কোরআন শরীফ পড়া বা স্পর্শ করার দশটি আদব


 (১) যার উপর গোসল ফরয তার জন্য মসজিদে প্রবেশ করা, তাওয়াফ করা, কোরআন শরীফ স্পর্শ করা, কোরআন শরীফ স্পর্শ না করে এর কোন আয়াত বা সূরা মুখস্থ পড়া, কোরআন শরীফের কোন আয়াত লিখা, আয়াতের তাবিজ লিখা (এটা ঐ অবস্থায় হারাম যখন কাগজ স্পর্শ করা পাওয়া যাবে। যাতে আয়াতে কোরআন আছে আর যদি কাগজ স্পর্শ না করে লিখে তাহলে জায়েয) (অপ্রকাশিত ফতোওয়ায়ে আহলে সুন্নাত) এমন তাবিজ স্পর্শ করা, এমন আংটি স্পর্শ করা বা পরিধান করা যাতে কোরআন শরীফের আয়াত বা হুরুফে মুকাত্তিয়াত লিখিত আছে সম্পূর্ণরূপে হারাম। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৩২৬ পৃষ্ঠা) (মোম দ্বারা জামানো, প্ল্যাস্টিক দ্বারা মোড়ানো কাপড় বা চামড়াতে সেলাই করা তাবিজ স্পর্শ করলে বা গাঁয়ে দিলে কোন অসুবিধা নেই।) 


 (২) যদি কোরআন শরীফ জুজদানের (গিলাফ) মধ্যে থাকে, তাহলে অযু বা গোসল বিহীন অবস্থায় জুজদান স্পর্শ করলে কোন অসুবিধা নেই। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৩২৬ পৃষ্ঠা) 


 (৩) অনুরূপভাবে অযু বা গোসলবিহীন অবস্থায় এমন কাপড় বা রুমাল দ্বারাও কোরআন শরীফ স্পর্শ করা জায়েয যা নিজের বা কোরআন শরীফের অধীনে নয়। (প্রাগুক্ত) 


 (৪) জামার আস্তিন, (ওড়না, শাড়ি) আঁচল ইত্যাদি দ্বারা এমন কি চাদরের এক পার্শ্ব কাঁধের উপর রেখে অন্য পার্শ্ব দ্বারাও কোরআন শরীফ স্পর্শ করা হারাম। কেননা, এ সমস্ত কাপড় পরিধানকারীর অধীনস্থ। (প্রাগুক্ত) 


 (৫) দোয়ার নিয়্যতে বা বরকত লাভের উদ্দেশ্যে কোরআন শরীফের কোন আয়াত অযু বা গোসলবিহীন অবস্থায় পাঠ করলে কোন অসুবিধা নেই। যেমন দোয়া বা বরকতের লাভের উদ্দেশ্যে بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحيْمِ পড়লে বা শোকরিয়া জ্ঞাপনের উদ্দেশ্যে اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعٰلَمِیْنَ পড়লে বা কোন মুসলমানের মৃত্যুর সংবাদ বা কোন দুঃখজনক সংবাদ শুনে اِنَّا لِلّٰهِ وَ اِنَّاۤ اِلَيْهِ رٰجِعُوْنَ পড়লে বা প্রশংসার নিয়্যতে সম্পূর্ণ সূরা ফাতিহা বা আয়াতুল কুরসী বা সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াত পাঠ করলে এবং ঐগুলো পাঠ করার মধ্যে কোরআন তিলাওয়াতের নিয়্যত না থাকলে অযু বা গোসলবিহীন অবস্থায় পাঠ করাতে কোন অসুবিধা নেই। (প্রাগুক্ত) 


 (৬) প্রশংসার নিয়্যতে ‘قُلْ’ শব্দ ব্যতীত তিন قُلْ অর্থাৎ সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস পাঠ করা যাবে। কিন্তু ‘قُلْ’ শব্দ সহ প্রশংসার নিয়তেও ঐ তিনটি সুরা পাঠ করা যাবে না। কেননা, তখন তা কোরআনের আয়াত হিসেবে বিবেচিত হবে। এক্ষেত্রে নিয়্যত কার্যকর হবে না। (প্রাগুক্ত) 


 (৭) অযু বিহীন কোরআন শরীফ বা কোরআন শরীফের কোন আয়াত স্পর্শ করা হারাম। তবে কোরআন শরীফ স্পর্শ না করে মুখস্থ বা দেখে দেখে পড়াতে কোন অসুবিধা নেই। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৩২৬ পৃষ্ঠা) 


 (৮) যে পাত্র বা বাটিতে কোরআন শরীফের কোন আয়াত বা সূরা লিখিত আছে, তা অযু ও গোসলবিহীন অবস্থায় স্পর্শ করা হারাম। (প্রাগুক্ত) 


 (৯) কোরআন শরীফের সূরা বা আয়াত লিখিত পাত্র বা বাটি ব্যবহার করা সকলের জন্য মাকরূহ তবে বিশেষ করে আরোগ্য লাভের নিয়্যতে তাতে পানি নিয়ে পান করলে কোন অসুবিধা নেই।


 (১০) ফার্সী, উর্দূ, বাংলা বা যে কোন ভাষাতেই কোরআন শরীফ অনুবাদ হোক না কেন, কোরআন শরীফের সে অনুবাদও পড়া ও স্পর্শ করার হুকুম কোরআন শরীফের হুকুমেরই অনুরূপ। অর্থাৎ তাও বিনা অযু ও বিনা গোসলে স্পর্শ ও পড়া যাবে না। (প্রাগুক্ত) 

Top