শামায়েলে তিরমিজি


৮.রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর পোশাক-পরিচ্ছদ   


📌পরিচ্ছেদঃ

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর প্রিয় পোষাক ছিল কামীস


৪৪

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ حُمَيْدٍ الرَّازِيُّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا الْفَضْلُ بْنُ مُوسَى ، وَأَبُو تُمَيْلَةَ ، وَزَيْدُ بْنُ حُبَابٍ ، عَنْ عَبْدِ الْمُؤْمِنِ بْنِ خَالِدٍ ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُرَيْدَةَ ، عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ ، قَالَتْ : " كَانَ أَحَبَّ الثِّيَابِ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْقَمِيصُ " .


উম্মে সালামা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিতঃ


তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) পোষাক হিসেবে ‘কামীস’ বা জামা সর্বাধিক পছন্দ করতেন। [৪৫]


ব্যাখ্যা : বিভিন্ন হাদীসের ভিত্তিতে বুঝা যায়, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বিভিন্ন ধরনের জামা পরিধান করতেন। তার কোনটির দৈর্ঘ্য ছিল টাখনু অবধি। কোনটি কিছুটা ছোট, যা হাটুর নিমভাগ পর্যন্ত ছিল। আবার কোনটির হাতা ছিল হাতের আঙ্গুলের প্রান্ত পর্যন্ত লম্বা। কোনটির হাতা কিছুটা ছোট, যা কব্জি পর্যন্ত ছিল। 

পুরুষের পোশাক পরিধানের ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)একটি বিশেষ দিক অত্যন্ত গুরুত্ব প্রদান করেছেন। তিনি পুরুষের পোশাকের নিচের অংশ পায়ের গোড়ালী থেকে উপরে রাখার আদেশ করেছেন এবং গোড়ালীর নিচে পাজামা, লুঙ্গি, জামা বা কোন পোশাক পরিধান করতে হারাম ঘোষণা করেছেন। 

সর্বদা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর লুঙ্গি ও জামা টাখনুর' উপরে থাকত। সাধারণত তিনি পোশাকের নিচের অংশ হাটু ও গোড়ালীর বরাবর বা নিসফে সাক’ পর্যন্ত পরিধান করতেন। বিভিন্ন হাদীসে তিনি মুসলিম উম্মাহর পুরুষগণকে এভাবে পোশাক পরিধান করতে আদেশ দিয়েছেন। সুতরাং মুসলিম পুরুষের জন্য স্বেচ্ছায় টাখনুর নিচে পোশাক পরিধান করা হারাম। আবু হুরায়রা, আবদুল্লাহ ইবনে উমর ও অন্যান্য সাহাবী কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, যে ব্যাক্তি দাম্ভিকতার সাথে নিজের পোশাক ঝুলিয়ে পরিধান করবে , আল্লাহ তা’আলা কিয়ামতের দিন তার দিকে রহমতের দৃষ্টিতে তাকাবেন না। [৪৬]


[৪৫] ইবনে মাজাহ, হাদিস/৪০২৭।

[৪৬] সহীহ বুখারী, হাদিস/৩৬৬৫; সহীহ মুসলিম, হাদিস/৫৫৭৮।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 

৪৫

حَدَّثَنَا أَبُو عَمَّارٍ الْحُسَيْنُ بْنُ حُرَيْثٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ قُشَيْرٍ ، عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ قُرَّةَ ، عَنْ أَبِيهِ ، قَالَ : أَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي رَهْطٍ مِنْ مُزَيْنَةَ لِنُبَايِعَهُ ، " وَإِنَّ قَمِيصَهُ لَمُطْلَقٌ ، أَوْ قَالَ : زِرُّ قَمِيصِهِ مُطْلَقٌ قَالَ : فَأَدْخَلْتُ يَدِي فِي جَيْبِ قَمِيصِهِ , فَمَسَسْتُ الْخَاتَمَ " .


মু’আবিয়া ইবনে কুররা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিতঃ


তিনি বলেন, আমি মুযায়না গোত্রের একদল লোকের সাথে বায়’আত গ্রহণ করার জন্য রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে উপস্থিত হলাম। এ সময় তার জামার বোতাম খোলা ছিল। আমি তখন (বরকত লাভ করার জন্য) জামার ফাঁক দিয়ে হাত ঢুকিয়ে মোহরে নবুওয়াত স্পর্শ করলাম [৪৭]


ব্যাখ্যা : বিভিন্ন হাদীসের আলোকে মনে হয় যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর জামার বোতাম ছিল। তবে তিনি সাধারণত বোতাম লাগাতেন না। ফলে জামার ভেতর হাত প্রবেশ করিয়ে পিঠের মোহরে নবুওয়াত স্পর্শ করা সহজ ছিল।


