বুখারী ও মুসলিম ব্যতীত আর কোন সহীহ হাদিসের কিতাব আছে কি?
♦হাফিজুল হাদিস যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস ইমাম বোখারী (রহ:) বলেন,
“বোখারী শরীফের বাইরে আমার এক লক্ষ সহীহ হাদীস মুখস্ত রয়েছে।”
★ ইবনে হাজর আসকালানী (রহ) হাদয়ুস সারী পৃ: ৭
★ ইমাম যাহাবী সিয়ারু আলামিন নুবালা পৃ ১২/৪০২
★ তবকাতুস- সুবকী ২/৭
★ তাহযীবুল আসমা ওয়াল লুগাত ১/৭৪
★আল-কামিল, ইবনে আদী ১/১২৬,
★তারীখে বাগদাদ, খতীবে বাগদাদীর প্রনীত ২/৮-৯,
★শুরুতি আইম্মাতিল খামসা, হাযেমী ১৬০,১৮৫
সকল সালাফী আহলে হাদিস ও কতিপয় ওহাবী এটা প্রচার করে থাকে যে বুখারী ও মুসলিম পড়বে কারন এর বেশির ভাগ হাদিস সহীহ। সাথে আরো বলে থাকে যে দ্বয়ীফ হাদিস আমরা মানি নি অনুসরন করব না।
সেই সব ওহাবী সালাফীদের কে বলছি যারা দ্বয়ীফ ফতোয়া মেরে লক্ষ লক্ষ হাদিস থেকে মানুষকে বিমুখ করে দিচ্ছে- -
★ বুখারী , মুসলিম,তিরমিযি, আবু দাউদ, নাসাঈ, মুসনদে আহমদদ এগুলো সিহাহ সিত্তাহ বলা হয় কারন এগুলোতে সহীহ হাদিস বেশি রয়েছে (দেখুন - বেশি রয়েছে বলা হয় কিন্তু Challenge করে বলছি সব হাদিস সহিহ এ কথা কেউ বলতে পারবে না) তাহলে কি তাদের ফতোয়া অনুসারে হাদিসের ইমামগন কি জানতেন না যে দ্বয়ীফ হাদিস আমল করা ঠিক না পাপ আর পথভ্রষ্টতা?
★ আসলে হাদিসের সমস্ত ইমামগন জানতেন সেটা যে,
সহিহ ও দ্বয়ীফ হাদিস ২টাই আমল করা যায় এবং আমল করা উচিত (কারন এটা স্বয়ং রাসুল (সা) এর পবিত্র বানী বা সমর্থন সনদের ত্রুটির কারনে একটু দুর্বল হতে পারে কিন্তু এর সম্মান ঠিকই এর গুরুত্ব ঠিকই রয়েছে) কিন্তু জাল হাদিস আসলে কোন হাদিসই নয় তাই কোন ইমাম কোনদিন কাউকে কোন জাল হাদিস আমল করতেও বলে নি তাদের কিতাবে বর্ননাও করে না যদি বর্ননা করে থাকেন তবে তা মানুষকে সতর্ক করে জানিয়ে দেয়ার জন্য সেক্ষেত্রে এগুলো তাদের কোন সহিহ কিতাবে লিপিবদ্ধ করেন নি।
★ অপর দিকে বিভিন্ন হাদিসের কিতাবে দেখা যায় দ্বয়ীফ হাদিসের সংখ্যা উক্ত কিতাবের সহিহ হাদিসেরও বেশি, কখনো সমান আর কখনো অর্ধেক সংখ্যক দ্বয়ীফ হাদিস আছে। বুখারী মুসলিম ও অন্যান্য সিহাহ সিত্তার
কিতাবেই এর উতকৃষ্ট প্রমান বিদ্যমান।
★ দ্বয়ীফ আর জাল হাদিস যদি একই ক্যাটাগরির হাদিস হতো আর এগুলো আমল করলে যদি পাপই হত পথভ্রষ্টতাই হত তাহলে মুহাদ্দিসগন (হাদিস বিশারদগন) লক্ষ লক্ষ হাদিস ঘেটে ঘেটে এই সব হাদিস লিপিবদ্ধ করতেন না তারা নিশ্চই কোন মুসলমানকে পাপের দিকে ঠেলে দিবে না !!
