আল খোয়ারিজমির “কিতাবুল সুরত আল-আরদ” যা টলেমীর ভ্রান্ত ধারণা থেকে পৃথিবীবাসীকে মুক্তি দিয়েছিল ।
বিখ্যাত মুসলিম বিজ্ঞানী আল খোয়ারিজমির ভূগোল বিষয়ক বই “কিতাবুল সুরত আল-আরদ” রচনা করেন।এ বইতে টলেমী সুচিত অসংখ্য ভৌগলিক ভুল ধারণার তিনি সংশোধন করেন। ফলে ইউরোপীয়রা এতে বিস্ময়ে হতভাগ হয়ে যায়। টলেমির মানচিত্র পর্যন্ত তিনি সংশোধন করেন এবং তিনি তাতে একটি মানচিত্র সংযুক্ত করেন। তাঁর উদ্যোগে দুনিয়ার একটি বাস্তবরূপ তৈরী করা হয়, যা পৃথিবীর মানচিত্র অঙ্কনে নমুন হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আল খোয়ারিজমি প্রথম পৃথিবীকে সপ্ত ইকলিম বা মন্ডলে ভাগ করেন। এই সূত্র ধরেই আবহাওয়ার পরিমন্ডল অনুসারে পৃথিবীকে সাতটি মহাদেশে ভাগ করেন।
তিনি ভূমধ্যসাগর, আটলান্টিক এবং ভারত মহাসাগর সম্বন্ধীয় টলেমির ভুলগুলোও সংশোধন করেন।
‘সুরত আল আরদ’-এর একটি কপি বর্তমানে ফ্রান্সের স্ট্রাসবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে সংরক্ষিত আছে।
এই মূল্যবান গ্রন্থটির গুরুত্ব তুলে ধরতে গিয়ে এর লাতিন অনুবাদক সি এ নালিনো বলেছিল, ‘খাওয়ারিজমির এই গ্রন্থ এমন এক রচনা, যার তুল্য ইউরোপের কোনো জাতি তাঁর বৈজ্ঞানিক কার্যকলাপ শুরুর সময়ে উৎপাদন করতে পারেনি।’
তাঁর লেখা আরো দুটি বই হলো কিতাব আল-রুখমাত (সূর্যঘড়ির বই) ও কিতাব আল তারিখ (ইতিহাসের বই), যা কালের পরিক্রমায় হারিয়ে যায়।
ধারনা করা হয় ১২০০সালের পরে তাতারী আক্রমনে যখন তৎকালীন বিশ্বের সবচাইতে বড় লাইব্রেরী বাইতুল হিকমাহ ধ্বংস হয়ে যায় সে সময় এ বইগুলো ও ধ্বংস হয়ে যায়। কারন তাতারীরা ছিল মূর্খ তাই তারা এ বইগুলোর গুরুত্ব বুঝতে পারেনি । আরও একটি ধারনা প্রচলিত আছে তাতারীদের পরে খ্রিষ্টানরা মুসলিমদের দেশ গুলো দখল করে নেয় । খ্রিষ্টানরা অবশ্য তাতারীদের মত মূর্খ ছিল না । তারা মুসলিম স্বর্ণ যুগে যখন মুসলমানদের সংস্পর্শে আসে বুঝতে পারে মুসলমানরা জ্ঞান বিজ্ঞানে অনেক উন্নত । তখন মুসলমানদের অনেক বই খ্রিষ্টানরা নিজের নামে চালিয়ে দিয়ে মূল বই গুলো গায়েব করে দেয় ।
এ সম্পর্কে অন্যকোন দিন বিস্তারিত আলোচনা করবো । আমরা তুলে নিয়ে আসবো সেই বিষিকাময় ইতিহাস যা সমগ্র পৃথিবীকে পিছিয়ে দিয়েছিল প্রায় ১,০০০ বছর ।
IGSRC