কিয়ামত


❏ কিয়ামত দিবস কি❓ এ সম্পর্কে কি ধরনের ধারণা রাখা আবশ্যক❓

কিয়ামত দিবসের সূচনা হচ্ছে মৃত্যু, প্রত্যেক মৃত নির্ধারিত সময় অনুযায়ী মৃত্যুবরণ করে, যদিও হত্যাকৃত অবস্থায় মৃত্যু হয়। কবরে দুজন ফিরিশতা কর্তৃক প্রশ্ন সম্পর্কে বিশ্বাস রাখা আমাদের ওপর আবশ্যক। তারা (ফিরিশতাদ্বয়) প্রত্যেক মৃত ব্যক্তিকে তার প্রভূ, নবী ও দ্বীন সম্পর্কে প্রশ্ন করবেন; যদিও সে মাছের পেটে কিংবা হিংস্র প্রাণীর উদরেই হোক না কেন- তবে যারা এ বিধানভূক্ত নয় যেমন- নবীগণ ও ফিরিশতাগণ। কবরের আযাব ও নিয়ামত এবং কবরের    


    اَلْوَاجِبُ مَعْرِفَتُهُ مِنَ الْمَلَائِكَةِ تَفْصِيْلًا عَشَرَةٌ وُهُمْ جِبْرَائِيْلُ وَمِيْكَائِيْلُ وَاِسْرَافِيْلُ وَعَزْرَائِيْلُ. وَرِضْوَانٌ خَازِنُ الْجَنَّةِ وَمَالِكُ خَازِنُ النَّارِ وَكَاتِبَا الْاَعْمَالِ رَقِيْبٌ وَعَتِيْدٌ وَسَائِلًا الْقَبْرِ مُنْكَرٌ وَنَكِيْرٌ.


مَا هُوَالْيَوْمُ الْاٰخِرُ، وَمَاالَّذِىْ يَجِبُ اِعْتِقَادُهُ؟

اَلْيَوْمُ الْاٰخِرُ اَوَّلُهُ الْمَوْتُ وَكُلُّ مَيَّتٍ بِاَجَلِه وَلَوْ مَقْتُوْلًا وَيَجِبُ عَلَيْنَا اَنْ نُؤْمِنَ بِسُوْالِ الْمَلَكَيْنِ فِىْ الْقِبْرِ، يَسْأَلَانِ كُلَّ مَيْتٍ عَنْ اِلٰهِهِ وَنَبِيِّه وَدِيْنِه وَلَوْ بِاَجْوَافِ السَّمَكِ اَوْبُطُوْنِ السِّبَاعِ اِلَّا مَنِ اسْتُثْنِىَّ كَالْاَنْبِيَاءِ وَالْمَلَائِكَةِ 


সংকীর্ণতা (কবরের চাপ) সম্পর্কেও বিশ্বাস করা আমাদের আবশ্যক। কিয়ামতের বড় বড় নিদর্শন সমূহের প্রতি বিশ্বাস করাও ওয়াজিব। যেমন- ইমাম মাহদী (عليه السلام) এর আবির্ভাব ও কানা দাজ্জালের বহিঃপ্রকাশ এবং অলৌকিক ঘটনা প্রদর্শন, হযরত ঈসা বিন মরিয়ম (عليه السلام) আসমান থেকে অবতরণ, ইয়াজুজ-মাজুজ বের হওয়া, দাব্বাতুল আরদ নামক চতুষ্পদ জন্তু বের হওয়া যে মানুষের সাথে কথা বলবে,হে অমুক! তুমি জান্নাতী, হে অমুক! তুমি জাহান্নামী। হযরত ঈসা (عليه السلام) এর ইন্তিকালের পর সূর্য পশ্চিম দিকে উদিত হওয়া, আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে বাতাস প্রেরণ- যা সকল ঈমানদারদের আত্মাকে কেড়ে নিবে, অতঃপর মানুষ এ পৃথিবীতে শত বৎসর পর্যন্ত অবস্থান করবে কিন্তু কেউ আল্লাহ তাআলার ইবাদত করবে না।


❏ এরপর কি ঘটবে❓

এরপর আল্লাহ তাআলা হযরত ইস্রাফিল (عليه السلام)কে শিঙ্গায় ফুঁক দেওয়ার নির্দেশ দিবেন। পরপর এতে তিনি দুটি ফুঁক দিবেন; তৃতীয় ফুঁতে সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে তবে যাদেরকে আল্লাহ বহাল রাখতে ইচ্ছা করবেন।


