লােকদেরকে মার্জনা করার ফযীলতঃ
এপ্সঃ 🔎 উত্তম চরিত্র [মূলঃ ইমাম তাবারানী রহ.]
সূত্রঃ 🌍 সুন্নি-বিশ্বকোষ
▶৫৫) হযরত সায়্যিদুনা আনাস رضي الله عنه থেকে বর্ণিত, নবী করীম, রউফুর রহীম, হুযুর পুরনুর (ﷺ) ইরশাদ করেন: কিয়ামতের দিন যখন লােকেরা হিসাব-নিকাশের জন্য দন্ডায়মান হবে, তখন একজন ঘােষনাকারী ঘােষনা করবেন, “যে ব্যক্তির প্রতিদান আল্লাহ তায়ালার দয়াময় দায়িত্বে রয়েছে তারা উঠুন এবং জান্নাতে প্রবেশ করুন।” অতঃপর দ্বিতীয়বার ঘােষনা করবেন, “যে ব্যক্তির প্রতিদান আল্লাহ তায়ালার দয়াময় দায়িত্বে রয়েছে, তারা দাঁড়িয়ে যান।” লােকেরা জিজ্ঞাসা করবে: “তারা কারা, যাদের প্রতিদান আল্লাহ তায়ালার দয়াময় দায়িত্বে রয়েছে?” ঘােষনাকারী বলবে: “ঐ লােক, যারা লােকদেরকে মার্জনা করে দিতাে।” অতএব অসংখ্য লােক দাঁড়িয়ে যাবে এবং হিসাব-নিকাশ ছাড়াই জান্নাতে প্রবেশ হয়ে যাবে।”
তথ্যসূত্রঃ আততারগীব ওয়াত তারহীব, কিতাবুল হুদুদ, হাদীস নং-১৭, ৩/২১১
▶৫৬) হযরত সায়্যিদুনা ওকবা বিন আমের رضي الله عنه বলেন, আমি নবীয়ে করীম, রউফুর রহীম (ﷺ) এর সাথে মিলিত হলে তিনি আমার হাত ধরে ইরশাদ করলেন: “হে ওকবা! আমি কি তােমাকে দুনিয়া ও আখিরাতবাসীদের সচ্চরিত্রবান সম্পর্কে বলবাে না?” আমি আরয করলাম: “অবশ্যই ইরশাদ করুন।” হুযুর (ﷺ) ইরশাদ করলেন: “যে তােমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবে, তুমি তার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখাে, যে তােমাকে বঞ্চিত করবে, তুমি তাকে দান করাে, যে তােমার প্রতি অত্যাচার করবে, তুমি তাকে ক্ষমা করে দাও।”
তথ্যসূত্রঃ আল মুজামুল কবীর, হাদীস নং- ৭৩৯, ১৭/২৬৯
▶৫৭) হযরত সায়্যিদুনা ওবাই বিন কাব رضي الله عنه থেকে বর্ণিত, হুযুরে আকরাম (ﷺ) ইরশাদ করেন: “যার এটা পছন্দ যে, তার জন্য (জান্নাতে) প্রাসাদ তৈরি করা হােক এবং তার মর্যাদা বৃদ্ধি করা হােক, তবে তার উচিৎ, যে তার উপর অত্যাচার করবে তাকে ক্ষমা করে দেয়া, যে তাকে বঞ্চিত করে তাকে দান করা এবং যে তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে তার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখা।”
তথ্যসূত্রঃ আল মুস্তাদরিক, কিতাবুত তাফসীর, হাদীস নং- ৩২১৫, ৩/১২
৫৮) হযরত সায়্যিদুনা আবু আব্দুল্লাহ জাদলী رضي الله عنه বলেন: আমি উম্মুল মুমিনীন হযরত সায়্যিদাতুনা আয়েশা সিদ্দীকা رضي الله عنه এর নিকট হুযুর নবীয়ে করীম, রউফুর রহীম (ﷺ) এর উত্তম চরিত্র সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম, তখন তিনি বললেন: “হুযুর (ﷺ) কোন মন্দ কথা বলতেন না, কোন মন্দ কাজ করতেন না, বাজারে হৈ-হুল্লোড় করতেন না আর মন্দের উত্তরও মন্দভাবে দিতেন না বরং প্রিয় নবী (ﷺ) ছিলেন ক্ষমাশীল ও মার্জনাকারী।”
তথ্যসূত্রঃ সুনানে তিরমিযী, কিতাবুল বিররে ওয়াস সিলাহ, হাদীস নং- ২০২৩, ৩/৪০৯
