রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর জীবন চরিত সংক্ষিপ্তাকারে বর্ণনা কর।
নবী করিম (ﷺ) পবিত্র মক্কা নগরীতে জন্ম গ্রহণ করেন। সা’দ গোত্রের হযরত হালিমা সাদিয়া (رضي الله عنه) তাঁকে দুধ পান করান এবং তাঁর কাছে তিনি চার বছর অবস্থান করেন। অত:পর তিনি তাঁর মাতা আমিনার (رضي الله عنه) নিকট তাঁকে ফিরিয়ে দেন।
مَا مَعْنٰى لَاِلٰهَ اِلَّا اللهُ ؟
مَعْنٰى لَا اِلٰهَ اِلَّا اللهُ لَا مَعْبُوْدَ بِحَقٍّ اِلَّا اللهُ خَالِقُ كُلِّ شَيْئٍ وَهُوَ الْغَنِـىُّ عَنْ كُلِّ شَيْئٍ وَكُلُّ شَيْئٍ مُحْتَاجٌ اِلَيْهِ .
مَا مَعْنٰى مُحَمَّدُ رَّسُوْلُ اللهِ ؟
مَعْنٰى مُحَمَّدُ رَّسُوْلُ اللهِ اَنَّهُ اِنْسَانٌ كَامِلٌ الْخَلْقِ وَالْخُلُقِ مُرْسَلٌ لِلْخَلْقِ كُلِّهِمْ بِشَرْعٍ نَاسِخٍ لِجَمِيْعِ الْشَرَائِعِ فَـلَا نَبِىَّ بَعْدَهُ اَبَدًا .
اُذْكُرْلَنَا سِيْرَةَ النَّبِىِّ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُجْمَلَةً ؟
وَلِدَ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِمَكَّةَ الْمُكَرَّمَةِ وَرَضَعَ فِىْ بَنِىْ سَعْدٍ اَرْضَعَتْهُ حَلِيْمَةُ السَّعْدِيَّةُ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهَا وَمَكَثَ عِنْدَهَا اَرْبَعَةَ اَعْوَامٍ ثُمَّ رَدَّتْهُ اِلٰى
অত:পর তাঁর মাতার ইন্তিকাল পর্যন্ত তিনি তার মায়ের তত্ত্বাবধানে লালিত-পালিত হন। তখন তাঁর বয়স ছিল ছয় বছর। এরপর তাঁর দাদা আবদুল মোত্তালিব তাঁর লালন-পালনের ভার গ্রহণ করেন। তিনি প্রায়ই বলতেন, “নিশ্চয় আমার এ সন্তান এক সময় বড় মর্যাদার অধিকারী হবেন। তাঁর বয়স আট বছর হলে তাঁর দাদাও মারা যান। অত:পর তাঁর চাচা আবু তালেব তাঁর লালন-পালনের দায়িত্ব নেন। তিনি তাঁকে অত্যন্ত সুন্দরভাবে লালন-পালন করেন এবং তাঁকে অত্যন্ত ভালবাসতেন। এমনকি ঘুমানোর সময় তাঁকে সাথে না নিয়ে ঘুমাতেন না। কোথাও গেলে তাঁকে সাথে নিয়েই যেতেন। তিনি চাচার নিকট স্বল্পে তুষ্টির প্রবাদ স্বরূপ ছিলেন।
তিনি খেলাধুলা থেকে বিরত থাকতেন। খাওয়ার সময় চাচার সন্তানরা কাড়াকাড়ি অবস্থায় আল্লাহ সুবহানাহু তা‘আলার পক্ষ থেকে যা মিলত তাতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করতেন। তিনি (ﷺ) গোত্রে সবচেয়ে সুন্দর চরিত্রের অধিকারী, সর্বাধিক সত্যবাদী ও আমানতদারীতে বিরল ছিলেন।
اُمِّهه فَحَضَنَتْهُ اِلٰى اَنْ تُوُفِّيَتْ وَهُوَ اِبْنُ سِتِّ سِنِيْنَ فَكَفَّلَهُ جَدُّهُ عَبْدُ المُطَّلِبِ وَكَانَ يَقُوْلُ: لَيَكُوْنَنَّ لِاِبْنِىْ هٰذَا شَأنٌ، ثُمَّ مَاتَ جَدُّهُ وَهُوَ اِبْنُ ثَمَانِيَّةِ اَعْوَامٍ فَكَفَّلَهُ عَمُّهُ اَبُوْطَالِبٍ فَاَحْسَنَ كِفَالَتَهُ وَأَحَبَّهُ حُبًّا شَدِيْدًا حَتّٰى كَانَ لَايَنَامُ اِلَّا اِلٰى جَانِبِه وَلَا يَخْرُجُ اِلَّا مَعَهُ وَكَانَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عِنْدَ عَمِّهِ مَثَلَ الْقَنَاعَةِ، وَالْبُعْدِ عَنِ اللَّهْوِ وَالْلَّعْبِ، فَكَانَ اِذَا حَضَرَ وَقْتُ الْاَكْلِ جَاءَ الْأَوْلَادُ يَخْتَطِفُوْنَ، وَهُوَ قَانِعُ بِمَا رَزَقَهُ اللهُ سُبْحَانَهُ وَتَعَالٰى وَكَانَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَحْسَنَ قَوْمِه خُلُقًا، وَاَصْدَقَهُمْ حَدِيْثًا، وَاَعْظَمَهُمْ اَمَانَةً، وَاَبْعَدَهُمْ عَنِ الْفُحْشِ وَالْاَخْلَاقِ الَّتِىْ تُدَنِّسُ الرِّجَالَ حَتّٰى كَانَ اَفْضَلَ قَوْمِه مَرُوْءَةً، وَاَكْرَمَهُمْ مَخَالَطَةً ،
