রাসূলে করিম (ﷺ) এর স্বভাব সম্পর্কে বর্ণনা
রাসূলে করিম (ﷺ) সুগন্ধি পছন্দ করতেন এবং তা কখনো প্রত্যাখান করতেন না। তিনি দুর্গন্ধ পছন্দ করতেন না। প্রতিটি চোখে তিনবার করে সুরমা ব্যবহার করতেন। ক্রয়-বিক্রয় করতেন। কোন কিছু ভাড়া দিতেন ও ভাড়ায় নিতেন, ইহাই অধিক করেছেন। তিনি নবুয়ত প্রাপ্তির পূর্বে পারিশ্রমিকের বিনিময়ে গৃহপালিত পশু চরানো ও ব্যবসার দায়িত্ব পালন করেছিলেন। শরিকানা ব্যবসা করেছেন, উকিল নিযুক্ত করেছেন ও উকিল নিযুক্ত হয়েছেন। উপঢৌকন দিয়েছেন এবং উপঢৌকন গ্রহণও করেছেন। ঋণ নিয়েছেন, সুপারিশ করেছেন এবং সুপারিশের আবেদন গ্রহণ করেছেন।
لَهُ قَالَ اللهُ تَعَالٰى يَسْعٰى نُوْرَهُمْ بَيْنَ اَيْدِيْهِمْ وَبِاَيْمَانِهِمْ وَدَاعِيًا اِلٰى اللهِ بِاِذْنِه وَسِرَاجًا مُّنِيْرًا وَلَا يَقَعُ عَلَيْهِ الذُّبَابُ وَغَيْرَ ذٰلِكَ .
اُذْكُرْ لَـنَا شَيْئًا مِنْ اَحْوَالِه صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ؟
كَانَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُحِبُّ الطِّيْبَ وَلَا يَرُدُّهُ، وَيَكْرَهُ الْرَّائِحَةَ الْكَرِيْهَةَ وَكَانَ يَكْتَحِلُ فِىْ كُلِّ عَيْنٍ ثَلَاثًا، وَبَاعَ وَاِشْتَرٰى، وَاَجَرَ وَاِسْتَاجَرَ وَهُوَ الْاَغْلَبُ، وَاَجَرَ نَفْسَهُ قَبْلَ النَّبُوَّةِ لِلرَّعِى وَالتِّجَارَةِ وَشَارَكَ وَوَكَّلَ، وَتَـوَكَّلَ، وَوَهَبَ، وَوُهِبَ لَهُ، وَاسْتَعَارَ وَتَشَفَّعَ وَتُشَفَّعَ اِلَيْهِ وَضَافَ
আতিথিয়তা গ্রহণ করেছেন, নিজেও অতিথি হয়েছেন। তিনি নিজে চিকিৎসা করেছেন ও অপরকে চিকিৎসাও করায়েছেন। বেশী খাবার থেকে ভয় প্রদর্শন করেছেন। শেষ জীবনে পরিবার-পরিজনের জন্য এক বছরের খাবার জমা রেখেছেন। তাঁর অতি প্রিয় আমল ছিল যা সর্বদা ও সহজে করা হয়- যদিও তা স্বল্প হয়। তিনি রাত্রে জাগ্রত থেকে ইবাদতে মগ্ন থাকতেন, ফলে তাঁর পবিত্র কদমদ্বয় ফুলে যেত। তাই একদা আয়শা ছিদ্দিকা (رضي الله عنه) আরয করলেন, ‘আপনি এত কষ্ট কেন করছেন❓ অথচ আল্লাহ তা‘আলা আপনাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন।’ উত্তরে তিনি বললেন, ‘আমি কি কৃতজ্ঞ বান্দা হব না❓’ তিনি ছদকা প্রত্যাখ্যান করতেন, উপঢৌকন গ্রহণ করতেন। তিনি অধিকাংশ সময় দো‘আ করতেন, ‘হে আল্লাহ! হে আত্মার পরিবর্তনকারী! আমার আত্মাকে আপনার দ্বীনের ওপর অটল ও মজবুত রাখুন।’
ইমাম বুখারী (رحمة الله) বলেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের জন্য তোমাদের শিষ্টাচার বন্টন করে দিয়েছেন যেমন তোমাদের রিযিক বন্টন করেছেন।’ নবী করিম (ﷺ) এর শিষ্টাচার অতীব পবিত্র, সুন্দর ও পরিপূর্ণ ছিল এবং তাঁর সিরত বা স্বভাব অত্যধিক শরীফ, মর্যাদাবান, মনোরম ও মনোনীত ছিল। নিশ্চয় তিনি তৎকালীন বন্য
وَاُضِيْفَ، وَدَاوَى وَتَــدَاوَى وَحَذَّرَ مِنَ التُّخْمَةِ اَىْ كَثْرَةِ الْاَكْلِ وَكَانَ اٰخَرَ عُمْرِه يَدَّخِرُ قُوْتَ سَنَةٍ لِاَهْلِهِ، وَكَانَ اَحَبُّ الْعَمَلِ اِلَيْهِ اَدْوَمَهُ وَاَيْسَرَهُ وَاِنْ قَلَّ، وَكَانَ يَقُوْمُ مِنَ اللَّيْلِ حَتّٰى تَتَفَطَّرَ قَدْمَاهُ فَتَقُوْلُ عَائِشَةُ أَتَتَكَلَّفَ هٰذَا وَقَدْ غُفِرَ اللهُ لَكَ؟ فَيَقُوْلُ اَفَـلَا اَكُوْنُ عَبْدًا شَكُوْرًا وَكَانَ يَرُدُّ الصَّدْقَةَ وَيَقْبَلُ الْهَدِيَّةَ وَكَانَ اَكْثَرُ دُعَائِه اَللّٰهُمَّ يَامُقِلَّبَ الْقُلُوْبِ ثَبِّتْ قَلْبِىْ عَلٰى دِيْنِكَ .
هٰذَا وَقَدْ قَالَ الْبُخَارِىُّ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ اَنَّ اللهَ قَسَّمَ لَكُمْ اَخْلَاقَكُمْ كَمَا قَسَّمَ اَرْزَاقَكُمْ . فَكَانَ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ تَعَالٰى عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
পশু তুল্য নিকৃষ্ট আরব জাতির মধ্যে উৎকৃষ্ট স্বভাবগুলো একত্রিত করেছিলেন এবং এমন ঘৃণিত, মানবতার সাথে দূরত্বের সম্পর্কিত স্বভাবের নিকৃষ্ট জাতিকে পরিবর্তন করে এতে ধৈর্য্যধারণ করার মত গুণে গুণান্বিত করে গড়ে তুলেছিলেন। এমনকি তারা তাদের সম্প্রদায়ের যারা নবীর বিপক্ষে ছিলেন তাদের বিপক্ষে যুদ্ধ করেছেন এবং নবীর সন্তুষ্টির জন্যে স্বীয় মাতৃভূমি ত্যাগ করে অন্যত্র হিজরত করেছেন। অথচ নবী করিম (ﷺ) উম্মি (কারো কাছে শিক্ষা অর্জন করেননি) ছিলেন। পিতৃ মাতৃহীন, অসহায় এতিম অবস্থায় অশিক্ষিত বর্বর জাতির মাঝে লালিত পালিত হয়েছেন। তাই আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে সর্বোচ্চ পর্যায়ের শিষ্টাচারের শিক্ষা দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে স্বয়ং নবী (ﷺ) বলেন, ‘আমার প্রভূ আমাকে শিষ্টাচার শিক্ষা দিয়েছেন তাইত আমার শিষ্টাচার কতই না সুন্দর হয়েছে!’