সুরা ইউসুফের ১০৬ নং আয়াতের ব্যাখ্যা

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">▆ সূরা ইউসুফ আয়াত ১০৬ এর তাফসীর।<br /><br />এই পবিত্র আয়াতুল কারিম ক্বুরআনুল কারিম নাযীলের সময়কালের কাফীর-মুুশরিকদের ঈমানকে কটাক্ষ করে নাযীলকৃত।<br /><br />এই আয়াতে প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم) কে প্রেরণের আগে থেকে তাদের দীর্ঘ দিনের লালিত ঈমানের সাথে শির্কি আক্বিদার স্বরুপ তুলে ধরা হয়েছে।<br />তারা তাদেরই হাতে গড়া মূর্তী আর তাদেরই হাতে জ্বালানো আগুনের পূঁজা করত, সেগুলোকে তাদের দেবতা বানিয়ে নিয়েছিল।<br />আর সেগুলোকে আল্লাহর সহযোগী (Partner) বলে বিশ্বাস করত।<br /><br />আয়াতটি :<br />  وَمَا يُؤْمِنُ أَكْثَرُهُمْ بِاللَّهِ إِلَّا وَهُمْ مُشْرِكُونَ<br />অর্থাৎ : “(মুশরিকদের মধ্যে) অনেক মানুষ এরুপও রয়েছে যে তারা আল্লাহকে বিশ্বাস করে; আবার শিরকও করে।”<br />[সূরাহ্ ইউসূফ; ১২/১০৬।]<br /><br />এ সুরাটি হিজরতের পূর্বে মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছিলো।<br />সুরাটি এমন এক সময়ে নাজিল করা হয় যখন প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم)  ও তাঁর সাহাবায়ে কেরাম রা.-কে মক্কার কাফির-মুশরিকদের হাতে চরম নির্যাতন ও লাঞ্ছনা ভোগ করতে হচ্ছিল।<br />তাঁদের ওপর জুলুমের মাত্রা এতটাই সীমা লঙ্ঘন করেছিল, তাঁরা অপেক্ষায় ছিলেন কখন আল্লাহ তাআলা আসমানি সাহায্য নাজিল করবেন।<br />এমনকি অসহ্য হয়ে অনেকে মাতৃভূমি মক্কা ত্যাগ করার প্রাথমিক প্রস্তুতিও সম্পন্ন করেছিলেন।<br />মক্কার দেব-দেবীর পূঁজারী কাফির মুশরিকদের সাথে ছিলো আরবের পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের আহলে কিতাব তথা ইহুদি-খ্রিস্টানদের সাথে গভীরতর সু-সম্পর্ক।<br /><br />পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের তৎকালিন ইহুদি-খ্রিস্টান মুশরিকেরা যখন জানতে পারলো আল্লাহ্ (سبحانه و تعالى) এঁর হাবিব প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم)  রিসালাতের ঘোষণা প্রদানপূর্বক আল্লাহ্ (سبحانه و تعالى) এঁর তাউহিদ বা একত্ববাদের ডাক দিয়েছেন তখন আল্লাহ্ (سبحانه و تعالى) এঁর হাবিব প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم) কে অপমান অপদস্থ করার মানসে আহলে কিতাব মুশরিকেরা হযরত ইউসূফ আ. এঁর ঘটনা বিস্তারিত জানানোর জন্যে বলে।<br /><br />আহলে কিতাব ইহুদি-খ্রিস্টান মুশরিকদের দৃঢ় বিশ্বাস ছিলো প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم)  মক্কাবাসী হওয়ায় হযরত ইউসূফ আ. এঁর সাথে সম্পর্কিত সুপ্রাচীন সে ঘটনা তিনি জানাতে পারবে না।<br /><br />আল্লাহ তালার কাছে অতীত বর্তমান ভবিষ্যত বলতে কিছু নেই, তিনি সব বিষয়েই জ্ঞান রাখেন। কোনো কিছুই তার অজানা বা গায়িব নয়। নবী রাসূলগণকে আল্লাহতালাই অদৃশ্য বা গায়িব সম্পর্কে জ্ঞান বা ইলম দান করেন।<br /><br />নবী রাসূলদের অলৌকিক কর্ম এবং যাদুকরের যাদু এক নয়।<br /><br />আল্লাহ্ (سبحانه و تعالى) তাঁর হাবিব প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم) এঁর নুবূয়্যাত (গায়বের খবর জানানোর মর্যাদায় অধিষ্ঠা) এর প্রমাণ হিসেবে হযরত ইউসূফ আ. এঁর সাথে সম্পর্কিত উক্ত ঘটনাকে ক্বুরআ'নুল কারিমের অংশ হিসেবে তাঁকে জানিয়ে দিয়ে তাঁর নুবূয়্যাতী ও রিসালাতের মর্যাদকে বুলন্দ করেন।<br />এই গায়িবি সংবাদের মাধ্যমে আহলে কিতাব ইহুদি খ্রিস্টানের চক্রান্তকে আল্লাহ্ (سبحانه و تعالى) নস্যাৎ করে দেন।<br />যেমন<br />ইরশাদ হয়েছে :<br /><br />ذَٰلِكَ مِنْ أَنْبَاءِ الْغَيْبِ نُوحِيهِ إِلَيْكَ ۖ وَمَا كُنْتَ لَدَيْهِمْ إِذْ أَجْمَعُوا أَمْرَهُمْ وَهُمْ يَمْكُرُونَ<br />অর্থাৎ : "এগুলো অদৃশ্যের খবর, আমি আপনার কাছে প্রেরণ করি। আপনি তাদের কাছে ছিলেন না, যখন তারা স্বীয় কাজ সাব্যস্ত করছিল (বিষয়-বস্তু নির্ধারণ করছিল) এবং চক্রান্ত করছিল"।<br />[সূরাহ্ ইউসূফ; ১২/১০২]।<br /><br />এ সূরার ১০৩ ও ১০৪ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে-<br /> وَمَا أَكْثَرُ النَّاسِ وَلَوْ حَرَصْتَ بِمُؤْمِنِينَ (103) وَمَا تَسْأَلُهُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍ إِنْ هُوَ إِلَّا ذِكْرٌ لِلْعَالَمِينَ (104)<br />অর্থাৎ : "(হে রাসূল!) আপনি (নব্যুয়তের দায়িত্ব পালনের কারনে) যতই চান, অধিকাংশ মানুষ ঈমান আনবে না।”<br />[সূরাহ্ ইউসূফ; ১২/১০৩]।<br /><br />পরবর্তী আয়াতে<br />“আপনি (নব্যুয়তের দায়িত্ব পালনের কারনে) তাদের কাছ থেকে তো কোনো বিনিময় খোঁজেন না।<br />এ কুরআন তো বিশ্বজগতের জন্য উপদেশ ব্যতীত আর কিছুই নয়।"<br />[সূরাহ্ ইউসূফ; ১২/১০৪]।<br /><br />হযরত ইউসুফ (আ.) এঁর কাহিনী বর্ণনার পর এখন ইসলামের প্রতি প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم) এঁর আহ্বানের ব্যাপারে মানুষের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বলা হচ্ছে, আল্লাহ বলছেন, হে নবী! মানুষকে সত্যের দাওয়াত দিতে গিয়ে আপনি তো তাদের কাছ থেকে কোনো পারিশ্রমিক দাবি করছেন না।<br />বরং তারা যাতে আল্লাহর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করে সেজন্য আপনি চেষ্টা করছেন এবং কষ্ট করছেন।<br />তবে আপনি এটা জেনে রাখুন, অনেক মানুষই আছে যারা বিশ্বাস করবে না; সত্য গ্রহণ করতে আগ্রহ দেখাবে না। এমনকি আপনি অনেককেই পাবেন যারা আপনার কথা সত্য মনে করলেও তা গ্রহণ করবে না।<br />আল্লাহর দ্বীন প্রচারের জন্য নবী রাসূলদেরকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে।<br />কিন্তু দেখা গেছে অধিকাংশ মানুষ তাদের আহ্বানে সাড়া দেয়নি।<br />এজন্য নবী রাসূলরা দায়ী নন, মানুষকে আল্লাহতায়ালা জ্ঞান ও বিচার বুদ্ধি দিয়েছেন, কাজেই কোনো কিছু গ্রহণ ও বর্জন করার স্বধীনতা তাদের রয়েছে।<br /><br />এ সূরার ১০৫ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে,<br />   وَكَأَيِّنْ مِنْ آَيَةٍ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ يَمُرُّونَ عَلَيْهَا وَهُمْ عَنْهَا مُعْرِضُونَ (105)<br />অর্থাৎ : "আকাশ ও পৃথিবীতে অনেক নিদর্শন রয়েছে যার ওপর দিয়ে তারা পথ অতিক্রম করে অথচ এসবের (তাৎপর্যের) প্রতি তারা উদাসীন।"<br />[সূরাহ্ ইউসূফ; ১২/১০৫]।<br /><br />আগের আয়াতে বলা হয়েছে,<br />সত্য প্রতিভাত হলেও বহু মানুষ তা গ্রহণ করবে না।<br />এই আয়াতে প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم) কে সান্ত্বনা দিয়ে বলা হচ্ছে, তারা প্রতিনিয়ত আল্লাহর নিদর্শন প্রত্যক্ষ করে যাচ্ছে অথচ আল্লাহর অস্তিত্ব তাদের বোধগম্য হয় না।<br />কাজেই<br />তারা যদি আপনার আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে তাহলে আপনি দুঃখিত হবেন না। আপনার আহ্বান তো বিশ্ববাসীর কল্যাণের উদ্দেশ্যে, এর পেছনে পার্থিব কোনো স্বার্থ নেই।<br />আপনার চিন্তিত বা উদ্বিগ্ন হওয়ারও কোনো কারণ নেই।<br />আকাশ ও পৃথিবীর সব সৃষ্টিই মহান আল্লাহর অসীম শক্তি ও কুদরতের নিদর্শন বহন করছে।<br />যারা এ ব্যাপারে উদাসীন তারাই সত্যকে গ্রহণ করার সৌভাগ্য লাভ করতে ব্যর্থ হচ্ছে।<br /><br />সূরা ইউসুফের ১০৬ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে,<br />  وَمَا يُؤْمِنُ أَكْثَرُهُمْ بِاللَّهِ إِلَّا وَهُمْ مُشْرِكُونَ (106)<br />অর্থাৎ : “অনেক মানুষ আল্লাহর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করে না, আবার তারা যেন শিরকও করে।”<br />[সূরাহ্ ইউসূফ; ১২/১০৬]।<br /><br />এই আয়াতে বলা হচ্ছে,<br />অধিকাংশ মানুষ যেমন আল্লাহকেই বিশ্বাস করে না, আবার যারা বিশ্বাস করে তাদের অনেকেরই বিশ্বাস আবার খাঁটি নয়। তারা খাঁটি একত্ববাদী নয়।<br />তারা আল্লাহর পাশাপাশি অন্যের ওপরও নির্ভর করে, আল্লাহর সঙ্গে অংশীস্থাপন করে।<br />আল্লাহর এবাদত করে ঠিকই কিন্তু জীবনে আল্লাহর বিধান পুরোপুরি বাস্তবায়ন করে না।<br /><br />এখানে শিরক বলতে দৈহিক মূর্তি পুজাকে বুঝানো হয়নি, আল্লাহ ছাড়া অন্যের ওপর নির্ভর করাকে বুঝানো হয়েছে।<br />যেমন : রিয়া, সুদ খাওয়া, কেবল সম্পদশালী ও ক্ষমতাধর হওয়ার কারনে কাউকে গুরুত্ব দেয়া, স্বজনপ্রীতি, নিজের প্রবৃত্তিকে ইলাহ্ বানিয়ে নেয়া অহংকারবশত শরিক স্থাপন; যেমন ইবলিশ শায়ত্বন করেছিল প্রভৃতি।<br /><br />পৃথিবীতে অধিকাংশ মানুষ বা জ্বীনই সৃষ্টিকর্তা হিসাবে আল্লাহকে বিশ্বাস করে।<br />কিন্তু সেই সাথে উপরোক্ত বিভিন্ন কারনে অন্য কিছুকে শরীক করে।<br />যেমন মক্কার মুশরিকরা আল্লাহকে বিশ্বাস করত। আল্লাহকে বিশ্বাস করত তৎকালীন আহলে কিতাব ইহুদি-খ্রিস্টান মুশরিকরাও।<br />আসমান-যমীন, পাহাড়-পর্বত সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা হিসাবে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রাখত।<br />নবী ইবরাহীম ও ইসমাঈলকে নবী বলে বিশ্বাস করত।<br />আখেরাতে বিশ্বাস পোষণ করত।<br />যেমন ইরশাদ হয়েছে :<br />অর্থাৎ : "আর যদি তুমি তাদেরকে প্রশ্ন কর, কে আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টি করেছেন এবং চাঁদ ও সূর্যকে নিয়োজিত করেছেন? তারা অবশ্যই বলবে, আল্লাহ। তাহলে কোথায় তাদের ফিরানো হচ্ছে?<br />[সূরাহ্ আনকাবুত; ২৯/৬১]।<br />অথচ আল্লাহর সাথে তারা অন্য কিছুকে শরীক করত ও কুফরী করত।<br />যেমন তারা কা‘বা গৃহ ত্বাওয়াফকালে শিরকী তালবিয়াহ পাঠ করত।<br />যেমন তারা বলত, লাববাইকা লা শারীকা লাকা, ইল্লা শারীকান হুয়া লাক; তামলিকুহু ওয়া মা মালাক (আমি হাযির; তোমার কোন শরীক নেই, কেবল ঐ শরীক যা তোমার জন্য রয়েছে। তুমি যার মালিক এবং যা কিছুর সে মালিক।<br />গ্রন্থ সূত্রঃ<br />মুসলিম হা/১১৮৫;<br />মিশকাত হা/২৫৫৪ ‘ইহরাম ও তালবিয়াহ’ অনুচ্ছেদ;<br />ইবনু কাছীর, ত্বাবারী, ঐ আয়াতের তাফসীর।<br /><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjgk1SRRR5MWtSlAnnj4eyddFkMvMoCz2hf14Ht3qENohoouf_5Kondz3OXS-scvVUClWPRtW2WA-2H-xPApaSu8XID834LmS5ohIE_8TWCyNvlkhJdecEPKZvFOxCbNCzfY_K8JcF-VcoQ/s1600/PicsArt_05-20-11.27.38.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="899" data-original-width="1600" height="179" loading="lazy" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjgk1SRRR5MWtSlAnnj4eyddFkMvMoCz2hf14Ht3qENohoouf_5Kondz3OXS-scvVUClWPRtW2WA-2H-xPApaSu8XID834LmS5ohIE_8TWCyNvlkhJdecEPKZvFOxCbNCzfY_K8JcF-VcoQ/s320-rw/PicsArt_05-20-11.27.38.jpg" width="320" /></a></div><br /><br />বস্তুতঃ বিগত যুগের ন্যায় বর্তমান যুগেও পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের মূর্তিপুঁজারী মুশরিকেরা বা আহলে কিতাব ইহুদি-খ্রিস্টান মুশরিকেরা শিরকী আক্বীদা ও আমলে অভ্যস্ত।<br />কাজেই<br />  وَمَا يُؤْمِنُ أَكْثَرُهُمْ بِاللَّهِ إِلَّا وَهُمْ مُشْرِكُونَ (106)<br />অর্থাৎ : “অনেক মানুষ আল্লাহর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করে না, আবার তারা যেন শিরকও করে।”<br />[সূরাহ্ ইউসূফ; ১২/১০৬]।<br />উক্ত অায়াতুল কারিমে উল্লেখিত বাণীর ব্যাখ্যা হচ্ছে নিম্নোক্ত আয়াতুল কারিম<br />فَإِذَا رَڪِبُواْ فِى ٱلۡفُلۡكِ دَعَوُاْ ٱللَّهَ مُخۡلِصِينَ لَهُ ٱلدِّينَ فَلَمَّا نَجَّٮٰهُمۡ إِلَى ٱلۡبَرِّ إِذَا هُمۡ يُشۡرِكُونَ ٦٥<br />অর্থাৎ : "(তৎকালের মক্বার মুশরিক ও আহলে কিতাবিদের বৈশিষ্ঠ্য সম্পর্কে বলা হচ্ছে) তারা যখন নৌযানে আরোহন করে, তখন তারা একনিষ্ঠভাবে আল্লাহকে ডাকে। অতঃপর যখন তিনি তাদেরকে স্থলে পৌঁছে দেন, তখনই তারা শিরকে লিপ্ত হয়"।<br />[সূরাহ্ আনকাবুত; ২৯/৬৫]।<br />আর<br />তাদের এরুপ শিরকে লিপ্ত হওয়ার কারণ হিসেবে ইরশাদ হয়েছে :<br />لِيَكۡفُرُواْ بِمَآ ءَاتَيۡنَـٰهُمۡ وَلِيَتَمَتَّعُواْ‌ۖ فَسَوۡفَ يَعۡلَمُونَ ٦٦<br />অর্থাৎ : "যাতে আমি তাদেরকে যা দিয়েছি, তা তারা অস্বীকার করতে পারে এবং তারা যেন ভোগ-বিলাসে মত্ত থাকতে পারে। অতঃপর শীঘ্রই তারা জানতে পারবে"।<br />[সূরাহ্ আনকাবুত; ২৯/৬৬]।<br />ক্বুরআ'নুল কারিম নাযিলের মাধ্যমে আল্লাহ্ (سبحانه و تعالى) মক্কার মুশরিক ও ইহুদি-খ্রিস্টান আহলে কিতাবিদের শিরিকী বিশ্বাস বা আক্বিদাকে খণ্ডন করে ইসলামী বিশুদ্ধ বিশ্বাসকে প্রতিস্থাপন করেছেন।<br />মক্কার মুশরিক ও ইহুদি-খ্রিস্টান আহলে কিতাবিদের শিরিকী বিশ্বাস বা আক্বিদার অন্যতম হচ্ছে আল্লাহ্ (سبحانه و تعالى) এঁর জাত-স্বত্ত্বাকে তারা সৃষ্টির সাথে সাদৃশ্যতার বিশ্বাসে বিশ্বাস পোষণ করত।<br />তাছাড়া<br />তারা মানবের মাঝে অবধারিত পরষ্পর তাওয়াস্সুল বা উসিলা এবং শাফায়াত বা সুপারিশের বিষয়ে ভূল ধারণা পোষণ করত।<br /><br />ক্বুরআ'নুল কারিমে আল্লাহ্ (سبحانه و تعالى) সত্যকে গ্রহণ না করাকে তিরষ্কার করেছেন।<br />যেমন ইরশাদ হয়েছে :<br />وَمَنۡ أَظۡلَمُ مِمَّنِ ٱفۡتَرَىٰ عَلَى ٱللَّهِ ڪَذِبًا أَوۡ كَذَّبَ بِٱلۡحَقِّ لَمَّا جَآءَهُ ۥۤ‌ۚ أَلَيۡسَ فِى جَهَنَّمَ مَثۡوً۬ى لِّلۡڪَـٰفِرِينَ ٦٨<br />অর্থাৎ : "আর সে ব্যক্তির চেয়ে যালিম আর কে, যে আল্লাহর উপর মিথ্যা আরোপ করে অথবা তার নিকট সত্য আসার পর তা অস্বীকার করে? জাহান্নামের মধ্যেই কি কাফিরদের আবাস নয়"?<br />[সূরাহ্ আনকাবুত; ২৯/৬৮]।<br />পরের আয়াতেই আল্লাহ্ (سبحانه و تعالى) ইরশাদ করেন :<br />وَٱلَّذِينَ جَـٰهَدُواْ فِينَا لَنَہۡدِيَنَّہُمۡ سُبُلَنَا‌ۚ وَإِنَّ ٱللَّهَ لَمَعَ ٱلۡمُحۡسِنِينَ ٦٩<br />অর্থাৎ : "আর যারা আমার পথে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায়, তাদেরকে আমি অবশ্যই আমার পথে পরিচালিত করব। আর নিশ্চয় আল্লাহ সৎকর্মশীলদের সাথেই আছেন"।<br />[সূরাহ্ আনকাবুত; ২৯/৬৯]।<br /><br />সুপ্রিয় পাঠক, এ পর্যায়ে আসুন যুগশ্রেষ্ঠ মুফাসসিরিনে ক্বিরামের তাফসীর থেকে উক্ত আয়াতের তাফসীর দেখে নিইঃ<br /><br />উদ্ধৃতি : আল্লামা কাজী সানাউল্লাহ্ পানিপথী রহ. স্বীয় তাফসীরে মাযহারী সূরাহ্ ইউসূফ ১০৬ এর তাফসীর করা হয়েছে নিম্নরূপ :<br />অর্থাৎ : "তাদের অধিকাংশ   وَمَا يُؤْمِنُ أَكْثَرُهُمْ بِاللَّهِ إِلَّا وَهُمْ مُشْرِكُون একথার অর্থ, হে রাসূল! দেখুন, এ সকল লোক আল্লাহর প্রতি এক ধরনের বিশ্বাস রাখে। কিন্তু তাদের এ বিশ্বাসের সঙ্গে রয়েছে অংশিবাদীতা। তারা আল্লাহকেও ডাকে আবার পূঁজা করে কল্পিত দেব-দেবীদের। তাদেরকে আপনি জিজ্ঞেস করে দেখুুন, আকাশ, পৃথিবী সৃষ্টি করেছন কে? তারা বলবে, আল্লাহ্।<br />আরো বলে দেখুন, আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করেন কে? তারা বলবে, আল্লাহ্। এরুপ বলা সত্ত্বেও তারা উপাসনা করবে বৃক্ষের, পাথরের, দেব-দেবীদের।<br />হযরত ইবনূ আব্বাস রা. বলেন, অংশিবাদিরাও হজ্জ করত। হজ্জের সময় বলত, 'লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক (আমি হাজির, হে আল্লাহ্! আমি হাজির)'।<br />হজ্জের ইহরাম পরে বৃত্তাকারে কাবা শরিফ প্রদক্ষিণের সময় বলত, 'লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক (আমি হাজির, হে আল্লাহ্! আমি হাজির)', তোমার কোন অংশিদার নেই ঐ সকল দেব-দেবীরা ছাড়া যাদেরকে তুমি তোমার অংশিদার করে নিয়েছ। তুমি তাদের (দেব-দেবীদের) প্রভূ। তারা তোমার প্রভূ নয়।<br />আতা বলেন, অংশিবাদিরা শিরকমিশ্রিত এরুপ প্রার্থণা করত সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের সময়ে। কিন্তু বিপদআপদের সময় তারা আল্লাহ্ ছাড়া আর কাউকে ডাকত না। যেমন এক আয়াতে বলা হয়েছে,<br />فَإِذَا رَڪِبُواْ فِى ٱلۡفُلۡكِ دَعَوُاْ ٱللَّهَ مُخۡلِصِينَ لَهُ ٱلدِّينَ فَلَمَّا نَجَّٮٰهُمۡ إِلَى ٱلۡبَرِّ إِذَا هُمۡ يُشۡرِكُونَ ٦٥<br />অর্থাৎ : "তারা যখন নৌযানে আরোহন করে, তখন তারা একনিষ্ঠভাবে আল্লাহকে ডাকে। অতঃপর যখন তিনি তাদেরকে স্থলে পৌঁছে দেন, তখনই তারা শিরকে লিপ্ত হয়"।<br />[সূরাহ্ আনকাবুত; ২৯/৬৫]।<br />উলামায়ে ক্বিরাম রহ. বলেন, 'ইল্লা ওয়াহুম মুশরিকুন (কিন্তু তারা শিরক করে)' কথাটির অর্থ হবে, তারা আল্লাহর বিধানের প্রতিকূলে পথভ্রষ্ট ধর্মনেতাদের বিধানানুসারে চলে। তাদেরকেই বসায় প্রভূ পালনকর্তার আসনে। অথবা আল্লাহর সাথে স্থাপন করে পিতা-পুত্রের সম্পর্ক। তারা বলে, আমরা আল্লাহর সন্তান। কিংবা তারা করে আগুনের উপাসনা।<br />মুতা'জিলারাও এরুপ অংশীবাদিদের অন্তর্ভূক্ত।<br />কারণ তারা বলে মানুষ তার কর্মের স্রষ্টা।<br />কিন্তু তাওহিদের বিশুদ্ধ বিশ্বাস হচ্ছে, আল্লাহ্ পাকই হচ্ছেন এক ও অপ্রতিদ্বন্দ্বী স্রষ্টা। তাকদিরের ভালো-মন্দ আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশ্বাসের অপরিহার্য অঙ্গ।<br />সূফী সাধকগণই হচ্ছেন বিশুদ্ধ বিশ্বাসী। আর মুতা'জিলারা অবশ্যই পথভ্রষ্ঠ্য।<br />গ্রন্থ সূত্র :<br />আল্লামা কাজী সানাউল্লাহ্ পানিপথী রহ. : তাফসীরে মাযহারী; সূরাহ্ ইউসূফ, আয়াত ১০৬।<br />______<br />সম্মানিত পাঠক,<br />সকল যুগের সকল মুফাসসিরিনে ক্বিরাম স্ব-স্ব তাফসীর উপরোক্ত অনুরুপ তাফসীর পেশ করেছেন। তাঁদের তাফসীরে রয়েছে সাদৃশ্যতা; কেবল কিছুটা উদ্ধৃতির বিভিন্নতা, বাক্যের নান্দনিকতা, উপস্থাপনায় স্বকীয়তা রয়েছে।<br />______<br />তথাকথিত আহলে হাদীস নামক বর্তমান সময়ের ভংকর ফিতনা, ভাইরাস সদৃশ বদমাযহাবীরা সকলেই খারিজী, মুতা'জিলা ফির্কার নব্য গঠিত রুপ।<br /><br />কারণ খারিজীরা কোরআনুল কারীমে বর্ণিত অসংখ্য আয়াত যা সরাসরি তখনকার সময়ের কাফির, মুশরিকদের শিরক-কুফরের বিষয়ে নাযিল হয়েছিল তা তৎকালীন মো'মিনদেরকে কাফির, মুশরিক বলার জন্যে ইতিহাসে নিন্দিত কুখ্যাত খারিজী ফির্কা-সম্প্রদায়টি তাদের উত্থানের সময়ে প্রয়োগ করেছিল।<br /><br />আর এখন এই নব গঠিত নব্য খারিজী ফির্কাও মু'মিনদের বিষয়ে প্রযোজ্য নয় এরুপ আয়াতকে মু'মিনদের কাফীর মুশরিক বলার জন্যে অপব্যাখ্যামূলক অপচেষ্টা করছে।<br /><br />হাদীস শরীফ থেকে জানা যায় যারা কোরআন শরীফের এসব আয়াত অর্থাৎ কাফেরদের বিরোধীতায় নাযিলকৃত আয়াতগুলো যদি কেউ মো'মিনদের উপর প্রয়োগ করার অপচেষ্টা করে তাহলে তারা ইসলাম বহির্ভূত / খারিজী; আর হাদিস শরিফে খারিজীদের জাহান্নামের কুকুর বলা হয়েছে।<br /><br />সুতরাং সকল মু'মিন ভাই-বোন সাবধান!<br />সকলেই এধরনের ফিতনাওয়ালা নামধারী শায়েখদের থেকে দূরে থাকুন।<br /><br />তারা আপনার আমার অজান্তেই আমাদের ঈমান খেয়ে ফেলবে।<br />আল্লাহ্ সকলের ঈমান-আক্বিদা-আ'মাল হিফাজাত করুন, আমীন।<br />__________</div>

