নাবী পাক সাল্লাল্লাহু সাল্লামকে সমস্ত সৃষ্টির জ্ঞান প্রদান করা হয়েছে।
আল্লাহ্ তাবারক ওয়া তা’য়ালা নাবীয়ে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লামকে সমস্ত সৃস্টির  জ্ঞান প্রদান করেছেন, যার সম্পর্কে পূর্বে উল্লেখিত হাদিস গুলির ন্যায় নিম্নের হাদিস শারিফ থেকেও স্পষ্টভাবে প্রমান পাওয়া যায়।
মিশকাত শারিফ ১ ম খন্ড পৃষ্ঠা নং ৬৯, ৭০ ও তিরমিজী ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা - ১৫৬
عَنْ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ عَاءِش قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللّٰہﷺ رَاَئیْتُ رَبِّی عَزَّوَجَلَّ فِیْ اَحْسَنِ صُوْرَۃٍ قَالَ فِیْمَا یَخْتَصِمُ الْمَلَاء الْاَ عْلٰی قُلْتُ اَنْتَ اَعْلَمُ قَالَ فَوَضَعَ کَفَّہُ بَیْنَ کَتَفَیّ فَوَ جَدْتُ بَرْدَھَا بَیْنَ ثَدَیَّ فَعَلِمْتُ مَافِیْ السَّوٰتِ وَمَافِیْ الْاَرْضِ وَتَلَاوَکَللِکَ 
نَزَی اِبْرَاھِیمَ مَلَکُوْتِ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ وَلتَکُوْنَ مِنَ المُوْمِنِیْنَ
অর্থাৎ ঃ হজরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আইশ রাদীআল্লাহ আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবীয়ে পাক আলাইহিস সালাম ইরশাদ করেন, আমি আল্লাহ্ রাব্বুল ইজ্জাতকে খুব সুন্দর ভাবে দর্শন করলাম। আল্লাহ্ তা’য়ালা আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ফিরিস্তারা কি বিষয়ে তর্ক করছে ? আমি উত্তরে বললাম আপনিই ভালো জনেন। নাবীয়ে পাক আলাইহিস সালাম বলেন, অতঃপর আল্লাহ্ তা’য়ালা নিজের দাস্তে মোবারক কে আমার দুই স্কন্ধের মাঝে রাখলেন। আর সেই স্পর্শের শীতলতা আমি আমার হৃদয়ে অনুভব করলাম। অতঃপর আমি নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডলের মধ্যে যা কিছু রয়েছে সব বিষয়ে জ্ঞান লাভ করলাম (অবগত হলাম)। এবং তিনি কোরান শারিফের এই আয়াতটি পাঠ করলেন -
وکذالک نری ابراھیم ملکوت السمٰوات والارض لتکون من المومنین
হজরত মুল্লা আলী ক্বারী রাহমাতুল্লাহে আলাই উক্ত হাদিসের বিশ্লেষনে নিজের বিখ্যাত গ্রন্থ মিরক্বাতের মধ্যে লিখেছেন।
قَالَ اِبْنُ حَجَرٍ اَیْ جَمِیعَ الْکَائنَاتِ اَلَّتِی فِیْ السّمٰواتِ بَلْ وَ مَافَوْقَھَا کَمَا یُسْتَفَادُ مِنْ قِصَّۃِ الْمِعْرَاجِ وَالْاَرْضِ ھِیَ بِمَعْنیٰ الْجِنْسِ اَیْ وَجَمِیْع
مَافِی الاَرْضِیْنَ السَّبْعِ بَلْ وَمَا  تَحْتَھَا کَمَا اَفَادَ اَخْبَارُہُ عَلَیْہِ السَّلَامْ مِنَ الثَّوْرِ وَالحُوْتِ الَّذَیْنِ عَلَیْھِمَا اْلاَرْ ضُوْنَ کُلُّھَا یَعْنِی اَنَّ اللّٰہَ اَرَیٰ اِبْرَاھیْمَ عَلَیْہ، السَّلَامُ مَلَکُوْتِ السَّمٰواتِ وَالاَرْضِ وَ کَثَفَتْ لِی ذٰلِکَ وَفُتِحَ عَلَیَّ اَبْوَابَ الْغُیُوْبِ
