সন্ত্রাসবাদী সংগঠন সম্পর্কে তাজুশ শারিয়া আখতার রেযা আযহারীর ফতোয়া : Shaikh Muhammad A K Azad Al Qadri

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <iframe allowfullscreen="" frameborder="0" height="270" src="https://www.youtube.com/embed/GDv4_uogOJE" width="480"></iframe></div>

সন্ত্রাসবাদী সংগঠন সম্পর্কে তাজুশ শারিয়া আখতার রেযা আযহারীর ফতোয়া : Shaikh Muhammad A K Azad Al Qadri

Read more »

আযানে আশহাদু আন্না মুহম্মদুর রসূলুল্লাহ উচ্চারণের সময় অঙ্গুলী চুম্বন --- দেওবন্দীদের কিতাব থেকে

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">আযানে আশহাদু আন্না মুহম্মদুর রসূলুল্লাহ উচ্চারণের সময় অঙ্গুলী চুম্বন --- দেওবন্দীদের কিতাব থেকে<br /><br />==============================================<br /><br />ফতওয়ায়ে দেওবন্দ - ২খন্ড ১০৬ ও ১০৭ পৃষ্ঠা<br />سوال : اذان می بوقت شھادتین انگوھے کو بوسہ دینا کیساھے جو شخص اس سے منع کرے اس کی اقتدا نماز میی جائز جو انگو ھون کو بوسہ نہ ھے یا نھی اور دے وہ گنھگار ھے یا نہ اگر بو سہ دینا مستحب یا سنت ھے تو اس کی دلیل کیا ھے مستحب یا سنت ھے تو اس کی دلیل کیا ھے<br />================<br />: استحیاب تقبیل ابھامین کی دلیل الجواب سمی کی یہ عبارت ھے یستحب ان یقال عند سمع الاولی من الشھادتین صلی اللہ علیک یا رسول اللہ و عند الثانیۃ منھا قرۃ عینی بك یا رسول اللہ صلی اللہ علیہ وسلم ثم یقول اللھم متعنی بالسمع و البصر بعد وضع ظفری الابھا مین علی العینین فانہ علیہ السلام یقون قاعد الہ فی الجنۃ کذافی کنذ العباد و قھستا نی و نحوہ فی الفتاوی الصوفیۃ و فی کتاب الفردوس من قبل ظفری ابھا میہ عند سماع اشھد ان محمدا رسول اللہ صلی اللہ علیہ وسلم فی لاذ ان انا قائدہ ومدخلہ فی صفوف الجنۃ وتمامہ فی حواشی الجر الرملی عن المقاصد اغسنۃ للسخاوی و ذکر ذلک الجراحی و اطال ثمے قال و لم یصح فی المرفوع من کل ھذا شئی-<br />اخر عبارت شامی سے یہ بھی واضح ھوا کہ کوئی مفوع حدیث صحیح اس باے مین نھیی ھے غیات بہ کہ ضعیف حدیث پر بھی فضائل اعمال مین عمل کرنا درست ھے مگر اس کی شرط یہ ھے کہ اس فعل کو مسنون نہ سمجہ- کذا فی الدرالمختار پس چونکے بعض عوام کو اس مین غلو ھوگیا اور اس کو سنت سمجہ کر گرتے ھین اور تارک- پر طعن و ملامت کر تے ھین اس لئے ترک اس کا علماء محققین احوط سمچہ ھین اور رہ شخص گناہ گار<br />نھیی اقتدائی اس کی درست ھے-<br /><br />আযানে আশহাদু আন্না মুহম্মদুর রসূলুল্লাহ উচ্চারণের সময় অঙ্গুলী চুম্বন করা কি? যে ব্যক্তি উহা হতে কাউকে ফিরিয়ে রাখে তার পিছনে নামাযের ইত্তেদা করা কী জায়িয অথবা না? এবং যে ব্যক্তি অঙ্গুলী চুম্বন না করে ঐ ব্যক্তি কী গুনাহগার হবে অথবা না? অঙ্গুলী চুম্বন করা যদি মুস্তাহাব বা সুন্নাত হয় তাহলে ইহার দলীল কিরূপ?<br /><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEg3p1e9OGNouzOg4VodMCQYvunaG6GGvtdrgWuAYKBuXtmdwWP-LtoCnoy7MCfnT4HCu_ZBscJMrFcJSBbq3CMkpRqWS3ImOC3NBmbIpsCcE83yZrSUd4eZwSsaOYU1K7YwyZIhwULFNqGN/s1600/FB_IMG_1562132727847.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="800" data-original-width="450" height="320" loading="lazy" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEg3p1e9OGNouzOg4VodMCQYvunaG6GGvtdrgWuAYKBuXtmdwWP-LtoCnoy7MCfnT4HCu_ZBscJMrFcJSBbq3CMkpRqWS3ImOC3NBmbIpsCcE83yZrSUd4eZwSsaOYU1K7YwyZIhwULFNqGN/s320-rw/FB_IMG_1562132727847.jpg" width="180" /></a></div><br /><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEitDUKrbsMVFRoF1jo2LznBFuc4W5EBwBbFECtJJnXLoyGFLAFb0CwJf8nmskYgxOxG6CickVQekR5BMat1_MPHEYV81mkSCdS9yuJMIMyiX3grwi5Fw34zRMjueUlcToDG5GszLEHD7vfQ/s1600/FB_IMG_1562132734758.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="800" data-original-width="450" height="320" loading="lazy" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEitDUKrbsMVFRoF1jo2LznBFuc4W5EBwBbFECtJJnXLoyGFLAFb0CwJf8nmskYgxOxG6CickVQekR5BMat1_MPHEYV81mkSCdS9yuJMIMyiX3grwi5Fw34zRMjueUlcToDG5GszLEHD7vfQ/s320-rw/FB_IMG_1562132734758.jpg" width="180" /></a></div><br /><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjFu4NxkIzYfbkmtflBXEPBw-7eYNyb4EHwEzW_peh60BIKxcbLOUzP5PW1owyQcRw-SFAfxJ5sx2RLZXktRFlyEQ7fJc7NW8Rg1sQRLpBx8XFmRk5MP49Df1-xQtBCb6NFcFkw4S9-SjkU/s1600/FB_IMG_1562132739699.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="800" data-original-width="450" height="320" loading="lazy" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjFu4NxkIzYfbkmtflBXEPBw-7eYNyb4EHwEzW_peh60BIKxcbLOUzP5PW1owyQcRw-SFAfxJ5sx2RLZXktRFlyEQ7fJc7NW8Rg1sQRLpBx8XFmRk5MP49Df1-xQtBCb6NFcFkw4S9-SjkU/s320-rw/FB_IMG_1562132739699.jpg" width="180" /></a></div><br /><br />উত্তর: উভয় বৃদ্ধাঙ্গুলী চুম্বন দেয়া মুস্তাহাব। ইহার দলীল হলো শামী কিতাবের এই ইবারত। আযানের সময় শাহাদাতে ছানিয়া অর্থাৎ আশহাদুআন্না মুহম্মদুর রসূলুল্লাহ প্রথমবার শুনে<br />صلى الله عليك يا رسول الله বলা এবং দ্বিতীয়বার শুনে قرة عينى بك يا رسول الله বলা মুস্তাহাব; তৎপর দৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয়ের নখ চুম্বন করে।<br />اللهم متعنى بالسمع والبصر বলা মুস্তাহাব এরূপ আমলকারীকে রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে টেনে বেহেশতে নিয়ে যাবেন। ইহা ইমাম কাহেসতানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কানযুল ইবাদে উল্লেখ আছে। অনুরূপভাবে ফতওয়ায়ে সুফীয়াতে ও কিতাবুল ফিরদাউসে উল্লেখ আছে, যে ব্যক্তি আযানে<br />اشهد ان محمدا رسول الله শুনে আপন বৃদ্ধাঙ্গুলীর নখ চুম্বন করে তার সম্পর্কে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আমি তাকে টেনে বেহেশতের কাতারে প্রবেশ করাবো। উহার বিশদ বিবরণ ইমাম সাখাবীর মাকাসিদুল হাসনাহ হতে বাহরুর রায়েকের হাশিয়ায়ে মলীতে বর্ণনা করা হয়েছে। ইসমাইল জারাহী অনুরূপ তা পোষন করেছেন, তবে তিনি বাড়িয়ে ইহাও বলেছেন যে, এ ব্যাপারে বর্ণিত কোন মরফু হাদীছ শরীফ ও সহীহ ....... প্রমাণিত হয় নাই। (ফতওয়ায়ে দেওবন্দ ২খন্ড ১০৬ ও ১০৭ পৃষ্ঠ)<br /><br />শামী কিতাবের শেষোক্ত এবারতে ইহাও বর্ণনা করা হয়েছে যে, এ ব্যাপারে কোন মরফু সহীহ হাদীছ নেই দ্বঈফ হাদীছ শরীফও ফজিলতের আমলসমূহে আমল করা যায়েয, কিন্তু শর্ত হলো উক্ত কাজকে সুন্নাত অর্থাৎ সুন্নতে মুয়াকাদা মনে করা যাবে না। ইহা দররুল মোখতার কিতাবে উল্লেখ আছে। সুতরাং যেহেতু কোন কোন ক্ষেত্রে এ ব্যাপারে বাড়াবাড়ী হয়ে গেছে আর ইহাকে সুন্নত অর্থাৎ সুন্নতে মোয়াক্কাদাও মনে করে থাকে এবং ইহার তরককারীকে তিরষ্কৃত ধিকৃত করে থাকে এজন্য এই আমল হতে বিরত থাকাকে ওলামায়ে মোকাক্কেকীন নাবধানতা অবলম্বন মনে করে থাকেন আর তরককারী গুনাহগার হবে না, আর এ ব্যক্তির পিছনে এক্তেদা করা জায়িয। (ফতওয়ায়ে দেওব্দ ২খন্ড ১০৬ ও ১০৭ পৃষ্ঠা।<br /><br /><br /></div>

আযানে আশহাদু আন্না মুহম্মদুর রসূলুল্লাহ উচ্চারণের সময় অঙ্গুলী চুম্বন --- দেওবন্দীদের কিতাব থেকে

আযানে আশহাদু আন্না মুহম্মদুর রসূলুল্লাহ উচ্চারণের সময় অঙ্গুলী চুম্বন --- দেওবন্দীদের কিতাব থেকে ============================================...

Read more »

মুনাফিক কারা?

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">🌀 মুনাফিকের পরিচিতি ও পরিণতি 👥<br /><br />মুনাফিক শব্দটি এসেছে আরবি থেকে যার বহু বচন হচ্ছে মুনাফিকুন। ইসলামী পরিভাষায় এর অর্থ হচ্ছে কপটতা, ভন্ডামী, প্রতারণা ইত্যাদি।<br /><br />মুনাফিকি তথা ভন্ডামী বা কপটতা একটি মারাত্মক রোগ। বিশ্বাসগত দিক থেকে কুফরির নিকৃষ্টতম দিক হলো মুনাফিকি। মুনাফিকদের বিষয়ে পবিত্র কোরআনে শতাধিক আয়াতে আলোচনা করা হয়েছে এবং মুসলিমদের জন্য অমুসলিম শত্রুর তুলনায় মুনাফিকরা অধিকতর বেশি বিপজ্জনক শত্রু।<br /><br />মুনাফিকরা মূলত দুমুখো সাপ যার অন্তরে কুফরি থাকে এবং মুখে নিজেকে মুমিন বলে দাবি করে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এরা কাফিরও না আবার মুমিনও না বরং এর মাঝামাঝিতে এদের অবস্থান। এরা ইসলাম তথা পুরো মানবসমাজের জন্য অত্যন্ত ভয়ঙ্কর ।<br /><br />মুনাফিক সম্পর্কে পবিত্র কোরআন মাজীদের সূরা আত-তাওবাহতে মহান আল্লাহ পাক বলেছেন যে, ‘হে প্রিয় নবী! জিহাদ করুন অবিশ্বাসী ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে, আর কঠোর হন তাদের প্রতি। তাদের শেষ আবাসস্থল হচ্ছে জাহান্নাম এবং মন্দ সেই গন্তব্যস্থান!’<br /><br />( সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত – ৭৩)<br /><br />প্রথমত, ‘মুনাফিক’ শব্দটির উৎপত্তি ‘নিফাক’ শব্দমূল থেকে, যার অর্থ হচ্ছে ভেতরে কোনো কিছু গোপন রেখে বিপরীত কথা বা কাজের প্রকাশ। ইসলামী পরিভাষায় মুনাফিকরা অন্তরে কুফরি এবং মুখে ও প্রকাশ্যে ইসলাম প্রকাশ করে বেড়ায়। মুনাফিকদের এই কাজের ব্যাখ্যায় পবিত্র কোরআনে এক আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তারা আল্লাহ ও মুমিনদের ধোঁকা দিতে চায়, তারা আসলে নিজেদের সঙ্গেই প্রতারণা করছে, কিন্তু উপলব্ধি করতে পারছে না।’ (সূরা বাকারা, আয়াত-৯)<br /><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhHCFO_5BYLktQFeMiYBKTL_bPzQMP4F2nIg2_rrBjTqFgpo92ZT__wxNztfOmb-smxULhUV3sFfvpBURHBJjQE3SMO-ExKTiOahjsZNBDUkDM7iXc6O8RkG4fGGEVUJVdg7rXmXSMB59vE/s1600/PicsArt_07-03-11.42.35.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="832" data-original-width="1600" height="166" loading="lazy" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhHCFO_5BYLktQFeMiYBKTL_bPzQMP4F2nIg2_rrBjTqFgpo92ZT__wxNztfOmb-smxULhUV3sFfvpBURHBJjQE3SMO-ExKTiOahjsZNBDUkDM7iXc6O8RkG4fGGEVUJVdg7rXmXSMB59vE/s320-rw/PicsArt_07-03-11.42.35.jpg" width="320" /></a></div><br />দ্বিতীয়ত, মুনাফিক শব্দটির উদ্ভব হয়েছে নফক শব্দ থেকে যার অর্থ- ছিদ্র, গর্ত, বের হওয়া, সুড়ঙ্গ, খরচ করা, ব্যয় করা। কারো কারো মতে, ‘নাফেকুল ইয়ারবু’ বা পাহাড়ি ইঁদুর থেকে মুনাফিক শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে। পাহাড়ি ইঁদুরকে ‘নাফেকুল ইয়ারবু’ বলা হয়। কারণ এরা উভয় অত্যন্ত ধূর্ত হয়, এদের সহজে চিন্হিতক করা যায় না। মুনাফিক দুই ধরনের হয় যথা:<br /><br />(১) বিশ্বাসগত মুনাফিকি,<br />(২) কর্মগত মুনাফিকি।<br /><br />যে মুনাফিকরা অন্তরে কুফরি রেখে নিজেকে মুসলমান বলে দাবি করে তারা হলো বিশ্বাসগত মুনাফিকি।<br /><br />এবং কর্মগত মুনাফিক হচ্ছে তারা যারা -আমানতের খিয়ানত করে, মিথ্যা বলে, ওয়াদা ভঙ্গ করে, ঝগড়ার সময় গালিগালাজ করে ইত্যাদি ।<br /><br />প্রিয়নবী হজরত মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, চারটি স্বভাব যার মধ্যে আছে সে খাঁটি মুনাফিক। আর যার মধ্যে এই চারটির একটি স্বভাবও থাকবে সেও মুনাফিকের কাতারে থাকবে। স্বভাব চারটি হলো:<br />(১) আমানতের খিয়ানতকারী,<br />(২) মিথ্যাবাদী,<br />(৩) ওয়াদা ভঙ্গকারী,<br />(৪) ঝগড়ার সময় গাল-মন্দ কারী।<br /><br />(সহীহ বুখারি, মুসলিম, নাসাঈ, আবু দাউদ, মুসনাদে আহমাদ)<br /><br />এগুলো ছাড়াও মুনাফিকদের আরো কিছু বৈশিষ্ট্য আছে যা তাদের চলাফেরা, কথা-বার্তার মাধ্যমে প্রকাশ পায়। নিচে বৈশিষ্ট্যগুলো সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো:<br /><br />(১) মুনাফিকরা মহান আল্লাহ’র মুমিন বান্দাদের নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ, হাসি তামাশা করে,<br /><br />(২) মুনাফিকরা অহংকারী হয় যা তাদের ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়,<br /><br />(৩) মিথ্যা বলতে বলতে এদের হ্রদয় মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়,<br /><br />(৪) মুমিনদের মূর্খ আখ্যা দেয়া এবং ইসলামের পথে ব্যয়ে বাধা দান করে,<br /><br />(৫) পবিত্র কোরআনে আয়াত সমূহ নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করে,<br /><br />(৬) অন্যের সম্পদ হরণ করে,<br /><br />(৭) মানুষের সঙ্গে বিনা কারণে বিবাদের জড়ায়,<br /><br />(৮) কাফেরদের সঙ্গে সখ্যতা থাকে,<br /><br />(৯) মহান আল্লাহ’র সঙ্গে বিদ্রোহ করে এবং ইবাদতের অলসতা করে,<br /><br />(১০) অনিশ্চয়তা বা দোটানায় ভোগে এবং মুমিন দের সঙ্গে ধোঁকাবাজী করে,<br /><br />(১১) ভীত, কাপুরুষতা, অস্থিরতা ইত্যাদি এদের মধ্যে লক্ষনীয়।<br /><br />মুনাফিকদের শাস্তি সম্পর্কে পবিত্র কোরআন ও হাদীস সমূহতে কঠিন বর্ণনা দেয়া আছে। ইহকালে মুনাফিকরা সম্মানের অধিকারী হতে পারেনা, সাড়াজীবন অপবাদ, ঘৃণা, অসম্মান, এইসব নিয়েই বেঁচে থাকে হয় এবং মৃত্যুর পরেও ভোগ করতে হয় জাহান্নামের কঠিন আযাব। মুনাফিকদের শাস্তি সম্পর্কে ইসলামের পবিত্র ধর্মীয় কিতাব পবিত্র আল কোরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেছেন-<br /><br />‘নিশ্চয়ই মুনাফিকদের অবস্থান হবে জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তর।’ (সুরা: নিসা, আয়াত: ১৪৫)<br /><br />এছাড়াও সূরা আত-তাওবাহতে মহান আল্লাহ পাক ওয়াদা করেছেন যে, ‘মুনাফিক পুরুষ, নারী এবং কাফেরদের জন্য রয়েছে দোজগের আগুন এবং সেখানে তারা চিরদিন থাকবে। সেটাই তাদের জন্যে যথেষ্ট। আর আল্লাহ তাদের অভিসম্পাত করেছেন এবং তাদের জন্যে রয়েছে চিরস্থায়ী আযাব।’<br /><br />(সূরা: আত-তাওবাহ, আয়াত: ৬৮)<br /><br />মুনাফিকদের মৃত্যুর পরে তাদের জানাযা পড়া নিয়ে রাসূল  ﷺ এর একটি হাদীসও বর্ণিত আছে। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেন যে- আব্দুল্লাহ বিন উবাই নামক মুনাফিক নেতা যখন মৃত্যু বরণ করলেন তখন তার ছেলে আব্দুল্লাহ রাসূলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বলল যে, হে রাসূল আপনার পরিধেয় কাপড়টি চাই আমার পিতার কাফনের কাপড় হিসেবে এবং আপনি আমার পিতার জানাযার নামাজ পড়াবেন ও তার আত্মার মাগফেরাতের জন্য দোয়া করবেন।<br /><br />এ কথা শুনে রাসূল তার কাপড় দিলেন এবং জানাযার নামাজ পড়ানোর জন্য যথা সময়ে প্রস্তুতি নিলেন। এই কথা হজরত ওমর (রা.) শোনা মাত্র এসে রাসূলুল্লাহর জামা টেনে ধরলেন এবং বললেন হে রাসূল, মুনাফিকদের জানাযা পড়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা আপনাকে নিষেধ করেননি কি? তখন রাসূল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন দোয়া পড়া না পড়া উভয় আমার ইচ্ছা, আল্লাহ পাক এই ব্যাপারে আমাকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন। এই কথা বলে রাসূল আব্দুল্লাহ ইবনে উবাইয়ের জানাযা পড়ালেন।<br /><br />এই ঘটনার পরে মহান আল্লাহ পাকের তরফ থেকে রাসূল  ﷺ  এর কাছে ওহী নাজিল হলো যে, ‘হে রাসূল  ﷺ , মুনাফিকদের কেউ মারা গেলে আপনি তাদের জানাযার নামাজ আদায় করবেন না এমনকি তাদের কবরের পাশেও দাঁড়াবেন না।’<br /><br />(সূরা: আত -তাওবাহ, আয়াত: ৮৪)<br /><br />মুনাফিক নামক এই ব্যাধি দূর হলে একটি সুন্দর ও আদর্শ সমাজ এবং রাষ্ট্রের গোড়াপত্তন হবে।<br /><br />পরিশেষে মহান রাব্বুল আলামীনের কাছে প্রার্থনা থাকবে যেনো তিনি আমাদের সকলকে হেদায়েত করেন এবং মুনাফিকি সকল কাজ থেকে আমাদের হেফাজত করেন।<br /><br /></div>

