তাজিম ও মুহাব্বতের সাথে পাঠকৃত দুরূদ থেকে ফেরেশতার সৃষ্টি
❏ হাদিস ১:
ইবনে বাশকুয়াল (رحمة الله) হযরত আনাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনাকারী, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ ফরমান,
من صلى على تعظيما الحقى خلق الله عزوجل من ذالك القوم
ملکاله جناح بالمشرق وآخر بالمغرب يقول عزو جل له صل على عبدی کما صلی علی نبي فهو يصلي عليه الى يوم القيامة
অর্থাৎ, যে আমার উপর আমার হকের তাজিম ও সম্মানের উদ্দেশ্যে দুরূদ পেশ করে, আল্লাহ তায়ালা ঐ দুরূদ থেকে একজন ফেরেস্তা সৃষ্টি করেন, যার একটি ডানা পূর্ব দিকে, আর একটি ডানা পশ্চিম দিকে বিস্তৃত। আল্লাহ তায়ালা তাকে বলেন, দুরূদ প্রেরণ করাে আমার বান্দার উপর, যেভাবে সে আমার নবীর উপর দুরূদ প্রেরণ করেছে। ঐ ফেরেস্তা কিয়ামত পর্যন্ত তার উপর দুরূদ প্রেরণ করতে থাকবেন।
তথ্যসূত্রঃ
১. এ রেওয়ায়েত ইবনে সাবা এবং ফাকেহানীও বর্ণনা করেন।
২. আ'লা হযরতঃ ফেরেশতা সৃষ্টির ইতিবৃত্ত কিতাবে বর্ণনা করেন।
বিরাটকার ফেরেশতার ঝাড়া দেয়া ডানা থেকে পরা প্রতিটি ফোঁটা থেকে ১জন ফেরেশতার সৃজন
❏ হাদিস ২:
ইমাম সাখাবী (رحمة الله) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ ফরমান,
"আল্লাহর একজন ফেরেস্তা রয়েছেন যার একটি বাহু পূর্বপ্রান্তে, আরেকটি বাহু পশ্চিম প্রান্তে। যখন কোন ব্যক্তি আমার প্রতি ভালােবাসা ও মুহাব্বতের সাথে দুরূদ পাঠ করে ঐ ফেরেস্তা পানিতে ডুব দিয়ে স্বীয় ডানা ঝাড়া দেয়। আল্লাহ তায়ালা তার ডানা থেকে ঝরে পরা প্রত্যেক পানির বিন্দু ও ফোঁটা থেকে একেকজন ফেরেস্তা সৃষ্টি করেন, যারা কিয়ামত পর্যন্ত দুরূদ প্রেরণকারীদের উপর ইস্তেগফার এবং ক্ষমা প্রার্থনা করে থাকেন।
তথ্যসূত্রঃ
১. আ'লা হযরতের সম্মানিত পিতাঃ ‘আল কালামুল আওদাহ্ ফী তাফসীরে আলাম নাশরাহ' গ্রন্থে ইমাম সাখাবী (رحمة الله) থেকে।
২. আ'লা হযরতঃ ফেরেশতা সৃষ্টির ইতিবৃত্ত কিতাবে বর্ণনা করেন।
৩. ইমাম কাস্তালানী (رحمة الله)'র "আল মাওয়াহেবুল লাদুন্নিয়া" কিতাবে রয়েছে,
قدروی آن ثم ملائكة يسبحون فيخلق الله بكل تسبيحة ملكا
অর্থাৎ, কথিত আছে যে, ওখানে কতেক ফেরেস্তা রয়েছে, যারা আল্লাহর তাসবীহ পাঠ করেন, আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক তাসবীহ থেকে একেকজন ফেরেস্তা সৃষ্টি করেন।
৭০ হাজার ডানা বিশিষ্ট পাখি সৃজন
❏ হাদিস ৩:
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন, "আল্লাহর প্রতিটি বান্দা আমার উপর দুরূদ শরীফ পাঠ করার সাথে সাথে দুরূদ শরীফটি অতি দ্রুত বেগে পূর্ব পশ্চিম স্থল, ও জলভাগে বের হয়ে পড়বে। এমন কোন জায়গা থাকবে না, যেখানে দুরূদ শরীফ পৌছাবে না, এবং সাথে সাথে এ কথা বলে ভ্রমণ করবে যে আমি হলাম অমুকের সন্তান অমুকের দুরূদ শরীফ, যা সমগ্র সৃষ্টির সেরা হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) এর উপর পঠিত। অত:পর সৃষ্টি জগতের সবাই প্রিয় নবীর উপর দুরূদ শরীফ পাঠ করবেন। আর আল্লাহ তায়ালা এ দুরূদ শরীফ হতে ৭০ হাজার ডানা বিশিষ্ট একটি পাখি সৃজন করবেন। আর ৭০ হাজারের প্রতিটি ডানায় থাকবে ৭০ হাজার পালক। আর ৭০ হাজারের প্রতি পালকে থাকবে ৭০ হাজার মাথা প্রতিটি ৭০ হাজার মাথায় থাকবে ৭০ হাজার চেহারা। আর প্রতিটি ৭০ হাজার চেহারায় থাকবে ৭০ হাজার মুখমন্ডল। আর ৭০ হাজার মুখমন্ডলের প্রতিটিতে থাকবে ৭০ হাজার জিহ্বা, আর প্রতিটি ৭০ হাজার জিহ্বা দ্বারা আল্লাহর তাসবীহ তথা প্রশংসা করতে থাকবে। এ প্রশংসায় ছাওয়াবসমূহ দুরূদ শরীফ পাঠকারীর আমলনামায় লিখা হবে।
[দালায়েলুল খায়রাত, সোলায়মান যাজুলী (রহঃ), পৃষ্ঠা-12, জিকরে এলাহীঃ ১০০-১০১পৃষ্টা]
সৎ বাক্য, উত্তম বক্তব্যের ফজিলতঃ
▶ সৈয়দী শেখ আকবর (رحمة الله) বলেন,
"সৎ বাক্য, উত্তম বক্তব্য এবং ভালাে কর্ম ফেরেস্তা হয়ে আসমানের পানে সমুন্নত হয়।"
[সৈয়দী শেখ আকবর (رحمة الله) : ফতুহাতে মক্কীয়ার ২৯৭ তম পরিচ্ছেদ, আ'লা হযরতঃ ফেরেশতা সৃষ্টির ইতিবৃত্ত]
▶ ইমাম আব্দুল ওয়াহাব শারানী (رحمة الله) বলেন, আল্লাহ সুব মহানু তায়ালার বাণী,
اليه يصعد الكلم الطيب والعسل الصالح يرفعه
অর্থাৎ, তাঁর দিকে পৌঁছে পবিত্র কালাম আর যে সৎকর্ম রয়েছে তা তাকে উচ্চতর স্থানে অধিষ্ঠিত করে -এর মর্মার্থ এটাই।
[ইমাম আব্দুল ওয়াহাব শারানী (رحمة الله) :‘আল ইয়াওয়াকীত ওয়াল জাওয়াহীর' গ্রন্থের সপ্তদশ অধ্যায়, আ'লা হযরতঃ ফেরেশতা সৃষ্টির ইতিবৃত্ত]
▶ হুজুর (ﷺ) এর উপর দরুদ প্রেরণ কারীর উপর ৭০ হাজার ফেরেশতা দরুদ প্রেরণ করে। (সুররুল কুলুব)