সুরা ইউসুফের ১০৬ নং আয়াতের ব্যাখ্যা

▆ সূরা ইউসুফ আয়াত ১০৬ এর তাফসীর। এই পবিত্র আয়াতুল কারিম ক্বুরআনুল কারিম নাযীলের সময়কালের কাফীর-মুুশরিকদের ঈমানকে কটাক্ষ করে নাযীলকৃত। এই ...

Read more »

সুরা ইউসুফের ১০৬ নং আয়াতের ব্যাখ্যা

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> ▆ সূরা ইউসুফ আয়াত ১০৬ এর তাফসীর।<br /> <br /> এই পবিত্র আয়াতুল কারিম ক্বুরআনুল কারিম নাযীলের সময়কালের কাফীর-মুুশরিকদের ঈমানকে কটাক্ষ করে নাযীলকৃত।<br /> <br /> এই আয়াতে প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم) কে প্রেরণের আগে থেকে তাদের দীর্ঘ দিনের লালিত ঈমানের সাথে শির্কি আক্বিদার স্বরুপ তুলে ধরা হয়েছে।<br /> তারা তাদেরই হাতে গড়া মূর্তী আর তাদেরই হাতে জ্বালানো আগুনের পূঁজা করত, সেগুলোকে তাদের দেবতা বানিয়ে নিয়েছিল।<br /> আর সেগুলোকে আল্লাহর সহযোগী (Partner) বলে বিশ্বাস করত।<br /> <br /> আয়াতটি :<br />   وَمَا يُؤْمِنُ أَكْثَرُهُمْ بِاللَّهِ إِلَّا وَهُمْ مُشْرِكُونَ<br /> অর্থাৎ : “(মুশরিকদের মধ্যে) অনেক মানুষ এরুপও রয়েছে যে তারা আল্লাহকে বিশ্বাস করে; আবার শিরকও করে।”<br /> [সূরাহ্ ইউসূফ; ১২/১০৬।]<br /> <br /> এ সুরাটি হিজরতের পূর্বে মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছিলো।<br /> সুরাটি এমন এক সময়ে নাজিল করা হয় যখন প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم)  ও তাঁর সাহাবায়ে কেরাম রা.-কে মক্কার কাফির-মুশরিকদের হাতে চরম নির্যাতন ও লাঞ্ছনা ভোগ করতে হচ্ছিল।<br /> তাঁদের ওপর জুলুমের মাত্রা এতটাই সীমা লঙ্ঘন করেছিল, তাঁরা অপেক্ষায় ছিলেন কখন আল্লাহ তাআলা আসমানি সাহায্য নাজিল করবেন।<br /> এমনকি অসহ্য হয়ে অনেকে মাতৃভূমি মক্কা ত্যাগ করার প্রাথমিক প্রস্তুতিও সম্পন্ন করেছিলেন।<br /> মক্কার দেব-দেবীর পূঁজারী কাফির মুশরিকদের সাথে ছিলো আরবের পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের আহলে কিতাব তথা ইহুদি-খ্রিস্টানদের সাথে গভীরতর সু-সম্পর্ক।<br /> <br /> পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের তৎকালিন ইহুদি-খ্রিস্টান মুশরিকেরা যখন জানতে পারলো আল্লাহ্ (سبحانه و تعالى) এঁর হাবিব প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم)  রিসালাতের ঘোষণা প্রদানপূর্বক আল্লাহ্ (سبحانه و تعالى) এঁর তাউহিদ বা একত্ববাদের ডাক দিয়েছেন তখন আল্লাহ্ (سبحانه و تعالى) এঁর হাবিব প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم) কে অপমান অপদস্থ করার মানসে আহলে কিতাব মুশরিকেরা হযরত ইউসূফ আ. এঁর ঘটনা বিস্তারিত জানানোর জন্যে বলে।<br /> <br /> আহলে কিতাব ইহুদি-খ্রিস্টান মুশরিকদের দৃঢ় বিশ্বাস ছিলো প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم)  মক্কাবাসী হওয়ায় হযরত ইউসূফ আ. এঁর সাথে সম্পর্কিত সুপ্রাচীন সে ঘটনা তিনি জানাতে পারবে না।<br /> <br /> আল্লাহ তালার কাছে অতীত বর্তমান ভবিষ্যত বলতে কিছু নেই, তিনি সব বিষয়েই জ্ঞান রাখেন। কোনো কিছুই তার অজানা বা গায়িব নয়। নবী রাসূলগণকে আল্লাহতালাই অদৃশ্য বা গায়িব সম্পর্কে জ্ঞান বা ইলম দান করেন।<br /> <br /> নবী রাসূলদের অলৌকিক কর্ম এবং যাদুকরের যাদু এক নয়।<br /> <br /> আল্লাহ্ (سبحانه و تعالى) তাঁর হাবিব প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم) এঁর নুবূয়্যাত (গায়বের খবর জানানোর মর্যাদায় অধিষ্ঠা) এর প্রমাণ হিসেবে হযরত ইউসূফ আ. এঁর সাথে সম্পর্কিত উক্ত ঘটনাকে ক্বুরআ'নুল কারিমের অংশ হিসেবে তাঁকে জানিয়ে দিয়ে তাঁর নুবূয়্যাতী ও রিসালাতের মর্যাদকে বুলন্দ করেন।<br /> এই গায়িবি সংবাদের মাধ্যমে আহলে কিতাব ইহুদি খ্রিস্টানের চক্রান্তকে আল্লাহ্ (سبحانه و تعالى) নস্যাৎ করে দেন।<br /> যেমন<br /> ইরশাদ হয়েছে :<br /> <br /> ذَٰلِكَ مِنْ أَنْبَاءِ الْغَيْبِ نُوحِيهِ إِلَيْكَ ۖ وَمَا كُنْتَ لَدَيْهِمْ إِذْ أَجْمَعُوا أَمْرَهُمْ وَهُمْ يَمْكُرُونَ<br /> অর্থাৎ : "এগুলো অদৃশ্যের খবর, আমি আপনার কাছে প্রেরণ করি। আপনি তাদের কাছে ছিলেন না, যখন তারা স্বীয় কাজ সাব্যস্ত করছিল (বিষয়-বস্তু নির্ধারণ করছিল) এবং চক্রান্ত করছিল"।<br /> [সূরাহ্ ইউসূফ; ১২/১০২]।<br /> <br /> এ সূরার ১০৩ ও ১০৪ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে-<br />  وَمَا أَكْثَرُ النَّاسِ وَلَوْ حَرَصْتَ بِمُؤْمِنِينَ (103) وَمَا تَسْأَلُهُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍ إِنْ هُوَ إِلَّا ذِكْرٌ لِلْعَالَمِينَ (104)<br /> অর্থাৎ : "(হে রাসূল!) আপনি (নব্যুয়তের দায়িত্ব পালনের কারনে) যতই চান, অধিকাংশ মানুষ ঈমান আনবে না।”<br /> [সূরাহ্ ইউসূফ; ১২/১০৩]।<br /> <br /> পরবর্তী আয়াতে<br /> “আপনি (নব্যুয়তের দায়িত্ব পালনের কারনে) তাদের কাছ থেকে তো কোনো বিনিময় খোঁজেন না।<br /> এ কুরআন তো বিশ্বজগতের জন্য উপদেশ ব্যতীত আর কিছুই নয়।"<br /> [সূরাহ্ ইউসূফ; ১২/১০৪]।<br /> <br /> হযরত ইউসুফ (আ.) এঁর কাহিনী বর্ণনার পর এখন ইসলামের প্রতি প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم) এঁর আহ্বানের ব্যাপারে মানুষের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বলা হচ্ছে, আল্লাহ বলছেন, হে নবী! মানুষকে সত্যের দাওয়াত দিতে গিয়ে আপনি তো তাদের কাছ থেকে কোনো পারিশ্রমিক দাবি করছেন না।<br /> বরং তারা যাতে আল্লাহর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করে সেজন্য আপনি চেষ্টা করছেন এবং কষ্ট করছেন।<br /> তবে আপনি এটা জেনে রাখুন, অনেক মানুষই আছে যারা বিশ্বাস করবে না; সত্য গ্রহণ করতে আগ্রহ দেখাবে না। এমনকি আপনি অনেককেই পাবেন যারা আপনার কথা সত্য মনে করলেও তা গ্রহণ করবে না।<br /> আল্লাহর দ্বীন প্রচারের জন্য নবী রাসূলদেরকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে।<br /> কিন্তু দেখা গেছে অধিকাংশ মানুষ তাদের আহ্বানে সাড়া দেয়নি।<br /> এজন্য নবী রাসূলরা দায়ী নন, মানুষকে আল্লাহতায়ালা জ্ঞান ও বিচার বুদ্ধি দিয়েছেন, কাজেই কোনো কিছু গ্রহণ ও বর্জন করার স্বধীনতা তাদের রয়েছে।<br /> <br /> এ সূরার ১০৫ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে,<br />    وَكَأَيِّنْ مِنْ آَيَةٍ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ يَمُرُّونَ عَلَيْهَا وَهُمْ عَنْهَا مُعْرِضُونَ (105)<br /> অর্থাৎ : "আকাশ ও পৃথিবীতে অনেক নিদর্শন রয়েছে যার ওপর দিয়ে তারা পথ অতিক্রম করে অথচ এসবের (তাৎপর্যের) প্রতি তারা উদাসীন।"<br /> [সূরাহ্ ইউসূফ; ১২/১০৫]।<br /> <br /> আগের আয়াতে বলা হয়েছে,<br /> সত্য প্রতিভাত হলেও বহু মানুষ তা গ্রহণ করবে না।<br /> এই আয়াতে প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم) কে সান্ত্বনা দিয়ে বলা হচ্ছে, তারা প্রতিনিয়ত আল্লাহর নিদর্শন প্রত্যক্ষ করে যাচ্ছে অথচ আল্লাহর অস্তিত্ব তাদের বোধগম্য হয় না।<br /> কাজেই<br /> তারা যদি আপনার আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে তাহলে আপনি দুঃখিত হবেন না। আপনার আহ্বান তো বিশ্ববাসীর কল্যাণের উদ্দেশ্যে, এর পেছনে পার্থিব কোনো স্বার্থ নেই।<br /> আপনার চিন্তিত বা উদ্বিগ্ন হওয়ারও কোনো কারণ নেই।<br /> আকাশ ও পৃথিবীর সব সৃষ্টিই মহান আল্লাহর অসীম শক্তি ও কুদরতের নিদর্শন বহন করছে।<br /> যারা এ ব্যাপারে উদাসীন তারাই সত্যকে গ্রহণ করার সৌভাগ্য লাভ করতে ব্যর্থ হচ্ছে।<br /> <br /> সূরা ইউসুফের ১০৬ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে,<br />   وَمَا يُؤْمِنُ أَكْثَرُهُمْ بِاللَّهِ إِلَّا وَهُمْ مُشْرِكُونَ (106)<br /> অর্থাৎ : “অনেক মানুষ আল্লাহর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করে না, আবার তারা যেন শিরকও করে।”<br /> [সূরাহ্ ইউসূফ; ১২/১০৬]।<br /> <br /> এই আয়াতে বলা হচ্ছে,<br /> অধিকাংশ মানুষ যেমন আল্লাহকেই বিশ্বাস করে না, আবার যারা বিশ্বাস করে তাদের অনেকেরই বিশ্বাস আবার খাঁটি নয়। তারা খাঁটি একত্ববাদী নয়।<br /> তারা আল্লাহর পাশাপাশি অন্যের ওপরও নির্ভর করে, আল্লাহর সঙ্গে অংশীস্থাপন করে।<br /> আল্লাহর এবাদত করে ঠিকই কিন্তু জীবনে আল্লাহর বিধান পুরোপুরি বাস্তবায়ন করে না।<br /> <br /> এখানে শিরক বলতে দৈহিক মূর্তি পুজাকে বুঝানো হয়নি, আল্লাহ ছাড়া অন্যের ওপর নির্ভর করাকে বুঝানো হয়েছে।<br /> যেমন : রিয়া, সুদ খাওয়া, কেবল সম্পদশালী ও ক্ষমতাধর হওয়ার কারনে কাউকে গুরুত্ব দেয়া, স্বজনপ্রীতি, নিজের প্রবৃত্তিকে ইলাহ্ বানিয়ে নেয়া অহংকারবশত শরিক স্থাপন; যেমন ইবলিশ শায়ত্বন করেছিল প্রভৃতি।<br /> <br /> পৃথিবীতে অধিকাংশ মানুষ বা জ্বীনই সৃষ্টিকর্তা হিসাবে আল্লাহকে বিশ্বাস করে।<br /> কিন্তু সেই সাথে উপরোক্ত বিভিন্ন কারনে অন্য কিছুকে শরীক করে।<br /> যেমন মক্কার মুশরিকরা আল্লাহকে বিশ্বাস করত। আল্লাহকে বিশ্বাস করত তৎকালীন আহলে কিতাব ইহুদি-খ্রিস্টান মুশরিকরাও।<br /> আসমান-যমীন, পাহাড়-পর্বত সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা হিসাবে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রাখত।<br /> নবী ইবরাহীম ও ইসমাঈলকে নবী বলে বিশ্বাস করত।<br /> আখেরাতে বিশ্বাস পোষণ করত।<br /> যেমন ইরশাদ হয়েছে :<br /> অর্থাৎ : "আর যদি তুমি তাদেরকে প্রশ্ন কর, কে আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টি করেছেন এবং চাঁদ ও সূর্যকে নিয়োজিত করেছেন? তারা অবশ্যই বলবে, আল্লাহ। তাহলে কোথায় তাদের ফিরানো হচ্ছে?<br /> [সূরাহ্ আনকাবুত; ২৯/৬১]।<br /> অথচ আল্লাহর সাথে তারা অন্য কিছুকে শরীক করত ও কুফরী করত।<br /> যেমন তারা কা‘বা গৃহ ত্বাওয়াফকালে শিরকী তালবিয়াহ পাঠ করত।<br /> যেমন তারা বলত, লাববাইকা লা শারীকা লাকা, ইল্লা শারীকান হুয়া লাক; তামলিকুহু ওয়া মা মালাক (আমি হাযির; তোমার কোন শরীক নেই, কেবল ঐ শরীক যা তোমার জন্য রয়েছে। তুমি যার মালিক এবং যা কিছুর সে মালিক।<br /> গ্রন্থ সূত্রঃ<br /> মুসলিম হা/১১৮৫;<br /> মিশকাত হা/২৫৫৪ ‘ইহরাম ও তালবিয়াহ’ অনুচ্ছেদ;<br /> ইবনু কাছীর, ত্বাবারী, ঐ আয়াতের তাফসীর।<br /> <div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"> <a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEiZqwX_5i32hBpyxQlcKV-uE692qQwhS__vEpp_a51msiAYs9T_qv4H4DAi_hc9uoMWJdqIKWgUkGz7hr36PQJAXjdTwuB2HC2UiPNn8o0sa75Cps1_kvUqsKgkLnmpFnWKj8xH3fADar6A/s1600/PicsArt_05-20-11.27.38.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="899" data-original-width="1600" height="179" loading="lazy" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEiZqwX_5i32hBpyxQlcKV-uE692qQwhS__vEpp_a51msiAYs9T_qv4H4DAi_hc9uoMWJdqIKWgUkGz7hr36PQJAXjdTwuB2HC2UiPNn8o0sa75Cps1_kvUqsKgkLnmpFnWKj8xH3fADar6A/s320-rw/PicsArt_05-20-11.27.38.jpg" width="320" /></a></div> <br /> <br /> বস্তুতঃ বিগত যুগের ন্যায় বর্তমান যুগেও পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের মূর্তিপুঁজারী মুশরিকেরা বা আহলে কিতাব ইহুদি-খ্রিস্টান মুশরিকেরা শিরকী আক্বীদা ও আমলে অভ্যস্ত।<br /> কাজেই<br />   وَمَا يُؤْمِنُ أَكْثَرُهُمْ بِاللَّهِ إِلَّا وَهُمْ مُشْرِكُونَ (106)<br /> অর্থাৎ : “অনেক মানুষ আল্লাহর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করে না, আবার তারা যেন শিরকও করে।”<br /> [সূরাহ্ ইউসূফ; ১২/১০৬]।<br /> উক্ত অায়াতুল কারিমে উল্লেখিত বাণীর ব্যাখ্যা হচ্ছে নিম্নোক্ত আয়াতুল কারিম<br /> فَإِذَا رَڪِبُواْ فِى ٱلۡفُلۡكِ دَعَوُاْ ٱللَّهَ مُخۡلِصِينَ لَهُ ٱلدِّينَ فَلَمَّا نَجَّٮٰهُمۡ إِلَى ٱلۡبَرِّ إِذَا هُمۡ يُشۡرِكُونَ ٦٥<br /> অর্থাৎ : "(তৎকালের মক্বার মুশরিক ও আহলে কিতাবিদের বৈশিষ্ঠ্য সম্পর্কে বলা হচ্ছে) তারা যখন নৌযানে আরোহন করে, তখন তারা একনিষ্ঠভাবে আল্লাহকে ডাকে। অতঃপর যখন তিনি তাদেরকে স্থলে পৌঁছে দেন, তখনই তারা শিরকে লিপ্ত হয়"।<br /> [সূরাহ্ আনকাবুত; ২৯/৬৫]।<br /> আর<br /> তাদের এরুপ শিরকে লিপ্ত হওয়ার কারণ হিসেবে ইরশাদ হয়েছে :<br /> لِيَكۡفُرُواْ بِمَآ ءَاتَيۡنَـٰهُمۡ وَلِيَتَمَتَّعُواْ‌ۖ فَسَوۡفَ يَعۡلَمُونَ ٦٦<br /> অর্থাৎ : "যাতে আমি তাদেরকে যা দিয়েছি, তা তারা অস্বীকার করতে পারে এবং তারা যেন ভোগ-বিলাসে মত্ত থাকতে পারে। অতঃপর শীঘ্রই তারা জানতে পারবে"।<br /> [সূরাহ্ আনকাবুত; ২৯/৬৬]।<br /> ক্বুরআ'নুল কারিম নাযিলের মাধ্যমে আল্লাহ্ (سبحانه و تعالى) মক্কার মুশরিক ও ইহুদি-খ্রিস্টান আহলে কিতাবিদের শিরিকী বিশ্বাস বা আক্বিদাকে খণ্ডন করে ইসলামী বিশুদ্ধ বিশ্বাসকে প্রতিস্থাপন করেছেন।<br /> মক্কার মুশরিক ও ইহুদি-খ্রিস্টান আহলে কিতাবিদের শিরিকী বিশ্বাস বা আক্বিদার অন্যতম হচ্ছে আল্লাহ্ (سبحانه و تعالى) এঁর জাত-স্বত্ত্বাকে তারা সৃষ্টির সাথে সাদৃশ্যতার বিশ্বাসে বিশ্বাস পোষণ করত।<br /> তাছাড়া<br /> তারা মানবের মাঝে অবধারিত পরষ্পর তাওয়াস্সুল বা উসিলা এবং শাফায়াত বা সুপারিশের বিষয়ে ভূল ধারণা পোষণ করত।<br /> <br /> ক্বুরআ'নুল কারিমে আল্লাহ্ (سبحانه و تعالى) সত্যকে গ্রহণ না করাকে তিরষ্কার করেছেন।<br /> যেমন ইরশাদ হয়েছে :<br /> وَمَنۡ أَظۡلَمُ مِمَّنِ ٱفۡتَرَىٰ عَلَى ٱللَّهِ ڪَذِبًا أَوۡ كَذَّبَ بِٱلۡحَقِّ لَمَّا جَآءَهُ ۥۤ‌ۚ أَلَيۡسَ فِى جَهَنَّمَ مَثۡوً۬ى لِّلۡڪَـٰفِرِينَ ٦٨<br /> অর্থাৎ : "আর সে ব্যক্তির চেয়ে যালিম আর কে, যে আল্লাহর উপর মিথ্যা আরোপ করে অথবা তার নিকট সত্য আসার পর তা অস্বীকার করে? জাহান্নামের মধ্যেই কি কাফিরদের আবাস নয়"?<br /> [সূরাহ্ আনকাবুত; ২৯/৬৮]।<br /> পরের আয়াতেই আল্লাহ্ (سبحانه و تعالى) ইরশাদ করেন :<br /> وَٱلَّذِينَ جَـٰهَدُواْ فِينَا لَنَہۡدِيَنَّہُمۡ سُبُلَنَا‌ۚ وَإِنَّ ٱللَّهَ لَمَعَ ٱلۡمُحۡسِنِينَ ٦٩<br /> অর্থাৎ : "আর যারা আমার পথে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায়, তাদেরকে আমি অবশ্যই আমার পথে পরিচালিত করব। আর নিশ্চয় আল্লাহ সৎকর্মশীলদের সাথেই আছেন"।<br /> [সূরাহ্ আনকাবুত; ২৯/৬৯]।<br /> <br /> সুপ্রিয় পাঠক, এ পর্যায়ে আসুন যুগশ্রেষ্ঠ মুফাসসিরিনে ক্বিরামের তাফসীর থেকে উক্ত আয়াতের তাফসীর দেখে নিইঃ<br /> <br /> উদ্ধৃতি : আল্লামা কাজী সানাউল্লাহ্ পানিপথী রহ. স্বীয় তাফসীরে মাযহারী সূরাহ্ ইউসূফ ১০৬ এর তাফসীর করা হয়েছে নিম্নরূপ :<br /> অর্থাৎ : "তাদের অধিকাংশ   وَمَا يُؤْمِنُ أَكْثَرُهُمْ بِاللَّهِ إِلَّا وَهُمْ مُشْرِكُون একথার অর্থ, হে রাসূল! দেখুন, এ সকল লোক আল্লাহর প্রতি এক ধরনের বিশ্বাস রাখে। কিন্তু তাদের এ বিশ্বাসের সঙ্গে রয়েছে অংশিবাদীতা। তারা আল্লাহকেও ডাকে আবার পূঁজা করে কল্পিত দেব-দেবীদের। তাদেরকে আপনি জিজ্ঞেস করে দেখুুন, আকাশ, পৃথিবী সৃষ্টি করেছন কে? তারা বলবে, আল্লাহ্।<br /> আরো বলে দেখুন, আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করেন কে? তারা বলবে, আল্লাহ্। এরুপ বলা সত্ত্বেও তারা উপাসনা করবে বৃক্ষের, পাথরের, দেব-দেবীদের।<br /> হযরত ইবনূ আব্বাস রা. বলেন, অংশিবাদিরাও হজ্জ করত। হজ্জের সময় বলত, 'লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক (আমি হাজির, হে আল্লাহ্! আমি হাজির)'।<br /> হজ্জের ইহরাম পরে বৃত্তাকারে কাবা শরিফ প্রদক্ষিণের সময় বলত, 'লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক (আমি হাজির, হে আল্লাহ্! আমি হাজির)', তোমার কোন অংশিদার নেই ঐ সকল দেব-দেবীরা ছাড়া যাদেরকে তুমি তোমার অংশিদার করে নিয়েছ। তুমি তাদের (দেব-দেবীদের) প্রভূ। তারা তোমার প্রভূ নয়।<br /> আতা বলেন, অংশিবাদিরা শিরকমিশ্রিত এরুপ প্রার্থণা করত সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের সময়ে। কিন্তু বিপদআপদের সময় তারা আল্লাহ্ ছাড়া আর কাউকে ডাকত না। যেমন এক আয়াতে বলা হয়েছে,<br /> فَإِذَا رَڪِبُواْ فِى ٱلۡفُلۡكِ دَعَوُاْ ٱللَّهَ مُخۡلِصِينَ لَهُ ٱلدِّينَ فَلَمَّا نَجَّٮٰهُمۡ إِلَى ٱلۡبَرِّ إِذَا هُمۡ يُشۡرِكُونَ ٦٥<br /> অর্থাৎ : "তারা যখন নৌযানে আরোহন করে, তখন তারা একনিষ্ঠভাবে আল্লাহকে ডাকে। অতঃপর যখন তিনি তাদেরকে স্থলে পৌঁছে দেন, তখনই তারা শিরকে লিপ্ত হয়"।<br /> [সূরাহ্ আনকাবুত; ২৯/৬৫]।<br /> উলামায়ে ক্বিরাম রহ. বলেন, 'ইল্লা ওয়াহুম মুশরিকুন (কিন্তু তারা শিরক করে)' কথাটির অর্থ হবে, তারা আল্লাহর বিধানের প্রতিকূলে পথভ্রষ্ট ধর্মনেতাদের বিধানানুসারে চলে। তাদেরকেই বসায় প্রভূ পালনকর্তার আসনে। অথবা আল্লাহর সাথে স্থাপন করে পিতা-পুত্রের সম্পর্ক। তারা বলে, আমরা আল্লাহর সন্তান। কিংবা তারা করে আগুনের উপাসনা।<br /> মুতা'জিলারাও এরুপ অংশীবাদিদের অন্তর্ভূক্ত।<br /> কারণ তারা বলে মানুষ তার কর্মের স্রষ্টা।<br /> কিন্তু তাওহিদের বিশুদ্ধ বিশ্বাস হচ্ছে, আল্লাহ্ পাকই হচ্ছেন এক ও অপ্রতিদ্বন্দ্বী স্রষ্টা। তাকদিরের ভালো-মন্দ আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশ্বাসের অপরিহার্য অঙ্গ।<br /> সূফী সাধকগণই হচ্ছেন বিশুদ্ধ বিশ্বাসী। আর মুতা'জিলারা অবশ্যই পথভ্রষ্ঠ্য।<br /> গ্রন্থ সূত্র :<br /> আল্লামা কাজী সানাউল্লাহ্ পানিপথী রহ. : তাফসীরে মাযহারী; সূরাহ্ ইউসূফ, আয়াত ১০৬।<br /> ______<br /> সম্মানিত পাঠক,<br /> সকল যুগের সকল মুফাসসিরিনে ক্বিরাম স্ব-স্ব তাফসীর উপরোক্ত অনুরুপ তাফসীর পেশ করেছেন। তাঁদের তাফসীরে রয়েছে সাদৃশ্যতা; কেবল কিছুটা উদ্ধৃতির বিভিন্নতা, বাক্যের নান্দনিকতা, উপস্থাপনায় স্বকীয়তা রয়েছে।<br /> ______<br /> তথাকথিত আহলে হাদীস নামক বর্তমান সময়ের ভংকর ফিতনা, ভাইরাস সদৃশ বদমাযহাবীরা সকলেই খারিজী, মুতা'জিলা ফির্কার নব্য গঠিত রুপ।<br /> <br /> কারণ খারিজীরা কোরআনুল কারীমে বর্ণিত অসংখ্য আয়াত যা সরাসরি তখনকার সময়ের কাফির, মুশরিকদের শিরক-কুফরের বিষয়ে নাযিল হয়েছিল তা তৎকালীন মো'মিনদেরকে কাফির, মুশরিক বলার জন্যে ইতিহাসে নিন্দিত কুখ্যাত খারিজী ফির্কা-সম্প্রদায়টি তাদের উত্থানের সময়ে প্রয়োগ করেছিল।<br /> <br /> আর এখন এই নব গঠিত নব্য খারিজী ফির্কাও মু'মিনদের বিষয়ে প্রযোজ্য নয় এরুপ আয়াতকে মু'মিনদের কাফীর মুশরিক বলার জন্যে অপব্যাখ্যামূলক অপচেষ্টা করছে।<br /> <br /> হাদীস শরীফ থেকে জানা যায় যারা কোরআন শরীফের এসব আয়াত অর্থাৎ কাফেরদের বিরোধীতায় নাযিলকৃত আয়াতগুলো যদি কেউ মো'মিনদের উপর প্রয়োগ করার অপচেষ্টা করে তাহলে তারা ইসলাম বহির্ভূত / খারিজী; আর হাদিস শরিফে খারিজীদের জাহান্নামের কুকুর বলা হয়েছে।<br /> <br /> সুতরাং সকল মু'মিন ভাই-বোন সাবধান!<br /> সকলেই এধরনের ফিতনাওয়ালা নামধারী শায়েখদের থেকে দূরে থাকুন।<br /> <br /> তারা আপনার আমার অজান্তেই আমাদের ঈমান খেয়ে ফেলবে।<br /> আল্লাহ্ সকলের ঈমান-আক্বিদা-আ'মাল হিফাজাত করুন, আমীন।<br /> __________</div>

সুরা ইউসুফের ১০৬ নং আয়াতের ব্যাখ্যা

▆ সূরা ইউসুফ আয়াত ১০৬ এর তাফসীর। এই পবিত্র আয়াতুল কারিম ক্বুরআনুল কারিম নাযীলের সময়কালের কাফীর-মুুশরিকদের ঈমানকে কটাক্ষ করে নাযীলকৃত। ...

Read more »