মুনাফিক কারা?

🌀 মুনাফিকের পরিচিতি ও পরিণতি 👥 মুনাফিক শব্দটি এসেছে আরবি থেকে যার বহু বচন হচ্ছে মুনাফিকুন। ইসলামী পরিভাষায় এর অর্থ হচ্ছে কপটতা, ভন্ডামী, প...

Read more »

মুনাফিক কারা?

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> 🌀 মুনাফিকের পরিচিতি ও পরিণতি 👥<br /> <br /> মুনাফিক শব্দটি এসেছে আরবি থেকে যার বহু বচন হচ্ছে মুনাফিকুন। ইসলামী পরিভাষায় এর অর্থ হচ্ছে কপটতা, ভন্ডামী, প্রতারণা ইত্যাদি।<br /> <br /> মুনাফিকি তথা ভন্ডামী বা কপটতা একটি মারাত্মক রোগ। বিশ্বাসগত দিক থেকে কুফরির নিকৃষ্টতম দিক হলো মুনাফিকি। মুনাফিকদের বিষয়ে পবিত্র কোরআনে শতাধিক আয়াতে আলোচনা করা হয়েছে এবং মুসলিমদের জন্য অমুসলিম শত্রুর তুলনায় মুনাফিকরা অধিকতর বেশি বিপজ্জনক শত্রু।<br /> <br /> মুনাফিকরা মূলত দুমুখো সাপ যার অন্তরে কুফরি থাকে এবং মুখে নিজেকে মুমিন বলে দাবি করে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এরা কাফিরও না আবার মুমিনও না বরং এর মাঝামাঝিতে এদের অবস্থান। এরা ইসলাম তথা পুরো মানবসমাজের জন্য অত্যন্ত ভয়ঙ্কর ।<br /> <br /> মুনাফিক সম্পর্কে পবিত্র কোরআন মাজীদের সূরা আত-তাওবাহতে মহান আল্লাহ পাক বলেছেন যে, ‘হে প্রিয় নবী! জিহাদ করুন অবিশ্বাসী ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে, আর কঠোর হন তাদের প্রতি। তাদের শেষ আবাসস্থল হচ্ছে জাহান্নাম এবং মন্দ সেই গন্তব্যস্থান!’<br /> <br /> ( সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত – ৭৩)<br /> <br /> প্রথমত, ‘মুনাফিক’ শব্দটির উৎপত্তি ‘নিফাক’ শব্দমূল থেকে, যার অর্থ হচ্ছে ভেতরে কোনো কিছু গোপন রেখে বিপরীত কথা বা কাজের প্রকাশ। ইসলামী পরিভাষায় মুনাফিকরা অন্তরে কুফরি এবং মুখে ও প্রকাশ্যে ইসলাম প্রকাশ করে বেড়ায়। মুনাফিকদের এই কাজের ব্যাখ্যায় পবিত্র কোরআনে এক আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তারা আল্লাহ ও মুমিনদের ধোঁকা দিতে চায়, তারা আসলে নিজেদের সঙ্গেই প্রতারণা করছে, কিন্তু উপলব্ধি করতে পারছে না।’ (সূরা বাকারা, আয়াত-৯)<br /> <div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"> <a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgmpC-0CsBgSON29YhIDV4CXv-grai53PwnX6XZzc-tCIZ3KhcPALdftwJuyhGp7G12xyNFt8fpQuXipC40syVqJtOqmz-nMF5OZy-Ev9Y8ZF56pA8YA3X5ejJZHghjcPt6zwiMsoTFWRTy/s1600/PicsArt_07-03-11.42.35.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="832" data-original-width="1600" height="166" loading="lazy" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgmpC-0CsBgSON29YhIDV4CXv-grai53PwnX6XZzc-tCIZ3KhcPALdftwJuyhGp7G12xyNFt8fpQuXipC40syVqJtOqmz-nMF5OZy-Ev9Y8ZF56pA8YA3X5ejJZHghjcPt6zwiMsoTFWRTy/s320-rw/PicsArt_07-03-11.42.35.jpg" width="320" /></a></div> <br /> দ্বিতীয়ত, মুনাফিক শব্দটির উদ্ভব হয়েছে নফক শব্দ থেকে যার অর্থ- ছিদ্র, গর্ত, বের হওয়া, সুড়ঙ্গ, খরচ করা, ব্যয় করা। কারো কারো মতে, ‘নাফেকুল ইয়ারবু’ বা পাহাড়ি ইঁদুর থেকে মুনাফিক শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে। পাহাড়ি ইঁদুরকে ‘নাফেকুল ইয়ারবু’ বলা হয়। কারণ এরা উভয় অত্যন্ত ধূর্ত হয়, এদের সহজে চিন্হিতক করা যায় না। মুনাফিক দুই ধরনের হয় যথা:<br /> <br /> (১) বিশ্বাসগত মুনাফিকি,<br /> (২) কর্মগত মুনাফিকি।<br /> <br /> যে মুনাফিকরা অন্তরে কুফরি রেখে নিজেকে মুসলমান বলে দাবি করে তারা হলো বিশ্বাসগত মুনাফিকি।<br /> <br /> এবং কর্মগত মুনাফিক হচ্ছে তারা যারা -আমানতের খিয়ানত করে, মিথ্যা বলে, ওয়াদা ভঙ্গ করে, ঝগড়ার সময় গালিগালাজ করে ইত্যাদি ।<br /> <br /> প্রিয়নবী হজরত মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, চারটি স্বভাব যার মধ্যে আছে সে খাঁটি মুনাফিক। আর যার মধ্যে এই চারটির একটি স্বভাবও থাকবে সেও মুনাফিকের কাতারে থাকবে। স্বভাব চারটি হলো:<br /> (১) আমানতের খিয়ানতকারী,<br /> (২) মিথ্যাবাদী,<br /> (৩) ওয়াদা ভঙ্গকারী,<br /> (৪) ঝগড়ার সময় গাল-মন্দ কারী।<br /> <br /> (সহীহ বুখারি, মুসলিম, নাসাঈ, আবু দাউদ, মুসনাদে আহমাদ)<br /> <br /> এগুলো ছাড়াও মুনাফিকদের আরো কিছু বৈশিষ্ট্য আছে যা তাদের চলাফেরা, কথা-বার্তার মাধ্যমে প্রকাশ পায়। নিচে বৈশিষ্ট্যগুলো সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো:<br /> <br /> (১) মুনাফিকরা মহান আল্লাহ’র মুমিন বান্দাদের নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ, হাসি তামাশা করে,<br /> <br /> (২) মুনাফিকরা অহংকারী হয় যা তাদের ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়,<br /> <br /> (৩) মিথ্যা বলতে বলতে এদের হ্রদয় মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়,<br /> <br /> (৪) মুমিনদের মূর্খ আখ্যা দেয়া এবং ইসলামের পথে ব্যয়ে বাধা দান করে,<br /> <br /> (৫) পবিত্র কোরআনে আয়াত সমূহ নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করে,<br /> <br /> (৬) অন্যের সম্পদ হরণ করে,<br /> <br /> (৭) মানুষের সঙ্গে বিনা কারণে বিবাদের জড়ায়,<br /> <br /> (৮) কাফেরদের সঙ্গে সখ্যতা থাকে,<br /> <br /> (৯) মহান আল্লাহ’র সঙ্গে বিদ্রোহ করে এবং ইবাদতের অলসতা করে,<br /> <br /> (১০) অনিশ্চয়তা বা দোটানায় ভোগে এবং মুমিন দের সঙ্গে ধোঁকাবাজী করে,<br /> <br /> (১১) ভীত, কাপুরুষতা, অস্থিরতা ইত্যাদি এদের মধ্যে লক্ষনীয়।<br /> <br /> মুনাফিকদের শাস্তি সম্পর্কে পবিত্র কোরআন ও হাদীস সমূহতে কঠিন বর্ণনা দেয়া আছে। ইহকালে মুনাফিকরা সম্মানের অধিকারী হতে পারেনা, সাড়াজীবন অপবাদ, ঘৃণা, অসম্মান, এইসব নিয়েই বেঁচে থাকে হয় এবং মৃত্যুর পরেও ভোগ করতে হয় জাহান্নামের কঠিন আযাব। মুনাফিকদের শাস্তি সম্পর্কে ইসলামের পবিত্র ধর্মীয় কিতাব পবিত্র আল কোরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেছেন-<br /> <br /> ‘নিশ্চয়ই মুনাফিকদের অবস্থান হবে জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তর।’ (সুরা: নিসা, আয়াত: ১৪৫)<br /> <br /> এছাড়াও সূরা আত-তাওবাহতে মহান আল্লাহ পাক ওয়াদা করেছেন যে, ‘মুনাফিক পুরুষ, নারী এবং কাফেরদের জন্য রয়েছে দোজগের আগুন এবং সেখানে তারা চিরদিন থাকবে। সেটাই তাদের জন্যে যথেষ্ট। আর আল্লাহ তাদের অভিসম্পাত করেছেন এবং তাদের জন্যে রয়েছে চিরস্থায়ী আযাব।’<br /> <br /> (সূরা: আত-তাওবাহ, আয়াত: ৬৮)<br /> <br /> মুনাফিকদের মৃত্যুর পরে তাদের জানাযা পড়া নিয়ে রাসূল  ﷺ এর একটি হাদীসও বর্ণিত আছে। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেন যে- আব্দুল্লাহ বিন উবাই নামক মুনাফিক নেতা যখন মৃত্যু বরণ করলেন তখন তার ছেলে আব্দুল্লাহ রাসূলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বলল যে, হে রাসূল আপনার পরিধেয় কাপড়টি চাই আমার পিতার কাফনের কাপড় হিসেবে এবং আপনি আমার পিতার জানাযার নামাজ পড়াবেন ও তার আত্মার মাগফেরাতের জন্য দোয়া করবেন।<br /> <br /> এ কথা শুনে রাসূল তার কাপড় দিলেন এবং জানাযার নামাজ পড়ানোর জন্য যথা সময়ে প্রস্তুতি নিলেন। এই কথা হজরত ওমর (রা.) শোনা মাত্র এসে রাসূলুল্লাহর জামা টেনে ধরলেন এবং বললেন হে রাসূল, মুনাফিকদের জানাযা পড়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা আপনাকে নিষেধ করেননি কি? তখন রাসূল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন দোয়া পড়া না পড়া উভয় আমার ইচ্ছা, আল্লাহ পাক এই ব্যাপারে আমাকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন। এই কথা বলে রাসূল আব্দুল্লাহ ইবনে উবাইয়ের জানাযা পড়ালেন।<br /> <br /> এই ঘটনার পরে মহান আল্লাহ পাকের তরফ থেকে রাসূল  ﷺ  এর কাছে ওহী নাজিল হলো যে, ‘হে রাসূল  ﷺ , মুনাফিকদের কেউ মারা গেলে আপনি তাদের জানাযার নামাজ আদায় করবেন না এমনকি তাদের কবরের পাশেও দাঁড়াবেন না।’<br /> <br /> (সূরা: আত -তাওবাহ, আয়াত: ৮৪)<br /> <br /> মুনাফিক নামক এই ব্যাধি দূর হলে একটি সুন্দর ও আদর্শ সমাজ এবং রাষ্ট্রের গোড়াপত্তন হবে।<br /> <br /> পরিশেষে মহান রাব্বুল আলামীনের কাছে প্রার্থনা থাকবে যেনো তিনি আমাদের সকলকে হেদায়েত করেন এবং মুনাফিকি সকল কাজ থেকে আমাদের হেফাজত করেন।<br /> <br /></div>

মুনাফিক কারা?

🌀 মুনাফিকের পরিচিতি ও পরিণতি 👥 মুনাফিক শব্দটি এসেছে আরবি থেকে যার বহু বচন হচ্ছে মুনাফিকুন। ইসলামী পরিভাষায় এর অর্থ হচ্ছে কপটতা, ভন্ডামী...

Read more »

মুনাফিক কারা?

