ভুল দৃষ্টিভঙ্গি আর অপবাদ, নিজের অদৃষ্টে খোদার অভিশাপ।

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"><div dir="ltr">ভুল দৃষ্টিভঙ্গি আর অপবাদ, নিজের অদৃষ্টে খোদার অভিশাপ।</div><div dir="ltr">এ বিষয়গুলো ধ্রুব সত্য যা জীবনে একবার হলেও  মানুষ ভুল করে থাকে। ভুল যখন হয় মস্তবড় মাশুলও তখন বেশি। কত বেশি? তা সৃষ্টিকর্তাই ভাল জানেন। দৃষ্টিভঙ্গি বদলান, বি পজিটিভ ডায়লগে নয়, মানষিকতায় পরিবর্তন আনুন। </div><div dir="ltr">আমাদের অন্তর প্রথমেই নেগেটিভ বিষয়ের দিকে ধাবিত হয়। কেমন নেগেটিভ? সিমপল একটা উদাহরণ দেয়া যেতে পারে, সাপোজ একি বয়সের একটা ছেলে আর একটা মেয়ে কোথাও দাঁড়িয়ে কথা বলছে আপনে এই দৃশ্যটি দেখা মাত্র মনে হতে পারে বয়ফ্রেন্ড, গার্লফ্রেন্ড। অথচ যদি তারা আপন ভাই-বোন হয়? (নাউযুবিল্লাহ) যদি অন্যকোন আত্মীয় হয়? অথবা স্বামী-স্ত্রী হয়? কিন্তু না সবার আগে কিন্তু এটাই ধারণা আসে।</div><div dir="ltr">অর্ধেক গ্লাস পানি নিয়ে কাউকে যদি প্রশ্ন করুন, এখানে কতটুকু পানি আছে? কেউ বলবে অর্ধেক পূর্ণ, কেউ বলবে অর্ধেক খালি। দুইজন সঠিক হলেও দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন। আর এই ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির জন্যই নেগেটিভ দিকে আমরা বেশি ধাবিত হই।</div><div dir="ltr">আরেকটা উদাহরণ দেয়া যাক, যার জীবন-মৃত্যুর সম্পর্কঃ<br />"সুমন" আর "নির্জলা" দুইজন ভিন্ন ধর্মাবিলম্বী ছিল। ধর্মান্তরিত হয়ে একে অপরের সাথে পবিত্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। দুইজনই ভিন্ন ভিন্ন ভার্সেটিতে পড়ুয়া দুইজন স্টুডেন্ট। লোকচক্ষুর ভয়ে বিষয়টি গোপন করে তারা স্বাভাবিক ভাবে জীবন-যাপন করে।  সুবিধার জন্য "নির্জলা" তার স্বামীর সাথে তাদের ভার্সেটির নিকটস্থ কোন ফ্ল্যাটে ভাড়া নিয়ে থাকে। স্বল্প দিনের মধ্যেই তারা নির্ভয়ে ঐ এলাকায় অবাধ বিচরণ শুরু করে। একসাথে কখনো দোকানে, কখনো বাজারে, কখনো খাবার হোটেলে, কখনো শপিং মলে। বিষয়টা ধীরে ধীরে এলাকার সিনিয়র, জুনিয়র ভাই-বোনদের দৃষ্টিগোচর হয়। তারা ইতিমধ্যে বিরাট কৌতুহল নিয়ে সবার নিকট এটা বলাবলি করতে থাকে। এক থেকে একশ, গভির থেকে গভির, যা হয়নি, যা জানে না তা নিয়েও। যেমনঃ নির্জলার চরিত্র খারাপ, সে এখানে এক ছেলের সাথে রাত কাটায়, বাইরে অন্য ছেলে, চলা-ফেরা সব উদ্ভট। <br />এরূপ ভাবে একে অপরের কানাঘুষায় তা শিক্ষকদের কানেও পৌঁছে যায়। একজন শিক্ষক তাকে ডাকায় কিন্তু স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের রহস্য যেহেতু সে খুলে বললে বাসায় প্রব্লেম হবে সেহেতু তেমন কিছুই খোলাসা করতে পারল না। শিক্ষকও ভুল বুঝল। বিষয়টা সবাই প্রথম থেকেই লিভ টুগেদার হিসেবে ভাবছিল আর সেভাবেই চলতে থাকল। অবশ্য এই সমাজে এর চেয়ে ব্যতিক্রম কিছু আশাও করা যায় না। <br />যা হোক একটা ছিল পুতঃপবিত্র বন্ধন অন্যটা অভিশপ্ত অপবিত্র নাপাক সম্পর্ক। ছোট মুখে বলে দেয়া তো খুব সহজ কিন্তু দুনিয়ার জঘন্যতম পাপের মধ্যে এটি একটি। ছোট্ট একটা ধারণার প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল? অবশেষে কুৎসিত ভাবে বিষয়টা বাসায় জানাজানি হল, তাদের লেখা-পড়া বন্ধ হয়ে গেল, সুন্দর জীবন নষ্ট হল।<br />নির্জলাকে প্রতিনিয়ত অসতী-চরিত্রহীনা, কলঙ্কিনী এসব গালাগালি শুনতে হত। কেউ কেউ সত্য জানত কিন্তু তা যথেষ্ট ছিল না। কারণ সবাই যখন মিথ্যা অপবাদ রটায় তখন সেটাই সত্য হয়ে যায়।এভাবে ভার্সেটি, বাসা, শিক্ষক, ছোট-বড়, ভাই-বোন সবার মুখ থেকে এসব শুনতে শুনতে মানসিকভাবে তার ডিপ্রেশন চলে আসল। অবশেষে সবার অপবাদের অবসান ঘটিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে হল। বিয়ে করেও কোন একটা মেয়েকে এভাবে চোখের সামনে কলঙ্কিত হয়ে মরতে দেখলাম, তাও চরিত্রহীনার অপবাদ নিয়ে।<br />এই আত্মহত্যার শাস্তি "নির্জলা" পাবে কিন্তু এর পিছনে যারা জড়িত ছিল তারাই মূলত তাকে হত্যা করেছিল। আমাদের সমাজে এমন অনেক নির্জলা আছে। এতক্ষণ শুনলেন আবেগের কথা। <br />এবার আসুন সৃষ্টিকর্তার সুদৃঢ় সতর্কবাণী শুনিঃ</div><div dir="ltr">"এবং যারা পূন্যাত্না রমণীদের প্রতি অপবাদ আরোপ করবে, অতঃপর চারজন চাক্ষুষ সাক্ষী উপস্থিত করবে  না, তবে তাদেরকে ৮০টি বেত্রাঘাত করো এবং তাদের কোন সাক্ষ্য কখনো গ্রহণ করো না এবং তারা ফাসিক্ব।<br />(সূরা আন-নূর : ৪) <br />"নিশ্চয় ঐ সমস্ত লোক  যারা  অপবাদ   আরোপ  করে  সতী-সাধ্বী  ঈমানদার নারীদের প্রতি, দুনিয়া ও আখিরাতে তাদের উপর লা’নত এবং তাদের জন্য রয়েছে মহা শাস্তি। <br />(সূরা আন-নূর : ২৩-২৪)</div><div dir="ltr">রাসুল (ﷺ) বলেছেন,<br />তোমরা সাতটি মারাত্মক কবীরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাক তা হলঃ<br />১) আল্লাহর সাথে শির্ক করা।<br />২) যাদু করা।<br />৩) অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করা।<br />৪) সুদ খাওয়া।<br />৫) ইয়াতিমের মাল ভক্ষণ করা।<br />৬) যুদ্ধের সময় পলায়ন করা।<br />৭) নিরাপরাধ ঈমানদার সতী নারীর উপর মিথ্যা অপবাদ আরোপ করা।<br />(বুখারী, মুসলিম,  মিশকাত)</div><div dir="ltr"><br /></div></div>

ভুল দৃষ্টিভঙ্গি আর অপবাদ, নিজের অদৃষ্টে খোদার অভিশাপ।

ভুল দৃষ্টিভঙ্গি আর অপবাদ, নিজের অদৃষ্টে খোদার অভিশাপ। এ বিষয়গুলো ধ্রুব সত্য যা জীবনে একবার হলেও  মানুষ ভুল করে থাকে। ভুল যখন হয় মস্তবড় মাশুল...

