ঈমানের মাঝে পার্থক্য নিরূপণকারী।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">[সূত্রঃ জামেউল আহাদিস, হাদিস নং-৩৮৩৫৪]।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অনুবাদ ছাড়া আরো হাদিস দিচ্ছি :</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">১ : عن ابن عباس قال: لما عمم رسول الله صلى الله عليه وسلم عليا بالسحاب قال له: "يا علي! العمائم تيجان العرب، والاحتباء حيطانها، وجلوس المؤمن في المسجد رباطه" ."الديلمي".</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">كنز العمال في سنن الأقوال والأفعال - ১৫ / ৪৮৩</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">:  ২   إن فرق ما بيننا وبين المشركين العمائم على القلانس . كنز العمال في سنن الأقوال والأفعال - ১৫ / ৩০৬</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">. ৩ - ... عَنْ خَالِدِ بْنِ مَعْدَانَ قَالَ: أُتِيَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِثِيَابٍ مِنَ الصَّدَقَةِ فَقَسَمَهَا بَيْنَ أَصْحَابِهِ فَقَالَ: " اعْتَمُّوا خَالِفُوا عَلَى الْأُمَمِ قَبْلَكُمْ " شعب الإيمان - ৮ / ২৯৫</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">❏ আরো অনেক হাদিস দেওয়া যাবে। হাদিসের কিছু কিছু কিতাবে পাগড়ি বিষয়ে পৃথক অনুচ্ছেদও রয়েছে। এর দ্বারাই বিষয়টির গুরুত্ব সহজেই অনুমেয়।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">পাগড়িকে আরবিতে الْعِمَامَةُ বলা হয়। আর الْعَمَائِمُ হচ্ছে এর বহুবচন। তবে পাগড়ির জন্যে الْعِصَابَةُ শব্দও ব্যবহৃত হয়। الْعَصَائِبُ হল এর বহুবচন। হাদিস ও ফিকহের কিতাবে দুনো শব্দই ব্যবহার হয়েছে। এ সংক্রান্ত কোনো বিধান জানতে হলে দুনো শব্দ লিখে সার্চ দিলে ফলাফল পাওয়া যাবে।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">❏ একটি হাদিসে এসেছে :</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَمَرَهُمْ أَنْ يَمْسَحُوا عَلَى الْعَصَائِبِ .</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">قَال الْخَطَّابِيُّ : الْعَصَائِبُ الْعَمَائِمُ سُمِّيَتْ عَصَائِبَ ؛ لأَنَّ الرَّأْسَ يُعْصَبُ بِهَا</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">দেখুন : سنن أبو داود مع شرح الخطابي ১ / ১০১ ، ১০২।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">কারো কারো মতে, পাগড়ি হচ্ছে রাসুলে কারিম (ﷺ) এর স্বভাবগত সুন্নত (سنة عادية)। তবে মূলনীতি হল, কেউ যদি স্বভাবগত সুন্নতকে সুন্নতে নববী হিসেবে গ্রহণ করে, নিঃসন্দেহে সওয়াব পাবে। এতে কারো দ্বিমত নেই।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">বর্তমানে বাংলাদেশে পাগড়ি না পরার মহামারি দেখা দিয়েছে। অনেক সুন্নতের মতো পাগড়ির সুন্নতও উপেক্ষিত। পাগড়িকে অনেকে আধুনিক পোশাক ও সাজসজ্জার অন্তরায় মনে করে। আবার অনেকে ঝামেলা ভাবে। কারো ইচ্ছে হলে পাগড়ি পরবে না; কিন্তু পাগড়িকে খারাপ জানা ও পাগড়ি নিয়ে উপহাস করা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং গোনাহের কাজ। সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা আলেম সমাজ এবং মুত্তাকী লোকেরাও পাগড়ি বাঁধছে না। এমন একটি সুপ্রমাণিত বিষয়কেও যদি অবহেলা করা হয়, তাহলে কোন্ বিষয়ের ওপর আমল করব?</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">কেউ নিজে পাগড়ি না পরলেও পাগড়িকে সুন্নত মনে করা আবশ্যক। সময়-সুযোগ হলে পরতে পারেন। পরতে উৎসাহ দিবেন।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">❏ পাগড়ি বিষয়ে বিস্তারিত জানতে কুয়েত সরকারের অর্থায়নে ও তত্ত্বাবধানে প্রণীত বিশ্বের সর্ববৃহৎ ফিকহি বিশ্বকোষ আলমাউসুআতুল ফিকহিয়্যার عِمَامَة ভুক্তি দেখা যেতে পারে। খ- নং- ৩০, পৃষ্ঠা- ৩০০।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">❏ হযরত জাবির (رضي الله عنه) বলেন, মক্কা বিজয়ের দিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (মক্কায়) প্রবেশ করলেন। তখন তাঁর মাথায় কালো পাগড়ি ছিল।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">[সূত্রঃ সহীহ মুসলিম, হা/ ১৩৫৮]।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">❏ হযরত মুগীরা ইবনে শুবা (رضي الله عنه) বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওযু করলেন এবং মাথার অগ্রভাগ ও পাগড়ির উপর মাসাহ করলেন।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">[সূত্রঃ সহীহ মুসলিম, হা/ ৮১]।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">তাঁর পাগড়ি পরিধান সংক্রান্ত এ ধরনের আরো অনেক বর্ণনা হাদীসের বিভিন্ন কিতাবে বর্ণিত হয়েছে।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">❏ সাহাবা, তাবেয়ীগণও নামাযে এবং নামাযের বাইরে বিভিন্ন সময় ব্যাপকভাবে পাগড়ি ব্যবহার করতেন।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">[দ্রষ্টব্য : সহীহ বুখারী ১/৫৬]।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">❏ হযরত সুলাইমান ইবনে আবি আবদিল্লাহ (رحمة الله) বলেন, আমি মুহাজির সাহাবীগণকে কালো, সাদা, হলুদ, সবুজ বিভিন্ন রঙের পাগড়ি পরতে দেখেছি।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">[সূত্রঃ মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হা/ ২৫৪৮৯]।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">❏ হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (رضي الله عنه) সম্পর্কে বর্ণিত আছে, তিনি মক্কা মুকাররমার উদ্দেশে বের হলে সঙ্গে পাগড়ি নিতেন এবং তা পরিধান করতেন।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">[সূত্রঃ সহীহ মুসলিম, হা/ ২৫৫২]।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">❏ হযরত আবু উবাইদ (رحمة الله) বলেছেন, আমি আতা ইবনে ইয়াযিদকে পাগড়ি পরিহিত অবস্থায় নামায পড়তে দেখেছি।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">[সূত্রঃ মুসনাদে আহমদ, হা/ ১১৭৮০]।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">সুপ্রিয় পাঠক, আসুন জেনে নেই, পাগড়ী কত হাত হবে এবং কোন রংয়ের পাগড়ী নবীজীর খাস সুন্নাতের অন্তর্ভক্ত।