মুহাম্মদ বিন আলী আল-সেনুসিঃ কিংবদন্তী নেতা
পুরো নাম সিদি মুহাম্মদ ইবনে আলী আল-সেনুসি আল-মুজাহিরি আল-হাসানী আল-ইদ্রিসি। একজন আলেম সেইসাথে আরেকটা পরিচয় তিনি একজন রণাঙ্গনের বীর। তিনিই সেনুসি ত্বরিকার পথিকৃৎ। সেনুসি ত্বরিকা নামটা হয়তো কিছুটা অপরিচিত আপনাদের কাছে। কিন্তু ইতালীর সেনারা তাদের ভালো করেই চিনে-জানে। চিনবে নাইবা কেন? কতবারই যে তাদের নাকানি-চুবানি খাওয়ালো সেনুসি যোদ্ধারা! তাকি ভুলা যায়?
লায়ন অফ ডেজার্ট ওমর মুখতারকে তো আমরা অনেকেই চিনি তাই না? তিনি সেনুসিদের অন্যতম নেতা ছিলেন। আল-সেনুসির নাতি ইদ্রিস ১৯৫১-১৯৬৯ সাল পর্যন্ত লিবিয়ার শাষক ছিলেন।
এবার আল-সেনুসি রহঃ র ব্যাপারে জানা যাক,
তিনি জন্মগ্রহন করেন আলজেরিয়ার মোস্তাগানিম শহরে। একজন শ্রদ্ধেয় শিক্ষক হিসেবে তাকে আল-সেনুসি উপাধি দেওয়া হয়। বংশগতভাবে তিনি একজন সৈয়দজাদা। মরক্কোতে তিনি পড়ালেখা করেন এরপরে মিশরের বিখ্যাত ইউনিভার্সিটি, মুসলিম বিশ্বের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠ আল-আজহারে পড়াশোনা করেন। তিনি বহু মসজিদ মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক কথা হলো লিবিয়ার স্বৈরশাসক গাদ্দাফি সেসব মাদ্রাসা বন্ধ করে দেয়। সাথে তাঁর পরিবারকে অনেক কষ্ট স্বীকার করতে হয়। যাইহোক আজকের স্বাধীন লিবিয়া উনারই অবদান। উনার মৃত্যুর পরে উনার ছেলে সেনুসিদের নেতা হন। এরপর উনার নাতি লিবিয়ার শাষক হন।
এখানে একটা বিষয় উল্লেখযোগ্য, তাঁকে যখন তুরস্কের বিদ্রোহী কামাল খলিফা সাজার প্রস্তাব দেয়, এই সিংহহৃদয় আধ্যাত্মিক পুরুষ বলেছিলেন,
"আমি (তুর্কি) খলিফার বায়াত ভংগ করে নিজে খলিফা বনতে পারবো না।"যদিও তখন খলিফার কোন রাজক্ষমতাই নেই। এটাও তিনি জানতেন, খিলাফাত বিলুপ্ত হতে চলেছে। তবু, স্থির তো এঁরাই।
আল্লাহ এই মহান সূর্যকে মদিনাতে, তাঁর মহত্তর পূর্বপুরুষের কাছেই শেষ আশ্রয় দান করেছিলেন।