সুরা ইউসুফের ১০৬ নং আয়াতের ব্যাখ্যা

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"><br />▆ সূরা ইউসুফ আয়াত ১০৬ এর তাফসীর।<br /><br /><br /><br />এই পবিত্র আয়াতুল কারিম ক্বুরআনুল কারিম নাযীলের সময়কালের কাফীর-মুুশরিকদের ঈমানকে কটাক্ষ করে নাযীলকৃত।<br /><br /><br /><br />এই আয়াতে প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم) কে প্রেরণের আগে থেকে তাদের দীর্ঘ দিনের লালিত ঈমানের সাথে শির্কি আক্বিদার স্বরুপ তুলে ধরা হয়েছে।<br /><br />তারা তাদেরই হাতে গড়া মূর্তী আর তাদেরই হাতে জ্বালানো আগুনের পূঁজা করত, সেগুলোকে তাদের দেবতা বানিয়ে নিয়েছিল।<br /><br />আর সেগুলোকে আল্লাহর সহযোগী (Partner) বলে বিশ্বাস করত।<br /><br /><br /><br />আয়াতটি :<br /><br />  وَمَا يُؤْمِنُ أَكْثَرُهُمْ بِاللَّهِ إِلَّا وَهُمْ مُشْرِكُونَ<br /><br />অর্থাৎ : “(মুশরিকদের মধ্যে) অনেক মানুষ এরুপও রয়েছে যে তারা আল্লাহকে বিশ্বাস করে; আবার শিরকও করে।”<br /><br />[সূরাহ্ ইউসূফ; ১২/১০৬।]<br /><br /><br /><br />এ সুরাটি হিজরতের পূর্বে মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছিলো।<br /><br />সুরাটি এমন এক সময়ে নাজিল করা হয় যখন প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم)  ও তাঁর সাহাবায়ে কেরাম রা.-কে মক্কার কাফির-মুশরিকদের হাতে চরম নির্যাতন ও লাঞ্ছনা ভোগ করতে হচ্ছিল।<br /><br />তাঁদের ওপর জুলুমের মাত্রা এতটাই সীমা লঙ্ঘন করেছিল, তাঁরা অপেক্ষায় ছিলেন কখন আল্লাহ তাআলা আসমানি সাহায্য নাজিল করবেন।<br /><br />এমনকি অসহ্য হয়ে অনেকে মাতৃভূমি মক্কা ত্যাগ করার প্রাথমিক প্রস্তুতিও সম্পন্ন করেছিলেন।<br /><br />মক্কার দেব-দেবীর পূঁজারী কাফির মুশরিকদের সাথে ছিলো আরবের পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের আহলে কিতাব তথা ইহুদি-খ্রিস্টানদের সাথে গভীরতর সু-সম্পর্ক।<br /><br /><br /><br />পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের তৎকালিন ইহুদি-খ্রিস্টান মুশরিকেরা যখন জানতে পারলো আল্লাহ্ (سبحانه و تعالى) এঁর হাবিব প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم)  রিসালাতের ঘোষণা প্রদানপূর্বক আল্লাহ্ (سبحانه و تعالى) এঁর তাউহিদ বা একত্ববাদের ডাক দিয়েছেন তখন আল্লাহ্ (سبحانه و تعالى) এঁর হাবিব প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم) কে অপমান অপদস্থ করার মানসে আহলে কিতাব মুশরিকেরা হযরত ইউসূফ আ. এঁর ঘটনা বিস্তারিত জানানোর জন্যে বলে।<br /><br /><br /><br />আহলে কিতাব ইহুদি-খ্রিস্টান মুশরিকদের দৃঢ় বিশ্বাস ছিলো প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم)  মক্কাবাসী হওয়ায় হযরত ইউসূফ আ. এঁর সাথে সম্পর্কিত সুপ্রাচীন সে ঘটনা তিনি জানাতে পারবে না।<br /><br /><br /><br />আল্লাহ তালার কাছে অতীত বর্তমান ভবিষ্যত বলতে কিছু নেই, তিনি সব বিষয়েই জ্ঞান রাখেন। কোনো কিছুই তার অজানা বা গায়িব নয়। নবী রাসূলগণকে আল্লাহতালাই অদৃশ্য বা গায়িব সম্পর্কে জ্ঞান বা ইলম দান করেন।<br /><br /><br /><br />নবী রাসূলদের অলৌকিক কর্ম এবং যাদুকরের যাদু এক নয়।<br /><br /><br /><br />আল্লাহ্ (سبحانه و تعالى) তাঁর হাবিব প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم) এঁর নুবূয়্যাত (গায়বের খবর জানানোর মর্যাদায় অধিষ্ঠা) এর প্রমাণ হিসেবে হযরত ইউসূফ আ. এঁর সাথে সম্পর্কিত উক্ত ঘটনাকে ক্বুরআ'নুল কারিমের অংশ হিসেবে তাঁকে জানিয়ে দিয়ে তাঁর নুবূয়্যাতী ও রিসালাতের মর্যাদকে বুলন্দ করেন।<br /><br />এই গায়িবি সংবাদের মাধ্যমে আহলে কিতাব ইহুদি খ্রিস্টানের চক্রান্তকে আল্লাহ্ (سبحانه و تعالى) নস্যাৎ করে দেন।<br /><br />যেমন<br /><br />ইরশাদ হয়েছে :<br /><br /><br /><br />ذَٰلِكَ مِنْ أَنْبَاءِ الْغَيْبِ نُوحِيهِ إِلَيْكَ ۖ وَمَا كُنْتَ لَدَيْهِمْ إِذْ أَجْمَعُوا أَمْرَهُمْ وَهُمْ يَمْكُرُونَ<br /><br />অর্থাৎ : "এগুলো অদৃশ্যের খবর, আমি আপনার কাছে প্রেরণ করি। আপনি তাদের কাছে ছিলেন না, যখন তারা স্বীয় কাজ সাব্যস্ত করছিল (বিষয়-বস্তু নির্ধারণ করছিল) এবং চক্রান্ত করছিল"।<br /><br />[সূরাহ্ ইউসূফ; ১২/১০২]।<br /><br /><br /><br />এ সূরার ১০৩ ও ১০৪ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে-<br /><br /> وَمَا أَكْثَرُ النَّاسِ وَلَوْ حَرَصْتَ بِمُؤْمِنِينَ (103) وَمَا تَسْأَلُهُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍ إِنْ هُوَ إِلَّا ذِكْرٌ لِلْعَالَمِينَ (104)<br /><br />অর্থাৎ : "(হে রাসূল!) আপনি (নব্যুয়তের দায়িত্ব পালনের কারনে) যতই চান, অধিকাংশ মানুষ ঈমান আনবে না।”<br /><br />[সূরাহ্ ইউসূফ; ১২/১০৩]।<br /><br /><br /><br />পরবর্তী আয়াতে<br /><br />“আপনি (নব্যুয়তের দায়িত্ব পালনের কারনে) তাদের কাছ থেকে তো কোনো বিনিময় খোঁজেন না।<br /><br />এ কুরআন তো বিশ্বজগতের জন্য উপদেশ ব্যতীত আর কিছুই নয়।"<br /><br />[সূরাহ্ ইউসূফ; ১২/১০৪]।<br /><br /><br /><br />হযরত ইউসুফ (আ.) এঁর কাহিনী বর্ণনার পর এখন ইসলামের প্রতি প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم) এঁর আহ্বানের ব্যাপারে মানুষের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বলা হচ্ছে, আল্লাহ বলছেন, হে নবী! মানুষকে সত্যের দাওয়াত দিতে গিয়ে আপনি তো তাদের কাছ থেকে কোনো পারিশ্রমিক দাবি করছেন না।<br /><br />বরং তারা যাতে আল্লাহর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করে সেজন্য আপনি চেষ্টা করছেন এবং কষ্ট করছেন।<br /><br />তবে আপনি এটা জেনে রাখুন, অনেক মানুষই আছে যারা বিশ্বাস করবে না; সত্য গ্রহণ করতে আগ্রহ দেখাবে না। এমনকি আপনি অনেককেই পাবেন যারা আপনার কথা সত্য মনে করলেও তা গ্রহণ করবে না।<br /><br />আল্লাহর দ্বীন প্রচারের জন্য নবী রাসূলদেরকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে।<br /><br />কিন্তু দেখা গেছে অধিকাংশ মানুষ তাদের আহ্বানে সাড়া দেয়নি।<br /><br />এজন্য নবী রাসূলরা দায়ী নন, মানুষকে আল্লাহতায়ালা জ্ঞান ও বিচার বুদ্ধি দিয়েছেন, কাজেই কোনো কিছু গ্রহণ ও বর্জন করার স্বধীনতা তাদের রয়েছে।<br /><br /><br /><br />এ সূরার ১০৫ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে,<br /><br />   وَكَأَيِّنْ مِنْ آَيَةٍ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ يَمُرُّونَ عَلَيْهَا وَهُمْ عَنْهَا مُعْرِضُونَ (105)<br /><br />অর্থাৎ : "আকাশ ও পৃথিবীতে অনেক নিদর্শন রয়েছে যার ওপর দিয়ে তারা পথ অতিক্রম করে অথচ এসবের (তাৎপর্যের) প্রতি তারা উদাসীন।"<br /><br />[সূরাহ্ ইউসূফ; ১২/১০৫]।<br /><br /><br /><br />আগের আয়াতে বলা হয়েছে,<br /><br />সত্য প্রতিভাত হলেও বহু মানুষ তা গ্রহণ করবে না।<br /><br />এই আয়াতে প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم) কে সান্ত্বনা দিয়ে বলা হচ্ছে, তারা প্রতিনিয়ত আল্লাহর নিদর্শন প্রত্যক্ষ করে যাচ্ছে অথচ আল্লাহর অস্তিত্ব তাদের বোধগম্য হয় না।<br /><br />কাজেই<br /><br />তারা যদি আপনার আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে তাহলে আপনি দুঃখিত হবেন না। আপনার আহ্বান তো বিশ্ববাসীর কল্যাণের উদ্দেশ্যে, এর পেছনে পার্থিব কোনো স্বার্থ নেই।<br /><br />আপনার চিন্তিত বা উদ্বিগ্ন হওয়ারও কোনো কারণ নেই।<br /><br />আকাশ ও পৃথিবীর সব সৃষ্টিই মহান আল্লাহর অসীম শক্তি ও কুদরতের নিদর্শন বহন করছে।<br /><br />যারা এ ব্যাপারে উদাসীন তারাই সত্যকে গ্রহণ করার সৌভাগ্য লাভ করতে ব্যর্থ হচ্ছে।<br /><br /><br /><br />সূরা ইউসুফের ১০৬ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে,<br /><br />  وَمَا يُؤْمِنُ أَكْثَرُهُمْ بِاللَّهِ إِلَّا وَهُمْ مُشْرِكُونَ (106)<br /><br />অর্থাৎ : “অনেক মানুষ আল্লাহর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করে না, আবার তারা যেন শিরকও করে।”<br /><br />[সূরাহ্ ইউসূফ; ১২/১০৬]।<br /><br /><br /><br />এই আয়াতে বলা হচ্ছে,<br /><br />অধিকাংশ মানুষ যেমন আল্লাহকেই বিশ্বাস করে না, আবার যারা বিশ্বাস করে তাদের অনেকেরই বিশ্বাস আবার খাঁটি নয়। তারা খাঁটি একত্ববাদী নয়।<br /><br />তারা আল্লাহর পাশাপাশি অন্যের ওপরও নির্ভর করে, আল্লাহর সঙ্গে অংশীস্থাপন করে।<br /><br />আল্লাহর এবাদত করে ঠিকই কিন্তু জীবনে আল্লাহর বিধান পুরোপুরি বাস্তবায়ন করে না।<br /><br /><br /><br />এখানে শিরক বলতে দৈহিক মূর্তি পুজাকে বুঝানো হয়নি, আল্লাহ ছাড়া অন্যের ওপর নির্ভর করাকে বুঝানো হয়েছে।<br /><br />যেমন : রিয়া, সুদ খাওয়া, কেবল সম্পদশালী ও ক্ষমতাধর হওয়ার কারনে কাউকে গুরুত্ব দেয়া, স্বজনপ্রীতি, নিজের প্রবৃত্তিকে ইলাহ্ বানিয়ে নেয়া অহংকারবশত শরিক স্থাপন; যেমন ইবলিশ শায়ত্বন করেছিল প্রভৃতি।<br /><br /><br /><br />পৃথিবীতে অধিকাংশ মানুষ বা জ্বীনই সৃষ্টিকর্তা হিসাবে আল্লাহকে বিশ্বাস করে।<br /><br />কিন্তু সেই সাথে উপরোক্ত বিভিন্ন কারনে অন্য কিছুকে শরীক করে।<br /><br />যেমন মক্কার মুশরিকরা আল্লাহকে বিশ্বাস করত। আল্লাহকে বিশ্বাস করত তৎকালীন আহলে কিতাব ইহুদি-খ্রিস্টান মুশরিকরাও।<br /><br />আসমান-যমীন, পাহাড়-পর্বত সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা হিসাবে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রাখত।<br /><br />নবী ইবরাহীম ও ইসমাঈলকে নবী বলে বিশ্বাস করত।<br /><br />আখেরাতে বিশ্বাস পোষণ করত।<br /><br />যেমন ইরশাদ হয়েছে :<br /><br />অর্থাৎ : "আর যদি তুমি তাদেরকে প্রশ্ন কর, কে আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টি করেছেন এবং চাঁদ ও সূর্যকে নিয়োজিত করেছেন? তারা অবশ্যই বলবে, আল্লাহ। তাহলে কোথায় তাদের ফিরানো হচ্ছে?<br /><br />[সূরাহ্ আনকাবুত; ২৯/৬১]।<br /><br />অথচ আল্লাহর সাথে তারা অন্য কিছুকে শরীক করত ও কুফরী করত।<br /><br />যেমন তারা কা‘বা গৃহ ত্বাওয়াফকালে শিরকী তালবিয়াহ পাঠ করত।<br /><br />যেমন তারা বলত, লাববাইকা লা শারীকা লাকা, ইল্লা শারীকান হুয়া লাক; তামলিকুহু ওয়া মা মালাক (আমি হাযির; তোমার কোন শরীক নেই, কেবল ঐ শরীক যা তোমার জন্য রয়েছে। তুমি যার মালিক এবং যা কিছুর সে মালিক।<br /><br />গ্রন্থ সূত্রঃ<br /><br />মুসলিম হা/১১৮৫;<br /><br />মিশকাত হা/২৫৫৪ ‘ইহরাম ও তালবিয়াহ’ অনুচ্ছেদ;<br /><br />ইবনু কাছীর, ত্বাবারী, ঐ আয়াতের তাফসীর।<br /><br /><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><br /><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEj9gBUgxQjee4dauE1UurLfN1vRHRdCitGwZ5lua8OaW1ZluVAjFk_8BnO-vbC2KHe0HrjMdg7tqImQxb09FGFlDb-BZKmgWYVMRfMlKoaEyc6i3IsbOQnRXMziiDxMkeJ4lvCUuJO0usD7/s1600/PicsArt_05-20-11.27.38.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="899" data-original-width="1600" height="179" loading="lazy" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEj9gBUgxQjee4dauE1UurLfN1vRHRdCitGwZ5lua8OaW1ZluVAjFk_8BnO-vbC2KHe0HrjMdg7tqImQxb09FGFlDb-BZKmgWYVMRfMlKoaEyc6i3IsbOQnRXMziiDxMkeJ4lvCUuJO0usD7/s320-rw/PicsArt_05-20-11.27.38.jpg" width="320" /></a></div><br /><br /><br /><br /><br />বস্তুতঃ বিগত যুগের ন্যায় বর্তমান যুগেও পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের মূর্তিপুঁজারী মুশরিকেরা বা আহলে কিতাব ইহুদি-খ্রিস্টান মুশরিকেরা শিরকী আক্বীদা ও আমলে অভ্যস্ত।<br /><br />কাজেই<br /><br />  وَمَا يُؤْمِنُ أَكْثَرُهُمْ بِاللَّهِ إِلَّا وَهُمْ مُشْرِكُونَ (106)<br /><br />অর্থাৎ : “অনেক মানুষ আল্লাহর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করে না, আবার তারা যেন শিরকও করে।”<br /><br />[সূরাহ্ ইউসূফ; ১২/১০৬]।<br /><br />উক্ত অায়াতুল কারিমে উল্লেখিত বাণীর ব্যাখ্যা হচ্ছে নিম্নোক্ত আয়াতুল কারিম<br /><br />فَإِذَا رَڪِبُواْ فِى ٱلۡفُلۡكِ دَعَوُاْ ٱللَّهَ مُخۡلِصِينَ لَهُ ٱلدِّينَ فَلَمَّا نَجَّٮٰهُمۡ إِلَى ٱلۡبَرِّ إِذَا هُمۡ يُشۡرِكُونَ ٦٥<br /><br />অর্থাৎ : "(তৎকালের মক্বার মুশরিক ও আহলে কিতাবিদের বৈশিষ্ঠ্য সম্পর্কে বলা হচ্ছে) তারা যখন নৌযানে আরোহন করে, তখন তারা একনিষ্ঠভাবে আল্লাহকে ডাকে। অতঃপর যখন তিনি তাদেরকে স্থলে পৌঁছে দেন, তখনই তারা শিরকে লিপ্ত হয়"।<br /><br />[সূরাহ্ আনকাবুত; ২৯/৬৫]।<br /><br />আর<br /><br />তাদের এরুপ শিরকে লিপ্ত হওয়ার কারণ হিসেবে ইরশাদ হয়েছে :<br /><br />لِيَكۡفُرُواْ بِمَآ ءَاتَيۡنَـٰهُمۡ وَلِيَتَمَتَّعُواْ‌ۖ فَسَوۡفَ يَعۡلَمُونَ ٦٦<br /><br />অর্থাৎ : "যাতে আমি তাদেরকে যা দিয়েছি, তা তারা অস্বীকার করতে পারে এবং তারা যেন ভোগ-বিলাসে মত্ত থাকতে পারে। অতঃপর শীঘ্রই তারা জানতে পারবে"।<br /><br />[সূরাহ্ আনকাবুত; ২৯/৬৬]।<br /><br />ক্বুরআ'নুল কারিম নাযিলের মাধ্যমে আল্লাহ্ (سبحانه و تعالى) মক্কার মুশরিক ও ইহুদি-খ্রিস্টান আহলে কিতাবিদের শিরিকী বিশ্বাস বা আক্বিদাকে খণ্ডন করে ইসলামী বিশুদ্ধ বিশ্বাসকে প্রতিস্থাপন করেছেন।<br /><br />মক্কার মুশরিক ও ইহুদি-খ্রিস্টান আহলে কিতাবিদের শিরিকী বিশ্বাস বা আক্বিদার অন্যতম হচ্ছে আল্লাহ্ (سبحانه و تعالى) এঁর জাত-স্বত্ত্বাকে তারা সৃষ্টির সাথে সাদৃশ্যতার বিশ্বাসে বিশ্বাস পোষণ করত।<br /><br />তাছাড়া<br /><br />তারা মানবের মাঝে অবধারিত পরষ্পর তাওয়াস্সুল বা উসিলা এবং শাফায়াত বা সুপারিশের বিষয়ে ভূল ধারণা পোষণ করত।<br /><br /><br /><br />ক্বুরআ'নুল কারিমে আল্লাহ্ (سبحانه و تعالى) সত্যকে গ্রহণ না করাকে তিরষ্কার করেছেন।<br /><br />যেমন ইরশাদ হয়েছে :<br /><br />وَمَنۡ أَظۡلَمُ مِمَّنِ ٱفۡتَرَىٰ عَلَى ٱللَّهِ ڪَذِبًا أَوۡ كَذَّبَ بِٱلۡحَقِّ لَمَّا جَآءَهُ ۥۤ‌ۚ أَلَيۡسَ فِى جَهَنَّمَ مَثۡوً۬ى لِّلۡڪَـٰفِرِينَ ٦٨<br /><br />অর্থাৎ : "আর সে ব্যক্তির চেয়ে যালিম আর কে, যে আল্লাহর উপর মিথ্যা আরোপ করে অথবা তার নিকট সত্য আসার পর তা অস্বীকার করে? জাহান্নামের মধ্যেই কি কাফিরদের আবাস নয়"?<br /><br />[সূরাহ্ আনকাবুত; ২৯/৬৮]।<br /><br />পরের আয়াতেই আল্লাহ্ (سبحانه و تعالى) ইরশাদ করেন :<br /><br />وَٱلَّذِينَ جَـٰهَدُواْ فِينَا لَنَہۡدِيَنَّہُمۡ سُبُلَنَا‌ۚ وَإِنَّ ٱللَّهَ لَمَعَ ٱلۡمُحۡسِنِينَ ٦٩<br /><br />অর্থাৎ : "আর যারা আমার পথে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায়, তাদেরকে আমি অবশ্যই আমার পথে পরিচালিত করব। আর নিশ্চয় আল্লাহ সৎকর্মশীলদের সাথেই আছেন"।<br /><br />[সূরাহ্ আনকাবুত; ২৯/৬৯]।<br /><br /><br /><br />সুপ্রিয় পাঠক, এ পর্যায়ে আসুন যুগশ্রেষ্ঠ মুফাসসিরিনে ক্বিরামের তাফসীর থেকে উক্ত আয়াতের তাফসীর দেখে নিইঃ<br /><br /><br /><br />উদ্ধৃতি : আল্লামা কাজী সানাউল্লাহ্ পানিপথী রহ. স্বীয় তাফসীরে মাযহারী সূরাহ্ ইউসূফ ১০৬ এর তাফসীর করা হয়েছে নিম্নরূপ :<br /><br />অর্থাৎ : "তাদের অধিকাংশ   وَمَا يُؤْمِنُ أَكْثَرُهُمْ بِاللَّهِ إِلَّا وَهُمْ مُشْرِكُون একথার অর্থ, হে রাসূল! দেখুন, এ সকল লোক আল্লাহর প্রতি এক ধরনের বিশ্বাস রাখে। কিন্তু তাদের এ বিশ্বাসের সঙ্গে রয়েছে অংশিবাদীতা। তারা আল্লাহকেও ডাকে আবার পূঁজা করে কল্পিত দেব-দেবীদের। তাদেরকে আপনি জিজ্ঞেস করে দেখুুন, আকাশ, পৃথিবী সৃষ্টি করেছন কে? তারা বলবে, আল্লাহ্।<br /><br />আরো বলে দেখুন, আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করেন কে? তারা বলবে, আল্লাহ্। এরুপ বলা সত্ত্বেও তারা উপাসনা করবে বৃক্ষের, পাথরের, দেব-দেবীদের।<br /><br />হযরত ইবনূ আব্বাস রা. বলেন, অংশিবাদিরাও হজ্জ করত। হজ্জের সময় বলত, 'লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক (আমি হাজির, হে আল্লাহ্! আমি হাজির)'।<br /><br />হজ্জের ইহরাম পরে বৃত্তাকারে কাবা শরিফ প্রদক্ষিণের সময় বলত, 'লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক (আমি হাজির, হে আল্লাহ্! আমি হাজির)', তোমার কোন অংশিদার নেই ঐ সকল দেব-দেবীরা ছাড়া যাদেরকে তুমি তোমার অংশিদার করে নিয়েছ। তুমি তাদের (দেব-দেবীদের) প্রভূ। তারা তোমার প্রভূ নয়।<br /><br />আতা বলেন, অংশিবাদিরা শিরকমিশ্রিত এরুপ প্রার্থণা করত সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের সময়ে। কিন্তু বিপদআপদের সময় তারা আল্লাহ্ ছাড়া আর কাউকে ডাকত না। যেমন এক আয়াতে বলা হয়েছে,<br /><br />فَإِذَا رَڪِبُواْ فِى ٱلۡفُلۡكِ دَعَوُاْ ٱللَّهَ مُخۡلِصِينَ لَهُ ٱلدِّينَ فَلَمَّا نَجَّٮٰهُمۡ إِلَى ٱلۡبَرِّ إِذَا هُمۡ يُشۡرِكُونَ ٦٥<br /><br />অর্থাৎ : "তারা যখন নৌযানে আরোহন করে, তখন তারা একনিষ্ঠভাবে আল্লাহকে ডাকে। অতঃপর যখন তিনি তাদেরকে স্থলে পৌঁছে দেন, তখনই তারা শিরকে লিপ্ত হয়"।<br /><br />[সূরাহ্ আনকাবুত; ২৯/৬৫]।<br /><br />উলামায়ে ক্বিরাম রহ. বলেন, 'ইল্লা ওয়াহুম মুশরিকুন (কিন্তু তারা শিরক করে)' কথাটির অর্থ হবে, তারা আল্লাহর বিধানের প্রতিকূলে পথভ্রষ্ট ধর্মনেতাদের বিধানানুসারে চলে। তাদেরকেই বসায় প্রভূ পালনকর্তার আসনে। অথবা আল্লাহর সাথে স্থাপন করে পিতা-পুত্রের সম্পর্ক। তারা বলে, আমরা আল্লাহর সন্তান। কিংবা তারা করে আগুনের উপাসনা।<br /><br />মুতা'জিলারাও এরুপ অংশীবাদিদের অন্তর্ভূক্ত।<br /><br />কারণ তারা বলে মানুষ তার কর্মের স্রষ্টা।<br /><br />কিন্তু তাওহিদের বিশুদ্ধ বিশ্বাস হচ্ছে, আল্লাহ্ পাকই হচ্ছেন এক ও অপ্রতিদ্বন্দ্বী স্রষ্টা। তাকদিরের ভালো-মন্দ আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশ্বাসের অপরিহার্য অঙ্গ।<br /><br />সূফী সাধকগণই হচ্ছেন বিশুদ্ধ বিশ্বাসী। আর মুতা'জিলারা অবশ্যই পথভ্রষ্ঠ্য।<br /><br />গ্রন্থ সূত্র :<br /><br />আল্লামা কাজী সানাউল্লাহ্ পানিপথী রহ. : তাফসীরে মাযহারী; সূরাহ্ ইউসূফ, আয়াত ১০৬।<br /><br />______<br /><br />সম্মানিত পাঠক,<br /><br />সকল যুগের সকল মুফাসসিরিনে ক্বিরাম স্ব-স্ব তাফসীর উপরোক্ত অনুরুপ তাফসীর পেশ করেছেন। তাঁদের তাফসীরে রয়েছে সাদৃশ্যতা; কেবল কিছুটা উদ্ধৃতির বিভিন্নতা, বাক্যের নান্দনিকতা, উপস্থাপনায় স্বকীয়তা রয়েছে।<br /><br />______<br /><br />তথাকথিত আহলে হাদীস নামক বর্তমান সময়ের ভংকর ফিতনা, ভাইরাস সদৃশ বদমাযহাবীরা সকলেই খারিজী, মুতা'জিলা ফির্কার নব্য গঠিত রুপ।<br /><br /><br /><br />কারণ খারিজীরা কোরআনুল কারীমে বর্ণিত অসংখ্য আয়াত যা সরাসরি তখনকার সময়ের কাফির, মুশরিকদের শিরক-কুফরের বিষয়ে নাযিল হয়েছিল তা তৎকালীন মো'মিনদেরকে কাফির, মুশরিক বলার জন্যে ইতিহাসে নিন্দিত কুখ্যাত খারিজী ফির্কা-সম্প্রদায়টি তাদের উত্থানের সময়ে প্রয়োগ করেছিল।<br /><br /><br /><br />আর এখন এই নব গঠিত নব্য খারিজী ফির্কাও মু'মিনদের বিষয়ে প্রযোজ্য নয় এরুপ আয়াতকে মু'মিনদের কাফীর মুশরিক বলার জন্যে অপব্যাখ্যামূলক অপচেষ্টা করছে।<br /><br /><br /><br />হাদীস শরীফ থেকে জানা যায় যারা কোরআন শরীফের এসব আয়াত অর্থাৎ কাফেরদের বিরোধীতায় নাযিলকৃত আয়াতগুলো যদি কেউ মো'মিনদের উপর প্রয়োগ করার অপচেষ্টা করে তাহলে তারা ইসলাম বহির্ভূত / খারিজী; আর হাদিস শরিফে খারিজীদের জাহান্নামের কুকুর বলা হয়েছে।<br /><br /><br /><br />সুতরাং সকল মু'মিন ভাই-বোন সাবধান!<br /><br />সকলেই এধরনের ফিতনাওয়ালা নামধারী শায়েখদের থেকে দূরে থাকুন।<br /><br /><br /><br />তারা আপনার আমার অজান্তেই আমাদের ঈমান খেয়ে ফেলবে।<br /><br />আল্লাহ্ সকলের ঈমান-আক্বিদা-আ'মাল হিফাজাত করুন, আমীন।<br /><br />__________</div><br />

সুরা ইউসুফের ১০৬ নং আয়াতের ব্যাখ্যা

▆ সূরা ইউসুফ আয়াত ১০৬ এর তাফসীর। এই পবিত্র আয়াতুল কারিম ক্বুরআনুল কারিম নাযীলের সময়কালের কাফীর-মুুশরিকদের ঈমানকে কটাক্ষ করে নাযীলকৃত। এই ...

