হুবকুক (عليه السلام) এর কিতাবে


হজরত হুবকুক (عليه السلام) একজন নবী ছিলেন। তিনি ছিলেন হজরত দানিয়েল (عليه السلام) এর সমকালীন। তাঁর কিতাবে উলেখ রয়েছে, আলাহ্ তায়ালা বরকত ও পবিত্রতার সাথে ফারান পর্বত থেকে আবির্ভূত হলেন এবং পৃথিবীকে আহমদ (ﷺ) এর প্রশংসা, গুণকীর্তন ও পবিত্রতার দ্বারা ভরপুর করে ছিলেন। তিনিই হচ্ছেন যমীন ও উম্মতের গরদানের মালিক।


উক্ত কিতাবে আরও উলেখ করা হয়েছে, নিশ্চয়ই আকাশ মোহাম্মদ (ﷺ) এর প্রশংসায় উন্মুক্ত হয়েছে আর পৃথিবী ভরপুর হয়েছে তাঁর প্রশংসায়। আরও বলা হয়েছে, তাঁর নূরে যমীন আলোকিত হবে এবং তাঁর অশ্ব সমুদ্রেও চলাচল করবে। হজরত হুবকুক (عليه السلام) এর বাণীতে এরূপ উলেখ আছে, হে মোহাম্মদ (ﷺ)! অতি দ্রুতগতিতে আপনার ধনুক থেকে তীর নিক্ষিপ্ত হবে এবং আপনার নির্দেশে পরিচালিত তীর খুবই পরিতৃপ্ত হবে। উপরোক্ত বাক্যটি একটি কেনায়ামূলক বাক্য। এর অর্থ হচ্ছে, কোনো কাজে প্রাচুর্যের সৃষ্টি হওয়া এবং পরিণামের শেষপ্রান্ত পর্যন্তউপনীত হওয়া। বাক্যটির তাৎপর্য এই দাঁড়ায় যে, নবীকরীম (ﷺ) এর সময়ে দ্বীন ও মিলাতের কাজ চূড়ান্ত পর্যা য়ে উপনীত হবে। যেমন হকতায়ালা পবিত্র কালামে ঘোষণা করেছেন, আজ আমি তোমাদের জন্যআমার দ্বীনকে পরিপূর্ণ করে দিয়েছি এবং আমার নেয়ামত তোমাদের উপর সমাপ্ত করেছি। 


হজরত ওহাব ইবন মুনাববাহ্ (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি প্রাচীন কিতাবসমূহ পাঠ করেছি। তাতে আলাহ্তায়ালা এরকম কসম করেছেন “আমার ইযযত জালালের কসম! আমি আরবের পর্বতরাজির প্রতি স্বীয় নূর অবতীর্ণ করবো, যে নূরের আলোকে মাশরেক থেকে মাগরের পযন্তর্  সবকিছুই নূরানী হয়ে উঠবে। ইসমাইল (عليه السلام) এর আওলাদের মধ্য থেকে আমি একজন আরবী ও উম্মী নবী প্রেরণ করবো যাঁর উম্মতের সংখ্যা হবে আকাশের তারকারাজির মতো এবং পৃথিবীর স্থলভাগ সমতুল্য। তাঁরা সকলেই আমার রবুবিয়াত ও তাঁর রেসালাতের উপর ইমান আনবে। তাঁরা আপন আপন পিতৃপুরুষদের মিথ্যা ধর্ম ত্যাগ করে বেরিয়ে আসবে তাঁর ধর্মের দিকে। 


হজরত মুসা (عليه السلام) একদিন আরয করলেন, হে আলাহ্। তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি, আর তোমার নামসমূহ পবিত্র। নিঃসন্দেহে তুমি আখেরী যমানার নবীকে শ্রেষ্ঠ ইযযতসম্মান ও মর্যাদায় ভূষিত করেছো। আলাহ্তায়ালার তরফ থেকে ঘোষাণা এলো, আমি দুনিয়া ও আখেরাতে আমার সেই নবীর দুশমনদের বদলা গ্রহণ করবো, আমি তাদের প্রতি প্রতিশোধ গ্রহণ করবো। আমি সমস্ত দাওয়াতের উপর তাঁর দাওয়াতকে গালেব ও বিজয়ী করে দেবো। যে তাঁর শরীয়তের বিরুদ্ধাচরণ করবে, আমি তাকে লাঞ্ছিত ও অপমানিত করবো। তাঁর শরীয়ত এমন এক শরীয়ত যা আদল ও ইনসাফ দ্বারা সজ্জিত করা হয়েছে। আদল ও ইনসাফ কায়েম করার জন্যই আমি সে শরীয়তের আত্মপ্রকাশ ঘটাবো। আমার যাতে পাকের কসম, আমি তাঁর ওসীলাতে তামাম উম্মতের জন্য দোযখের আগুন হারাম করে দেবো। দুনিয়াতে আমি (শেষ শরীয়তের) সূচনা করবো ইব্রাহীম (عليه السلام) এর মাধ্যমে। আর তার যবনিকা রচনা করবো মোহাম্মদ (ﷺ) এর মাধ্যমে। যে কেউ তাঁর যমানা পাবে, অথচ তাঁর উপর ইমান আনবে না এবং তাঁর শরীয়তের অনুসরণ করবেনা তাঁর উপর আলাহ্ তায়ালা অসন্তুষ্ট হবেন। 


➥[কিতাবঃ মাদারেজুন নবুওয়াত। মূলঃ ইমাম আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী (رحمة الله)] 



© | সেনানী এপ্স |

Top