★ সালাফি, ওহাবীদের কথা অনুযায়ী জাল আর দ্বয়ীফ যদি same হত তাহলে দুনিয়াতে কোন হাফিজুল হাদিস (১ লক্ষ হাদিসের হাফিজ) ও কোন হুজ্জাতুল ইসলাম (৩ লক্ষ হাদিসের হাফিজ) পাওয়াই যেত না।
★ খুব সহজ বুখারী ও মুসলিম শরীফের ৯/১০ হাজার মুখস্ত করা কিন্তু ১ লক্ষ বা ৩ লক্ষ হাদিস মুখস্ত করা সাধারন কথা নয়। তাও যদি আবার সেটা মুল্যহীনই ( valueless ) হত তাহলে ওনাদের এত কষ্ট করে কিতাবই লিখার কি দরকার ছিল আর এত লক্ষ হাদিস মুখস্ত করারই কি দরকার ছিল? কি হাস্যকর ওহাবী আহলে-হাদিস দের জাল-দ্বয়ীফ ফতোয়া মারার ব্যাপারটা তাই না?
মূলতঃ সিয়া ছিত্তার বাইরেও অসংখ্য সহীহ হাদীসের কিতাব রয়েছে। এ প্রসঙ্গে বিখ্যাত মুহাদ্দিস ইমাম নববী রহমাতুল্লাহি আলাইহি , ইবনুস সালাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি , হযরত শাহ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিস দেহলবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি প্রমূখ বিখ্যাত হাদীস শরীফ বিশারদগন বলেন, সিয়া ছিত্তা ছাড়াও আরো ৫০ এরও বেশি সহীহ হাদীস শরীফের কিতাব আছে।
নিম্নে এর কতিপয় কিতাবের নাম মুবারক উল্লেখ করা হলো-
(১) মুসনাদুল ইমাম আবু হানীফা।
বিলাদাত- ৮০ হিজরী, ওফাত- ১৫০ হিজরী।
--হানাফী মাযহাবের প্রধান ইমাম এবং তাবেয়ী যুগের বিশিষ্ট ইমাম
--ইমাম বুখারীর পিতার উস্তাদের উস্তাদ।
(২) আল মুয়াত্তা লি ইমাম মালেক।
জন্ম- ৯৫ হিজরী, ওফাত- ১৭৯ হিজরী।
--ইমাম মালেক (রহ) এর মুয়াত্তা কোন কোন মুহাদ্দিসগন বুখারী শরীফের উপরে স্থান দিয়েছেন।
(৩) আল মুয়াত্তা লি ইমাম মুহম্মদ ।
জন্ম- ১৩৫ হিজরী, ওফাত- ১৮৯ হিজরী।
(৪) আল মুছান্নাফ লি আব্দুর রাজ্জাক ইবনে হুমাম ।
জন্ম- ১২০/১২৬ হিজরী, ওফাত- ২১১ হিজরী।
--ইমাম বুখারী (রহ)' র দাদা ও উস্তাদ
--ইমাম হাম্বল (রহ) উস্তাদ
(৫) মুসনদে আহমদ বিন হাম্বল।
জন্ম- ১৬৪ হিজরী, ওফাত- ২৪১ হিজরী।
(৬) মুসনাদুত তায়লাসী।
জন্ম-___, ওফাত- ২০৪ হিজরী।
(৭) কিতাবুল আছার লি ইমাম আবু ইউছুফ।
জন্ম- ১১৩ হিজরী, ওফাত- ১৮২ হিজরী।
(৮) মুসনাদুল হুমায়দী।
জন্ম-____ , ওফাত- ২১৯ হিজরী।
(৯) মুছান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ।
জন্ম- ১৫৯ হিজরী, ওফাত- ২৩৫ হিজরী।
(১০) বুখারী শরীফ (আল জামিউল মুসনাদুছ ছহীহুল মুখতাছারু মিন উমুরি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওয়া সুনানিহী ওয়া আইয়ামিহী )
জন্ম- ১৯৪ হিজরী, ওফাত- ২৫৬ হিজরী।
(১১) আছ ছহীহুল মুসলিম ।
জন্ম- ২০৪ হিজরী, ওফাত- ২৬১ হিজরী।
(১২) সুনানু আবু দাউদ।
