পান ভক্ষনকারী মনোযোগ দিন
আমার আক্বা আ’লা হযরত, ইমামে আহলে সুন্নাত, অলীয়ে নেয়ামত, আজীমুল বারাকাত, আজীমুল মারতাবাত, পরওয়ানায়ে শময়ে রিসালত, হামীয়ে সুন্নাত, মাহিয়ে বিদ‘আত, ‘আলিমে শরীয়াত, পীরে তরীকত, বা-ইছে খাইরু বারাকাত, হযরত আল্লামা মাওলানা আলহাজ্ব হাফেজ ক্বারী শাহ্ ইমাম আহমদ রযা খাঁনرَحۡمَۃُ اللّٰہ ِتَعَالٰی عَلَیہِ বলেন: যারা পান ভক্ষণে বেশি পরিমাণে অভ্যস্থ এবং যাদের দাঁতগুলো বিশেষত ফাঁকা, অভিজ্ঞতার আলোকে বলা যায়, সুপারীর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণা এবং পানের ছোট ছোট টুকরা তাদের মুখের ভিতর বিভিন্ন জায়গায় বিশেষত দাঁতের ফাঁকে ফাঁকে এমনভাবে স্থান দখল করে নেয় যে, সেগুলো তিনবার নয় বরং দশবার কুলি করেও পরিপূর্ণভাবে পরিস্কার করা সম্ভব হয় না। খিলাল বা মিসওয়াক কোন কিছুর দ্বারাই এগুলোকে বের করে আনা যায় না। একমাত্র মুখের ভিতর পানি নিয়ে তা ভালভাবে নাড়া-চাড়া করেই মুখের বিভিন্ন অংশ ও দাঁতের ফাঁকে ফাঁকে আটকে থাকা পান ও সুপারীর সে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণাগুলো আস্তে আস্তে বের করে আনা সম্ভব হয়। তাই এ ক্ষেত্রে কুলি করার নির্ধারিত কোন সংখ্যা হতে পারে না এবং এই পরিপূর্ণ পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে কঠোর তাকিদ দেওয়া হয়েছে। অসংখ্য হাদীসে বর্ণিত আছে: “যখন মানুষ নামাযে দন্ডায়মান হয়, তখন ফিরিশতা তার মুখ ঐ নামাযীর মুখের সাথে লাগিয়ে দেয় এবং মানুষ নামাযের মধ্যে যা কিছু পড়ে তা তার মুখ থেকে বের হয়ে ফিরিশতার মুখে প্রবেশ করে।” তাই নামাযরত অবস্থায় মানুষের দাঁতের ফাঁকে কোন খাদ্যকণা থাকলে তাতে ফিরিশতার এমন কষ্ট হয় যেরূপ কষ্ট অন্য কিছু দ্বারা হয় না।
রাসূলে আকরাম, নূরে মুজাস্সাম, শাহে বনী আদম صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیۡہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেন: “যখন তোমাদের কেউ রাতের বেলায় নামাযের জন্য দাঁড়ায়, তখন উচিত হচ্ছে; নামাযের পূর্বে মিসওয়াক করে নেওয়া। কেননা, সে যখন নামাযে কিরাত পাঠ করে, তখন ফিরিশতা তার মুখ ঐ নামাযীর মুখের সাথে লাগিয়ে দেয় এবং নামাযরত অবস্থায় যা কিছু ঐ নামাযীর মুখ থেকে নির্গত হয়, তা ফিরিশতার মুখে প্রবেশ করে।” আল্লামা তাবরানী তার বিখ্যাত গ্রন্থ “কাবীর” এ হযরত সায়্যিদুনা আবু আইয়ুব আনসারী رَضِیَ اللہُ تَعَالٰی عَنۡہُ হতে বর্ণনা করেন: “দুজন ফিরিশতার নিকট এর চেয়ে কষ্টদায়ক বস্তু আর কিছুই নেই যে, তারা তার সাথীদের নামাযরত অবস্থায় দেখতে পায়, অথচ তার দাঁতে খাদ্য কণা আটকে রয়েছে।” (আল মুজামুল কবীর, ৪র্থ খন্ড, ১৭৭ পৃষ্ঠা, হাদীস- ৪০৬১। ফতোওয়ায়ে রযবীয়া (সংকলিত) , ১ম খন্ড, ৬২৪ পৃষ্ঠা, ৬২৫)