Read more »

সুরা ইউসুফের ১০৬ নং আয়াতের ব্যাখ্যা

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <div style="text-align: justify;"> ▆ সূরা ইউসুফ আয়াত ১০৬ এর তাফসীর।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> এই পবিত্র আয়াতুল কারিম ক্বুরআনুল কারিম নাযীলের সময়কালের কাফীর-মুুশরিকদের ঈমানকে কটাক্ষ করে নাযীলকৃত।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> এই আয়াতে প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم) কে প্রেরণের আগে থেকে তাদের দীর্ঘ দিনের লালিত ঈমানের সাথে শির্কি আক্বিদার স্বরুপ তুলে ধরা হয়েছে।</div> <div style="text-align: justify;"> তারা তাদেরই হাতে গড়া মূর্তী আর তাদেরই হাতে জ্বালানো আগুনের পূঁজা করত, সেগুলোকে তাদের দেবতা বানিয়ে নিয়েছিল।</div> <div style="text-align: justify;"> আর সেগুলোকে আল্লাহর সহযোগী (Partner) বলে বিশ্বাস করত।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> আয়াতটি :</div> <div style="text-align: justify;">   وَمَا يُؤْمِنُ أَكْثَرُهُمْ بِاللَّهِ إِلَّا وَهُمْ مُشْرِكُونَ</div> <div style="text-align: justify;"> অর্থাৎ : “(মুশরিকদের মধ্যে) অনেক মানুষ এরুপও রয়েছে যে তারা আল্লাহকে বিশ্বাস করে; আবার শিরকও করে।”</div> <div style="text-align: justify;"> [সূরাহ্ ইউসূফ; ১২/১০৬।]</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> এ সুরাটি হিজরতের পূর্বে মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছিলো।</div> <div style="text-align: justify;"> সুরাটি এমন এক সময়ে নাজিল করা হয় যখন প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم)  ও তাঁর সাহাবায়ে কেরাম রা.-কে মক্কার কাফির-মুশরিকদের হাতে চরম নির্যাতন ও লাঞ্ছনা ভোগ করতে হচ্ছিল।</div> <div style="text-align: justify;"> তাঁদের ওপর জুলুমের মাত্রা এতটাই সীমা লঙ্ঘন করেছিল, তাঁরা অপেক্ষায় ছিলেন কখন আল্লাহ তাআলা আসমানি সাহায্য নাজিল করবেন।</div> <div style="text-align: justify;"> এমনকি অসহ্য হয়ে অনেকে মাতৃভূমি মক্কা ত্যাগ করার প্রাথমিক প্রস্তুতিও সম্পন্ন করেছিলেন।</div> <div style="text-align: justify;"> মক্কার দেব-দেবীর পূঁজারী কাফির মুশরিকদের সাথে ছিলো আরবের পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের আহলে কিতাব তথা ইহুদি-খ্রিস্টানদের সাথে গভীরতর সু-সম্পর্ক।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের তৎকালিন ইহুদি-খ্রিস্টান মুশরিকেরা যখন জানতে পারলো আল্লাহ্ (سبحانه و تعالى) এঁর হাবিব প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم)  রিসালাতের ঘোষণা প্রদানপূর্বক আল্লাহ্ (سبحانه و تعالى) এঁর তাউহিদ বা একত্ববাদের ডাক দিয়েছেন তখন আল্লাহ্ (سبحانه و تعالى) এঁর হাবিব প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم) কে অপমান অপদস্থ করার মানসে আহলে কিতাব মুশরিকেরা হযরত ইউসূফ আ. এঁর ঘটনা বিস্তারিত জানানোর জন্যে বলে।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> আহলে কিতাব ইহুদি-খ্রিস্টান মুশরিকদের দৃঢ় বিশ্বাস ছিলো প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم)  মক্কাবাসী হওয়ায় হযরত ইউসূফ আ. এঁর সাথে সম্পর্কিত সুপ্রাচীন সে ঘটনা তিনি জানাতে পারবে না।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> আল্লাহ তালার কাছে অতীত বর্তমান ভবিষ্যত বলতে কিছু নেই, তিনি সব বিষয়েই জ্ঞান রাখেন। কোনো কিছুই তার অজানা বা গায়িব নয়। নবী রাসূলগণকে আল্লাহতালাই অদৃশ্য বা গায়িব সম্পর্কে জ্ঞান বা ইলম দান করেন।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> নবী রাসূলদের অলৌকিক কর্ম এবং যাদুকরের যাদু এক নয়।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> আল্লাহ্ (سبحانه و تعالى) তাঁর হাবিব প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم) এঁর নুবূয়্যাত (গায়বের খবর জানানোর মর্যাদায় অধিষ্ঠা) এর প্রমাণ হিসেবে হযরত ইউসূফ আ. এঁর সাথে সম্পর্কিত উক্ত ঘটনাকে ক্বুরআ'নুল কারিমের অংশ হিসেবে তাঁকে জানিয়ে দিয়ে তাঁর নুবূয়্যাতী ও রিসালাতের মর্যাদকে বুলন্দ করেন।</div> <div style="text-align: justify;"> এই গায়িবি সংবাদের মাধ্যমে আহলে কিতাব ইহুদি খ্রিস্টানের চক্রান্তকে আল্লাহ্ (سبحانه و تعالى) নস্যাৎ করে দেন।</div> <div style="text-align: justify;"> যেমন</div> <div style="text-align: justify;"> ইরশাদ হয়েছে :</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> ذَٰلِكَ مِنْ أَنْبَاءِ الْغَيْبِ نُوحِيهِ إِلَيْكَ ۖ وَمَا كُنْتَ لَدَيْهِمْ إِذْ أَجْمَعُوا أَمْرَهُمْ وَهُمْ يَمْكُرُونَ</div> <div style="text-align: justify;"> অর্থাৎ : "এগুলো অদৃশ্যের খবর, আমি আপনার কাছে প্রেরণ করি। আপনি তাদের কাছে ছিলেন না, যখন তারা স্বীয় কাজ সাব্যস্ত করছিল (বিষয়-বস্তু নির্ধারণ করছিল) এবং চক্রান্ত করছিল"।</div> <div style="text-align: justify;"> [সূরাহ্ ইউসূফ; ১২/১০২]।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> এ সূরার ১০৩ ও ১০৪ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে-</div> <div style="text-align: justify;">  وَمَا أَكْثَرُ النَّاسِ وَلَوْ حَرَصْتَ بِمُؤْمِنِينَ (103) وَمَا تَسْأَلُهُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍ إِنْ هُوَ إِلَّا ذِكْرٌ لِلْعَالَمِينَ (104)</div> <div style="text-align: justify;"> অর্থাৎ : "(হে রাসূল!) আপনি (নব্যুয়তের দায়িত্ব পালনের কারনে) যতই চান, অধিকাংশ মানুষ ঈমান আনবে না।”</div> <div style="text-align: justify;"> [সূরাহ্ ইউসূফ; ১২/১০৩]।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> পরবর্তী আয়াতে</div> <div style="text-align: justify;"> “আপনি (নব্যুয়তের দায়িত্ব পালনের কারনে) তাদের কাছ থেকে তো কোনো বিনিময় খোঁজেন না।</div> <div style="text-align: justify;"> এ কুরআন তো বিশ্বজগতের জন্য উপদেশ ব্যতীত আর কিছুই নয়।"</div> <div style="text-align: justify;"> [সূরাহ্ ইউসূফ; ১২/১০৪]।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> হযরত ইউসুফ (আ.) এঁর কাহিনী বর্ণনার পর এখন ইসলামের প্রতি প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم) এঁর আহ্বানের ব্যাপারে মানুষের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বলা হচ্ছে, আল্লাহ বলছেন, হে নবী! মানুষকে সত্যের দাওয়াত দিতে গিয়ে আপনি তো তাদের কাছ থেকে কোনো পারিশ্রমিক দাবি করছেন না।</div> <div style="text-align: justify;"> বরং তারা যাতে আল্লাহর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করে সেজন্য আপনি চেষ্টা করছেন এবং কষ্ট করছেন।</div> <div style="text-align: justify;"> তবে আপনি এটা জেনে রাখুন, অনেক মানুষই আছে যারা বিশ্বাস করবে না; সত্য গ্রহণ করতে আগ্রহ দেখাবে না। এমনকি আপনি অনেককেই পাবেন যারা আপনার কথা সত্য মনে করলেও তা গ্রহণ করবে না।</div> <div style="text-align: justify;"> আল্লাহর দ্বীন প্রচারের জন্য নবী রাসূলদেরকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে।</div> <div style="text-align: justify;"> কিন্তু দেখা গেছে অধিকাংশ মানুষ তাদের আহ্বানে সাড়া দেয়নি।</div> <div style="text-align: justify;"> এজন্য নবী রাসূলরা দায়ী নন, মানুষকে আল্লাহতায়ালা জ্ঞান ও বিচার বুদ্ধি দিয়েছেন, কাজেই কোনো কিছু গ্রহণ ও বর্জন করার স্বধীনতা তাদের রয়েছে।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> এ সূরার ১০৫ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে,</div> <div style="text-align: justify;">    وَكَأَيِّنْ مِنْ آَيَةٍ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ يَمُرُّونَ عَلَيْهَا وَهُمْ عَنْهَا مُعْرِضُونَ (105)</div> <div style="text-align: justify;"> অর্থাৎ : "আকাশ ও পৃথিবীতে অনেক নিদর্শন রয়েছে যার ওপর দিয়ে তারা পথ অতিক্রম করে অথচ এসবের (তাৎপর্যের) প্রতি তারা উদাসীন।"</div> <div style="text-align: justify;"> [সূরাহ্ ইউসূফ; ১২/১০৫]।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> আগের আয়াতে বলা হয়েছে,</div> <div style="text-align: justify;"> সত্য প্রতিভাত হলেও বহু মানুষ তা গ্রহণ করবে না।</div> <div style="text-align: justify;"> এই আয়াতে প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم) কে সান্ত্বনা দিয়ে বলা হচ্ছে, তারা প্রতিনিয়ত আল্লাহর নিদর্শন প্রত্যক্ষ করে যাচ্ছে অথচ আল্লাহর অস্তিত্ব তাদের বোধগম্য হয় না।</div> <div style="text-align: justify;"> কাজেই</div> <div style="text-align: justify;"> তারা যদি আপনার আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে তাহলে আপনি দুঃখিত হবেন না। আপনার আহ্বান তো বিশ্ববাসীর কল্যাণের উদ্দেশ্যে, এর পেছনে পার্থিব কোনো স্বার্থ নেই।</div> <div style="text-align: justify;"> আপনার চিন্তিত বা উদ্বিগ্ন হওয়ারও কোনো কারণ নেই।</div> <div style="text-align: justify;"> আকাশ ও পৃথিবীর সব সৃষ্টিই মহান আল্লাহর অসীম শক্তি ও কুদরতের নিদর্শন বহন করছে।</div> <div style="text-align: justify;"> যারা এ ব্যাপারে উদাসীন তারাই সত্যকে গ্রহণ করার সৌভাগ্য লাভ করতে ব্যর্থ হচ্ছে।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> সূরা ইউসুফের ১০৬ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে,</div> <div style="text-align: justify;">   وَمَا يُؤْمِنُ أَكْثَرُهُمْ بِاللَّهِ إِلَّا وَهُمْ مُشْرِكُونَ (106)</div> <div style="text-align: justify;"> অর্থাৎ : “অনেক মানুষ আল্লাহর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করে না, আবার তারা যেন শিরকও করে।”</div> <div style="text-align: justify;"> [সূরাহ্ ইউসূফ; ১২/১০৬]।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> এই আয়াতে বলা হচ্ছে,</div> <div style="text-align: justify;"> অধিকাংশ মানুষ যেমন আল্লাহকেই বিশ্বাস করে না, আবার যারা বিশ্বাস করে তাদের অনেকেরই বিশ্বাস আবার খাঁটি নয়। তারা খাঁটি একত্ববাদী নয়।</div> <div style="text-align: justify;"> তারা আল্লাহর পাশাপাশি অন্যের ওপরও নির্ভর করে, আল্লাহর সঙ্গে অংশীস্থাপন করে।</div> <div style="text-align: justify;"> আল্লাহর এবাদত করে ঠিকই কিন্তু জীবনে আল্লাহর বিধান পুরোপুরি বাস্তবায়ন করে না।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> এখানে শিরক বলতে দৈহিক মূর্তি পুজাকে বুঝানো হয়নি, আল্লাহ ছাড়া অন্যের ওপর নির্ভর করাকে বুঝানো হয়েছে।</div> <div style="text-align: justify;"> যেমন : রিয়া, সুদ খাওয়া, কেবল সম্পদশালী ও ক্ষমতাধর হওয়ার কারনে কাউকে গুরুত্ব দেয়া, স্বজনপ্রীতি, নিজের প্রবৃত্তিকে ইলাহ্ বানিয়ে নেয়া অহংকারবশত শরিক স্থাপন; যেমন ইবলিশ শায়ত্বন করেছিল প্রভৃতি।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> পৃথিবীতে অধিকাংশ মানুষ বা জ্বীনই সৃষ্টিকর্তা হিসাবে আল্লাহকে বিশ্বাস করে।</div> <div style="text-align: justify;"> কিন্তু সেই সাথে উপরোক্ত বিভিন্ন কারনে অন্য কিছুকে শরীক করে।</div> <div style="text-align: justify;"> যেমন মক্কার মুশরিকরা আল্লাহকে বিশ্বাস করত। আল্লাহকে বিশ্বাস করত তৎকালীন আহলে কিতাব ইহুদি-খ্রিস্টান মুশরিকরাও।</div> <div style="text-align: justify;"> আসমান-যমীন, পাহাড়-পর্বত সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা হিসাবে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রাখত।</div> <div style="text-align: justify;"> নবী ইবরাহীম ও ইসমাঈলকে নবী বলে বিশ্বাস করত।</div> <div style="text-align: justify;"> আখেরাতে বিশ্বাস পোষণ করত।</div> <div style="text-align: justify;"> যেমন ইরশাদ হয়েছে :</div> <div style="text-align: justify;"> অর্থাৎ : "আর যদি তুমি তাদেরকে প্রশ্ন কর, কে আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টি করেছেন এবং চাঁদ ও সূর্যকে নিয়োজিত করেছেন? তারা অবশ্যই বলবে, আল্লাহ। তাহলে কোথায় তাদের ফিরানো হচ্ছে?