জন্ম- ২০২ হিজরী, ওফাত- ২৭৫ হিজরী।
(১৩) আল জামিউ ওয়াস সুনানুত তিরমিযী।
জন্ম- ২১০ হিজরী, ওফাত ২৭৯ হিজরী।
(১৪) সুনানুন নাসায়ী।
জন্ম- ২১৫ হিজরী, ওফাত- ৩০৩ হিজরী।
(১৫) সুনানু ইবনে মাজাহ।
জন্ম- ২০৯ হিজরী, ওফাত- ২৭৩ হিজরী।
(১৬) সুনানুদ দারিমী।
জন্ম- ১৮১ হিজরী, ওফাত- ২৫৫ হিজরী।
(১৭) মুসনাদুল বাযযার।
জন্ম-_____ , ওফাত- ২৯২ হিজরী।
(১৮) শরহু মা’আনিল আছার (ত্বাহাবী শরীফ)
জন্ম- ২২৯ হিজরী, ওফাত- ৩২১ হিজরী।
(১৯) ছহীহ ইবনে হিব্বান।
জন্ম- ৩৫৪ হিজরী, ওফাত- ৪৬৫ হিজরী।
(২০) মাছাবিহুস সুন্নাহ ও মিশকাত।
জন্ম- ৪৩৬ হিজরী, ওফাত- ৫১৬ হিজরী।
(২১) আল মু’জামুছ ছগীর লিত তাবরানী।
জন্ম- ২৬০ হিজরী, ওফাত- ৩৬০ হিজরী।
(২২) আল মু’জামুল আওসাত লিত ত্বাবরানী।
জন্ম- ২৬০ হিজরী, ওফাত- ৩৬০ হিজরী।
(২৩) আল মু’জামুল কবীর লিত তাবরানী।
জন্ম- ২৬০ হিজরী, ওফাত- ৩৬০ হিজরী।
(২৪) আল মুস্তাদরাক আলাছ ছহীহাইন।
জন্ম- ৩২১ হিজরী, ওফাত- ৪৫০ হিজরী।
(২৫) ছহীহ ইবনু খুযাইমাহ।
জন্ম- ২২৩ হিজরী, ওফাত- ৩১১ হিজরী।
(২৬) আস সুনানুল কুবরা লিল বাইহাক্বী।
জন্ম- ৩৮৪ হিজরী, ওফাত- ৪৫৮ হিজরী।
(২৭) আস সুনানুছ ছগীর লিল বাইহাক্বী।
জন্ম- ৩৮৪ হিজরী, ওফাত- ৪৫৮ হিজরী।
(২৮) শুয়াইবুল ঈমান লিল বাইহাক্বী।
জন্ম- ৩৮৪ হিজরী, ওফাত- ৪৫৮ হিজরী।
(২৯) মা’রিফাতুস সুনান ওয়াল আছার লিল বাইহাক্বী।
জন্ম- ৩৮৪ হিজরী, ওফাত- ৩৫৮ হিজরী।
(৩০) শরহুস সুন্নাহ লিল বাগবী।
জন্ম- ৪৩৬ হিজরী, ওফাত- ৫১৬ হিজরী।
(৩১) মা’রিফাতুছ ছাহাবা লি আবী নুয়াইম।
জন্ম- ৩৩৬ হিজরী, ৪৩০ হিজরী।
(৩২) জামিউল আহাদীস লিছ সূয়ুতি।
জন্ম- ৮৪৯ হিজরী, ওফাত- ৯১১ হিজরী।
(৩৩) গায়াতুল মাক্বছাদ ফী যাওয়ায়িদিল মুসনাদ।
জন্ম- ৭৩৫, ওফাত- ৮০৭ হিজরী।
(৩৪) কানযুল উম্মাল।
জন্ম-_____ , ওফাত- ৯৭৫ হিজরী।
(৩৫) আখবারু মক্কতা লি আযরাক্বী।
(৩৬) ছহীহ ইবনে ওয়ায়না।
(৩৭) সহীহ ইবনুস সাকান।
(৩৮) সহীহ মোন্তাকা।
(৩৯) মুখতাসা রেজিয়াহ।
(৪০) সহীহ যুরকানী।
(৪১) সহীহ ইসফেহানী।
(৪২) সহীহ ইসমাঈলী।
(৪৩) কিতাবুল খেরাজ।
(৪৪) কিতাবুল হেজাজ।
(৪৫) কিতাবুল আ’মলী।
(৪৬) মুসনাদে শাফেয়ী।
(৪৭) মুসনাদে আবু ইয়ালা।
(৪৮) মুসনাদে দারে কুতনী।
(৪৯) কিতাবুল ই’তিকাদ।
(৫০) কিতাবুদ দোয়া।
(৫১) মুসনাদে হারেস ইবনে উমামা।
(৫২) মুসনাদে বাজ্জার।
(৫৩) সুনানে সাঈদ ইবনে মনছুর।
(৫৪) সুনানে আবী মুসলিম।
(৫৫) শিফা শরীফ।
(৫৬) আল হুলইয়া।
(৫৭) তাহযীবুল আছার।
(৫৮) আল মুখতারা।
(আল্লাহ ওনাদের ঊপর রহমত নাজিল করুন)
এছাড়াও আরো অসংখ্য অগনিত সহীহ হাদীস শরীফের কিতাব রয়েছে। সুবহানাল্লাহ্!