    وَنُؤْمِنَ بِعَذَابِ الْقَبْرِ وَنَعِيْمِه، وَضَمَّةِ الْقَبْرِ، وَنُؤْمِنُ بِاِشْرَاطِ السَّاعَةِ الْكُبْرٰى، كَظُهُوْرِ الْمَهْدِىِّ، وَالْمَسِيْحِ الدَّجَّالِ، وَتَظْهَرُ عَلٰى يَدَيْهِ خَوَارِقُ الْعَادَاتِ وَنُزُوْلُ عِيْسٰى بْنَ مَرْيَمَ عَلَيْهِ السَّلَامِ وَخُرُوْجِ يَأْجُوْجَ وَمَأجُوْجَ وَخُرُوْجَ الدَّابَّةِ تُكَلِّمُ النَّاسَ تَقُوْلُ: يَافُلَانُ اَنْتَ مِنْ اَهْلِ الْجَنَّةِ، يَافُلَانُ اَنْتَ مِنْ اَهْلِ النَّارِ وَطُلُوْعِ الشَّمْسِ مِنْ مَغْرِبِهَا بَعْدَ مَوْتِ سَيِّدِنَا عِيْسٰى عَلَيْهِ السَّلَامَ وَاِرْسَالِ اللهِ رِيْحًا تَقْبِضُ اَرْوَاحَ الْمُؤْمِنِيْنَ وَيَبْقٰى النَّاسُ مِائَةَ سَنَةٍ لَايَعْبُدُوْنَ اللهَ تَعَالٰى.


اَىُّ شَيْئٍ يَحْصُلُ بَعْدَ ذٰلِكَ ؟

بَعْدَ ذٰلِكَ يَأْمُرُ اللهُ تَعَالٰى اِسْرَافِيْلَ أَنْ يَنْفَخَ فِىْ الصُّوْرِ، 


যেমন- মুসা কলিমুল্লাহ, আরশ বহনকারী ফিরিশতা। অতঃপর আল্লাহ তাআলা ফিরিশতাদের জীবনের অবসান ঘটাবেন এবং আটটি জিনিস ব্যতীত সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে। আট বিষয় হলো- আরশ, কুরসি, জান্নাত, দোযখ, লেজের গোড়ালি অংশ (মেরুদন্ডের নীচের অংশ), আত্মাসমূহ, লৌহ ও কলম। অতঃপর  আল্লাহ তাআলা সকল বিচ্ছিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো একত্রিত করে ঠিক সেভাবে যেভাবে মূল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো পূর্বে ছিল আজবুজ জম্ব তথা লেজের গোড়ালি বা মেরুদন্ডের নিম্নাংশের হাঁড় থেকে পুনরায় গঠন করবেন। যেমন- আকাশ থেকে অবতীর্ণ পানি দ্বারা তরিতরকারি এবং শস্যাদি বীজ থেকে উৎপাদন করা হয়। এরপর আরশ বহনকারী ফিরিশতা ও ফিরিশতাদের সর্দারকে জীবিত করবেন। এরপর সকল আত্মাকে শিঙ্গায় একত্রিত করবেন এবং হযরত ইস্রাফিলকে পুনর্জীবনের জন্যে ফুঁ দেয়ার নির্দেশ দিবেন। হযরত ইস্রাফিল এতে পুনর্জীবনের ফুঁ দিবেন এবং সমস্ত রূহগুলো তাদের সংখ্যানুপাতে স্বীয় গর্ত থেকে বের হয়ে আসবে এবং জমিনে স্ব-স্ব শরীরে প্রবেশ করবে। 