▶৫৯) উম্মুল মুমিনীন হযরত সায়্যিদাতুনা আয়েশা সিদ্দীকা رضي الله عنه ; বলেন: নবীয়ে আকরাম, নূরে মুজাসসাম (ﷺ) জিহাদ ব্যতীত কখনাে কাউকে নিজের হাতে প্রহার করেননি এবং কখনাে ব্যক্তিগত আক্রোশের প্রতিশােধ নেননি। তবে হ্যাঁ, যখন কোন ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালার হারাম ঘােষিত কোন বিষয়ে লিপ্ত হতাে, তখন হুযুর পুরনূর (ﷺ) আল্লাহ তায়ালার জন্য তার প্রতিশােধ নিতেন। হুযুর (ﷺ) এর নিকট যা কিছুই চাওয়া হয়েছে কখনাে তা নিষেধ করেননি তবে গুনাহের প্রতি ধাবিত হওয়া বিষয়াবলী ছাড়া, কেননা নবী করীম রউফুর রহীম (ﷺ) সেসব ব্যাপারে লােকজন থেকে দূরে থাকতেন। যখনই তাঁকে দুটি কাজের স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে, তখন হুযুর (ﷺ) সহজ কাজটিই বেছে নিতেন।”
তথ্যসূত্রঃ আল মুসনাদে লিইমাম আহমদ বিন হাম্বল, মুসনাদে আয়েশা, হাদীস নং- ২৫০৩৯, ৯/৪৫১
▶৬০) হযরত সায়্যিদুনা আবু হুরায়রা رضي الله عنه থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)ইরশাদ করেন: “যে লজ্জিত ব্যক্তির ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করে দিবে, আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতের দিন তার গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন।”
তথ্যসূত্রঃ মুসনাদে বাযার, মুসনাদে আবী হুরায়রা, হাদীস নং- ৮৯৬৭, ২/৪৭৭
▶৬১) উম্মুল মুমিনীন হযরত সায়্যিদাতুনা আয়েশা সিদ্দীকা رضي الله عنه ; থেকে বর্ণিত, হুযুর নবীয়ে মুকাররাম, নূরে মুজাস্সাম (ﷺ) ইরশাদ করেন: “ভদ্র ব্যক্তিদের ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করে দাও, যতক্ষণ পর্যন্ত না সে শরয়ী শাস্তির যােগ্য হয়ে যায়।”
তথ্যসূত্রঃ আল মুসনাদে লিইমাম আহমদ বিন হাম্বল, মুসনাদে আয়েশা, হাদীস নং- ২৫৫৩০, ৯/৫৪৪
▶৬২) হযরত সায়্যিদুনা আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর رضي الله عنه বলেন: “শিষ্টচার সম্পন্নদের শাস্তি দিও না, যদি সে সৎ হয়ে থাকে।”
তথ্যসূত্রঃ ফয়যুল কদীর, হরফুত তা', ৩২৩৩ নং হাদীসের পাদটিকা, ৩/২৯৯
▶৬৩) হযরত সায়্যিদুনা আবু হুরায়রা رضي الله عنه থেকে বর্ণিত, রাসূলে আকরাম, শাহে বনী আদম, হুযুর (ﷺ) ইরশাদ করেন: “সদকা করাতে কখনাে সম্পদ কমে যায় না। যে ব্যক্তি ক্ষমা করে দেয়, আল্লাহ তায়ালা তার সম্মান বাড়িয়ে দেন আর যে আল্লাহ তায়ালার জন্য বিনয়ভাব পােষণ করে, আল্লাহ তায়ালা তাকে উন্নতি দান করেন।”
তথ্যসূত্রঃ সহীহ মুসলিম, কিতাবুল বিররে ওয়াস সিলাহ, হাদীস নং- ২৫৮৮, ১৩৯৭ পৃষ্ঠা।
▶৬৪) হযরত সায়্যিদুনা মারওয়ান বিন জিনাহ্ رضي الله عنه বলেন: “দুনিয়া এই বিষয়ের উপর প্রতিষ্ঠিত যে, অসদাচরণকারীকে কোন ব্যক্তি ক্ষমা করে দিবে।”
তথ্যসূত্রঃ তারিখে মদীনা দামেসক লি ইবনে আসাকির, নম্বর ২১৫৭, রবিই বিন ইয়াহইয়া, ১৮/৮৪
▶৬৫) হযরত সায়্যিদুনা মাইসারা বিন হালবিস رضي الله عنه বলেন: “সুসংবাদ সেই ব্যক্তির জন্য, যে ব্যক্তি ঐ স্থানে হক আদায় করে, যেই স্থানে মানুষ হক আদায় করতে জানে না। অতএব, আল্লাহ তায়ালা তাকে আপন সন্তুষ্টির পরিচয় দান করে দেন, তা এমন এক সময় যা অজ্ঞাত থাকা ব্যক্তিরাই পরিত্রাণ পেতে পারে। তাদের অন্তর অন্ধকারের প্রদীপ। আল্লাহ তায়ালা তাদের জন্য জান্নাতের দরজা খুলে দেন আর তাদেরকে সকল অপরিস্কার অন্ধকারাচ্ছন্ন জায়গা থেকে মুক্তি দান করেন।”