কিতাবঃ উত্তম চরিত্রের ফযীলত সম্বলিত সেই ২০০টি বিশুদ্ধ হাদীসের সমষ্টি

مکارم اخلاق

এর অনুবাদকৃত কিতাবের নাম "উত্তম চরিত্র"

মূলঃ হযরত সায়্যিদুনা ইমাম আবু কাসিম সুলাইমান বিন আহমদ তাবারানী (ওফাত ৩৬০ হিজরি)

উপস্থাপনায়ঃ আল মদীনাতুল ইলমিয়া মজলিশ (দাওয়াতে ইসলামী)

টেক্সট রেডীঃ মাসুম বিল্লাহ সানি, সাঈদ কামাল, 

প্রুফিং: ফাতেমাতুজ জোহরা শাকিলা, জাহিদুল বাশার


প্রকাশনায়ঃ মাকতাবাতুল মদীনা

প্রকাশকাল : রজব ১৪৪০ হিজরি

মার্চ ২০১৯ ইংরেজি প্রকাশনায় : মাকতাবাতুল মদীনা

সত্যায়ন পত্র তারিখ: ২ যিলহজ ১৪৩০ হিজরি

সূত্র: ১৬৫

الحمد بلورين المحليين واللوة والسلام على سيد المرسلين و على اله وأخيه أجمعين

এই মর্মে সত্যায়ন করা যাচ্ছে যে, “মাকারিমুল আখলাখ” এর অনুবাদ “উত্তম চরিত্র” (প্রকাশনায় মাকতাবাতুল মদীনা) কিতাবটির উপর কিতাব ও রিসালা : নিরীক্ষণ বিভাগের পক্ষ থেকে দ্বিতীয়বার নিরীক্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। বিভাগটি এতে উদ্দেশ্য এবং অন্তর্নিহিত ব্যাখ্যার দিক থেকে : পরিপূর্ণভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে। তবে কম্পােজিং বা বাইন্ডিং এর : ভূলের জন্য মজলিশ দায়ী নয়।

কিতাব ও রিসালা নিরীক্ষণ বিভাগ

(দাওয়াতে ইসলামী)

২৪-১১-২০০৯

(মাদানী অনুরােধ: অন্য কারাে এই কিতাবটি ছাপানাের অনুমতি নেই)


সূচীপত্রঃ

● বিষয় কিতাবটি পাঠ করার ১৪টি নিয়্যত।

● দুইটি মাদানী ফুল।

● আল মদীনাতুল ইলমিয়া।

● প্রথমে এটি পড়ে নিন !

● লেখক পরিচিতি।

● কোরআন মজীদের তিলাওয়াত , অধিকহারে আল্লাহর যিকির , মুখের কুফলে মদীনা , মিসকিনদের প্রতি ভালবাসা ও তাদের সাথে মেলামেশা করার ফযীলত।

● উত্তম চরিত্রের ফযীলত।

● নম্র স্বভাব , সচ্চরিত্র ও বিনয়ের ফযীলত।

● মানুষের সাথে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করার ফযীলত ।

● মুসলমান ভাইয়ের জন্য মুচকি হাসির ফযীলত।

● নম্রতা ও সহনশীলতার ফযীলত।

● ধৈর্য ও দানশীলতার ফযীলত।

● রাগের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখার ফযীলত।

● দয়া ও কোমল হৃদয়ের ফযীলত।

● রাগ দমন করার ফযীলত।

● লােকদেরকে মার্জনা করার ফযীলত।

● মুসলমানদের কল্যাণ কামনা করার ফযীলত।

● অন্তরের পরিচ্ছন্নতা এবং মুসলমানের প্রতি ঘৃণা থেকে বাঁচার ফযীলত।

● মানুষের মাঝে মীমাংসা করানাের ফযীলত।

● হক আদায় করার ফযীলত মজলুমকে সাহায্য করার ফযীলত।

● অত্যাচারীকে অত্যাচার করা থেকে বিরত রাখার বর্ণনা।

● মুর্খদের বাধা প্রদানের বর্ণনা ।

● মুসলমানদের সাহায্য এবং তাদের চাহিদা পূরণ করার ফযীলত।

● অন্যের দুঃখ - কষ্ট লাঘব করার ফযীলত।

● দুর্বলদের ভরণ পােষণ করার ফযীলত।

● এতিমের ভরণ - পােষণ করার ফযীলত।

● বে - ওয়ারিশ শিশুদের শিক্ষা - দীক্ষা এবং বড় হওয়া পর্যন্ত তাদের জন্য ব্যয় করার ফযীলত।