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"><br />🌀 মুনাফিকের পরিচিতি ও পরিণতি 👥<br /><br /><br /><br />মুনাফিক শব্দটি এসেছে আরবি থেকে যার বহু বচন হচ্ছে মুনাফিকুন। ইসলামী পরিভাষায় এর অর্থ হচ্ছে কপটতা, ভন্ডামী, প্রতারণা ইত্যাদি।<br /><br /><br /><br />মুনাফিকি তথা ভন্ডামী বা কপটতা একটি মারাত্মক রোগ। বিশ্বাসগত দিক থেকে কুফরির নিকৃষ্টতম দিক হলো মুনাফিকি। মুনাফিকদের বিষয়ে পবিত্র কোরআনে শতাধিক আয়াতে আলোচনা করা হয়েছে এবং মুসলিমদের জন্য অমুসলিম শত্রুর তুলনায় মুনাফিকরা অধিকতর বেশি বিপজ্জনক শত্রু।<br /><br /><br /><br />মুনাফিকরা মূলত দুমুখো সাপ যার অন্তরে কুফরি থাকে এবং মুখে নিজেকে মুমিন বলে দাবি করে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এরা কাফিরও না আবার মুমিনও না বরং এর মাঝামাঝিতে এদের অবস্থান। এরা ইসলাম তথা পুরো মানবসমাজের জন্য অত্যন্ত ভয়ঙ্কর ।<br /><br /><br /><br />মুনাফিক সম্পর্কে পবিত্র কোরআন মাজীদের সূরা আত-তাওবাহতে মহান আল্লাহ পাক বলেছেন যে, ‘হে প্রিয় নবী! জিহাদ করুন অবিশ্বাসী ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে, আর কঠোর হন তাদের প্রতি। তাদের শেষ আবাসস্থল হচ্ছে জাহান্নাম এবং মন্দ সেই গন্তব্যস্থান!’<br /><br /><br /><br />( সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত – ৭৩)<br /><br /><br /><br />প্রথমত, ‘মুনাফিক’ শব্দটির উৎপত্তি ‘নিফাক’ শব্দমূল থেকে, যার অর্থ হচ্ছে ভেতরে কোনো কিছু গোপন রেখে বিপরীত কথা বা কাজের প্রকাশ। ইসলামী পরিভাষায় মুনাফিকরা অন্তরে কুফরি এবং মুখে ও প্রকাশ্যে ইসলাম প্রকাশ করে বেড়ায়। মুনাফিকদের এই কাজের ব্যাখ্যায় পবিত্র কোরআনে এক আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তারা আল্লাহ ও মুমিনদের ধোঁকা দিতে চায়, তারা আসলে নিজেদের সঙ্গেই প্রতারণা করছে, কিন্তু উপলব্ধি করতে পারছে না।’ (সূরা বাকারা, আয়াত-৯)<br /><br /><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><br /><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEg8Azn0ScLJU3Ny60i5rk8GyhHuuG7G7deSH9fnL4BlNEk2H_-uHA_GPQul8yEL_EkIC8nONrYij-kW807Ne4dMgZho78jEUIe-2adQNYmGDX3E9wZcWXIqx7sSXo1cz4ptUilA0UOhm1Ic/s1600/PicsArt_07-03-11.42.35.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="832" data-original-width="1600" height="166" loading="lazy" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEg8Azn0ScLJU3Ny60i5rk8GyhHuuG7G7deSH9fnL4BlNEk2H_-uHA_GPQul8yEL_EkIC8nONrYij-kW807Ne4dMgZho78jEUIe-2adQNYmGDX3E9wZcWXIqx7sSXo1cz4ptUilA0UOhm1Ic/s320-rw/PicsArt_07-03-11.42.35.jpg" width="320" /></a></div><br /><br /><br />দ্বিতীয়ত, মুনাফিক শব্দটির উদ্ভব হয়েছে নফক শব্দ থেকে যার অর্থ- ছিদ্র, গর্ত, বের হওয়া, সুড়ঙ্গ, খরচ করা, ব্যয় করা। কারো কারো মতে, ‘নাফেকুল ইয়ারবু’ বা পাহাড়ি ইঁদুর থেকে মুনাফিক শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে। পাহাড়ি ইঁদুরকে ‘নাফেকুল ইয়ারবু’ বলা হয়। কারণ এরা উভয় অত্যন্ত ধূর্ত হয়, এদের সহজে চিন্হিতক করা যায় না। মুনাফিক দুই ধরনের হয় যথা:<br /><br /><br /><br />(১) বিশ্বাসগত মুনাফিকি,<br /><br />(২) কর্মগত মুনাফিকি।<br /><br /><br /><br />যে মুনাফিকরা অন্তরে কুফরি রেখে নিজেকে মুসলমান বলে দাবি করে তারা হলো বিশ্বাসগত মুনাফিকি।<br /><br /><br /><br />এবং কর্মগত মুনাফিক হচ্ছে তারা যারা -আমানতের খিয়ানত করে, মিথ্যা বলে, ওয়াদা ভঙ্গ করে, ঝগড়ার সময় গালিগালাজ করে ইত্যাদি ।<br /><br /><br /><br />প্রিয়নবী হজরত মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, চারটি স্বভাব যার মধ্যে আছে সে খাঁটি মুনাফিক। আর যার মধ্যে এই চারটির একটি স্বভাবও থাকবে সেও মুনাফিকের কাতারে থাকবে। স্বভাব চারটি হলো:<br /><br />(১) আমানতের খিয়ানতকারী,<br /><br />(২) মিথ্যাবাদী,<br /><br />(৩) ওয়াদা ভঙ্গকারী,<br /><br />(৪) ঝগড়ার সময় গাল-মন্দ কারী।<br /><br /><br /><br />(সহীহ বুখারি, মুসলিম, নাসাঈ, আবু দাউদ, মুসনাদে আহমাদ)<br /><br /><br /><br />এগুলো ছাড়াও মুনাফিকদের আরো কিছু বৈশিষ্ট্য আছে যা তাদের চলাফেরা, কথা-বার্তার মাধ্যমে প্রকাশ পায়। নিচে বৈশিষ্ট্যগুলো সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো:<br /><br /><br /><br />(১) মুনাফিকরা মহান আল্লাহ’র মুমিন বান্দাদের নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ, হাসি তামাশা করে,<br /><br /><br /><br />(২) মুনাফিকরা অহংকারী হয় যা তাদের ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়,<br /><br /><br /><br />(৩) মিথ্যা বলতে বলতে এদের হ্রদয় মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়,<br /><br /><br /><br />(৪) মুমিনদের মূর্খ আখ্যা দেয়া এবং ইসলামের পথে ব্যয়ে বাধা দান করে,<br /><br /><br /><br />(৫) পবিত্র কোরআনে আয়াত সমূহ নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করে,<br /><br /><br /><br />(৬) অন্যের সম্পদ হরণ করে,<br /><br /><br /><br />(৭) মানুষের সঙ্গে বিনা কারণে বিবাদের জড়ায়,<br /><br /><br /><br />(৮) কাফেরদের সঙ্গে সখ্যতা থাকে,<br /><br /><br /><br />(৯) মহান আল্লাহ’র সঙ্গে বিদ্রোহ করে এবং ইবাদতের অলসতা করে,<br /><br /><br /><br />(১০) অনিশ্চয়তা বা দোটানায় ভোগে এবং মুমিন দের সঙ্গে ধোঁকাবাজী করে,<br /><br /><br /><br />(১১) ভীত, কাপুরুষতা, অস্থিরতা ইত্যাদি এদের মধ্যে লক্ষনীয়।<br /><br /><br /><br />মুনাফিকদের শাস্তি সম্পর্কে পবিত্র কোরআন ও হাদীস সমূহতে কঠিন বর্ণনা দেয়া আছে। ইহকালে মুনাফিকরা সম্মানের অধিকারী হতে পারেনা, সাড়াজীবন অপবাদ, ঘৃণা, অসম্মান, এইসব নিয়েই বেঁচে থাকে হয় এবং মৃত্যুর পরেও ভোগ করতে হয় জাহান্নামের কঠিন আযাব। মুনাফিকদের শাস্তি সম্পর্কে ইসলামের পবিত্র ধর্মীয় কিতাব পবিত্র আল কোরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেছেন-<br /><br /><br /><br />‘নিশ্চয়ই মুনাফিকদের অবস্থান হবে জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তর।’ (সুরা: নিসা, আয়াত: ১৪৫)<br /><br /><br /><br />এছাড়াও সূরা আত-তাওবাহতে মহান আল্লাহ পাক ওয়াদা করেছেন যে, ‘মুনাফিক পুরুষ, নারী এবং কাফেরদের জন্য রয়েছে দোজগের আগুন এবং সেখানে তারা চিরদিন থাকবে। সেটাই তাদের জন্যে যথেষ্ট। আর আল্লাহ তাদের অভিসম্পাত করেছেন এবং তাদের জন্যে রয়েছে চিরস্থায়ী আযাব।’<br /><br /><br /><br />(সূরা: আত-তাওবাহ, আয়াত: ৬৮)<br /><br /><br /><br />মুনাফিকদের মৃত্যুর পরে তাদের জানাযা পড়া নিয়ে রাসূল  ﷺ এর একটি হাদীসও বর্ণিত আছে। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেন যে- আব্দুল্লাহ বিন উবাই নামক মুনাফিক নেতা যখন মৃত্যু বরণ করলেন তখন তার ছেলে আব্দুল্লাহ রাসূলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বলল যে, হে রাসূল আপনার পরিধেয় কাপড়টি চাই আমার পিতার কাফনের কাপড় হিসেবে এবং আপনি আমার পিতার জানাযার নামাজ পড়াবেন ও তার আত্মার মাগফেরাতের জন্য দোয়া করবেন।<br /><br /><br /><br />এ কথা শুনে রাসূল তার কাপড় দিলেন এবং জানাযার নামাজ পড়ানোর জন্য যথা সময়ে প্রস্তুতি নিলেন। এই কথা হজরত ওমর (রা.) শোনা মাত্র এসে রাসূলুল্লাহর জামা টেনে ধরলেন এবং বললেন হে রাসূল, মুনাফিকদের জানাযা পড়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা আপনাকে নিষেধ করেননি কি? তখন রাসূল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন দোয়া পড়া না পড়া উভয় আমার ইচ্ছা, আল্লাহ পাক এই ব্যাপারে আমাকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন। এই কথা বলে রাসূল আব্দুল্লাহ ইবনে উবাইয়ের জানাযা পড়ালেন।<br /><br /><br /><br />এই ঘটনার পরে মহান আল্লাহ পাকের তরফ থেকে রাসূল  ﷺ  এর কাছে ওহী নাজিল হলো যে, ‘হে রাসূল  ﷺ , মুনাফিকদের কেউ মারা গেলে আপনি তাদের জানাযার নামাজ আদায় করবেন না এমনকি তাদের কবরের পাশেও দাঁড়াবেন না।’<br /><br /><br /><br />(সূরা: আত -তাওবাহ, আয়াত: ৮৪)<br /><br /><br /><br />মুনাফিক নামক এই ব্যাধি দূর হলে একটি সুন্দর ও আদর্শ সমাজ এবং রাষ্ট্রের গোড়াপত্তন হবে।<br /><br /><br /><br />পরিশেষে মহান রাব্বুল আলামীনের কাছে প্রার্থনা থাকবে যেনো তিনি আমাদের সকলকে হেদায়েত করেন এবং মুনাফিকি সকল কাজ থেকে আমাদের হেফাজত করেন।<br /><br /><br /></div><br />

মুনাফিক কারা?

🌀 মুনাফিকের পরিচিতি ও পরিণতি 👥 মুনাফিক শব্দটি এসেছে আরবি থেকে যার বহু বচন হচ্ছে মুনাফিকুন। ইসলামী পরিভাষায় এর অর্থ হচ্ছে কপটতা, ভন্ডামী, প...

Read more »

মুনাফিক কারা?

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">🌀 মুনাফিকের পরিচিতি ও পরিণতি 👥<br /><br />মুনাফিক শব্দটি এসেছে আরবি থেকে যার বহু বচন হচ্ছে মুনাফিকুন। ইসলামী পরিভাষায় এর অর্থ হচ্ছে কপটতা, ভন্ডামী, প্রতারণা ইত্যাদি।<br /><br />মুনাফিকি তথা ভন্ডামী বা কপটতা একটি মারাত্মক রোগ। বিশ্বাসগত দিক থেকে কুফরির নিকৃষ্টতম দিক হলো মুনাফিকি। মুনাফিকদের বিষয়ে পবিত্র কোরআনে শতাধিক আয়াতে আলোচনা করা হয়েছে এবং মুসলিমদের জন্য অমুসলিম শত্রুর তুলনায় মুনাফিকরা অধিকতর বেশি বিপজ্জনক শত্রু।<br /><br />মুনাফিকরা মূলত দুমুখো সাপ যার অন্তরে কুফরি থাকে এবং মুখে নিজেকে মুমিন বলে দাবি করে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এরা কাফিরও না আবার মুমিনও না বরং এর মাঝামাঝিতে এদের অবস্থান। এরা ইসলাম তথা পুরো মানবসমাজের জন্য অত্যন্ত ভয়ঙ্কর ।<br /><br />মুনাফিক সম্পর্কে পবিত্র কোরআন মাজীদের সূরা আত-তাওবাহতে মহান আল্লাহ পাক বলেছেন যে, ‘হে প্রিয় নবী! জিহাদ করুন অবিশ্বাসী ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে, আর কঠোর হন তাদের প্রতি। তাদের শেষ আবাসস্থল হচ্ছে জাহান্নাম এবং মন্দ সেই গন্তব্যস্থান!’<br /><br />( সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত – ৭৩)<br /><br />প্রথমত, ‘মুনাফিক’ শব্দটির উৎপত্তি ‘নিফাক’ শব্দমূল থেকে, যার অর্থ হচ্ছে ভেতরে কোনো কিছু গোপন রেখে বিপরীত কথা বা কাজের প্রকাশ। ইসলামী পরিভাষায় মুনাফিকরা অন্তরে কুফরি এবং মুখে ও প্রকাশ্যে ইসলাম প্রকাশ করে বেড়ায়। মুনাফিকদের এই কাজের ব্যাখ্যায় পবিত্র কোরআনে এক আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তারা আল্লাহ ও মুমিনদের ধোঁকা দিতে চায়, তারা আসলে নিজেদের সঙ্গেই প্রতারণা করছে, কিন্তু উপলব্ধি করতে পারছে না।’ (সূরা বাকারা, আয়াত-৯)<br /><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEg8Azn0ScLJU3Ny60i5rk8GyhHuuG7G7deSH9fnL4BlNEk2H_-uHA_GPQul8yEL_EkIC8nONrYij-kW807Ne4dMgZho78jEUIe-2adQNYmGDX3E9wZcWXIqx7sSXo1cz4ptUilA0UOhm1Ic/s1600/PicsArt_07-03-11.42.35.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="832" data-original-width="1600" height="166" loading="lazy" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEg8Azn0ScLJU3Ny60i5rk8GyhHuuG7G7deSH9fnL4BlNEk2H_-uHA_GPQul8yEL_EkIC8nONrYij-kW807Ne4dMgZho78jEUIe-2adQNYmGDX3E9wZcWXIqx7sSXo1cz4ptUilA0UOhm1Ic/s320-rw/PicsArt_07-03-11.42.35.jpg" width="320" /></a></div><br />দ্বিতীয়ত, মুনাফিক শব্দটির উদ্ভব হয়েছে নফক শব্দ থেকে যার অর্থ- ছিদ্র, গর্ত, বের হওয়া, সুড়ঙ্গ, খরচ করা, ব্যয় করা। কারো কারো মতে, ‘নাফেকুল ইয়ারবু’ বা পাহাড়ি ইঁদুর থেকে মুনাফিক শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে। পাহাড়ি ইঁদুরকে ‘নাফেকুল ইয়ারবু’ বলা হয়। কারণ এরা উভয় অত্যন্ত ধূর্ত হয়, এদের সহজে চিন্হিতক করা যায় না। মুনাফিক দুই ধরনের হয় যথা:<br /><br />(১) বিশ্বাসগত মুনাফিকি,<br />(২) কর্মগত মুনাফিকি।<br /><br />যে মুনাফিকরা অন্তরে কুফরি রেখে নিজেকে মুসলমান বলে দাবি করে তারা হলো বিশ্বাসগত মুনাফিকি।<br /><br />এবং কর্মগত মুনাফিক হচ্ছে তারা যারা -আমানতের খিয়ানত করে, মিথ্যা বলে, ওয়াদা ভঙ্গ করে, ঝগড়ার সময় গালিগালাজ করে ইত্যাদি ।<br /><br />প্রিয়নবী হজরত মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, চারটি স্বভাব যার মধ্যে আছে সে খাঁটি মুনাফিক। আর যার মধ্যে এই চারটির একটি স্বভাবও থাকবে সেও মুনাফিকের কাতারে থাকবে। স্বভাব চারটি হলো:<br />(১) আমানতের খিয়ানতকারী,<br />(২) মিথ্যাবাদী,<br />(৩) ওয়াদা ভঙ্গকারী,<br />(৪) ঝগড়ার সময় গাল-মন্দ কারী।<br /><br />(সহীহ বুখারি, মুসলিম, নাসাঈ, আবু দাউদ, মুসনাদে আহমাদ)<br /><br />এগুলো ছাড়াও মুনাফিকদের আরো কিছু বৈশিষ্ট্য আছে যা তাদের চলাফেরা, কথা-বার্তার মাধ্যমে প্রকাশ পায়। নিচে বৈশিষ্ট্যগুলো সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো:<br /><br />(১) মুনাফিকরা মহান আল্লাহ’র মুমিন বান্দাদের নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ, হাসি তামাশা করে,<br /><br />(২) মুনাফিকরা অহংকারী হয় যা তাদের ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়,<br /><br />(৩) মিথ্যা বলতে বলতে এদের হ্রদয় মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়,<br /><br />(৪) মুমিনদের মূর্খ আখ্যা দেয়া এবং ইসলামের পথে ব্যয়ে বাধা দান করে,<br /><br />(৫) পবিত্র কোরআনে আয়াত সমূহ নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করে,<br /><br />(৬) অন্যের সম্পদ হরণ করে,<br /><br />(৭) মানুষের সঙ্গে বিনা কারণে বিবাদের জড়ায়,<br /><br />(৮) কাফেরদের সঙ্গে সখ্যতা থাকে,<br /><br />(৯) মহান আল্লাহ’র সঙ্গে বিদ্রোহ করে এবং ইবাদতের অলসতা করে,<br /><br />(১০) অনিশ্চয়তা বা দোটানায় ভোগে এবং মুমিন দের সঙ্গে ধোঁকাবাজী করে,<br /><br />(১১) ভীত, কাপুরুষতা, অস্থিরতা ইত্যাদি এদের মধ্যে লক্ষনীয়।<br /><br />মুনাফিকদের শাস্তি সম্পর্কে পবিত্র কোরআন ও হাদীস সমূহতে কঠিন বর্ণনা দেয়া আছে। ইহকালে মুনাফিকরা সম্মানের অধিকারী হতে পারেনা, সাড়াজীবন অপবাদ, ঘৃণা, অসম্মান, এইসব নিয়েই বেঁচে থাকে হয় এবং মৃত্যুর পরেও ভোগ করতে হয় জাহান্নামের কঠিন আযাব। মুনাফিকদের শাস্তি সম্পর্কে ইসলামের পবিত্র ধর্মীয় কিতাব পবিত্র আল কোরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেছেন-<br /><br />‘নিশ্চয়ই মুনাফিকদের অবস্থান হবে জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তর।’ (সুরা: নিসা, আয়াত: ১৪৫)<br /><br />এছাড়াও সূরা আত-তাওবাহতে মহান আল্লাহ পাক ওয়াদা করেছেন যে, ‘মুনাফিক পুরুষ, নারী এবং কাফেরদের জন্য রয়েছে দোজগের আগুন এবং সেখানে তারা চিরদিন থাকবে। সেটাই তাদের জন্যে যথেষ্ট। আর আল্লাহ তাদের অভিসম্পাত করেছেন এবং তাদের জন্যে রয়েছে চিরস্থায়ী আযাব।’<br /><br />(সূরা: আত-তাওবাহ, আয়াত: ৬৮)<br /><br />মুনাফিকদের মৃত্যুর পরে তাদের জানাযা পড়া নিয়ে রাসূল  ﷺ এর একটি হাদীসও বর্ণিত আছে। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেন যে- আব্দুল্লাহ বিন উবাই নামক মুনাফিক নেতা যখন মৃত্যু বরণ করলেন তখন তার ছেলে আব্দুল্লাহ রাসূলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বলল যে, হে রাসূল আপনার পরিধেয় কাপড়টি চাই আমার পিতার কাফনের কাপড় হিসেবে এবং আপনি আমার পিতার জানাযার নামাজ পড়াবেন ও তার আত্মার মাগফেরাতের জন্য দোয়া করবেন।<br /><br />এ কথা শুনে রাসূল তার কাপড় দিলেন এবং জানাযার নামাজ পড়ানোর জন্য যথা সময়ে প্রস্তুতি নিলেন। এই কথা হজরত ওমর (রা.) শোনা মাত্র এসে রাসূলুল্লাহর জামা টেনে ধরলেন এবং বললেন হে রাসূল, মুনাফিকদের জানাযা পড়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা আপনাকে নিষেধ করেননি কি? তখন রাসূল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন দোয়া পড়া না পড়া উভয় আমার ইচ্ছা, আল্লাহ পাক এই ব্যাপারে আমাকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন। এই কথা বলে রাসূল আব্দুল্লাহ ইবনে উবাইয়ের জানাযা পড়ালেন।<br /><br />এই ঘটনার পরে মহান আল্লাহ পাকের তরফ থেকে রাসূল  ﷺ  এর কাছে ওহী নাজিল হলো যে, ‘হে রাসূল  ﷺ , মুনাফিকদের কেউ মারা গেলে আপনি তাদের জানাযার নামাজ আদায় করবেন না এমনকি তাদের কবরের পাশেও দাঁড়াবেন না।’<br /><br />(সূরা: আত -তাওবাহ, আয়াত: ৮৪)<br /><br />মুনাফিক নামক এই ব্যাধি দূর হলে একটি সুন্দর ও আদর্শ সমাজ এবং রাষ্ট্রের গোড়াপত্তন হবে।<br /><br />পরিশেষে মহান রাব্বুল আলামীনের কাছে প্রার্থনা থাকবে যেনো তিনি আমাদের সকলকে হেদায়েত করেন এবং মুনাফিকি সকল কাজ থেকে আমাদের হেফাজত করেন।<br /><br /></div>

মুনাফিক কারা?

