বিষয়ঃ আহলে হাদিস বিনোদন -(পর্ব ২)
✍কৃতঃ মাসুম বিল্লাহ সানি
__________________
আযহারী সাহেব যখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে নিরক্ষর বলেছিল তখন এক মুসলিম ভাই ও সালাফীর মধ্যে কথোপকথন।
❏ সালাফীঃ ভাই আপনে জানেন আযহারী সাহেব কত বড় ইসলামিক স্কলার?
❏ মুসলিমঃ না ভাই। জানি না কত বড়?
❏ সালাফীঃ অনেক বড় (মেলা বড়) অনেক জ্ঞানী!! এত ইংরেজী জানে, জ্ঞান-বিজ্ঞান জানে, এমন কয়জন বক্তা আছেন?
❏ মুসলিমঃ হুম তাহলে আপনারা জ্ঞানী কি জিনিস বুঝেন! আচ্ছা বলেন তো তিনি কোন ভার্সিটি থেকে ডিগ্রি নিয়ে এসেছে?
❏ সালাফীঃ মিশরের সেরা ৮০০-৯০০ বছরের পুরাতন জগৎ বিখ্যাত আল-আযহার ভার্সিটি থেকে।
❏ মুসলিমঃ বাহ তাই নাকি! তাহলে তো তিনি নিশ্চই জ্ঞানী হবেন। তাহলে এবার বলেন তো যারা তার মত এমন হাজার হাজার ছাত্র তৈরি করছেন তারা কেমন হবেন?
❏ সালাফীঃ তারা যেহেতু তার শিক্ষক অবশ্যই তারা আরো জ্ঞানী হবেন।
❏ মুসলিমঃ তাহলে তিনি যখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে নিরক্ষর বলল, আরবি অক্ষরগুলো চিনেন না বলল। তখন তার শিক্ষকের জবাব কি ছিল শুনেছেন?
❏ সালাফীঃ না শুনি নি তবে বিশ্বাস করি। যেহেতু তিনি তার শিক্ষক। তিনি তো নিশ্চই ভাল ব্যাখ্যাই দিবেন।
❏ মুসলিমঃ তার শিক্ষক অনেকগুলো হাদিস দিয়ে এটা প্রমাণ করেছেন যে হুযূর পাক (ﷺ) লিখতে-পড়তে জানতেন আর হরফও চিনতেন। উম্মী শব্দটি নিয়ে যত ভুল-বুঝাবুঝির গোড়া হল- এর অনেক অর্থ আছে। কিন্তু নবীর শান বিদ্বেষীগণ শুধু বাজে অর্থটাই নিয়েছে।
যেমনঃ
"উম্মী" ও "উম্মুল" শব্দটি এসেছে "উম্ম" থেকে যার অর্থ মাতা, উৎস, ভিত্তি। যেমনঃ
🔺"উম্মুল" শব্দের অর্থ ও প্রয়োগঃ
উম্মুল কোরা-মক্কা, (সকল শহরের কেন্দ্র)
উম্মুল মু'মেনীন-মু'মীনগণের মাতা,
উম্মুল কুরআন-কুরআনের মাতা/সারগর্ভ (সূরা ফাতিহা)
উম্মুল কিতাব-আল-কুরআন (সকল কিতাবের মূলউৎস)
🔺"উম্মী" শব্দের কিছু সমার্থক অর্থ ও প্রয়োগ নিম্নে উল্লেখ করা হলঃ
১.নিরক্ষর।
২.'পড়াবিহীন’[হুযুর পাক (ﷺ) কারো নিকট থেকে অক্ষর জ্ঞান শিখেন নি স্বয়ং আল্লাহই তাঁর শিক্ষক, সুতরাং যার শিক্ষক আল্লাহ এবং আল-কুরআন অনুযায়ী যিনি সমগ্র মানব জাতির শিক্ষক তিনি অশিক্ষিত হতে পারেন?]
৩.‘উম্মুল কোরা’ বা মক্কা মুকাররামা'য় অবস্থানকারীদেরকে উম্মী বলা হয়। [সে হিসেবে উম্মী হুযুর পাক (ﷺ)-এর উপাধি]
৪.উৎস/মূলঃ [সহিহ হাদিস অনুযায়ী যেহেতু তাঁকে সৃষ্টি না করলে আল্লাহ পাক কিছুই সৃষ্টি করতেন না। সেজন্য তিনি আন নাবী আল উম্মী। কারণ তিনি সমগ্র বিশ্ব-সমগ্র সৃষ্টির মূল/উৎস]
৫.অন্যান্য অর্থঃ হিকমাহ', জ্ঞান, সুবিচার, ন্যায়শাসন।
৬.স্নেহপূর্ণ, কোমল।
৭.অপবিত্রতা-দোষত্রুটি থেকে পবিত্র।
এবার আসুন সহিহ হাদিস দেখি যেই বুখারী-মুসলিমের জিকির সর্বক্ষণ আপনাদের মুখে লেগেই থাকে সে কিতাব দেখুনঃ
🕋 হযরত আব্বাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
عن ابن عباس رضى الله عنه قال لما اشتد بالنبى صلى الله عليه وسلم وجعه قال ائتونى بكتاب اكتب لكم كتابا لا تضلوا بعده.
