যে মুসলিম বিজ্ঞানীর আবিষ্কারের উপর ভিত্তি করে আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের ভিত্তি স্থাপিত হয় ।
আলবাত্তানীর পুরো নাম ‘‘মুহাম্মদ ইবনে জাবির ইবনে সিনান আল রাক্কি আল হারানী আস সাবী আল-বাত্তানী’’
যিনি তৈরি করেছেন অনেক জ্যোতির্বিজ্ঞান সম্বন্ধীয় যন্ত্রপাতি। তাদের মধ্যে ‘আর্মিলারি স্ফিয়ার’ নামে পরিচিত একটি আধুনিক গ্লোব সদৃশ যন্ত্র তৈরি করেছিলেন, যার উপর বিভিন্ন নভোস্থিত বস্তুসমূহের বিচরণ পথ বিশেষ ধরনের রিং বা বলয় দ্বারা চিহ্নিত ছিল। এসব রিং ঘোরানো যেত, ঘোরানো যেত পুরো স্ফিয়ারটিকেও। তার তৈরি স্ফিয়ার ছিল পূর্বের সকল যন্ত্রের চেয়ে নিখুঁত এবং উন্নতমানের। এই যন্ত্রের সাফল্য এককথায় অভাবনীয়। তিনি নিজের তৈরি যন্ত্রটি দিয়ে পর্যবেক্ষণ করে পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্ব সম্বন্ধীয় যুগান্তকারী তথ্য দেন। আল বাত্তানি সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করেছিলেন যে পৃথিবী এবং সূর্যের মধ্যে দূরত্ব সর্বদা সমান থাকে না, পরিবর্তিত হয়। এই পর্যবেক্ষণ থেকেই তিনি আরো একটি চমৎকার সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন যে, যখন সূর্যগ্রহণ হয়, তখন চাঁদ সূর্য ও পৃথিবীর মাঝে অবস্থান নেয়। এবং সূর্য যখন পৃথিবী থেকে সর্বোচ্চ দূরত্বে অবস্থান করে, তখন গ্রহণের সময় চাঁদের চারধারে উজ্জ্বল আলোর রেখার সৃষ্টি হয়।
আল বাত্তানি পৃথিবীর বিষুবরেখার মধ্য দিয়ে যাওয়া কাল্পনিক সমতলের সাথে সূর্য ও পৃথিবীর কক্ষপথের মধ্যে যে সমতল, তা অসদৃশ বলে ব্যাখ্যা করেন। বিস্ময়করভাবে তিনি এই দুই কাল্পনিক সমতলের মধ্যকার কোণ পরিমাপ করেন। এই কোণকে বলা হয় ‘সৌর অয়নবৃত্তের বাঁক’। আল বাত্তানি এর পরিমাপ করেন ২৩ ডিগ্রি ৩৫ মিনিট যা বর্তমানের পরিমাপ ২৩ ডিগ্রি ২৭ মিনিট ৮.২৬ সেকেন্ডের খুবই কাছাকাছি। তার এ সকল জ্যোতির্বিজ্ঞান সম্বন্ধীয় তথ্য রেনেসাঁর যুগে ইউরোপীয় সকল জোতির্বিজ্ঞানীদের মধ্যে পথ প্রদর্শন করেছিল। তারা আল বাত্তানির কাজের উপর ভিত্তি করেই আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের ভিত্তি স্থাপন করেছে। এছাড়াও মহাকাশ বিজ্ঞানে আলবাত্তানীর আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার আছে যা আমরা পরর্বতীতে আলোচনা করবো ।
IGSRC