Read more »

ফেসবুকিং এট্যাক

<p dir="ltr"><i><b>"ফেইসবুকে এটাক"</b></i> : একটি নতুন সামাজিক ব্যাধীর নাম<br> -------------------------------<br> কৃতঃ-সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া আজহারী<br> প্রতিষ্ঠাতা,লিবারেল ইসলামিক স্কুল,ঢাকা।</p> <p dir="ltr">এমনিতেই সমাজ থেকে tolerance বা সহনশীলতা, পরমত সহিষ্ণুতা নামক জিনিসটা দিন দিন কমে যাচ্ছে, তার ওপর সোশাল মিডিয়াগুলো যেন সেই অসহনশীলতার আগুনে ঘি ঢালছে। আমরা যে কেউ যে কাউকে সোশাল মিডিয়াতে যা ইচ্ছা তা বলে দিচ্ছি। অথচ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলছেন,<b> </b><br> <b>      وَقُولُوا لِلنَّاسِ حُسْنًا</b> <br> <b>"(সকল) মানুষের সাথে উত্তম কথা বলবে।"</b><br> (সূরা বাক্বারা, আয়াত নং ৮৩)</p> <p dir="ltr">আল্লাহর হাবিবﷺ সেই সুরেই সুর মিলাচ্ছেন,<br> <b>أَنَّ النَّبيَّ ﷺ قَالَ: مَنْ كَانَ يُؤمِنُ بِاللَّهِ والْيَوْمِ الآخِرِ فَلْيُحْسِنْ إلى جارِهِ، ومَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ واليومِ الآخِرِ فَلْيُكْرِمْ ضَيْفَهُ، ومَنْ كانَ يُؤمنُ باللَّهِ واليومِ الآخرِ فَلْيَقُلْ خَيْرًا أَوْ لِيَسْكُت</b>ْ </p> <p dir="rtl"><b>"যে আল্লাহ পাক ও পরকালে বিশ্বাস করে সে যেন তার প্রতিবেশীর সাথে উত্তম ব্যবহার করে, যে আল্লাহ পাক ও পরকালে বিশ্বাস করে সে যেন তার মেহমানকে সম্মান করে এবং যে আল্লাহ পাক ও পরকালে বিশ্বাস করে সে যেন উত্তম কথা বলে অথবা যেন চুপ থাকে।"</b><br> (সহিহ মুসলিম) </p> <p dir="ltr">দেখুন এই ভার্চুয়াল জগতে আমরা সবাই সবার প্রতিবেশী, হোক একজন আমেরিকাতে থাকে অপরজন বাংলাদেশে। তারা উভয়েই এই সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রতিবেশী হিসেবে বসবাস করছে। কত বড় কথা বলেছেন আল্লাহর রাসূল ﷺ! প্রতিবেশীর প্রতি ইহসান করাকে, উত্তম আচার-ব্যবহার করাকে , উত্তম কথা বলাকে স্বয়ং আল্লাহর ওপর বিশ্বাস ও পরকালে বিশ্বাসের শর্ত বানিয়েছেন। </p> <p dir="ltr">অথচ আমরা এমনিতে হয়ত সামনাসামনি চক্ষুলজ্জার কারনেই হোক কিংবা অন্যকিছু, যেই লোকটাকে ফেইসবুক বা অন্য কোন সোশাল মিডিয়াতে যা ইচ্ছা তা বলে দিচ্ছি তা বাস্তবে কোনদিনই বলতাম না। ঔদ্ধত্যপূর্ন কথা, আচরন, গালিগালাজ, অশ্লীল ও কটু কথার বন্যা বইয়ে দিচ্ছি এই সোশাল মিডিয়াতে, কিন্তু বাস্তবে আমরা হয়ত মানুষগুলোর সাথে এত খারাপ ব্যবহার করি না। </p> <p dir="ltr"><b><i>It has become a new social phenomenon, which is not a good sign at all.</i></b></p> <p dir="ltr">অথচ, সোশাল মিডিয়াতে কাউকে খারাপ কিছু বলা আর বাস্তবে সামনাসামনি কটু কথা বলার মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। সামনা সামনি কটু কথা বললে মানুষ যত কষ্ট পায়, সোশাল মিডিয়াতে বললেও তেমনি কষ্ট পায়। বরং সোশাল মিডিয়াতে সে আরো বেশি বেইজ্জত হয়, কারন সেখানে সবাই সবকিছু দেখে ও শুনে। </p> <p dir="ltr">কটুবাক্য এত খারাপ ও দূষিত যা একখানা হাদিসের মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি।</p> <p dir="ltr"><b>আবু দাউদ ও তিরমিজির সহিহ হাদিসে বর্নিত আছে,</b><br> <b> একদা হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা:) প্রিয় নবী ﷺ এঁর কাছে বসেছিলেন এমন সময় উম্মুল মুমিনিন (নবীজীর অপর স্ত্রী) হজরত সাফিয়াহ বিনতু হুয়াই (রা:) সেখানে আসলেন। আয়েশা সিদ্দিকা (রা:) বলে ওঠলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ আপনার জন্য তো এতটুকুই যথেষ্ট যে সাফিয়্যাহ এরকম এরকম (কটু বাক্য বললেন), সাফিয়্যাহ তো বামুন। </b></p> <p dir="ltr"><b>সায়্যিদুনা নবী কারিম ﷺ বললেন, "হে আয়েশা! তুমি এমন একটি দূষিত কথা বলেছ, যা সাগরের পানির সাথে মেশালে তা সমস্ত সাগরের পানিকে দূষিত করে ফেলত।"</b></p> <p dir="ltr">অথচ তিনি যা বলেছেন তা সত্য ছিল, হজরত সাফিয়া রা: সত্যিই একটু বেটে ছিলেন। তবুও এই রূঢ় সত্যটিকেই প্রিয় নবী কারিম ﷺ বলেছেন দূষিত কথা যা সাগরের সমস্ত পানিকে দূষিত করে দিতে পারে। কারন এই কটুবাক্যটি একজন মানুষের মনে আঘাত করেছে, তার মন ভেঙ্গে দিয়েছে। আর আল্লাহর রাসূলﷺ কা'বা শরীফ তাওয়াফরত অবস্থায় ক্বাবার দিকে ইশারা করে বলেছেন, "সেই মহান স্বত্তার কসম যার হাতে মুহাম্মদের প্রাণ! নিশ্চই একজন মুমিনের (ইজ্জত,) মাল ও সম্পদের সম্মান আল্লাহর কাছে তুমি ক্বাবার সম্মানের চেয়েও বেশি।" <br> (ইবনে মাজাহ ৩৯৩০, তিরমিজি  ২০৩২) </p> <p dir="ltr">হুজুর নবী কারীম ﷺ আরো বলে, </p> <p dir="ltr"><b>كل المسلم علي المسلم حرام ماله ودمه وعرضه</b></p> <p dir="rtl"><b>"এক মুসলমানের জন্য অপর মুসলমানের ইজ্জত, সম্পদ ও রক্ত হারাম।"</b></p> <p dir="ltr">কাউকে সোশাল মিডিয়াতে গালি দেয়া, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা, অপমান করা মানে তাকে লোকসম্মূখে বেইজ্জত করা যা আমাদের জন্য হারাম।</p> <p dir="ltr">শুধু মুসলমান ভাই-বোন কেন, ধর্ম মত নির্বিশেষে যেকোন মানুষের উপর হাত ও কথা দিয়ে আঘাত করা সমান অপরাধ। কারন মুসনাদ আহমদ ইবনে হাম্বলের সহিহ হাদিসে এসেছে,</p> <p dir="ltr"><b>المسلم من سلم الناس من لسانه و يده</b></p> <p dir="rtl"><b>"মুসলমান সেই যার হাত ও জিহ্বার (ক্ষতি) থেকে অপর মানুষ নিরাপদে আছে।"</b></p> <p dir="ltr">ফেইসবুক ও সোশাল মিডিয়াতে একে অপরকে আক্রমন, নেগেটিভ কথা বলা, কটুবাক্য ও অশ্লীল গালাগালি বিনিময় আমাদের বাস্তব জীবনকেও দূষিত করছে। ভার্চুয়াল জগতে এসব হচ্ছে বলে আমাদের বাস্তব জীবনে এর প্রভাব পড়ছে না বলে যদি কেউ মনে করেন, তবে তিনি বোকার স্বর্গে বাস করছেন।</p> <p dir="ltr">কী দরকার আমাদের বক্তা, নায়ক, গায়ক ও বিভিন্ন সেলিব্রেটিদের পার্সোনাল লাইফের খুটিনাটি ঘেটে বের করে, সেসব নিয়ে বাজে মন্তব্য করার ও নিজেদের মধ্যে বিভেদ আরো বাড়ানোর। আবারো ফিরে যাই প্রথম হাদিসখানার শেষাংশের দিকে </p> <p dir="ltr">"এবং যে আল্লাহ পাক ও পরকালে বিশ্বাস করে সে যেন উত্তম কথা বলে অথবা যেন চুপ থাকে।" </p> <p dir="ltr">আমরা কারো সম্পর্কে কিছু বললে তা যেন উত্তম হয়, আর না হয় যেন চুপ থাকি। আমাদের মুখের জবানের ব্যালেন্স থাকা উচিৎ, কথার ইস্তেকামাত থাকা উচিৎ। কারন হাদিস শরীফে এসেছে,</p> <p dir="ltr"><b>‎لا يستقيمُ إيمان عبد حتى يستقيمَ قلبه، ولا يستقيم قلبه حتى يستقيم لسان</b></p> <p dir="ltr"><b>"ততক্ষণ পর্যন্ত বান্দার ইমানের ইস্তেকামাত (স্থিরতা) হাসিল হয় না যতক্ষণ না তার অন্তরের ইস্তেকামাত (স্থিরতা) হাসিল হয়। আর ততক্ষণ পর্যন্ত তার অন্তরের ইস্তেকামাত (স্থিরতা) হাসিল হয় না যতক্ষণ না তার জবানের (ভাষার) ইস্তেকামাত (স্থিরতা) হাসিল হয়।" (মুসনাদ আহমদ)</b></p> <p dir="ltr">তাই আমাদের ইমানের ইস্তেকামাতের জন্য জবানের ইস্তেকামাত খুব প্রয়োজন। হোক তা ভার্চুয়াল জগতে কিংবা বাস্তব জীবনে। ঔদ্ধত্যপূর্ন কথা, হিংসাত্মক-আক্রমনাত্মক কথা, কটু কথা, গালিগালাজ, মিথ্যা, অপবাদ, গীবত, অশ্লীল কথা সম্পূর্নরুপে পরিত্যাগ করতে হবে। কারন এই জিহ্বা ও লজ্জাস্থানের অপব্যবহারের কারনেই বেশিরভাগ মানুষ দোজখে যাবে বলে হাদিসে উল্লেখ আছে। </p> <p dir="ltr">শেষ কথা, যেচে পড়ে ঝগড়া করা, বেশি বেশি তর্ক যেন পরিহার করি। কারন হাদিস শরীফে উল্লেখ রয়েছে, ঝগড়াটে টাইপের মানুষ আল্লাহর খুব অপছন্দের ব্যক্তি। আরো বলা হয়েছে, সত্যের ওপর আছে জেনেও যে ব্যক্তি তর্ক পরিহার করে সে তার বিনিময় পাবে। আমাদের সোশাল মিডিয়ার বেশিরভাগ সমস্যা শুরু হয় অযথা তর্ক থেকে।</p> <p dir="ltr">আল্লাহ পাক আমাদের ওপর খাস রহমত করুন।</p>

