১২.রাসূল (ﷺ) স্বশরীরে জাগ্রত অবস্থায় আল্লাহ তা‘য়ালা কে স্ব চক্ষে অবলোকন করেছেন:
এ বিষয়ে নিম্নে কিছু হাদিসে পাক ও ইমামদের বক্তব্য দেয়া হলো-
قَالَ: كَانَ الْحَسَنُ يَحْلِفُ بِاللَّهِ ثَلَاثَةً لَقَدْ رَأَى مُحَمَّدٌ رَبَّهُ-‘‘ইমাম আব্দুর রায্যাক (رحمة الله) তাঁর “তাফসীরে” হযরত হাসান বসরী (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেন তিনি কসম করে বলেছেন, নিশ্চয়ই রাসূল (ﷺ) আল্লাহ তা‘য়ালাকে দেখেছেন।’’
➤ ইমাম আব্দুর রায্যাক, আত-তাফসির, ৩/২৫১ পৃষ্ঠা, হাদিসঃ ৩০৩৩, কাজী আয়াজ : শিফা শরীফ : ১/১১৫, মোল্লা আলী কারী : শরহে শিফা : ১/৪২৮ পৃষ্ঠা,
وَرَوَى شَرِيكٌ عَنْ أَبِي ذَرّ رَضِيَ اللَّه عَنْهُ فِي تَفْسِيرِ الآيَةِ قَالَ رَأَى النَّبِيّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وسلم رَبَّهُ
-‘হযরত তাবেয়ি শারিক (رحمة الله) হযরত আবু যর গিফারী (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেন, অত্র আয়াত (হৃদয় যা দেখেছে তা মিথ্যা নয়) প্রসঙ্গে যে, হুযুর (ﷺ) আল্লাহ তা‘য়ালার দর্শন লাভ করেছেন।’’
➤ কাজী আয়াজ : শিফা শরীফ : ১/১১৬ পৃষ্ঠা, মোল্লা আলী ক্বারী : শরহে শিফা : ১/৪২৬ পৃ
হযরত আবুল হাসান আশ‘আরী (رحمة الله) বলেন,
وَقَالَ أَبُو الْحَسَنِ عَلِيُّ بْنُ إِسْمَاعِيل الْأَشْعَرِي رَضِيَ اللَّه عَنْهُ وَجَمَاعَةٌ مِنْ أَصْحَابِهِ أنَّهُ رَأَى اللَّه تعالى ببصره وعيسى رَأسِهِ وَقَالَ كُلّ آيةٍ أُوتِيهَا نَبِيّ مِنَ الْأَنْبِيَاءِ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ فَقَدْ أُوتِي مِثْلَهَا نَبِيُّنا صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَخُصَّ مِنْ بَيْنِهِمْ بِتَفْضِيلِ الرُّؤْيَةِ-
-“আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আকায়েদের ইমাম আবুল হাসান আলী আশ‘আরী (رحمة الله) ও তাঁর এক জামাত সঙ্গী-সাথী বলেন হুযুর (ﷺ) আল্লাহ তা‘য়ালাকে কপালের চোখ দ্বারা অবলোকন করেছেন। তাঁরা আরও বলেন, অন্যান্য আম্বিয়ায়ে কেরামকে যত মু‘জিজা দেওয়া হয়েছে অনুরূপ মু‘যিজা হুযুর (ﷺ) কে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু হুযুর (ﷺ) কে অগ্রবর্তী করে দিদারে এলাহী মু‘যিজা দেওয়া হয়েছে।’’
➤কাজী আয়াজ : শিফা শরীফ : ১/১১৮ পৃষ্ঠা, আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী : শরহে শিফা : ১/৪২৯ পৃষ্ঠা,
বুঝা গেল, কেউ যদি রাসূল (ﷺ)‘র মি‘রাজে আল্লাহ দেখার বিষয়টি অস্বীকার করে তাহলে সে নিঃসন্দেহে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের বহির্ভূত এবং পথভ্রষ্ট বাতিল ফিরকা হিসেবে গণ্য।
