"একজন মজলুম সাহাবী এবং শিয়া, রাফেদ্বীদের মিথ্যাচার "
🖋সিফাত সুলতান আলিফ
_______________________________________

আহলু সুন্নাহের দৃষ্টিতে হজরতে সাইয়্যিদুনা আমীরে মুয়াবীয়া রাযি: যিনি একাধারে সাহাবীয়ে রাসূল সালল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম, কাতেবে ওহী এবং বিজ্ঞ ফক্বীহ তথা মুফতি মুজতাহিদ সাহাবীদের অন্যতম।
* বিশ্বখ্যাত আলেম একাধারে মুফাস্সীর এবং মুহাদ্দীস আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ুতী রহ: তাঁর সুখ্যাত " আত তারিখুল খোলাফা " ( খলিফাদের ইতিহাস) কিতাবে খলিফা হজরতে ফারুকে আজম ওমর ইবনুল খাত্তাব রাযি: এর খিলফাতকালে হজরতে আমীরে মুয়াবীয়া রাযি:কে তাঁর যোগ্যতা, বিচক্ষণতা, ন্যায়পরতা ইত্যাদি বিবেচনা করে শা'মের আমীর হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন।
* দ্বিতীয়, তিনি ছিলেন ইসলামের তৃতীয় খলিফা উমাইয়া বংশের হজরতে ওসমান বিন আফফান রাযি: এর ভাইয়ের ছেলে অর্থাৎ আমীরে মুয়াবীয়া রাযি: এর চাচা হলেন হজরতে ওসমান জিন্নুরাঈন রাযি:।
* তৃতীয়ত, সম্প্রতি নামধারী কিছু মুসলিম তথাপি শিয়া, রাফেদ্বীরা জঙ্গে সিফফিন নিয়ে অনেকে মিথ্যা বর্ণনা রঁটিয়ে মুয়াবীয়া রাযি:কে দুশমনে আহলে বায়েত আলাইহিসালাম প্রমাণ করতে ঘৃণ্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কিন্তু মাথাচাড়া দিয়ে উঠা এই ফেতনার বিরুদ্ধে আমাদের সচেতনতা একদম নেই বল্লেই চলে। শরহে মুসলিমে ইবনে হজর আসকালান রহ: লিখেন যে, হজরতে ওসমান রাযি: এর হত্যার বিচার তথা কিসাস দাবীতে তিনি খা'তায়ে ইজতেহাদীর কারণে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন। তবেঁ ইমামগণ এই যুদ্ধের দায় দিয়েছেন খারেজিদের উপর। কারণ রাতের আঁধারে খারেজিরা মাওলা আলী এবং মুয়াবীয়া এর তাবুর দিকে লক্ষ করে তীঁর নিক্ষেপ করে। এতে দুদলই ভাবে যে একে অপরকে হত্যার জন্য মুয়াবীয়া আলীর দিকে আলী মুয়াবীয়ার দিকে তীঁর নিক্ষেপ করে। যার দরুন আল্লাহর অদৃশ্য ইশারায় এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে দু'জন জড়িয়ে পড়ে।
যাকগে....এটাতে মাওলা আলী আলাইহিসালাম হক ছিলেন এবং মুয়াবীয়া রাযি: খাতায়ে ইজতেহাদে ছিলেন।
কিন্তু আহলে বায়েত আলাইহিসালামকে গালি দেয়া বা অন্যের দিয়ে গালাগাল দেওয়ার ব্যাপারে যেসব রেওয়ায়েত পাওয়া যায় তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন মুনাকার, মুনকাতি এবং দ্বয়ীফ। সেটা আমি বহু জায়গায় প্রমাণ করেছি। আর কিছু হাদীসে " تَسُبَّ " দ্বারা অনেকেই গালির অনুবাদ করতে দেখছি যেটি তাঁদের ঘৃণ্য চক্রান্ত। বরং " تَسُبَّ " দ্বারা হাদীসের শরেহীনগণ গালাগাল নেইনি বরং সমালোচনা নিয়েছেন। এটা স্বাভাবিক মাওলা আলী আলাইহিসালাম ওসমান হত্যার বিচারে পরিস্থিতির স্বীকারে ব্যর্থ হচ্ছিলেন যার ফলে উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রাযি: হজরতে তালহা রাযি: হজরতে জুবাইর রাযি: হজরতে মুয়াবীয়া রাযি: মত জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত সাহাবগণও কিছুটা সংকোচ বোধ করেন।