ফেসবুকিং এট্যাক

"ফেইসবুকে এটাক" : একটি নতুন সামাজিক ব্যাধীর নাম ------------------------------- কৃতঃ-সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া আজহারী প্রতিষ্ঠাতা,লিব...

Read more »

ঘুষের ভয়াবহতা এবং তা থেকে পরিত্রাণের উপায়

<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"> <a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhm0fgq9Mqy0Nxfx_bnh07uZL2S5PG-7MvrRqGbe6fuYSD77tMnPk7SgcyscvPf7yjkplmqap_TYwAWgQw5lUDyT87xZAmjLHOyElVxRpUC8Bv3Eyo9MKlCQPV4HpJeYrhr1UmG6G_XRH8G/s1600/money-bribe-1.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="346" data-original-width="500" height="276" loading="lazy" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhm0fgq9Mqy0Nxfx_bnh07uZL2S5PG-7MvrRqGbe6fuYSD77tMnPk7SgcyscvPf7yjkplmqap_TYwAWgQw5lUDyT87xZAmjLHOyElVxRpUC8Bv3Eyo9MKlCQPV4HpJeYrhr1UmG6G_XRH8G/s400-rw/money-bribe-1.jpg" width="400" /></a></div> <br /> <br /> <blockquote class="tr_bq"> <ul> <li><b><i><span style="color: #38761d;">আলহামদুলিল্লাহ ওয়াল শুকরু লিল্লাহ ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু আ'লা হাবিবিহিল কারিম।।আম্মা বা'দঃ-</span> </i></b>  </li> </ul> </blockquote> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <br /></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> ঘুষ একটি সামাজিক ব্যাধি। ঘুষ হচ্ছে স্বাভাবিক ও বৈধ উপায়ে যা কিছু পাওয়া যায় তার উপর অবৈধ পন্থায় অতিরিক্ত কিছু গ্রহণ করা। কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী তার দায়িত্ব পালনের জন্য নিয়মিত বেতন/ভাতা পাওয়া সত্ত্বেও যদি বাড়তি কিছু অবৈধ পন্থায় গ্রহণ করে তাহলে তা ঘুষ হিসাবে বিবেচিত। অনেক সময় স্বীয় অসৎ উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য ঘুষ দেওয়া হয়। আবার অনেক সময় টাকা-পয়সা ছাড়াও উপহারের নামে নানা সমগ্রী প্রদান করা হয়। সুতরাং যেভাবেই হোক, আর যে নামেই হোক তা ঘুষের অন্তর্ভুক্ত। </div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:</div> <h3 dir="RTL" style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #111111; font-size: 22px; line-height: 29px; margin: 27px 0px 17px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: #3366ff;">«لَعْنَةُ اللَّهِ عَلَى الرَّاشِي وَالْمُرْتَشِي»</span></h3> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: #3366ff;">“ঘুষ প্রদানকারী ও গ্রহণকারী উভয়ের উপরই আল্লাহর লা‘নত[1]।”</span></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল পদে থেকে হারাম অর্থ গ্রহণই হচ্ছে ঘুষ। এই ঘুষ যারা দেয় তারাও সমান অপরাধী। বেআইনী ফায়দা হাসিলের জন্য যারা কর্তাব্যক্তিদেরকে বিভিন্ন সুবিধা বা টাকা পয়সা দিয়ে প্রভাবিত করতে চেষ্টা করে তারাই এই গুনাহ সংঘটনের অন্যতম শরীক। যারা ঘুষকে একটি অঘোষিত ব্যবস্থা হিসেবে প্রশ্রয় দেয় তারাই অপরাধী। দেখা যায় মাঝে মধ্যে বেড়াই ক্ষেত খায়, রক্ষকই হয় ভক্ষক। ন্যায়কে যাদের লালন করার কথা তারাই অন্যায়কে ধারণ করছে। এভাবে দুর্নীতির ডালপালা সারা দেশে বিস্তার লাভ করে।</div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> ঘুষ বা উৎকোচ আসে নজরানার রূপ ধরে। “নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজন সাহাবীকে কর্মচারী নিয়োগ করে যাকাত আদায়ের জন্য পাঠালেন। সে ফিরে এসে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেন, এটা যাকাতের মাল আর এটা আমাকে উপঢৌকনস্বরূপ দেওয়া হয়েছে। এতে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চেহারা বিবর্ণ হয়ে গেল। তিনি মসজিদের মিম্বারে দাঁড়িয়ে বললেন- সরকারী কর্মচারীর কি হলো! আমরা যখন তাকে কোনো দায়িত্ব দিয়ে কোথায়ও প্রেরণ করি তখন সে ফিরে এসে বলে এই মাল আপনাদের (সরকারের) এবং এটা আমাকে প্রদত্ত উপহার। সে তার বাড়িতে বসে থেকে দেখুক তাকে উপহার দেওয়া হয় কি-না[2]।”</div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> একবার এক সরকারী উর্ধ্বতন কর্মকর্তা উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু-কে কিছু উপহার দিলেন। উপহারগুলো দেখে উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেছিলেন- তুমি যে বললে এগুলো বায়তুলমালের আর এগুলো আমার উপহার! তুমি এই পদ ছেড়ে বাপের ঘরে বসে থাক, দেখ তো কে তোমার জন্য উপহার নিয়ে আসে।” সত্য-মিথ্যার পার্থক্য করার এই জ্ঞান ও সাহসের জন্যই নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে আল-ফারুক উপাধি দিয়েছিলেন। </div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> কবি ফররুখ বলেছেন-</div> <div align="center" style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px;"> <span style="box-sizing: border-box; color: green;">“আজকে উ</span><span style="color: green;">মর পন্থী পথিক দিকে দিকে প্রয়োজন</span></div> <div align="center" style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px;"> <span style="box-sizing: border-box; color: green;">পিঠে বোঝা নিয়ে পাড়ি দেবে যারা প্রান্তর প্রাণপণ।”</span></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> কিন্তু হায়! এখন মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশের এই সমাজের চিত্র দেখলে প্রশ্ন জাগে ইসলামের সেই মহান শিক্ষার প্রতিফলন কোথায়?</div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;">  এ জন্যেই কবি নজরুল বলেছেন:</div> <div align="center" style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px;"> <span style="box-sizing: border-box; color: green;">ইসলাম সে তো পরশ মানিক তারে কে পেরেছে খুঁজি,</span></div> <div align="center" style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px;"> <span style="box-sizing: border-box; color: green;">পরশে তাহার ধন্য যারা তাদেরই আমরা বুঝি।</span></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> ইসলামের পরশ আমাদের কলবে পৌঁছেনি বলেই আজ আমরা ঘুষকে উপহার ভাবি। অফিসের ফাইল ঘুষ না পেলে সামনে চলে না। যার ফলে দেশ ও জাতির কাঙ্ক্ষিত উন্নতি হয় না। কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে মেধাহীনদের রাজত্ব চলে। ঘুষ দিয়ে যে চাকুরী পেতে হয় সেই চাকুরীকে সেবা মনে করার কোনো কারণ নেই। আর তাই ঘুষ দিয়ে শিক্ষকের চাকুরী পাওয়া লোকটির কাছ থেকে তার ছাত্ররা কতটুকু এলেমদার হবে তা নিয়ে মনে অনেক সংশয় থেকে যায়।