অর্থাৎ -“যখন রসূল (ﷺ)-এর অসুস্থতা বৃদ্ধি পেল। তখন তিনি উপস্থিত ছাহাবীদের বললেন, তোমরা এক টুকরা কাগজ নিয়ে এস। আমি তোমাদের জন্য কতিপয় উপদেশ লিখে দিব, যাতে তোমরা পরবর্তী কালে পথভ্রষ্ট হবেনা।
● সহিহ বুখারী শরীফ ৮/১৩: অধ্যায়ঃ কিতাবুল ইলমঃ হাদীস ৪৪৩২,
● সহিহ মুসলিম শরীফঃ হাদিস ১৬৩৭,
● মিশকাত শরীফঃ হাদিস ৫৯৬৬।
عن معاوية انه كان يكتب بين يديه عليه السلام فقال له الق الدواة وحرف القلم واقم الباء وفرق السين وتعور الميم مع انه عليه السلام لم يكتب ولم يقرأ من كباب الاولين.
🕋 অর্থঃ- হযরত মুয়াবিয়া (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। তিনি হুযূর পাক (ﷺ)-এর সামনে (ওহী) লিখতেন, অতঃপর রসূল (ﷺ) তাঁকে অক্ষর লিখার পদ্ধতি শিক্ষা দিয়ে ইরশাদ করেন, দোয়াত এভাবে রাখ, কলম এভাবে ঘুরাও, “با” (বা) কে এভাবে সোজা করে লিখ, سين (সীন) কে পৃথক কর, আর মীম ميم (মীম) কে বাঁকা করোনা, অথচ তিনি দুনিয়াবী কোন কাতিবের (লিখকের)-এর নিকট থেকে লিখা শিখেননি, আর কোন প্রাচীনকালীন কিতাব থেকেও তা পড়েননি।
● ইমাম ইবনে হাজার আসকালানীঃ ফতহুল বারী লি শরহে বুখারী ৭/৫০৪,
● ইমাম কাজী আয়াজঃ আস শিফা বিতারীফি হুকমিল মুস্তফা ১/৩৫৮,
● ইবনে কাসীরঃ কিতাবু জামিউল কুরআন ১/১৪১,
● ইমাম কুরতুবীঃ তাফসীরে কুরতুবী ১৩/৩৫৩
❏ সালাফীঃ (চিল্লাইয়া) সব জাল হাদিস। থাক বুঝে গেছি। তোরা সব ভন্ড, মাযার পূজারী, গাঞ্জাখোর। আমার মাথা তোরা কোনদিন ওয়াশ করতে পারবি না।
❏ মুসলিমঃ সারাজীবন বললেন বুখারী-মুসলিম মানি আজ তাই জাল হয়ে গেল!! বাহ চমৎকার 😂😂😂 আপনে কবে থেকে মুহাদ্দিস হলেন? রাসূলের মুখের বানীকে জাল ফতোয়া দেয়ার সাহস কোথায় পেলেন? কয়টা রিজাল শাস্ত্রের কিতাব পড়েছেন? কারা জাল-সহিহ নির্ণয় করেন? জাল-সহিহ ফতোয়া দেয়ার জন্য লাখো হাদিস মুখস্ত জানা থাকতে হয়। আপনে কি ১০০ হাদিস মুখস্ত জানেন? হাদিসের সনদ ইসনদ মুহাদ্দিসগণ জানতেন। তারা এসব নির্ণয় করে গেছেন। আপনাকে আর নতুন ফতোয়া মারতে হবে না। আপনে আসলে শায়খ পূজারী 🙄🙄 নিজ শায়েখ যা বলে চিল্লাইয়া বলেন--- ঠিক অথচ শায়েখের শায়েখ গুরুর গুরু আর উস্তাদের উস্তাদ যা বলেন তা ভুল। এ কেমন বিচার? আপনার মধ্যে দ্বিমুখী পক্ষপাতী স্বভাব বিদ্যমান। আপনারা আসলে নামে মাত্র সহিহ হাদিস জিকির করেন, কোন আসল আর কোনটা নকট ভাল-মন্দ কিছুই বুঝেন না। যদিও সহিহ হাদিসের কথা বলেন, মানার সময় মানেন আপন শায়েখের ফতোয়া। অথচ আমরা যখন লক্ষ লক্ষ হাদিসের হাফেজ, ইমামদের ইমাম, ইমামে আজম আবু হানিফা (রহঃ) সহ সকল মাযহাবের ইমামদের কুরআন সুন্নাহ Based ফতোয়া মানি, গবেষণা করে দ্বীন শিখি তখন আমাদেরকে মুশরিক বলেন এ কেমন বিচার? আপনে কি জানেন না এ সম্পর্কে হাদিস আছে কাউকে ভুলভাবে কাফির মুশরিক ফতোয়া দিলে ফতোয়াদান কারী নিজেই কাফের হয়ে যায়?
❏ সালাফীঃ কি বলেন এসব! এত কঠিন সব কথাবার্তা মাথার উপর দিয়ে গেল। বুঝচ্ছি আপনে আমাকে পীর পূজারী, মাযার পূজারী বানাতে চান। বন্ধ করেন এসব ভন্ডামী। সব বিদআতী ভন্ডের দল। গাঁজাখুরি কথা বার্তা।
❏ মুসলিমঃ You are mentally sick.You dont have judgement !!!