পবিত্র ভ্রু যুগল


হুজুর আকরাম (ﷺ) এর মোবারকের বর্ণনায় হযরত আলী (কঃ) বলেন, মহানবী (ﷺ) এর পেশানী মুবারক উজ্জ্বল এবং দুর্যোগ সম্মিলিত ছিলাে। مقرون الحاجبين 'মাকরুনুল হাজেবাইন' এর অর্থ ভ্রু যুগলের পশম পরস্পরে মিলিত থাকা। তবে নবী করীম (ﷺ) এর হুলীয়া শরীফ বর্ণনাকারী গণের মধ্যে অন্যতম সাহাবি হজরত ইবনে আবি হালা (رضي الله عنه) এর বর্ণনায় আছে যুগল মিলিত নয়। এ দু'খানা বর্ণনার মধ্যে পরস্পর দ্বন্দ্ব পরিলক্ষিত হয়।


সীরাত বিশেষজ্ঞগণ বলেন, বিশুদ্ধ বিবরণ এটাই যে, হুজুর পাক (ﷺ) এর দ্রুযুগল সম্মিলিত ছিলেনা। বাহ্যত এ সম্মিলিত খুব ঘন, ভ্রু যুগলের পশম খুব নিবিড়ভাবে মিলিত হয়ে গিয়েছিলাে—এমনটি নয়। আবার দ্রু যুগলের মধ্যবর্তী স্থান এমন খালি ছিলেনা যাতে ঐ দুখিনী পরস্পর আলাদা মনে হয়। বরং মধ্যবর্তীস্থানে হালকা কিছু পশম ছিলাে। এমনিভাবে হাদীস দ্বয়ের পারস্পরিক দ্বন্দ্ব নিরসন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা সর্বজ্ঞ।


সীরাত বিশেষজ্ঞগণ বলেন, হুজুর পাক (ﷺ) এর যুগলের মধ্যবর্তী স্থানে একটি রগ ছিলে, যা রাগান্বিত অবস্থায় ভেসে উঠতে। তদুপরি হজরত ইবন হালা (رضي الله عنه) কর্তৃক বর্ণিত হাদিসে এসেছে, লম্বা ধনুক সদৃশ, অধিক চুল এবং টানাটানা ভ্রু। অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, টানা টানা ভ্রু ঘন পশমবিশিষ্ট। কামুস ও সেহাহ কিতাবে زج'যজ্জ' শব্দের অর্থ করা হয়েছে সরু ভ্রু বা লম্বা ভ্রু। যেমন—এজাতীয় ভ্রুকে ফার্সী ভাষায় ধনুক সদৃশ ভ্রু বলা হয়। বায়হাকী শরীফে কোন কোন সাহাবী থেকে বর্ণিত আছে—আমি রসূল করীম (ﷺ) কে দেখেছি তার চেহারা মুবারক খুবই সুন্দর, ললাট মুবারক বড়াে এবং ভ্রু মুবারক সরু ছিলাে। ভ্রু মুবারক সরু থাকার মানে হচ্ছে দ্রুর পশমগুলি খােপার্বাধা ছিলােনা। ভ্রু মুবারকের পশম অধিক ছিলাে। এর অর্থ, পশম কোথাও কম কোথাও খালি—এমনটি ছিলােনা। বিক্ষিপ্তও ছিলােনা। এবড়াে থেবড়ােও ছিলােনা।


➥[কিতাবঃ মাদারেজুন নবুওয়াত। মূলঃ ইমাম আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী] 

© | সেনানী এপ্স |

Top