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">নবী পাক (ﷺ) এর ধাধানধাধপাঁচ রংয়ের পাগড়ী পরিধান করেছেন মর্মে বর্ণনা পাওয়া যায়। </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">কালো, সাদা, যাফরান, হলুদ এবং ছাই বর্ণের পাগড়ী পরিধান করা নবীজীর খাছ সুন্নাতের অন্তর্ভুক্ত।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">যেমন-</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">১/ পূর্বোক্ত হযরত জাবের বিন আব্দুল্লাহ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন-</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">عن جابر بن عبد الله ان النبي صلي الله عليه وسلم دخل يوم الفتح وعليه عمامة سوداء</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">‘নিশ্চয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম মক্কা বিজয়ের দিন যখন তথায় প্রবশে করেন তাঁর মাথা মোবারকে ছিল কালো পাগড়ী।’</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">[সূত্রঃ মুসলিম, কিতাবুল হজ্জ, ৩/১৩৩]।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">২/ ইমাম সাখাবী মা আয়েশা ছিদ্দিকা হতে বর্ণনা করেন যে-</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">ان عمامة رسول الله صلي الله عليه وسلم في السفر كانت بيضاء والحضر كانت سوداء</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">‘নিশ্চয় সফররত অবস্থায় নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম সাদা পাগড়ী এবং মুকীম অবস্থায় কালো পাগড়ী পরিধান করতেন।’</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">[সূত্রঃ সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ, ৭/২৭৬]।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">৩/ হযরত যায়দ বিন আসলাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">كان رسول الله صلي الله عليه وسلم يصبع ثيابه كلها بالزعفران حتي العمامة</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">‘নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম সব কাপড়কেই যাফরান দ্বারা রং করেছেন এমন কী পাগড়ীসহ।’</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">[সূত্রঃ সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ, ৭/২৭৩]।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">৪/ হযরত আবু হুরায়রা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন-</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">خرج علينا رسول الله صلي الله عليه وسلم وعليه قميص اصفر ورداء اصفر وعمامة صفراء</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">‘নবীজী আমাদের সাথে হলুদ জামা, হলুদ চাঁদর এবং হলুদ পাগড়ী পরিধান করে বের হলেন।’</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">[সূত্রঃ সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ, ৭/২৭৩]।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">৫/ হযরত জাফর বিন আমর বিন হুরাইছ তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন-</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">رأيت علي النبي صلي الله عليه وسلم عمامة حرقانية</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">‘আমি নবীজীকে ছাই রংয়ের পাগড়ি পরিহিত অবস্থায় দেখেছি।’</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">[সূত্রঃ নাসাঈ শরীফ, কিতাবুল যিনাত]।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">এছাড়াও তাবেয়ী সুলাইমান ইবনু আব্দিল্লাহর বর্ণনায় সাহাবীগণ লাল এবং সবুজ পাগড়ী পরেছেন বলেও বর্ণনায় পাওয়া যায়।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">তিনি বলেন-</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">ادركت المهاجرين الاولين يعتمون بعمائم كرابيس سود وبيض وحمر وخضر وصفر</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">‘আমি প্রথম যুগের মুহাজির সাহাবীদেরকে দেখেছি যে, তাঁরা সুতী, কালো, সাদা, লাল, সবুজ এবং হলুদ রংয়ের পাগড়ি পরিধান করতেন।’</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">[সূত্রঃ মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ- ২৫৪৮৯]।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"><b>পাগড়ীর পরিমাপ সম্পর্কে-</b></div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">০১. ‘মিরআত শরহে মিশকাত’ গ্রন্থে বর্ণিত যে, হুযুর পাকের পাগড়ী মোবারকের দৈর্ঘ্য ছিল সাত হাত এবং প্রস্থ ছিল এক বিঘত হতে কিছু বেশি।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">০২. ‘মাদারেজুন নবুওয়াত’ কিতাবে এসেছে যে, পাগড়ীর সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্য ১৪ হাত এবং সর্বনিু ৭ হাত। আর পাগড়ীর প্রান্ত সর্বোচ্চ পিঠের মাঝামাঝি ও সর্বনিম্ন চার আঙ্গুল পরিমাণ।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">০৩. আ‘লা হযরত ফাতাওয়ায়ে রেজভীয়ায় পাগড়ীর দৈর্ঘ্য সম্পর্কে কয়েকটি মত উল্লেখ করেছেন:</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">(ক) পাগড়ির দৈর্ঘ্য সাত হাত কিংবা তার চেয়ে কিছু বেশি।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">(খ) সর্বোচ্চ ১২ হাত ও সর্বনিম্ন ৫ হাত।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">(গ) শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দেসে দেহলভী তার ‘রেসালায়ে লিবাস’ এর মধ্যে দৈর্ঘ্য ৩১ হাত পর্যন্ত বর্ণনা করেছেন।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">(ঘ) সাধারণের নিকট যেরূপ প্রচলন রয়েছে এরূপ আমল করতে শরয়ী কোন ভয় নেই।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">০৪. শামায়েলে নববীতে এসেছে পাগড়ীর প্রস্থ দেড় হাত এবং তা সুতী কাপড়ের ব্যবহার করা মুস্তাহাব।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div><p dir="ltr" style="text-align: justify;">🅰 ডাউনলোড ইসলামী বিশ্বকোষ ও আল-হাদিস এপ্স। এতে রয়েছে ২৩০ টি কিতাবঃ <a href="https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan">https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan</a></p></div>

