পবিত্র কণ্ঠস্বর
হুজুর আকরম (ﷺ) এর কণ্ঠস্বর ছিলাে সীমাহীন প্রেমে ভরা। তাঁর পবিত্র মুখনিসৃত ধ্বনি ও তার মাধুর্য অন্য সকল আওয়াযের চেয়ে সুন্দর ও চিত্তাকর্ষক ছিলাে। তার চেয়ে সুন্দর আওয়াজ ও মিষ্টি কথার কোনাে মানুষ পৃথিবীতে আসেনি। তাঁর কালাম মুবারকের প্রশংসায় এর বর্ণনা এসেছে اصدق الناس لجة 'আসদাকুন্নাছে লজজাতান। কেননা তার রসনা মােবারক মাখরাজ থেকে শব্দ বের করে এনে যথাযথ উচ্চারণ করতে যেমন সক্ষম ছিলাে, তেমনি ছিল তার বাক্য সঠিকতা, বিশুদ্ধতা ও শ্রেষ্ঠত্ব। আজ পর্যন্ত কেউই উক্ত গুণাবলী অর্জনে সক্ষম হননি।
সাইয়েদুনা হজরত আনাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত আছে, আল্লাহতায়ালা এমন কোন নবী কে পৃথিবীতে প্রেরণ করেন নি যার কণ্ঠস্বর ও বাক্যাবলী সুন্দর ছিলােনা। আর উক্ত গুণাবলীর দিক দিয়ে আমাদের নবী (ﷺ) ছিলেন সর্বাগ্রে। এমর্মে কোনাে কবি এরকম বলেছেন-
দর দেলেহার উম্মতি তার হক নারাস্ত
বিয়ে যাওয়াজ পয়গম্বর মুজেযাত
অন্য কোন মানুষের কন্ঠ যেখানে পৌঁছাতে ব্যর্থ হতো সেখানে হুজুর পাক (ﷺ) এর পবিত্র জবানের ধ্বনি বিনা বাঁধায় পৌঁছে যেতে। বিশেষ করে নসীহত, ভয় প্রদর্শন বা খওফে খােদা সম্বলিত বক্তৃতায়। সুতরাং পর্দার অন্তরালে নারী সমাজ ও সে আওয়াজ শুনতে পেয়ে। পবিত্র হজ সম্পাদন কালে মিনা প্রান্তরে তিনি যে খুৎবা প্রদান করেছিলেন, সে খুৎবা সমস্ত লোকের কর্ণকুহরে পৌছে গিয়েছিল।। দূরের ও কাছের সবাই আপন আপন অবস্থানে থেকেই সে খােবা শুনতে পেয়েছিলেন। যে হাদীসে এরূপ বর্ণনা এসেছে যে, হুজুর আকরাম (ﷺ) মিনার প্রান্তরে খুতবা দিচ্ছিলেন। আর হজরত আলী (رضي الله عنه) হুজুর (ﷺ) এর আগে আগে যেয়ে তার ব্যাখ্যা করছিলেন। সে হাদীছের ভাবার্থ হচ্ছে, হুজুর (ﷺ) এর বাণীর ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে বুঝিয়ে দেয়া। হুজুর (ﷺ) এর কণ্ঠস্বর ক্ষীণ ছিলাে বলে তিনি উচ্চ আওয়াযে তা শুনিয়ে দিয়েছেন— এমনটি নয়।
➥[কিতাবঃ মাদারেজুন নবুওয়াত। মূলঃ ইমাম আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী]
© | সেনানী এপ্স |