মুলত হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুনিয়াতে তাশরীফ মুবারক হতে শুরু করে বিছাল শরীফ পর্যন্ত অর্থাৎ ৬৩ বছর পর্যন্ত যত কথা, কাজ, সম্মতি প্রকাশ করেছেন সবই পবিত্র হাদীস শরীফের অন্তর্গত।
কিন্তু উছুল অনুযায়ী যদি ৪০ বছর মুবারক থেকে ৬৩ বছর মুবারক পর্যন্ত ২৩ বছরও যদি ধরি, এই ২৩ বছরে যত কথা, কাজ, সম্মতি প্রদান করেছেন সবই হাদীস শরীফ।
অংক করে দেখুন,
২৩×৩৬৫= ৮৩৯৫ দিন।
আবার, ৮৩৯৫×২৪= ২০১৪৮০ ঘন্টা।
আবার, ২০১৪৮০×৬০= ১২০৮৮৮০০ মিনিট।
তার মধ্যে রাসুল (সা) এর ঘুম, চলা-ফেরা, কাজ-কর্ম, উঠা-বসা, মনোসম্মতি, সাহাবায়ে কেরাম এর বর্নিত হাদিস নিয়ে কত লক্ষ হাদিস ছিল বলা বাহুল্য তা আল্লাহই ভাল জানেন।
পরিশেষে, ওহাবী সালাফী ভ্রান্ত- মুর্খদের মতবাদের হাত থেকে আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুন।
♦হাফিজুল হাদিস যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস ইমাম বোখারী (রহ:) বলেন,
“বোখারী শরীফের বাইরে আমার এক লক্ষ সহীহ হাদীস মুখস্ত রয়েছে।”
★ ইবনে হাজর আসকালানী (রহ) হাদয়ুস সারী পৃ: ৭
★ ইমাম যাহাবী সিয়ারু আলামিন নুবালা পৃ ১২/৪০২
★ তবকাতুস- সুবকী ২/৭
★ তাহযীবুল আসমা ওয়াল লুগাত ১/৭৪
★আল-কামিল, ইবনে আদী ১/১২৬,
★তারীখে বাগদাদ, খতীবে বাগদাদীর প্রনীত ২/৮-৯,
★শুরুতি আইম্মাতিল খামসা, হাযেমী ১৬০,১৮৫
সকল সালাফী আহলে হাদিস ও কতিপয় ওহাবী এটা প্রচার করে থাকে যে বুখারী ও মুসলিম পড়বে কারন এর বেশির ভাগ হাদিস সহীহ। সাথে আরো বলে থাকে যে দ্বয়ীফ হাদিস আমরা মানি নি অনুসরন করব না।
সেই সব ওহাবী সালাফীদের কে বলছি যারা দ্বয়ীফ ফতোয়া মেরে লক্ষ লক্ষ হাদিস থেকে মানুষকে বিমুখ করে দিচ্ছে- -
★ বুখারী , মুসলিম,তিরমিযি, আবু দাউদ, নাসাঈ, মুসনদে আহমদদ এগুলো সিহাহ সিত্তাহ বলা হয় কারন এগুলোতে সহীহ হাদিস বেশি রয়েছে (দেখুন - বেশি রয়েছে বলা হয় কিন্তু Challenge করে বলছি সব হাদিস সহিহ এ কথা কেউ বলতে পারবে না) তাহলে কি তাদের ফতোয়া অনুসারে হাদিসের ইমামগন কি জানতেন না যে দ্বয়ীফ হাদিস আমল করা ঠিক না পাপ আর পথভ্রষ্টতা?