</div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> এই ঘুষের জামানায় পাকা দড়িবাজরা তরতর করে উপরে উঠে যাচ্ছে দেখে আল্লাহর নেক বান্দারা মাঝে মাঝে ভাবে, যে কি নেক নিয়তের কি কোনো দাম নেই? এটা কি বোকামি? কিন্তু তিতা ফলের চারা লাগিয়ে যেমন সুমিষ্ট ফলের আশা করা যায় না তেমনি দুর্নীতির মাধ্যমে গড়ে উঠা ব্যবস্থাপনার কাছে কোনো কল্যাণ আশা করা যায় না। তাই ঘুষ সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন:</div> <h3 dir="RTL" style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #111111; font-size: 22px; line-height: 29px; margin: 27px 0px 17px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: maroon;">﴿فَبَدَّلَ ٱلَّذِينَ ظَلَمُواْ قَوۡلًا غَيۡرَ ٱلَّذِي قِيلَ لَهُمۡ فَأَنزَلۡنَا عَلَى ٱلَّذِينَ ظَلَمُواْ رِجۡزٗا مِّنَ ٱلسَّمَآءِ بِمَا كَانُواْ يَفۡسُقُونَ ﴾ [البقرة: ٥٩]</span></h3> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: maroon;">“এরপর যালিমরা বদলে দিল যা তাদের বলা হয়েছিল। তার পরিবর্তে অন্য কথা। এ কারণে যারা যুলুম করল তাদের উপর নাযিল করলাম আকাশ হতে এক মহাশাস্তি। কারণ, তারা অধর্ম-অন্যায় কাজ করেছিলো।” </span></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: maroon;">(আল-কুরআন, ২:৫৯)</span></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> এ আয়াতে সত্যকে বদলে দেওয়ার শাস্তির উল্লেখ আছে। ঘুষও সত্যকে বদলে দেয়। পাসকে ফেল দেখিয়ে দেয়। একজন হকদারের হক বদলে দিয়ে অন্যকে অন্যায়ভাবে দেওয়া হয়।</div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> অতীত যামানায়  যারা ঘুষ গ্রহণ করত, দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে ধর্মের বাণীতে জালিয়াতি করত তাদের সম্পর্কে আল-কুরআনে বলা হয়েছে:</div> <h3 dir="RTL" style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #111111; font-size: 22px; line-height: 29px; margin: 27px 0px 17px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: maroon;">﴿ فَوَيۡلٞ لِّلَّذِينَ يَكۡتُبُونَ ٱلۡكِتَٰبَ بِأَيۡدِيهِمۡ ثُمَّ يَقُولُونَ هَٰذَا مِنۡ عِندِ ٱللَّهِ لِيَشۡتَرُواْ بِهِۦ ثَمَنٗا قَلِيلٗاۖ فَوَيۡلٞ لَّهُم مِّمَّا كَتَبَتۡ أَيۡدِيهِمۡ وَوَيۡلٞ لَّهُم مِّمَّا يَكۡسِبُونَ ٧٩ ﴾ [البقرة: ٧٩]</span></h3> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: maroon;">সুতরাং দুর্ভোগ তাদের জন্য যারা নিজ হাতে কিতাব রচনা করে এবং তুচ্ছ মূল্য প্রাপ্তির জন্য বলে- এটি আল্লাহর নিকট হতে এসেছে। তাদের হাত যা রচনা করেছে তার জন্য শাস্তি তাদের এবং যা তরা উপার্জন করে তার জন্যও শাস্তি তাদের।”</span></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: maroon;"> (আল-কুরআন, ২:৭৯)</span></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> ঘুষ হচ্ছে একটি হারাম জিনিস। যদিও ঘুষখোর এটাকে হারাম মনে করে না। আয়াতে ঘুষ খেয়ে ধর্মের বাণী বদলে দেওয়ার কথা বলা হলেও সকল জালিয়াতির জন্যই শাস্তি প্রযোজ্য।</div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> ঘুষ সব সময় টাকা-পয়সা হয় না। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নানান বস্তু ও বিষয় হতে পারে। এ জন্যই হাদীসের ভাষায় এটিকে বলে ‘রিশওয়াহ’ বা দড়ি। দড়ি দিয়ে কুপের ভেতর থেকে বালতি টেনে উঠাবার মত ঘুষ অন্যের হক নিজের ঘরে নিয়ে আসে। এজন্য এই প্রক্রিয়ায় তিনটি পক্ষ থাকে। ১. রাশী راشى যে ঘুষ প্রদান করে, ২. মুরতাশী مرتشى যে ঘুষ গ্রহণ করে এবং ৩. রায়েশ رائش যে অনুঘটক হয়ে কাজ করে। আল্লামা সান‘আনী তার বিখ্যাত গ্রন্থ সুবুলুস সালাম শারহু বুলুগিল মারাম গ্রন্থে বলেন- রায়েশ বা ঘুষের ঘটক হচ্ছে্ ওই ব্যক্তি যে ঘুষখোর ও ঘুষদাতার মধ্যে যোগাযোগ ঘটিয়ে থাকে।[3] তবে মূলপক্ষ হচ্ছে দুটি: যে ঘুষ দেয় ও যে ঘুষ খায়।</div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> আব্দুল্লাহ ইবন উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:</div> <h3 dir="RTL" style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #111111; font-size: 22px; line-height: 29px; margin: 27px 0px 17px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: #3366ff;">«لعنة الله االراشي والمرتشي في الحكم <b style="box-sizing: border-box;">»</b></span></h3> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: #3366ff;">“ঘুষদাতা ও গ্রহীতা উভয়ের ওপর আল্লাহর লা’নত।”[4]</span></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> ইমাম তাবারানী তার আল-মু‘জামুস সগীর গ্রন্থে একটি হাদীস সংকলন করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:</div> <h3 dir="RTL" style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #111111; font-size: 22px; line-height: 29px; margin: 27px 0px 17px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: #3366ff;"> <b style="box-sizing: border-box;">« </b>الرشوة في الحكم كفر وهى بين الناس سحت<b style="box-sizing: border-box;">»</b></span></h3> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: #3366ff;">‘রিশওয়াহ বিচারের ক্ষেত্রে কুফরি। লোকেরা নিজেদের মধ্যে এ কাজ করা সুহত।”</span> </div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> আগেই বলা হয়েছে রিশওয়াহ অর্থ ঘুষ। তাহলে সুহত অর্থ কি? এ প্রশ্নের উত্তর পাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর একটি হাদীসে:</div> <h3 dir="RTL" style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #111111; font-size: 22px; line-height: 29px; margin: 27px 0px 17px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: #3366ff;"><b style="box-sizing: border-box;">«</b>كل لحم أنبتته السحت فالنار أولى به، قيل ما السحت ؟ قال الرشوة في الحكم<b style="box-sizing: border-box;">»</b></span></h3> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: #3366ff;">“যে গোশত উদগত হয়েছে সুহত থেকে, তার জন্য জাহান্নামের আগুনই বেশি উপযোগী। একজন জিজ্ঞেস করলো, সুহত কী? তিনি বললেন, বিচার বা শাসনকার্যে ঘুষ গ্রহণ।”[5]</span></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> তাহলে দেখা যায় যে, ঘুষের অর্থে যে নিজে পানাহার করে এবং তার পোষ্যদের পানাহার করায় সকলের জন্যই তা খুবই মন্দ কাজ। এই ঘুষ-লালিত দেহের ইবাদত আল্লাহ কবুল তো করবেনই না বরং তাদের জন্য লাঞ্ছনা, আখিরাতের আগুণ অপেক্ষা করছে।</div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> ইয়াহূদীদের দুর্গতির কারণ হিসেবে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:</div> <h3 dir="RTL" style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #111111; font-size: 22px; line-height: 29px; margin: 27px 0px 17px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: maroon;">﴿ سَمَّٰعُونَ لِلۡكَذِبِ أَكَّٰلُونَ لِلسُّحۡتِ ﴾ [المائ‍دة: ٤٢]</span></h3> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: maroon;">“তারা মিথ্যা শ্রবণে অত্যন্ত আগ্রহশীল এবং অবৈধ (ঘুষ) ভক্ষণে অত্যন্ত আসক্ত।” (আল-কুরআন, ৫:৪২)</span></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> অপর একটি আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:</div> <h3 align="right" style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #111111; font-size: 22px; line-height: 29px; margin: 27px 0px 17px;"> <span style="box-sizing: border-box; color: maroon;">﴿ وَتَرَىٰ كَثِيرٗا مِّنۡهُمۡ يُسَٰرِعُونَ فِي ٱلۡإِثۡمِ وَٱلۡعُدۡوَٰنِ وَأَكۡلِهِمُ ٱلسُّحۡتَۚ لَبِئۡسَ مَا كَانُواْ يَعۡمَلُونَ ٦٢ ﴾ [المائ‍دة: ٦٢]</span></h3> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: maroon;">“হে নবী! আপনি (আহলে কিতাবদের) অনেককেই দেখবেন পাপে, সীমালঙ্ঘনে ও অবৈধ ভক্ষণে (ঘুষ খাওয়াতে) তৎপর। তারা যা করে নিশ্চয় তা নিকৃষ্ট।” (আল-কুরআন, ৫:৬২)</span></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> আয়াতে ‘অবৈধ ভক্ষণ’ তরজমা করা হলেও হাদীসে এই ‘সুহত’ বা অবৈধ আয়কে ঘুষ হিসেবে তাফসীর করে দেওয়া হয়েছে। তবে সকল প্রকার দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জিত আয়ও এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।