[৪৭] আবু দাউদ, হাদিস/৪০৮৪; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস/১৫৬১৯।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 

📌পরিচ্ছেদঃ

তিনি ইয়ামেনী নকশী কাপড়ও পরিধান করতেন


৪৬

حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْفَضْلِ ، قَالَ : حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ الشَّهِيدِ ، عَنِ الْحَسَنِ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، " أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَرَجَ وَهُوَ يَتَّكِئُ عَلَى أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ عَلَيْهِ ثَوْبٌ قِطْرِيٌّ " , قَدْ تَوَشَّحَ بِهِ ، فَصَلَّى بِهِمْ .


আনাস ইবনে মালিক (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিতঃ


একদা নবী (ﷺ) উসামা ইবনে যায়েদ (رضي الله عنه)-এর কাধে ভর করে বাইরে বের হলেন। এ সময় তার দেহে পরা ছিল একটি ইয়ামেনী নকশী কাপড়। তারপর তিনি লোকদের নামাযের ইমামতি করেন। [৪৮]


ব্যাখ্যা : রাসূলুল্লাহ (ﷺ) অসুস্থতার কারণে উসামা (رضي الله عنه) এর কাধে ভর করে এসেছিলেন।


[৪৮] মুসনাদে আহমাদ, হাদিস/১৩৭৮৭ ৷

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 

📌পরিচ্ছেদঃ

তিনি নতুন কাপড় পরিধানকালে কাপড়ের নাম উচ্চারণ পূর্বক দু’আ পাঠ করতেন


৪৭

حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ إِيَاسٍ الْجُرَيْرِيِّ ، عَنْ أَبِي نَضْرَةَ ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ ، قَالَ : كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , إِذَا اسْتَجَدَّ ثَوْبًا سَمَّاهُ بِاسْمِهِ عِمَامَةً أَوْ قَمِيصًا أَوْ رِدَاءً ، ثُمَّ يَقُولُ : " اللَّهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ كَمَا كَسَوْتَنِيهِ ، أَسْأَلُكَ خَيْرَهُ وَخَيْرَ مَا صُنِعَ لَهُ ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهِ وَشَرِّ مَا صُنِعَ لَهُ " .


আবু সাঈদ খুদরী (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিতঃ


তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যখন নতুন কাপড় পরিধান করতেন তখন কাপড়ের নাম পাগড়ি অথবা কামীস অথবা চাদর ইত্যাদি উচ্চারণ করতেন। তারপর তিনি এ দুআ পড়তেনঃ 

অর্থাৎ হে আল্লাহ! তোমারই জন্য যাবতীয় প্রশংসা। যেহেতু তুমিই আমাকে তা পরিধান করিয়েছ। আমি তোমার কাছে এর কল্যাণ প্রার্থনা করছি, আরো কল্যাণ চাচ্ছি যে উদ্দেশে এটা তৈরি করা হয়েছে তার। আর আমি তোমার স্মরণাপন্ন হচ্ছি এর যাবতীয় অনিষ্ট হতে এবং যে উদ্দেশে তৈরি করা হয়েছে তার অনিষ্ট হতে। [৪৯]


ব্যাখ্যা : যখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কোন নতুন জামা পরিধান করতেন, তখন আনন্দ প্রকাশার্থে তার নাম নির্ধারণ করতেন। যেমন- বলতেন, আল্লাহ তা'আলা আমাকে এ জামাটি বা পাগড়িটি দান করেছেন। তারপর দুআ পাঠ করে পরিধান করতেন।


[৪৯] আবু দাউদ, হাদিস/৪০২২: মুসনাদে আহমাদ, হাদিস/১১২৬৬, ইবনে হিব্বান, হাদিস/৪৫২০; সুনানে কুবরা লিন নাসাঈ, হাদিস/১০০৬৮: মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদিস/৭৪০৮।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 

📌পরিচ্ছেদঃ

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর একটি প্রিয় পোষাক ছিল হিবারা


৪৮

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ هِشَامٍ ، قَالَ : حَدَّثَنِي أَبِي ، عَنْ قَتَادَةَ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، قَالَ : " كَانَ أَحَبَّ الثِّيَابِ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , يَلْبَسُهُ الْحِبَرَةُ " .