পাগড়ী বাঁধার ফযিলত

পাগড়ী পরিধান করে নামাজ পড়ার ফজিলতঃ ইমাম সাখাভী (رحمة الله) এবং আল্লামা আজলুনী (رحمة الله) এ প্রসঙ্গ এর সমর্থনে দুটি হাদিস বর্ণনা করেছেন। হাদ...

Read more »

বিশেষ ফজিলতপূর্ণ কিছু আয়াত ও দোয়া

<div style="text-align: justify;">বিশেষ ফজিলতপূর্ণ কিছু আয়াত ও দোয়া<br></div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">বিভিন্ন ধরনের বালা-মুসিবত দূর করার আমল</div><div style="text-align: justify;">দোয়া: </div><div style="text-align: justify;">لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِينَ</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">উচ্চারণ: লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ্ জ্বালিমীন।</div><div style="text-align: justify;">অর্থ: আপনি ব্যতীত আর কোনো উপাস্য নেই। আমি আপনার পবিত্রতা ঘোষণা করছি। অবশ্যই আমি পাপী। -সূরা আল আম্বিয়া: ৮৭</div><div style="text-align: justify;">ফজিলত</div><div style="text-align: justify;">ক. এ আয়াতে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেছেন, আমি নবী ইউনুসের প্রার্থনা মঞ্জুর করেছি। তাকে দু:খ থেকে মুক্তি দিয়েছি। অনুরূপভাবে যে মুমিনরা এ দোয়া পড়বে আমি তাদেরও বিভিন্ন বালা-মুসিবত থেকে মুক্তি দিব। -সূরা আল আম্বিয়া: ৮৮</div><div style="text-align: justify;">খ. হজরত নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি হজরত ইউনুস (আ.)-এর ভাষায় দোয়া করবে, সে যে সমস্যায়ই থাকুক আল্লাহতায়ালা তার ডাকে সাড়া দিবেন। -তিরমিজি: ৩৫০৫</div><div style="text-align: justify;">গ. হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) আরও ইরশাদ করেছেন, আমার ভাই ইউনুসের দোয়াটি খুব সুন্দর। এর প্রথম অংশে আছে কালিমায়ে তায়্যিবা। মাঝের অংশে আছে তাসবিহ। আর শেষের অংশে আছে অপরাধের স্বীকারোক্তি। যে কোনো চিন্তিত, দু:খিত, বিপদগ্রস্থ ব্যক্তি প্রতি দিন এ দোয়া তিন বার পাঠ করবে আল্লাহতায়ালা তার ডাকে সাড়া দিবেন। -কানজুল উম্মাল: ৩৪২৮</div><div style="text-align: justify;">আমল: কঠিন বালা-মুসিবত দূর করার জন্য বর্ণিত দোয়া বা আয়াতটি এক লক্ষ চব্বিশ হাজার পাঠ করে আল্লাহর কাছে দোয়া করলে, ওই দোয়া হয়।</div><div style="text-align: justify;">শিশুর জিদ দূর করার আমল</div><div style="text-align: justify;">দোয়া:</div><div style="text-align: justify;">أَفَغَيْرَ دِينِ اللَّهِ يَبْغُونَ وَلَهُ أَسْلَمَ مَنْ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ طَوْعًا وَكَرْهًا وَإِلَيْهِ يُرْجَعُونَ</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">উচ্চারণ: আফাগাইরা দীনিল্লাহি ইয়াবগুনা ওয়ালাহু আসলামা মান ফিস্ সামাওয়াতি ওয়াল আরদি তাউআউ ওয়া কারহান; ওয়া ইলাইহি ইয়ুরজাঊন।</div><div style="text-align: justify;">অর্থ: তারা কি আল্লাহর দেয়া জীবন ব্যবস্থার পরিবর্তে অন্য জীবন ব্যবস্থা তালাশ করছে? নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলে যা কিছু আছে স্বেচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় হোক তার অনুগত হবে। সবাই তার কাছে ফিরে যাবে। -সূরা আল ইমরান: ৮৩</div><div style="text-align: justify;">ফজিলত: যে ব্যক্তির সন্তান বা প্রাণী তাকে কষ্ট দেয়, সে যেন তার কানে সূরা আল ইমরানের ৮৩ নং আয়াত পড়ে। -আল মুজামুল আউসাত লিত্ তাবারানি: ৬৪</div><div style="text-align: justify;">আমল: সন্তানের অতিরিক্ত জিদ থাকলে, কথা না শোনলে, কথা না মানলে প্রতিদিন ৭ বার সন্তানের কপালের উপরিভাগের চুলে হাত রেখে এ আয়াতখানা পাঠ করে তার চেহারা ও কানে ফুঁ দিলে- জিদ কমে আসে। এ আমল নূন্যতম ২১ দিন লাগাতার করতে হয়।</div><div style="text-align: justify;">শ্রেষ্ঠ দোয়া</div><div style="text-align: justify;">দোয়া:</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ</div><div style="text-align: justify;">উচ্চারণ: রাব্বানা আতিনা ফিদ্ দুনইয়া হাসানাহ্, ওয়াফিল আখিরাতি হাসানাহ্। ওয়াকিনা আজাবান্নার।