মানুষকে কলুষিত করে এমন চরিত্র ও অশীল কর্মকান্ড থেকে অনেক দূরে থাকতেন। মানবতায় ও সামাজিকতায় সর্বোত্তম ও সর্বাধিক সম্মানী ছিলেন। প্রতিবেশী হিসেবে উত্তম ও ধৈর্য্যে মহত্বের অধিকারী ছিলেন। এ জন্যে তারা তাঁকে ‘আল আমিন’ উপাধিতে ভূষিত করেন।
চলিশ বছর বয়সে আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে সমগ্র বিশ্বের রহমতস্বরূপ প্রেরণ করেন। নবুয়তের পর মক্কায় তের বছর অবস্থান করে মদিনা মুনাওয়ারায় হিজরতের নির্দেশ আসার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত মানুষকে আল্লাহর ইবাদতের দিকে আহ্বান করেন। মদিনায় দশ বছর অবস্থানকালে মানুষদেরকে প্রজ্ঞাময় প্রভুর একত্ববাদের প্রতি আহ্বান করতে থাকেন। ফলে ইসলাম চতুর্দিকে বিস্তর প্রসার লাভ করে। ফলে প্রতিমাগুলো ধ্বংস এবং কাফির-মুশরিকদের ওপর আল্লাহর গজব নাযিল হয়। বিরামহীন দাওয়াতের মিশন চলতে চলতে পরিশেষে সুসংবাদ বহনকারী আয়াত নাযিল হয়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করে দিলাম এবং তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করে দিলাম। আর তোমাদের জন্যে ইসলামকে দ্বীন হিসেবে মনোনীত করলাম।➥আল-কুরআন, সূরা মাইদাহ, আয়াত: ৩
وَخَيْرُهُمْ جِوَارًا، وَاَعْظَمَهُمْ حِلْمًا، فَلِذَا سَمُّوْهُ بِالْأَمِيْنِ .
ثُمَّ اَرْسَلَهُ اللهُ تَعَالٰى رَحْمَةً لِلْعَالَمِيْنَ وَهُوَ اِبْنُ اَرْبَعِيْنَ سَنَةً وَمَكَثَ بِمَكَّةَ بَعْدَ ذٰلِكَ ثَلَاثَةَ عَشَرَ سَنَةً يَدْعُوْ النَّاسَ اِلٰى عِبَادَةِ اللهِ تَعَالٰى اِلٰى اَنْ اَتَاهُ الْاِذْنُ بِالْهِجْرَةِ اِلٰى الْمَدِيْنَةِ الْمُنَوَّرَةِ .
فَمَكَثَ بِهَا عَشَرَ سِنِيْنَ يَدْعُو النَّاسَ اِلٰى تَوْحِيْدِ الصَّانِعِ الْحَكِيْمِ فَانْتَشَرَالْاِسْلَامُ اِنْتِشَارًا كَثِيْرًا وَكُسِرَتِ الْاَصْنَامُ، وَقُهِرَتِ الْكَفَرَةُ، وَالْمُشْرِكُوْنَ، وَلَمْ يَزَلْ دَاعِيًا اِلَى اللهِ حَتّٰى نَزَلَ قَوْلُهُ تَعَالٰى ্থاَلْيَوْمَ اَكْمَلْتُ لَكُمْ دِيْنَكُمْ وَاَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِىْ وَرَضِيْتُ لَكُمْ الْاِسْلَامَ دِيْنًا‘ .
وَتَـوَفّٰى صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَـلَّـمَ ،
আমাদের জন্য মহান গ্রন্থ আল-কুরআন রেখে তিনি তেষট্টি বছর সংগ্রামী জীবনের ইতি টানেন ও মদিনায় মুনাওয়ারায় সমাধিস্থ হন।
প্রজ্ঞাময় ও প্রশংসিত সত্তার পক্ষ হতে অবতীর্ণ কোরআনে পাকে তাঁর বর্তমান ও অবর্তমানে কোন অপশক্তি গ্রাস করতে পারেনি। তিনি আমাদের মাঝে এমন বিশুদ্ধ হাদীস দ্বারা পূত-পবিত্র শরীয়ত উপস্থাপন করেন- যা মধুর চেয়েও অধিক সুস্বাদু এবং সুমিষ্ট পানি থেকেও অধিকতর পরিচ্ছন্ন।