প্রবাহিত পানিতে গোসল করার পদ্ধতি


যদি প্রবাহিত পানি যেমন সমুদ্রের পানি, নদীর পানি ইত্যাদিতে গোসল করলে কিছুক্ষণ পানিতে ডুব দিয়ে থাকলে তিনবার ধৌত করা, ধারাবাহিক, অযু ইত্যাদি সুন্নাত আদায় হয়ে যাবে, তিনবার ধৌত করার প্রয়োজন নেই। আর যদি পুকুর ইত্যাদির বদ্ধ পানিতে গোসল করা হয় তাহলে তিনবার ডুব দিলে বা তিনবার স্থান পরিবর্তন করলে তিনবার ধৌত করার সুন্নাত আদায় হয়ে যাবে। 


রাসুলুল্লাহ صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেছেন: “যে ব্যক্তির নিকট আমার আলোচনা হলো আর সে আমার উপর দরূদ শরীফ পাঠ করলো না, তবে সে মানুষের মধ্যে সবচেয়ে কৃপণ ব্যক্তি।” (আত্ তারগীব ওয়াত্ তারহীব) 


বৃষ্টির পানিতে (নল বা ফোয়ারার নিচে দাঁড়ানো) প্রবাহিত পানির মধ্যে দাঁড়ানোর হুকুমের মতো। প্রবাহিত পানিতে অযু করলে কিছুক্ষণ অঙ্গ পানিতে ডুবিয়ে রাখলে তিনবার ধৌত করা হয়ে যাবে। আর স্থির পানিতে অযু করলে অঙ্গকে তিনবার পানিতে ডুবালে তিনবার ধৌত করার (সুন্নাত আদায় হয়ে যাবে) । (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৩২০ পৃষ্ঠা) যেখানেই অযু বা গোসল করে থাকুক না কেন তাকে অবশ্যই কুলি করতে হবে এবং নাকে পানি দিতে হবে। 


ফোয়ারা (প্রস্রবন) প্রবাহিত পানির হুকুমের অন্তর্ভূক্ত


 ফতোওয়ায়ে আহলে সুন্নাতে (অপ্রকাশিত) উল্লেখ আছে: ফোয়ারার (প্রস্রবনের) নিচে গোসল করা প্রবাহিত পানিতে গোসল করার মতো। সুতরাং অযু ও গোসল করতে যতটুকু সময়ের প্রয়োজন হয় ততটুকু সময় পর্যন্ত ঝর্ণা ধারার নিচে অবস্থান করলে তিনবার ধৌত করার সুন্নাত আদায় হয়ে যাবে। অতঃপর “দুররে মুখতার”এ উল্লেখ আছে: যদি কেউ প্রবাহিত পানিতে বা বড় হাউজে বা ঝর্ণাধারার নিচে অযু ও গোসল করার সময় পর্যন্ত অবস্থান করে তাহলে সে পূর্ণ সুন্নাত আদায় করল। (দুররে মুখতার, ১ম খন্ড, ৩২০ পৃষ্ঠা) 


স্মরণ রাখবেন! গোসল এবং অযুতে কুলি করা ও নাকে পানি দেয়া আবশ্যক। 


ফোয়ারাতে গোসল করার সময় সতর্কতা অবলম্বন


যদি আপনার ঘরের গোসল খানায় ফোয়ারা (SHOWER) থাকে, তাহলে ফোয়ারামুখী হয়ে উলঙ্গ অবস্থায় গোসল করার সময় ভালভাবে লক্ষ্য রাখবেন, যেন আপনার মুখ বা পিঠ কিবলার দিকে না থাকে। ইস্তিঞ্জাখানাতেও অনুরূপ সতর্কতা অবলম্বন করবেন। কিবলার দিকে মুখ বা পিঠ থাকার অর্থ হলো ফোয়ারার ৪৫০ ডিগ্রী কোণের ভিতরে গোসল করা, সুতরাং সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে যেন ফোয়ারার ৪৫০ ডিগ্রী কোণের বাইরে থেকে গোসল করা না হয়। অনেক লোক এ মাসয়ালা সম্পর্কে অজ্ঞ। 


W.C কমোট (ওয়াটার ক্লজেট) এর দিক ঠিক করে নিন


দয়া করে নিজ ঘরের W.C কমোট ও ফোয়ারার দিক যদি তা ভুল স্থাপিত হয়, তাহলে তা সংশোধন করে নিন। সর্বাধিক সতর্কতা অবলম্বনের পন্থা হলো, W.C কমোট এর মুখ কিবলার দিক হতে ৯০০ ডিগ্রী কোনে স্থাপন করা অর্থাৎ যেদিকে নামাযে সালাম ফিরানো হয় সেদিকে স্থাপন করা। রাজ মিস্ত্রিরা সাধারণত নির্মাণের সহজতা ও মানান সইয়ের জন্য কিবলার আদবের প্রতি তোয়াক্কা করে না। মুসলমানদের ঘর নির্মানের সময় ঘরের অনাবশ্যক চাকচিক্যের পরিবর্তে পরকালের প্রকৃত সৌন্দর্যের প্রতি লক্ষ্য রেখে ঘর নির্মাণ করা উচিত।


কুছ নেকীয়া কামালে জল্দ্ আখিরাত বানালে, 

ভাই নেহী ভরোসা হ্যা কুয়ি জিন্দেগী কা।


Top