সুফী তত্ত্বের মহান মাদানী ব্যবস্থাপত্র
==============
হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম আবু হামীদ মুহাম্মদ বিন মুহাম্মদ বিন মুহাম্মদ গাযালী رَحۡمَۃُ اللّٰہ ِتَعَالٰی عَلَیہِ বলেন: অযু থেকে অবসর হয়ে যখন আপনি নামাযের ইচ্ছা পোষণ করবেন তখন এ ধ্যান করুন যে, যে সকল প্রকাশ্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গের উপর মানুষের দৃষ্টি পড়ে ঐগুলোতো পাক হয়ে গেলো কিন্তু অন্তরের পবিত্রতা ছাড়া আল্লাহ্ তাআলার দরবারে মুনাজাত করা একটা নির্লজ্জতা। কেননা, আল্লাহ্ তাআলা অন্তর দেখেন। তিনি আরো বলেন: প্রকাশ্য অযুকারীর (পবিত্রতা অর্জনকারীর) এ কথা স্মরণ রাখা উচিত যে, অন্তরের পবিত্রতা তাওবা, গুনাহ্ বর্জন ও সুন্দর চরিত্র গঠনের মাধ্যমে হয়ে থাকে। যে ব্যক্তি অন্তরকে পাপের ময়লা থেকে পরিস্কার করে না শুধু বাহ্যিক পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা ও সৌন্দর্য্যরে প্রতি যতœবান হয় তার দৃষ্টান্ত ঐ ব্যক্তির মত, যে বাদশাহকে তার ঘরে আমন্ত্রণ করলো এবং বাদশাহের আগমন উপলক্ষ্যে তার ঘরের বাইরে খুবই সাজসজ্জা ও চাকচিক্য করলো অথচ ঘরের ভিতর অপরিস্কার, নোংরা ও ময়লা আবর্জনা পূর্ণ রেখে দিল। এখন বাদশাহ তার ঘরে আগমন করে ঘরের ভিতর প্রবেশ করে যখন ময়লা আবর্জনা ও দুর্গন্ধ দেখতে পাবেন তখন তিনি কি খুশী হবেন না অসন্তুষ্ট হবেন, তা প্রত্যেক বিবেকবান ব্যক্তিই সহজে অনুধাবন করতে পারে। (ইহ্ইয়াউল উলুম, ১ম খন্ড, ১৮৫ পৃষ্ঠা)
ক্ষত ইত্যাদি থেকে রক্ত বের হওয়ার ৫টি হুকুম
===============
❁ রক্ত, পুঁজ বা হলুদ রঙের পানি শরীরের কোন স্থান থেকে বের হয়ে এমন স্থানে গড়িয়ে পড়ল বা গড়িয়ে পড়ার শক্তি ছিলো যা ধৌত করা অযু বা গোসলের মধ্যে ফরয। তাহলে অযু ভঙ্গ হয়ে যাবে। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৩০৪ পৃষ্ঠা) ❁ রক্ত যদি দেখা যায় বা বের হয় কিন্তু গড়িয়ে পড়েনি, যেমন- সূঁচের মাথা বা ছুরির ধারালো প্রান্ত ইত্যাদি বিদ্ধ হওয়ার কারণে রক্ত বের হয় বা দেখা গেলো অথবা দাঁত খিলাল করলো বা মিসওয়াক করলো বা আঙ্গুল দ্বারা দাঁত মাজলো অথবা দাঁত দ্বারা কোন জিনিস যেমন-আপেল ইত্যাদি কামড় দিলো এবং এতে রক্তের চিহ্ন দেখা গেলো অথবা নাকের ছিদ্রে আঙ্গুল প্রবেশ করাল এবং এতে রক্তের লালচে রং দেখা গেলো কিন্তু তা প্রবাহিত হওয়ার মত ছিলো না তাহলে অযু ভঙ্গ হবে না। (প্রাগুক্ত) ❁ যদি রক্ত বের হয়ে প্রবাহিত হয় কিন্তু প্রবাহিত হয়ে এমন স্থানে না পৌঁছে যা ধৌত করা অযু বা গোসলের মধ্যে ফরয, যেমন-চোখে দানা ছিলো তা ফেঁটে বের না হয়ে ভিতরেই রয়ে গেলো। অথবা রক্ত বা পুঁজ বের না হয়ে কানের ভিতরেই রয়ে গেলো অযু ভঙ্গ হবে না। (প্রাগুক্ত, ২৭ পৃষ্ঠা) ❁ ক্ষতস্থান খুবই বড় এবং এতে আর্দ্রতাও দেখা যাচ্ছে, কিন্তু আর্দ্রতা যতক্ষণ পর্যন্ত প্রবাহিত হবে না অযু ভঙ্গ হবে না। (প্রাগুক্ত) ❁ জখমের (ক্ষতস্থানের) রক্ত বারবার মুছে ফেলার কারণে প্রবাহিত হতে পারেনি। এখন দেখতে হবে যতগুলো রক্ত মুছে ফেলা হলো, তা প্রবাহিত হওয়ার মতো ছিলো কিনা? যদি প্রবাহিত হওয়ার মত ছিলো তাহলে অযু ভঙ্গ হয়ে যাবে। আর যদি প্রবাহিত হওয়ার মত না হয়ে থাকে, তাহলে অযু ভঙ্গ হলো না। (প্রাগুক্ত)
ঠান্ডার কারণে অঙ্গ ফেঁঠে যায় তখন .....
ঠান্ডা ইত্যাদির কারণে যদি অঙ্গ ফেঁঠে যায়, ধৌত করতে পারলে ধৌত করবে। ঠান্ডা পানি ক্ষতি করলে তখন পানি গরম করার সামর্থ থাকলে করাটা ওয়াজীব। আর যদি গরমের দ্বারাও ক্ষতি হয়, তবে মাসেহ করবে। যদি মাসেহ দ্বারাও ক্ষতি হয়, তখন এর উপর যে পট্টি বা ঔষধের প্রলেপ রয়েছে এর উপর পানি প্রবাহিত করবে। এটাও যদি ক্ষতি হয়, তখন ঐ পট্টি বা ঔষধের প্রলেপের উপর পরিপূর্ণ মাসেহ করবে। এর দ্বারাও যদি ক্ষতি হয়, তবে ছেড়ে দিবে। এটা ক্ষমা। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া (সংকলিত) , ৪র্থ খন্ড, ৬২০ পৃষ্ঠা)
অযুর মধ্যে মেহেদী ও সূরমার মাসয়ালা
================
❁ মহিলার হাতে পায়ে মেহেদীর চিহ্ন লেগে রয়েছে আর খবর নেই, তখন অযু ও গোসল হয়ে যাবে। হ্যাঁ! যখন বুঝতে পারবে তখন সেটা উঠিয়ে পানি প্রবাহিত করবে। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া (সংকলিত) , ৪র্থ খন্ড, ৬১৩ পৃষ্ঠা) ❁ সূরমা যদি চোখের কোনে বা পলকে থেকে যায়, আর খবর নেই। বাহ্যিক ভাবে কোন অসুবিধা নেই এবং নামাযের পর যদি চোখের কোণায় অনুভূত হয়, তবে কোন ভয় নেই, নামায হয়ে যাবে। (প্রাগুক্ত)
ইনজেকশান নিলে অযু ভঙ্গ হবে কিনা?
