ⓞ➤【শামায়েলে তিরমিযি】
৪৩ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর রোযা
📌পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর রোযা
২২৪
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ ، عَنْ أَيُّوبَ ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ ، قَالَ : سَأَلْتُ عَائِشَةَ ، عَنْ صِيَامِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، قَالَتْ : " كَانَ يَصُومُ حَتَّى نَقُولَ قَدْ صَامَ ، وَيُفْطِرُ حَتَّى نَقُولَ قَدْ أَفْطَرَ " . قَالَتْ : " وَمَا صَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , شَهْرًا كَامِلا مُنْذُ قَدِمَ الْمَدِينَةَ إِلا رَمَضَانَ " .
আবদুল্লাহ ইবনে শাকীক (رحمة الله) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আয়েশা (رضي الله عنه) কে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর রোযা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তাতে তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) (ক্রমাগত) রোযা রাখতেন, এমনকি আমরা বলতাম, তিনি বুঝি অনবরত রোযা রেখেই যাবেন। আর যখন ইফতার করতেন, তখন আমরা বলতাম, তিনি হয়তো আর রোযা রাখবেন না। আয়েশা (رضي الله عنه) বলেন, মদিনায় হিজরতের পর রমযান মাস ছাড়া আর কোন সময় তিনি পূর্ণ মাস রোযা রাখতেন না।[১]
[১] সহীহ মুসলিম, হা/২৭৭৫; সুনানে নাসাঈ, হা/২৩৪৯; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৫২৭৬; শারহুস সুন্নাহ, হা/১৮০৯; মুসনাদে আবু আওয়ানা, হা/২৯৩৮।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
২২৫
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ جَعْفَرٍ ، عَنْ حُمَيْدٍ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، أَنَّهُ سُئِلَ عَنْ صَوْمِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، فَقَالَ : " كَانَ يَصُومُ مِنَ الشَّهْرِ حَتَّى نَرَى أَنْ لا يُرِيدَ أَنْ يُفْطِرَ مِنْهُ ، وَيُفْطِرُ مِنْهُ حَتَّى نَرَى أَنْ لا يُرِيدَ أَنْ يَصُومَ مِنْهُ شَيْئًا . وَكُنْتَ لا تَشَاءُ أَنْ تَرَاهُ مِنَ اللَّيْلِ مُصَلِّيًا إِلا رَأَيْتَهُ مُصَلِّيًا ، وَلا نَائِمًا إِلا رَأَيْتَهُ نَائِمًا " .
আনাস ইবনে মালিক (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিতঃ
আনাস (رضي الله عنه) কে নবী (ﷺ) এর রোযা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেন, নবী (ﷺ) কোন মাসে এমনভাবে রোযা রাখতেন যে, আমরা মনে করতাম- তিনি হয়তো এ মাসে আর রোযা ছাড়বেন না। আবার অনেক সময় এমনভাবে রোযা ছেড়ে দিতেন যে, আমরা মনে করতাম— তিনি আর রোযা রাখবেন না। অবস্থা এমন ছিল যে, তুমি যদি তাঁকে সালাতরত অবস্থায় দেখতে চাইতে, তবে তাঁকে সালাতরত অবস্থায়-ই দেখতে পেতে। আর যদি নিদ্রিত অবস্থায় দেখতে চাইতে, তবে তাঁকে নিদ্রিত অবস্থায়-ই দেখতে পেতে।[১]
[১] ইবনে খুযাইমা, হা/২১৩৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৩৪৯৮; মুসনাদুল বাযযার, হা/৬৫৯২: বায়হাকী, হা/৪৫১১ শারহুস সুন্নাহ, হা/৯৩২; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/২৬১৮; মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হা/৯৮৪০।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
২২৬
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلانَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا شُعْبَةُ ، عَنْ أَبِي بِشْرٍ ، قَالَ : سَمِعْتُ سَعِيدَ بْنَ جُبَيْرٍ ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ، قَالَ : " كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَصُومُ حَتَّى نَقُولَ مَا يُرِيدُ أَنْ يُفْطِرَ مِنْهُ ، وَيُفْطِرُ حَتَّى نَقُولَ مَا يُرِيدُ أَنْ يَصُومَ مِنْهُ ، وَمَا صَامَ شَهْرًا كَامِلا مُنْذُ قَدِمَ الْمَدِينَةَ إِلا رَمَضَانَ " .
ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কখনো এমনভাবে রোযা রাখতেন যে, আমরা বলতাম, এ মাসে হয়তো তিনি আর রোযা ভাঙ্গবেন না। যখন রোযা ছেড়ে দিতেন, তখন (তাঁর অবস্থা দেখে) আমরা বলতাম, তিনি বুঝি আর রোযা রাখবেন না। মদিনায় হিজরতের পর রমযান মাস ছাড়া তিনি আর কখনো পূর্ণ মাস রোযা রাখেননি।[১]
[১] মুসনাদে আহমাদ, হা/১৯৯৮; মুসনাদুত তায়ালুসী, হা/২৭৪৮।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
২২৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ ، عَنْ سُفْيَانَ ، عَنْ مَنْصُورٍ ، عَنْ سَالِمِ بْنِ أَبِي الْجَعْدِ ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ ، عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ ، قَالَتْ : " مَا رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَصُومُ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ إِلا شَعْبَانَ وَرَمَضَانَ " .
উম্মু সালামা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে রমযান ও শাবান মাস ছাড়া অন্য কোন মাসে একাধিক্রমে রোযা রাখতে দেখিনি।[১]
[১] সুনানে নাসাঈ, হা/২১৭৫; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৬৬০৪; শারহুস সুন্নাহ, হা/১৭২০; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/১০২৫।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
২২৮
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدَةُ ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو سَلَمَةَ ، عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ : " لَمْ أَرَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , يَصُومُ فِي شَهْرٍ أَكْثَرَ مِنْ صِيَامِهِ لِلَّهِ فِي شَعْبَانَ ، كَانَ يَصُومُ شَعْبَانَ إِلا قَلِيلا , بَلْ كَانَ يَصُومُهُ كُلَّهُ " .
আয়েশা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে শাবান মাস ছাড়া আর কোন মাসে এত অধিক রোযা রাখতে দেখিনি। তিনি শাবান মাসের অধিকাংশ দিনই রোযা রাখতেন। বরং প্রায় সারা মাসই তাঁর রোযা অবস্থায় কাটত।[১]
[১] সুনানে নাসাঈ, হা/২১৭৮; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৫৩৫৭; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৩৫১৬; বায়হাকী, হা/৮২১২; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/১০২৪।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
📌পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) প্রতি মাসে ৩টি করে রোযা রাখতেন
২২৯
حَدَّثَنَا الْقَاسِمُ بْنُ دِينَارٍ الْكُوفِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُوسَى ، وَطَلْقُ بْنُ غَنَّامٍ ، عَنْ شَيْبَانَ ، عَنْ عَاصِمٍ ، عَنْ زِرِّ بْنُ حُبَيْشٍ ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ ، قَالَ : " كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , يَصُومُ مِنْ غُرَّةِ كُلِّ شَهْرٍ ثَلاثَةَ أَيَّامٍ , وَقَلَّمَا كَانَ يُفْطِرُ يَوْمَ الْجُمُعَةِ " .
আবদুল্লাহ (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) প্রতি মাসের প্রথমদিকে তিনটি করে রোযা রাখতেন। জুমু’আর দিন খুব কমই ইফতার করতেন।[১]
[১] মুসনাদে আহমাদ, হা/৩৮৬০; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৩৬৪৫; মুসনাদুল বাযযার, হা/১৮১৮ শারহুস সুন্নাহ, হা/১৮০৩: জামেউস সগীর, হা/৯১০৩।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
📌পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সোম ও বৃহস্পতিবার রোযা রাখতেন
২৩০
حَدَّثَنَا أَبُو حَفْصٍ عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ دَاوُدَ ، عَنْ ثَوْرِ بْنِ يَزِيدَ ، عَنْ خَالِدِ بْنِ مَعْدَانَ ، عَنْ رَبِيعَةَ الْجُرَشِيِّ ، عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ : " كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَتَحَرَّى صَوْمَ الاثْنَيْنِ وَالْخَمِيسِ " .
আয়েশা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (ﷺ) সোম ও বৃহস্পতিবারের রোযার প্রতি খুবই খেয়াল রাখতেন।[১]
[১] সুনানে নাসাঈ, হা/২৩৬১; ইবনে মাজাহ, হা/১৭৩৯; বায়হাকী, হা/৮২৩০; মুসনাদে হা/২৪৭৯২; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/১০৪৪।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
২৩১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ رِفَاعَةَ ، عَنْ سُهَيْلِ بْنِ أَبِي صَالِحٍ ، عَنْ أَبِيهِ ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، قَالَ : " تُعْرَضُ الأَعْمَالُ يَوْمَ الاثْنَيْنِ وَالْخَمِيسِ , فَأُحِبُّ أَنْ يُعْرَضَ عَمَلِي وَأَنَا صَائِمٌ " .
আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (ﷺ) বলেছেন, সোম বা বৃহস্পতিবার দিন মানুষের আমল আল্লাহর দরবারে পেশ করা হয়। আর রোযা অবস্থায় আমার আমল আল্লাহর কাছে পেশ করা হোক- এটা আমি পছন্দ করি।[১]
[১] শারহুস সুন্নাহ, হা/১৭৯৯।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
২৩২
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلانَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو أَحْمَدَ ، وَمُعَاوِيَةُ بْنُ هِشَامٍ ، قَالا : حَدَّثَنَا سُفْيَانُ ، عَنْ مَنْصُورٍ ، عَنْ خَيْثَمَةَ ، عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ : " كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَصُومُ مِنَ الشَّهْرِ السَّبْتَ وَالأَحَدَ وَالاثْنَيْنَ ، وَمِنَ الشَّهْرِ الآخَرِ الثُّلاثَاءَ وَالأَرْبِعَاءَ وَالْخَمِيسَ " .
আয়েশা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (ﷺ) কোন মাসে শনি, রবি ও সোম এবং কোন মাসে মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার দিন রোযা রাখতেন।[১]
[১] তাহযীবুল আছার, হা/৯৮৪; মুসনাদে উমার ইবনে খাত্তাব, হা/১২২০।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
২৩৩
حَدَّثَنَا أَبُو مُصْعَبٍ الْمَدِينِيُّ ، عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ ، عَنْ أَبِي النَّضْرِ ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ ، عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ : " مَا كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَصُومُ فِي شَهْرٍ أَكْثَرَ مِنْ صِيَامِهِ فِي شَعْبَانَ " .
আয়েশা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) শাবান মাস ছাড়া অন্য কোন মাসে এর চেয়ে বেশি রোযা রাখতেন না।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
২৩৪
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلانَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا شُعْبَةُ ، عَنْ يَزِيدَ الرِّشْكِ ، قَالَ : سَمِعْتُ مُعَاذَةَ ، قَالَتْ : قُلْتُ لِعَائِشَةَ : أَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , يَصُومُ ثَلاثَةَ أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ ؟ قَالَتْ : " نَعَمْ " . قُلْتُ : مِنْ أَيِّهِ كَانَ يَصُومُ ؟ قَالَتْ : " كَانَ لا يُبَالِي مِنْ أَيِّهِ صَامَ "
ইয়াযীদ আর রিশক (رحمة الله) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি মুআয (رضي الله عنه) কে বলতে শুনেছি যে, তিনি বলেন, আমি আয়েশা (رضي الله عنه) কে জিজ্ঞেস করলাম, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কি প্রতি মাসে তিনটি করে রোযা রাখতেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমি বললাম, কোন কোন তারিখে রোযা রাখতেন? তিনি বললেন, কোন নির্দিষ্ট তারিখ ছিল না। সুযোগ পেলেই তিনি রোযা রাখতেন।[১]
[১] শারহুস সুন্নাহ, হা/১৮০২; মুসনাদুত তায়ালুসী, হা/১৬৭৭; মুস্তাখরাকে ইবনে আওয়ানা, হা/২৩৭৩; মুসনাদে ইসহাক ইবনে রাহওয়াই, হা/১৩৯৩।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
📌পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আশুরার রোযা রাখতেন
২৩৫
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ إِسْحَاقَ الْهَمْدَانِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ سُلَيْمَانَ ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ ، عَنْ أَبِيهِ ، عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ : " كَانَ عَاشُورَاءُ يَوْمًا تَصُومُهُ قُرَيْشٌ فِي الْجَاهِلِيَّةِ ، وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَصُومُهُ ، فَلَمَّا قَدِمَ الْمَدِينَةَ صَامَهُ وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ ، فَلَمَّا افْتُرِضَ رَمَضَانُ كَانَ رَمَضَانُ هُوَ الْفَرِيضَةُ وَتُرِكَ عَاشُورَاءُ ، فَمَنْ شَاءَ صَامَهُ وَمَنْ شَاءَ تَرَكَهُ " .