🌀 মুনাফিকের পরিচিতি ও পরিণতি 👥 মুনাফিক শব্দটি এসেছে আরবি থেকে যার বহু বচন হচ্ছে মুনাফিকুন। ইসলামী পরিভাষায় এর অর্থ হচ্ছে কপটতা, ভন্ডামী, প...

Read more »

চেয়ারে বসে নামাজ আদায়

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">بسم الله الرحمن الرحيم<br /><br />চেয়ারে বসে নামায আদায়- মূলনীতি ও কিছু বিধান<br /><br />ইসলাম শাশ্বত, সত্য, স্বভাবজাত ও বাস্তববাদী ধর্ম। ইসলামের প্রতিটি বিধান অত্যন্ত যৌক্তিক ও বাস্তবমুখী। চির সুন্দর,সহজ-সরল ও সর্বোপযোগী।<br /><br />ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিধান হচ্ছে, নামাজ। আল্লাহপাক যা নবীজী (সা.) কে মেরাজের রাতে পুরস্কার হিসেবে দিয়েছিলেন। নামাজ মহান প্রভুর দরবারে দীনতা, নিয়ামতরাজির প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং তাঁর শাহী দরবারে বান্দার নানাবিদ চাহিদা পূরণের মিনতি জানানোর মাধ্যম। ঈমানের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত নামাজ। তাই ঈমানের পরে, সকল ইবাদতের ঊর্ধ্বে তার স্থান। যে নামাজ কায়েম করল, সে দ্বীন প্রতিষ্ঠিত করল। আর যে নামাজ ধ্বংস করল, সে দ্বীন ধ্বংস করল। অর্থাৎ যার নামাজ ঠিক তার দ্বীন ঠিক। আর যার নামাজ বরবাদ তার দ্বীন বরবাদ। অতএব, যে ব্যক্তির নামাজ যত সুন্দর হবে, তার দুনিয়া-আখেরাতের জিন্দেগীও তত সুন্দর ও সফল হবে।<br /><br />তবে নামাজের এ অসীম গুরুত্বের পাশাপাশি শরীয়তের আরেকটি মৌলিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি লক্ষ্য রাখা আবশ্যক। আর তা হচ্ছে, সকল ক্ষেত্রে সহজীকরণ। আল্লাহ পাক সাধ্যাতীত নির্দেশ দেন না, বরং যা সহজ তাই আল্লাহর নিকট প্রিয়।<br /><br />ইরশাদ হয়েছে,<br /> لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا<br />অর্থাৎ- “আল্লাহতাআলা সাধ্যের বাহিরে কোন দায়িত্ব কারও উপর চাপিয়ে দেন না”। -সূরা বাকারা : ২৮৬<br /><br />ইরশাদ হয়েছে, <br />يُرِيدُ اللَّهُ بِكُمُ الْيُسْرَ وَلَا يُرِيدُ بِكُمُ الْعُسْرَ<br />অর্থাৎ “আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান, তোমাদের জন্য  কঠিন করতে চান না”। -সূরা বাকারা : ১৮৫<br /><br />অতএব, অবহেলা প্রদর্শন না করে নামাজের প্রতি পূর্ণ মর্যাদা ও গুরুত্ব উপলব্ধি করা যেমন আবশ্যক, তার সাথে নামাজকে সাধ্যাতীত না করে, বরং সহজ করে দেখাও আবশ্যক। এ দুয়ের মাঝেই রয়েছে সীরাতে মুস্তাকীম। এই মৌলিক আলোচনার পর চেয়ারে বসে নামাজ আদায়ের কয়েকটি বিধান নিচে তুলে ধরা হলো—<br /><br />১. কিয়াম, রুকু ও সিজদা- নামাজের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়; যা নামাজের রুকন বা ফরযের অন্তর্ভুক্ত। কেউ যদি এই রুকনগুলো সঠিকভাবে আদায় করতে সক্ষম হওয়া সত্ত্বেও অবহেলা করে ছেড়ে দেয় বা চেয়ারে বসে ইশারায় নামাজ আদায় করে, তার নামাজ আদায় হবে না। আর কেউ যদি কোন রুকন প্রকৃতপক্ষেই আদায় করতে সক্ষম না হয় বরং শরীয়তের দৃষ্টিতে সে মাযুর (অক্ষম) সাব্যস্ত হয়, তাহলে সে এ রুকনটি ইশারার মাধ্যমে আদায় করে নিবে। এতে তার নামাজ পরিপূর্ণ বলে গণ্য হবে এবং সে পূর্ণ সওয়াবের অধিকারী হবে। -রদ্দুল মুহতার : ১/৪৪২<br /><br />হজরত ইমরান ইবনে হুসাইন (রা.) বলেন-<br /><br />كانت بي بواسير فسألت النبي صلى الله عليه وسلم عن الصلاة فقال صل قائما فإن لم تستطع فقاعدا فإن لم تستطع فعلى جنب<br /> -সহিহ বোখারি; হাদিস নং- ১১১৭)<br /><br />২. সুতরাং কেউ যদি দাঁড়াতে সক্ষম না হয়, কিন্তু মাটিতে বসে সিজদা করতে সক্ষম, তাহলে তাকে মাটিতে বসে সিজদা করে নামাজ আদায় করতে হবে। চেয়ারে বসে ইশারা করে রুকু সিজদা করলে তার নামাজ আদায় হবে না।<br /><br />আল্লামা ইবনে আবেদীন শামী (রাহ.) বলেন-<br /><br />ولايصح الإيماء بهما – ( الركوع والسجود) –  مع القدرة عليهما، بل شرطه تعذرهما۔<br /><br />-রদ্দুল মুহতার ২/৯৯, এইচ. এম. সাঈদ<br /><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhpdD2x8jkGtLZR-W1v9WczRJkYQPw8qjTa5pryDDp2vo1efNvYRIUj1Yo6bFcN6qQtdAw-FSsN0Fw4xY-JvxzY6u4lPsRTonLZJWE1RYSc8cqkzMCZw8WCNvBMzjZLsIpwM8pdpavhFZBa/s1600/images-1.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="350" data-original-width="564" height="198" loading="lazy" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhpdD2x8jkGtLZR-W1v9WczRJkYQPw8qjTa5pryDDp2vo1efNvYRIUj1Yo6bFcN6qQtdAw-FSsN0Fw4xY-JvxzY6u4lPsRTonLZJWE1RYSc8cqkzMCZw8WCNvBMzjZLsIpwM8pdpavhFZBa/s320-rw/images-1.jpg" width="320" /></a></div><br /><br /> ৩. তবে যে ব্যক্তি দাঁড়াতেও সক্ষম না এবং জায়নামাজে বসে সিজদা করতেও সক্ষম না, চেয়ার বা নীচে বসে ইশারার মাধ্যমে সিজদা করা ছাড়া তার উপায় নেই, এমন ব্যক্তির ক্ষেত্রে বিধান হল, যথাসম্ভব জায়নামাজে বসেই ইশারা করার চেষ্টা করবে। এটাই উত্তম। কারণ বৈঠকে অধিক বিনয় প্রকাশ পায় এবং বৈঠক সিজদার নিকটবর্তী অবস্থান। তবে কেউ যদি নীচে বসতে সক্ষম না হয়, কিংবা এতে তার অধিক কষ্ট হয়, এমন ব্যক্তির জন্যে চেয়ারে বসে ইশারায় নামায আদায় করতে কোনো বাধা নেই। নিঃসন্দেহে তার নামাজ বিশুদ্ধভাবে আদায় হয়ে যাবে।<br /><br />ইমাম আল মারগীনানী (রাহ.) বলেন- <br />والأفضل هو الإيماء قاعدا ، لأنه أشبه بالسجود<br />(আল-হিদায়া- ১/১৬২)।<br /><br />হযরত ইবনে আবী লায়লা (রাহ.) রর্ণনা করেন-<br /> عن عطاء قال في صلاة القاعد يقعد كيف شاء<br />(মুসান্নাফু ইবনি আবী শায়বা ৬/৬৬, হাদীস নং- ৮৮৭৩)।<br /><br />ইমাম সারাখসী (রাহ.) বলেন-<br /><br />والمصلى قاعدا تطوعا أو فريضة بعذر يتربع ويقعد كيف شاء من غير كراهة إن شاء محتبيا وإن شاء متربعا لأنه لما جاز له ترك أصلالقيام فترك صفة القعود أولى. (جـ 1 صـ 902)<br /><br />৪. যে ব্যক্তি দাঁড়াতে এবং বসতে সক্ষম কিন্তু সিজদা করতে সক্ষম না, সিজদা তাকে ইশারায় করতে হয়। এমন ব্যক্তির জন্য কিয়ামের ফরয আদায়ের লক্ষ্যে দাঁড়ানো আবশ্যক, না বসে নামাজ পড়লেও নামায আদায় হবে। এতে দু’টি মত রয়েছে।<br /><br />আমাদের হানাফি মাজহাবের প্রসিদ্ধ মত হল, তার জন্য দাঁড়ানো আবশ্যক নয়; বসে পড়লেও তার নামাজ আদায় হয়ে যাবে। তবে অনেকের অভিমত হচ্ছে, যতটুকু সম্ভব দাঁড়িয়ে কিয়ামের ফরয আদায় করতে হবে। তারপর সম্ভব হলে রুকু করবে। তারপর তার জন্য দুটি পন্থা রয়েছে, যে কোন একটি অবলম্বন করতে পারবে-<br />এক. বসে ইশারার মাধ্যমে সিজদা আদায় করা। এটা উত্তম।<br />দুই. দাঁড়িয়ে ইশারার মাধ্যমে সিজদা আদায় করা। তখন সিজদার জন্য মাথাকে রুকুর চেয়ে একটু বেশি নিচু করবে।<br /><br />ইমাম আইনী (রাহ.) উল্লেখ করেন-<br /><br />وعن أبي جعفر الطحاوي : ولو قدر على بعض القيام ولو قدر آية أو تكبيرة يقوم ذلك القدر وإن عجز عن ذلك قعد، وإن لم يفعل ذلك خفتأن تفسد صلاته، هذا هو المذهب، ولا يروى عن أصحابنا خلافه، وكذا إذا عجز عن القعود وقدر على الاتكاء أو الاستناد إلى إنسان أو حائطأو وسادة لا يجزئه إلا كذلك. ولو استلقى لا يجزئه <br /><br />-আল বেনায়া- ২/৬৩৫, মাকতাবা নাঈমিয়া<br /><br />উভয় মতানুসারে বসার ক্ষেত্রে জায়নামায বা নীচে বসা আবশ্যক, নাকি চেয়ারে বসতে পারবে? এ বিধানটি তিন নম্বরে উল্লেখ করা হয়েছে। -রদ্দুল মুহতার- ২/৯৮, ইলাউস সুনান; ৭/১৯৮ দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যা<br /><br />৫. এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, কে সক্ষম, কে অক্ষম, কে মাজুর বা কতটুক মাজুর এবং কে মাজুর না, সে বিষয়টি নির্ণয় করা। এ ক্ষেত্রে সংক্ষিপ্ত কথা হচ্ছে, বয়স্ক এবং প্রকাশ্যে রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা নিজেদের অপারগতা সম্পর্কে অনেকটা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, যদি এ সংক্রান্ত মাসআলা তাদের জানা থাকে। তবে এমন অভিজ্ঞ ব্যক্তি খুবই কম রয়েছেন। তাই উত্তম পন্থা হচ্ছে, নিজে সিদ্ধান্ত না নিয়ে বিজ্ঞ-অভিজ্ঞ মুফতি সাহেবদের শরণাপন্ন হয়ে জেনে নেয়া।<br /><br />আর যারা বাহ্যিকভাবে সুস্থ, কিন্তু বিশেষ রোগের কারণে বিশেষজ্ঞ বিশ্বস্ত ডাক্তার তাদেরকে রুকু সিজদা করতে নিষেধ করেছেন, তাদের ক্ষেত্রেও মাজুরের হুকুম প্রযোজ্য হবে। তবে তাদের জন্যও উচিত হবে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে বিজ্ঞ মুফতিদের শরণাপন্ন হওয়া।<br /><br />৬. আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, যারা সঠিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চেয়ারে বসে নামাজ পড়ার অনুমতি পেয়েছেন বা চেয়ার ব্যতীত যাদের কোনো বিকল্প নেই, তারা মসজিদে গিয়ে চেয়ারে বসে নামায পড়বেন, নাকি মসজিদের শোভা নষ্ট হবে এই অজুহাতে মসজিদ ছেড়ে ঘরে নামায আদায় করবেন?<br /><br />এ ক্ষেত্রে আমাদের দৃষ্টিতে সঠিক মত হলো- তারা মসজিদে গিয়েই জামাতে শরীক হয়ে নামাজ আদায় করবেন, যদিও তারা চেয়ার ব্যবহার করতে বাধ্য। কারণ, ফরয নামাজ আদায় করার আসল রূপই হচ্ছে, মসজিদে গিয়ে সবাই মিলে জামাত করে নামাজ আদায় করা। সম্মিলিতভাবে বন্দেগি করা ও দাসত্ব প্রকাশ করা আল্লাহর নিকট অত্যন্ত পছন্দনীয়। তাই মসজিদের জামাতের গুরুত্ব অপরিসীম। এ বিষয়ে একাধিক আয়াত ও অসংখ্য হাদীস রয়েছে। যেমন- <br />وَارْكَعوا مَعَ الرَّاكِعِينَ<br />(সূরা বাকারা: ৪৩)<br />وَتَقَلُّبَكَ فِي السَّاجِدِينَ<br /> -সূরা শুআরা- ২১৯<br /><br />عن أبي هريرة : أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: والذي نفسي بيده لقد هممت أن آمر بحطب، فيحطب، ثم آمر بالصلاة، فيؤذن لها،ثم آمر رجلا فيؤم الناس، ثم أخالف إلى رجال، فأحرق عليهم بيوتهم، والذي نفسي بيده لو يعلم أحدهم، أنه يجد عرقا سمينا، أو مرماتينحسنتين، لشهد العشاء<br />(সহিহ বোখারি : হাদিস নং-৬৪৪<br /><br />عن أبي هريرة، قال : أتى النبي صلى الله عليه وسلم رجل أعمى، فقال: يا رسول الله، إنه ليس لي قائد يقودني إلى المسجد، فسأل رسول اللهصلى الله عليه وسلم أن يرخص له، فيصلي في بيته، فرخص له، فلما ولى، دعاه، فقال: هل تسمع النداء بالصلاة؟ قال: نعم، قال: فأجب <br /><br />সহিহ মুসলিম : হাদিস নং- ৬৫৩<br /><br />তাই যারা জামাতে উপস্থিত হতে পারে, তাদের জন্য এর বিকল্প নেই। কেননা মসজিদের নামাজে যে প্রাণ থাকে, ঘরের নামাজে সেটা থাকে না। তাছাড়া এ ধরণের বয়োবৃদ্ধ অসুস্থ রোগীর কষ্ট করে জামাতে উপস্থিত হওয়া, অন্যদেরকে মসজিদে গিয়ে জামাতে শরীক হতে উৎসাহী করবে এবং গাফেল লোকদের মসজিদমুখী হতে প্রেরণা যোগাবে। তাই এমন লোকদের মসজিদের জামাতে উপস্থিতি আল্লাহ তাআলা, ফেরেশতা ও সকল সৃষ্টির কাছে পছন্দনীয়।<br /><br /><br />তবে যারা আন্তরিকতার সাথে এ ধরনের লোকদের মসজিদে গিয়ে চেয়ারে বসে নামায পড়ার ব্যাপারে প্রশ্ন করেন তাদের আলোচনা থেকে বোঝা যায়, তাদের অপছন্দের উল্লেখযোগ্য কারণ হচ্ছে, বিধর্মীদের সাথে সাদৃশ্য। যা থেকে নিষেধ করা হয়েছে।<br /><br />এর উত্তরে বলব, অপারগতা ও প্রয়োজনের ক্ষেত্রে সাদৃশ্য অবৈধতার কারণ নয়। অর্থাৎ- মানুষ যা করতে বাধ্য, যা না হলে মানুষের জন্য কষ্টের কারণ হবে, এমন বিষয়ে সাদৃশ্যের বিধান প্রযোজ্য নয়। কারণ এ সকল বিষয় কারো সাদৃশ্য গ্রহণের জন্য করা হয় না, বরং প্রয়োজনে করা হয়। তাই এগুলোকে সাদৃশ্যের কারণে হারাম বলা যাবে না। তাছাড়া মূল রহস্য বা কারণ না বুঝে শুধু সাদৃশ্য দেখেই যদি ঢালাওভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ বিষয়গুলিকে হারাম বলে দেওয়া হয়, তাহলে খাওয়া-দাওয়াসহ জীবন ধারণের অনেক মৌলিক বিষয়ও তার আওতায় চলে আসবে। কারণ, এসব বিষয় মৌলিকভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ। আর এ সব হারাম হয়ে গেলে মানব জীবনই বিপন্ন হয়ে পড়বে। তাই যে সকল বিষয় আবশ্যক, প্রয়োজনীয় ও উপকারী নয় বা যে সকল মৌলিক প্রয়োজন মেটানোর পথ ও পন্থা একাধিক হতে পারে, সেগুলোর ক্ষেত্রে সাদৃশ্যপূর্ণ রূপরেখা বর্জন করে সাদৃশ্যহীন<br />পন্থা অবলম্বনের নির্দেশ করা হয়। আল্লামা ইবনে নুজাইম (রাহ.) বলেন-<br /><br />و(يكفّر) بوضع قلنسوة المجوسي على رأسه على الصحيح إلا لضرورة دفع الحر أو البرد، وبِشدّ الزنار في وسطه إلا إذا فعل ذلك خديعةفي الحرب وطليعة للمسلمين<br />(আল-বাহরুর রায়েক ৫/২০৮)<br /><br /> হযরত থানভী  বলেন-<br /><br />كفار كی وضع بلا ضرورت قويہ حسيہ كدفع الحر والبرد يا شرعيہ كخدع اهل الحرب والتجسس للمسلمين افعال كفر سے ہے<br />বাওয়াদিরুন নাওয়াদের- ৪৫৪)।<br /><br />পূর্বের আলোচনায় এ কথা স্পষ্ট হয়েছে যে, নামাজে চেয়ার শুধু প্রয়োজনের ক্ষেত্রেই ব্যবহার করতে পারবে। আর এটি তখন শরীয়তের দৃষ্টিতে ওজরের অন্তর্ভুক্ত হবে। অতএব, চেয়ারের এই বৈধ ও প্রয়োজনীয় ব্যবহারকে শুধু সাদৃশ্যের অজুহাতে অবৈধ বলা যাবে না।<br /><br />তবে যারা প্রয়োজন ছাড়া নামাজে চেয়ার ব্যবহার করে জেনে না-জেনে এটাকে ফ্যাশনে পরিনত করতে চলেছেন, তাদেরকে এ থেকে বিরত রাখার জন্য এ বিষয়ে সঠিক আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। ইমাম ও খতিব সাহেবগণ যদি এ বিষয়ে সঠিক মাসআলা তুলে ধরে সময়ে সময়ে আলোচনা করেন, তাহলে চেয়ারের অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার আশা করি, বন্ধ হয়ে যাবে। আর যারা প্রয়োজনে ব্যবহার করেন, তারাও মসজিদে এসে জামাতে শরীক হয়ে আল্লাহর বন্দেগী করার সুযোগ লাভ করবেন।<br /><br />والله اعلم بالصواب<br /><br /><br /></div>

চেয়ারে বসে নামাজ আদায়

بسم الله الرحمن الرحيم চেয়ারে বসে নামায আদায়- মূলনীতি ও কিছু বিধান ইসলাম শাশ্বত, সত্য, স্বভাবজাত ও বাস্তববাদী ধর্ম। ইসলামের প্রতিটি বিধান অত...