    فَيَنْفُخُ فِيْهِ نَفْخَتَيْنِ، وَبِالثَّالِثَةِ يَصْعَقُ بِه كُلُّ شَيْئٍ اِلَّا مَنْ شَاءَ اللهُ. كَمُوْسٰى الْكَلِيْمُ، وَحَمَلَةِ الْعَرْشِ، ثُمَّ يُمِيْتُ اللهُ الْمَلَائِكَةَ وَيَفْنٰى كُلُّ شَيْئٍ اِلَّا ثَمَانِيَةً وَهِىَ الْعَرْشُ وَالْكُرْسِىُّ، وَالْجَنَّةُ، وَالنَّارُ، وَعَجْبُ الْذَّنَبِ، وَالْاَرْوَاحُ وَاللَّوْحُ وَالْقَلَمُ ثُمَّ يُعِيْدُ اللهُ الْاَجْسَامً كَمَا كَانَتِ الْاَجْزَاءُ الْاَصْلِيَّةُ يَجْمَعُهَا بَعْدَ تَفَرُّقِهَا بِاِنْبَاتِهَا كَالْبَقْلِ مِنْ عَجْبِ الذَّنْبِ بِمَاءٍ يُنَزِّلُـهُ مِنَ السَّمَاءِ وَيَحْـىٰ حَمَلَةَ الْعَرْشِ، وَرُؤُسَاءَ الْمَلَائِكَةِ وَيَجْمَعُ الْاَرْوَاحَ فِى الصُّوْرِ وَيَأْمُرُ اِسْرَافِيْلَ فَيَنْفُخُ فِيْه نَفْخَةَ الْبَعَثِ فَتَخْرُجُ الْاَرْوَاحُ مِنْ ثَـقُوْبِ فِيْهِ بَعَدَهَا فَتَـدْخُلُ اَجْسَادَهَا فِىْ الْاَرْضِ ثُمَّ تَنْشَقُّ عَنْهُمْ فَيَخْرُجُوْنَ


অতঃপর জমিন তাদের জন্যে বিদীর্ণ হবে এবং কবর থেকে তারা দ্রুতগতিতে বের হয়ে আসবে। সর্বপ্রথম আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) এর জন্যে জমিন বিদীর্ণ হবে। অতঃপর মানুষদেরকে হাঁকিয়ে অবস্থান স্থলে (হাশরের ময়দান) নিয়ে যাওয়া হবে। যা এ জমিন ব্যতীত অন্য জমিনই হবে। সূর্য তাদের অতি নিকটে হবে। তাই মানুষ তাদের আমল অনুপাতে ঘামের মধ্যে থাকবে। আবার কিছু লোক আরশের ছায়ায় অবস্থান করবে। কিয়ামতের ময়দান অসহনীয় কষ্টের হবে। তাই লোকেরা যথাক্রমে হযরত আদম (عليه السلام), হযরত নূহ (عليه السلام), হযরত ইব্রাহিম (عليه السلام), হযরত মুসা (عليه السلام) ও হযরত ঈসা (عليه السلام) এর কাছে সুপারিশের জন্যে উপস্থিত হবে। তাঁরা সবাই অপারগতা প্রকাশ করবেন। অতঃপর তাঁরা সাইয়্যেদুনা মুহাম্মদ (ﷺ) এর কাছে সুপারিশের জন্যে শরণাপন্ন হবেন। তখন তিনি তদের মহাসংকটাপন্ন বিপদে সুপারিশ করবেন। ইহাই হল মাকামে মাহমুদ (প্রশংসনীয় স্থান)। অতঃপর হিসাব-নিকাশ শুরু হবে। তবে যাদের জন্যে অকাট্য দলীল রয়েছে তাঁরা হিসাব-নিকাশের ঊর্ধ্বে থাকবেন। 


    مِنَ الْاَجْدَاثِ اَىْ اَلْقُبُوْرِ سَـرَاعًا وَاَوَّلُ مَنْ تَنْشَقُّ عَنْهُ الْاَرْضُ نَبِيُّنَا مُحَمَّدٌ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثُمَّ يُسَاقُ النَّاسُ اِلٰى الْمَوْقِفِ فِىْ اَرْضِ غَيْرِ هٰذِهِ الْاَرْضِ وَتَدْنُوْ الشَّمْسُ مِنْهُمْ، فَيَكُوْنُ النَّاسُ عَلٰى قَدْرِ اَعْمَالِهِمْ فِىْ الْعَرَقِ وَمِنْهُمْ مَنْ يَّكُوْنَ فِىْ ظِلِّ الْعَرْشِ، وَيَشْتَدُّ الْكُرْبُ فِى الْمَوْقِفِ فِيَسْتَشْفِعُ النَّاسُ بِاٰدَمَ، فَنُوْحِ، فَاِبْرَاهِيْمَ، فَمُـوْسٰـى ، فَعِيْسٰى .