★ আসলে হাদিসের সমস্ত ইমামগন জানতেন সেটা যে,
সহিহ ও দ্বয়ীফ হাদিস ২টাই আমল করা যায় এবং আমল করা উচিত (কারন এটা স্বয়ং রাসুল (সা) এর পবিত্র বানী বা সমর্থন সনদের ত্রুটির কারনে একটু দুর্বল হতে পারে কিন্তু এর সম্মান ঠিকই এর গুরুত্ব ঠিকই রয়েছে) কিন্তু জাল হাদিস আসলে কোন হাদিসই নয় তাই কোন ইমাম কোনদিন কাউকে কোন জাল হাদিস আমল করতেও বলে নি তাদের কিতাবে বর্ননাও করে না যদি বর্ননা করে থাকেন তবে তা মানুষকে সতর্ক করে জানিয়ে দেয়ার জন্য সেক্ষেত্রে এগুলো তাদের কোন সহিহ কিতাবে লিপিবদ্ধ করেন নি।
★ অপর দিকে বিভিন্ন হাদিসের কিতাবে দেখা যায় দ্বয়ীফ হাদিসের সংখ্যা উক্ত কিতাবের সহিহ হাদিসেরও বেশি, কখনো সমান আর কখনো অর্ধেক সংখ্যক দ্বয়ীফ হাদিস আছে। বুখারী মুসলিম ও অন্যান্য সিহাহ সিত্তার
কিতাবেই এর উতকৃষ্ট প্রমান বিদ্যমান।
★ দ্বয়ীফ আর জাল হাদিস যদি একই ক্যাটাগরির হাদিস হতো আর এগুলো আমল করলে যদি পাপই হত পথভ্রষ্টতাই হত তাহলে মুহাদ্দিসগন (হাদিস বিশারদগন) লক্ষ লক্ষ হাদিস ঘেটে ঘেটে এই সব হাদিস লিপিবদ্ধ করতেন না তারা নিশ্চই কোন মুসলমানকে পাপের দিকে ঠেলে দিবে না !!
★ সালাফি, ওহাবীদের কথা অনুযায়ী জাল আর দ্বয়ীফ যদি same হত তাহলে দুনিয়াতে কোন হাফিজুল হাদিস (১ লক্ষ হাদিসের হাফিজ) ও কোন হুজ্জাতুল ইসলাম (৩ লক্ষ হাদিসের হাফিজ) পাওয়াই যেত না।
★ খুব সহজ বুখারী ও মুসলিম শরীফের ৯/১০ হাজার মুখস্ত করা কিন্তু ১ লক্ষ বা ৩ লক্ষ হাদিস মুখস্ত করা সাধারন কথা নয়। তাও যদি আবার সেটা মুল্যহীনই ( valueless ) হত তাহলে ওনাদের এত কষ্ট করে কিতাবই লিখার কি দরকার ছিল আর এত লক্ষ হাদিস মুখস্ত করারই কি দরকার ছিল? কি হাস্যকর ওহাবী আহলে-হাদিস দের জাল-দ্বয়ীফ ফতোয়া মারার ব্যাপারটা তাই না?
