১৫. রাসূল (ﷺ) যেখানে যেখানে ইচ্ছা সেখানে পরিভ্রমণ করতে পারেন


এ বিষয়ে ইমাম জালাল উদ্দিন সুয়ূতি (رحمة الله) (ওফাত.৯১১হি.) এর প্রসিদ্ধ কিতাব [أَنْبَاءُ الْأَذْكِيَاءِ بِحَيَاةِ الْأَنْبِيَاءِ] এর ৭  পৃষ্ঠায় একটি হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেন, 

النَّظَرِ فِي أَعْمَالِ أُمَّتِهِ وَالِاسْتِغْفَارِ لَهُمْ مِنَ السَّيِّئَاتِ، وَالدُّعَاءِ بِكَشْفِ الْبَلَاءِ عَنْهُمْ، وَالتَّرَدُّدِ فِي أَقْطَارِ الْأَرْضِ لِحُلُولِ الْبَرَكَةِ فِيهَا، وَحُضُورِ جِنَازَةِ مَنْ مَاتَ مِنْ صَالِحِ أُمَّتِهِ، فَإِنَّ هَذِهِ الْأُمُورَ مِنْ جُمْلَةِ أَشْغَالِهِ فِي الْبَرْزَخِ كَمَا وَرَدَتْ بِذَلِكَ الْأَحَادِيثُ وَالْآثَارُ ـ

-‘‘‘উম্মতের বিবিধ কর্ম কান্ডের প্রতি দৃষ্টি রাখা, তাদের পাপরাশির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা, তাদের বালা মসিবত থেকে রক্ষা করার জন্য দুআ করা, পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে আনাগোনা করা ও বরকত দান করা এবং নিজ উম্মতের কোন নেক বান্দার ওফাত হলে তার জানাযাতে অংশগ্রহণ করা, এগুলোই হচ্ছে হুযুর (رحمة الله) এর সখের কাজ। অন্যান্য হাদিস থেকেও এসব কথার সমর্থন পাওয়া যায়।’’  

➤ ইমাম সুয়ূতি, আল-হাভী লিল ফাতওয়া, ২/১৮৪-১৮৫ পৃষ্ঠা, দারুল ফিকর ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন।


বিশ্ববিখ্যাত মুফাস্সির আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী (رحمة الله) তাফসীরে রুহুল বায়ানে সূরা মূলকের ২৯নং আয়াতের ব্যাখ্যায় উল্লেখ করেন-

قال الامام الغزالي رحمه الله تعالى والرسول عليه السلام له الخيار فى طواف العوالم مع أرواح الصحابة رضى الله عنهم لقد رآه كثير من الأولياء ـ  

-‘‘সুফীকুল সম্রাট হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গায্যালী (رحمة الله) বলেছেন, হুযুর (ﷺ) এর সাহাবায়ে কিরামের রূহ মোবারক সাথে নিয়ে জগতের বিভিন্ন স্থানে পরিভ্রমণের ইখতিয়ার আছে। তাই অনেক আওলিয়া কিরাম তাঁদেরকে দেখেছেন।’’ 

➤ আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী : তাফসীরে রুহুল বয়ান : ১০/৯৯ পৃষ্ঠা, সূরা মুলক, আয়াত নং ২৯।

 

মিশকাত শরীফের ব্যাখ্যা গ্রন্থ মিরকাতুল মাফাতীহ এর بَابُ مَا يُقَالُ عِنْدَ مَنْ حَضَرَهُ الْمَوْتُ শীর্ষক অধ্যায়ের মোল্লা আলী ক্বারী (رحمة الله) বলেন-

وَلَا تَبَاعُدَ مِنَ الْأَوْلِيَاءِ حَيْثُ طُوِيَتْ لَهُمُ الْأَرْضُ، وَحَصَلَ لَهُمْ أَبْدَانٌ مُكْتَسَبَةٌ مُتَعَدِّدَةٌ، وَجَدُوهَا فِي أَمَاكِنَ مُخْتَلِفَةٍ فِي آنٍ وَاحِدٍ، ـ 

-‘‘ওলীগণ একই মুহূর্তে কয়েক জায়গায় বিচরণ করতে পারেন। একই সময়ে তারা একাধিক শরীরের অধিকারীও হতে পারেন।’’  

➤আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী : মেরকাত চতুর্থ খন্ড, পৃ- ১০১ হাদিস নং-১৬৩২


তাই এক সময়েই বহু জায়গায় মিলাদ মাহফিল হয় ওলীগণ যদি একাধিক শরীরে বহু জায়গায় যেতে পারেন তাহলে রাসূল (ﷺ) যেতে পারবেন না কেন? বরং তার সাথে কোন তুলনাই হতে পারে না ? শিফা শরীফে ইমাম কাযী আয়ায আল-মালেকী (رحمة الله) লিখেন,

قَالَ: إِنْ لَمْ يَكُنْ فِي الْبَيْتِ أَحَدٌ فَقُلْ السَّلَامُ عَلَى النَّبِيِّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ، السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ ـ  

-‘‘যে ঘরে কেউ না থাকে, সে ঘরে (প্রবেশের সময়) বলবেন, হে নবী আপনার প্রতি সালাম, আপনার উপর আল্লাহর অশেষ রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক।’’  ➤ইমাম কাজী আয়াজ : শিফা তাহরিফে হুকুকে মোস্তফা : ২/৪৩  পৃষ্ঠা,


এর ব্যাখ্যায় আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী (رحمة الله) শরহে শিফা গ্রন্থে লিখেন-

أي لأن روحه عليه السلام حاضر في بيوت أهل الإسلام

-‘‘কেননা, নবী (ﷺ) এর পবিত্র রুহ মুসলমানদের ঘরে ঘরে বিদ্যমান আছেন।’’  

➤আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী শরহে শিফা : ২/১১৮  পৃষ্ঠা, দারুল কুতুব ইসলামিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন।

Top