فَيَعْتَذَرُوْنَ اِلَيْهِمْ، فَيَسْتَشْفِعُوْنَ بِسَيِّدِنَا مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ تَعَالٰى عَلَيْهِ وَسَلَّمَ . فَيَشْفَعُ لَهُمْ فِـىْ فَصْلِ الْقَضَاءِ وَهُوَ الْمَقَامُ الْمَحْمُوْدُ ثُمَّ يُحَاسَبُوْنَ اِلَّا مَنْ وَرَدَ النَّصُّ بِاِسْتِثْنَائِهِمْ، وَيَدْخُلُ الْجَنَّةَ مِنْ اُمَّةِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ تَعَالٰى عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَلْقٌ كَثِيْرٌ بِغَيْرِ


নবী করিম (ﷺ) এর উম্মত থেকে অনেক লোক বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবেন। অতঃপর তাদের আমল সমূহ পরিমাপকের মাধ্যমে পরিমাণ করা হবে। তবে যাঁরা এ হুকুমের ঊর্ধ্বে তাদের আমলগুলো পরিমাণ করা হবে না। অতঃপর বান্দারা আমলনামা হাতে পাবে। হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) এর উম্মতগণ হাউসে কাউসারে অবতরণ করবেন। যার পানি দুধের চেয়েও সাদা এবং মধুর চেয়েও অধিকতর মিষ্টি। যে ব্যক্তি এখান থেকে পান করবে সে পরে কখনো তৃষ্ণার্থ হবে না। অতঃপর তারা পুলসিরাত অতিক্রম করবে। উহা জাহান্নামের ওপর সুদীর্ঘ সরু সেতু যার প্রারম্ভ হাশরের ময়দান ও শেষাংশ জান্নাতের প্রবেশ পথ। সর্বপ্রথম পুলসিরাত অতিক্রম করবেন সাইয়্যেদুনা মুহাম্মদ (ﷺ) ও তাঁর উম্মতগণ। অতঃপর পর্যায়ক্রমে হযরত ঈসা (عليه السلام) ও তাঁর উম্মতগণ, হযরত মুসা (عليه السلام) ও তাঁর উম্মতগণ, অন্যান্য নবীগণ ও তাঁদের উম্মতগণ পুলসিরাত অতিক্রম করবেন। অত:পর হয়ত তারা প্রত্যাবর্তন করবে সুউচ্চ মর্যাদাবান জান্নাতে যার ফলরাজি অবনমিত থাকবে অথবা অতি উত্তপ্ত জাহান্নামের কঠিন আগুনে! স্বর্গ-নরক উভয়ই বর্তমানে বিদ্যমান আছে।    


    حِسَابٍ، ثُمَّ تُوْزَنُ اَعْمَالُهُمْ بِالْمِيْزَانِ اِلَّا مَنِ اسْتُثْنِـىَ . ثُمَّ  تَأْخُذُ الْعِبَادُ الصُّحُفَ وَتَرِدُ اُمَّةُ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ تَعَالٰى عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَوْضَهُ الشَّرِيْفَ مَاؤُهُ اَبْيَضُ مِنَ الْلَّبْنِ وَاَحْلٰى مِنَ الْعَسْلِ مَنْ شَرِبَ مِنْهُ لَا يَظْمَأُ بَعْدَهُ اَبَدًا، ثُمَّ بَعْدَ ذٰلِكَ يَمُرُّوْنَ عَلٰى الصِّرَاطِ، وَهُوَ جَسْرٌ مَمْدُوْدُ عَلٰى مَتْنِ جَهَنَّمَ، اَوَّلُهُ مِنَ الْمَوْقِفِ وَاٰخِرُهُ عَلٰى بَابِ الْجَنَّـةِ، وَاَوَّلُ مَنْ يَمُرُّ عَلٰى الصِّرَاطِ سَيِّدُنَا مُحَمَّدٌ صَلَّى اللهُ  تَعَالٰى عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَاُمَّتُهُ ثُمَّ عِيْسٰى وَاُمَّتُهُ ثُمَّ عِيْسٰى وَاُمَّتُهُ ثُمَّ مُوْسٰى  وَاُمَّتُهُ، ثُمَّ بَاقِىُ الْاَنْبِيَاءِ وَاُمَمُهُمْ ثُمَّ بَعْدَ ذٰلِكَ الْمَصِيْرُ اِمَّا اِلٰى جَنَّةٍ عَالِيَةٍ قُطُوْفُهَا دَانِيَّةٌ ، وَاِمَّا اِلٰى نَارٍ حَامِيَّةٍ، وَالْجَنَّةُ وَالنَّـارُ، مَوْجُوْدَتَانِ اَلْاٰنَ .