</div> <div style="text-align: justify;"> [সূরাহ্ আনকাবুত; ২৯/৬১]।</div> <div style="text-align: justify;"> অথচ আল্লাহর সাথে তারা অন্য কিছুকে শরীক করত ও কুফরী করত।</div> <div style="text-align: justify;"> যেমন তারা কা‘বা গৃহ ত্বাওয়াফকালে শিরকী তালবিয়াহ পাঠ করত।</div> <div style="text-align: justify;"> যেমন তারা বলত, লাববাইকা লা শারীকা লাকা, ইল্লা শারীকান হুয়া লাক; তামলিকুহু ওয়া মা মালাক (আমি হাযির; তোমার কোন শরীক নেই, কেবল ঐ শরীক যা তোমার জন্য রয়েছে। তুমি যার মালিক এবং যা কিছুর সে মালিক।</div> <div style="text-align: justify;"> গ্রন্থ সূত্রঃ</div> <div style="text-align: justify;"> মুসলিম হা/১১৮৫;</div> <div style="text-align: justify;"> মিশকাত হা/২৫৫৪ ‘ইহরাম ও তালবিয়াহ’ অনুচ্ছেদ;</div> <div style="text-align: justify;"> ইবনু কাছীর, ত্বাবারী, ঐ আয়াতের তাফসীর।</div> <div class="separator" style="clear: both; text-align: justify;"> <a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEj9gBUgxQjee4dauE1UurLfN1vRHRdCitGwZ5lua8OaW1ZluVAjFk_8BnO-vbC2KHe0HrjMdg7tqImQxb09FGFlDb-BZKmgWYVMRfMlKoaEyc6i3IsbOQnRXMziiDxMkeJ4lvCUuJO0usD7/s1600/PicsArt_05-20-11.27.38.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="899" data-original-width="1600" height="179" loading="lazy" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEj9gBUgxQjee4dauE1UurLfN1vRHRdCitGwZ5lua8OaW1ZluVAjFk_8BnO-vbC2KHe0HrjMdg7tqImQxb09FGFlDb-BZKmgWYVMRfMlKoaEyc6i3IsbOQnRXMziiDxMkeJ4lvCUuJO0usD7/s320-rw/PicsArt_05-20-11.27.38.jpg" width="320" /></a></div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> বস্তুতঃ বিগত যুগের ন্যায় বর্তমান যুগেও পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের মূর্তিপুঁজারী মুশরিকেরা বা আহলে কিতাব ইহুদি-খ্রিস্টান মুশরিকেরা শিরকী আক্বীদা ও আমলে অভ্যস্ত।</div> <div style="text-align: justify;"> কাজেই</div> <div style="text-align: justify;">   وَمَا يُؤْمِنُ أَكْثَرُهُمْ بِاللَّهِ إِلَّا وَهُمْ مُشْرِكُونَ (106)</div> <div style="text-align: justify;"> অর্থাৎ : “অনেক মানুষ আল্লাহর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করে না, আবার তারা যেন শিরকও করে।”</div> <div style="text-align: justify;"> [সূরাহ্ ইউসূফ; ১২/১০৬]।</div> <div style="text-align: justify;"> উক্ত অায়াতুল কারিমে উল্লেখিত বাণীর ব্যাখ্যা হচ্ছে নিম্নোক্ত আয়াতুল কারিম</div> <div style="text-align: justify;"> فَإِذَا رَڪِبُواْ فِى ٱلۡفُلۡكِ دَعَوُاْ ٱللَّهَ مُخۡلِصِينَ لَهُ ٱلدِّينَ فَلَمَّا نَجَّٮٰهُمۡ إِلَى ٱلۡبَرِّ إِذَا هُمۡ يُشۡرِكُونَ ٦٥</div> <div style="text-align: justify;"> অর্থাৎ : "(তৎকালের মক্বার মুশরিক ও আহলে কিতাবিদের বৈশিষ্ঠ্য সম্পর্কে বলা হচ্ছে) তারা যখন নৌযানে আরোহন করে, তখন তারা একনিষ্ঠভাবে আল্লাহকে ডাকে। অতঃপর যখন তিনি তাদেরকে স্থলে পৌঁছে দেন, তখনই তারা শিরকে লিপ্ত হয়"।</div> <div style="text-align: justify;"> [সূরাহ্ আনকাবুত; ২৯/৬৫]।</div> <div style="text-align: justify;"> আর</div> <div style="text-align: justify;"> তাদের এরুপ শিরকে লিপ্ত হওয়ার কারণ হিসেবে ইরশাদ হয়েছে :</div> <div style="text-align: justify;"> لِيَكۡفُرُواْ بِمَآ ءَاتَيۡنَـٰهُمۡ وَلِيَتَمَتَّعُواْ‌ۖ فَسَوۡفَ يَعۡلَمُونَ ٦٦</div> <div style="text-align: justify;"> অর্থাৎ : "যাতে আমি তাদেরকে যা দিয়েছি, তা তারা অস্বীকার করতে পারে এবং তারা যেন ভোগ-বিলাসে মত্ত থাকতে পারে। অতঃপর শীঘ্রই তারা জানতে পারবে"।</div> <div style="text-align: justify;"> [সূরাহ্ আনকাবুত; ২৯/৬৬]।</div> <div style="text-align: justify;"> ক্বুরআ'নুল কারিম নাযিলের মাধ্যমে আল্লাহ্ (سبحانه و تعالى) মক্কার মুশরিক ও ইহুদি-খ্রিস্টান আহলে কিতাবিদের শিরিকী বিশ্বাস বা আক্বিদাকে খণ্ডন করে ইসলামী বিশুদ্ধ বিশ্বাসকে প্রতিস্থাপন করেছেন।</div> <div style="text-align: justify;"> মক্কার মুশরিক ও ইহুদি-খ্রিস্টান আহলে কিতাবিদের শিরিকী বিশ্বাস বা আক্বিদার অন্যতম হচ্ছে আল্লাহ্ (سبحانه و تعالى) এঁর জাত-স্বত্ত্বাকে তারা সৃষ্টির সাথে সাদৃশ্যতার বিশ্বাসে বিশ্বাস পোষণ করত।</div> <div style="text-align: justify;"> তাছাড়া</div> <div style="text-align: justify;"> তারা মানবের মাঝে অবধারিত পরষ্পর তাওয়াস্সুল বা উসিলা এবং শাফায়াত বা সুপারিশের বিষয়ে ভূল ধারণা পোষণ করত।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> ক্বুরআ'নুল কারিমে আল্লাহ্ (سبحانه و تعالى) সত্যকে গ্রহণ না করাকে তিরষ্কার করেছেন।</div> <div style="text-align: justify;"> যেমন ইরশাদ হয়েছে :</div> <div style="text-align: justify;"> وَمَنۡ أَظۡلَمُ مِمَّنِ ٱفۡتَرَىٰ عَلَى ٱللَّهِ ڪَذِبًا أَوۡ كَذَّبَ بِٱلۡحَقِّ لَمَّا جَآءَهُ ۥۤ‌ۚ أَلَيۡسَ فِى جَهَنَّمَ مَثۡوً۬ى لِّلۡڪَـٰفِرِينَ ٦٨</div> <div style="text-align: justify;"> অর্থাৎ : "আর সে ব্যক্তির চেয়ে যালিম আর কে, যে আল্লাহর উপর মিথ্যা আরোপ করে অথবা তার নিকট সত্য আসার পর তা অস্বীকার করে? জাহান্নামের মধ্যেই কি কাফিরদের আবাস নয়"?</div> <div style="text-align: justify;"> [সূরাহ্ আনকাবুত; ২৯/৬৮]।</div> <div style="text-align: justify;"> পরের আয়াতেই আল্লাহ্ (سبحانه و تعالى) ইরশাদ করেন :</div> <div style="text-align: justify;"> وَٱلَّذِينَ جَـٰهَدُواْ فِينَا لَنَہۡدِيَنَّہُمۡ سُبُلَنَا‌ۚ وَإِنَّ ٱللَّهَ لَمَعَ ٱلۡمُحۡسِنِينَ ٦٩</div> <div style="text-align: justify;"> অর্থাৎ : "আর যারা আমার পথে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায়, তাদেরকে আমি অবশ্যই আমার পথে পরিচালিত করব। আর নিশ্চয় আল্লাহ সৎকর্মশীলদের সাথেই আছেন"।</div> <div style="text-align: justify;"> [সূরাহ্ আনকাবুত; ২৯/৬৯]।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> সুপ্রিয় পাঠক, এ পর্যায়ে আসুন যুগশ্রেষ্ঠ মুফাসসিরিনে ক্বিরামের তাফসীর থেকে উক্ত আয়াতের তাফসীর দেখে নিইঃ</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> উদ্ধৃতি : আল্লামা কাজী সানাউল্লাহ্ পানিপথী রহ. স্বীয় তাফসীরে মাযহারী সূরাহ্ ইউসূফ ১০৬ এর তাফসীর করা হয়েছে নিম্নরূপ :</div> <div style="text-align: justify;"> অর্থাৎ : "তাদের অধিকাংশ   وَمَا يُؤْمِنُ أَكْثَرُهُمْ بِاللَّهِ إِلَّا وَهُمْ مُشْرِكُون একথার অর্থ, হে রাসূল! দেখুন, এ সকল লোক আল্লাহর প্রতি এক ধরনের বিশ্বাস রাখে। কিন্তু তাদের এ বিশ্বাসের সঙ্গে রয়েছে অংশিবাদীতা। তারা আল্লাহকেও ডাকে আবার পূঁজা করে কল্পিত দেব-দেবীদের। তাদেরকে আপনি জিজ্ঞেস করে দেখুুন, আকাশ, পৃথিবী সৃষ্টি করেছন কে? তারা বলবে, আল্লাহ্।</div> <div style="text-align: justify;"> আরো বলে দেখুন, আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করেন কে? তারা বলবে, আল্লাহ্। এরুপ বলা সত্ত্বেও তারা উপাসনা করবে বৃক্ষের, পাথরের, দেব-দেবীদের।</div> <div style="text-align: justify;"> হযরত ইবনূ আব্বাস রা. বলেন, অংশিবাদিরাও হজ্জ করত। হজ্জের সময় বলত, 'লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক (আমি হাজির, হে আল্লাহ্! আমি হাজির)'।</div> <div style="text-align: justify;"> হজ্জের ইহরাম পরে বৃত্তাকারে কাবা শরিফ প্রদক্ষিণের সময় বলত, 'লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক (আমি হাজির, হে আল্লাহ্! আমি হাজির)', তোমার কোন অংশিদার নেই ঐ সকল দেব-দেবীরা ছাড়া যাদেরকে তুমি তোমার অংশিদার করে নিয়েছ। তুমি তাদের (দেব-দেবীদের) প্রভূ। তারা তোমার প্রভূ নয়।</div> <div style="text-align: justify;"> আতা বলেন, অংশিবাদিরা শিরকমিশ্রিত এরুপ প্রার্থণা করত সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের সময়ে। কিন্তু বিপদআপদের সময় তারা আল্লাহ্ ছাড়া আর কাউকে ডাকত না। যেমন এক আয়াতে বলা হয়েছে,</div> <div style="text-align: justify;"> فَإِذَا رَڪِبُواْ فِى ٱلۡفُلۡكِ دَعَوُاْ ٱللَّهَ مُخۡلِصِينَ لَهُ ٱلدِّينَ فَلَمَّا نَجَّٮٰهُمۡ إِلَى ٱلۡبَرِّ إِذَا هُمۡ يُشۡرِكُونَ ٦٥</div> <div style="text-align: justify;"> অর্থাৎ : "তারা যখন নৌযানে আরোহন করে, তখন তারা একনিষ্ঠভাবে আল্লাহকে ডাকে। অতঃপর যখন তিনি তাদেরকে স্থলে পৌঁছে দেন, তখনই তারা শিরকে লিপ্ত হয়"।</div> <div style="text-align: justify;"> [সূরাহ্ আনকাবুত; ২৯/৬৫]।</div> <div style="text-align: justify;"> উলামায়ে ক্বিরাম রহ. বলেন, 'ইল্লা ওয়াহুম মুশরিকুন (কিন্তু তারা শিরক করে)' কথাটির অর্থ হবে, তারা আল্লাহর বিধানের প্রতিকূলে পথভ্রষ্ট ধর্মনেতাদের বিধানানুসারে চলে। তাদেরকেই বসায় প্রভূ পালনকর্তার আসনে। অথবা আল্লাহর সাথে স্থাপন করে পিতা-পুত্রের সম্পর্ক। তারা বলে, আমরা আল্লাহর সন্তান। কিংবা তারা করে আগুনের উপাসনা।</div> <div style="text-align: justify;"> মুতা'জিলারাও এরুপ অংশীবাদিদের অন্তর্ভূক্ত।</div> <div style="text-align: justify;"> কারণ তারা বলে মানুষ তার কর্মের স্রষ্টা।</div> <div style="text-align: justify;"> কিন্তু তাওহিদের বিশুদ্ধ বিশ্বাস হচ্ছে, আল্লাহ্ পাকই হচ্ছেন এক ও অপ্রতিদ্বন্দ্বী স্রষ্টা। তাকদিরের ভালো-মন্দ আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশ্বাসের অপরিহার্য অঙ্গ।</div> <div style="text-align: justify;"> সূফী সাধকগণই হচ্ছেন বিশুদ্ধ বিশ্বাসী। আর মুতা'জিলারা অবশ্যই পথভ্রষ্ঠ্য।</div> <div style="text-align: justify;"> গ্রন্থ সূত্র :</div> <div style="text-align: justify;"> আল্লামা কাজী সানাউল্লাহ্ পানিপথী রহ. : তাফসীরে মাযহারী; সূরাহ্ ইউসূফ, আয়াত ১০৬।</div> <div style="text-align: justify;"> ______</div> <div style="text-align: justify;"> সম্মানিত পাঠক,</div> <div style="text-align: justify;"> সকল যুগের সকল মুফাসসিরিনে ক্বিরাম স্ব-স্ব তাফসীর উপরোক্ত অনুরুপ তাফসীর পেশ করেছেন। তাঁদের তাফসীরে রয়েছে সাদৃশ্যতা; কেবল কিছুটা উদ্ধৃতির বিভিন্নতা, বাক্যের নান্দনিকতা, উপস্থাপনায় স্বকীয়তা রয়েছে।</div> <div style="text-align: justify;"> ______</div> <div style="text-align: justify;"> তথাকথিত আহলে হাদীস নামক বর্তমান সময়ের ভংকর ফিতনা, ভাইরাস সদৃশ বদমাযহাবীরা সকলেই খারিজী, মুতা'জিলা ফির্কার নব্য গঠিত রুপ।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> কারণ খারিজীরা কোরআনুল কারীমে বর্ণিত অসংখ্য আয়াত যা সরাসরি তখনকার সময়ের কাফির, মুশরিকদের শিরক-কুফরের বিষয়ে নাযিল হয়েছিল তা তৎকালীন মো'মিনদেরকে কাফির, মুশরিক বলার জন্যে ইতিহাসে নিন্দিত কুখ্যাত খারিজী ফির্কা-সম্প্রদায়টি তাদের উত্থানের সময়ে প্রয়োগ করেছিল।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> আর এখন এই নব গঠিত নব্য খারিজী ফির্কাও মু'মিনদের বিষয়ে প্রযোজ্য নয় এরুপ আয়াতকে মু'মিনদের কাফীর মুশরিক বলার জন্যে অপব্যাখ্যামূলক অপচেষ্টা করছে।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> হাদীস শরীফ থেকে জানা যায় যারা কোরআন শরীফের এসব আয়াত অর্থাৎ কাফেরদের বিরোধীতায় নাযিলকৃত আয়াতগুলো যদি কেউ মো'মিনদের উপর প্রয়োগ করার অপচেষ্টা করে তাহলে তারা ইসলাম বহির্ভূত / খারিজী; আর হাদিস শরিফে খারিজীদের জাহান্নামের কুকুর বলা হয়েছে।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> সুতরাং সকল মু'মিন ভাই-বোন সাবধান!</div> <div style="text-align: justify;"> সকলেই এধরনের ফিতনাওয়ালা নামধারী শায়েখদের থেকে দূরে থাকুন।</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> তারা আপনার আমার অজান্তেই আমাদের ঈমান খেয়ে ফেলবে।</div> <div style="text-align: justify;"> আল্লাহ্ সকলের ঈমান-আক্বিদা-আ'মাল হিফাজাত করুন, আমীন।</div> <div style="text-align: justify;"> __________</div> </div>

