জিজ্ঞাসা–৯৪১: আমার স্বামী আমাকে সন্দেহ করে প্রায়ই মারে এবং বাজে কথা বলে। আমি ওর মতে আমার বাড়িতে পরীক্ষা দিতে আসি। এর কিছুদিন পর বিভিন্ন জিনিস নিয়ে ওর সাথে কথা কাটাকাটি হয় এবং ও আমাকে মেসেজ এবং ফোন করে ১ তালাক ২ তালাক ৩ তালাক বলে এবং লিখে পাঠায়।তাই আমি ওকে বলি তুমি আমাকে বার বার তালাক বলতেছো কেনো? আমি কথা বন্ধ করে দেই। কিন্তু ও তারপরও মেসেজ করে বার বার তালাক কথা লিখে আর ফোন রিসিভ করলে ১০০ বারও তালাক বলে ফেলে। আর আমাকে বলে আমি নাকি ওর মা। এখন ও বলতেছে ও না বুঝে বলছে। আমি ওরে মাফ করে দেয়ার জন্য। ও আর কখনো এমন করবে না। এখন আমার কি করণীয়? আমি অনেক আলোচনা দেখেছি যাতে মনে হচ্ছে ওর সাথে সম্পর্ক নেই। তারপরও যদি বলতেন ওর সাথে কি আমার সম্পর্ক আছে নাকি শেষ?–Fatema Jahan
জবাব: রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
ثَلاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ : النِّكَاحُ ، وَالطَّلاقُ ، وَالرَّجْعَةُ
তিনটি বিষয় এমন রয়েছে যা গোস্বায় হোক বা হাসি ঠাট্টায় হোক সর্বাবস্থায় কার্যকরী হয়ে থাকে। বিবাহ, তালাক ও রজয়াত। (আবু দাউদ ২১৯৪ তিরমিযি ১১৮৪)
অনুরূপভাবে মুখে দিলে যেমনিভাবে তালাক হয় তেমনিভাবে তালাক লিখে পাঠালেও তালাক পতিত হয়। ফকিহগণ বলেন,
إن الكتابة يقع بها الطلاق، ولو كان الكاتب قادرا على النطق، فكما أن للزوج أن يطلق زوجته باللفظ، فله أن يكتب إليها الطلاق
নিশ্চয় চিঠি (ম্যাসেজ) দ্বারাও তালাক পতিত হয়। যদিও লেখক বলতে সক্ষম হয়। সুতরাং যেমনিভাবে স্বামী মুখে তালাক দিতে পারে, তেমনিভাবে লিখিতভাবেও দিতে পারে। (ফিকহুস সুন্নাহ ৩/১৬৫)
সুতরাং আপনার উপর তিন তালাক পতিত হয়ে গেছে। এখন আপনি স্বামীর সাথে ঘরসংসার করা আর বৈধ হবে না। হ্যাঁ, ইদ্দত শেষে যদি আপনার অন্যত্র বিয়ে হয়। সেখান থেকে কোনো কারণে তালাকপ্রাপ্তা হন বা দ্বীতিয় স্বামী মারা যান তাহলে ইদ্দত পালন শেষে আপনি উক্ত স্বামীর সঙ্গে দ্বিতীয়বার বিয়ে করতে পারবেন। এছাড়া আর কোন গত্যান্তর নেই। (কিতাবুন নাওয়াজেল-৯/৫২১-৫২৩)।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا تَحِلُّ لَهُ مِن بَعْدُ حَتَّىٰ تَنكِحَ زَوْجًا غَيْرَهُ ۗ فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِمَا أَن يَتَرَاجَعَا إِن ظَنَّا أَن يُقِيمَا حُدُودَ اللَّهِ
তারপর যদি সে স্ত্রীকে (তৃতীয়বার) তালাক দেয়া হয়, তবে সে স্ত্রী যে পর্যন্ত তাকে ছাড়া অপর কোন স্বামীর সাথে বিয়ে করে না নেবে, তার জন্য হালাল নয়। অতঃপর যদি দ্বিতীয় স্বামী তালাক দিয়ে দেয়, তাহলে তাদের উভয়ের জন্যই পরস্পরকে পুনরায় বিয়ে করাতে কোন পাপ নেই। যদি আল্লাহর হুকুম বজায় রাখার ইচ্ছা থাকে। (সূরা বাকারা ২৩০)
মাওলানা উমায়ের কোব্বাদী