মুসলমানদের সাহায্য এবং তাদের চাহিদা পূরণ করার ফযীলতঃ 

এপ্সঃ 🔎 উত্তম চরিত্র [মূলঃ ইমাম তাবারানী রহ.]

সূত্রঃ 🌍 সুন্নি-বিশ্বকোষ


▶৮২) হযরত সায়্যিদুনা আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, রাসূলে পাক (ﷺ) ইরশাদ করেন: “এমন কিছু লােক রয়েছে। যাদেরকে আল্লাহ তায়ালা মানুষের চাহিদা পূরণ করার জন্য সৃষ্টি করেছেন। লােকেরা প্রয়ােজনের সময় তাদের দিকে ধাবিত হয়। এরাই সেই লােক, যারা কিয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালার আযাব থেকে নিরাপদ থাকবে।”


তথ্যসূত্রঃ (আল মু'জামুল কবীর, হাদীস নং- ১৩৩৩৪, ১২/২৭৪।)


▶৮৩) হযরত সায়্যিদুনা সাহাল বিন সা’দ (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, নবীয়ে আকরাম, নূরে মুজাসসাম (ﷺ) ইরশাদ করেন: “কল্যাণ ও অকল্যানের ভাণ্ডার আল্লাহ তায়ালা নিকট আর এর চাবি হচ্ছে মানুষ। সেই ব্যক্তির জন্য সুসংবাদ, যাকে আল্লাহ তায়ালা কল্যাণের চাবি এবং অকল্যাণের তালা বানিয়েছেন আর ধ্বংস তার জন্য, যাকে অকল্যাণের চাবি এবং কল্যাণের তালা বানিয়েছেন।”


তথ্যসূত্রঃ (আল মু'জামুল কবীর, হাদীস নং- ৫৮১৬, ৬/১৫০)


▶৮৪) হযরত সায়্যিদুনা ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, মদীনার তাজেদার, নবীদের সর্দার, হুযুর (ﷺ) ইরশাদ করেন: আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন: “আমিই হলাম প্রতিপালক। আমি কল্যাণ ও অকল্যাণকে ভাগ্য বানিয়ে দিয়েছি। সুসংবাদ তার জন্য, যার হাতে কল্যাণের চাবি রয়েছে এবং ব্যর্থতা তার জন্য, যার হাতে রয়েছে। 

অকল্যাণের চাবি।”


তথ্যসূত্রঃ (দুররে মনসুর, সূরা আম্বিয়া, ২১ নং আয়াতের পাদটিকা, ৫/৬২২।)


▶৮৫... হযরত সায়্যিদুনা আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, প্রিয় নবী (ﷺ), রাসূলে আরাবী (ﷺ) ইরশাদ করেন: “যে ব্যক্তি কোন মুমিনের দুঃখ-কষ্ট লাঘব করলাে, আল্লাহ তায়ালা তার জন্য পুলসিরাতের উপর নূরের দু’টি এমন অংশ সৃষ্টি করবেন, যার আলােয় এত বেশি সংখ্যক সৃষ্টি আলাে পাবে যার সংখ্যা আল্লাহ তায়ালা ছাড়া আর কেউ জানে না।”


তথ্যসূত্রঃ (আল মু'জামু আওসাত, হাদীস নং- ৪৫০৪, ৩/২৫৪।)


▶৮৬) হযরত সায়্যিদুনা আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, সায়্যিদে আলম, নূরে মুজাস্সাম (ﷺ) ইরশাদ করেন: “যে ব্যক্তি কোন মুসলমানের দুনিয়াবী বিপদ দূর করবে, আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতের দিন তার বিপদ দূর করে দেবেন এবং যে ব্যক্তি কোন মুসলমানের দোষ-ত্রুটি গােপন করবে, আল্লাহ তায়ালা দুনিয়া ও আখিরাতে সেই ব্যক্তির দোষ-ত্রুটি গােপন করবেন আর আল্লাহ তায়ালা ততক্ষণ পর্যন্ত বান্দাকে সাহায্য করতে থাকেন, যতক্ষণ পর্যন্ত সে তার মুসলমান ভাইকে সাহায্য করতে থাকে।”


তথ্যসূত্রঃ (সহীহ মুসলিম, কিতাবুয যিকরে ওয়াদ দোয়া, হাদীস নং- ২৬৯৯, ১৪৪৭ পৃষ্ঠা।)


▶৮৭) হযরত সায়্যিদুনা আনাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, হুযুর নবীয়ে পাক (ﷺ) ইরশাদ করেন: “সমস্ত সৃষ্টি আল্লাহ তায়ালারই পালিত। (অর্থাৎ সকল সৃষ্টিকে তিনিই পালনকতা)। আল্লাহ তায়ালার নিকট তাঁর সৃষ্টি জগতের মধ্যে সবচেয়ে অধিক প্রিয় সেই ব্যক্তি, যে তাঁর পালিতের (সৃষ্টিজগতের) সর্বাধিক উপকার সাধন করে।”


তথ্যসূত্রঃ (আল মুসনাদ লিআবী ইয়ালা মওসলী, হাদীস নং- ৩৪৬৫, ৩/২৩২)


▶৮৮) হযরত সায়্যিদুনা আনাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, নবীয়ে আকরাম, নূরে মুজাসসাম (ﷺ) ইরশাদ করেন: “যে মুসলমান ভাইয়ের চাহিদা পূরণ করলাে, যেনাে সে সারা জীবন আল্লাহ তায়ালার ইবাদত করলাে।”