সুরা ইউসুফের ১০৬ নং আয়াতের ব্যাখ্যা

▆ সূরা ইউসুফ আয়াত ১০৬ এর তাফসীর। এই পবিত্র আয়াতুল কারিম ক্বুরআনুল কারিম নাযীলের সময়কালের কাফীর-মুুশরিকদের ঈমানকে কটাক্ষ করে নাযীলকৃ...

Read more »

ইসলামিক কুরআন হাদিসের ছবি বাংলা (Bangla Quran Hadith Picture)

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhLBxzAI8sLhbIetJRwdaXpSe-qTuYeLWRfvihQi6TAJ_9K6y64B_XV7RkHMVzvdoDbfiDIJvq0fEDo9ybYVZ-MvsR3aW665miDk3eQqzqFCARlyLRXg4K-CTIimGcqpClQ5Jm11DRehHwO/s1600/New+Doc+2019-05-20+20.55.17_15.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="1364" data-original-width="1024" loading="lazy" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhLBxzAI8sLhbIetJRwdaXpSe-qTuYeLWRfvihQi6TAJ_9K6y64B_XV7RkHMVzvdoDbfiDIJvq0fEDo9ybYVZ-MvsR3aW665miDk3eQqzqFCARlyLRXg4K-CTIimGcqpClQ5Jm11DRehHwO/s1600-rw/New+Doc+2019-05-20+20.55.17_15.jpg" /></a></div><br /><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhg8NQIFBp8ha-WwlF5GMSP3-1tjik760IbRzN9eF1ZqEAhLOtJaA161jLpIuhbSaG7QGf3J625fjy5VKHLAaBq1gTZOI6lTQMQwbGj5YrpAG_aLUTQc4MPSB0DtGrC6523mCAQhyphenhyphenJyALnH/s1600/New+Doc+2019-05-20+20.55.17_14.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="1596" data-original-width="1028" loading="lazy" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhg8NQIFBp8ha-WwlF5GMSP3-1tjik760IbRzN9eF1ZqEAhLOtJaA161jLpIuhbSaG7QGf3J625fjy5VKHLAaBq1gTZOI6lTQMQwbGj5YrpAG_aLUTQc4MPSB0DtGrC6523mCAQhyphenhyphenJyALnH/s1600-rw/New+Doc+2019-05-20+20.55.17_14.jpg" /></a></div><br /><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgYe6dZo30xphyeFmuZBshyphenhyphenWHnfcY-c5A1ALdyUJtVht9aT5C-AyyYKQoJa9IJ1hiWibMZuJVpKwr3le91n4dCQmTkI2DcGdSJT4DvxewDvnwJfpn0VEIwtftF-rLsdov_cJ2hT8XRTqkYv/s1600/New+Doc+2019-05-20+20.55.17_13.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="1452" data-original-width="1032" loading="lazy" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgYe6dZo30xphyeFmuZBshyphenhyphenWHnfcY-c5A1ALdyUJtVht9aT5C-AyyYKQoJa9IJ1hiWibMZuJVpKwr3le91n4dCQmTkI2DcGdSJT4DvxewDvnwJfpn0VEIwtftF-rLsdov_cJ2hT8XRTqkYv/s1600-rw/New+Doc+2019-05-20+20.55.17_13.jpg" /></a></div><br /><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjyYDRARExOo7Oifs-7VXmthLCC6BEEXj9mN9xcfSw7N1u9w1QpWt2-_rfk8cLQF0S9E6BXjNQTpTwuXJ0gAtPVOVnOnEb-LhmAVv9ZzMGaXRiVEjXF6FhFGx7OPrRUF4CvUq4qW8vHS45U/s1600/New+Doc+2019-05-20+20.55.17_12.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="1524" data-original-width="1036" loading="lazy" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjyYDRARExOo7Oifs-7VXmthLCC6BEEXj9mN9xcfSw7N1u9w1QpWt2-_rfk8cLQF0S9E6BXjNQTpTwuXJ0gAtPVOVnOnEb-LhmAVv9ZzMGaXRiVEjXF6FhFGx7OPrRUF4CvUq4qW8vHS45U/s1600-rw/New+Doc+2019-05-20+20.55.17_12.jpg" /></a></div><br /><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjgxyoV-XyuMM1BXmOkf_Cyharbb8jb7dcdBK4w-bObEuuWr87OYF-wMzkilB6cpQiAC9_2lY2XS2wEiLQKA6WpoJe5eqAw9QKczGHKI77-HZzspHrpru8XuehecxOBE2NtbxCdWTrLi7Oi/s1600/New+Doc+2019-05-20+20.55.17_10.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="1192" data-original-width="1028" loading="lazy" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjgxyoV-XyuMM1BXmOkf_Cyharbb8jb7dcdBK4w-bObEuuWr87OYF-wMzkilB6cpQiAC9_2lY2XS2wEiLQKA6WpoJe5eqAw9QKczGHKI77-HZzspHrpru8XuehecxOBE2NtbxCdWTrLi7Oi/s1600-rw/New+Doc+2019-05-20+20.55.17_10.jpg" /></a></div><br /><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjiRwltHfoOqUh7gC6-T_3f_lLMmkRhJyi7ZRhaKSrqRB5sSYsurW5GsjfNroywjMvh2-xyn5CNoDyMjt-PE2NB3W5-1mQReQa1WbBbqHx382PPQzPeTcAz_ymqLAAdzMxTbsT6zbDSR98v/s1600/New+Doc+2019-05-20+20.55.17_9.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="1196" data-original-width="1024" loading="lazy" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjiRwltHfoOqUh7gC6-T_3f_lLMmkRhJyi7ZRhaKSrqRB5sSYsurW5GsjfNroywjMvh2-xyn5CNoDyMjt-PE2NB3W5-1mQReQa1WbBbqHx382PPQzPeTcAz_ymqLAAdzMxTbsT6zbDSR98v/s1600-rw/New+Doc+2019-05-20+20.55.17_9.jpg" /></a></div><br /><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEj7G5ivp7BTuIqtsCYB2kduL6_3f9j8zHelhdeSyN3u8Sed8OMRoRGp3uzXmaPcCvYPN2NXUwfsALOWsyJfrlHODH5H_b3kN8wX-zbfXYIjgePP9P8JVH12MERivt2iXdk05nAEUsV1KI6P/s1600/New+Doc+2019-05-20+20.55.17_8.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="1244" data-original-width="1017" loading="lazy" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEj7G5ivp7BTuIqtsCYB2kduL6_3f9j8zHelhdeSyN3u8Sed8OMRoRGp3uzXmaPcCvYPN2NXUwfsALOWsyJfrlHODH5H_b3kN8wX-zbfXYIjgePP9P8JVH12MERivt2iXdk05nAEUsV1KI6P/s1600-rw/New+Doc+2019-05-20+20.55.17_8.jpg" /></a></div><br /><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEh-jyYM7TODGhlDPUgmSiblsKseDOQdq02LTCNotQ4EdQGObpKp4i3keKARhLkYoepfSnwNLzo0jdMjQLshfxNfe01zSUAwqBg2WzS927tyJTxczTOHyeqP19c9upfpAb17dCOtuTZoTPnQ/s1600/New+Doc+2019-05-20+20.55.17_7.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="1596" data-original-width="1032" loading="lazy" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEh-jyYM7TODGhlDPUgmSiblsKseDOQdq02LTCNotQ4EdQGObpKp4i3keKARhLkYoepfSnwNLzo0jdMjQLshfxNfe01zSUAwqBg2WzS927tyJTxczTOHyeqP19c9upfpAb17dCOtuTZoTPnQ/s1600-rw/New+Doc+2019-05-20+20.55.17_7.jpg" /></a></div><br /><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEizO4FPiCsU2-nIbmlgf7EPLfTf2G_4I8wcBFSZ2QoEmJbyLgze33Gsht0eMlKOJ4TmW2VibcDnzgMh20DenDx_Wyni6d5YVY1M-6kdwMk2YPKwee9FBUPv230mio6RqgWoRAVUCBNs0bYp/s1600/New+Doc+2019-05-20+20.55.17_6.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="1600" data-original-width="947" loading="lazy" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEizO4FPiCsU2-nIbmlgf7EPLfTf2G_4I8wcBFSZ2QoEmJbyLgze33Gsht0eMlKOJ4TmW2VibcDnzgMh20DenDx_Wyni6d5YVY1M-6kdwMk2YPKwee9FBUPv230mio6RqgWoRAVUCBNs0bYp/s1600-rw/New+Doc+2019-05-20+20.55.17_6.jpg" /></a></div><br /><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgLBbE8AEPQHiWLbGYo6eyNIDyN6hzhsq3X8tw3HGhPlwmExeaWEEEIm-7VzcUGdbQ0Pvh1l7WAraP9_nP2GxPoOaLi8IlyzkxQJ881QPO4WdpjAAWxbscW3GwI1QqPXjpFEyOB3Ni78bw6/s1600/New+Doc+2019-05-20+20.55.17_5.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="1456" data-original-width="1020" loading="lazy" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgLBbE8AEPQHiWLbGYo6eyNIDyN6hzhsq3X8tw3HGhPlwmExeaWEEEIm-7VzcUGdbQ0Pvh1l7WAraP9_nP2GxPoOaLi8IlyzkxQJ881QPO4WdpjAAWxbscW3GwI1QqPXjpFEyOB3Ni78bw6/s1600-rw/New+Doc+2019-05-20+20.55.17_5.jpg" /></a></div><br /><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjNlwivJFYJM-i6271TMNsWG4TJ1V1TcbGaa-ITuVYhBgmZw4fT-8ODHh83EI1OZL4QSbi9Ds5XnOjoA82Ohjwcg24w_RZbfime4Rz9aaz0LeN_OkbZnMigjpunW9HEGurq0ynPnDOxQl3K/s1600/New+Doc+2019-05-20+20.55.17_4.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="1044" data-original-width="1028" loading="lazy" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjNlwivJFYJM-i6271TMNsWG4TJ1V1TcbGaa-ITuVYhBgmZw4fT-8ODHh83EI1OZL4QSbi9Ds5XnOjoA82Ohjwcg24w_RZbfime4Rz9aaz0LeN_OkbZnMigjpunW9HEGurq0ynPnDOxQl3K/s1600-rw/New+Doc+2019-05-20+20.55.17_4.jpg" /></a></div><br /><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjFFOamavjCL8P1roFSF_SRo2i42yznt5Ev3gOr6e9tmNaY53xQJBaDfl4bhPZMvZtEHq6kd4tR-RK5nXzVyLGsH6Wy8QwK9cBXp9UQYEALK-eQBFMymEUIzVE96XHffaWhDuBQPO82ZrEx/s1600/New+Doc+2019-05-20+20.55.17_3.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="1332" data-original-width="1028" loading="lazy" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjFFOamavjCL8P1roFSF_SRo2i42yznt5Ev3gOr6e9tmNaY53xQJBaDfl4bhPZMvZtEHq6kd4tR-RK5nXzVyLGsH6Wy8QwK9cBXp9UQYEALK-eQBFMymEUIzVE96XHffaWhDuBQPO82ZrEx/s1600-rw/New+Doc+2019-05-20+20.55.17_3.jpg" /></a></div><br /><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjxDw5qbTKw6fDFQAKMYbTAdvbw2vljgdmQ3mAKg9dLAtbV_Kd7WwacBEmmwuRRwv2AHCEJU025E0MWHuN8z5vJtroulhYeeLjYF2s6GXyrFkDmg87cGkiyHLLTsL_4Nf3PCD9eQo6BrPRR/s1600/New+Doc+2019-05-20+20.55.17_2.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="1440" data-original-width="1028" loading="lazy" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjxDw5qbTKw6fDFQAKMYbTAdvbw2vljgdmQ3mAKg9dLAtbV_Kd7WwacBEmmwuRRwv2AHCEJU025E0MWHuN8z5vJtroulhYeeLjYF2s6GXyrFkDmg87cGkiyHLLTsL_4Nf3PCD9eQo6BrPRR/s1600-rw/New+Doc+2019-05-20+20.55.17_2.jpg" /></a></div><br /><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEiL0ncDP6cYZGVaCHAlPiaG1_tpW64F62jXZO0b5pi040kzOFi9ZbuUcmRm-90K9Xf7Dgw4wbEdKjRl7S4EqpKIj3_sOrLEB_K7K5stI0puH9gZGzLGMEhoM6mN5QTQxOUoLVAdRhC1Vf_c/s1600/New+Doc+2019-05-20+20.55.17_1.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="1396" data-original-width="1028" loading="lazy" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEiL0ncDP6cYZGVaCHAlPiaG1_tpW64F62jXZO0b5pi040kzOFi9ZbuUcmRm-90K9Xf7Dgw4wbEdKjRl7S4EqpKIj3_sOrLEB_K7K5stI0puH9gZGzLGMEhoM6mN5QTQxOUoLVAdRhC1Vf_c/s1600-rw/New+Doc+2019-05-20+20.55.17_1.jpg" /></a></div><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjnXdfuNG68XzCB3-HiT4WNgNccT1DRag2JeHKFeVeQMT5BNwmCE1_h4Ny_-rCzMUuyj3kv3JPlSmuEpjWctKGxThuV96TN-fLgJRmRy7rzB0nMbPVsChI1fPCkboDsiEUvHoYKdkw4-w78/s1600/IMG_20190520_205138.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="1178" data-original-width="1027" loading="lazy" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjnXdfuNG68XzCB3-HiT4WNgNccT1DRag2JeHKFeVeQMT5BNwmCE1_h4Ny_-rCzMUuyj3kv3JPlSmuEpjWctKGxThuV96TN-fLgJRmRy7rzB0nMbPVsChI1fPCkboDsiEUvHoYKdkw4-w78/s1600-rw/IMG_20190520_205138.jpg" /></a></div><br /></div>

