গুণবাচক নামের আহবান
আল্লাহ তায়ালার নিকট হুজুর আকরাম (ﷺ) এর সম্মান ও মর্যাদা এরকম ছিলাে যে, আল্লাহতায়ালা তাকে কখনও ‘ইয়া মােহাম্মদ' বলে আহ্বান বা সম্বােধন করেন নি। বরং সম্বোধন ও আহবান করার প্রয়ােজন যেখানে দেখা দিয়েছে, সেখানে তিনি তাঁর হাবীব (ﷺ) কে নবুওয়াত বা রেসালতের গুণবাচক শব্দের মাধ্যমে আহ্বান করেছেন। যেমন আল্লাহ তায়ালা আহ্বান করেছেন يا ايها نبي 'ইয়াআইয়্যুহান্নাবিয়্যু' বা يا ايها رسول 'ইয়াআইয়্যুহার রাসূলু' এরূপ বলে। তিনি ব্যতীত অন্যান্য নবীগণকে কিন্তু আল্লাহ তায়ালা সরাসরি নাম ধরে আহবান করেছেন। যেমন বলেছেন ইয়া আদামু, ইয়া নূহ, ইয়া মূসা, ইয়া ঈসা। পক্ষান্তরে আল্লাহ তায়ালা তার হাবিব (ﷺ) কে ডাক দিয়েছেন ইয়া আইয়ুহাল মুযাম্মিল এবং ইয়া আইয়ুহাল মুদ্দাসসির বলে। এ ধরনের প্রেমাপুত শব্দের মাধ্যমে সম্বোধন করা যওক ও মহব্বতের নিদর্শন। আবু নঈম হজরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, আদম (عليه السلام) কে যখন ভারতবর্ষের মাটিতে অবতরণ করানাে হলাে, তখন তিনি খুব বিচলিত বােধ করলেন। এমতাবস্থা দেখে হজরত জিব্রাইল (عليه السلام) অবতরণ করলেন এবং আযান দিতে শুরু করলেন। আযানের মধ্যে তিনি আল্লাহু আকবার আল্লাহুআকবার দু'বার বললেন।
আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ দুবার বললেন। আশহাদু আন্না মােহাম্মাদার রসূলুল্লাহ দু'বার বললেন। -আল হাদীছ।
নবী করীম (ﷺ) এর ইসমে শরীফ আরশের উপর, প্রতিটি আকাশের উপর, জান্নাতের প্রত্যেকটি জায়গায়, এমনকি হুরগণের কাধে কাঁধে পর্যন্ত লিপিবদ্ধ রয়েছে। জান্নাতে এমন কোনা বৃক্ষ নেই যার পাতায় পাতায় "লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মদুর রাসুলুল্লাহ" লিপিবদ্ধ নেই। বাযযার (رحمة الله) হজরত ইবন ওমর (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেছেন তিনি বলেন, হুজুর আকরম (ﷺ) এরশাদ করেছেন, আমাকে যখন আকাশে নিয়ে আসা হলাে, তখন প্রত্যেক আকাশে আমার নাম লিপিবদ্ধ দেখলাম। সর্বত্রই হজরত হাসসান ইবনে সাবিত (رضي الله عنه) এর পংক্তি আরশের অধিপতি যিনি তার নাম মাহমুদ আর তার হাবীব (ﷺ) এর নাম মােহাম্মদ। আল্লাহতায়ালার যতাে আসমাউল হুসনা আছে তার মধ্যে সত্তুরখানা নাম নিয়ে হুজর আকরম (ﷺ) এর নামকরণ করেছেন। আসমায়ে শরীফা অধ্যায় তার বর্ণনা করা হবে ইনশাআল্লাহ।
➥[কিতাবঃ মাদারেজুন নবুওয়াত। মূলঃ ইমাম আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী (رحمة الله)]
© | সেনানী এপ্স |