=============
❁ মাংসের মধ্যে ইনজেকশান দেয়ার পর যদি প্রবাহিত হওয়ার মত রক্ত বের হয়, তাহলে অযু ভঙ্গ হয়ে যাবে। ❁ শিরায় ইনজেকশান দিয়ে প্রথমে উপরের দিকে যে রক্ত টানা হয় তা যেহেতু প্রবাহিত হওয়ার মত, তাই এর দ্বারা অযু ভঙ্গ হয়ে যাবে। এমনিভাবে ❁ গ্লোকোজ ইত্যাদির স্যালাইন শিরার মধ্যে লাগালে অযু ভঙ্গ হয়ে যাবে। কেননা, এতে প্রবাহিত হওয়ার মত রক্ত নলীতে এসে যায়। আর যদি প্রবাহিত হওয়ার মত রক্ত নলীতে না আসে তাহলে অযু ভঙ্গ হবে না। ❁পরীক্ষা করানোর জন্য সিরিঞ্জের মাধ্যমে যে রক্ত বের করা হয় তা দ্বারা অযু ভঙ্গ হয়ে যাবে। কারণ এতে প্রবাহিত হওয়ার মত রক্ত বের হয়ে থাকে। আর এ রক্ত প্রস্রাবের মতও নাপাক। তাই এরূপ রক্ত পূর্ণ শিশি পকেটে নিয়ে নামায আদায় করলে নামায হবে না। তাছাড়া রক্ত বা প্রস্রাবের শিশি যদিও তা ভালভাবে বন্ধ, মসজিদের ভিতর নিয়ে যেতে পারবে না, নিয়ে গেলে গুনাহগার হবে।
অসুস্থ চোখ থেকে প্রবাহিত অশ্রুর বিধান
❁ চোখের অসুখের কারণে চোখ থেকে যে অশ্রু প্রবাহিত হয় তা নাপাক। আর এরূপ অশ্রু দ্বারা অযুও ভঙ্গ হয়ে যায়। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৩১০ পৃষ্ঠা) আফসোস! অধিকাংশ লোক এ মাসয়ালা সম্পর্কে অবগত না হওয়ার কারণে রুগ্ন চক্ষু হতে যে অশ্রু প্রবাহিত হয় তাকে সাধারণ অশ্রুর মত মনে করে আস্তিন বা জামার আচল ইত্যাদি দ্বারা মুছে কাপড় নাপাক করে ফেলে। ❁ অন্ধ ব্যক্তির চোখ হতে রোগের কারণে যে পানি বের হয় তা নাপাক এবং তা দ্বারা অযুও ভঙ্গ হয়ে যায়। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৩০৬ পৃষ্ঠা)
পাক এবং নাপাক আর্দ্রতা
❁ মানুষের শরীর থেকে যে তরল আর্দ্রতা বের হয়, আর অযু ভঙ্গ করে না, তা পাক। উদাহরণ স্বরূপ- রক্ত বা পূঁজ বের হয়ে গড়িয়ে না পড়লে অথবা সামান্য বমি যা মুখ ভর্তি নয়, তা পাক। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৩০৯ পৃষ্ঠা)
ফোস্কা ও ফোঁড়া
❁ যদি ফোস্কা নখে আঁচড়িয়ে তুলে ফেলা হয় আর পানি প্রবাহিত হয়, তাহলে অযু ভেঙ্গে যাবে, অন্যথায় নয়। (প্রাগুক্ত, ৩০৫ পৃষ্ঠা) ❁ ফোঁড়া সম্পূর্ণ সুস্থও হয়ে গেছে কিন্তু উপরে মরা চামড়া বাকি রয়েছে, যাতে মুখ ও ভিতরে শূন্য জায়গা আছে। যদিঐ শূন্য জায়গা পানিতে ভরে যায় আর ঐ পানি চেপে বের করা হয়, তাহলে অযু ভঙ্গ হবে না। ঐ বের করা পানি নাপাকও নয়। হ্যাঁ, যদি ঐ শূন্য জায়গার ভিতর থেকে বের করা পানিতে রক্ত ইত্যাদি অবশিষ্ট থাকে, তাহলে অযুও ভঙ্গ হবে আর ঐ পানিও নাপাক হবে। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া (সংকলিত) , ১ম খন্ড, ৩৫৫-৩৫৬ পৃষ্ঠা) ❁খোস-পাঁচড়া অথবা ফোঁড়ার মধ্যে যদি প্রবাহিত হওয়ার মত তরল পদার্থ না থাকে, শুধুমাত্র আদ্র থাকে, যাতে বার বার কাপড় লেগে যায়, ঐ লাচা পাক। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৩১০ পৃষ্ঠা) ❁ নাক পরিষ্কার করার পর যদি নাক থেকে জমাট রক্ত বের হয় তাহলে অযু ভঙ্গ হবে না। তবে অযু করে নেয়া উত্তম। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া (সংকলিত) , ১ম খন্ড, ২৮১ পৃষ্ঠা)
বমি দ্বারা কখন অযু ভঙ্গ হয়?