Read more »

চেয়ারে বসে নামাজ আদায়

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> بسم الله الرحمن الرحيم<br /> <br /> চেয়ারে বসে নামায আদায়- মূলনীতি ও কিছু বিধান<br /> <br /> ইসলাম শাশ্বত, সত্য, স্বভাবজাত ও বাস্তববাদী ধর্ম। ইসলামের প্রতিটি বিধান অত্যন্ত যৌক্তিক ও বাস্তবমুখী। চির সুন্দর,সহজ-সরল ও সর্বোপযোগী।<br /> <br /> ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিধান হচ্ছে, নামাজ। আল্লাহপাক যা নবীজী (সা.) কে মেরাজের রাতে পুরস্কার হিসেবে দিয়েছিলেন। নামাজ মহান প্রভুর দরবারে দীনতা, নিয়ামতরাজির প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং তাঁর শাহী দরবারে বান্দার নানাবিদ চাহিদা পূরণের মিনতি জানানোর মাধ্যম। ঈমানের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত নামাজ। তাই ঈমানের পরে, সকল ইবাদতের ঊর্ধ্বে তার স্থান। যে নামাজ কায়েম করল, সে দ্বীন প্রতিষ্ঠিত করল। আর যে নামাজ ধ্বংস করল, সে দ্বীন ধ্বংস করল। অর্থাৎ যার নামাজ ঠিক তার দ্বীন ঠিক। আর যার নামাজ বরবাদ তার দ্বীন বরবাদ। অতএব, যে ব্যক্তির নামাজ যত সুন্দর হবে, তার দুনিয়া-আখেরাতের জিন্দেগীও তত সুন্দর ও সফল হবে।<br /> <br /> তবে নামাজের এ অসীম গুরুত্বের পাশাপাশি শরীয়তের আরেকটি মৌলিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি লক্ষ্য রাখা আবশ্যক। আর তা হচ্ছে, সকল ক্ষেত্রে সহজীকরণ। আল্লাহ পাক সাধ্যাতীত নির্দেশ দেন না, বরং যা সহজ তাই আল্লাহর নিকট প্রিয়।<br /> <br /> ইরশাদ হয়েছে,<br />  لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا<br /> অর্থাৎ- “আল্লাহতাআলা সাধ্যের বাহিরে কোন দায়িত্ব কারও উপর চাপিয়ে দেন না”। -সূরা বাকারা : ২৮৬<br /> <br /> ইরশাদ হয়েছে, <br /> يُرِيدُ اللَّهُ بِكُمُ الْيُسْرَ وَلَا يُرِيدُ بِكُمُ الْعُسْرَ<br /> অর্থাৎ “আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান, তোমাদের জন্য  কঠিন করতে চান না”। -সূরা বাকারা : ১৮৫<br /> <br /> অতএব, অবহেলা প্রদর্শন না করে নামাজের প্রতি পূর্ণ মর্যাদা ও গুরুত্ব উপলব্ধি করা যেমন আবশ্যক, তার সাথে নামাজকে সাধ্যাতীত না করে, বরং সহজ করে দেখাও আবশ্যক। এ দুয়ের মাঝেই রয়েছে সীরাতে মুস্তাকীম। এই মৌলিক আলোচনার পর চেয়ারে বসে নামাজ আদায়ের কয়েকটি বিধান নিচে তুলে ধরা হলো—<br /> <br /> ১. কিয়াম, রুকু ও সিজদা- নামাজের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়; যা নামাজের রুকন বা ফরযের অন্তর্ভুক্ত। কেউ যদি এই রুকনগুলো সঠিকভাবে আদায় করতে সক্ষম হওয়া সত্ত্বেও অবহেলা করে ছেড়ে দেয় বা চেয়ারে বসে ইশারায় নামাজ আদায় করে, তার নামাজ আদায় হবে না। আর কেউ যদি কোন রুকন প্রকৃতপক্ষেই আদায় করতে সক্ষম না হয় বরং শরীয়তের দৃষ্টিতে সে মাযুর (অক্ষম) সাব্যস্ত হয়, তাহলে সে এ রুকনটি ইশারার মাধ্যমে আদায় করে নিবে। এতে তার নামাজ পরিপূর্ণ বলে গণ্য হবে এবং সে পূর্ণ সওয়াবের অধিকারী হবে। -রদ্দুল মুহতার : ১/৪৪২<br /> <br /> হজরত ইমরান ইবনে হুসাইন (রা.) বলেন-<br /> <br /> كانت بي بواسير فسألت النبي صلى الله عليه وسلم عن الصلاة فقال صل قائما فإن لم تستطع فقاعدا فإن لم تستطع فعلى جنب<br />  -সহিহ বোখারি; হাদিস নং- ১১১৭)<br /> <br /> ২. সুতরাং কেউ যদি দাঁড়াতে সক্ষম না হয়, কিন্তু মাটিতে বসে সিজদা করতে সক্ষম, তাহলে তাকে মাটিতে বসে সিজদা করে নামাজ আদায় করতে হবে। চেয়ারে বসে ইশারা করে রুকু সিজদা করলে তার নামাজ আদায় হবে না।<br /> <br /> আল্লামা ইবনে আবেদীন শামী (রাহ.) বলেন-<br /> <br /> ولايصح الإيماء بهما – ( الركوع والسجود) –  مع القدرة عليهما، بل شرطه تعذرهما۔<br /> <br /> -রদ্দুল মুহতার ২/৯৯, এইচ. এম. সাঈদ<br /> <div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"> <a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEi0XFSCWV0LAbg0u2Rqr7u_4rHTZHVV7gSX8eTFtY_0wC_X23k4y2uPfTTLPdrxBGqHfqeg4XP7d-0oAOJTg9ioLmBdbWPjebZvlEqIXWW3e_GgKG7EyQSBOUirvmGJY8FaNJCT42y72Yig/s1600/images-1.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="350" data-original-width="564" height="198" loading="lazy" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEi0XFSCWV0LAbg0u2Rqr7u_4rHTZHVV7gSX8eTFtY_0wC_X23k4y2uPfTTLPdrxBGqHfqeg4XP7d-0oAOJTg9ioLmBdbWPjebZvlEqIXWW3e_GgKG7EyQSBOUirvmGJY8FaNJCT42y72Yig/s320-rw/images-1.jpg" width="320" /></a></div> <br /> <br />  ৩. তবে যে ব্যক্তি দাঁড়াতেও সক্ষম না এবং জায়নামাজে বসে সিজদা করতেও সক্ষম না, চেয়ার বা নীচে বসে ইশারার মাধ্যমে সিজদা করা ছাড়া তার উপায় নেই, এমন ব্যক্তির ক্ষেত্রে বিধান হল, যথাসম্ভব জায়নামাজে বসেই ইশারা করার চেষ্টা করবে। এটাই উত্তম। কারণ বৈঠকে অধিক বিনয় প্রকাশ পায় এবং বৈঠক সিজদার নিকটবর্তী অবস্থান। তবে কেউ যদি নীচে বসতে সক্ষম না হয়, কিংবা এতে তার অধিক কষ্ট হয়, এমন ব্যক্তির জন্যে চেয়ারে বসে ইশারায় নামায আদায় করতে কোনো বাধা নেই। নিঃসন্দেহে তার নামাজ বিশুদ্ধভাবে আদায় হয়ে যাবে।<br /> <br /> ইমাম আল মারগীনানী (রাহ.) বলেন- <br /> والأفضل هو الإيماء قاعدا ، لأنه أشبه بالسجود<br /> (আল-হিদায়া- ১/১৬২)।<br /> <br /> হযরত ইবনে আবী লায়লা (রাহ.) রর্ণনা করেন-<br />  عن عطاء قال في صلاة القاعد يقعد كيف شاء<br /> (মুসান্নাফু ইবনি আবী শায়বা ৬/৬৬, হাদীস নং- ৮৮৭৩)।<br /> <br /> ইমাম সারাখসী (রাহ.) বলেন-<br /> <br /> والمصلى قاعدا تطوعا أو فريضة بعذر يتربع ويقعد كيف شاء من غير كراهة إن شاء محتبيا وإن شاء متربعا لأنه لما جاز له ترك أصلالقيام فترك صفة القعود أولى. (جـ 1 صـ 902)<br /> <br /> ৪. যে ব্যক্তি দাঁড়াতে এবং বসতে সক্ষম কিন্তু সিজদা করতে সক্ষম না, সিজদা তাকে ইশারায় করতে হয়। এমন ব্যক্তির জন্য কিয়ামের ফরয আদায়ের লক্ষ্যে দাঁড়ানো আবশ্যক, না বসে নামাজ পড়লেও নামায আদায় হবে। এতে দু’টি মত রয়েছে।<br /> <br /> আমাদের হানাফি মাজহাবের প্রসিদ্ধ মত হল, তার জন্য দাঁড়ানো আবশ্যক নয়; বসে পড়লেও তার নামাজ আদায় হয়ে যাবে। তবে অনেকের অভিমত হচ্ছে, যতটুকু সম্ভব দাঁড়িয়ে কিয়ামের ফরয আদায় করতে হবে। তারপর সম্ভব হলে রুকু করবে। তারপর তার জন্য দুটি পন্থা রয়েছে, যে কোন একটি অবলম্বন করতে পারবে-<br /> এক. বসে ইশারার মাধ্যমে সিজদা আদায় করা। এটা উত্তম।<br /> দুই. দাঁড়িয়ে ইশারার মাধ্যমে সিজদা আদায় করা। তখন সিজদার জন্য মাথাকে রুকুর চেয়ে একটু বেশি নিচু করবে।<br /> <br /> ইমাম আইনী (রাহ.) উল্লেখ করেন-<br /> <br /> وعن أبي جعفر الطحاوي : ولو قدر على بعض القيام ولو قدر آية أو تكبيرة يقوم ذلك القدر وإن عجز عن ذلك قعد، وإن لم يفعل ذلك خفتأن تفسد صلاته، هذا هو المذهب، ولا يروى عن أصحابنا خلافه، وكذا إذا عجز عن القعود وقدر على الاتكاء أو الاستناد إلى إنسان أو حائطأو وسادة لا يجزئه إلا كذلك. ولو استلقى لا يجزئه <br /> <br /> -আল বেনায়া- ২/৬৩৫, মাকতাবা নাঈমিয়া<br /> <br /> উভয় মতানুসারে বসার ক্ষেত্রে জায়নামায বা নীচে বসা আবশ্যক, নাকি চেয়ারে বসতে পারবে? এ বিধানটি তিন নম্বরে উল্লেখ করা হয়েছে। -রদ্দুল মুহতার- ২/৯৮, ইলাউস সুনান; ৭/১৯৮ দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যা<br /> <br /> ৫. এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, কে সক্ষম, কে অক্ষম, কে মাজুর বা কতটুক মাজুর এবং কে মাজুর না, সে বিষয়টি নির্ণয় করা। এ ক্ষেত্রে সংক্ষিপ্ত কথা হচ্ছে, বয়স্ক এবং প্রকাশ্যে রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা নিজেদের অপারগতা সম্পর্কে অনেকটা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, যদি এ সংক্রান্ত মাসআলা তাদের জানা থাকে। তবে এমন অভিজ্ঞ ব্যক্তি খুবই কম রয়েছেন। তাই উত্তম পন্থা হচ্ছে, নিজে সিদ্ধান্ত না নিয়ে বিজ্ঞ-অভিজ্ঞ মুফতি সাহেবদের শরণাপন্ন হয়ে জেনে নেয়া।<br /> <br /> আর যারা বাহ্যিকভাবে সুস্থ, কিন্তু বিশেষ রোগের কারণে বিশেষজ্ঞ বিশ্বস্ত ডাক্তার তাদেরকে রুকু সিজদা করতে নিষেধ করেছেন, তাদের ক্ষেত্রেও মাজুরের হুকুম প্রযোজ্য হবে। তবে তাদের জন্যও উচিত হবে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে বিজ্ঞ মুফতিদের শরণাপন্ন হওয়া।<br /> <br /> ৬. আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, যারা সঠিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চেয়ারে বসে নামাজ পড়ার অনুমতি পেয়েছেন বা চেয়ার ব্যতীত যাদের কোনো বিকল্প নেই, তারা মসজিদে গিয়ে চেয়ারে বসে নামায পড়বেন, নাকি মসজিদের শোভা নষ্ট হবে এই অজুহাতে মসজিদ ছেড়ে ঘরে নামায আদায় করবেন?<br /> <br /> এ ক্ষেত্রে আমাদের দৃষ্টিতে সঠিক মত হলো- তারা মসজিদে গিয়েই জামাতে শরীক হয়ে নামাজ আদায় করবেন, যদিও তারা চেয়ার ব্যবহার করতে বাধ্য। কারণ, ফরয নামাজ আদায় করার আসল রূপই হচ্ছে, মসজিদে গিয়ে সবাই মিলে জামাত করে নামাজ আদায় করা। সম্মিলিতভাবে বন্দেগি করা ও দাসত্ব প্রকাশ করা আল্লাহর নিকট অত্যন্ত পছন্দনীয়। তাই মসজিদের জামাতের গুরুত্ব অপরিসীম। এ বিষয়ে একাধিক আয়াত ও অসংখ্য হাদীস রয়েছে। যেমন- <br /> وَارْكَعوا مَعَ الرَّاكِعِينَ<br /> (সূরা বাকারা: ৪৩)<br /> وَتَقَلُّبَكَ فِي السَّاجِدِينَ<br />  -সূরা শুআরা- ২১৯<br /> <br /> عن أبي هريرة : أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: والذي نفسي بيده لقد هممت أن آمر بحطب، فيحطب، ثم آمر بالصلاة، فيؤذن لها،ثم آمر رجلا فيؤم الناس، ثم أخالف إلى رجال، فأحرق عليهم بيوتهم، والذي نفسي بيده لو يعلم أحدهم، أنه يجد عرقا سمينا، أو مرماتينحسنتين، لشهد العشاء<br /> (সহিহ বোখারি : হাদিস নং-৬৪৪<br /> <br /> عن أبي هريرة، قال : أتى النبي صلى الله عليه وسلم رجل أعمى، فقال: يا رسول الله، إنه ليس لي قائد يقودني إلى المسجد، فسأل رسول اللهصلى الله عليه وسلم أن يرخص له، فيصلي في بيته، فرخص له، فلما ولى، دعاه، فقال: هل تسمع النداء بالصلاة؟ قال: نعم، قال: فأجب <br /> <br /> সহিহ মুসলিম : হাদিস নং- ৬৫৩<br /> <br /> তাই যারা জামাতে উপস্থিত হতে পারে, তাদের জন্য এর বিকল্প নেই। কেননা মসজিদের নামাজে যে প্রাণ থাকে, ঘরের নামাজে সেটা থাকে না। তাছাড়া এ ধরণের বয়োবৃদ্ধ অসুস্থ রোগীর কষ্ট করে জামাতে উপস্থিত হওয়া, অন্যদেরকে মসজিদে গিয়ে জামাতে শরীক হতে উৎসাহী করবে এবং গাফেল লোকদের মসজিদমুখী হতে প্রেরণা যোগাবে। তাই এমন লোকদের মসজিদের জামাতে উপস্থিতি আল্লাহ তাআলা, ফেরেশতা ও সকল সৃষ্টির কাছে পছন্দনীয়।<br /> <br /> <br /> তবে যারা আন্তরিকতার সাথে এ ধরনের লোকদের মসজিদে গিয়ে চেয়ারে বসে নামায পড়ার ব্যাপারে প্রশ্ন করেন তাদের আলোচনা থেকে বোঝা যায়, তাদের অপছন্দের উল্লেখযোগ্য কারণ হচ্ছে, বিধর্মীদের সাথে সাদৃশ্য। যা থেকে নিষেধ করা হয়েছে।<br /> <br /> এর উত্তরে বলব, অপারগতা ও প্রয়োজনের ক্ষেত্রে সাদৃশ্য অবৈধতার কারণ নয়। অর্থাৎ- মানুষ যা করতে বাধ্য, যা না হলে মানুষের জন্য কষ্টের কারণ হবে, এমন বিষয়ে সাদৃশ্যের বিধান প্রযোজ্য নয়। কারণ এ সকল বিষয় কারো সাদৃশ্য গ্রহণের জন্য করা হয় না, বরং প্রয়োজনে করা হয়। তাই এগুলোকে সাদৃশ্যের কারণে হারাম বলা যাবে না। তাছাড়া মূল রহস্য বা কারণ না বুঝে শুধু সাদৃশ্য দেখেই যদি ঢালাওভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ বিষয়গুলিকে হারাম বলে দেওয়া হয়, তাহলে খাওয়া-দাওয়াসহ জীবন ধারণের অনেক মৌলিক বিষয়ও তার আওতায় চলে আসবে। কারণ, এসব বিষয় মৌলিকভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ। আর এ সব হারাম হয়ে গেলে মানব জীবনই বিপন্ন হয়ে পড়বে। তাই যে সকল বিষয় আবশ্যক, প্রয়োজনীয় ও উপকারী নয় বা যে সকল মৌলিক প্রয়োজন মেটানোর পথ ও পন্থা একাধিক হতে পারে, সেগুলোর ক্ষেত্রে সাদৃশ্যপূর্ণ রূপরেখা বর্জন করে সাদৃশ্যহীন<br /> পন্থা অবলম্বনের নির্দেশ করা হয়। আল্লামা ইবনে নুজাইম (রাহ.) বলেন-<br /> <br /> و(يكفّر) بوضع قلنسوة المجوسي على رأسه على الصحيح إلا لضرورة دفع الحر أو البرد، وبِشدّ الزنار في وسطه إلا إذا فعل ذلك خديعةفي الحرب وطليعة للمسلمين<br /> (আল-বাহরুর রায়েক ৫/২০৮)<br /> <br />  হযরত থানভী  বলেন-<br /> <br /> كفار كی وضع بلا ضرورت قويہ حسيہ كدفع الحر والبرد يا شرعيہ كخدع اهل الحرب والتجسس للمسلمين افعال كفر سے ہے<br /> বাওয়াদিরুন নাওয়াদের- ৪৫৪)।<br /> <br /> পূর্বের আলোচনায় এ কথা স্পষ্ট হয়েছে যে, নামাজে চেয়ার শুধু প্রয়োজনের ক্ষেত্রেই ব্যবহার করতে পারবে। আর এটি তখন শরীয়তের দৃষ্টিতে ওজরের অন্তর্ভুক্ত হবে। অতএব, চেয়ারের এই বৈধ ও প্রয়োজনীয় ব্যবহারকে শুধু সাদৃশ্যের অজুহাতে অবৈধ বলা যাবে না।<br /> <br /> তবে যারা প্রয়োজন ছাড়া নামাজে চেয়ার ব্যবহার করে জেনে না-জেনে এটাকে ফ্যাশনে পরিনত করতে চলেছেন, তাদেরকে এ থেকে বিরত রাখার জন্য এ বিষয়ে সঠিক আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। ইমাম ও খতিব সাহেবগণ যদি এ বিষয়ে সঠিক মাসআলা তুলে ধরে সময়ে সময়ে আলোচনা করেন, তাহলে চেয়ারের অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার আশা করি, বন্ধ হয়ে যাবে। আর যারা প্রয়োজনে ব্যবহার করেন, তারাও মসজিদে এসে জামাতে শরীক হয়ে আল্লাহর বন্দেগী করার সুযোগ লাভ করবেন।<br /> <br /> والله اعلم بالصواب<br /> <br /> <br /></div>