তথ্যসূত্রঃ (আল ফিরদাউস বিমাসুরিল খাত্তাব, বাবুল মিম, হাদীস নং- ২১১১, ২/২৮৬।)


▶৮৯) হযরত সায়্যিদুনা আবু মুসা আশআরী (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, রাসূলে আকরাম (ﷺ), শাহে বনী আদম, হুযুর (ﷺ) ইরশাদ করেন: “এক মুমিন অপর মুমিনের জন্য দালান স্বরূপ, যার একটি অংশ অপর অংশকে শক্তি জোগায়।”


তথ্যসূত্রঃ (সহীহ বুখারী, কিতাবুল মাআলিম ওয়াল গব, হাদীস নং- ২৪৪৬, ২/১২৭।)


▶৯০)  হযরত সায়্যিদুনা নােমান বিন বশীর (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, নবীয়ে। রহমত, শফীয়ে উম্মত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) (ﷺ) ইরশাদ করেন: “মুমিনদের পরস্পরের মাঝে দয়া, ভালবাসা ও সুসম্পর্কের উপমা একটি শরীরের মতই, যখন এর একটি অঙ্গব্যথা পায় তখন সারা শরীরে জ্বর এবং অনিদ্রার শিকার হয়ে যায়।”


তথ্যসূত্রঃ (শরহে সুন্নাহ লিল বাগভী, কিতাবুল বিররে ওয়াস সিলাহ, হাদীস নং- ৩৩৫৩, ৬/৪৫৩।)


হযরত সায়্যিদুনা সুলায়মান বিন আহমদ তাবারানী (رحمة الله) বলেন: আমি স্বপ্নে নবীয়ে করীম, রউফুর রহীম (ﷺ) এর যিয়ারত লাভে ধন্য হই, তখন আমি এই (উক্ত) হাদীস সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম, প্রিয় নবী (ﷺ)  আমাকে তিনবার হাতের ইশারা করে ইরশাদ করলেন: “এটি বিশুদ্ধ”।


▶৯১) হযরত সায়্যিদুনা আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি প্রিয় নবী (ﷺ), রাসূলে আরাবী (ﷺ), হুযুর পুরনূর (ﷺ) এর দরবারে আরয করলাে: “ইয়া রাসূলুল্লাহ (ﷺ)! কোন আমলটি উত্তম?” নবী করীম, হুযুর পুরনূর (ﷺ) ইরশাদ করলেন: “আপন মুসলমান ভাইকে খুশি করা বা তার ঋণ পরিশােধ করে দেয়া অথবা তাকে আহার করানাে।”


তথ্যসূত্রঃ (শুয়াবুল ঈমান লিল বায়হাকী, বাবু ফিত তাউন আলাল বিররে ওয়াত তাকওয়া, হাদীস নং- ৭৬৭৮, ৬/১২৩।)


▶৯২) হযরত সায়্যিদুনা আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, প্রিয় রাসূল (ﷺ), রাসূলে আরাবী (ﷺ) ইরশাদ করেন: “এক মুমিন অপর মুমিনের আয়না স্বরূপ। মুমিন পরস্পর ভাই ভাই। যেখানেই সাক্ষাত হয়, তাকে ক্ষতি থেকে বাঁচায় আর অবর্তমানে তার নিরাপত্তা বিধান করে।”


তথ্যসূত্রঃ (সুনানে আবী দাউদ, কিতাবুল 'আদব, হাদীস নং- ৪৯১৮, ৪/৩৬৫।)


▶৯৩) হযরত সায়্যিদুনা আব্দুল্লাহ্ ইবনে ওমর (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, একদা প্রিয় আক্বা, মক্কী মাদানী মুস্তফা (ﷺ) সাহাবায়ে কিরামদের (رضي الله عنه) নিকট জিজ্ঞাসা করলেন: “আমাকে এমন বৃক্ষ সম্পর্কে বলাে, যা মুসলমান পুরুষের সাথে সামঞ্জস্য রাখে এবং এর পাতা ঝরে যায় না, যা আল্লাহ তায়ালার আদেশে সর্বদা ফল দিতে থাকে।” হযরত সায়্যিদুনা আব্দুল্লাহ্ ইবনে ওমর (رضي الله عنه) বলেন: আমার মনে ধারণা হলাে, তা খেজুরের বৃক্ষই হবে, কিন্তু আমি আমিরুল মুমিনিন হযরত সায়্যিদুনা আবু বকর সিদ্দীক ও আমিরুল মুমিনিন হযরত সায়্যিদুনা ওমর ফারুক (رضي الله عنه) এর উপস্থিতিতে বলা উচিত মনে করলাম না। যখন তাঁরা উভয়েও বললেন না, তখন নবী করীম (ﷺ) স্বয়ং ইরশাদ করেলন: “তা হলাে খেজুর বৃক্ষ।”


তথ্যসূত্রঃ (মুসনাদিল বাহার, মুসনাদে আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস, হাদীস নং- ৫৭১৪, ২/২৩৬)


▶৯৪) হযরত সায়্যিদুনা আনাস বিন মালিক (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, শাহানশাহে নবুয়ত, মুস্তফা জানে রহমত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন: “যে ব্যক্তি কোন মুমিনের মেহমানদারি করে কিংবা তার অভাব তার জন্য সহজ করে দেয়, তবে আল্লাহ তায়ালা তাঁর দয়াময় দায়িত্ব হলাে, তাকে জান্নাতে সেবক দান করবেন।”


তথ্যসূত্রঃ (হিলইয়াতুল আউলিয়া, ইয়াজিদ বিন আবান রাকাশি, হাদীস নং-৩১৭৩, ৩/৬২।)
Top