</div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> এই ঘুষের বিষয়টি পবিত্র কুরআনের একটি আয়াতে স্পষ্টতই এসেছে। বিচারের রায়কে প্রভাবিত করা এবং প্রশাসকদেরকে নিরপেক্ষতা ও ন্যায়নিষ্ঠতা থেকে আলাদা করাই যে ঘুষের মূখ্য উদ্দেশ্য হয়ে থাকে তা প্রতিফলিত হয়েছে এই আয়াতে:</div> <h3 align="right" style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #111111; font-size: 22px; line-height: 29px; margin: 27px 0px 17px;"> <span style="box-sizing: border-box; color: maroon;">﴿ وَلَا تَأۡكُلُوٓاْ أَمۡوَٰلَكُم بَيۡنَكُم بِٱلۡبَٰطِلِ وَتُدۡلُواْ بِهَآ إِلَى ٱلۡحُكَّامِ لِتَأۡكُلُواْ فَرِيقٗا مِّنۡ أَمۡوَٰلِ ٱلنَّاسِ بِٱلۡإِثۡمِ وَأَنتُمۡ تَعۡلَمُونَ ١٨٨ ﴾ [البقرة: ١٨٨]</span></h3> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: maroon;">“তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের অর্থ-সম্পদ অন্যায়ভাবে ভোগ করো না এবং মানুষের ধন-সম্পত্তির কিছু অংশ জেনেশুনে অন্যায়ভাবে গ্রাস করার উদ্দেশ্যে তা বিচারকদের বা প্রশাসকদের কাছে পেশ করো না।”</span></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: maroon;"> (আল-কুরআন, ২: ১৮৮)</span></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> এ আয়াতে ‘হুক্কাম’ অর্থ শাসকগণ, প্রশাসনগণ, বিচারকগণ হতে পারে। আরবী ভাষায় হাকিম বা বহুবচনে হুক্কাম শব্দটি এইসব অর্থে সমানভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। এখানে বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কথা বুঝানো হয়েছে যাদের সিদ্ধান্তে একজনের সম্পদে অন্য কেউ অন্যায়ভাবে ভাগ বসাতে পারবে। উপর্যুক্ত আয়াতে وتدلوا بها শব্দটি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। এর অর্থ হচ্ছে ‘বালতি কুপে ফেলে তা টেনে উঠানো।’ ঠিক তেমনি ঘুষের রশিতে নিজের প্রত্যাশিত বস্তু টেনে আনা হয়। এটি রুপক অর্থে এসেছে।</div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> এজন্যই আল্লামা আলুসী তার তাফসীর রুহুল মা‘আনীতে বলেন: “তোমাদের সম্পদের কিছু অংশ অসাধু বিচারক বা প্রশাসকদেরকে ঘুষ হিসেবে দিও না।”</div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> তাফসীরে মাদারেকেও এ আয়াতের ‘বাতেল’ শব্দ দ্বারা ঘুষ বা রিশওয়াহ বুঝানো হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।[6] এতে প্রমাণিত হলো যে, পবিত্র কুরআনে ঘুষের বিরুদ্ধে স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।</div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> আজ আমাদের দেশ দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে তালিকার প্রথম দিকে রয়েছে। এই দুর্নীতির নানা রকমের রয়েছে। তবে ঘুষ হচ্ছে প্রধান ও সবচেয়ে ব্যাপক দুর্নীতি। ঘুষের এই ব্যাপকতা কেবল আখিরাতের জন্যই ভয়াবহ নয়; বরং আমাদের এই সামাজিক জীবনেও দুর্ভোগের কারণ।</div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> ঘুষের বিষয়টি এখন আর লুকোছাপা নেই; তা এখন সবারই জানা। বাসে, লঞ্চে, পথে-ঘাটে মানুষ ঘুষের আলাপ করছে। আমাদের আশপাশের লোকজন তা শুনেও কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে না। এ রকম অবস্থার কারণেই আমরা জাতি হিসেবে ক্রমশ বোধহীন হয়ে পড়েছি এবং ভবিষ্যতের অজানা লা‘নত অথবা দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি অথবা সন্ত্রাসের আরও প্রকোপ দেখে এক বিরাট ভয় আমাদেরকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। কিন্তু ধর্মের বাণী আজ আমাদের জীবনে বাস্তব রূপ ধরে আসলেও আল্লাহর হুকুম পালন করার প্রতি আমাদের আগ্রহ নেই, যা দুঃখজনক হলেও সত্য। এ হচ্ছে এক ভয়াবহ অবস্থা।</div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> ঘুষ আমাদের জাতীয় উন্নয়নকে ব্যাহত করছে। ঘুষের কারণে মানুষ যোগ্যতার মূল্যায়ণ পাচ্ছে না। ঘুষের চিন্তায় যখন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাথা ঘুরতে থাকে তখন হাতের কলম সিরাতুল মুস্তাকীমে চলে না। ঘুষ হচ্ছে সমাজদেহে নীরব মরণ ব্যাধি। সকল নীতি-নৈতিকতা, সমস্ত আইন-কানুন, বিধি-বিধানকে বিধ্বস্ত করে দেওয়ার জন্য ঘুষ নামক এই নমরুদই দায়ী। এ হচ্ছে এক মরণ ভাইরাস যা আমাদের সমাজের সকল ব্যবস্থাপনাকে নাজেহাল করে দিচ্ছে। এই অভিশাপ থেকে মুক্ত হতে না পারলে আমাদের উপর আল্লাহর রহমত নাযিল হবে না এবং আমরাও একটি সময় অতীতের নমরূদ, ফিরাউনদের ন্যায় অভিশপ্ত জাতিতে পরিণত হব ও আল্লাহর গজবে ধ্বংস হয়ে যাব। কালব- এর পরিশুদ্ধির জন্য দেহ পরিশুদ্ধ থাকতে হয়। হালাল রুজি বা সৎ উপার্জনকারী আল্লাহর বন্ধু বলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘোষণা করেছেন। পক্ষান্তরে অসৎ উপার্জন করে অতি তাড়াতাড়ি সুখের সন্ধান করা আসলে বৃথা। অনেকেই অর্থ উপার্জনে সুবিধাজনক বিষয়ে লেখাপড়া শেষ করেই তার পেশায় এমনভাবে মগ্ন হয় যেন সে পারে তো দু দিনেই বিশাল বিত্ত-বৈভবের মালিক হয়ে যায়। লোকের সেবা করা এবং এজন্য ত্যাগী মনোভাব নিয়ে কাজ করার কোনো লক্ষণই দেখা যায় না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক হাদীসে এই তাড়াহুড়া করে অসৎভাবে উপার্জন করা থেকে বিরত থাকতে বলেছেন:</div> <h3 dir="RTL" style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #111111; font-size: 22px; line-height: 29px; margin: 27px 0px 17px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: #3366ff;">«إن نفسا لا تموت حتى تستكمل رزقها فاتقوا الله وأجملوا في الطلب، ولا يحملنكم استبطاء الرزق أن تطلبوه بمعاصي الله، فإن الله لا يدرك ما عنده إلا بطاعته».</span></h3> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: #3366ff;">“কোনো প্রাণী তার রিযিক পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত কখনও মরবে না। সাবধান! আল্লাহকে ভয় করো এবং আবেদনে সৌন্দর্য বজায় রাখো। তোমার রিযিক ধীরগতিতে আসার কারণে তা আল্লাহর নাফরমানির মাধ্যমে চেয়ো না। কারণ তাঁর নিকট যা আছে তা লাভ করতে হলে তাঁর আনুগত্যের মাধ্যমেই করতে হবে।” </span></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: #3366ff;">(বাযযার, ইবন মাসউদ রা. হতে)</span></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> তবে কেউ যদি অন্যের সম্পদ গ্রাস করে তবে তার পরিণতি সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:</div> <h3 align="right" style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #111111; font-size: 22px; line-height: 29px; margin: 27px 0px 17px;"> <span style="box-sizing: border-box; color: maroon;">﴿  فَبِظُلۡمٖ مِّنَ ٱلَّذِينَ هَادُواْ حَرَّمۡنَا عَلَيۡهِمۡ طَيِّبَٰتٍ أُحِلَّتۡ لَهُمۡ وَبِصَدِّهِمۡ عَن سَبِيلِ ٱللَّهِ كَثِيرٗا ١٦٠ وَأَخۡذِهِمُ ٱلرِّبَوٰاْ وَقَدۡ نُهُواْ عَنۡهُ وَأَكۡلِهِمۡ أَمۡوَٰلَ ٱلنَّاسِ بِٱلۡبَٰطِلِۚ وَأَعۡتَدۡنَا لِلۡكَٰفِرِينَ مِنۡهُمۡ عَذَابًا أَلِيمٗا ١٦١ ﴾ [النساء: ١٥٩،  ١٦١]</span></h3> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: maroon;">“যারা ইয়াহূদী ছিল, তাদের যুলুমের কারণে আমরা তাদের ওপর এমন সব পবিত্র বস্তু হারাম করে দিয়েছি, যা ছিল তাদের জন্য হালাল। এছাড়াও আল্লাহর পথে অনেক বাধা দেওয়ার জন্য তা করেছিলাম এবং তারা সুদ গ্রহণের কারণে- যা তাদেরকে নিষেধ করা হয়েছিল এবং অন্যায়ভাবে লোকের ধনসম্পদ গ্রাস করার জন্য। কাফিরদের মর্মন্তুদ শান্তি প্রস্তুত রেখেছি।”