এটাকে " تَسُبَّ " তথা সমালোচনা ধরে নিয়েছেন শরেহীনগণ। গালাগাল নই। যদিওবা আমীরে মুয়াবীয়া রাযি: হতে " تَسُبَّ " বিষয়টি প্রমাণিত নই। অন্যদিকে 
" তানকীস " বলে যেসব হাদীস উপস্থাপন করে শিয়া রাফেদ্বীরা সেগুলোর বিন্দুমাত্র সনদ ঠিক নেই বরং এসব তাদের বানোয়াট এবং ঘৃণ্য মিথ্যাচার। 
অতএব, যে বা যারা মুয়াবীয়া রাযি: খুতবায় আহলে বায়েত আলাইহিসালামকে গালাগাল দেয়া রীতি চালু করেছিলেন বলে, মুসলিম জনমনে বিভ্রান্তিকর বিশ্বাসের জন্ম দিচ্ছেন! তাদের অনুরোধ করবো ভুলত্রুটি মার্জনা হিসেবে সেসব হাদীসের সনদ, মতন যাচাইবাছই করুন। যদি সাহাবীদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণের উদ্দেশ্যে এহেন নিকৃষ্ট পায়তারা করে থাকেন তবেঁ আমরা আপনাদের বাহাছের চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি। মনে রাখবেন..! আমীরে মুয়াবীয়া রাযি: এর মানাকেব, ফজিলতের পক্ষে কিন্তু একাধিক সহীহ হাদীস বিদ্যমান। সহীহ হাদীস নেই তাও অস্বীকার করা সুযোগ নেই। কারণ ইমাম আবু জাফর ত্বহাবী রহ: এর আকিদাতুত ত্বহাবী থেকে যে দলিল আপনারা মুয়াবীয়া রাযি: এর শানে সহীহ হাদীস নেই বলে দাবী করে থাকেন..! খুদ ইমাম ত্বহাবী রহ: নিজেই তাঁর সনদ বর্ণনা করেননি। অতএব, আপনাদের ইতিহাস আমাদের ভালোই জানা আছে আলহামদুলিল্লাহ্‌। মুখোশ উন্মোচন মাত্র শুরু।
সাহাবীদের বিরুদ্ধে জাল, বানোয়াট, মওদু যেসব বর্ণনাকে পাহাড় বানিয়ে তাঁর উপর অবস্থান করছেন। এক টাঁনে পুরো পাহাড় ধসিয়ে দেওয়া হবে ইনশাআল্লাহ্‌। 
সাহাবীদের প্রতি বিদ্বেষ মনোভাব কখনও কুরআন, সুন্নাহ সমর্থিত নই। আহলে বায়েত আলাইহিসালামের মহব্বত দেখিয়ে সাহাবাদের সমালোচনা করা আহলুস সুন্নাহের উসূলের খেলাফ। কারণ আল্লাহর রাসূল সালল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামা বলেন, 
ذِكْرُ أصْحَابِىْ فَأمْسِكُوْا .
অর্থ : সাহাবীদের আলোচনাকালে তোমরা সংযত থেকো। (মুজামুল কবীর তাবরানী ১৪১১, হিলাইয়াতুল আউলিয়া ৪/১০৮, মাযমাউয যাওয়ায়েদ ১১৮৫১)
অতএব, আমাদের পথ এবং মত দু'টোই আল্লাহর রাসূল সালল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামার হাদীস মোতাবেক হওয়া জরুরি এ মতাদর্শের বাইরে চলার সুযোগ নেই।
আল্লাহ পাক আমাদের শিয়া, রাফেদ্বীদের ফেতনা হতে হেফাজত করুন। আমীন।
Top