যাকে তাকে ফতোয়া মেরে আহলে সুন্নাত থেকে বহিষ্কার করা অনুচিত।
🖋আব্দুল মোস্তফা রাহিম আল আযহারী
সেদিন ক্লাসে স্ত্রীর মোহর নিয়ে কথা হচ্ছিল। এসময় ইন্দোনেশিয়ার এক ছাত্র প্রফেসরকে যা বলল আমরা শুনেতো পুরোই অবাক। সে বলল,তাদের দেশে এক গ্রামে প্রথা চালু আছে যে, বিয়ের পর ছেলেরা স্ত্রীর বাড়িতে উঠে এবং সন্তানদের বংশ নির্ধারিত হয় স্ত্রীদের মাধ্যমে। এমনকি ছেলে সন্তান জন্ম হলে তারা কোন সম্পদও পায় না, সম্পদের মালিক হয় একমাত্র কন্যা সন্তানরা। মুসলমান হয়েও স্পষ্টই তারা কত্বঈ নসের বিপরীত কাজ করছে। আল্লাহ বলেন- পুরুষেরা নারীদের উপর কর্তৃত্বশীল।(সুরা নিসাঃ আয়াত৩৪)
বিগত ছয় বছরে নানান দেশের নানান কালচার,শত শত মতপ্রার্থক্য আর এমন উদ্ভুত সব ঘটনার সাক্ষী হয়েছি। কিন্তু এত মতভিন্নতার পরেও কাউকে "তুমি বিদাতী" "তুমি মুনাফিক" "তুমি সুন্নি না" এসব কথা বলতে শুনিনি। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিস "উম্মত ৭৩ দলে বিভক্ত হবে" এর ব্যাখ্যায় আমরা যেভাবে সামান্য মতবিরোধেই একে অপরকে নাজাতি ফেরকা (আহলে সুন্নাত) থেকে খারিজ করে ৭২ ফেরকায় অন্তর্ভুক্ত করতে চাই সে হিসেবে শুধু বাংলাদেশেই ৭২ফিরকা পূর্ণ হয়ে যাওয়ার কথা। তাহলে বিশ্বের আর বাদ-বাকী বাতেল ফের্কাগুলোর কি হবে! সারা বিশ্বের হিসেব কষলেতো এর সংখ্যা ৭২হাজারও ছাড়িয়ে যাবে।
কিন্তু আফসোস! কবরে গিয়ে যদি দেখেন আপনার বদ আখলাকির কারনে আপনি যে মুসলমানকে কখনও বিদাতি কখনও পূজারী কখনও মুনাফিক কিংবা কাফের বলে সম্বোধন করেছেন কিন্তু সে আসলে সেই দোষে দোষী ছিল না তখন আপনার অবস্থা কি হবে? সন্দেহের বশবর্তী হয়ে কাউকে কটাক্ষ করা ইসলামে সম্পূর্ন হারাম। আপনার ইচ্ছে হলেই আপনি কাউকে আহলে সুন্নাত থেকে খারিজ করতে পারেন না।
গত ২বছর পূর্বে চেচনিয়ায় বিশ্বের সব বড় বড় আলেমদের উপস্থিতিতে ও সর্ব সিদ্ধান্তক্রমে শাইখুল আজহার ঘোষনা করেন বর্তমানের দায়েশ জঙ্গী গোষ্ঠী তারা আহলে সুন্নাত থেকে খারিজ হয়ে গেছে। কিন্তু এ সিদ্ধান্তে পৌছতে প্রয়োজন হয়েছে দীর্ঘ সময়ের গবেষনা ও সারা বিশ্বের ওলামাদের ঐক্যমত। কিন্তু আমরা যেভাবে ঘরে বসেই একে-অপরকে আহলে সুন্নাত থেকে খারিজ করছি বিশ্বের অন্য কোনও দেশে এর নজির আছে কিনা আমার জানা নেই।
মোদ্দাকথা হল আমাদের উপমহাদেশে আমরা দ্বীনের সঠিক দিক্ষা পেয়েছি খাজা মাঈনউদ্দিন চিশতী (রহ.), শাহ জালাল (রহ.) সহ আউলিয়া সালেহিন ও পীর ফকিরদের মাধ্যমে। তারা কাউকে গালি দিবেতো দূরে থাক একটি ফুলের টোকাও দেয়নি। আমরা যদি তাদের দাওয়াতের মানহাজ গ্রহন না করতে পারলে কি দরকার তাদের নাম বিক্রি করা?