</span></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: maroon;"> (আল-কুরআন, ৪:১৬০-১৬১)</span></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> এমনিভাবে অসৎ উপার্জন করে গাড়ি-বাড়ি, বিত্ত-বৈভব, প্রভাব-প্রতিপত্তি লাভ করার যে তীব্র আকাঙ্খা মানুষের মনে জাগে এবং শয়তান এইসব অপকর্মকে আকর্ষণীয় ও লোভনীয় করে সামনে তুলে ধরে, এর পরিণতি দুনিয়া ও আখিরাতে ভয়াবহ!</div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> ইসলামে ঘুষ সম্পূর্ণরূপে হারাম। ঘুষদাতা ও ঘুষগ্রহিতা উভয়ে জাহান্নামী।</div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> তাই আসুন, আমরা তওবা করে ঘুষকে পরিত্যাগ করি, এর বিরুদ্ধাচরণ করি। একে ঘৃণা করি, একে প্রতিরোধ করি। মহান আল্লাহ আমাদেরকে তাওফীক দিন। আমীন।</div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <b style="box-sizing: border-box;"><span style="box-sizing: border-box; color: #993300;">বাঁচার উপায়: </span></b></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> রোগের চিকিৎসার চেয়ে তার প্রতিরোধই হচ্ছে উত্তম ব্যবস্থা। এ জন্য  ঘুষ লেনদেন সংঘটনের পূর্বেই তার সুযোগ ও সম্ভাবনাকে চিরতরে বন্ধ করে দেওয়া প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ, শিক্ষা -প্রশিক্ষণ  ও বাস্তব ভিত্তিক সর্মসূচীর মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করার উপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করার পাশাপাশি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এ ছাড়াও নিম্নোক্ত পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে।</div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <b style="box-sizing: border-box;"><span style="box-sizing: border-box; color: #993300;">ক.আখিরাতের চেতনা জাগ্রতকরণ:</span></b></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> দুনিয়ার জীবনই মানুষের শেষ নয় বরং মৃত্যুর পর মানুষকে আখিরাতের অনন্ত জীবনে প্রবেশ করতে হবে। সেদিন আল্লাহ তা‘আলার দরবারে দুনিয়ার জীবনের প্রতিটি কর্মের হিসাব দিতে হবে। মূলত আখিরাতের চেতনা মানুষের জীবনে নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা পালন করে থাকে। যে ব্যক্তি আখিরাতে সত্যিকার বিশ্বাস করে সে কখনও ঘুষ গ্রহন করতে পারে না। মানুষের দুনিয়ার জীবন হচ্ছে অতি সংক্ষিপ্ত এবং আখিরাতই হচ্ছে অনন্ত জীবন। এ সম্পর্কে আল-কুরআনে বর্ণিত হয়েছে:</div> <h3 align="right" style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #111111; font-size: 22px; line-height: 29px; margin: 27px 0px 17px;"> <span style="box-sizing: border-box; color: maroon;">﴿ بَلۡ تُؤۡثِرُونَ ٱلۡحَيَوٰةَ ٱلدُّنۡيَا ١٦ وَٱلۡأٓخِرَةُ خَيۡرٞ وَأَبۡقَىٰٓ ١٨ ﴾ [الاعلا: ١٦،  ١٨]</span></h3> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: maroon;"> “বরং তোমরা দুনিয়ার জীবনকে বেশী প্রধান্য দিচ্ছ। অথচ আখিরাত সর্বোত্তম এবং চিরস্থায়ী” (সূরা আল আ‘লা: ১৬-১৭ )</span></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> এ চেতনা যখন মানুষের মধ্যে সৃষ্টি হবে, তখন সে অবশ্যই এ থেকে বিরত থাকবে।</div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: #993300;"><b style="box-sizing: border-box;">খ.হালাল হারামের দিক-নির্দেশনা দান:</b></span></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> অর্থ উপার্জনের ক্ষেত্রে জনগণকে হালাল-হারামের দিক নির্দেশনামূলক শিক্ষা প্রদান করা উচিত। কেননা ইসলাম হালাল বা বৈধ বিষয় উপার্জনের প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছে এবং হারাম উপার্জন বর্জন করার নির্দেশ দিয়েছে, এ সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,</div> <h3 style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #111111; font-size: 22px; line-height: 29px; margin: 27px 0px 17px; text-align: right;"> <span style="box-sizing: border-box; color: maroon;">﴿فَكُلُواْ مِمَّا رَزَقَكُمُ ٱللَّهُ حَلَٰلٗا طَيِّبٗا وَٱشۡكُرُواْ نِعۡمَتَ ٱللَّهِ إِن كُنتُمۡ إِيَّاهُ تَعۡبُدُونَ ١١٤﴾ [النحل:114]</span></h3> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: maroon;">“আল্লাহ তোমাদের হালাল এবং পবিত্র যা দিয়েছেন তা হতে তোমরা আহার কর এবং আল্লাহর অনুগ্রহের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর, যদি তোমরা কেবল তারই ইবাদত কর।”</span></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: maroon;"> (সূরা আন নাহল: ১১৪)</span></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> রাজনৈতিক ও ক্ষমতাসীন ব্যক্তিবর্গ অনেক সময় অর্থ আত্মসাৎ করে থাকেন। অবৈধভাবে যে কোনো প্রকার অর্থ আত্মসাৎকে ইসলাম হারাম  ঘোষণা করেছে।</div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: #993300;"><b style="box-sizing: border-box;">গ. দলীয়করণ ও স্বজনপ্রীতি মুক্ত হওয়া:</b></span></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> চাকুরি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ইত্যাদি সততা, মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রদান করা জরুরী। কারণ এ সমস্ত চাকুরি প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গের নিকট আমানত। ইসলাম এ সমস্ত আমানত তার যোগ্য প্রাপকদের নিকট পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এ সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,</div> <h3 dir="RTL" style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #111111; font-size: 22px; line-height: 29px; margin: 27px 0px 17px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: maroon;">﴿ ۞إِنَّ ٱللَّهَ يَأۡمُرُكُمۡ أَن تُؤَدُّواْ ٱلۡأَمَٰنَٰتِ إِلَىٰٓ أَهۡلِهَا ٥٨ ﴾ [النساء: ٥٨]</span></h3> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: maroon;">“নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা নির্দেশ দিচ্ছেন যে, তোমরা যেন আমানত তার যথার্থ মালিককে প্রত্যার্পণ কর।” </span></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: maroon;">(সূরা আন-নিসা: ৫৮)</span></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:</div> <h3 dir="RTL" style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #111111; font-size: 22px; line-height: 29px; margin: 27px 0px 17px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: #3366ff;">كُلُّكُمْ رَاعٍ وَكُلُّكُمْ مَسْئُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ الإِمَامُ رَاعٍ وَمَسْئُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ</span></h3> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: #3366ff;">“তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং তোমাদের প্রত্যেককেই তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। নেতা তার অধীনস্থদের জন্য জবাবদিহী করবেন।”