চেয়ারে বসে নামাজ আদায়

بسم الله الرحمن الرحيم চেয়ারে বসে নামায আদায়- মূলনীতি ও কিছু বিধান ইসলাম শাশ্বত, সত্য, স্বভাবজাত ও বাস্তববাদী ধর্ম। ইসলামের প্রতিটি বিধ...

Read more »

চেয়ারে বসে নামাজ আদায়

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"><br />بسم الله الرحمن الرحيم<br /><br /><br /><br />চেয়ারে বসে নামায আদায়- মূলনীতি ও কিছু বিধান<br /><br /><br /><br />ইসলাম শাশ্বত, সত্য, স্বভাবজাত ও বাস্তববাদী ধর্ম। ইসলামের প্রতিটি বিধান অত্যন্ত যৌক্তিক ও বাস্তবমুখী। চির সুন্দর,সহজ-সরল ও সর্বোপযোগী।<br /><br /><br /><br />ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিধান হচ্ছে, নামাজ। আল্লাহপাক যা নবীজী (সা.) কে মেরাজের রাতে পুরস্কার হিসেবে দিয়েছিলেন। নামাজ মহান প্রভুর দরবারে দীনতা, নিয়ামতরাজির প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং তাঁর শাহী দরবারে বান্দার নানাবিদ চাহিদা পূরণের মিনতি জানানোর মাধ্যম। ঈমানের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত নামাজ। তাই ঈমানের পরে, সকল ইবাদতের ঊর্ধ্বে তার স্থান। যে নামাজ কায়েম করল, সে দ্বীন প্রতিষ্ঠিত করল। আর যে নামাজ ধ্বংস করল, সে দ্বীন ধ্বংস করল। অর্থাৎ যার নামাজ ঠিক তার দ্বীন ঠিক। আর যার নামাজ বরবাদ তার দ্বীন বরবাদ। অতএব, যে ব্যক্তির নামাজ যত সুন্দর হবে, তার দুনিয়া-আখেরাতের জিন্দেগীও তত সুন্দর ও সফল হবে।<br /><br /><br /><br />তবে নামাজের এ অসীম গুরুত্বের পাশাপাশি শরীয়তের আরেকটি মৌলিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি লক্ষ্য রাখা আবশ্যক। আর তা হচ্ছে, সকল ক্ষেত্রে সহজীকরণ। আল্লাহ পাক সাধ্যাতীত নির্দেশ দেন না, বরং যা সহজ তাই আল্লাহর নিকট প্রিয়।<br /><br /><br /><br />ইরশাদ হয়েছে,<br /><br /> لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا<br /><br />অর্থাৎ- “আল্লাহতাআলা সাধ্যের বাহিরে কোন দায়িত্ব কারও উপর চাপিয়ে দেন না”। -সূরা বাকারা : ২৮৬<br /><br /><br /><br />ইরশাদ হয়েছে, <br /><br />يُرِيدُ اللَّهُ بِكُمُ الْيُسْرَ وَلَا يُرِيدُ بِكُمُ الْعُسْرَ<br /><br />অর্থাৎ “আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান, তোমাদের জন্য  কঠিন করতে চান না”। -সূরা বাকারা : ১৮৫<br /><br /><br /><br />অতএব, অবহেলা প্রদর্শন না করে নামাজের প্রতি পূর্ণ মর্যাদা ও গুরুত্ব উপলব্ধি করা যেমন আবশ্যক, তার সাথে নামাজকে সাধ্যাতীত না করে, বরং সহজ করে দেখাও আবশ্যক। এ দুয়ের মাঝেই রয়েছে সীরাতে মুস্তাকীম। এই মৌলিক আলোচনার পর চেয়ারে বসে নামাজ আদায়ের কয়েকটি বিধান নিচে তুলে ধরা হলো—<br /><br /><br /><br />১. কিয়াম, রুকু ও সিজদা- নামাজের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়; যা নামাজের রুকন বা ফরযের অন্তর্ভুক্ত। কেউ যদি এই রুকনগুলো সঠিকভাবে আদায় করতে সক্ষম হওয়া সত্ত্বেও অবহেলা করে ছেড়ে দেয় বা চেয়ারে বসে ইশারায় নামাজ আদায় করে, তার নামাজ আদায় হবে না। আর কেউ যদি কোন রুকন প্রকৃতপক্ষেই আদায় করতে সক্ষম না হয় বরং শরীয়তের দৃষ্টিতে সে মাযুর (অক্ষম) সাব্যস্ত হয়, তাহলে সে এ রুকনটি ইশারার মাধ্যমে আদায় করে নিবে। এতে তার নামাজ পরিপূর্ণ বলে গণ্য হবে এবং সে পূর্ণ সওয়াবের অধিকারী হবে। -রদ্দুল মুহতার : ১/৪৪২<br /><br /><br /><br />হজরত ইমরান ইবনে হুসাইন (রা.) বলেন-<br /><br /><br /><br />كانت بي بواسير فسألت النبي صلى الله عليه وسلم عن الصلاة فقال صل قائما فإن لم تستطع فقاعدا فإن لم تستطع فعلى جنب<br /><br /> -সহিহ বোখারি; হাদিস নং- ১১১৭)<br /><br /><br /><br />২. সুতরাং কেউ যদি দাঁড়াতে সক্ষম না হয়, কিন্তু মাটিতে বসে সিজদা করতে সক্ষম, তাহলে তাকে মাটিতে বসে সিজদা করে নামাজ আদায় করতে হবে। চেয়ারে বসে ইশারা করে রুকু সিজদা করলে তার নামাজ আদায় হবে না।<br /><br /><br /><br />আল্লামা ইবনে আবেদীন শামী (রাহ.) বলেন-<br /><br /><br /><br />ولايصح الإيماء بهما – ( الركوع والسجود) –  مع القدرة عليهما، بل شرطه تعذرهما۔<br /><br /><br /><br />-রদ্দুল মুহতার ২/৯৯, এইচ. এম. সাঈদ<br /><br /><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><br /><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhIt-W0pVjIcXH4WUX3EuAljbe3o0ISX-83SNsW0GUCqiHuxafRDMv6GhC64abeHLg5qdw2mZ8_GIdPNka4j_G2kX9J7afdhrv5Wvthl2qDPZpTBuplOAQm3EmoU27NHfCYWOZy1CJceO85/s1600/images-1.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="350" data-original-width="564" height="198" loading="lazy" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhIt-W0pVjIcXH4WUX3EuAljbe3o0ISX-83SNsW0GUCqiHuxafRDMv6GhC64abeHLg5qdw2mZ8_GIdPNka4j_G2kX9J7afdhrv5Wvthl2qDPZpTBuplOAQm3EmoU27NHfCYWOZy1CJceO85/s320-rw/images-1.jpg" width="320" /></a></div><br /><br /><br /><br /><br /> ৩. তবে যে ব্যক্তি দাঁড়াতেও সক্ষম না এবং জায়নামাজে বসে সিজদা করতেও সক্ষম না, চেয়ার বা নীচে বসে ইশারার মাধ্যমে সিজদা করা ছাড়া তার উপায় নেই, এমন ব্যক্তির ক্ষেত্রে বিধান হল, যথাসম্ভব জায়নামাজে বসেই ইশারা করার চেষ্টা করবে। এটাই উত্তম। কারণ বৈঠকে অধিক বিনয় প্রকাশ পায় এবং বৈঠক সিজদার নিকটবর্তী অবস্থান। তবে কেউ যদি নীচে বসতে সক্ষম না হয়, কিংবা এতে তার অধিক কষ্ট হয়, এমন ব্যক্তির জন্যে চেয়ারে বসে ইশারায় নামায আদায় করতে কোনো বাধা নেই। নিঃসন্দেহে তার নামাজ বিশুদ্ধভাবে আদায় হয়ে যাবে।<br /><br /><br /><br />ইমাম আল মারগীনানী (রাহ.) বলেন- <br /><br />والأفضل هو الإيماء قاعدا ، لأنه أشبه بالسجود<br /><br />(আল-হিদায়া- ১/১৬২)।<br /><br /><br /><br />হযরত ইবনে আবী লায়লা (রাহ.) রর্ণনা করেন-<br /><br /> عن عطاء قال في صلاة القاعد يقعد كيف شاء<br /><br />(মুসান্নাফু ইবনি আবী শায়বা ৬/৬৬, হাদীস নং- ৮৮৭৩)।<br /><br /><br /><br />ইমাম সারাখসী (রাহ.) বলেন-<br /><br /><br /><br />والمصلى قاعدا تطوعا أو فريضة بعذر يتربع ويقعد كيف شاء من غير كراهة إن شاء محتبيا وإن شاء متربعا لأنه لما جاز له ترك أصلالقيام فترك صفة القعود أولى. (جـ 1 صـ 902)<br /><br /><br /><br />৪. যে ব্যক্তি দাঁড়াতে এবং বসতে সক্ষম কিন্তু সিজদা করতে সক্ষম না, সিজদা তাকে ইশারায় করতে হয়। এমন ব্যক্তির জন্য কিয়ামের ফরয আদায়ের লক্ষ্যে দাঁড়ানো আবশ্যক, না বসে নামাজ পড়লেও নামায আদায় হবে। এতে দু’টি মত রয়েছে।<br /><br /><br /><br />আমাদের হানাফি মাজহাবের প্রসিদ্ধ মত হল, তার জন্য দাঁড়ানো আবশ্যক নয়; বসে পড়লেও তার নামাজ আদায় হয়ে যাবে। তবে অনেকের অভিমত হচ্ছে, যতটুকু সম্ভব দাঁড়িয়ে কিয়ামের ফরয আদায় করতে হবে। তারপর সম্ভব হলে রুকু করবে। তারপর তার জন্য দুটি পন্থা রয়েছে, যে কোন একটি অবলম্বন করতে পারবে-<br /><br />এক. বসে ইশারার মাধ্যমে সিজদা আদায় করা। এটা উত্তম।<br /><br />দুই. দাঁড়িয়ে ইশারার মাধ্যমে সিজদা আদায় করা। তখন সিজদার জন্য মাথাকে রুকুর চেয়ে একটু বেশি নিচু করবে।<br /><br /><br /><br />ইমাম আইনী (রাহ.) উল্লেখ করেন-<br /><br /><br /><br />وعن أبي جعفر الطحاوي : ولو قدر على بعض القيام ولو قدر آية أو تكبيرة يقوم ذلك القدر وإن عجز عن ذلك قعد، وإن لم يفعل ذلك خفتأن تفسد صلاته، هذا هو المذهب، ولا يروى عن أصحابنا خلافه، وكذا إذا عجز عن القعود وقدر على الاتكاء أو الاستناد إلى إنسان أو حائطأو وسادة لا يجزئه إلا كذلك. ولو استلقى لا يجزئه <br /><br /><br /><br />-আল বেনায়া- ২/৬৩৫, মাকতাবা নাঈমিয়া<br /><br /><br /><br />উভয় মতানুসারে বসার ক্ষেত্রে জায়নামায বা নীচে বসা আবশ্যক, নাকি চেয়ারে বসতে পারবে? এ বিধানটি তিন নম্বরে উল্লেখ করা হয়েছে। -রদ্দুল মুহতার- ২/৯৮, ইলাউস সুনান; ৭/১৯৮ দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যা<br /><br /><br /><br />৫. এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, কে সক্ষম, কে অক্ষম, কে মাজুর বা কতটুক মাজুর এবং কে মাজুর না, সে বিষয়টি নির্ণয় করা। এ ক্ষেত্রে সংক্ষিপ্ত কথা হচ্ছে, বয়স্ক এবং প্রকাশ্যে রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা নিজেদের অপারগতা সম্পর্কে অনেকটা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, যদি এ সংক্রান্ত মাসআলা তাদের জানা থাকে। তবে এমন অভিজ্ঞ ব্যক্তি খুবই কম রয়েছেন। তাই উত্তম পন্থা হচ্ছে, নিজে সিদ্ধান্ত না নিয়ে বিজ্ঞ-অভিজ্ঞ মুফতি সাহেবদের শরণাপন্ন হয়ে জেনে নেয়া।<br /><br /><br /><br />আর যারা বাহ্যিকভাবে সুস্থ, কিন্তু বিশেষ রোগের কারণে বিশেষজ্ঞ বিশ্বস্ত ডাক্তার তাদেরকে রুকু সিজদা করতে নিষেধ করেছেন, তাদের ক্ষেত্রেও মাজুরের হুকুম প্রযোজ্য হবে। তবে তাদের জন্যও উচিত হবে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে বিজ্ঞ মুফতিদের শরণাপন্ন হওয়া।<br /><br /><br /><br />৬. আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, যারা সঠিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চেয়ারে বসে নামাজ পড়ার অনুমতি পেয়েছেন বা চেয়ার ব্যতীত যাদের কোনো বিকল্প নেই, তারা মসজিদে গিয়ে চেয়ারে বসে নামায পড়বেন, নাকি মসজিদের শোভা নষ্ট হবে এই অজুহাতে মসজিদ ছেড়ে ঘরে নামায আদায় করবেন?<br /><br /><br /><br />এ ক্ষেত্রে আমাদের দৃষ্টিতে সঠিক মত হলো- তারা মসজিদে গিয়েই জামাতে শরীক হয়ে নামাজ আদায় করবেন, যদিও তারা চেয়ার ব্যবহার করতে বাধ্য। কারণ, ফরয নামাজ আদায় করার আসল রূপই হচ্ছে, মসজিদে গিয়ে সবাই মিলে জামাত করে নামাজ আদায় করা। সম্মিলিতভাবে বন্দেগি করা ও দাসত্ব প্রকাশ করা আল্লাহর নিকট অত্যন্ত পছন্দনীয়। তাই মসজিদের জামাতের গুরুত্ব অপরিসীম। এ বিষয়ে একাধিক আয়াত ও অসংখ্য হাদীস রয়েছে। যেমন- <br /><br />وَارْكَعوا مَعَ الرَّاكِعِينَ<br /><br />(সূরা বাকারা: ৪৩)<br /><br />وَتَقَلُّبَكَ فِي السَّاجِدِينَ<br /><br /> -সূরা শুআরা- ২১৯<br /><br /><br /><br />عن أبي هريرة : أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: والذي نفسي بيده لقد هممت أن آمر بحطب، فيحطب، ثم آمر بالصلاة، فيؤذن لها،ثم آمر رجلا فيؤم الناس، ثم أخالف إلى رجال، فأحرق عليهم بيوتهم، والذي نفسي بيده لو يعلم أحدهم، أنه يجد عرقا سمينا، أو مرماتينحسنتين، لشهد العشاء<br /><br />(সহিহ বোখারি : হাদিস নং-৬৪৪<br /><br /><br /><br />عن أبي هريرة، قال : أتى النبي صلى الله عليه وسلم رجل أعمى، فقال: يا رسول الله، إنه ليس لي قائد يقودني إلى المسجد، فسأل رسول اللهصلى الله عليه وسلم أن يرخص له، فيصلي في بيته، فرخص له، فلما ولى، دعاه، فقال: هل تسمع النداء بالصلاة؟ قال: نعم، قال: فأجب <br /><br /><br /><br />সহিহ মুসলিম : হাদিস নং- ৬৫৩<br /><br /><br /><br />তাই যারা জামাতে উপস্থিত হতে পারে, তাদের জন্য এর বিকল্প নেই। কেননা মসজিদের নামাজে যে প্রাণ থাকে, ঘরের নামাজে সেটা থাকে না। তাছাড়া এ ধরণের বয়োবৃদ্ধ অসুস্থ রোগীর কষ্ট করে জামাতে উপস্থিত হওয়া, অন্যদেরকে মসজিদে গিয়ে জামাতে শরীক হতে উৎসাহী করবে এবং গাফেল লোকদের মসজিদমুখী হতে প্রেরণা যোগাবে। তাই এমন লোকদের মসজিদের জামাতে উপস্থিতি আল্লাহ তাআলা, ফেরেশতা ও সকল সৃষ্টির কাছে পছন্দনীয়।<br /><br /><br /><br /><br /><br />তবে যারা আন্তরিকতার সাথে এ ধরনের লোকদের মসজিদে গিয়ে চেয়ারে বসে নামায পড়ার ব্যাপারে প্রশ্ন করেন তাদের আলোচনা থেকে বোঝা যায়, তাদের অপছন্দের উল্লেখযোগ্য কারণ হচ্ছে, বিধর্মীদের সাথে সাদৃশ্য। যা থেকে নিষেধ করা হয়েছে।<br /><br /><br /><br />এর উত্তরে বলব, অপারগতা ও প্রয়োজনের ক্ষেত্রে সাদৃশ্য অবৈধতার কারণ নয়। অর্থাৎ- মানুষ যা করতে বাধ্য, যা না হলে মানুষের জন্য কষ্টের কারণ হবে, এমন বিষয়ে সাদৃশ্যের বিধান প্রযোজ্য নয়। কারণ এ সকল বিষয় কারো সাদৃশ্য গ্রহণের জন্য করা হয় না, বরং প্রয়োজনে করা হয়। তাই এগুলোকে সাদৃশ্যের কারণে হারাম বলা যাবে না। তাছাড়া মূল রহস্য বা কারণ না বুঝে শুধু সাদৃশ্য দেখেই যদি ঢালাওভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ বিষয়গুলিকে হারাম বলে দেওয়া হয়, তাহলে খাওয়া-দাওয়াসহ জীবন ধারণের অনেক মৌলিক বিষয়ও তার আওতায় চলে আসবে। কারণ, এসব বিষয় মৌলিকভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ। আর এ সব হারাম হয়ে গেলে মানব জীবনই বিপন্ন হয়ে পড়বে। তাই যে সকল বিষয় আবশ্যক, প্রয়োজনীয় ও উপকারী নয় বা যে সকল মৌলিক প্রয়োজন মেটানোর পথ ও পন্থা একাধিক হতে পারে, সেগুলোর ক্ষেত্রে সাদৃশ্যপূর্ণ রূপরেখা বর্জন করে সাদৃশ্যহীন<br /><br />পন্থা অবলম্বনের নির্দেশ করা হয়। আল্লামা ইবনে নুজাইম (রাহ.) বলেন-<br /><br /><br /><br />و(يكفّر) بوضع قلنسوة المجوسي على رأسه على الصحيح إلا لضرورة دفع الحر أو البرد، وبِشدّ الزنار في وسطه إلا إذا فعل ذلك خديعةفي الحرب وطليعة للمسلمين<br /><br />(আল-বাহরুর রায়েক ৫/২০৮)<br /><br /><br /><br /> হযরত থানভী  বলেন-<br /><br /><br /><br />كفار كی وضع بلا ضرورت قويہ حسيہ كدفع الحر والبرد يا شرعيہ كخدع اهل الحرب والتجسس للمسلمين افعال كفر سے ہے<br /><br />বাওয়াদিরুন নাওয়াদের- ৪৫৪)।<br /><br /><br /><br />পূর্বের আলোচনায় এ কথা স্পষ্ট হয়েছে যে, নামাজে চেয়ার শুধু প্রয়োজনের ক্ষেত্রেই ব্যবহার করতে পারবে। আর এটি তখন শরীয়তের দৃষ্টিতে ওজরের অন্তর্ভুক্ত হবে। অতএব, চেয়ারের এই বৈধ ও প্রয়োজনীয় ব্যবহারকে শুধু সাদৃশ্যের অজুহাতে অবৈধ বলা যাবে না।<br /><br /><br /><br />তবে যারা প্রয়োজন ছাড়া নামাজে চেয়ার ব্যবহার করে জেনে না-জেনে এটাকে ফ্যাশনে পরিনত করতে চলেছেন, তাদেরকে এ থেকে বিরত রাখার জন্য এ বিষয়ে সঠিক আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। ইমাম ও খতিব সাহেবগণ যদি এ বিষয়ে সঠিক মাসআলা তুলে ধরে সময়ে সময়ে আলোচনা করেন, তাহলে চেয়ারের অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার আশা করি, বন্ধ হয়ে যাবে। আর যারা প্রয়োজনে ব্যবহার করেন, তারাও মসজিদে এসে জামাতে শরীক হয়ে আল্লাহর বন্দেগী করার সুযোগ লাভ করবেন।<br /><br /><br /><br />والله اعلم بالصواب<br /><br /><br /><br /><br /></div><br />

