অঙ্গসৌষ্ঠব
হুজুর আকরাম (ﷺ) এর অঙ্গসৌষ্ঠব ছিলে পবিত্র বাগান ও আকর্ষণীয় বাগিচার বৃক্ষের শাখা সদৃশ। অর্থাৎ মসৃণ, সঠিক ও আঁটসাট ছিলে। খর্বাকৃতি না আবার অধিক লম্বা না। তবে দীর্ঘ তার দিকেই টান টান ছিল। সুতরাং হাদীসে এসেছে, কওমের মধ্যে তিনি ছিলেন মধ্যমাকৃতির দেহবিশিষ্ট। ربع
'রাউব' শব্দের ر ‘র’ বর্ণে যবর বা সাকিন যোগে অর্থ হচ্ছে মধ্যমাকৃতির দেহ। অন্য এক হাদীছে এসেছে, বেঁটে দেহের চেয়ে লম্বা আবার লম্বা দেহের চেয়ে খাটো। এর অর্থ হচ্ছে বেঁটে হওয়ার চাইতে কিছুটা লম্বা। অর্থাৎ দীর্ঘ তার দিকে ঈষৎ টানটান ছিল তার দেহ মুবারক। مشذب 'মুশযাব' শব্দটি মীম বর্ণ পেশ, সিনে যবর ও যের বর্ণে তাশদীদ সহকারে—যার অর্থ অনেক লম্বা যা দর্শনে ভীতি ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। হযরত ইবনে আবী হালা (رضي الله عنه) এর বর্ণিত হাদীসে আছে, তার দেহ মাত্রায় দীর্ঘ ছিলােনা। ممغط 'মুমাযগগেৎ’ শব্দটি প্রথম মীম বর্ণে পেশ, দ্বিতীয় মিম যবর ও গান বর্ণে তাশদীদ সহকারে যের। আবার পরে তাফঈলের ক্রমে মাফউল হিসেবে গাইন বর্ণে তাশদীদ যের দিয়ে পড়া যায়। অর্থ এমন দেহ যা শেষ সীমার লম্বা। আবার কুজো ব্যক্তির ন্যায় খাটো নয়। متردد ‘মুতারদেদ’ এমন ব্যক্তিকে বলা হয়, তার দেহের কিয়দাংশ বেরিয়ে আসে। যেমন কুঁজো ব্যক্তি। কেউ কেউ আবার এই বৈশিষ্ট্যটি দ্বারা তিনি যে খাটো ছিলেন তাই সাব্যস্ত করে থাকেন। তবে সেটা খুব বেশি নয়। অবশ্যই মধ্যমাকৃতি ও ভারসাম্য ময় দীর্ঘ। আবার কোন কোন হাদীসে এসেছে, তার দেহ মোবারক অন্যান্যদের থেকে স্বতন্ত্র ধরনের লম্বা ছিলেন। হযরত আলী মর্তুজা (رضي الله عنه) এর হাদীসে আছে, তিনি খুব বেশী লম্বা দেহের অধিকারী ছিলেন না। তবে লম্বার দিকে টানটান হওয়ার কারণে বেঁটে অবস্থার চাইতে উঁচু ছিলেন। তিনি যখন কোনাে সম্প্রদায়ের লোকের কাছে যেতেন তখন তাদের মধ্যে যারা বেঁটে তার তার নীচে পড়ে থাকতাে।
উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা (رضي الله عنه) এর বর্ণিত হাদীস আছে, রাসূল (ﷺ) যখন কোথাও একা একা থাকতেন তখন তাঁকে মধ্যমাকৃতির দেখা যেতাে। আর যখন অন্যান্য লােকদের সঙ্গে থাকতেন তখন লম্বাকৃতির মনে হতে। উক্ত অবস্থায় লম্বা দেখাতে বলেই তিনি লম্বা ছিলেন —এ কথা বলা হয়েছে। দুই ব্যক্তির মধ্যে যখন তিনি দাঁড়াতেন তখন উভয়ের তুলনায় তাকে লম্বা দেখা যেতাে। আবার যখন সেই দুটি লোক থেকে ভিন্ন হতেন তখন তাকে দেখা যেতে মধ্যমাকৃতির। তিনি যখন কোন মজলিসে দন্ডায়মান হবেন, তখন তার স্কন্ধ দ্বয় উচু থেকে উচ্চতর দেখা যেত।
➥[কিতাবঃ মাদারেজুন নবুওয়াত। মূলঃ ইমাম আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী]
© | সেনানী এপ্স |