[7]</span></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <b style="box-sizing: border-box;"><span style="box-sizing: border-box; color: #993300;">ঘ. উপযুক্ত পারিশ্রমিক প্রদানঃ</span></b></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> প্রয়োজনের তুলনায় স্বল্প বেতনের কারণে মানুষ ঘুষের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে থাকে। এজন্য ইসলাম প্রত্যেককে এমন মজুরি বা বেতন প্রদানের কথা বলেছে যে তা দ্বারা সে তার ন্যায়ানুগ ও স্বাভাবিক প্রয়োজন মেটাতে পারে। শ্রমিকদের অধিকার সম্পর্কে মহানবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,</div> <h3 dir="RTL" style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #111111; font-size: 22px; line-height: 29px; margin: 27px 0px 17px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: #3366ff;">«إِنَّ إِخْوَانَكُمْ خَوَلُكُمْ جَعَلَهُمُ اللَّهُ تَحْتَ أَيْدِيكُمْ، فَمَنْ كَانَ أَخُوهُ تَحْتَ يَدِهِ، فَلْيُطْعِمْهُ مِمَّا يَأْكُلُ، وَلْيُلْبِسْهُ مِمَّا يَلْبَسُ، وَلاَ تُكَلِّفُوهُمْ مَا يَغْلِبُهُمْ، فَإِنْ كَلَّفْتُمُوهُمْ مَا يَغْلِبُهُمْ فَأَعِينُوهُمْ»</span></h3> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: #3366ff;">“তারা তোমাদের ভাই। আল্লাহ তাদেরকে তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন। কারো ভাই তার অধীনে থাকলে তার উচিত নিজে যা খাবে তাই খাওয়াবে। নিজে যা পরবে তাকেও তা পরতে দিবে এবং তাকে দিয়ে এমন কাজ করাবে না যা তার সাধ্যাতীত। কোনভাবে তার উপর আরোপিত বোঝা বেশি হয়ে গেলে নিজেও সে কাজে তাকে সাহায্য করবে।”[8]</span></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: #993300;"><b style="box-sizing: border-box;">ঙ. যোগ্য</b><b style="box-sizing: border-box;">, </b></span><b style="box-sizing: border-box;"><span style="box-sizing: border-box; color: #993300;">অভিজ্ঞ ও সৎ কর্মচারি নিয়োগ দান:</span></b></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে ঘুষ ও উৎকোচ গ্রহণের মাধ্যমে অদক্ষ, অনভিজ্ঞ ও অসৎ কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়। ফলে এসব কর্মকর্তা নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েই তার বিনিয়োগকৃত সমুদয় অর্থ উত্তোলনে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। অতএব প্রশাসনকে ঘুষের করাল গ্রাস থেকে রক্ষা করার জন্য সৎ, বিশ্বস্ত ও অভিজ্ঞ লোক নিয়োগ করতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা এ সম্পর্কে বলেন,</div> <h3 align="right" style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #111111; font-size: 22px; line-height: 29px; margin: 27px 0px 17px;"> <span style="box-sizing: border-box; color: maroon;">﴿ إِنَّ خَيۡرَ مَنِ ٱسۡتَ‍ٔۡجَرۡتَ ٱلۡقَوِيُّ ٱلۡأَمِينُ ٢٦ ﴾ [القصص: ٢٦]</span></h3> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: maroon;">“তোমার জন্য সর্বোত্তম কর্মচারী হতে পারে সেই ব্যক্তি, যে শক্তিশালী ও বিশ্বস্ত।"</span></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: maroon;">(সূরা আল কাসাস: ২৬)</span></div> <h3 dir="RTL" style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #111111; font-size: 22px; line-height: 29px; margin: 27px 0px 17px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: maroon;">﴿ ۞إِنَّ ٱللَّهَ يَأۡمُرُكُمۡ أَن تُؤَدُّواْ ٱلۡأَمَٰنَٰتِ إِلَىٰٓ أَهۡلِهَا﴾ [آل عمران: 58]</span></h3> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: maroon;">এ সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন, “নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছেন যে, তোমরা যেন আমানত তার মালিককে প্রত্যার্পণ কর।” </span></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: maroon;">(সূরা আন নিসা: ৫৮)</span></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> এভাবে ইসলাম সৎ, যোগ্য ও বিশ্বস্ত কর্মচারী নিয়োগের মাধ্যমে দুর্নীতি সংঘটনের সম্ভাবনা বন্ধ করে দিতে চায়।</div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <b style="box-sizing: border-box;"><span style="box-sizing: border-box; color: #993300;">চ.গণসচেতনতা সৃষ্টি:</span></b></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> ঘুষ গ্রহণ এক ধরণের দুর্নীতি। এ দুর্নীতির ভয়াবহতা এবং এর নেতিবাচক রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভূমিকা সম্পর্কে সকল স্তরের মানুষকে সচেতন করে তুলতে হবে। যাতে সমাজের প্রতিটি মানুষ এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে উদ্যোগী হয়। বিষয়টি কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। কেননা এদেশের জনগণ ধর্মভীরু এবং সরল প্রকৃতির। তাদেরকে যদি ঘুষের ক্ষতিকর প্রভাব এবং তার ইহকালীন ও পরকালীন পরিণতির বিষয় বুঝিয়ে দেওয়া যায়, তাহলে তা খুব সহজে  প্রতিরোধ সম্ভব। দেশের সকল প্রচার মাধ্যম জনমত ও জনসচেতনতা সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এজন্য রেডিও, টেলিভিশনসহ পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে যদি জনগণকে এর কুফল ও ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে সচেতন করা যায়, তাহলে তা ঘুষ প্রতিরোধে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে পারে।</div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <b style="box-sizing: border-box;"><span style="box-sizing: border-box; color: #993300;">ছ. প্রশাসনিক জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ:</span></b></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> শোষণমুক্ত সমাজ বিনির্মাণের জন্য জবাবদিহিতার কোনো বিকল্প নেই। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সর্বনিম্ন পর্যায় পর্যন্ত জবাবদিহিতার নিশ্চিতকরণ অফিস আদালতে ঘুষের লেনদেন প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে। এ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “তোমরা প্রত্যেকে দায়িত্বশীল। আর তোমরা প্রত্যেকে স্বীয় দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।”[9]</div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: #993300;"><b style="box-sizing: border-box;">জ. ঘুষগ্রহীতাদের  উপযুক্ত শাস্তি প্রদানঃ</b></span></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> সমাজ থেকে ঘুষ-বাণিজ্য চিরতরে উচ্ছেদ করতে হলে শুধুমাত্র উপদেশ, সতর্কবাণী ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা করেই তার দায়িত্ব শেষ করলে চলবে না বরং কোনো ব্যক্তি যদি এ কাজে জড়িয়ে পড়ে, তাহলে তার জন্য শাস্তির ব্যবস্থা করবে, যেন মানুষ শাস্তির পরিণতির ভয়ে ঘুষের লেনদেন থেকে দূরে থাকে।