চেয়ারে বসে নামাজ আদায়

بسم الله الرحمن الرحيم চেয়ারে বসে নামায আদায়- মূলনীতি ও কিছু বিধান ইসলাম শাশ্বত, সত্য, স্বভাবজাত ও বাস্তববাদী ধর্ম। ইসলামের প্রতিটি বিধান অত...

Read more »

চেয়ারে বসে নামাজ আদায়

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">بسم الله الرحمن الرحيم<br /><br />চেয়ারে বসে নামায আদায়- মূলনীতি ও কিছু বিধান<br /><br />ইসলাম শাশ্বত, সত্য, স্বভাবজাত ও বাস্তববাদী ধর্ম। ইসলামের প্রতিটি বিধান অত্যন্ত যৌক্তিক ও বাস্তবমুখী। চির সুন্দর,সহজ-সরল ও সর্বোপযোগী।<br /><br />ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিধান হচ্ছে, নামাজ। আল্লাহপাক যা নবীজী (সা.) কে মেরাজের রাতে পুরস্কার হিসেবে দিয়েছিলেন। নামাজ মহান প্রভুর দরবারে দীনতা, নিয়ামতরাজির প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং তাঁর শাহী দরবারে বান্দার নানাবিদ চাহিদা পূরণের মিনতি জানানোর মাধ্যম। ঈমানের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত নামাজ। তাই ঈমানের পরে, সকল ইবাদতের ঊর্ধ্বে তার স্থান। যে নামাজ কায়েম করল, সে দ্বীন প্রতিষ্ঠিত করল। আর যে নামাজ ধ্বংস করল, সে দ্বীন ধ্বংস করল। অর্থাৎ যার নামাজ ঠিক তার দ্বীন ঠিক। আর যার নামাজ বরবাদ তার দ্বীন বরবাদ। অতএব, যে ব্যক্তির নামাজ যত সুন্দর হবে, তার দুনিয়া-আখেরাতের জিন্দেগীও তত সুন্দর ও সফল হবে।<br /><br />তবে নামাজের এ অসীম গুরুত্বের পাশাপাশি শরীয়তের আরেকটি মৌলিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি লক্ষ্য রাখা আবশ্যক। আর তা হচ্ছে, সকল ক্ষেত্রে সহজীকরণ। আল্লাহ পাক সাধ্যাতীত নির্দেশ দেন না, বরং যা সহজ তাই আল্লাহর নিকট প্রিয়।<br /><br />ইরশাদ হয়েছে,<br /> لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا<br />অর্থাৎ- “আল্লাহতাআলা সাধ্যের বাহিরে কোন দায়িত্ব কারও উপর চাপিয়ে দেন না”। -সূরা বাকারা : ২৮৬<br /><br />ইরশাদ হয়েছে, <br />يُرِيدُ اللَّهُ بِكُمُ الْيُسْرَ وَلَا يُرِيدُ بِكُمُ الْعُسْرَ<br />অর্থাৎ “আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান, তোমাদের জন্য  কঠিন করতে চান না”। -সূরা বাকারা : ১৮৫<br /><br />অতএব, অবহেলা প্রদর্শন না করে নামাজের প্রতি পূর্ণ মর্যাদা ও গুরুত্ব উপলব্ধি করা যেমন আবশ্যক, তার সাথে নামাজকে সাধ্যাতীত না করে, বরং সহজ করে দেখাও আবশ্যক। এ দুয়ের মাঝেই রয়েছে সীরাতে মুস্তাকীম। এই মৌলিক আলোচনার পর চেয়ারে বসে নামাজ আদায়ের কয়েকটি বিধান নিচে তুলে ধরা হলো—<br /><br />১. কিয়াম, রুকু ও সিজদা- নামাজের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়; যা নামাজের রুকন বা ফরযের অন্তর্ভুক্ত। কেউ যদি এই রুকনগুলো সঠিকভাবে আদায় করতে সক্ষম হওয়া সত্ত্বেও অবহেলা করে ছেড়ে দেয় বা চেয়ারে বসে ইশারায় নামাজ আদায় করে, তার নামাজ আদায় হবে না। আর কেউ যদি কোন রুকন প্রকৃতপক্ষেই আদায় করতে সক্ষম না হয় বরং শরীয়তের দৃষ্টিতে সে মাযুর (অক্ষম) সাব্যস্ত হয়, তাহলে সে এ রুকনটি ইশারার মাধ্যমে আদায় করে নিবে। এতে তার নামাজ পরিপূর্ণ বলে গণ্য হবে এবং সে পূর্ণ সওয়াবের অধিকারী হবে। -রদ্দুল মুহতার : ১/৪৪২<br /><br />হজরত ইমরান ইবনে হুসাইন (রা.) বলেন-<br /><br />كانت بي بواسير فسألت النبي صلى الله عليه وسلم عن الصلاة فقال صل قائما فإن لم تستطع فقاعدا فإن لم تستطع فعلى جنب<br /> -সহিহ বোখারি; হাদিস নং- ১১১৭)<br /><br />২. সুতরাং কেউ যদি দাঁড়াতে সক্ষম না হয়, কিন্তু মাটিতে বসে সিজদা করতে সক্ষম, তাহলে তাকে মাটিতে বসে সিজদা করে নামাজ আদায় করতে হবে। চেয়ারে বসে ইশারা করে রুকু সিজদা করলে তার নামাজ আদায় হবে না।<br /><br />আল্লামা ইবনে আবেদীন শামী (রাহ.) বলেন-<br /><br />ولايصح الإيماء بهما – ( الركوع والسجود) –  مع القدرة عليهما، بل شرطه تعذرهما۔<br /><br />-রদ্দুল মুহতার ২/৯৯, এইচ. এম. সাঈদ<br /><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhIt-W0pVjIcXH4WUX3EuAljbe3o0ISX-83SNsW0GUCqiHuxafRDMv6GhC64abeHLg5qdw2mZ8_GIdPNka4j_G2kX9J7afdhrv5Wvthl2qDPZpTBuplOAQm3EmoU27NHfCYWOZy1CJceO85/s1600/images-1.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="350" data-original-width="564" height="198" loading="lazy" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhIt-W0pVjIcXH4WUX3EuAljbe3o0ISX-83SNsW0GUCqiHuxafRDMv6GhC64abeHLg5qdw2mZ8_GIdPNka4j_G2kX9J7afdhrv5Wvthl2qDPZpTBuplOAQm3EmoU27NHfCYWOZy1CJceO85/s320-rw/images-1.jpg" width="320" /></a></div><br /><br /> ৩. তবে যে ব্যক্তি দাঁড়াতেও সক্ষম না এবং জায়নামাজে বসে সিজদা করতেও সক্ষম না, চেয়ার বা নীচে বসে ইশারার মাধ্যমে সিজদা করা ছাড়া তার উপায় নেই, এমন ব্যক্তির ক্ষেত্রে বিধান হল, যথাসম্ভব জায়নামাজে বসেই ইশারা করার চেষ্টা করবে। এটাই উত্তম। কারণ বৈঠকে অধিক বিনয় প্রকাশ পায় এবং বৈঠক সিজদার নিকটবর্তী অবস্থান। তবে কেউ যদি নীচে বসতে সক্ষম না হয়, কিংবা এতে তার অধিক কষ্ট হয়, এমন ব্যক্তির জন্যে চেয়ারে বসে ইশারায় নামায আদায় করতে কোনো বাধা নেই। নিঃসন্দেহে তার নামাজ বিশুদ্ধভাবে আদায় হয়ে যাবে।<br /><br />ইমাম আল মারগীনানী (রাহ.) বলেন- <br />والأفضل هو الإيماء قاعدا ، لأنه أشبه بالسجود<br />(আল-হিদায়া- ১/১৬২)।<br /><br />হযরত ইবনে আবী লায়লা (রাহ.) রর্ণনা করেন-<br /> عن عطاء قال في صلاة القاعد يقعد كيف شاء<br />(মুসান্নাফু ইবনি আবী শায়বা ৬/৬৬, হাদীস নং- ৮৮৭৩)।<br /><br />ইমাম সারাখসী (রাহ.) বলেন-<br /><br />والمصلى قاعدا تطوعا أو فريضة بعذر يتربع ويقعد كيف شاء من غير كراهة إن شاء محتبيا وإن شاء متربعا لأنه لما جاز له ترك أصلالقيام فترك صفة القعود أولى. (جـ 1 صـ 902)<br /><br />৪. যে ব্যক্তি দাঁড়াতে এবং বসতে সক্ষম কিন্তু সিজদা করতে সক্ষম না, সিজদা তাকে ইশারায় করতে হয়। এমন ব্যক্তির জন্য কিয়ামের ফরয আদায়ের লক্ষ্যে দাঁড়ানো আবশ্যক, না বসে নামাজ পড়লেও নামায আদায় হবে। এতে দু’টি মত রয়েছে।<br /><br />আমাদের হানাফি মাজহাবের প্রসিদ্ধ মত হল, তার জন্য দাঁড়ানো আবশ্যক নয়; বসে পড়লেও তার নামাজ আদায় হয়ে যাবে। তবে অনেকের অভিমত হচ্ছে, যতটুকু সম্ভব দাঁড়িয়ে কিয়ামের ফরয আদায় করতে হবে। তারপর সম্ভব হলে রুকু করবে। তারপর তার জন্য দুটি পন্থা রয়েছে, যে কোন একটি অবলম্বন করতে পারবে-<br />এক. বসে ইশারার মাধ্যমে সিজদা আদায় করা। এটা উত্তম।<br />দুই. দাঁড়িয়ে ইশারার মাধ্যমে সিজদা আদায় করা। তখন সিজদার জন্য মাথাকে রুকুর চেয়ে একটু বেশি নিচু করবে।<br /><br />ইমাম আইনী (রাহ.) উল্লেখ করেন-<br /><br />وعن أبي جعفر الطحاوي : ولو قدر على بعض القيام ولو قدر آية أو تكبيرة يقوم ذلك القدر وإن عجز عن ذلك قعد، وإن لم يفعل ذلك خفتأن تفسد صلاته، هذا هو المذهب، ولا يروى عن أصحابنا خلافه، وكذا إذا عجز عن القعود وقدر على الاتكاء أو الاستناد إلى إنسان أو حائطأو وسادة لا يجزئه إلا كذلك. ولو استلقى لا يجزئه <br /><br />-আল বেনায়া- ২/৬৩৫, মাকতাবা নাঈমিয়া<br /><br />উভয় মতানুসারে বসার ক্ষেত্রে জায়নামায বা নীচে বসা আবশ্যক, নাকি চেয়ারে বসতে পারবে? এ বিধানটি তিন নম্বরে উল্লেখ করা হয়েছে। -রদ্দুল মুহতার- ২/৯৮, ইলাউস সুনান; ৭/১৯৮ দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যা<br /><br />৫. এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, কে সক্ষম, কে অক্ষম, কে মাজুর বা কতটুক মাজুর এবং কে মাজুর না, সে বিষয়টি নির্ণয় করা। এ ক্ষেত্রে সংক্ষিপ্ত কথা হচ্ছে, বয়স্ক এবং প্রকাশ্যে রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা নিজেদের অপারগতা সম্পর্কে অনেকটা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, যদি এ সংক্রান্ত মাসআলা তাদের জানা থাকে। তবে এমন অভিজ্ঞ ব্যক্তি খুবই কম রয়েছেন। তাই উত্তম পন্থা হচ্ছে, নিজে সিদ্ধান্ত না নিয়ে বিজ্ঞ-অভিজ্ঞ মুফতি সাহেবদের শরণাপন্ন হয়ে জেনে নেয়া।<br /><br />আর যারা বাহ্যিকভাবে সুস্থ, কিন্তু বিশেষ রোগের কারণে বিশেষজ্ঞ বিশ্বস্ত ডাক্তার তাদেরকে রুকু সিজদা করতে নিষেধ করেছেন, তাদের ক্ষেত্রেও মাজুরের হুকুম প্রযোজ্য হবে। তবে তাদের জন্যও উচিত হবে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে বিজ্ঞ মুফতিদের শরণাপন্ন হওয়া।<br /><br />৬. আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, যারা সঠিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চেয়ারে বসে নামাজ পড়ার অনুমতি পেয়েছেন বা চেয়ার ব্যতীত যাদের কোনো বিকল্প নেই, তারা মসজিদে গিয়ে চেয়ারে বসে নামায পড়বেন, নাকি মসজিদের শোভা নষ্ট হবে এই অজুহাতে মসজিদ ছেড়ে ঘরে নামায আদায় করবেন?<br /><br />এ ক্ষেত্রে আমাদের দৃষ্টিতে সঠিক মত হলো- তারা মসজিদে গিয়েই জামাতে শরীক হয়ে নামাজ আদায় করবেন, যদিও তারা চেয়ার ব্যবহার করতে বাধ্য। কারণ, ফরয নামাজ আদায় করার আসল রূপই হচ্ছে, মসজিদে গিয়ে সবাই মিলে জামাত করে নামাজ আদায় করা। সম্মিলিতভাবে বন্দেগি করা ও দাসত্ব প্রকাশ করা আল্লাহর নিকট অত্যন্ত পছন্দনীয়। তাই মসজিদের জামাতের গুরুত্ব অপরিসীম। এ বিষয়ে একাধিক আয়াত ও অসংখ্য হাদীস রয়েছে। যেমন- <br />وَارْكَعوا مَعَ الرَّاكِعِينَ<br />(সূরা বাকারা: ৪৩)<br />وَتَقَلُّبَكَ فِي السَّاجِدِينَ<br /> -সূরা শুআরা- ২১৯<br /><br />عن أبي هريرة : أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: والذي نفسي بيده لقد هممت أن آمر بحطب، فيحطب، ثم آمر بالصلاة، فيؤذن لها،ثم آمر رجلا فيؤم الناس، ثم أخالف إلى رجال، فأحرق عليهم بيوتهم، والذي نفسي بيده لو يعلم أحدهم، أنه يجد عرقا سمينا، أو مرماتينحسنتين، لشهد العشاء<br />(সহিহ বোখারি : হাদিস নং-৬৪৪<br /><br />عن أبي هريرة، قال : أتى النبي صلى الله عليه وسلم رجل أعمى، فقال: يا رسول الله، إنه ليس لي قائد يقودني إلى المسجد، فسأل رسول اللهصلى الله عليه وسلم أن يرخص له، فيصلي في بيته، فرخص له، فلما ولى، دعاه، فقال: هل تسمع النداء بالصلاة؟ قال: نعم، قال: فأجب <br /><br />সহিহ মুসলিম : হাদিস নং- ৬৫৩<br /><br />তাই যারা জামাতে উপস্থিত হতে পারে, তাদের জন্য এর বিকল্প নেই। কেননা মসজিদের নামাজে যে প্রাণ থাকে, ঘরের নামাজে সেটা থাকে না। তাছাড়া এ ধরণের বয়োবৃদ্ধ অসুস্থ রোগীর কষ্ট করে জামাতে উপস্থিত হওয়া, অন্যদেরকে মসজিদে গিয়ে জামাতে শরীক হতে উৎসাহী করবে এবং গাফেল লোকদের মসজিদমুখী হতে প্রেরণা যোগাবে। তাই এমন লোকদের মসজিদের জামাতে উপস্থিতি আল্লাহ তাআলা, ফেরেশতা ও সকল সৃষ্টির কাছে পছন্দনীয়।<br /><br /><br />তবে যারা আন্তরিকতার সাথে এ ধরনের লোকদের মসজিদে গিয়ে চেয়ারে বসে নামায পড়ার ব্যাপারে প্রশ্ন করেন তাদের আলোচনা থেকে বোঝা যায়, তাদের অপছন্দের উল্লেখযোগ্য কারণ হচ্ছে, বিধর্মীদের সাথে সাদৃশ্য। যা থেকে নিষেধ করা হয়েছে।<br /><br />এর উত্তরে বলব, অপারগতা ও প্রয়োজনের ক্ষেত্রে সাদৃশ্য অবৈধতার কারণ নয়। অর্থাৎ- মানুষ যা করতে বাধ্য, যা না হলে মানুষের জন্য কষ্টের কারণ হবে, এমন বিষয়ে সাদৃশ্যের বিধান প্রযোজ্য নয়। কারণ এ সকল বিষয় কারো সাদৃশ্য গ্রহণের জন্য করা হয় না, বরং প্রয়োজনে করা হয়। তাই এগুলোকে সাদৃশ্যের কারণে হারাম বলা যাবে না। তাছাড়া মূল রহস্য বা কারণ না বুঝে শুধু সাদৃশ্য দেখেই যদি ঢালাওভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ বিষয়গুলিকে হারাম বলে দেওয়া হয়, তাহলে খাওয়া-দাওয়াসহ জীবন ধারণের অনেক মৌলিক বিষয়ও তার আওতায় চলে আসবে। কারণ, এসব বিষয় মৌলিকভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ। আর এ সব হারাম হয়ে গেলে মানব জীবনই বিপন্ন হয়ে পড়বে। তাই যে সকল বিষয় আবশ্যক, প্রয়োজনীয় ও উপকারী নয় বা যে সকল মৌলিক প্রয়োজন মেটানোর পথ ও পন্থা একাধিক হতে পারে, সেগুলোর ক্ষেত্রে সাদৃশ্যপূর্ণ রূপরেখা বর্জন করে সাদৃশ্যহীন<br />পন্থা অবলম্বনের নির্দেশ করা হয়। আল্লামা ইবনে নুজাইম (রাহ.) বলেন-<br /><br />و(يكفّر) بوضع قلنسوة المجوسي على رأسه على الصحيح إلا لضرورة دفع الحر أو البرد، وبِشدّ الزنار في وسطه إلا إذا فعل ذلك خديعةفي الحرب وطليعة للمسلمين<br />(আল-বাহরুর রায়েক ৫/২০৮)<br /><br /> হযরত থানভী  বলেন-<br /><br />كفار كی وضع بلا ضرورت قويہ حسيہ كدفع الحر والبرد يا شرعيہ كخدع اهل الحرب والتجسس للمسلمين افعال كفر سے ہے<br />বাওয়াদিরুন নাওয়াদের- ৪৫৪)।<br /><br />পূর্বের আলোচনায় এ কথা স্পষ্ট হয়েছে যে, নামাজে চেয়ার শুধু প্রয়োজনের ক্ষেত্রেই ব্যবহার করতে পারবে। আর এটি তখন শরীয়তের দৃষ্টিতে ওজরের অন্তর্ভুক্ত হবে। অতএব, চেয়ারের এই বৈধ ও প্রয়োজনীয় ব্যবহারকে শুধু সাদৃশ্যের অজুহাতে অবৈধ বলা যাবে না।<br /><br />তবে যারা প্রয়োজন ছাড়া নামাজে চেয়ার ব্যবহার করে জেনে না-জেনে এটাকে ফ্যাশনে পরিনত করতে চলেছেন, তাদেরকে এ থেকে বিরত রাখার জন্য এ বিষয়ে সঠিক আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। ইমাম ও খতিব সাহেবগণ যদি এ বিষয়ে সঠিক মাসআলা তুলে ধরে সময়ে সময়ে আলোচনা করেন, তাহলে চেয়ারের অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার আশা করি, বন্ধ হয়ে যাবে। আর যারা প্রয়োজনে ব্যবহার করেন, তারাও মসজিদে এসে জামাতে শরীক হয়ে আল্লাহর বন্দেগী করার সুযোগ লাভ করবেন।<br /><br />والله اعلم بالصواب<br /><br /><br /></div>