মূলতঃ সিয়া ছিত্তার বাইরেও অসংখ্য সহীহ হাদীসের কিতাব রয়েছে। এ প্রসঙ্গে বিখ্যাত মুহাদ্দিস ইমাম নববী রহমাতুল্লাহি আলাইহি , ইবনুস সালাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি , হযরত শাহ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিস দেহলবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি প্রমূখ বিখ্যাত হাদীস শরীফ বিশারদগন বলেন, সিয়া ছিত্তা ছাড়াও আরো ৫০ এরও বেশি সহীহ হাদীস শরীফের কিতাব আছে।
নিম্নে এর কতিপয় কিতাবের নাম মুবারক উল্লেখ করা হলো-
(১) মুসনাদুল ইমাম আবু হানীফা।
বিলাদাত- ৮০ হিজরী, ওফাত- ১৫০ হিজরী।
--হানাফী মাযহাবের প্রধান ইমাম এবং তাবেয়ী যুগের বিশিষ্ট ইমাম
--ইমাম বুখারীর পিতার উস্তাদের উস্তাদ।
(২) আল মুয়াত্তা লি ইমাম মালেক।
জন্ম- ৯৫ হিজরী, ওফাত- ১৭৯ হিজরী।
--ইমাম মালেক (রহ) এর মুয়াত্তা কোন কোন মুহাদ্দিসগন বুখারী শরীফের উপরে স্থান দিয়েছেন।
(৩) আল মুয়াত্তা লি ইমাম মুহম্মদ ।
জন্ম- ১৩৫ হিজরী, ওফাত- ১৮৯ হিজরী।
(৪) আল মুছান্নাফ লি আব্দুর রাজ্জাক ইবনে হুমাম ।
জন্ম- ১২০/১২৬ হিজরী, ওফাত- ২১১ হিজরী।
--ইমাম বুখারী (রহ)' র দাদা ও উস্তাদ
--ইমাম হাম্বল (রহ) উস্তাদ
(৫) মুসনদে আহমদ বিন হাম্বল।
জন্ম- ১৬৪ হিজরী, ওফাত- ২৪১ হিজরী।
(৬) মুসনাদুত তায়লাসী।
জন্ম-___, ওফাত- ২০৪ হিজরী।
(৭) কিতাবুল আছার লি ইমাম আবু ইউছুফ।
জন্ম- ১১৩ হিজরী, ওফাত- ১৮২ হিজরী।
(৮) মুসনাদুল হুমায়দী।
জন্ম-____ , ওফাত- ২১৯ হিজরী।
(৯) মুছান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ।
জন্ম- ১৫৯ হিজরী, ওফাত- ২৩৫ হিজরী।
(১০) বুখারী শরীফ (আল জামিউল মুসনাদুছ ছহীহুল মুখতাছারু মিন উমুরি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওয়া সুনানিহী ওয়া আইয়ামিহী )
জন্ম- ১৯৪ হিজরী, ওফাত- ২৫৬ হিজরী।
(১১) আছ ছহীহুল মুসলিম ।
জন্ম- ২০৪ হিজরী, ওফাত- ২৬১ হিজরী।
(১২) সুনানু আবু দাউদ।
জন্ম- ২০২ হিজরী, ওফাত- ২৭৫ হিজরী।
(১৩) আল জামিউ ওয়াস সুনানুত তিরমিযী।
জন্ম- ২১০ হিজরী, ওফাত ২৭৯ হিজরী।
(১৪) সুনানুন নাসায়ী।
জন্ম- ২১৫ হিজরী, ওফাত- ৩০৩ হিজরী।
(১৫) সুনানু ইবনে মাজাহ।
জন্ম- ২০৯ হিজরী, ওফাত- ২৭৩ হিজরী।
(১৬) সুনানুদ দারিমী।
জন্ম- ১৮১ হিজরী, ওফাত- ২৫৫ হিজরী।
(১৭) মুসনাদুল বাযযার।
জন্ম-_____ , ওফাত- ২৯২ হিজরী।
(১৮) শরহু মা’আনিল আছার (ত্বাহাবী শরীফ)
জন্ম- ২২৯ হিজরী, ওফাত- ৩২১ হিজরী।
(১৯) ছহীহ ইবনে হিব্বান।
জন্ম- ৩৫৪ হিজরী, ওফাত- ৪৬৫ হিজরী।
(২০) মাছাবিহুস সুন্নাহ ও মিশকাত।
জন্ম- ৪৩৬ হিজরী, ওফাত- ৫১৬ হিজরী।
(২১) আল মু’জামুছ ছগীর লিত তাবরানী।
জন্ম- ২৬০ হিজরী, ওফাত- ৩৬০ হিজরী।
(২২) আল মু’জামুল আওসাত লিত ত্বাবরানী।