আয়েশা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জাহেলী যুগে কুরাইশরা আশুরার দিন রোযা রাখত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-ও হিজরতের পূর্বে আশুরার রোযা রাখতেন। মদিনায় হিজরতের পরও তিনি আশুরার রোযা রাখতেন এবং এ রোযা রাখার নির্দেশ দিতেন। অতঃপর রমযানের রোযা ফরয করা হলে তা ফরযে পরিণত হয় এবং আশুরা ছেড়ে দেয়া হয়। সুতরাং যার ইচ্ছা সে তা রাখতে পারে, আবার যার ইচ্ছা ছেড়ে দিতে পারে।[১]
[১] মুয়াত্তা ইমাম মালেক, হা/৬৬২; সহীহ বুখারী, হা/২০০২ সহীহ মুসলিম, হা/২৬৯৮; আবু দাউদ, হা/২৪৪৪; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৩৬২১; মুসনাদে আহমাদ, হা/৬২৯২; বায়হাকী, হা/৮১৯৫; মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হা/৯৪৪৭; সিলসিলা সহীহাহ, হা/৩৫৩১।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
📌পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর আমল ছিল নিয়মিত
২৩৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا سُفْيَانُ ، عَنْ مَنْصُورٍ ، عَنِ إِبْرَاهِيمَ ، عَنْ عَلْقَمَةَ ، قَالَ : سَأَلْتُ عَائِشَةَ ، أَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , يَخُصُّ مِنَ الأَيَّامِ شَيْئًا ؟ قَالَتْ : " كَانَ عَمَلُهُ دِيمَةً ، وَأَيُّكُمْ يُطِيقُ مَا كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , يُطِيقُ " .
আলক্বামা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আয়েশা (رضي الله عنه) কে জিজ্ঞেস করলাম, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কি ইবাদাতের জন্য কোন দিনক্ষণ নির্দিষ্ট করতেন? তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর আমল ছিল সর্বকালীন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যেমন সামর্থ্যবান ছিলেন, তোমাদের মধ্যে এমন সামর্থ্যবান কেউ আছে কি?[১]
[১] সহীহ বুখারী, হা/১৯৮৭ সহীহ মুসলিম, হা/১৮৬৫: আবু দাউদ, হা/১৩৭২; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হা/১২৮১; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৩৬৪৭; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৫৬০৩; বায়হাকী, হা/৮২৫৫।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
২৩৭
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ إِسْحَاقَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدَةُ ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ ، عَنْ أَبِيهِ ، عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ : دَخَلَ عَلَيَّ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَعِنْدِي امْرَأَةٌ , فَقَالَ : " مَنْ هَذِهِ ؟ " قُلْتُ : فُلانَةُ لا تَنَامُ اللَّيْلَ ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " عَلَيْكُمْ مِنَ الأَعْمَالِ مَا تُطِيقُونَ ، فَوَاللَّهِ لا يَمَلُّ اللَّهُ حَتَّى تَمَلُّوا " ، وَكَانَ أَحَبَّ ذَلِكَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الَّذِي يَدُومُ عَلَيْهِ صَاحِبُهُ .
আয়েশা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমার কাছে আসলেন। সে সময় জনৈক মহিলা আমার কাছে বসা ছিল। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, এ মহিলাটি কে? আমি বললাম, সে অমুক। সে সারা রাত বিনিদ্র অবস্থায় কাটায়। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তোমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী আমল করা উচিত। আল্লাহর কসম! তিনি নেকী দান করতে কখনো কুণ্ঠিত হন না, যতক্ষণ না তোমরা আমলে কুণ্ঠিত হও। আয়েশা (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এমন কাজ করতেই পছন্দ করেন, যা লোকেরা সর্বদা করতে সামর্থ্য রাখে।[১]
1] ইবনে মাজাহ, হা/৪২৩৮; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হা/১২৮২; মুসনাদে আবু ইয়ালা, হা/৪৬৫১; বায়হাকী, হা/৪৫১৪; শারহুস সুন্নাহ, হা/৯৩৩।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
২৩৮
حَدَّثَنَا أَبُو هِشَامٍ مُحَمَّدُ بْنُ يَزِيدَ الرِّفَاعِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا ابْنُ فُضَيْلٍ ، عَنِ الأَعْمَشِ ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ ، قَالَ : سَأَلْتُ عَائِشَةَ ، وَأُمَّ سَلَمَةَ ، أَيُّ الْعَمَلِ كَانَ أَحَبَّ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ؟ قَالَتَا : " مَا دِيمَ عَلَيْهِ , وَإِنْ قَلَّ " .
আবু সালিহ থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আয়েশা (رضي الله عنه) ও উম্মে সালামার কাছে জিজ্ঞেস করলাম, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে প্রিয় কাজ কোনটি ছিল? তাঁরা উভয়েই বললেন, যে আমল সব সময় করা হয়, তা যত কমই হোক না কেন।[১]
[১] মুয়াত্তা ইমাম মালেক, হা/৪১৯; সহীহ বুখারী, হা/৬৪৬৫; সহীহ মুসলিম, হা/১৮৬৪ সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৩২৩; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৪০৮৯; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হা/১২৮৩; বায়হাকী, হা/৪৩৪২।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
📌পরিচ্ছদঃ
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর রাতের আমল
২৩৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ صَالِحٍ ، قَالَ : حَدَّثَنِي مُعَاوِيَةُ بْنُ صَالِحٍ ، عَنْ عَمْرِو بْنِ قَيْسٍ ، أَنَّهُ سَمِعَ عَاصِمَ بْنَ حُمَيْدٍ ، قَالَ : سَمِعْتُ عَوْفَ بْنَ مَالِكٍ , يَقُولُ : كُنْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , لَيْلَةً فَاسْتَاكَ , ثُمَّ تَوَضَّأَ , ثُمَّ قَامَ يُصَلِّي ، فَقُمْتُ مَعَهُ فَبَدَأَ فَاسْتَفْتَحَ الْبَقَرَةَ , فَلا يَمُرُّ بِآيَةِ رَحْمَةٍ إِلا وَقَفَ فَسَأَلَ ، وَلا يَمُرُّ بِآيَةِ عَذَابٍ إِلا وَقَفَ فَتَعَوَّذَ ، ثُمَّ رَكَعَ فَمَكَثَ رَاكِعًا بِقَدْرِ قِيَامِهِ ، وَيَقُولُ فِي رُكُوعِهِ : " سُبْحَانَ ذِي الْجَبَرُوتِ وَالْمَلَكُوتِ , وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْعَظَمَةِ " ، ثُمَّ سَجَدَ بِقَدْرِ رُكُوعِهِ ، وَيَقُولُ فِي سُجُودِهِ : " سُبْحَانَ ذِي الْجَبَرُوتِ وَالْمَلَكُوتِ , وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْعَظَمَةِ " ثُمَّ قَرَأَ آلَ عِمْرَانَ ثُمَّ سُورَةً , يَفْعَلُ مثل ذَلِكَ .
আসিম ইবনে হুমায়দ (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আওফ ইবনে মালিক (رضي الله عنه)-কে বলতে শুনেছি, আমি এক রাতে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সঙ্গে ছিলাম। তিনি মিসওয়াক করলেন। পরে ওযু করলেন এবং সালাতে দাঁড়ালেন। আমিও তাঁর সঙ্গে দাঁড়ালাম। তিনি সূরা বাকারা আরম্ভ করলেন। এরপর রহমতের আয়াত পাঠ করে চুপ থাকলেন এবং রহমত প্রার্থনা করলেন। এরপর আযাবের আয়াত পাঠ করে চুপ থাকলেন এবং মুক্তি কামনা করেন। তারপর রুকূ করলেন এবং এ দু’আ পাঠ করলেন,
سُبْحَانَ ذِي الْجَبَرُوتِ وَالْمَلَكُوتِ , وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْعَظَمَةِ
“সুবহা-নাযিল জাবারুতি ওয়াল মালাকূতি ওয়াল কিবরিয়া-ই ওয়াল আযামতি”।
অর্থাৎ আমি পবিত্রতা ঘোষণা করছি ঐ সত্তার, যিনি মাহাত্ম্য, রাজত্ব, বড়ত্ব ও সম্মানের অধিকারী।
অতঃপর রুকূর সমপরিমাণ সময় সিজদা করেন এবং উপরোক্ত দু’আটি আবারও পাঠ করেন। অতঃপর দ্বিতীয় রাক’আতে সূরা আলে ইমরান পাঠ করেন। তারপর একেক রাক’আতে একেক সূরা পাঠ করেন।[১]
[১] আবু দাউদ, হা/৮৭৩; সুনানে নাসাঈ, হা/১১৩২; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৪০২৬; মুজামুল কাবীর লিত তাবারানী, হা/১৪৫৪০; বায়হাকী, হা/৩৫০৪; শারহুস সুন্নাহ, হা/৯১২।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস