হজরত ঈসা (عليه السلام) ও রসুলেপাক (ﷺ)
হজরত ঈসা (عليه السلام) অন্ধকে চক্ষুদান, কুষ্ঠরোগীকে সুস্থ করে দেয়া এবং মৃতকে জীবিত করে দেয়া ইত্যাদি করতে পারতেন। আমাদের নবী (ﷺ) কেও এরকম মোজেজা দেয়া হয়েছিলো। দেখা যায়, তিনি হজরত আবু কাতাদা (رضي الله عنه) এর চোখ, যা কোটর থেকে বেরিয়ে পড়েছিলো, তা যথাস্থানে সংস্থাপন করে দিয়েছিলেন এবং তা পূর্বের চেয়ে আরও ভালো হয়েছিলো। বর্ণিত আছে, হজরত মুআয ইবনে আকরা (رضي الله عنه) এর স্ত্রী কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তিনি রসুলে আকরম (ﷺ) এর দরবারে এসে এ ব্যাপারে আর্জি পেশ করলে রসুলে আকরম (ﷺ) আপন হাতের লাঠি দ্বারা কুষ্ঠরোগাক্রান্ত স্থানটি ঘষে দিলেন। তৎক্ষণাৎ তাঁর কুষ্ঠরোগ ভালো হয়ে গেলো।
মাওয়াহেবে লাদুন্নিয়াতে ইমাম ফখরুদ্দীন রাযী (رحمة الله) এবং দালায়েলুন্নবুওয়াতে ইমাম বায়হাকী (رحمة الله) একটি ঘটনা উদ্ধৃত করেছেন এভাবে— এক ব্যক্তি রসুলে আকরম (ﷺ) এর কাছে এসে বললো, আমি ইমান আনবো যদি আপনি আমার মৃত কন্যা সন্তানটিকে জীবিত করে দিতে পারেন। রসুলেপাক (ﷺ) তখন তার কন্যার কবরের কাছে গিয়ে ডাক দিলেন। সঙ্গে সঙ্গে কন্যাটি কবর থেকে বের হয়ে বললো, আমি আপনার খেদমতে হাজির হে আল্লাহর রসুল। এরকম মৃতকে জীবিত করা রসুলেপাক (ﷺ) কর্তৃক কয়েকবার সংঘটিত হয়েছিলো। অধিকন্তু তাঁর পবিত্র হতের মধ্যে পাথরের তসবীহ পাঠ, হাজরে আসওয়াদের সালাম প্রদান এবং তাঁর বিচ্ছেদে উস্তুনে হান্নানার বিলাপ ইত্যাদি ব্যাপার তো মৃতকে জীবিত করার চেয়েও অধিকতর বিস্ময়কর। হজরত ঈসা (عليه السلام)কে আকাশে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আর আমাদের নবী (ﷺ)কে মেরাজের রাত্রিতে আকাশের চেয়েও ঊর্ধ্বে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেই মাকামে কারও পক্ষেই যাওয়া সম্ভব হয়নি। শুধু তাই নয়, সেখানে নেওয়ার পর তাঁকে অধিকতর মর্যাদায় বিভূষিত করা হয়েছে। যেমন, আল্লাহ্ সুবহানাহু কুদ্দুস এর সাথে একান্ত আলাপন এবং বিভিন্ন প্রকারের কুদরত অবলোকন ইত্যাদি। মোটকথা সমস্ত আম্বিয়াকেরামকে যতো প্রকারের মোজেজা প্রদান করা হয়েছিলো তা সবই রসুলে আকরম (ﷺ) কে অধিকতর পূর্ণতার ভিত্তিতে প্রদান করা হয়েছে।
➥[কিতাবঃ মাদারেজুন নবুওয়াত। মূলঃ ইমাম আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী (رحمة الله)]
© | সেনানী এপ্স |