জন্ম- ২৬০ হিজরী, ওফাত- ৩৬০ হিজরী।
(২৩) আল মু’জামুল কবীর লিত তাবরানী।
জন্ম- ২৬০ হিজরী, ওফাত- ৩৬০ হিজরী।
(২৪) আল মুস্তাদরাক আলাছ ছহীহাইন।
জন্ম- ৩২১ হিজরী, ওফাত- ৪৫০ হিজরী।
(২৫) ছহীহ ইবনু খুযাইমাহ।
জন্ম- ২২৩ হিজরী, ওফাত- ৩১১ হিজরী।
(২৬) আস সুনানুল কুবরা লিল বাইহাক্বী।
জন্ম- ৩৮৪ হিজরী, ওফাত- ৪৫৮ হিজরী।
(২৭) আস সুনানুছ ছগীর লিল বাইহাক্বী।
জন্ম- ৩৮৪ হিজরী, ওফাত- ৪৫৮ হিজরী।
(২৮) শুয়াইবুল ঈমান লিল বাইহাক্বী।
জন্ম- ৩৮৪ হিজরী, ওফাত- ৪৫৮ হিজরী।
(২৯) মা’রিফাতুস সুনান ওয়াল আছার লিল বাইহাক্বী।
জন্ম- ৩৮৪ হিজরী, ওফাত- ৩৫৮ হিজরী।
(৩০) শরহুস সুন্নাহ লিল বাগবী।
জন্ম- ৪৩৬ হিজরী, ওফাত- ৫১৬ হিজরী।
(৩১) মা’রিফাতুছ ছাহাবা লি আবী নুয়াইম।
জন্ম- ৩৩৬ হিজরী, ৪৩০ হিজরী।
(৩২) জামিউল আহাদীস লিছ সূয়ুতি।
জন্ম- ৮৪৯ হিজরী, ওফাত- ৯১১ হিজরী।
(৩৩) গায়াতুল মাক্বছাদ ফী যাওয়ায়িদিল মুসনাদ।
জন্ম- ৭৩৫, ওফাত- ৮০৭ হিজরী।
(৩৪) কানযুল উম্মাল।
জন্ম-_____ , ওফাত- ৯৭৫ হিজরী।
(৩৫) আখবারু মক্কতা লি আযরাক্বী।
(৩৬) ছহীহ ইবনে ওয়ায়না।
(৩৭) সহীহ ইবনুস সাকান।
(৩৮) সহীহ মোন্তাকা।
(৩৯) মুখতাসা রেজিয়াহ।
(৪০) সহীহ যুরকানী।
(৪১) সহীহ ইসফেহানী।
(৪২) সহীহ ইসমাঈলী।
(৪৩) কিতাবুল খেরাজ।
(৪৪) কিতাবুল হেজাজ।
(৪৫) কিতাবুল আ’মলী।
(৪৬) মুসনাদে শাফেয়ী।
(৪৭) মুসনাদে আবু ইয়ালা।
(৪৮) মুসনাদে দারে কুতনী।
(৪৯) কিতাবুল ই’তিকাদ।
(৫০) কিতাবুদ দোয়া।
(৫১) মুসনাদে হারেস ইবনে উমামা।
(৫২) মুসনাদে বাজ্জার।
(৫৩) সুনানে সাঈদ ইবনে মনছুর।
(৫৪) সুনানে আবী মুসলিম।
(৫৫) শিফা শরীফ।
(৫৬) আল হুলইয়া।
(৫৭) তাহযীবুল আছার।
(৫৮) আল মুখতারা।
(আল্লাহ ওনাদের ঊপর রহমত নাজিল করুন)
এছাড়াও আরো অসংখ্য অগনিত সহীহ হাদীস শরীফের কিতাব রয়েছে। সুবহানাল্লাহ্!
মুলত হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুনিয়াতে তাশরীফ মুবারক হতে শুরু করে বিছাল শরীফ পর্যন্ত অর্থাৎ ৬৩ বছর পর্যন্ত যত কথা, কাজ, সম্মতি প্রকাশ করেছেন সবই পবিত্র হাদীস শরীফের অন্তর্গত।
কিন্তু উছুল অনুযায়ী যদি ৪০ বছর মুবারক থেকে ৬৩ বছর মুবারক পর্যন্ত ২৩ বছরও যদি ধরি, এই ২৩ বছরে যত কথা, কাজ, সম্মতি প্রদান করেছেন সবই হাদীস শরীফ।
অংক করে দেখুন,
২৩×৩৬৫= ৮৩৯৫ দিন।
আবার, ৮৩৯৫×২৪= ২০১৪৮০ ঘন্টা।
আবার, ২০১৪৮০×৬০= ১২০৮৮৮০০ মিনিট।
তার মধ্যে রাসুল (সা) এর ঘুম, চলা-ফেরা, কাজ-কর্ম, উঠা-বসা, মনোসম্মতি, সাহাবায়ে কেরাম এর বর্নিত হাদিস নিয়ে কত লক্ষ হাদিস ছিল বলা বাহুল্য তা আল্লাহই ভাল জানেন।
পরিশেষে, ওহাবী সালাফী ভ্রান্ত- মুর্খদের মতবাদের হাত থেকে আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুন।