রওজা মোবারকের উপর জানালা কেন?



❏ হাদিস ১:


হযরত ওমর বিন মালেক (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত,তিনি বলেন, নবীজির ইন্তেকালের পর একবার মদীনা শরীফে দীর্ঘদিন অনাবৃষ্টির কারনে অসহনীয় গরম আর দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। তাই মদীনাবাসীরা একদিন মুমিনদের মা হযরত মা আয়েশা সিদ্দীকা (رضي الله عنه) এর কাছে গিয়ে নিজেদের সমস্যার কথা উল্লেখ করে বৃষ্টির জন্য দোয়া কামনা করেন।

তখন হযরত মা আয়েশা (رضي الله عنه) বলেন, হে মদীনাবাসী তোমরা নবীজর রওজা মোবারকের উপর যে খেজুর গাছের ডাল আছে তা সরিয়ে দাও।এবং অপেক্ষা কর। মদীনাবাসীরা তখন হযরত মা আয়েশা সিদ্দীকা (رضي الله عنه) এর পরামর্শ মোতাবেক কাজ করলেন।


নবীজির রওজা মোবারকের উপর থাকে ডাল সরানোর সাথে সাথে হঠাৎ আমরা দেখলাম আকাশ ধীরে ধীরে কালো মেঘে ডাকা শুরু করছে,অল্প কিছুক্ষনের মধ্যেই আকাশ থেকে এমন ভাবে ভারী বর্ষন হতে শুরু করল যে,আমাদের পথ চলা কষ্ট দায়ক হয়ে পডলো।


দীর্ঘ এক সপ্তাহ অনবরত আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ হতে থাকে যা কিছুক্ষনের জন্যেও বন্ধ হয়নি।যা আমাদের ফসল ফলাদির জন্য পর্যাপ্ত ছিল।


এক সপ্তাহ পর,মদীনাবাসীরা আবার মা হযরত আয়েশা সিদ্দীকা (رضي الله عنه) এর কাছে গিয়ে বৃষ্টি বন্ধের জন্য দোয়া চায়। তখন হযরত মা আয়েশা সিদ্দীকা (رضي الله عنه) বলেন,নবীজির রওজা মোবারকের উপর খেজুর গাছে ডাল পূর্বের মত দিয়ে দাও,বৃষ্টি বন্ধ হয়ে যাবে।

মদীনাবাসীরা তাই করলো,সাথে সাথে বৃষ্টি বন্ধ হয়ে গেলো। ‪


তথ্যসূত্রঃ


●সুনানে আবু দাউদঃ ১২৫৮

●সুনানে ইবনে মাজাহঃ ৬০২

●সুনানে দারেমীঃ ৯২৭


❏ হাদিস ২:


সনদ: “আবূ নুয়াইম এই বর্ণনা শুনেছিলেন ➠ সাঈদ ইবনে যায়দ হতে; ➠ তিনি আ’মর ইবনে মালেক আল-নুকরী হতে; ➠ তিনি হযরত আবূল জাওযা আউস্ বিন আবদিল্লাহ (رضي الله عنه) হতে, যিনি এটি বর্ণনা করেন।


ইমাম দারিমী বর্ণনা করেন হযরত আবূল জাওযা’ আউস ইবনে আব্দিল্লাহ (رضي الله عنه) হতে, ‍যিনি বলেন: মদীনাবাসীগণ একবার দুর্ভিক্ষের কবলে পড়েন। তাঁরা মা আয়েশা (رضي الله عنه)-এর কাছে এ (শোচনীয় অবস্থার) ব্যাপারে ফরিয়াদ করেন। তিনি তাঁদেরকে মহানবী (ﷺ) এর রওযা শরীফে গিয়ে এর ছাদে একটি ছিদ্র করতে বলেন এবং রওযা পাক ও আকাশের মাঝে কোনো বাধা না রাখতে নির্দেশ দেন। তাঁরা তা-ই করেন। অতঃপর মুষলধারে বৃষ্টি নামে। এতে সর্বত্র সবুজ ঘাস জন্মায় এবং উট হৃষ্টপুষ্ট হয়ে মনে হয় যেন চর্বিতে ফেটে পড়বে। এই বছরটিকে ‘প্রাচুর্যের বছর’ বলা হয়। 


তথ্যসূত্রঃ


●সুনানে দারিমী, ১ম খণ্ড, ২২৭ পৃষ্ঠা, হাদীস নং ৯৩।


●শায়খ মোহাম্মদ বিন আলাউইয়ী মালেকী (মক্কা শরীফ) বলেন, “এই রওয়ায়াতের এসনাদ ভাল; বরঞ্চ, আমার মতে, এটি সহীহ (বিশুদ্ধ)। উলেমাবৃন্দ এর নির্ভরযোগ্যতার বিষয়টি সমর্থন করেছেন এবং প্রায় সমকক্ষ বিশ্বস্ত প্রামাণিক দলিল দ্বারা এর খাঁটি হবার বিষয়টি প্রতিষ্ঠা করেছেন।” [শেফা’উল ফু’য়াদ বি-যেয়ারতে খায়রিল এ’বাদ, ১৫৩ পৃষ্ঠা]


●ইবনে আল-জাওযী, আল-ওয়াফা’ বি-আহওয়ালিল্ মোস্তফা (ﷺ) [২:৮০১]


●ইমাম তাকিউদ্দীন সুবকী (رحمة الله) কৃত ‘শেফাউস্ সেকাম ফী যেয়ারাতে খায়রিল আনাম’ [১২৮ পৃষ্ঠা]


●ইমাম কসতলানী (رحمة الله) প্রণীত ‘আল-মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়াহ’ [৪:২৭৬]; 


●ইমাম যুরকানী মালেকী (رحمة الله) ‘শরহে মাওয়াহিব’ [১১:১৫০]


Top