হযরত জিব্রাইল (عليه السلام) এর বয়স সংক্রন্ত হাদিসটি কি জাল?
সুরা তাওবার আয়াত নং – ১২৮ এ অল্লাহ্ বলেন ” তোমাদের নিকট এক মহান রাসূলের আগমন হয়েছে” এই আয়াতের তাফসীর প্রসঙ্গে নবী করিম (ﷺ) কোথা হতে আসলেন সে সম্পর্কেঃ
🕋 নির্ভরযোগ্য হাদিসে বর্নিত আছে যে :
وعن ابلى هريرة رضى الله عنه ان رسول الله صلى الله عليه و سلم سائل جبريل عليه السلام فقال يا جبريل كم عمرك من السنين فقال يا رسول الله مست اعلم غير ان فى الحجاب الرابع نجما يطلع في سبعين الف سنة مرة رايته اثنين و سبعين الف مرة فقال يا جبريل و عزة ربى جل جلا له انا ذالك الكوب-
অর্থ : ® হযরত আবু হোরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্নিত,
কোন এক সময় হযরত রাসুল করীম (ﷺ) হযরত জিব্রাঈল (عليه السلام) এর নিকট জিজ্ঞাসা করিলেন " হে জিব্রাইল! তোমার বয়স কত বৎসর হইয়াছে?"
হযরত জিব্রাইল (عليه السلام) উত্তর করিলেন,
" হে আল্লাহর রাসূল! আমি আমার বয়স সম্পর্কে কিছুই বলিতে পারিনা। তবে আমি আপনাকে আমার বয়স সম্পর্কে এতটুকু তথ্য জানাইতে পারি যে, চতুর্থ আসমানে একটি উজ্জ্বল তারকা ছিল, উক্ত তারকাটি ৭০ হাজার বৎসর পর পর আসমানে একবার উদয় হইত। আমি উহাকে ৭২ হাজার বার উদয় হইতে দেখিয়াছি।
তখন নবী করিম (ﷺ) বললেন,
হে জিব্রাঈল! আমার প্রতিপালকের ইজ্জতের কসম। নিশ্চয় আমিই ছিলাম সেই উজ্জ্বল নক্ষত্র বা তারকা ।"
● ইমাম বুখারী (رحمة الله) : আত তাশরীফাতে ফি খাসায়েস ওয়াল মুজিজাত ২/২৫৪ পৃ:
●ইমাম বুখারীর রহমাতুল্লাহি আলাইহি লিখিত : তারিখ উল কাবির
● ইমাম বুরহান উদ্দিন হালাবী শাফেয়ী : সিরাতে হালাবিয়্যাহ ১ম খন্ড:৪৯ পৃ: [ইমাম বুখারীর সুত্রে]
● আল্লামা ইসমাইল হাক্কী : তফসীরে রুহুল বয়ান : ৩/৫৪৩ : সুরা তওবা ১২৮
● আল্লামা শায়খ ইউসুফ নাবহানী : যাওয়াহিরুল বিহার : ৩/৩৩৯ [নিজস্ব সনদে আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে]
● আল্লামা শফী উকাড়ভী : যিকরে হাসীন : ৩০ পৃ:
●ইমাম জালালুদ্দীন আবদুল রহমান (رحمة الله) সিযুতী , খাসায়েসুল কুবরা-১ম খন্ড/১১পৃষ্ঠা
® ইমাম বুরহান উদ্দিন শাফেয়ী (رحمة الله) একজন গ্রহনযোগ্য মুহাদ্দিস। মোল্লা আলী কারি (رحمة الله) শরহে শিফা ১/৩৭ সহ অসংখ্য স্থানে ইমাম হালাবীর মতামত উল্লেখ্য করেছেন।
® ইমাম হালাবী তার সিরাতে হালাবিয়্যার প্রথমে বলেন, সীরাত গ্রন্থ সমুহে সহিহ, সাক্বীম, দ্বইফ, বালাগ, মুরসাল, মুনকাতা ও মু'দাল হাদিস সমুহ একত্রিত করা হয় কিন্তু জাল বা মওদ্বু হাদিস নয়।
● সিরাতে হালাবিয়্যাহ : ১ম :৭ পৃ
অপরদিকে, (আরবি = নাজম) মানে হল তারকা যা রাসুলুল্লাহ (ﷺ) এর অন্যতম নাম মোবারক। অনেক তফসীরকারকগন কুরআন পাকের সুরা ""ওয়ান্নাজম"" এর মধ্যে ""আন-নাজম"" বলতে রাসুলুল্লাহ (ﷺ) কে বুঝিয়েছেন। যা উক্ত হাদিসের মধ্যে এক শক্তিশালী যুগসুত্রও স্থাপন করে।
🕋 ইমাম জাফর সাদেক (رضي الله عنه) বলেন, আন-নাজম বলতে রাসুলুল্লাহ (ﷺ) কে বুঝানো হয়েছে।
● ইমাম কুরতুবী : জামিউল আহকামুল কুরআন : ১৭/৮৩ পৃ:
● ইমাম বাগভী : মুয়ালিমুত তানযিল : ৭/৪০০ পৃ:
● ইমাম আলুসী : তফসীরে রুহুল মা'য়ানী : ১৪/৪৪ পৃ:
● কাজী সানাউল্লাহ পানিপথী : তফসীরে মাযহারী : ৯/১০৩ পৃ:
● ইমাম সাভী : তফসীরে সাভী : ৪/১২৯ পৃ:
● ইমাম খাযেন : তফসীরে খাযেন : ৪/২০৩ পৃ:
● ইমাম ইসমাইল হাক্কী : তফসীরে রুহুল বয়ান : ৯/২০৮ পৃ:
[] প্রচলিত জাল হাদিস বইয়ের ২২৩ পৃষ্ঠায় মাওলানা মতিউর রহমান বিকৃত করে একটি সহীহ হাদিসকে জাল প্রমাণ করার হীন চেষ্টা করেছেন । অনুরুপভাবে করেছেন আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর তার জঘন্য কিতাব “হাদিসের নামে জালিয়াতি” এর ২৬২ পৃষ্ঠায় । তারা কোন একটা প্রমাণও উপস্থাপনও করতে পারে নাই যে, উক্ত হাদিসটি জাল। তাই ঐ ওহাবী লেখকদের যোগ্য জবাব দেওয়া হল ।