ইসলামিক কুরআন হাদিসের ছবি বাংলা (Bangla Quran Hadith Picture)

Read more »

খাবার খাওয়ার সুন্নাত সমূহ

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> খানা খাওয়ার সুন্নাত সমূহ<br /> <br /> ১. উভয় হাত কব্জি পর্যন্ত ধোয়া। (আবু দাউদ, হাদীস নং- ৩৭৬১)<br /> <br /> ২. দস্তরখানা বিছিয়ে খানা খাওয়া। (বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৫৩৮৬)<br /> <br /> বি.দ্র.(ক) প্রথমে খানা তথা আল্লাহর নেয়ামতের দিকে মুখাপেক্ষী হয়ে বসা, তারপর দস্তরখানা বিছানো। (বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৫৩৮৫, ৫৩৯৯)<br /> <br /> (খ) দস্তরখানা খুব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা উচিত। এর উপর ঝুটা (উচ্ছিষ্ট খাবার) হাড্ডি ইত্যাদি না ফেলা বা তাতে পা না রাখা উচিত। (মুসলিম হাদীস নং- ২০৩৩)<br /> <br /> ৩. (উঁচু স্বরে) বিসমিল্লাহ পড়া।(বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৫৩৭৬)<br /> <br /> ৪. ডান হাত দিয়ে খাওয়া। (বুখারী, হাদীস নং- ৫৩৭৬/ মুসলিম, হাদীস নং- ২০২০)<br /> <br /> ৫. খানার মজলিসে বয়সের দিক দিয়ে যিনি বড় এবং বুযুর্গ, তাঁর দ্বারা খানা শুরু করানো। (মুসলিম, হাদীস নং- ২০১৭)<br /> <br /> ৬. খাদ্য এক ধরনের হলে নিজের সম্মুখ হতে খাওয়া।(বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৫৩৭৬)<br /> <br /> ৭.খাদ্যের কোন অংশ পড়ে গেলে উঠিয়ে (প্রয়োজনে পরিষ্কার করে) খাওয়া।(মুসলিম, হাদীস নং- ২০৩৩)<br /> <br /> ৮. হেলান দিয়ে বসে না খাওয়া।(বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৫৩৯৮)<br /> <br /> ৯. খাদ্যের ত্রুটি বের না করা।(বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৫৪০৯)<br /> <br /> ১০. জুতা পরিহিত থাকলে জুতা খুলে খানা খাওয়া।(মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদীস নং- ৭১২৯)<br /> <br /> ১১. খানার সময় তিনভাবে বসা যায়।<br /> <br /> ক. উভয় হাঁটু উঠিয়ে এবং পদ যুগলে ভর করে। (মুসলিম, হাদীস নং- ২০৪৪)<br /> <br /> খ. এক হাঁটু উঠিয়ে এবং অপর হাঁটু বিছিয়ে। (শরহুস্‌ সুন্নাহ, হাদীস নং- ৩৫৭৭)<br /> <br /> গ. উভয় হাঁটু বিছিয়ে অর্থাৎ নামাযে বসার ন্যায় বসে সামান্য সম্মুখ পানে ঝুঁকে আহার করা। (আবু দাউদ, হাদীস নং- ৩৭৭৩)<br /> <br /> বি.দ্র. উযরের কারণে আসন দিয়ে বসারও অনুমতি আছে।(সূরা নূর, আয়াত-৬১/ আল ইতহাফ, ৫ : ৪৮০)<br /> <br /> ১২. আহার গ্রহণ শেষে খানার পাত্রসমূহ আঙ্গুল দ্বারা ভালভাবে চেটে পরিস্কার করে খাওয়া। এতে খাবারের পাত্রসমূহ আহারকারীর জন্য মাগফিরাত কামনায় মহান আল্লাহর দরবারে দু‘আ করে। হাতের আঙ্গুলসমূহ যথাক্রমে মধ্যমা, শাহাদাত, বৃদ্ধা চেটে খাওয়া।(মুসলিম, হাদীস নং- ২০৩৩/ তিরমিযী, হাদীস নং- ১৮০৪/ তাবরানী আউসাত, হাদীস নং- ১৬৪৯)<br /> <br /> ১৩. খানা শেষে এই দু‘আ পড়াঃ<br /> <br /> الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِى أَطْعَمَنَا وَسَقَانَا وَجَعَلَنَا مُسْلِمِينَ.<br /> (আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৮৫০)<br /> <br /> ১৪. খানা শেষে আগে দস্তরখানা উঠিয়ে তারপর নিজে উঠা। (ইবনে মাজাহ, হাদীস নং- ৩২৯৫)<br /> <br /> ১৫. দস্তরখানা ও অবশিষ্ট খানা উঠানোর সময় এই দু‘আ পড়াঃ<br /> <br /> الْحَمْدُ لِلَّهِ حَمْدًا كَثِيرًا طَيِّبًا مُبَارَكًا فِيهِ غَيْرَ مَكْفِىٍّ وَلاَ مُوَدَّعٍ وَلاَ مُسْتَغْنًى عَنْهُ رَبَّنَا.<br /> (বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৫৪৫৮)<br /> <br /> ১৬. খানা খেয়ে উভয় হাত ধোয়া।(তিরমিযী, হাদীস নং- ১৮৪৬)<br /> <br /> ১৭. কুলি করে মুখ পরিষ্কার করা।(বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৫৪৫৫)<br /> <br /> ১৮. খানার শুরুতে বিসমিল্লাহ পড়তে ভুলে গেলে স্মরণ হওয়ার পর খানার মাঝে এই দু‘আ পড়াঃ<br /> <br /> بِسْمِ اللهِ اَوَّلَهُ وَآخِرَهْ<br /> (আবু দাউদ, হাদীস নং- ৩৭৬৭)<br /> <br /> ১৯. কারো মেহমান হয়ে খানা খেলে প্রথমে আল্লাহর শুকর আদায়ে ১৩নং এ বর্ণিত দু‘আ পড়ার পর মেযবানের শুকরিয়া আদায়ে এই দু‘আ পড়াঃ (মুসলিম, হাদীস নং- ২০৫৫)<br /> <br /> اَللّهُمَّ اَطْعِمْ مَنْ اَطْعَمَنِيْ وَإسْقِ مَنْ سَقَانِيْ.      <br /> <br /> হাদীসে মেযবানকে শুনিয়ে এ দু‘আটি পড়তেও উৎসাহিত করা হয়েছেঃ<br /> <br /> أَكَلَ طَعَامَكُمُ الأَبْرَارُ ، وَصَلَّتْ عَلَيْكُمُ الْمَلاَئِكَةُ ، وَأَفْطَرَ عِنْدَكُمُ الصَّائِمُوْنْ .<br /> (আবু দাউদ, হাদীস নং- ৩৮৫৪)<br /> <br /> ২০. খানা খাওয়ার সময় একেবারে চুপ থাকা মাকরূহ। এজন্য খাওয়ার ফাঁকে ফাঁকে পরস্পরে ভাল কথা আলোচনা করা। কিন্তু যে ধরনের কথা বা সংবাদে দুশ্চিন্তা বা ঘৃণার উদ্রেক হতে পারে, তা খানার সময় বলা অনুচিত।(বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৫৩৭৬)</div>

খাবার খাওয়ার সুন্নাত সমূহ

খানা খাওয়ার সুন্নাত সমূহ ১. উভয় হাত কব্জি পর্যন্ত ধোয়া। (আবু দাউদ, হাদীস নং- ৩৭৬১) ২. দস্তরখানা বিছিয়ে খানা খাওয়া। (বুখারী শরীফ, হাদীস ...

Read more »