قَالَ الْقَاضِي أَبُو الْفَضْلِ وَفَّقَهُ اللَّهُ : والحق الذي لا امتراءالحق الذى لا امتراء فيه ان فِيهِ أَنَّ رُؤْيَتَهُ تَعَالَى فِي الدُّنْيَا جَائِزَةٌ عَقْلًا. وَلَيْسَ فِي الْعَقْلِ مَا يُحِيلُهَا-
-“ইমাম কাযি আবুল ফজল আয়াজ (رحمة الله) তিনি বলেন, সত্য কথা হলো আকলের দিক থেকে এ বিষয়ে সন্দেহ পোষণ করার কোন অবকাশ নেই যে, দুনিয়াতে তিনি আল্লাহর দীদার লাভ করেছেন। আর আকলের দিক থেকে বিরূপ কোন প্রমাণও নেই যে, এরূপ হওয়া অসম্ভব।’’
➤কাজী আয়াজ : শিফা শরীফ : ১/১১৮ পৃষ্ঠা, আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী : শরহে শিফা : ১/৪২৯ পৃষ্ঠা,
মোল্লা আলী ক্বারী (رحمة الله) বলেন-
وقال الغزالي في الإحياء والصحيح أن رسول الله صلى الله تعالى عليه وسلم رأى الله تعالى ليلة المعراج-
-“ইমাম গায্যালী (رحمة الله) ‘ইহইয়াউল উলুমুদ্দী’নে লিখেন, এ মতই সহীহ বা বিশুদ্ধ যে মি‘রাজের রজনীতে রাসূল (ﷺ) আল্লাহ তা‘য়ালাকে দেখেছেন।’’
➤ আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী : শরহে শিফা : ১/৪২৩ পৃষ্ঠা।
ইমাম নববী (رحمة الله) বলেন,
فَالْحَاصِلُ أَنَّ الرَّاجِحَ عِنْدَ أَكْثَرِ الْعُلَمَاءِ إن رسول الله صلى الله عليه وسلم رَأَى رَبَّهُ بِعَيْنَيْ رَأْسِهِ لَيْلَةَ الْإِسْرَاءِ لِحَدِيثِ بن عَبَّاسٍ وَغَيْرِهِ مِمَّا تَقَدَّمَ وَإِثْبَاتُ هَذَا لَا يَأْخُذُونَهُ إِلَّا بِالسَّمَاعِ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
-‘‘অধিকাংশ ওলামার নিকট এই মতই প্রাধান্য পেয়েছে যে, নবী করীম (ﷺ) মি‘রাজের রজনীতে স্বীয় প্রতিপালককে তাঁর কপালের চক্ষু দ্বারা দেখছেন। যেমনটি ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) এর হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে। এই বিষয়ে যারা (সাহাবীরা) রাসূল (ﷺ) হতে মি‘রাজের সময় (মি‘রাজের ঘটনা) শ্রবণ করেছেন কেবল তাদের অভিমত ছাড়া বাকি অভিমত (যেমন মা আয়েশার অভিমত; কেননা তিনি তখন খুব ছোট ছিলেন) গ্রহণ করা হবে না।’’
➤ ইমাম নববী : শরহে মুসলিম : ৩/৫ পৃষ্ঠা, দারু ইহ্ইয়াউত তুরাসুল আরাবী, বয়রুত, লেবানন, ইমাম যুরকানী : শরহে মাওয়াহেব : ৬/১১৬পৃ, মোল্লা আলী ক্বারী : শরহে শিফা : ১/৪২৫ পৃষ্ঠা, শায়খ ইউসুফ নাবহানী, যাওয়াহিরুল বিহার : ৩/৩২২ পৃষ্ঠা,
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে আমার লিখিত ‘‘প্রমাণিত হাদিসকে জাল বানানোর স্বরূপ উন্মোচন’’ ১ম খন্ডের ১২৮-১৩৯ পৃষ্ঠা পর্যন্ত দেখুন।