আনাস ইবনে মালিক (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিতঃ


তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নিকট সর্বাধিক প্রিয় কাপড় হলো (ইয়ামানে তৈরি চাদর) হিবারা। [৫০]


ব্যাখ্যা : সে সময়ে পোশাকের বিখ্যাত স্থান ইয়ামানের তৈরি ডোরা ও কারুকার্য সম্বলিত সূতী বা কাতান প্রকৃতির চাদরকে হিবারা বলা হতো। এগুলো কখনো লাল, কখনো নীল, আবার কখনো সবুজ ডোরাকাটা হতো।


[৫০] সহীহ বুখারী, হাদিস/৫৮১৩; সহীহ মুসলিম, হাদিস/৫৫৬২,নাসাঈ, হাদিস/৫৩১৫; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস/১৪১৪০; সুনানে কুবরা লিন নাসাঈ, হাদিস/৯৫৬৮।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 

📌পরিচ্ছেদঃ

তিনি লাল রঙ্গের নকশী করা চাদরও পরিধান করতেন


৪৯

حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلانَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ ، قَالَ : حَدَّثَنَا سُفْيَانُ ، عَنْ عَوْنِ بْنِ أَبِي جُحَيْفَةَ ، عَنْ أَبِيهِ ، قَالَ : " رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , وَعَلَيْهِ حُلَّةٌ حَمْرَاءُ , كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى بَرِيقِ سَاقَيْهِ " .


আবু জুহাইফা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিতঃ


তিনি বলেন, আমি নবী (ﷺ) কে লাল নকশী চাদর পরা অবস্থায় দেখেছি। আজও যেন আমি তার উভয় গোড়ালীর ঔজ্জ্বল্য প্রত্যক্ষ করছি। [৫১]


[৫১] সহীহ মুসলিম, হাদিস/১১৪৭; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস/১৮৭৮১।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 

৫০

حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ خَشْرَمٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ ، عَنْ إِسْرَائِيلَ ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ ، عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ ، قَالَ : " مَا رَأَيْتُ أَحَدًا مِنَ النَّاسِ أَحْسَنَ فِي حُلَّةٍ حَمْرَاءَ , مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، إِنْ كَانَتْ جُمَّتُهُ لَتَضْرِبُ قَرِيبًا مِنْ مَنْكِبَيْهِ " .


বারা ইবনে আযিব (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিতঃ


তিনি বলেন, ‘লাল হুল্লা' পরিহিত কাউকে আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এ এর চেয়ে অধিক সুদর্শন দেখিনি। আর তার কেশ (জুম্মা) উভয় কাঁধ স্পর্শ করছিল। [৫২]


ব্যাখ্যাঃ এখানে উদ্দেশ্য হচ্ছে সেলাই ছাড়া লুঙ্গি ও চাদর। এগুলো তৎকালীন আরব দেশের সর্বাধিক ব্যবহৃত পোশাক ছিল। এটি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)sঞ্জ সর্বাধিক ব্যবহার করতেন। কেউ কেউ বলেছেন, চাদর ও লুঙ্গি একই প্রকারের একই রংয়ের প্রস্তুত হলে তাকে حُلَّةٌ বলে।


[৫২] সহীহ বুখারী, হাদিস/৫৯০১; নাসাঈ, হাদিস/৫০৬২; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস/১৮৬৩৬ সুনানে কুবরা, হাদিস/৯২৭৫।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 

📌পরিচ্ছেদঃ

তিনি সবুজ চাদরও পরিধান করতেন


৫১

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ إِيَادٍ ، عَنْ أَبِيهِ ، عَنْ أَبِي رِمْثَةَ ، قَالَ : " رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , وَعَلَيْهِ بُرْدَانِ أَخْضَرَانِ " .


আবু রিমছা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিতঃ


তিনি বলেন, আমি নবী (ﷺ) ত্রকে দুটি সবুজ চাদর পরিহিত অবস্থায় দেখেছি। [৫৩]


ব্যাখ্যা : রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তৎকালীন সময়ে প্রচলিত বিভিন্ন রংয়ের পোশাক পরিধান করেছেন। বিভিন্ন হাদীসের আলোকে প্রমাণিত হয় যে, তার মধ্যে সবুজ, সাদা ও মিশ্রিত রং তিনি পছন্দ করতেন।


[৫৩] নাসাঈ, হাদিস/১৫৭২; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস/ ৭১১৭ সালানুল কুবরা লিন নাসাঈ, হাদিস/১৭৯৪।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 

📌পরিচ্ছেদঃ

তিনি সাহাবীদেরকে সাদা রঙের কাপড় পরিধান করতে উপদেশ দিয়েছেন


৫২

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُثْمَانَ بْنِ خُثَيْمٍ ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " عَلَيْكُمْ بِالْبَيَاضِ مِنَ الثِّيَابِ , لِيَلْبَسْهَا أَحْيَاؤُكُمْ ، وَكَفِّنُوا فِيهَا مَوْتَاكُمْ ، فَإِنَّهَا مِنْ خِيَارِ ثِيَابِكُمْ " .


ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিতঃ


তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, তোমরা সাদা রঙের কাপড় পরিধান করবে। তোমাদের যেন সাদা কাপড় পরিধান করে এবং মুক্তদেরকে সাদা কাপড় দিয়ে দাফন দেয়। কেননা, সাদা কাপড় তোমাদের সর্বোত্তম পোশাক। [৫৪]


[৫৪] নাসাঈ, হাদিস/৫৩২৩; সুনানুল কুবরা লিন নাসাঈ, হাদিস/৯৫৬৬ ৷

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 

৫৩

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ ، قَالَ : حَدَّثَنَا سُفْيَانُ ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ أَبِي ثَابِتٍ ، عَنْ مَيْمُونِ بْنِ أَبِي شَبِيبٍ ، عَنْ سَمُرَةَ بْنِ جُنْدُبٍ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " الْبَسُوا الْبَيَاضَ , فَإِنَّهَا أَطْهَرُ وَأَطْيَبُ ، وَكَفِّنُوا فِيهَا مَوْتَاكُمْ " .


সামুরা ইবনে জুনদুব (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিতঃ


তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, তোমরা সাদা কাপড় পরিধান করো। কারণ, তা সর্বাধিক পবিত্র ও উত্তম। আর তা দিয়েই তোমরা মৃতদের কাফন দাও। [৫৫]


[৫৫] মুজামুল কাবীর, হাদিস/৯৬৪; সহীহ তাঁরগীব ওয়াত তাঁরহীব, হাদিস/২০২৭।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 

📌পরিচ্ছেদঃ

তিনি কালো রঙের পশমী চাদরও পরিধান করতেন


৫৪

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ زَكَرِيَّا بْنِ أَبِي زَائِدَةَ ، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبِي ، عَنْ مُصْعَبِ بْنِ شَيْبَةَ ، عَنْ صَفِيَّةَ بِنْتِ شَيْبَةَ ، عَنْ عَائِشَةَ , قَالَتْ : " خَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَاتَ غَدَاةٍ , وَعَلَيْهِ مِرْطٌ مِنْ شَعَرٍ أَسْودَ " .


আয়েশা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিতঃ


তিনি বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ (ﷺ) প্রত্যুষে বাইরে বের হন। তখন তার দেহে কালো পশমের একটি চাদর শোভা পাচ্ছিল। [৫৬]


[৫৬] সহীহ মুসলিম, হাদিস/৫৫৬৬; আবু দাউদ, হাদিস/৪০৩৪; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস/২৫৩৩৪; সুনানের কুবরা লিল বাইহাকী, হাদিস/৪৩৫৩; মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদিস/৪৭০৭।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 

📌পরিচ্ছেদঃ

তিনি আঁটসাঁট আস্তিন বিশিষ্ট রুমী জুব্বা পরিধান করেছিলেন


৫৫

حَدَّثَنَا يُوسُفُ بْنُ عِيسَى ، قَالَ : حَدَّثَنَا وَكِيعٌ ، قَالَ : حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ أَبِي إِسْحَاقَ ، عَنْ أَبِيهِ ، عَنِ الشَّعْبِيِّ ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ ، عَنْ أَبِيهِ ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , " لَبِسَ جُبَّةً رُومِيَّةً , ضَيِّقَةَ الْكُمَّيْنِ " .


মুগীরা ইবনে শু’বা থেকে বর্ণিতঃ


তিনি বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ (ﷺ) আটসাঁট আস্তিন বিশিষ্ট একটি রুমী জুব্বা পরিধান করেন। [৫৭]


ব্যাখ্যা : রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যখন যে পোশাক পেয়েছেন তাই ব্যবহার করেছেন। তিনি সুতি, পশমী ও কাতানের তৈরি প্রভৃতি পোশাক ব্যবহার করেছেন। সবুজ, লাল, হলুদ, সাদা, কালো ও মিশ্রিত যখন যে রংয়ের পোশাক পেয়েছেন পরিধান করেছেন। কারণ আরবে কোন পোশাক তৈরি হতো না। এগুলো মক্কা-মদিনার বাইরে সিরিয়া, ইয়ামান প্রভৃতি দেশে তৈরি হতো। তাই ব্যবসায়ীগণ যে পোশাক আনতেন তাই সাধ্যমতো ক্রয় করে বা উপহার হিসেবে যা পেতেন তাই ব্যবহার করতেন।


[৫৭] মুসনাদে আহমাদ, হাদিস/১৮২৬৫

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

Top