❏ পূর্বোলিখিত বিষয়াদি ব্যতীত অত্যাবশ্যকীয় আর কিছু বিষয় আছে কি❓

হ্যাঁ! অবশ্যই আছে। নবী করীম (ﷺ) এর পক্ষ থেকে যে সমস্ত বিষয়াদি আমাদের কাছে পৌঁছেছে, যা সর্বসাধারণের নিকট প্রসিদ্ধি লাভ করেছে ঐসব বিষয়াদির প্রতি বিশ্বাস রাখা আবশ্যক। যেমন- নবী করীম (ﷺ) ইসরা ও মিরাজ শরীফে জাগ্রত অবস্থায় গমনাগমন করেন এবং শহীদদের জীবিত থাকা, যারা আল্লাহ তাআলার দ্বীন প্রতিষ্ঠায় কাফিরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে শাহাদত বরণ করেন, এমনকি তারা পানাহার ও জান্নাতে আমোদ-ফুর্তি করছেন। আমাদের ওপর ফয়সালা ও তাকদীর সম্পর্কে দৃঢ় বিশ্বাস রাখা ওয়াজিব-তা হল আল্লাহ তাআলা সৃষ্টি জগত সৃষ্টি করার পূর্বে ভাল-মন্দ সৃষ্টি করেছেন এবং সমগ্র সৃষ্টি তারই ফয়সালা মোতাবেক নির্ধারণ অনুযায়ী এবং প্রতিটি ভাল-মন্দ বিষয়াদি তারই পক্ষ হতে, তিনি মহানত্বের অধিকারী প্রত্যেক কিছুর সৃষ্টিকর্তা। তবে আদব হচ্ছে ভাল বিষয়গুলোর সম্পর্ক আল্লাহ তাআলার প্রতি করা এবং মন্দগুলোর সম্পর্ক অবাধ্য আত্মা বা বিতাড়িত শয়তানের প্রতি করা। তাও আবার সৃষ্টি হিসেবে নয় বরং বিপথগামী করার নিমিত্তে।


  هَلْ يَجِبُ شَيْئٌ غَيْرُ مَا تَقَـدَّمَ ؟

نَعَمْ . يَجِبُ الْاِيْمَانُ بِكُلِّ مَاوَرَدَ عَنِ النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ كُلِّ حُكْمٍ صَارَ مُشْتَهِرًا بَيْنَ الْعَامَّةِ كَالْاِسْرَاءِ وَالْمِعْرَاجِ بِجَسَدِهِ الشَّـرِيْفِ فِـى الْيَقْظَةِ وَكَحَيَاةِ الشُّهَدَاءِ، وَهُمْ مَنْ قُتِلُوْا فِىْ جِهَادِ الْكُفَّارِ لِأِعْلَاءِ كَلِمَةِ اللهِ تَعَالٰى حَتّٰى اِنَّهُمْ يَأْكُلُوْنَ وَيَشْرَبُوْنَ وَيَتَمَتَّعُوْنَ فِى الْجَنَّةِ، وَيَجِبُ عَلَيْنَا الْاِيْمَانَ بِالْقَضَاءِ وَالْقَدْرِ وَهُوَ اَنْ نَعْتَقِدَ اَنَّ اللهَ تَعَالٰى قَدَّرَ الْخَيْرَ وَالشَّرَّ قَبْلَ خَلْقِ الْخَلْقِ وَاَنَّ جَمِيْعَ الْكَائِنَاتِ بِقَضَاءِ اللهِ وَقَدَرِهِ . وَخَيْرَالْاُمُوْرِ وَشَرَّهَا مِنْهُ تَعَالٰى جَلَّ شَاْنُهُ، فَهُوَ الْمُوْجِدُ لِكُلِّ شَيْئٍ . اِنَّمَا الْاَدَبُ نِسْبَةُ الْخَيْرِ لِلّٰهِ عَزَّ وَجَلَّ وَنِسْبَةُ الشَّرِّ اِلَى النَّفْسِ الْاَمَّارَةِ اَوِ الشَّيْطَانِ الْمَرْدُوْدِ لَا عَلٰى سَبِيْلِ الْاِيْجَادِ بَلِ الْاِغْوَاءِ .