</div><div style="text-align: justify;">অর্থ: হে আমার প্রভু! আমাকে দুনিয়াতে সুখ দান কর, আখেরাতেও সুখ দান কর এবং আমাকে জাহান্নাম থেকে বাঁচাও। -সূরা আল বাকারা: ২০১‍ৎ</div><div style="text-align: justify;">ফজিলত: এ দোয়াকে সর্বশ্রেষ্ঠ দোয়া বলা হয়ে থাকে। নবী করিম (সা.) এ দোয়াটি সবচেয়ে বেশি পাঠ করতেন।</div><div style="text-align: justify;">বিশিষ্ট তাবেয়ি হজরত কাতাদাহ (রহ.) সাহাবি হজরত আনাসকে (রা.) জিজ্ঞাসা করলেন, নবী করিম(সা.) কোন দোয়া বেশি করতেন? উত্তরে সাহাবি হজরত আনাস (রা.) উপরোক্ত দোয়ার কথা জানালেন। তাই হজরত আনাস (রা.) নিজে যখনই দোয়া করতেন- তখনই দোয়াতে এই আয়াতকে প্রার্থনারূপে পাঠ করতেন। এমনকি কেউ তার কাছে দোয়া চাইলে তিনি তাকে এ দোয়া দিতেন। -সহিহ মুসলিম: ৭০১৬</div><div style="text-align: justify;">হজরত আনাস (রা.) আরও বলেন, আল্লাহতায়ালা এ দোয়ায় দুনিয়া ও আখেরাতের সকল কল্যাণ ও জাহান্নাম থেকে পরিত্রাণের প্রার্থনা একত্রিত করে দিয়েছেন।</div><div style="text-align: justify;">দ্বীনদার স্ত্রী লাভের আমল</div><div style="text-align: justify;">দোয়া:</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا</div><div style="text-align: justify;">উচ্চারণ: রাব্বানা হাবলানা মিন আজওয়াজিনা ওয়া জুররি-ইয়্যাতিনা কুররাতা আয়ুনিওঁ-ওয়াজআলনা লিল মুত্তাকিনা ইমামা।</div><div style="text-align: justify;">অর্থ: হে আমার প্রভু! স্ত্রী ও সন্তাদের দ্বারা আমার চোখ শীতল কর। আমাকে পরহেজগারদের আদর্শ কর। -সূরা ফোরকান: ৭৪</div><div style="text-align: justify;">আমল: যারা বিয়ে করেননি তারা প্রত্যেক নামাজের (তা ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নত, নফল যে কোনো নামাজ হোক) শেষ বৈঠকে দোয়ায়ে মাছূরা পড়ার পর কোরআনে বর্ণিত এই আয়াতখানা পাঠ করে সালাম ফিরাবেন। বিয়ের ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে এ আমল করলে আশা করা যায়, আল্লাহভক্ত দ্বীনদার, পরহেজগার ও আদর্শ স্ত্রী জুটবে।</div><div style="text-align: justify;">আর যারা বিয়ে করেছেন তারা স্ত্রী ও সন্তানদের দ্বীনদার করার জন্য, তাদের আদর্শবান করে গড়ে তোলার জন্য- প্রতিবার দোয়ায় এ আয়াত আয়াত পাঠ করলে বিশেষ উপকার লাভ হয়।</div><div style="text-align: justify;">রিজিক বৃদ্ধির আমল</div><div style="text-align: justify;">দোয়া: </div><div style="text-align: justify;">اللَّهُ لَطِيفٌ بِعِبَادِهِ يَرْزُقُ مَنْ يَشَاءُ وَهُوَ الْقَوِيُّ الْعَزِيزُ</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">উচ্চারণ: আল্লাহু লাতীফুম্ বি-ইবাদিহি ইয়ারজুকু মাইয়্যাশায়ু, ওয়া হুয়াল কাভিয়্যুল আজিজ।</div><div style="text-align: justify;">অর্থ: আল্লাহতায়ালা নিজের বান্দাদের প্রতি মেহেরবান। তিনি যাকে ইচ্ছা রিজিক দান করেন। তিনি প্রবল, পরাক্রমশালী। -সূরা শুরা: ১৯</div><div style="text-align: justify;">আমল: যে ব্যক্তি প্রতিদিন সকালে নিয়ম করে, একনিষ্ঠতার সঙ্গে ৭০ বার এ আয়াত পড়বে, সে সর্বদা রিজিকের সঙ্কট থেকে হেফাজতে থাকবে।</div><div style="text-align: justify;">স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির আমল</div><div style="text-align: justify;">স্মৃতিশক্তির দুর্বলতার কারণে অনেক শিক্ষার্থীকেই নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী নিজে অথবা তার পিতা-মাতা প্রতিদিন প্রত্যেক নামাজের পর সূরা আলাম নাশরাহ পড়ে তার বুকে ফুঁ দিবে। সূরা পাঠ করার শুরু ও শেষে একবার করে দরূদ শরিফ পড়বে। যদি শিক্ষার্থী সমঝদার হয়, তবে প্রতিবার পড়তে বসার সময়, প্রত্যেক ক্লাসের শুরুতে, শিক্ষার প্রতিটি আসরের শুরুতে আগে-পরে দরূদ শরিফসহ এ সূরা পড়ে নিজের বুকে ফুঁ দিবে। যে নিয়মিত এ আমল করবে, আল্লাহর রহমতে তার স্মৃতিশক্তি বাড়বে।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"><p dir="ltr">🅰 ডাউনলোড ইসলামী বিশ্বকোষ ও আল-হাদিস এপ্স। এতে রয়েছে ২৩০ টি কিতাবঃ <a href="https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan">https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan</a></p></div>