যাকাত বিষয়ক মাসায়েল পর্ব - ১

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> যাকাত বিষয়ক মাসায়েল পর্ব - ১<br /> (রমাদান অ্যাপ থেকে সংগৃহীত)<br /> সদকাতুল ফিতরঃ<br /> সদাকায়ে ফিতর সম্পর্কিত হাদীসগুলো পর্যালোচনা করলে এ বিষয়ে মোট পাঁচ প্রকার খাদ্যের বর্ণনা পাওয়া যায়: যব, খেজুর, পনির, কিসমিস ও গম। এ পাঁচ প্রকারের মধ্যে যব, খেজুর, পনির ও কিসমিস দ্বারা সদকা ফিতর আদায় করতে চাইলে প্রত্যেকের জন্য এক সা’ দিতে হবে। আর গম দ্বারা আদায় করতে চাইলে আধা ‘সা’ দিতে হবে। এটা হল ওজনের দিক দিয়ে তফাত। আর মূল্যের দিক থেকে তো পার্থক্য রয়েছেই। যেমন-<br /> (ক) আজওয়া (উন্নতমানের) খেজুরের মূল্য প্রতি কেজি ১০০০/- টাকা হলে একজনের সদকায়ে ফিতর দাঁড়ায় ৩২৫৬/- তিন হাজার দুই শত ছাপ্পান্ন টাকা।<br /> (খ) মধ্যম ধরনের খেজুর যার মূল্য প্রতি কেজি ৩০০/- টাকা হলে একজনের সদকায়ে ফিতর দাঁড়ায় ৯৭৭/- নয়শত সাতাত্তর টাকা।<br /> (গ) কিসমিস প্রতি কেজি ২৩০/- টাকা করে হলে একজনের সদকায়ে ফিতর দাঁড়ায় ৭৪৮/- (সাত শত আটচল্লিশ) টাকা।<br /> ঘ) পনির প্রতি কেজি ৫০০/- টাকা করে ধরা হলে একজনের সদকায়ে ফিতর দাঁড়ায় ১৬২৮/- (এক হাজার ছয় শত আটাশ) টাকা।<br /> ঙ) গম প্রতি কেজি ৩৫/- টাকা হিসাবে ধরা হলে একজনের সদকায়ে ফিতর দাঁড়ায় ৫৭ টাকা।<br /> হাদীসে এ ৫টি দ্রব্যের যেকোনোটি দ্বারা ফিতরা আদায়ের সুযোগ দেওয়া হয়েছে যেন মুসলমানগণ নিজ নিজ সামর্থ্য ও সুবিধা অনুযায়ী এর যেকোনো ১টি দ্বারা তা আদায় করতে পারে। এখন লক্ষণীয় বিষয় হল, সকল শ্রেণীর লোক যদি সবচেয়ে নিম্ন মূল্য-মানের দ্রব্য দিয়েই নিয়মিত সদকা ফিতর আদায় করে তবে হাদীসে বর্ণিত অন্য চারটি দ্রব্যের হিসেবে ফিতরা আদায়ের উপর আমল করবে কে? আসলে এক্ষেত্রে হওয়া উচিত ছিল এমন যে, যে ব্যক্তি উন্নতমানের আজওয়া খেজুরের হিসাবে সদকা ফিতর আদায় করার সামর্থ্য রাখে সে তা দিয়েই আদায় করবে।<br /> যার সাধ্য পনিরের হিসাবে দেওয়ার সে তাই দিবে। এর চেয়ে কম আয়ের লোকেরা খেজুর বা কিসমিসের হিসাব গ্রহণ করতে পারে। আর যার জন্য এগুলোর হিসাবে দেওয়া কঠিন সে আদায় করবে গম দ্বারা। এটিই্ উত্তম নিয়ম। এ নিয়মই ছিল নবী, সাহাবা-তাবেঈন ও তাবে তাবেঈনের স্বর্ণযুগে। এ পর্যন্ত কোথাও দুর্বল সূত্রে একটি প্রমাণ মেলেনি যে, স্বর্ণযুগের কোনো সময়ে সব শ্রেণীর সম্পদশালী সর্বনিম্ন মূল্যের দ্রব্য দ্বারা সদকা ফিতর আদায় করেছেন। এখানে এ সংক্রান্ত কিছু বরাত পেশ করা হচ্ছে।<br /> হাদীসঃ<br /> নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সর্বোত্তম দান সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি ইরশাদ করেন-<br /> أغلاها ثمنا وأنفسها عند أهلها<br /> ‘দাতার নিকট যা সর্বোৎকৃষ্ট এবং যার মূল্যমান সবচেয়ে বেশি’। -সহীহ বুখারী, কিতাবুল ইতক ৩/১৮৮; সহীহ মুসলিম, কিতাবুল ঈমান বাব আফযালুল আমল ১/৬৯<br /> সাহাবায়ে কেরাম-এর আমলঃ<br /> ক) হযরত আবু সাঈদ খুদরী রা. বলেন,<br /> كنا نخرج زكاة الفطر صاعًا من طعام أو صاعا من شعير أو صاعا من تمر أو صاعا من أقط أو صاعا من زبيب وذلك من صاع النبي صلى الله عليه وسلم.<br /> আমরা সদকা ফিতর আদায় করতাম এক ‘সা’ খাদ্য দ্বারা অথবা এক ‘সা’ যব অথবা এক ‘সা’ খেজুর, কিংবা এক ‘সা’ পনির বা এক ‘সা’ কিসমিস দ্বারা। আর এক ‘সা’-এর ওজন ছিল নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ‘সা’ অনুযায়ী। -মুয়াত্তা মালেক পৃ.১২৪; আল ইসতিযকার, হাদীস ৫৮৯, ৯/৩৪৮<br /> এ হাদীসে রাসূলের যুগে এবং সাহাবাদের আমলে সদকা ফিতর কোন কোন বস্ত্ত দ্বারা আদায় করা হত তার সুস্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে।<br /> (খ) হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. সারা জীবন খেজুর দ্বারাই সদকা ফিতর আদায় করেছেন। তিনি একবার মাত্র যব দ্বারা আদায় করেছেন।<br /> -আলইসতিযকার, হাদীস নং ৫৯০,৯/৩৫৪<br /> ইবনে কুদামা রা.আবু মিজলাযের বর্ণনা উল্লেখ করে বলেন, এ বর্ণনা দ্বারা বোঝা যায় যে, সাহাবায়ে কেরাম অধিকাংশই যেহেতু খেজুর দ্বারা ফিতরা আদায় করতেন তাই ইবনে ওমর রা. সাহাবাদের তরীকা অবলম্বন করতে সারা জীবন খেজুর দ্বারাই আদায় করেছেন। এ প্রসঙ্গে ইবনে ওমরের ভাষ্য হল-<br /> إن أصحابي سلكوا طريقا وأنا أحب أن أسلكه.<br /> ‘সাহাবীগণ যে পথে চলেছেন আমিও সে পথেই চলতে আগ্রহী।’<br /> এবার দেখা যাক মাযহাবের ইমামগণ উত্তম সদকা ফিতর হিসেবে কোনটিকে গ্রহণ করেছেন।<br /> উত্তম সদকা ফিতরঃ<br /> ইমাম শাফেয়ীর মতে উত্তম হল হাদীসে বর্ণিত বস্ত্তর মধ্যে সর্বোৎকৃষ্ট ও সর্বোচ্চ মূল্যের দ্রব্য দ্বারা সদকা দেওয়া। অন্য সকল ইমামের মতও এমনই।<br /> ইমাম মালিক রাহ.-এর নিকট খেজুরের মধ্যে সবচেয়ে উন্নত খেজুর ‘আজওয়া’ খেজুর দেওয়া উত্তম। আজওয়া খেজুরের ন্যূনতম মূল্য ১০০০-১২০০ টাকা প্রতি কেজি।<br /> ইমাম আহমদ রাহ.-এর নিকট সাহাবায়ে কেরামের অনুসরণে খেজুর দ্বারা ফিতরা আদায় করা ভালো। -আলমুগনী ৪/২১৯; আওজাযুল মাসালিক ৬/১২৮<br /> ইমাম আবু হানীফা রাহ.-এর নিকটেও অধিক মূল্যের দ্রব্যের দ্বারা ফিতরা আদায় করা ভালো। অর্থাৎ যা দ্বারা আদায় করলে গরীবের বেশি উপকার হয় সেটাই উত্তম ফিতরা।<br /> সাহাবায়ে কেরামের যুগেঃ<br /> আধা ‘সা’ গমের মূল্য এক সা খেজুরের সমপরিমাণ ছিল। নবী করীম সাল্লাল্লাহু্ আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে মদীনাতে গমের ফলন ছিল না বললেই চলে। পরবর্তীতে হযরত মুআবিয়া রা.-এর যুগে ফলন বৃদ্ধি পেলেও মূল্য ছিল সবচেয়ে বেশি। একাধিক বর্ণনায় এসেছে যে, সেকালে আধা ‘সা’ গমের মূল্য এক সা খেজুরের সমপরিমাণ ছিল।<br /> فلما كان زمن معاوية وكثرت الحنطة جُعِلَ نصف صاعٍ منها مثل صاع من تلك الأشياء.<br /> হযরত মুআবিয়া রা.-এর যুগে গমের ফলন বৃদ্ধি পেলে আধা ‘সা’ গমকে সদকা ফিতরের অন্যন্য খাদ্যদ্রব্যের এক ‘সা’র মতো গণ্য করা হত। -আলইসতিযকার ৯/৩৫৫<br /> ইবনুল মুনযির বলেন-<br /> فلما كثر في زمن الصحابة رأووا أن نصف صاع منه يقوم مقام صاع من شعير.<br /> সাহাবীদের যুগে যখন গম সহজলভ্য হল তখন তারা আধা ‘সা’ গমকে এক ‘সা’ যবের সমতুল্য গণ্য করলেন। -ফাতহুল মুলহিম ৩/১৫; আওজাযুল মাসালিক ৬/১৩<br /> তাহলে বুঝা গেল য, হযরত মুআবিয়া রা.-এর যুগে গম দ্বারা সদকা ফিতর আদায়ের প্রচলন বেড়েছিল। এর কারণ হল যে, তখন গমই ছিল সর্বোৎকৃষ্ট ও সর্বোচ্চ মূল্যমানের খাদ্য। এ সময় হযরত ইবনে ওমর সাহাবাদের অনুকরণে খেজুর দ্বারাই সদকা ফিতর আদায় করতেন। তখন তাঁকে আবু মিজলায রাহ. বললেন-<br /> إن الله قد أوسع والبر أفضل من التمر<br /> ‘আল্লাহ তাআলা তো এখন সামর্থ্য দিয়েছেন। আর গম খেজুরের চেয়ে অধিক উত্তম। অর্থাৎ আপনার সামর্থ্য রয়েছে বেশি মূল্যের বস্ত্ত সদকা করার। তবুও কেন খেজুর দ্বারা তা আদায় করছেন। উত্তরে তিনি বলেছিলেন, আমি সাহাবাদের অনুকরণে এমন করছি। যাক আমাদের কথা ছিল, সাহাবায়ে কেরাম গম দ্বারা এজন্যই সদকা ফিতর আদায় করতেন যে, এর মূল্য সবচেয়ে বেশি ছিল। হাদীসে পাঁচ প্রকারের খাদ্য দ্রব্যের মধ্যে বর্তমানে গমের মূল্য সবচেয়ে কম। তাহলে এ যুগে সর্ব শ্রেণীর জন্য এমনকি সম্পদশালীদের জন্যও শুধুই গম বা তার মূল্য দ্বারা সদকা ফিতর আদায় করা কী করে সমীচীন হতে পারে?<br /> বড়ই আশ্চর্য! পুরো দেশের সব শ্রেণীর লোক বছর বছর ধরে সর্বনিম্ন মূল্যের হিসেবে ফিতরা আদায় করে আসছে। মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত সকলেই ফিতরা দিচ্ছে একই হিসাবে জনপ্রতি ৫৫/৬০ টাকা করে। মনে হয় সকলে ভুলেই গেছে যে, গম হচ্ছে ফিতরার ৫টি দ্রব্যের একটি (যা বর্তমানে সর্বনিম্ন মূল্যের)। সুতরাং আমরা এদেশের ফিতরা আদায়কারী ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের প্রতি আহবান জানাচ্ছি তারা যেন যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী হাদীসে বর্ণিত দ্রব্যগুলোর মধ্যে তুলনামূলক উচ্চমূল্যের দ্রব্যটির হিসাবে ফিতরা আদায় করেন। পনির, কিসমিস, খেজুর কোনোটির হিসাব যেন বাদ না পড়ে। ধনীশ্রেণীর মুসলিম ভাইদের জন্য পনির বা কিসমিসের হিসাবে ফিতরা আদায় করা কোনো সমস্যাই নয়। যেখানে রমযানে ইফতার পার্টির নামে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করা হয়, ঈদ শপিং করা হয় অঢেল টাকার, সেখানে কয়েক হাজার টাকার ফিতরা তো কোনো হিসাবেই পড়ে না। যদি এমনটি করা হয় তবে যেমনিভাবে পুরো হাদীসের উপর মুসলমানদের আমল প্রতিষ্ঠিত হবে এবং একটি হারিয়ে যাওয়া সুন্নত যিন্দা করা হবে, তেমনি এ পদ্ধতি দারিদ্র্যবিমোচনে অনেক অবদান রাখবে। গরীব-দুঃখীগণের মুখেও হাসি ফুটে উঠবে ঈদের পবিত্র দিনে।<br /> আরেকটি আবেদন ইসলামিক ফাউন্ডেশন, দেশের সম্মানিত মুফতীগণ, মাশায়েখ হযরাত ও দারুল ইফতাগুলোর কাছে, তারা যেন সদকাতুল ফিতর এর পরিমাণ ঘোষণা দেওয়ার সময় হাদীসে বর্ণিত সকল দ্রব্যের হিসাবেই পৃথক পৃথকভাবে বলে দেন এবং মানুষকে যথাসম্ভব উচ্চমূল্যের ফেতরা আদায়ের প্রতি উৎসাহিত করেন।<br /> যাদের উপর যাকাত ফরয হয়ঃ<br /> ১. আগেই বলা হয়েছে যে, যাকাত ইসলামের একটি অপরিহার্য ইবাদত। এজন্য শুধু মুসলিমগণই যাকাত আদায়ের জন্য সম্বোধিত হন। সুস্থমস্তিষ্ক, আযাদ, বালেগ মুসলমান নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে যাকাত আদায় করা তার ওপর ফরয হয়ে যায়।<br /> -আদ্দুররুল মুখতার ২/২৫৯ বাদায়েউস সানায়ে ২/৭৯,৮২<br /> কাফির যেহেতু ইবাদতের যোগ্যতা রাখে না তাই তাদের ওপর যাকাত আসে না।<br /> এছাড়া অসুস্থমস্তিষ্ক মুসলিমের ওপর এবং নাবালেগ শিশু-কিশোরের ওপরও যাকাত ফরয নয়। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা ৬/৪৬১-৪৬২; -আদ্দুররুল মুখতার ২/২৫৯ -আদ্দুররুল মুখতার ২/২৫৮<br /> যেসব জিনিসের উপর যাকাত ফরয হয়ঃ<br /> ২. সব ধরনের সম্পদ ও সামগ্রীর ওপর যাকাত ফরয হয় না। শুধু সোনা-রুপা, টাকা-পয়সা, পালিত পশু (নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী) এবং ব্যবসার পণ্যে যাকাত ফরয হয়।<br /> ৩. সোনা-রুপার অলংকার সর্বদা বা কালেভদ্রে ব্যবহৃত হোক কিংবা একেবারেই ব্যবহার না করা হোক সর্বাবস্থাতেই তার যাকাত দিতে হবে।<br /> -সুনানে আবু দাউদ ১/২৫৫; সুনানে নাসায়ী হাদীস ২২৫৮; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ৭০৫৪-৭০৬১,৭০৬৩-৭০৬৫; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা হাদীস ৯৯৭৪;৬/৪৬৯-৪৭১<br /> ৪. অলংকার ছাড়া সোনা-রুপার অন্যান্য সামগ্রীর ওপরও যাকাত ফরয হয়।<br /> -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস ৭০৬১; ৭০৬৬; ৭১০২<br /> ৫. জামা-কাপড় কিংবা অন্য কোনো সামগ্রীতে সোনা-রুপার কারু কাজ করা থাকলে তাও যাকাতের হিসাবের অন্তর্ভুক্ত হবে এবং যে পরিমাণ সোনা-রুপা কারুকাজে লেগেছে অন্যান্য যাকাতযোগ্য সম্পদের সঙ্গে তারও যাকাত দিতে হবে।<br /> -মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক হাদীস ৭০৬৬; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস ১০৬৪৮, ১০৬৪৯, ১০৬৫১<br /> সোনা-রুপা ছাড়া অন্য কোনো ধাতুর অলংকার ইত্যাদির উপর যাকাত ফরয নয়। তদ্রূপ হিরা, মণি-মুক্তা ইত্যাদি মূল্যবান পাথর ব্যবসাপণ্য না হলে সেগুলোতেও যাকাত ফরয নয়।<br /> -কিতাবুল আছার মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ৭০৬১-৭০৬৪; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা ৬/৪৪৭-৪৪৮<br /> ৬. মৌলিক প্রয়োজন থেকে উদ্ধৃত্ত টাকা-পয়সা নিসাব পরিমাণ হলে এবং এক বছর স্থায়ী হলে বছর শেষে তার যাকাত আদায় করা ফরয হয়।<br /> -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ৭০৯১,৭০৯২<br /> তদ্রূপ ব্যাংক ব্যালেন্স, ফিক্সড ডিপোজিট, বন্ড, সার্টিফিকেট ইত্যাদিও নগদ টাকা-পয়সার মতোই। এসবের ওপরও যাকাত ফরয হয়।<br /> ৭. টাকা-পয়সা ব্যবসায় না খাটিয়ে এমনি রেখে দিলেও তাতে যাকাত ফরয হয়। -আদ্দুররুল মুখতার ২/২৬৭; -আদ্দুররুল মুখতার ২/২৬২,৩০০<br /> ৮. হজ্বের উদ্দেশ্যে কিংবা ঘর-বাড়ি নির্মাণ, ছেলে-মেয়ের বিয়ে-শাদি ইত্যাদি প্রয়োজনের জন্য যে অর্থ সঞ্চয় করা হচ্ছে তা-ও এর ব্যতিক্রম নয়। সঞ্চিত অর্থ পৃথকভাবে কিংবা অন্যান্য যাকাতযোগ্য সম্পদের সাথে যুক্ত হয়ে নিসাব পরিমাণ হলে এবং নিসাবের ওপর এক বছর অতিবাহিত হলে যাকাত ফরয হবে। বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই তা যদি খরচ হয়ে যায় তাহলে যাকাত ফরয হবে না।<br /> -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক হাদীস ৭০৩২; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা হাদীস ১০৩২৫<br /> ৯. দোকান-পাটে যা কিছু বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে রাখা থাকে তা বাণিজ্য-দ্রব্য। এর মূল্য নিসাব পরিমাণ হলে যাকাত আদায় করা ফরয।<br /> -সুনানে আবু দাউদ ১/২১৮; সুনানে কুবরা বায়হাকী ৪/১৫৭; মুয়াত্তা ইমাম মালেক পৃ ১০৮; মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক হাদীস ৭১০৩,৭১০৪; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস ১০৫৫৭, ১০৫৬০, ১০৫৬৩<br /> ১০. ব্যবসার নিয়তে কোনো কিছু ক্রয় করলে তা স্থাবর সম্পত্তি হোক যেমন জমি-জমা, ফ্ল্যাট কিংবা অস্থাবর যেমন মুদী সামগ্রী, কাপড়-চোপড়, অলংকার, নির্মাণ সামগ্রী, গাড়ি, ফার্নিচার, ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী, হার্ডওয়ার সামগ্রী, বইপুস্তক ইত্যাদি, তা বাণিজ্য-দ্রব্য বলে গণ্য হবে এবং মূল্য নিসাব পরিমাণ হলে যাকাত দেওয়া ফরয হবে।<br /> -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক হাদীস ৭১০৩,৭১০৪<br /> নিসাবের বিবরণঃ<br /> ১১. স্বর্ণের ক্ষেত্রে যাকাতের নিসাব হল বিশ মিসকাল।<br /> -সুনানে আবু দাউদ ১/২২১; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক হাদীস ৭০৭৭, ৭০৮২<br /> আধুনিক হিসাবে সাড়ে সাত ভরি।<br /> ১২. রুপার ক্ষেত্রে নিসাব হল দু’শ দিরহাম।<br /> -সহীহ বুখারী, হাদীস ১৪৪৭; সহীহ মুসলিম, হাদীস ৯৭৯<br /> আধুনিক হিসাবে সাড়ে বায়ান্ন তোলা। এ পরিমাণ সোনা-রুপা থাকলে যাকাত দিতে হবে।<br /> ১৩. প্রয়োজনের উদ্ধৃত্ত টাকা-পয়সা বা বাণিজ্য-দ্রব্যের মূল্য যদি সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার সমপরিমাণ হয় তাহলে যাকাতের নিসাব পূর্ণ হয়েছে ধরা হবে এবং এর যাকাত দিতে হবে।<br /> -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক হাদীস ৬৭৯৭,৬৮৫১; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা হাদীস ৯৯৩৭<br /> ১৪. যদি সোনা-রুপা, টাকা-পয়সা কিংবা বাণিজ্য-দ্রব্য- এগুলোর কোনোটি পৃথকভাবে নিসাব পরিমাণ না থাকে, কিন্তু এসবের একাধিক সামগ্রী এ পরিমাণ রয়েছে, যা একত্র করলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার সমমূল্য বা তার চেয়ে বেশি হয় তাহলে এক্ষেত্রে সকল সম্পদ হিসাব করে যাকাত দিতে হবে।<br /> -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক হাদীস ৭০৬৬,৭০৮১; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা ৬/৩৯৩<br /> কিছু দৃষ্টান্ত ক) কারো কাছে নিসাবের কম সোনা এবং নিসাবের কম রুপা আছে, কিন্তু যে পরিমাণ সোনা আছে তার মূল্য মজুদ রুপার সাথে যোগ করলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার সমমূল্য হয় বা তার চেয়ে বেশি হয়। তাহলে সোনা-রুপার মূল্য হিসাব করে যাকাত আদায় করতে হবে।<br /> -মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা হাদীস ৯৯৭৯,১০৬৪৯; রদ্দুল মুহতার ২/৩০৩<br /> খ) কারো কাছে কিছু স্বর্ণালংকার আর কিছু উদ্বৃত্ত টাকা কিংবা বাণিজ্যদ্রব্য আছে যা একত্র করলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার সমমূল্য বা তার চেয়ে বেশি হয়। এর যাকাত দিতে হবে।<br /> আদ্দুররুল মুখতার ২/৩০৩<br /> গ) কারো কাছে নিসাবের কম রুপা আর কিছু উদ্বৃত্ত টাকা বা বাণিজ্যদ্রব্য আছে যা একত্র করলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার সমমূল্য বা তার চেয়ে বেশি হয়। এরও যাকাত দিতে হবে।<br /> -আদ্দুররুল মুখতার ২/৩০৩<br /> ১৫. নিসাবের অতিরিক্ত সোনা-রুপা, টাকা-পয়সা ও বাণিজ্যদ্রব্যের যাকাত আনুপাতিক হারে দিতে হবে। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক,হাদিস ৭০৩২, ৭০৭৪, ৭০৭৫, ৭০৭৯, ৭০৮০; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা ৬/৩৯০; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৯৯<br /> <span style="background-color: white; color: #5e5853; font-family: "lora" , "baskerville" , "georgia" , "times" , serif; font-size: 16px;">(গুগলে প্লেতে যান,</span><br /> <span style="background-color: white; color: #5e5853; font-family: "lora" , "baskerville" , "georgia" , "times" , serif; font-size: 16px;">সার্চ করুন ” রমাদান Sunni pedia” আর ডাউনলোড করুন রমাদান অ্যাপটি। জানাবেন আপনার ভালো লাগা না লাগা।)</span></div>

যাকাত বিষয়ক মাসায়েল পর্ব - ১

যাকাত বিষয়ক মাসায়েল পর্ব - ১ (রমাদান অ্যাপ থেকে সংগৃহীত) সদকাতুল ফিতরঃ সদাকায়ে ফিতর সম্পর্কিত হাদীসগুলো পর্যালোচনা করলে এ বিষয়ে মোট পা...

Read more »

সহি হাদিসে নাই,,?

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> "সহি হাদিসে নাই,?<br /> [লেখক:: আরিফ ওয়াকিজ]<br /> <div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"> <a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhaoLJnDMj6V170AiQdm_P5vPN95J8ORtGqD9FVwQX8V3msy0dEhYWvun-xLLzuMljAsNnJV0M2NwvlFSVUJPLq3dfBrgoY-ywnBYBt-Pws5Y2rpvbpFrBkVCjMMpMJK_J0EJCBbCGJHQDz/s1600/photomirror_201952002011609.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="1600" data-original-width="1600" height="320" loading="lazy" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhaoLJnDMj6V170AiQdm_P5vPN95J8ORtGqD9FVwQX8V3msy0dEhYWvun-xLLzuMljAsNnJV0M2NwvlFSVUJPLq3dfBrgoY-ywnBYBt-Pws5Y2rpvbpFrBkVCjMMpMJK_J0EJCBbCGJHQDz/s320-rw/photomirror_201952002011609.jpg" width="320" /></a></div> <br /> কিচ্ছা কাহিনির দিন শেষ<br /> সহি হাদিসের নিবো ভেশ,<br /> কোরআন হাদিস গ্রহন করো<br /> সুন্নীয়তের জীবন গড়ো।<br /> <br /> ইজমা কিয়াস মানি মোরা<br /> দলিল মোদের হাদিস,<br /> সঠিক দলিল থেকেও কেনো<br /> জয়িফ সনদ নিস?<br /> <br /> রজবীয়া হেদায়া শামী<br /> সবি মোরা মানি,<br /> যুগ জামানা সহি হাদিসের<br /> তাও মোরা জানি।<br /> <br /> আবার চলো ফিরে যাই<br /> নববীর হাদিসের পানে,<br /> সঠিক পথে ফিরবে সবাই<br /> দৃঢ়তা পাবে ঈমানে।<br /> <br /> হানাফি শাফি মালেক হাম্বলী<br /> সবি সঠিক ভিত্তি,<br /> কোরআন সুন্নায় দাও গো ভাই<br /> গ্রহন যোগ্য যুক্তি।<br /> <br /> টস টসিয়ে গালির ঝুড়ি<br /> দিচ্ছো কেনো ভাই,<br /> কুমন্ত্রণার ব্যাখা বুঝি মোর<br /> সহি হাদিসে নাই?<br /> <br /> আমি সঠিক সরল পথের<br /> দলিল মোদের শান,<br /> মূর্খতার জবাব দিবো সদা<br /> বুক করে টান টান।<br /> <br /> হেকমতে কাজ করতে হবে<br /> পীরে বাঙ্গাল কহেন,<br /> খেদমতে আজ কত জনাব<br /> হেকমত গ্রহন করেন?<br /> <br /> ওয়াকিজ মূর্খ জাহিল মানব<br /> আছে শিক্ষার অভাব,<br /> নবী প্রেমের খাতিরে আজি<br /> নিচ্ছি কিছু ভাব।</div>

সহি হাদিসে নাই,,?

"সহি হাদিসে নাই,? [লেখক:: আরিফ ওয়াকিজ] কিচ্ছা কাহিনির দিন শেষ সহি হাদিসের নিবো ভেশ, কোরআন হাদিস গ্রহন করো সুন্নীয়তের জীবন গড়ো।...

Read more »