সূরা হুজরাতের ২ নং আয়াত নাযিল হওয়ার পর সাহাবায়ে কেরামের অবস্থা 
------
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা বলছেন, "ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা নবীর আওয়াজের উপর তোমাদের আওয়াজ উচ্চ করো না। তোমরা নিজেরা পরস্পরে যেমন উচ্চ আওয়াজে কথা বল, তাঁর সঙ্গে সে রকম উচ্চ আওয়াজে কথা বলো না। তা করলে তোমাদের (যাবতীয়) আমল নিস্ফল হয়ে যাবে, আর তোমরা একটু টেরও পাবে না।" (সূরা হুজরাত, আয়াত ২)

(উক্ত আয়াত নাযিলের পর) হযরত উমর (রাঃ) যখন নবী ﷺ এঁর সঙ্গে কোন কথা বলতেন, তখন (আওয়াজ উচ্চ হয়ে যা ওয়ার ভয়ে) গোপন বিষয়ের আলাপকারীর মত চুপে চুপে বলতেন, এমন কি তা শোনা যেত না যতক্ষণ না নবী ﷺ তাকে আবার জিজ্ঞেস করতেন। (সহিহ বুখারী ৭৩০২)

হযরত আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) বলেন, একদা নবী ﷺ সাবিত ইবনু কায়স (রাঃ) কে খুঁজে পেলেন না। একজন সাহাবী বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ﷺ! আমি আপনার কাছে তাঁর সংবাদ নিয়ে আসছি। তারপর তিনি তাঁর কাছে গিয়ে দেখলেন যে, তিনি তাঁর ঘরে মাথা নীচু করে বসে আছেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, আপনার কী অবস্থা? তিনি বললেন, অত্যন্ত খারাপ। কারণ (এই অধম), তার আওয়াজ (স্বর) নবী ﷺ এঁর আওয়াজ হতে উচ্চ হয়েছিল। ফলে, তার ‘আমল বরবাদ হয়ে গেছে এবং সে জাহান্নামীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছে। [এগুলো তিনি আশংকার কারণে বলছিলেন কেননা জন্মগতভাবেই তাঁর আওয়াজ উচ্চ ছিল। আর তিনি হলেন সেই সাহাবী যাঁকে রাসূলুল্লাহ ﷺ-এঁর খতীব বলা হত। আহ! ইনাদের কেমন আল্লাহভীতি এবং প্রিয় নবী ﷺ এঁর প্রতি শ্রদ্ধাবোধ ছিল!]

তারপর ঐ সাহাবী নবী ﷺ এঁর কাছে ফিরে এসে খবর দিলেন যে, তিনি এমন এমন কথা বলছেন। মূসা ইবনু আনাস রহঃ বলেন, এরপর ঐ সাহাবী এক মহা সুসংবাদ নিয়ে তাঁর [সাবিত ইবনু কায়স (রাঃ)] কাছে ফিরে গেলেন (এবং বললেন) নবী ﷺ আমাকে বলেছেন, তুমি যাও এবং তাকে বল, তুমি জাহান্নামীদের অন্তর্ভুক্ত নও বরং তুমি জান্নাতীদের অন্তর্ভুক্ত। (সুবহান আল্লাহ। অদৃশ্যের সংবাদদাতা নবী তাকে জান্নাতের সুসংবাদও দিয়ে দিলেন)

(সহিহ বুখারী ৩৬১৩, ৪৮৪৬)

উক্ত আয়াতের তাফসীরে উলামায়ে কেরাম বলেন, প্রিয় নবী ﷺ কে কষ্ট দেয়া, তার শানে বেয়াদবী করা কুফরী যার কারণে সমস্ত আমল বিনষ্ট হয়ে যায়।
Top