বিশেষ ফজিলতপূর্ণ কিছু আয়াত ও দোয়া

বিশেষ ফজিলতপূর্ণ কিছু আয়াত ও দোয়া বিভিন্ন ধরনের বালা-মুসিবত দূর করার আমল দোয়া:  لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنْتُ مِنَ الظ...

Read more »

কিতাবঃ আমলে নাজাত

<div style="text-align: justify;"><ol><li><a href="https://www.sunni-encyclopedia.com/2020/12/blog-post_86.html?m=0" style="font: inherit; text-indent: -15px; position: relative; overflow-wrap: break-word; margin: 0px; padding: 0px; border: 0px; vertical-align: baseline; color: rgb(99, 185, 151); text-decoration-line: none;">রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নিকট সর্বোত্তম আমল</a></li><li><a href="https://www.sunni-encyclopedia.com/2020/12/blog-post_81.html?m=0" style="font: inherit; text-indent: -15px; position: relative; overflow-wrap: break-word; margin: 0px; padding: 0px; border: 0px; vertical-align: baseline; color: rgb(99, 185, 151); text-decoration-line: none;">মুহূর্ত্বের মধ্যেই কোটি কোটি সওয়াবের ভান্ডার</a></li><li><a href="https://www.sunni-encyclopedia.com/2020/12/blog-post_5.html?m=0" style="font: inherit; text-indent: -15px; position: relative; overflow-wrap: break-word; margin: 0px; padding: 0px; border: 0px; vertical-align: baseline; color: rgb(99, 185, 151); text-decoration-line: none;">সমুদ্রের ফেনার সমতুল্য গোনাহ মার্জনার আমল</a></li><li><a href="https://www.sunni-encyclopedia.com/2020/12/blog-post_26.html?m=0" style="font: inherit; text-indent: -15px; position: relative; overflow-wrap: break-word; margin: 0px; padding: 0px; border: 0px; vertical-align: baseline; color: rgb(99, 185, 151); text-decoration-line: none;">বিশেষ ফজিলতপূর্ণ কিছু আয়াত ও দোয়া</a></li><li><a href="https://www.sunni-encyclopedia.com/2020/12/blog-post_60.html?m=0" style="font: inherit; text-indent: -15px; position: relative; overflow-wrap: break-word; margin: 0px; padding: 0px; border: 0px; vertical-align: baseline; color: rgb(99, 185, 151); text-decoration-line: none;">দৈনিন্দিন জিকির</a></li><li><a href="https://www.sunni-encyclopedia.com/2020/12/blog-post_8.html?m=0" style="font: inherit; text-indent: -15px; position: relative; overflow-wrap: break-word; margin: 0px; padding: 0px; border: 0px; vertical-align: baseline; color: rgb(99, 185, 151); text-decoration-line: none;">দৈনন্দিন দোয়া</a></li><li><a href="https://www.sunni-encyclopedia.com/2020/12/blog-post_40.html?m=0" style="font: inherit; text-indent: -15px; position: relative; overflow-wrap: break-word; margin: 0px; padding: 0px; border: 0px; vertical-align: baseline; color: rgb(99, 185, 151); text-decoration-line: none;">পাগড়ী বাঁধার ফযিলত</a></li><li><a href="https://www.sunni-encyclopedia.com/2020/12/blog-post_3.html?m=0" style="font: inherit; text-indent: -15px; position: relative; overflow-wrap: break-word; margin: 0px; padding: 0px; border: 0px; vertical-align: baseline; color: rgb(99, 185, 151); text-decoration-line: none;">বিশেষ ফজিলতপূর্ণ কিছু আয়াত ও দোয়া</a></li><li><a href="https://www.sunni-encyclopedia.com/2020/12/blog-post_4.html?m=0" style="font: inherit; text-indent: -15px; position: relative; overflow-wrap: break-word; margin: 0px; padding: 0px; border: 0px; vertical-align: baseline; color: rgb(99, 185, 151); text-decoration-line: none;">সুন্নাহর অনুসরণ হল আল্লাহ ও রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর আনু...</a></li><li><a href="https://www.sunni-encyclopedia.com/2020/12/blog-post_78.html?m=0" style="font: inherit; text-indent: -15px; position: relative; overflow-wrap: break-word; margin: 0px; padding: 0px; border: 0px; vertical-align: baseline; color: rgb(99, 185, 151); text-decoration-line: none;">বিলুপ্ত সুন্নাত জিন্দা করার জন্য অবিরাম সাধনার গুর...</a></li><li><a href="https://www.sunni-encyclopedia.com/2020/12/blog-post_76.html?m=0" style="font: inherit; text-indent: -15px; position: relative; overflow-wrap: break-word; margin: 0px; padding: 0px; border: 0px; vertical-align: baseline; color: rgb(99, 185, 151); text-decoration-line: none;">কুরআন হাদিসের আলোকে সুস্থতা এক বড় নিয়ামত</a></li><li><a href="https://www.sunni-encyclopedia.com/2020/12/blog-post_89.html?m=0" style="font: inherit; text-indent: -15px; position: relative; overflow-wrap: break-word; margin: 0px; padding: 0px; border: 0px; vertical-align: baseline; color: rgb(99, 185, 151); text-decoration-line: none;">জান্নাতে প্রবেশকারী ব্যক্তিদের গুণাবলী</a></li><li><a href="https://www.sunni-encyclopedia.com/2020/12/blog-post_56.html?m=0" style="font: inherit; text-indent: -15px; position: relative; overflow-wrap: break-word; margin: 0px; padding: 0px; border: 0px; vertical-align: baseline; color: rgb(99, 185, 151); text-decoration-line: none;">জুম্মার দিনে দশ হাজার বছরের রোযার সাওয়াব</a></li><li><a href="https://www.sunni-encyclopedia.com/2020/12/blog-post_66.html?m=0" style="font: inherit; text-indent: -15px; position: relative; overflow-wrap: break-word; margin: 0px; padding: 0px; border: 0px; vertical-align: baseline; color: rgb(99, 185, 151); text-decoration-line: none;">মানুষকে পানি পান করানোর ফযীলত</a></li></ol></div>

কিতাবঃ আমলে নাজাত

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নিকট সর্বোত্তম আমল মুহূর্ত্বের মধ্যেই কোটি কোটি সওয়াবের ভান্ডার সমুদ্রের ফেনার সমতুল্য গোনাহ মার্জনার আমল বিশেষ ফজিলতপূর্...

Read more »

সুন্নাহর অনুসরণ হল আল্লাহ ও রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর আনুগত্য আর আনুগত্যেই মুক্তি

<div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">আল্লাহ তা'য়ালা বলেনঃ</div><div style="text-align: justify;">◾“আর তোমরা দ্রুত অগ্রসর হও তোমাদের প্রভুর পক্ষ থেকে মাগফিরাত ও জান্নাতের দিকে, যার পরিধি আসমানসমূহ ও যমীনের সমান, যা মুত্তাকীদের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।” -[সূরা আলে-ইমরানঃ ১৩৩]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">◾আল্লাহ তা'য়ালা আরো বলেন :</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">وَمَنْ يُطِعِ اللَّهَ وَالرَّسُولَ فَأُولَئِكَ مَعَ الَّذِينَ أَنْعَمَ اللَّهُ عَلَيْهِمْ مِنَ النَّبِيِّينَ وَالصِّدِّيقِينَ وَالشُّهَدَاءِ وَالصَّالِحِينَ وَحَسُنَ أُولَئِكَ رَفِيقًا ০</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">-আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও রসুলের হুকুম মান্য করবে, সে তাদের সংগী হবে-যাদের প্রতি আল্লাহ নিয়ামত দান করেছেন, তারা হলেন নবীগণ, সিদ্দিকগণ, শহীদগণ ও সলেহীনগণ আর তাদের সান্নিধ্যই হল উত্তম। -(সূরা নিছা : ৬৯)</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">◾আল্লাহ তা’য়ালা বলেন : (হে রাসূল! আপনি) বলুন! যদি তোমরা আল্লাহর ভালবাসা পেতে চাও, তবে আমার অনুসরণ কর। তাহলে আল্লাহ তোমাদেরকে ভালবাসবেন এবং তোমাদের গুনাহ সমুহ মাফ করে দিবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়াময়। -(সূরা আলে ইমরান : আয়াত ৩১)</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">◾তিনি আরও বলেন : “রাসূল তোমাদের যা আদেশ দেন, তা তোমরা গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করেন তা থেকে তোমরা বিরত থাক।” -[সূরা হাশরঃ আয়াত ৭]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">◾তিনি আরও বলেন : “যে রাসূলের আনুগত্য করল, সে প্রকারান্তরে আল্লাহরই আনুগত্য করল। আর যে বিমুখ হল, আমি আপনাকে তাদের উপর তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে প্রেরণ করিনি”। -[সূরা নিসাঃ আয়াত ৮০]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">◾তিনি আরও বলেন : “তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে যারা আল্লাহ ও শেষ দিনের আশা রাখে আর আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে।” -[সূরা আহযাবঃ আয়াত ২১]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">◾তিনি আরও বলেন : “অতএব, তোমার পালনকর্তার কসম!সে লোক ঈমানদার হবে না, যতক্ষণ না তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে তোমাকে (নবী ﷺ কে) ন্যায়বিচারক বলে মনে না করে। অতঃপর তোমার মীমাংসার ব্যাপারে নিজের মনে কোন রকম সংকীর্ণতা পাবে না এবং তা হৃষ্টচিত্তে তা কবুল করে নেবে”। -(সুরা নিসাঃ আয়াত ৬৫)</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">◾তিনি আরও বলেন : “আল্লাহ ও তাঁর রসূল কোন কাজের আদেশ করলে কোন ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারীর সে বিষয়ে ভিন্ন ক্ষমতা নেই যে, আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আদেশ অমান্য করে সে প্রকাশ্য পথভ্রষ্ট তায় পতিত হয়”।–[সূরা আল-আহযাবঃ আয়াত ৩৬]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">◾তিনি আরও বলেন : “মু’মিনদেরকে যখন তাদের মাঝে ফায়সালা করার জন্য আল্লাহ ও তার রাসূলের দিকে ডাকা হয়, তখন মু’মিনদের জওয়াব তো এই হয় যে,তারা বলে, আমরা শুনলাম ও মেনে নিলাম, আর তারাই সফলকাম।”  -[সূরা নূরঃ আয়াত ৫১]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">◾তিনি আরও বলেন : “রাসূলের আহ্বানকে তোমরা তোমাদের একের প্রতি অন্যের আহ্বানের মত গণ্য করো না। আল্লাহ অবশ্যই তাদেরকে জানেন যারা তোমাদের মধ্যে চুপিসারে সরে পড়ে। কাজেই যারা তার আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করে তারা যেন তাদের ওপর বিপর্যয় নেমে আসা অথবা যন্ত্রণাদায়ক আযাব পৌছার ভয় করে।” -[ সূরা নূরঃ আয়াত ৬৩]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">◾তিনি আরও বলেন : “আর এটি তো আমার সোজা পথ। সুতরাং তোমরা তার অনুসরণ কর এবং অন্যান্য পথ অনুসরণ করো না, তাহলে তা তোমাদেরকে তাঁর পথ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেবে। এ গুলো তিনি তোমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন কর।” -[সূরা আনআমঃ আয়াত ১৫৩]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">◾তিনি আরও বলেন : “হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর, রাসূলের আনুগত্য কর, আরও আনুগত্য কর তোমাদের মধ্যকার ক্ষমতাশীলদের, অতঃপর কোন বিষয়ে তোমাদের মধ্যে মতভেদ ঘটলে তা উপস্থাপন কর আল্লাহ ও তাঁর  রাসূলের নিকট, যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে ঈমান এনে থাক। এ পন্থাই তোমাদের জন্য উত্তম এবং পরিণামে প্রকৃষ্টত্বর।” –(সূরা নিসাঃ আয়াত ৫৯)</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">◾তিনি আরও বলেন : “যারা আন নাবী আর উম্মী [হুজুর (ﷺ)] এর অনুসরণ করে, যার কথা তারা তাদের নিকট রক্ষিত তাওরাত ও ইঞ্জিলে লিখিত পায় [তিনি (ﷺ)] মানুষকে সৎ কাজের নির্দেশ দেন ও অন্যায় করতে নিষেধ করেন। তিনি তাদের জন্যে পবিত্র বস্তু সমূহ হালাল করে দেন এবং অপবিত্র বস্তু সমূহকে তাদের জন্যে হারাম করে দেন। আর তাদের উপর চাপানো বোঝা ও বন্ধন হতে তাদের মুক্ত করেন। অতএব যেসব লোক তাঁর প্রতি ঈমান এনেছে, তাঁর সাহচর্য লাভ করেছে, তাঁকে সাহায্য করেছে এবং সেই নূরের (কুরআনের) অনুসরণ করেছে যা তাঁর নিকট নাযিল হয়েছে, শুধুমাত্র তারাই সফলতা লাভ করেছে। (সূরা আরাফ: আয়াত ১৫৭)</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">◾মুমিনের জীবন ও কামনা-বাসনা হবে সুন্নাতের নমুনাঃ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:  তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত কেউ পরিপূর্ণ ঈমানদার হতে পারবে না,যতক্ষণ না তার কামনা-বাসনা আমার আনীত আদর্শের অনুবর্তী হবে -(শারহুস সুন্নাহ)</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">◾হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন : ‘‘জান্নাত পেতে আগ্রহী নয় এমন ব্যক্তি ছাড়া আমার সকল উম্মাতই জান্নাতে প্রবেশ করবে। সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! কে এমন ব্যক্তি আছে যে জান্নাতে যেতে অস্বীকৃতি জানায়? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, যে ব্যক্তি আমার আনুগত্য করবে সে জান্নাতে যাবে, আর যে আমার নাফরমানী করবে ও অবাধ্য হবে, সেই জান্নাতে যেতে অস্বীকার করে’’। -[সহীহ বুখারী ]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">◾হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন : “আল্লাহ তা’আলা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আমাদের নিকট প্রেরণ করেছেন, আমরা কিছুই জানতাম না। আমরা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে যে রূপ করতে দেখি, আমরাও সেরূপ করি।” [ ইবনু মাযাহঃ হাদিস নং ১০৬৬ সহীহ]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">◾হযরত জাবির বিন আব্দুল্লাহ রাদিআল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ঘুমন্ত অবস্থায় কিছু সংখ্যক ফিরিস্তা আসলেন, তাদের কেউ বললেন, তিনি ঘুমন্ত, আবার কেউ বললেন: তাঁর চক্ষু ঘুমন্ত কিন্তু অন্তর জাগ্রত। অতঃপর তারা বললেন,তাঁর একটি দৃষ্টান্ত রয়েছে তোমরা সে দৃষ্টান্ত বর্ণনা কর, অতঃপর বললেন, তাঁর দৃষ্টান্ত হল ঐ ব্যক্তির ন্যায় যে সুসজ্জিত করে একটি গৃহ নির্মাণ করল, অতঃপর সেখানে খাওয়ার আয়োজন করল এবং একজন আমন্ত্রণকারী প্রেরণ করল, অতঃপর যে আমন্ত্রণ গ্রহণ করল, গৃহে প্রবেশ করল এবং আয়োজিত খানা খেল। আর যে আমন্ত্রণ গ্রহণ করল না, গৃহেও প্রবেশ করল না এবং আয়োজিত খানাও খেল না। এ দৃষ্টান্ত বর্ণনার পর তারা বললেন: দৃষ্টান্তের ব্যাখ্যা করে দিন তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বুঝতে পারবেন, কারণ চক্ষু ঘুমন্ত হলেও অন্তর জাগ্রত, তখন তারা ব্যাখ্যায় বললেন, “নির্মিত গৃহটি হল জান্নাত, আর আমন্ত্রণকারী হলেন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, অতএব যে ব্যক্তি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আনুগত্য স্বীকার করে, সে যেন প্রকৃত পক্ষে আল্লাহ তা’আলরই আনুগত্য স্বীকার করল। আর যে ব্যক্তি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে অমান্য করল, সে যেন প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ তা’আলাকেই অমান্য করল। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হলেন মানুষের মাঝে [ন্যায় ও অন্যায়ের] পার্থক্যকারী।” –[ বুখারিঃ হাদিস নং ৭২৮১]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">◾সুন্নাহ অমান্য কারীর সঙ্গে সম্পর্ক কিরূপ হবেঃ হযরত উম্মু সালামা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : অচিরেই তোমাদের উপর এমন কতিপয় শাসক হবে যাদের কিছু কাজ (সুন্নাহ অনুযায়ী হওয়ার কারণে) তোমরা পছন্দ করবে আর কিছু কাজ (সুন্নাহ বিরোধী হওয়ার কারণে) অপছন্দ করবে। যে ব্যক্তি অন্যায় কাজের প্রতিবাদ করবে সে দায়িত্বমুক্ত হবে। আর যে ব্যক্তি এগুলোকে ঘৃণা করবে সেও দায়িত্বমুক্ত হবে। কিন্তু যে ব্যক্তি এরূপ কাজের প্রতি সন্তুষ্ট থাকবে এবং তার অনুসরণ করবে সে অন্যায়ের ভাগী হবে। সাহাবাগণ জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রসূল! আমরা কি তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করবো না? তিনি বললেন : না,যতক্ষন তারা তোমাদের মাঝে নামাজ কায়েম রাখে।”- (মুসলিমঃ ৪৬৪৯ ও তিরমিযীঃ ২২১১)</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">◾অনুরূপ বর্ণনাঃ হযরত কাব বিন উজরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ " জেনে রাখো অচিরেই অনেক জালিম শাসক আসবে। যারা সেই সকল শাসকদের সাথে আঁতাত করবে, তাদের অন্যায়গুলোকে সমর্থন দিবে এবং তাদের জুলুমে সহযোগিতা করবে সে আমার উম্মত নয় এবং আমিও তাঁদের দায়িত্ব নিবো না এবং (কিয়ামতের দিন) তাকে আমার হাউজে কাউসারের সামনে আসতে দেয়া হবে না। আর যাঁরা সেই সকল জালিম শাসকদের সাথে আঁতাত করবে না, তাদের জুলুমে সহায়তা করবে না তাঁরা আমার উম্মত এবং আমি তাঁদের দায়িত্ব নিবো এবং তাঁদেরকেই (কিয়ামতের দিন)  হাউজে কাউসারের পানি পান করানো হবে।  -[ তিরমিযি, হাদিস নং ৬১৪, হাদীস সহিহ]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">◾সুন্নাতের অবহেলাকারী রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উম্মাতভূক্ত নয়ঃ হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত।  তিনি বলেন, আমার পিতা একজন কুরাইশি মেয়ের সাথে আমাকে বিয়ে করিয়ে দিলেন। উক্ত মেয়ে আমার ঘরে আসল। আমি নামায রোযা ইত্যাদি এবাদতের প্রতি আমার বিশেষ আসক্তির দরুণ তার প্রতি কোন প্রকার মনোযোগ দিলাম না। একদিন আমার পিতা- আমর ইবনে আস (রাদিয়াল্লাহু আনহু)  তার পুত্রবধুর কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার স্বামীকে কেমন পেয়েছ? সে জবাব দিল, খুবই ভালো লোক অথবা বললো খুবই ভালো স্বামী। সে আমার মনের কোন খোঁজ নেয় না এবং আমার বিছানার কাছেও আসে না। এটা শুনে তিনি আমাকে খুবই গালাগাল দিলেন ও কঠোর কথা বললেন এবং বললেন, আমি তোমাকে একজন কুরাইশি উচ্চ বংশীয়া মেয়ে বিয়ে করিয়েছি আর তুমি তাকে এরূপ ঝুলিয়ে রাখলে? তিনি নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে গিয়ে আমার বিরূদ্ধে নালিশ করলেন। তিনি আমাকে ডাকালেন। আমি উপস্থিত হলে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি দিনভর রোযা রাখ?আমি বললাম হ্যাঁ। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি রাতভর নামায পড়? আমি বললাম হ্যাঁ। তিনি বললেন, কিন্তু আমি রোযা রাখি ও রোযা ছাড়ি, নামায পড়ি ও ঘুমাই, স্ত্রীদের সাথে মেলামেশা করি। যে ব্যক্তি আমার সুন্নাতের প্রতি আগ্রহ রাখে না সে আমার দলভুক্ত না। -[মুসনাদে আহমাদঃ হাদিস নং- ৬৪৪১]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">◾হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা ‘আনহা হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : বিবাহ আমার সুন্নাত। যে আমার সুন্নাত অনুযায়ী আমল করে না, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়। তোমরা বিবাহ করো, কারণ আমি আমার উম্মতের আধিক্য নিয়ে আল্লাহর দরবারে গর্ব করবো। যার সামর্থ্য আছে সে অবশ্যই বিবাহ করবে আর যার সামর্থ্য নেই তার উপর কর্তব্য হলো রোজা রাখা। কারণ, রোজা তার জন্য প্রতিষেধক। -[ইবনে মাজাহ]</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">সুন্নাত হল নাজাতের একমাত্র পথঃ</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">◾যারা অন্য জাতির কালচারের সাথে সামঞ্জস্য রাখেঃ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে সামঞ্জস্য বা মিল রাখে, সে তাদেরই দলভুক্ত এবং তার হাশর- নশর তাদের সাথেই হবে।” -(মুসনাদে আহমদ)</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div><p dir="ltr" style="text-align: justify;">🅰 ডাউনলোড ইসলামী বিশ্বকোষ ও আল-হাদিস এপ্স। এতে রয়েছে ২৩০ টি কিতাবঃ <a href="https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan">https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan</a></p></div>