● উত্তম আচরণের ফযীলত নেক আমল করার ফযীলত।

● মুসলমানদের উপর অত্যাচার করার নিন্দা।

● মুসলমান ভাইয়ের পক্ষে জায়িয সুপারিশ করার ফযীলত।

● মুসলমানদের সম্মান রক্ষা এবং তাদের সাহায্য করার ফযীলত।

● মানুষকে ভালবাসার ফযীলত।

● আল্লাহর রাস্তার সৈন্যদের সাহায্য করার ফযীলত।

● হাজীকে সাহায্য করা এবং রােযাদারকে ইফতার করানাের ফযীলত।

● ছােটদের উপর স্নেহ, বড়দের প্রতি শ্রদ্ধা এবং ওলামাদের সম্মান করার ফযীলত।

● ওলামাদের জন্য মজলিসে জায়গা করে দেওয়ার ফযীলত।

● মুসলমান ভাইকে বালিশ উপস্থাপন করার ফযীলত।

● আহার করানাের ফযীলত।

● মুসলমান ভাইকে পােশাক পরিধান করানাের ফযীলত।

● প্রতিবেশীর হকের বর্ণনা।

● তথ্যসূত্র


নেকীর ভান্ডারঃ


প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! আল্লাহ পাক ও তাঁর প্রিয় রাসূল (ﷺ)  এর সন্তুষ্টি অর্জন এবং সচ্চরিত্রবান মুসলমান হওয়ার জন্য “দাওয়াতে ইসলামীর প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান মাকতাবাতুল মদীনা থেকে ‘মাদানী ইনআমাত’ নামের রিসালা সংগ্রহ করতঃ সেই অনুযায়ী জীবন অতিবাহিত করার চেষ্টা করুন। তাছাড়া আপনার শহরে অনুষ্ঠিতব্য দাওয়াতে ইসলামীর সাপ্তাহিক সুন্নাতে ভরা ইজতিমায় নির্দিষ্ট সময়ে অংশগ্রহণ করে অধিকহারে সুন্নাতের বাহার কুঁড়িয়ে নিন। দাওয়াতে ইসলামীর সুন্নাত প্রশিক্ষণের অসংখ্য মাদানী কাফেলা শহরে শহরে, গ্রামে গ্রামে সফর করতে থাকে, আপনিও সুন্নাতে ভরা সফরে অংশগ্রহণ করে নিজের আখিরাতের জন্য “নেকীর ভান্ডার” গড়ে তুলুন। আপনি আপনার জীবনে আশ্চর্যজনক ভাবে “মাদানী পরিবর্তন সাধন হতে দেখবেন।



কিতাবটি পাঠ করার ১৪টি নিয়্যত


●প্রিয় নবী (ﷺ)  ইরশাদ করেন: "মুসলমানের নিয়্যত তার আমলের চেয়ে উত্তম।”

(আল মু'জামুল কবির লিত তাবারানি, ৬/১৮৫, হাদীস- ৫৯৪২)

দুইটি মাদানী ফুল:

(১) ভাল নিয়্যত ছাড়া কোন ভাল কাজের সাওয়াব পাওয়া যায়না।

(২) ভাল নিয়্যত যত বেশি, সাওয়াবও তত বেশি।

(১) প্রতিবার হামদ ও (২) সালাত এবং (৩) তা'উয ও (৪) তাসমিয়া সহকারে শুরু করবাে। (এই পৃষ্ঠার প্রারম্ভে দেওয়া আরবী ইবারতটি পাঠ করাতে এই চারটি নিয়্যতের উপর আমল হয়ে যাবে) (৫) কোরআনি আয়াত এবং (৬) হাদীসে মােবারাকার যিয়ারত করব। (৭) আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য এই কিতাবটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়বাে। (৮) যথাসম্ভব ওযু সহকারে এবং কিবলামুখী হয়ে পাঠ করবাে। (৯) যেখানে যেখানে আল্লাহ তায়ালার নাম আসবে সেখানে “أزواجال” এবং (১০) যেখানে যেখানে “নবী”র নাম মােবারক আসবে সেখানে “(ﷺ) ” পাঠ করবাে। (১১) (নিজের ব্যক্তিগত কপিতে) প্রয়ােজনে বিশেষ বিশেষ স্থানে আন্ডার লাইন করবাে। (১২) অপরকে এই কিতাবটি পাঠ করার উৎসাহ প্রদান করবাে। (১৩) এই হাদীসে পাক “একে অপরকে উপহার দাও, পরস্পর ভালবাসা বৃদ্ধি পাবে।” (মুওয়াত্তা ইমাম মালেক, ২য় খন্ড, ৪০৭ পৃষ্ঠা, হাদীস নং-১৭৩১) এর উপর আমলের নিয়্যতে (একটি বা সামর্থ অনুযায়ী) এই কিতাব ক্রয় করে অন্যান্যদেরকে উপহার স্বরূপ প্রদান করবাে। (১৪) কিতাবের লিখনী ইত্যাদিতে শরয়ী কোন ভুল-ত্রুটি পরিলক্ষিত হলে তা লিখিতভাবে অবহিত করব। (প্রকাশক ও লিখককে কিতাবের ভুলত্রুটি শুধুমাত্র মুখে বলাতে তেমন কোন উপকার হয় না।)

আল মদীনাতুল ইলমিয়া শায়খে তরীকত, আমীরে আহলে সুন্নাত, দাওয়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা হযরত আল্লামা মাওলানা আবু বিলাল মুহাম্মদ ইলিয়াস আত্তার কাদেরী রযবী যিয়ায়ী এর পক্ষ থেকে:

আশিকানে রাসূল (ﷺ) -এর মাদানী সংগঠন দাওয়াতে ইসলামী নেকীর দাওয়াত, সুন্নাতের পুনর্জাগরণ এবং ইলমে শরীয়াতকে সারা দুনিয়ায় প্রসারের সুদৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। এসকল কার্যাবলীকে সুচারুরূপে সম্পাদন করার জন্য কিছু মজলিশ (বিভাগ) গঠন করা হয়েছে। তন্মধ্যে একটি মজলিশ হলাে ‘আল মদীনাতুল ইলমিয়া। যা দাওয়াতে ইসলামীর সম্মানিত ওলামা ও মুফতীগণের  সমন্বয়ে গঠিত। এটা বিশেষ করে শিক্ষা, গবেষণা ও প্রচার ও প্রকাশনামূলক কাজের গুরুদায়িত্ব হাতে নিয়েছে। এতে নিম্নের ৬টি বিভাগ রয়েছে। যথা:


১. আ’লা হযরতের কিতাব বিভাগ (শােবায়ে কুতুবে আ’লা হযরত) ২. পাঠ্য পুস্তক বিভাগ (শােবায়ে দরসি কুতুব) ৩. সংশােধন মূলক কিতাবাদি বিভাগ (শােবায়ে ইছলাহী কুতুব) ৪. কিতাব অনুবাদ বিভাগ (শােবায়ে তারাজিমে কুতুব) ৫. কিতাব নিরীক্ষণ বিভাগ (শােবায়ে তাফতীশে কুতুব) ৬. তথ্যসূত্র নিরুপণ বিভাগ (শােবায়ে তাখরীজ)

‘আল মদীনাতুল ইলমিয়া’র সর্বপ্রথম প্রধান কাজ হচ্ছে আ’লা হযরত, ইমামে আহলে সুন্নাত, আযীমুল বরকত, আযীমুল মারতাবাত, পরওয়ানায়ে শময়ে রিসালত, মুজাদ্দিদে দ্বীন ও মিল্লাত, হামিয়ে সুন্নাত, মাহিয়ে বিদআত, আলিমে শরীয়াত, পীরে তরীকত, বাইছে খাইরাে বারাকাত, হযরত আল্লামা মাওলানা আলহাজ্ব আল হাফেজ আল ক্বারী ইমাম আহমদ রযা খাঁন رضي الله عنه এর দুর্লভ ও মহামূল্যবান কিতাবাদিকে বর্তমান যুগের চাহিদানুযায়ী যথাসাধ্য সহজ সবলীল ভাষায় পরিবেশন করা। সকল ইসলামী ভাই ও ইসলামী বােনেরা এই শিক্ষা, গবেষণা ও প্রচার-প্রকাশনামূলক মাদানী কাজে সবধরনের সর্বাত্মক সহায়তা করুন। আর মজলিশের পক্ষ থেকে প্রকাশিত কিতাবগুলাে স্বয়ং নিজেরাও পাঠ করুন এবং অন্যদেরকেও পড়তে উদ্বুদ্ধ করুন।

আল্লাহ তায়ালা দাওয়াতে ইসলামীর ‘আল মদীনাতুল ইলমিয়া মজলিশ সহ সকল মজলিশকে দিন দিন উন্নতি ও উৎকর্ষতা দান করুক। আর আমাদের প্রতিটি ভাল আমলকে ইখলাছের সৌন্দর্য দ্বারা সুসজ্জিত করে উভয় জাহানের মঙ্গল অর্জনের ওসিলা করুক। আমাদেরকে সবুজ গম্বুজের নিচে শাহাদাত, জান্নাতুল বাকীতে দাফন এবং জান্নাতুল ফিরদাউসে স্থান দান করুক।


●প্রথমে এটি পড়ে নিন! এক ব্যক্তি হুযুর নবী করীম (ﷺ)  এর নিকট উত্তম চরিত্র সম্পর্কে জানতে চাইলেন, তখন নবী করীম (ﷺ)  এই আয়াতে মােবারাকাটি তিলাওয়াত করলেন:


● কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদঃ হে মাহবুব!  ক্ষমা করে দেওয়ার পথ অবলম্বন করুন। সৎ কাজের আদেশ দিন। মুর্খদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখুন। (পারা ৯, সূরা আরাফ, আয়াত ১৯৯)

অতঃপর ইরশাদ করলেন: “উত্তম চরিত্র হলাে যে, তুমি সম্পর্ক ছিন্নকারীদের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করাে, যে তােমাকে বঞ্চিত করবে, তাকে দান করাে এবং যে তােমার উপর অত্যাচার করবে, তাকে ক্ষমা করে দাও।”


তথ্যসূত্রঃ  ইহইয়াউ উলুমিদ্দীন, কিতাবু রিয়াযাতিন নাফস, বয়ান ফযীলাতু হুসনিল খুলুক, ৩য় খন্ড, ৬১ পৃষ্ঠা।


হযরত সায়্যিদুনা আব্দুল্লাহ ইবনে মােবারক رضي الله عنه বলেন: “হাসিমুখে সাক্ষাৎ করা, অত্যধিক উপকার সাধন করা এবং কাউকে কষ্ট না দেওয়ার নামই হলাে উত্তম চরিত্র।”


তথ্যসূত্রঃ সুনানে তিরমিযী, কিতাবুল বিররে ওয়াস সিলা, বা'বু মাজা ফি হুসনিল খুলুক, ৩/৪০৪, হাদীস নং- ২০১২


প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! আমাদের প্রিয় আক্বা (ﷺ)  এর শুভাগমনের আরেকটি উদ্দ্যেশ্য এটাও যে, মানুষের চরিত্র ও আচর-আচরণকে পরিশুদ্ধ করা। তাদের মধ্য থেকে মন্দ চরিত্রের মূল উৎপাটন করা এবং তাদের মাঝে উত্তম চরিত্র সৃষ্টি করা। যেমনিভাবে প্রিয় নবী (ﷺ)  তাঁর কথা ও কাজ দ্বারা সমস্ত উত্তম চরিত্রের রূপরেখা প্রণয়ন করে দিয়েছেন এবং সারা জীবন ও জীবনের প্রতিটি স্তরে তা বাস্তবায়ন করেছেন আর যে কোন অবস্থায় এর উপর অটল থাকার উপদেশ দিয়েছেন। উত্তম চরিত্রের নেয়ামত শুধুমাত্র সৌভাগ্যবানদেরই অর্জিত হয়ে থাকে এবং আল্লাহ তায়ালার একটি বিশেষ নেয়ামত, উত্তম চরিত্রে কল্যাণই কল্যাণ, পক্ষান্তরে অসৎ চরিত্রে ক্ষতি আর ক্ষতি। কেউ খুব সুন্দর বলেছেন:

"হে ফালাহ ও কামরানী নরমী ও আসানী মে

হার বনা কাম বিগড় জাতে হেঁ নাদানী মে"


এই ‘উত্তম চরিত্র কিতাবটি ইসলামী দুনিয়ার মহান মুহাদ্দিস হযরত সায়্যিদুনা ইমাম আবু কাসিম সুলায়মান বিন আহমদ তাবারানী رضي الله عنه এর লিখিত গ্রন্থ ‘মাকারিমুল আখলাক’ এর অনুবাদ যাতে সায়্যিদুনা ইমাম তাবারানী رضي الله عنه চরিত্রের বিভিন্ন বিভাগ সম্পর্কে বিভিন্ন হাদীসে মােবারাকা একত্রিত করেছেন। নিশ্চিতভাবে আশা করা যায় যে, এই কিতাবটি দিন-রাত ইনফিরাদী কৌশিশে লিপ্ত ইসলামী ভাইদের জন্য অত্যন্ত উপকারী হিসেবে বিবেচিত হবে। সুতরাং উত্তম চরিত্র গঠনে এবং আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রাসূল (ﷺ) এর আনুগত্যে দৃঢ়তা পেতে এবং “নিজের এবং সারা দুনিয়ার মানুষের সংশােধনের চেষ্টার পবিত্র প্রেরণাকে উজ্জীবিত করতে নিজেও কিতাবটি অধ্যয়ন করুন আর সামর্থ্য অনুযায়ী মাকতাবাতুল মদীনা থেকে উপযুক্ত মূল্যে সংগ্রহ করে অন্যদেরকে উপহার স্বরূপ প্রদান করুন। এই অনুবাদে যা যা সৌন্দর্য বিদ্যমান রয়েছে তা নিঃসন্দেহে আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর প্রিয় হাবীব (ﷺ)  এর দান, আউলিয়ায়ে কেরামগণের رضي الله عنه দয়া এবং শায়খে তরীকত, আমীরে আহলে সুন্নাত, দাওয়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা হযরত আল্লামা মাওলানা আবু বিলাল মুহাম্মদ ইলইয়াস আত্তার কাদেরী دَامَت بَرَکاتُہُمُ الْعَالِیَہ এর আন্তরিক দোয়ারই ফসল আর যা যা অপূর্ণতা ও ভুলত্রুটি রয়েছে তা আমাদেরই অলসতা ও স্বল্পজ্ঞানের কারণে।


অনুবাদ করতে গিয়ে নিচের বিষয়াদির প্রতি বিশেষ ভাবে সজাগ দৃষ্টি রাখা হয়েছে:

➡সহজ ও প্রচলিত প্রবাদ অনুবাদ করা হয়েছে, যাতে অল্প-শিক্ষিত ইসলামী ভাইয়েরাও বুঝতে পারে। 

➡আয়াতে মােবারাকার অনুবাদ আ’লা হযরত, ইমামে আহলে সুন্নাত, শাহ ইমাম আহমদ রযা  খাঁন رضي الله عنه এর অনুবাদ গ্রন্থ ‘কানযুল ঈমান থেকে নেওয়া হয়েছে।

➡আয়াতে মােবারাকার বরাত তাছাড়া হাদীস ও বাণীসমূহের উৎস সম্পর্কেও যথাসাধ্য বিবরণ দেওয়া হয়েছে। 

➡বিশেষ ক্ষেত্রে প্রয়ােজনীয় ও উপকারী টীকা লিখে দেওয়া হয়েছে।

➡ আরবী ইবারতে এরাবও দিয়ে দেওয়া হয়েছে।

➡ কঠিন শব্দগুলাের অর্থ ব্রাকেটের (....) মধ্যে লিখে দেওয়া হয়েছে।

➡বিভিন্ন যতিচিহ্নগুলাের প্রতিও খেয়াল রাখা হয়েছে।

আল্লাহ তায়ালার দরবারে দোয়া হলাে, আমাদেরকে “নিজের এবং সারা দুনিয়ার মানুষের সংশােধনের চেষ্টা করার জন্য মাদানী ইনআমাতের উপর আমল এবং মাদানী কাফেলায় সফর করার তৌফিক দান করুক আর দাওয়াতে ইসলামীর আল মদীনাতুল ইলমিয়া মজলিশসহ সকল মজলিশকে উত্তরােত্তর উন্নতি দান করুক।


কুরআনে করীমের ফযীলত: প্রিয় নবী (ﷺ)  ইরশাদ করেন: “এই কোরআনে করীম আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে আতিথেয়তা স্বরূপ, অতএব তােমরা নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী তাঁর আতিথেয়তা গ্রহণ করাে। নিঃসন্দেহে কোরআনে মজীদ আল্লাহ তায়ালার মজবুত রশি, স্পষ্ট নূর, উপকারী আরােগ্য, যে তা গ্রহণ করলাে তার জন্য ঢাল স্বরূপ এবং যে এর উপর আমল করে তার জন্য মুক্তি স্বরূপ। এটি সত্য থেকে বিচ্যুত হয় না যেন, এর পরিনতির জন্য ক্লান্ত হতে হবে আর এটি বক্র পথ নয় যে, তা সােজা করতে হয়। এর উপকারীতা শেষ হবার নয় এবং অধিকহারে তিলাওয়াতের কারণে পুরাতন হয় না (অর্থাৎ নিজ অবস্থায় প্রতিষ্ঠিত থাকে)। অতএব তােমরা এর তিলাওয়াত করাে, আল্লাহ তায়ালা তােমাকে প্রতিটি হরফ তিলাওয়াতের জন্য দশটি করে নেকী দান করবেন। আমি বলছিনা যে, "আলিফ লাম মিম" একটি হরফ বরং "আলিফ" একটি হরফ, "লাম" একটি হরফ এবং "মিম" একটি হরফ।”


তথ্যসূত্রঃ আল মুস্তাদরাক, ২য় খন্ড, ২৫৬ পৃষ্ঠা, হাদীস নং-২০৮৪)

Top