কিতাবঃ ইলমে দ্বীন অর্জনের ফজিলত
🖋লেখক, সংকলকঃ মাসুম বিল্লাহ সানি
ইলমে দ্বীনের ফজিলত সম্পর্কে মনীষীদের বাণীঃ
❏ হযরত আলী (رضي الله عنه) বলেন:
رَضِيْنَا قِسْمَةَ الْجَبَّارِ فِيْنَا * لَنَا عِلْمٌ ولِلْجُهَّالِ مَالُ * فَإِنَّ الْمَالَ يَفْنَى عَنْ قَرِيْبٍ * وَإنَّ الْعِلْمَ يَبْقَى لَا يَزَالُ
فَإِنَّ فَقِيْهًا وَاحِدًا مُتَوَرِّعًا * أَشَدُّ عَلَى الشَّيْطَانِ مِنْ أَلْفِ عَابِدٍ*
فَفُزْ بِعِلْمٍ تَعِشْ حَيًّا بِهِ أَبَدًا * النَّاسُ مَوْتَى وَأَهْلُ الْعِلْمِ أَحْيَاءُ
আল্লাহর বণ্টনে আমরা সন্তুষ্ট। আমাদের জন্য আল্লাহ ইলম বা জ্ঞান নির্ধারণ করেছেন, আর জাহেলদের জন্য সম্পদ। জেনে রাখুন মাল দ্রুত নিঃশেষ হয়ে যাবে, আর জ্ঞান চিরকাল বাকী থাকবে। একজন আল্লাহভিরু ফকীহ বা জ্ঞানী শয়তানের মুকাবালায় হাজার আবেদ অপেক্ষা শক্তিশালী। জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে সফলতা লাভ করুন এবং আজীবন বেঁচে থাকুন। কেননা পৃথিবীর সকল মানুষই মৃত, আর জ্ঞানের ধারক বাহকগণ জীবীত।
❏ মুতাররিফ ইবনে শিখখীর বলেন :
فَضْلُ الْعِلْمِ خَيْرٌ مِنْ فَضْلِ الْعَمَلِ، وَخَيْرُ دِيْنِكُمْ الْوَرَعُ
ইলমের ফযীলত আমলের ফযীলতের চেয়ে বেশি। আর তোমাদের সর্বোত্তম দ্বীন হলো তাকওয়া পরহেযগারী। (তাবারানী)
❏ ইমাম শাফেঈ (رحمة الله) বলেন:
وَلَيْسَ اكْتِسَابُ الْمَالِ دُونَ مَشَقَّةٍ **تَكَبَّدْتَهَا، فَالعِلْمُ كَيْفَ يَكُونُ؟
بِقَدْرِ الكَدِّ تُكْتَسَبُ المَعَالِي ** وَمَنْ طَلَبَ العُلَا سَهِرَ اللَّيَالِي
وَمَنْ رَامَ العُلَا مِنْ غَيْرِ كَـدٍّ ** أَضَاعَ العُمَرَ فِيْ طَلَبِ المُحَالِ
تَرُوْمُ الْعِزَّ ثُمَّ تَنَامُ لَيْلاً ** يَغُوْصُ الْبَحْرَ مَنْ طَلَبَ الَّـلآلِيْ
عُلُوُّ الْقَدْرِ بِالْهِمَمِ العَـوَالِي ** وَعِزُّ الْمَرْءِ فِيْ سَهَرِ اللَّيَـالِــيْ
যখন দুনিয়াবী মাল-সম্পদ কষ্ট ছাড়া অর্জিত হয় না, তাহলে সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ ইলম কষ্ট ছাড়া কিভাবে অর্জন হবে? কষ্ট ও চেষ্টা করে মানুষ উচ্চপদ লাভ করে, আর যে পদ লাভ করতে চায়, তাকে অবশ্যই রাত্রি জাগরণ করতে হয়। আর যে , বিনা প্রচেষ্টায় পদ লাভ করতে চায়, সে যেন অসম্ভব বস্তু অর্জনের পেছনে তার জীবন শেষ করে দিলো। তুমি সম্মান লাভ করতে যাও, আর রাত ভরে ঘুমিয়ে থাক! শোন ডুবুরী মুক্তা অনুসন্ধানে সমুদ্রে গভীরে ডুব দিতে হয়। উচ্চ মর্যাদ উচ্চ সাহসের মাধ্যমে লাভ করা যায়, আর মানুষের সম্মান রাত্রি জাগরণে নিহিত।
❏ ইমাম মালেক (رحمة الله) বলেন,
"শরীয়তের জ্ঞানই শুধু অর্জন করবে যেজন,
কবীরা গুনাহে লিপ্ত হবে সে জন।
শুধু তাসাউফের জ্ঞানই যার সাধন,
কুফরী হবে তার বন্ধন।
(মােল্লা আলী কারী : মিরকাতুল মাফাতীহ, কিতাবুল ইলম, ১:৩৩৫।)
❏ "যদি ওলামায়ে কেরাম না থাকতেন তবে মানুষ চতুষ্পদ জন্তুর কাতারে নেমে যেত। (হাসান বসরী (رحمة الله) এর বাণী)
❏ ইমাম বাকের (رحمة الله) থেকে বর্ণিত হয়েছে : জ্ঞানের যাকাত হল অন্যকে জ্ঞান শিক্ষা দেয়া।
❏ "অন্তরকে যদি ইলম থেকে বঞ্চিত করা হয় তবে তার মৃত্যু ঘটবে। (ফাতহ আল-মুসিলী (رحمة الله) এর বাণী।)
❏ "আলেমের কলমের কালিকে শহীদের রক্তের সঙ্গে ওজন করা হবে, তা শহীদের রক্ত অপেক্ষা ভারি হবে।"
(হাসান বসরী (رحمة الله) এর বাণী।)
ইলম দুই প্রকার। যথাঃ
(i) ইলমে শরীয়ত।
(ii) ইলমে মারিফত।
❏ "তবে কি তােমরা কিতাবের কিছু অংশ বিশ্বাস কর এবং কিছু অংশকে প্রত্যাখান কর? (সূরা বাকারা, ২:৮৫)
❏ "বেশি বেশি বর্ণনা ও আক্ষরিক জ্ঞান হাসিল করার নাম ইলম নয়। (আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ (رضي الله عنه) এর বাণী)
❏ "বেশি বেশি মাসআলা জানার নাম ইলম নয়।
(ইমাম মালেক (رحمة الله) এর বাণী।)
❏ "এই ইলম দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত সুতরাং কার থেকে দ্বীন শিখতে যাচ্ছ তাকে আগে দেখে নাও।"
(মুসলিম ১/১৪ পৃঃ)
❏ "হাদিস জানার চেয়ে তার ব্যাখ্যা জানা আগে জরুরি। (ইমাম ইবনে সীরীন (رحمة الله) এর বাণী।)
❏ আরবী প্রবাদে রয়েছে,
رجل بلا عمل كشجرة بلا ثمر
‘আমলবিহীন ব্যক্তি ফলবিহীন বৃক্ষের ন্যায়’।
❏ জনৈক আরবী কবি বলেন,
لو كان للعلم شرف من دون التقي* لكان أشرف خلق الله إبليس
‘যদি তাক্বওয়াবিহীন ইলমের কোন মর্যাদা থাকত, তবে ইবলীস আল্লাহর সৃষ্টিকুলের সেরা বলে গণ্য হত।
[নবীদের কাহিনী, ১/১৩ পৃঃ]