</div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: #993300;"><b style="box-sizing: border-box;">ঝ.মানুষের অধিকার আদায়ের ব্যপারে সচেষ্ট হওয়া:</b></span></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> ঘুষের মাধ্যমে যে সমস্ত অপরাধ সংঘটিত হয় তার অধিকাংশই মানুষের অধিকার বিষয়ক। যেমন, যোগ্য ব্যক্তিকে নিয়োগ প্রদান, প্রমোশন প্রদান, সুযোগ-সুবিধা, স্বজনপ্রীতি ও অন্যের সম্পদ আত্মসাৎ ইত্যাদি। অধিকারের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ব্যক্তি ক্ষমা না করলে আল্লাহও ক্ষমা করবেন না।</div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <b style="box-sizing: border-box;"><span style="box-sizing: border-box; color: #993300;">ঞ. সম্পদ অর্জনে ইসলামী নীতি অবলম্বন:</span></b></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: maroon;">সম্পদের মোহ এবং উচ্চাভিলাষী জীবন-যাপনই ঘুষের লেনদেনের অন্যতম প্রধান কারণ। মানুষ মৃত্যুর কথা এবং আখিরাতকে ভুলে এসবে লিপ্ত হয়ে পড়ে। এজন্য আল-কুরআনে বারবার মৃত্যু ও আখিরাতের কথা স্মরণ করিয়ে বলা হয়েছে, “প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে।” (সূরা আলে ইমরান: ১৮৫ )</span></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> তাছাড়া হাদীসে এসেছে,</div> <h3 dir="RTL" style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #111111; font-size: 22px; line-height: 29px; margin: 27px 0px 17px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: #3366ff;">«ازْهَدْ فِي الدُّنْيَا يُحِبَّكَ اللَّهُ، وَازْهَدْ فِيمَا فِي أَيْدِي النَّاسِ يُحِبُّكَ النَّاسُ»</span></h3> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: #3366ff;">“পার্থিব ভোগ-বিলাস পরিত্যাগ কর। তাহলে আল্লাহ তোমাকে ভালোবাসবেন। আর লোকের কাছে যা আছে তার লালসা পরিত্যাগ কর। তাহলে অন্যরা তোমাকে ভালবাসবেন।”[10]</span></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> তাই অর্থ উপার্জনে হালাল-হারামের বিষয়টি বিবেচনায় রাখতে হবে।</div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: #993300;"><b style="box-sizing: border-box;">ট.মানব মর্যাদার মাপকাঠি তাকওয়া:</b></span></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> মানুষ দ্রুত বিত্তের অধিকারী হওয়ার জন্য সাধারণত ঘুষ গ্রহণ করে থাকে। কিন্তু রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিত্তশালীর চেয়ে বিত্তহীনের বেশী গুরুত্ব প্রদান করেছেন। ইসলামের দৃষ্টিতে মর্যাদার মাপকাঠি অর্থবিত্ত নয় বরং ইসলামের শিক্ষা হচ্ছে যে যতবেশী তাকওয়াসম্পন্ন বা আল্লাহভীরু, সে ততবেশী মর্যাদাবান। এ সম্পর্কে আল-কুরআনে বর্ণিত হয়েছে,</div> <h3 dir="RTL" style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #111111; font-size: 22px; line-height: 29px; margin: 27px 0px 17px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: maroon;">﴿إِنَّ أَكۡرَمَكُمۡ عِندَ ٱللَّهِ أَتۡقَىٰكُمۡۚ﴾ [الحجرات: ١٣]</span></h3> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: maroon;">নিশ্চয় তোমাদের মধ্যে সেই আল্লাহর নিকট অধিক সম্মানিত যে অধিক আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বনকারী।”</span></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <span style="box-sizing: border-box; color: maroon;"> ( সূরা আল-হুজুরাত:১৩)</span></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> <br /></div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; line-height: 26px; margin-bottom: 26px; text-align: justify;"> বর্তমানে ঘুষ বাণিজ্য এ দেশকে ধ্বংস ও অধঃপতনের অতল গহ্বরে নিক্ষেপ করছে। অথচ সরকার নির্বিকার। আগামী দিনের সুস্থ-সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠায় এটি অবশ্যই পরিত্যজ্য। এটি যত আলোচিত হবে জনগণ এ বিষয়ে তত সচেতন হবে এবং তার সুফল ভোগে সমর্থ হবে। এ প্রবন্ধে উল্লেখিত পদক্ষেপসমূহ যদি সমাজে যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, তাহলে সমাজ থেকে ঘুষ-দুর্নীতি প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। সরকারের উচিত দুর্নীতি দমন কমিশনকে কার্যকরী ও অর্থবহ করার মাধ্যমে ঘুষ-বাণিজ্য প্রতিরোধে এগিয়ে আসা।</div> <div style="background-color: white; box-sizing: border-box; color: #222222; font-size: 15px; text-align: justify;"> <br clear="all" style="box-sizing: border-box;" /> <div style="box-sizing: border-box; line-height: 26px; margin-bottom: 26px;"> </div> <hr align="left" size="1" style="box-sizing: content-box; height: 0px;" width="33%" /> <div style="box-sizing: border-box;"> <div style="box-sizing: border-box; line-height: 26px; margin-bottom: 26px;"> [1] হাদীসটি ইবন মাজাহ সংকলন করেছেন, হাদীস নং ২৩১৩।</div> </div> <div style="box-sizing: border-box;"> <div style="box-sizing: border-box; line-height: 26px; margin-bottom: 26px;"> [2] আবু দাউদ, সুলাইমান ইবন আশআশ, আস-সুনান, ৩য় খন্ড (সিরিয়া, হিমস: দারুল হাদীস, তা.বি), পৃ. ৩৫৩, হাদীস নং-২৯৪৩।</div> </div> <div style="box-sizing: border-box;"> <div style="box-sizing: border-box; line-height: 26px; margin-bottom: 26px;"> [3] সুবুলুস সালাম, খ. ৪, পৃ. ১২৪।</div> </div> <div style="box-sizing: border-box;"> <div style="box-sizing: border-box; line-height: 26px; margin-bottom: 26px;"> [4] আহমদ ইবন হাম্বল, আল-মুসনাদ, ২য় খন্ড, প্রাগুক্ত, পৃ. ৩৮৭।</div> </div> <div style="box-sizing: border-box;"> <div style="box-sizing: border-box; line-height: 26px; margin-bottom: 26px;"> [5] কানযুল উম্মাল, খ. ৩।</div> </div> <div style="box-sizing: border-box;"> <div style="box-sizing: border-box; line-height: 26px; margin-bottom: 26px;"> [6] খ. ১, পৃ. ৭৬।</div> </div> <div style="box-sizing: border-box;"> <div style="box-sizing: border-box; line-height: 26px; margin-bottom: 26px;"> [7] ইমাম বুখারী, <i style="box-sizing: border-box;">সহীহুল বুখারী</i>, ২য় খন্ড, বাবুল জুম‘আ ফিল ক্বুরা ওয়াল মুদুন, পৃ. ৫, হাদীস নং- ৮৯৩।</div> </div> <div style="box-sizing: border-box;"> <div style="box-sizing: border-box; line-height: 26px; margin-bottom: 26px;"> [8] বুখারী, হাদীস নং ২৫৪৫।</div> </div> <div style="box-sizing: border-box;"> <div style="box-sizing: border-box; line-height: 26px; margin-bottom: 26px;"> [9] ইমাম বুখারী, <i style="box-sizing: border-box;">সহীহুল বুখারী</i>, ২য় খন্ড, বাবুল জুম‘আ ফিল ক্বুরা ওয়াল মুদুন, পৃ. ৫, হাদীস নং- ৮৯৩।</div> </div> <div style="box-sizing: border-box;"> <div style="box-sizing: border-box; line-height: 26px; margin-bottom: 26px;"> [10] ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৪১০২।</div> </div> </div>

ঘুষের ভয়াবহতা এবং তা থেকে পরিত্রাণের উপায়

আলহামদুলিল্লাহ ওয়াল শুকরু লিল্লাহ ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু আ'লা হাবিবিহিল কারিম।।আম্মা বা'দঃ-      ঘুষ একটি সামাজিক ব্যাধ...

Read more »