সুন্নাহর অনুসরণ হল আল্লাহ ও রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর আনুগত্য আর আনুগত্যেই মুক্তি

আল্লাহ তা'য়ালা বলেনঃ ◾“আর তোমরা দ্রুত অগ্রসর হও তোমাদের প্রভুর পক্ষ থেকে মাগফিরাত ও জান্নাতের দিকে, যার পরিধি আসমানসমূহ ও যমীনের সমান, য...

Read more »

বিলুপ্ত সুন্নাত জিন্দা করার জন্য অবিরাম সাধনার গুরুত্ব ও ফজিলত

<div style="text-align: justify;">যে আমার সুন্নাতকে যিন্দা করে সে আমাকে ভালবাসেঃ<br></div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">◾হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলেছেনঃ “বেটা! সকাল-সন্ধ্যায় যদি এমনভাবে থাকতে পার যে, তোমার মনে কারো প্রতি বিদ্বেষ নেই তাহলে এমনভাবেই থাক। বেটা! এটি আমার সুন্নত। যে আমার সুন্নাতকে যিন্দা করে সে আমাকে ভালবাসে। আর যে আমাকে ভালবাসে সে আমার সাথে জান্নাতে থাকবে।” – (তিরমিযীঃ ২৬৭৮)</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">ছুন্নাতকে আঁকড়ে ধরায় একশত শহীদের সওয়াবঃ </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">◾হযরত আবু হুরাইরা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : “আমার উম্মাতের বিপর্যয়ের সময় যে আমার ছুন্নাতকে আঁকড়ে থাকবে তার জন্য একশত শহীদের সওয়াব।” – (বায়হাকী)</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">◾অন্য বর্ণনাঃ হযরত আনাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ “যে আমার কোন সুন্নাত জিন্দা করল সে যেন আমাকে জিন্দা করল। আর যে আমাকে জিন্দা করল সে আমার সাথে জান্নাতে যাবে।” – (তিরমিজীঃ ২খ.-৯৬ পৃ.)</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">ভাল কাজের প্রতি আহবানকারী ঐ ব্যক্তির সওয়াব পাবেঃ </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">◾হযরত আবু হুরাইরা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : “যে ব্যক্তি হিদায়াতের পথে ডাকে সে তার অনুসারীর সমপরিমান সওয়াব পাবে, তবে অনুসারীর সওয়াব থেকে মোটেও কমানো হবেনা। আর যে ব্যক্তি গোমরাহীর দিকে ডাকে সে তার অনুসারীদের সমপরিমান পাপের ভাগী হবে, তবে অনুসারীদের পাপ থেকে মোটেও কমানো হবে না।” – (মুসলিম, তিরমিজি-২৬১১ : হাসান ও সহীহ্)</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">বিলুপ্ত প্রায় সুন্নাহ জীবিত করার তাগিদঃ </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">◾হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “দ্বীন ইসলাম তো অপরিচিত অবস্থায় যাত্রা শুরু করেছিল এবং অচিরেই অপরিচিত অবস্থায় ফিরে আসবে। সুতরাং সুসংবাদ সেই অপরিচিতদের জন্য।”</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">– (তিরমিযীঃ ২৫৬৬ : হাসান ও সহীহ)</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">◾তাদের পরিচয় প্রসংগে বলা হয়েছে- “যারা আমার ছুন্নাহ মানুষের দ্বারা বিপর্যস্থ হয়ে যাওয়ার পর পুনরায় ইসলাহ বা পুনর্জীবিত করে।” – (তিরমিজীঃ হাদীস নং ২৫৬৭)</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">🅰 ডাউনলোড ইসলামী বিশ্বকোষ ও আল-হাদিস এপ্স। এতে রয়েছে ২৩০ টি কিতাবঃ <a href="https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan" style="font-size: 1.25em;">https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan</a></div>

বিলুপ্ত সুন্নাত জিন্দা করার জন্য অবিরাম সাধনার গুরুত্ব ও ফজিলত

যে আমার সুন্নাতকে যিন্দা করে সে আমাকে ভালবাসেঃ ◾হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্...

Read more »