============
মুখভর্তি বমিতে যদি খাদ্য, পানি বা পিত্ত রঙের তিক্ত পানি নির্গত হয় তাহলে অযু ভঙ্গ হয়ে যায়। যে বমিকে নিবারণ করা খুবই কষ্টকর তাকে মুখভর্তি বমি বলে। মুখভর্তি বমি প্রস্রাবের মতই নাপাক। তাই এরূপ বমির ছিটা থেকে কাপড় ও শরীর রক্ষা করা একান্ত প্রয়োজন। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৩০৬ এবং ৩৯০ পৃষ্ঠা)
হাসির হুকুম
(১) রুকু সিজদা বিশিষ্ট নামাযে কোন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তি অট্টহাসি দিলো অর্থাৎ এত জোরে হাসল যে পার্শ্ববর্তী লোকেরা তা শুনে ফেললো, তাহলে অযুও ভঙ্গ হয়ে যাবে এবং নামাযও ভঙ্গ হয়ে যাবে। আর যদি এমন আওয়াজে হাসে যে, হাসির আওয়াজ শুধু সে নিজেই শুনতে পায়। তাহলে নামায ভঙ্গ হয়ে যাবে, অযু ভঙ্গ হবে না। আর মুচকি হাসি দিলে অযু নামায কিছুই ভঙ্গ হয় না। কেননা, মুচকি হাসিতে মোটেই আওয়াজ হয় না, শুধুমাত্র দাঁত দেখা যায়। (মারাকিউল ফালাহ, ৬৪ পৃষ্ঠা) (২) কোন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তি জানাযার নামাযে অট্টহাসি দিলে নামায ভঙ্গ হয়ে যাবে কিন্তু অযু ভঙ্গ হবে না। (প্রাগুক্ত) (৩) নামাযের বাইরে অট্টহাসি দিলে অযু ভঙ্গ হবে না তবে পুনরায় অযু করা মুস্তাহাব। (মারাকিউল ফালাহ, ৬০ পৃষ্ঠা) আমাদের প্রিয় নবী صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیۡہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم কখনো অট্টহাসি দেননি। তাই অট্টহাসি বর্জন করে এবং উচ্চ স্বরে না হেসে প্রিয় নবী صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیۡہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর এ প্রিয় সুন্নাতকে জীবন্ত রাখার প্রতি আমাদের সচেষ্ট হওয়া উচিত। নবী করীম, রউফুর রহীম, রাসূলে আমীন صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیۡہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেন: “অট্টহাসি শয়তানের পক্ষ থেকে, মুচকি হাসি আল্লাহর পক্ষ থেকে।” (আল মুজামুল সাগীর লিত তাবরানী, ২য় খন্ড, ১০৪ পৃষ্ঠা)
সতর দেখা গেলে কি অযু ভঙ্গ হয়ে যায়?
জন সাধারণের মধ্যে প্রচলন আছে যে, হাঁটু বা সতর খুলে গেলে, নিজের কিংবা অপরের সতর দেখা গেলে অযু ভঙ্গ হয়ে যায়। কিন্তু এটা একেবারে ভুল। হ্যাঁ! অযুর সময় নাভী থেকে হাঁটু পর্যন্ত সমস্ত সতর ঢেকে রাখা অযুর আদব। বরং প্রস্রাব ও পায়খানা সেরে তাড়াতাড়ি সতর ঢেকে ফেলা উচিত। কেননা, বিনা প্রয়োজনে সতর খোলা রাখা নিষেধ এবং জন সম্মুখে সতর খোলা হারাম। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৩০৯ পৃষ্ঠা)