চেয়ারে বসে নামাজ আদায়

بسم الله الرحمن الرحيم চেয়ারে বসে নামায আদায়- মূলনীতি ও কিছু বিধান ইসলাম শাশ্বত, সত্য, স্বভাবজাত ও বাস্তববাদী ধর্ম। ইসলামের প্রতিটি বিধান অত...

Read more »

দুর্বল হাদিস একাধিক সূত্রে বর্ণিত হলে হাসান-এ পৌছে যায়

দুর্বল হাদিস একাধিক সূত্রে বর্ণিত হলে হাসান-এ পৌছে যায় ইলমে হাদিসের এ নীতিমালাটি এখানে এ জন্য উল্লেখ করলাম বর্তমান আহলে হাদিসগন দ্বঈফ সনদের হাদিস একাধিক সনদে বর্ণিত হলেও সেটি নাকি দ্বঈফই থাকবে। কিন্তু নিজেদের স্বার্থে আবার পুরাে উল্টো। নিজেদের স্ব পক্ষে কোন অত্যন্ত দুর্বল হাদিস থাকলেও তাকে 'হাসান' বলতে একটু দ্বিধাবােধ করেন না। এ উসূলে। হাদিসের এ নীতিমালাটি বিভিন্ন হাদিস সম্পর্কে আলােকপাতকালে অনেক প্রয়ােজন। পড়বে তাই বারবার যাতে উল্লেখ করতে না হয় সেজন্য এখানে তা উল্লেখ করলাম। এ প্রসঙ্গে আমি কিছু মুহাদ্দিস ও ফকিহগনের মতামত নিম্নে উল্লেখ করলাম<br />দলীল নং-১<br />আল্লামা মােল্লা আলী কারী  বলেন,“দ্বঈফ হাদিসও একাধিক সনদে বর্ণিত হলে “হাসান হাদিস এর পর্যায়ে পৌঁছে যায়।”<br />দলীল নং-২ আল্লামা মােল্লা আলী ক্বারী رضي الله عنه অন্য স্থানে বলেন,<br />-“একাধিক সনদে যদিও দ্বঈফ হাদিস বর্ণিত হয় তবে বর্ণিত ঐ হাদিস “হাসান বলে গণ্য হবে বা উপনীত হবে।”<br />দলীল নং- ৩ আল্লামা কামালুদ্দীন ইবনে হুমাম رضي الله عنه বলেন,<br />-“হাদীসের সমস্ত রাবী দুর্বল প্রমাণিত হওয়া সত্ত্বেও বিভিন্ন তরিকায় বর্ণিত হওয়ার কারণে তা হাসানে' পরিণত হয়ে যায়।"<br />দলীল নং- ৪ আল্লামা কামালুদ্দীন ইবনে হুমাম رضي الله عنه বলেন,<br />-“যখন হাসান হাদিস অনেক সনদ দ্বারা বর্ণিত হয়, তখন তা সহিহ পর্যন্ত উন্নীত করা জায়েজ আছে, এবং দুর্বল সনদের হাদিস এই পদ্ধতিতে (একাধিক তরিকায় বর্ণনায়) দলীল হওয়ার যােগ্যতা অর্জন করে। যখন বিভিন্ন সনদে হাদিস বর্ণিত হয়, তা দৃঢ় দলীল হওয়ার ও আদেশ প্রয়ােগের যােগ্যতা রাখে।'<br />দলীল নং-৫ আল্লামা ইমাম শা'রানী رضي الله عنه বলেন,নি:সন্দেহে জমহুর মুহাদ্দিসীনগণ দুর্বল হাদিসকে অধিক সনদে বর্ণিত হওয়ায় কারণে দলীল হওয়ার যােগ্যতা রূপে মেনে নিয়েছেন এবং সেটিকে কোন সময় সহিত আবার কোন সময় হাসান'র সহিত মিলিয়েছেন। এই প্রকারের দুর্বল হাদিস  ইমাম বায়হাকীর ‘সুনানে কোবরা’ মধ্যে অধিক পাওয়া যায়, যাকে ইমাম মুজতাহিদীন এবং আসহাবে আইয়াম্মা দলীল হিসেবে গ্রহণের জন্য ইচ্ছাপােষন করেন।<br />দলীল নং- ৬ আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ূতি رضي الله عنه বলেন,<br />-“মাতরুক ও মুনকার হাদিস বিভিন্ন তরিকায় বর্ণিত হওয়ার কারণে দ্বঈফ হাদীসের মর্যাদায় উপনীত হয়। আবার কখনাে হাদীসে “হাসানের মর্যাদায় উপনীত হয়ে থাকে।”<br />দলীল নং- ৭ আল্লামা জাফর আহমদ উসমানী বলেন,<br />-“দ্বঈফ হাদিস একাধিক তরিকায় বর্ণিত হওয়ার কারণে, যদিও তা এক সনদে বর্ণিত ছিল, তা সমষ্টিগত ভাবে হাসানের দরজায় উন্নীত হয় এবং এটি দলীল হিসেবে প্রয়ােগ করা যায়।<br />দলীল নং-৮ আল্লামা আব্দুল হক মুহাদ্দিস দেহলভী رضي الله عنه বলেন,<br />-“আর দ্বঈফ হাদিস যদি বিভিন্ন সনদে বর্ণিত হয় এবং তার দুর্বলতা দূরীভূত হয়, তাহলে তাকে “হাসান লিগাইরিহি” নামে নামকরণ করা হয়।”<br />আর দ্বঈফ হাদিস যদি বিভিন্ন সনদে বর্ণিত হয়, গ্রহণীয় হওয়ার প্রমাণ দ্বারা শক্তিশালী হয়, তবে তা ‘হাসান লিগাইরিহী’ হয়ে যাবে।”<br />দলীল নং- ১০ আল্লামা শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিস দেহলভী رضي الله عنه  বলেন :<br /> -“আর দ্বঈফ হাদিস যদি বিভিন্ন সনদে বর্ণিত হওয়ার দরুন “হাসান লিগাইরিহী” হওয়ার মর্যাদায় উপনীত হয়, তা দলীল হওয়া সম্পর্কে আলিমগণ একমত হয়েছেন।"<br />দলীল নং- ১১ আল্লামা বদরুদ্দিন আইনী رضي الله عنه  বলেন :<br />-“যখন দ্বঈফ হাদিস অন্য কোন সনদ বা বর্ণনা দ্বারা শক্তিশালী হয় অর্থাৎ দুর্বলতা দূর হয়ে যায়, তখন তা হাসান লিগাইরিহী রূপে গৃহিত হবে। ”<br />দলীল নং- ১২<br />দুররুল মুখতার গ্রন্থের প্রথম খন্ড  শীর্ষক অধ্যায়ে ওযুর বিভিন্ন অংশের দু'আ প্রসঙ্গে বর্ণিত আছে,<br />-“এ হাদিসটি ইমাম ইবনে হিব্বানর প্রমুখের কয়েকটি সনদ দ্বারা মার সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। "<br />উক্ত রেওয়ায়েতের ব্যাখ্যায় ইমাম ইবনে আবেদীন শামী  رضي الله عنه বলেন :<br />-“কতেক সনদ কতেক সনদকে শক্তি জোগায়। তাই এ হাদিস হাসান” পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।”<br /><div><br /></div><div><br /></div><div><br /></div>

দুর্বল হাদিস একাধিক সূত্রে বর্ণিত হলে হাসান-এ পৌছে যায়

দুর্বল হাদিস একাধিক সূত্রে বর্ণিত হলে হাসান-এ পৌছে যায় ইলমে হাদিসের এ নীতিমালাটি এখানে এ জন্য উল্লেখ করলাম বর্তমান আহলে হাদিসগন দ্বঈফ সনদের...

Read more »

হাদিসের একটি সনদ জাল হলে মতনটি (মূল বিষয়) জাল হওয়া অপরিহার্য নয়

হাদিসের একটি সনদ জাল হলে মতনটি (মূল বিষয়) জাল হওয়া অপরিহার্য নয়<br />বর্তমান বাতিলপন্থি বিশেষকরে আহলে হাদিসদের দেখা যায় যে কোন বিষয়ে হাদিসের একটি সনদ জাল হলে হাদিসটির মতন তথা বিষয় বস্তুকেও জাল বলতে ধিদ্বাবােধ করেন না। তাই এটা যে কত বড় ধোকা এবং তারা যে হাদিস পন্ডিতের নামে সাধারন মুসলমানদেরকে ধোকা দিচ্ছে তার কিছু নমুনা মুহাদ্দিসদের ভাষ্য দ্বারা দিতে চাই। ইমাম যাহাবী  رضي الله عنه   একটি মিথ্যাবাদি রাবির জীবনী আলােচনা করতে<br />গিয়ে লেখেন,<br />“রাবি ইবরাহিম বিন মূসা” ইমাম মালেক  رضي الله عنه   থেকে তিনি তাবেয়ী নাফে  رضي الله عنه   থেকে তিনি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর  رضي الله عنه   থেকে বর্ননা করেন রাসূল ﷺ ইরশাদ করেন, প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ইলম অর্জন করা ফরজ। ইমাম আহমদ   رضي الله عنه  বলেন, মূসা মিথ্যাবাদী। ইমাম যাহাবি   رضي الله عنه  বলেন,ইমাম আহমদ   رضي الله عنه 'র উক্ত বক্তব্যেও সমার্থ হলাে সনদের ব্যাপারে তবে মতনের বিষয় বস্তুর ব্যাপারে নয় কেননা এই হাদিসটির অনেক দুর্বল সনদ রয়েছে। ইমাম ইবনুল বার তার বিখ্যাত হাদিস গ্রন্থ আত-তামহীদ’ কিতাবে একটি হাদিস বর্ননা করেছেন- -“মেসওয়াক করে নামাজ মেসওয়াক ছাড়া হতে ৭০ গুন উত্তম।” এই সনদটি সম্পকে ইমাম ইবনে মুঈন  رضي الله عنه বলেন,  এই হাদিসের এই সনদটি বাতিল। তার এই বক্তব্যের পর ইমাম সাখাভী رضي الله عنه বলেন, তা বক্তব্যটি সনদের ব্যাপারে, কেননা এই হাদিসটি মিথ্যাবাদী রাবী রয়েছেন কিন্তু হাদিসটির অনেক সনদ বর্নিত আছে। একটি হাদিসে রয়েছে,<br /> জনৈক এক ব্যক্তি রাসূল ﷺ কে বললেন আমার বিবি যাকে পায় তাকেই স্পৰ্ষ করে, তার উত্তরে দয়াল নবিজী  ﷺ বললেন, তুমি তাকে তালাক দাও,সে বলল আমি তাকে ভালবাসি। নবিজী ﷺ আবার বললেন তাহলে তুমি তাকে রেখে দাও।  এই হাদিসের ব্যাপারে ইমাম নাসাঈ  رضي الله عنه বলেন, এ হাদিসের কোন ভিত্তি নেই। তার জবাবে ইমাম জওজী বলেন, এই সনদটিরই এ অবস্থা কিন্তু এ হাদিসটির আরও অনেক সনদ রয়েছে। তাই এ রকম অনেক উদাহারন আমার এ কিতাবে বিভিন্ন হাদিসের আলােচনায় তা পাবেন যে একটি সনদ জাল বলে এ বিষয়টিই হাদিস জাল তা বলা ধোকাবাজি ছাড়া আর কিছু নয়।

হাদিসের একটি সনদ জাল হলে মতনটি (মূল বিষয়) জাল হওয়া অপরিহার্য নয়

হাদিসের একটি সনদ জাল হলে মতনটি (মূল বিষয়) জাল হওয়া অপরিহার্য নয় বর্তমান বাতিলপন্থি বিশেষকরে আহলে হাদিসদের দেখা যায় যে কোন বিষয়ে হাদিসের...

Read more »