(مرقات شرح مشکوۃ)
অর্থাৎঃ (হজরত মুল্লা আলী ক্বারী রাহমাতুল্লাহে আলাই বলেন) হজরত ইবনে  হাজার উক্ত হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেন, অর্থাৎ নাবীয়ে পাক আলাইহিস সালাম সারা বিশ্ব জগতের বিষয় বস্তুর উপর অবগত হলেন, যা কিছু সপ্ত আকাশে রয়েছে, এমনকি যা কিছু সপ্ত আকাশের উর্দ্ধলোকে রয়েছে। যেমন মেরাজের ঘটনা থেকে তা বোঝা যায়। আর اَلْاَرْضُ শব্দটি  সমগ্র পৃথিবী অর্থে ব্যবহার হয়েছে। অর্থাৎ যা কিছু সাত স্তবক জমিনের মধ্যে বরং যা কিছু সাত স্তবক জামিনের নীচে রয়েছে সেই বস্তগুলোকে নাবীয়ে পাক আলাইহিস সালাম জেনে গেলেন। যেমন নাবীয়ে কারীম আলাইহিস সালামের হাদিস থেকে প্রমানিত যে, সাত তবক জমিনের নীচে, একটি বলদ ও একটি গাছ আছে। (যার উপর ভর করে সারা পৃথিবী দাড়িয়ে আছে) অর্থাৎ নাবীয়ে কারীম আলাইহিস সালাম বলেন, নিশ্চয় হজরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালামকে আল্লাহ্ তা’য়ালা আসমানগুলির আশ্চর্য্য বস্তুগুলিকে প্রত্যক্ষভাবে দর্শন করিয়েছেন। আর আমার জন্য সেই আশ্চর্য্য বস্তুগুলিকে সম্পূর্ন রূপে খুলে দিয়েছেন এবং গায়েবের দরজাগুলিকে খুলে দিয়েছেন।
*উল্লেখিত হাদিস ও মুল্লা আলী ক্বারী রাহমাতুল্লাহে আলাইহের ব্যাখ্যা থেকে পরিষ্কার ভাবে প্রমানিত হয় যে, আল্লাহ্ তা’য়ালা নিজের মাহবুব
আলাইহিস সালামকে নভোমন্ডলের উপরে ও ভূ-মন্ডলের  নীচে পর্যন্ত সব বিষয়ের জ্ঞান প্রদান করেছেন।
তারপরেও যদি কোনোও হতভাগ্য ব্যক্তি বলে যে, হুজুর নাবীয়ে কারীম আলাইহিস সালাম এটা জানতেন না, ওটা জানতেন না, তাহলে  সে জাহান্নামে নিক্ষেপ হওয়ার পূর্বে অন্য কোনো ভাবে বুঝতে সক্ষম  হবে না। আল্লাহ্ তা’য়ালা তাদের হাদিস ও কোরান বোঝার এবং মহাজ্ঞানী নাবীয়ে কারীম আলাইহিস সালামের শানে বে’আদবী থেকে বিরত থাকার তৌফিক দান করুন। -
آمِین بجاہ سیدالمرسلین ﷺ
আমার ইসলাম দরদী ভাই ও বোনেরা! নাবীয়ে  পাক আলাইহিস সালাম গায়েব জানেন বা আল্লাহ্ তা’য়ালা নিজের প্রিয় বন্ধুকে সৃষ্টি জগতের সব বিষয়ের জ্ঞান প্রদান করেছেন। এর উপর আরও বহু কোরানের আয়াত ও হাদিসে প্রমান রয়েছে। কিন্তু যেহেতু উপরের সংকলিত কোরানের আয়াত, তাফসির ও হাদিস শারিফের আলোচনা থেকেই পরিষ্কার ভাবে প্রমানিত যে, নাবীয়ে পাক আলাইহিস সালাম গায়েবের খবর জানতেন, সেহেতু এই কিতাবে আর কোনো দলিল না দিয়ে অন্য বিষয়ের উপর আলোচনা করাই যুক্তি যুক্ত বলে মনে করি।
পুস্তকের নাম:-জ্ঞান ভান্ডার নাবী মুস্তাফা আলাইহিস সালাম। 
-:লেখক:-
মুফতী আমজাদ হোসেন সিমনানী
Top