❏ উপরোলিখিত বিষয়াদি সম্পর্কে ঈমান আনয়ন করা কেবলমাত্র মাদ্রাসা ছাত্র ও শিক্ষিত সমাজের ওপর ওয়াজিব ❓


উপরোলিখিত বিষয়াদির ওপর ঈমান আনয়ন সমগ্র মুসলমান নর-নারীর জন্যে অত্যাবশ্যকীয়, অন্যথায় তাদের ঈমান পরিপূর্ণ হবে না।


❏ পূর্ববর্তী বিষয়াদির ওপর আত্ম বিশ্বাস রাখার উপকারিতা কি❓

যে সকল লোকেরা উপরোলিখিত বিষয়াদির ওপর বিশ্বাস স্থাপন করবে এবং উহার মহত্ত্ব ও গুরুত্ব সম্পর্কে অবগত হবে তারাই ইহ ও পরকালে সৌভাগ্যবান হবে এবং আল্লাহ তাআলা তাদের জন্যে পূণ্যবান ও সফলকাম হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করবে। মহান আল্লাহর দরবারে আমাদের প্রার্থনা, হে আল্লাহ! আমাদের শেষ অবস্থায় আমাদের সর্দার, নবুয়তের যুগ সমাপনকারী নবীকুলের সম্রাট হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) এর সম্মানের খাতিরে ঈমানের সাথে মৃত্যুবরণ করার তাওফীক দান করুন। সমস্ত


  هَلْ اِعْتِقَادُ مَاتَقَدَّمَ وَاجِبٌ عَلٰى تَلَامِذَةِ الْمَدَارِسِ وَالْمَكَاتِبِ فَقَطْ؟

اِعْتِقَادُ مَاتَقَدَّمَ وَاجِبٌ عَلٰى جَمِيْعِ الْمُسْلِمِيْنَ وَالْمُسْلِمَاتِ وَمَنْ لَمْ يَعْتَقِدْ مَا تَقَّدَمَ كَانَ اِيْمَانُهُ نَاقِصًا .


اَىُّ شَيْئٍ يَتَـرَتَّبُ عَلٰى اِعْتِقَادِمَا تَقَدَّمَ؟ 

مَنْ اِعْتَقَدَ مَا تَقَدَّمَا وَعَرَفَ مَعْنَاهُ كَانَ سَعِيْدُ الدُّنْيَا وَالْاٰخِرَةِ وَخَتَمَ لَـهُ اللهُ بِالسَّعَادَةٍ نَسْأَلُكَ اَللّٰهُمَّ حُسْنَ الْخِتَامِ بِجَاهِ سَيِّدِنَا مُحَمَّدٍ خَاتِمِ الرُّسُلِ الْكِرَامِ وَالْحَمْدُ الِلّٰهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ وَصَلَّى اللهُ عَلٰى سَيِّدِنَا مُحَمَّدٍ كُلَّمَا ذَكَرَهُ


প্রশংসা সমগ্র জাহানের পালনকর্তা আল্লাহর জন্যে এবং সাইয়্যেদুনা হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) এর ওপর আল্লাহ রহমত বর্ষণ করেন,স্মরণকারীগণ যখনই স্মরণ করেন ও অলসগণ যখনই অলসতা ও অবহেলা করে। 

হে আল্লাহ! আমাদেরকে নবী ও রাসূলগণের সম্রাটের শাফায়াত নসিব করুন এবং তোমারই সুন্দর নামসমূহের ফুয়ুজাত ও বরকতের ধারা প্রবাহিত করুন। হে আমাদের প্রতিপালক! হে আমাদের মাওলা! আমিন!


  الذَّاكِرُوْنَ وَغَفَلَ عَنْ ذِكْرِهِ الْغَافِلُوْنَ .

اَللّٰهُمَّ ارْزُقْنَا شَفَاعَةَ سِيِّدَالْاَنْبِيَاءِ وَالْمُرْسَلِيْنَ، وَاَفِضْ عَلَيْنَا مِنْ فِيُوْضٍ بِاَسْمَائِكَ الْحُسْنٰى يَا رَبَّـنَا يَا مَوْلَانَا .




সমাপ্ত


Top