জিজ্ঞাসাঃ- অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে গেলে তারা সিকিউরিটি হিসাবে মর্টগেজ রাখে। যেমন, জমির দলিল ইত্যাদি। এটা শরিয়তের দৃষ্টিতে জায়েয আছে কিনা?
জবাব:
এক. কাউকে ঋণ দিলে ঋণ আদায়ের নিশ্চয়তা স্বরূপ মর্টগেজ (বন্ধক) নেয়া শরিয়তের দৃষ্টিতে জায়েয। কেননা,আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَإِن كُنتُمْ عَلَى سَفَرٍ وَلَمْ تَجِدُواْ كَاتِبًا فَرِهَانٌ مَّقْبُوضَةٌ
আর তোমরা যদি সফরে থাক এবং কোন লেখক না পাও তবে বন্ধকী বন্তু হস্তগত রাখা উচিত।
(সূরা বাকারা ২৮৩)
উক্ত আয়াতে ঋণের গ্যারান্টি স্বরূপ বন্ধক নেয়ার কথা বলা হয়েছে। আয়াতে সফরের কথা উল্লেখ করা হলেও শুধু সফর নির্দিষ্ট করা উদ্দেশ্য নয়। সফর ব্যতীত অন্য অবস্থায়ও বন্ধক নেয়া বৈধ। যেমন তাফসিরে সা’দীতে বলা হয়েছে,
لما كان المقصود بالرهن التوثق جاز حضراً وسفراً
যেহেতু বন্ধক দ্বারা উদ্দেশ্য, নিশ্চয়তা। সুতরাং সফরে থাকা অবস্থায় ও না থাকা অবস্থায় এটি জায়েয।
(তাফসিরে সা’দী ১/১১৯)
দুই. তবে বন্ধককৃত বস্তু থেকে বন্ধকগ্রহীতা উপকৃত হলে ঋণ দিয়ে উপকার গ্রহণ করা হয় বিধায় বন্ধককৃত বস্তু থেকে উপকার হাসিল করা জায়েয নয়। কেননা, এটা রিবা নাসিয়্যাহ তথা সুদী লেনদেনের অন্তর্ভুক্ত। যা সুস্পষ্ট হারাম। এর দলিল হল, মুহাম্মাদ ইবনে সিরিন রহ. থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন,
اسْتَقْرَضَ رَجُلٌ مِنْ رَجُلٍ خَمْسَمِائَةِ دِينَارٍ عَلَى أَنْ يُفْقِرَهُ ظَهْرَ فَرَسِهِ فَقَالَ ابْنُ مَسْعُودٍ : مَا أَصَبْتَ مِنْ ظَهْرِ فَرَسِهِ فَهُوَ رِبًا
এক লোক আরেক লোক থেকে পাঁচ শত দীনার ঋণ নিয়েছে এই মর্মে যে, সে তার কাছ থেকে একটি ঘোড়া বন্ধক নিয়ে তাতে সে আরহণ করবে। তখন আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযি. ওই ব্যক্তিকে বললেন, তুমি তার ঘোড়ার পিঠ থেকে (আরোহণ করে) যে উপকৃত হয়েছ তা সুদের অন্তর্ভুক্ত।
(মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ১৪১৭৫)
والله اعلم بالصواب