জিজ্ঞাসা–৬১৯আসসালামু আলাইকুম। মাননীয় মুফতি সাহেব দা. বা.! আমার যদি যৌন উত্তেজনা ওঠে আর তখন যদি স্ত্রী’র সাথে সহবাস করে বীর্যপাত না করি, এরপর আমার অণ্ডকোষ প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হয়। তলপেট পর্যন্ত ব্যথা করে। এতে করে স্বাভাবিক জীবন যাপন খুব কষ্টকর হয়ে পড়ে। এই কষ্টকর অবস্থা আমার তখন বেশি হয়, যখন আমার স্ত্রীর মাসিক চলে। কেননা তখন তার সাথে সহবাস করে, বীর্যপাত করতে পারি না। খুব কষ্টকর হয়ে পড়ে আমার জীবন যাপন। মাননীয় মুফতি সাহেবের কাছে আমার জানার বিষয় হলো, ১. এমন কঠিন অবস্থা থেকে বাঁচার জন্য আমার স্ত্রী’র মাসিক চলাকলীন কী করতে পারি? ২. এমন কঠিন অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমার স্ত্রী’র মাসিক চলাকলীন আমি কি কনডম ব্যবহার করে সহবাস করতে পারব? যথাসম্ভব শীঘ্রই বিস্তারিত জানিয়ে উপকৃত করার জন্য বিনীত নিবেদন করছি।– Mahdi Khan

জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

এক. স্ত্রীর মাসিক চলাকলীন কনডম ব্যবহার করে সহবাস করা যাবে না। কেননা, এ অবস্থায় জেনেশুনে স্ত্রীর যোনিপথে সহবাস করা হারাম। আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَيَسْأَلُونَكَ عَنِ الْمَحِيضِ قُلْ هُوَ أَذًى فَاعْتَزِلُواْ النِّسَاء فِي الْمَحِيضِ وَلاَ تَقْرَبُوهُنَّ حَتَّىَ يَطْهُرْنَ فَإِذَا تَطَهَّرْنَ فَأْتُوهُنَّ مِنْ حَيْثُ أَمَرَكُمُ اللّهُ إِنَّ اللّهَ يُحِبُّ التَّوَّابِينَ وَيُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِينَ
তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে হায়েয (ঋতু) সম্পর্কে। বলে দাও, এটা অশুচি। কাজেই তোমরা হায়েয অবস্থায় স্ত্রীগমন থেকে বিরত থাক। তখন পর্যন্ত তাদের নিকটবর্তী হবে না, যতক্ষণ না তারা পবিত্র হয়ে যায়। যখন উত্তম রূপে পরিশুদ্ধ হয়ে যাবে, তখন গমন কর তাদের কাছে, যেভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে হুকুম দিয়েছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারী এবং অপবিত্রতা থেকে যারা বেঁচে থাকে তাদেরকে পছন্দ করেন। (সূরা বাকারা ২২২)
হাদীস শরীফে এসেছে,

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ  قَالَ ‏”‏ مَنْ أَتَى حَائِضًا أَوِ امْرَأَةً فِي دُبُرِهَا أَوْ كَاهِنًا فَقَدْ كَفَرَ بِمَا أُنْزِلَ عَلَى مُحَمَّدٍ

আবু হুরাইরা রাযি. হতে বর্ণিত আছে, নবী বলেন, যে ব্যক্তি ঋতুবতী নারীর সাথে সহবাস করে অথবা স্ত্রীর গুহ্যদ্বারে সহবাস করে অথবা গণক ঠাকুরের নিকটে যায়- সে মুহাম্মাদ  উপর যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তা (কুরআন) অবিশ্বাস করে। (জামে তিরমিযী  ১৩ ইবনু মাজাহ ৬৩৯)

দুই. তবে এ অবস্থায় যোনি ব্যবহার ও পুংমৈথন ছাড়া অন্য সব আচরণের অনুমতি রয়েছে। হাদীস শরীফে এসেছে, ঋতুবতী স্ত্রীর সাথে মেলামেশা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে, রাসূলুল্লাহ  বলেন, اصْنَعُوا كُلَّ شَيْءٍ إِلا النِّكَاحَ সহবাস ব্যতীত তার সাথে সবকিছু কর। (মুসলিম ৩০২)
অপর হাদীসে এসেছে,

عَنْ بَعْضِ أَزْوَاجِ النَّبِيِّ ﷺ أَنَّ النَّبِيَّ  كَانَ إِذَا أَرَادَ مِنَ الْحَائِضِ شَيْئًا أَلْقَى عَلَى فَرْجِهَا ثَوْبًا

রাসূলুল্লাহ -এর কোন এক স্ত্রী সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ  তাঁর ঋতুবতী স্ত্রীর সাথে কিছু করতে চাইলে স্ত্রীর লজ্জাস্থানের উপর কাপড় রেখে তারপর করতেন। (আবূ দাউদ ২৭২)

ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমা (৫/৩৯৫)-তে এসেছে,

يحرم على الزوج أن يجامع زوجته في فرجها وهي حائض ، وله أن يباشرها فيما عداه

স্বামীর জন্য স্ত্রীর মাসিক চলাকলীন যোনিপথে সহবাস করা হারাম। (যোনি ব্যবহার ও পুংমৈথন ছাড়া) অন্য উপায়ে যৌনসুখ নেয়ার অধিকার স্বামীর আছে।

والله اعلم بالصواب
উত্তর দিয়েছেন
মাওলানা উমায়ের কোব্বাদী

Top