নূরানী চেহারা


হুজুর আকরম (ﷺ) এর নূরানী চেহারা মোবারক জামালে এলাহীর দর্পন ও অসীম নূরের বহিঃপ্রকাশের আধার। 

বুখারী ও মুসলিম শরীফে হযরত বারা ইবন আযিব (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মানব কুলের মধ্যে সর্বাধিক সুন্দর ও কমনীয়। 

হাদিসে এসেছে,হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) কর্তৃক বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর চেয়ে সুন্দর এমন কোন কিছুই আমার দৃষ্টিগোচর হয়নি। হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) তার বক্তব্যে ‘কোন কিছুই দেখিনি' কথাটি উল্লেখ করেছেন। তিনি কিন্তু কোনো মানুষকে দেখিনি অথবা কোনো পুরুষকে। দেখুন—এরূপ বলেছেন। তার বর্ণনার মধ্যে অধিক ব্যাপকতা রয়েছে। 

নবী করীম (ﷺ) এর আঙ্গিক সৌন্দর্যের আধিক্য বোঝাতে তার উদ্দেশ্য। মােটকথা, মহানবী (ﷺ) এর সৌন্দর্য্য ও কমনীয়তা সমস্ত কিছুর উপর অগ্রগণ্য ছিল। এই মর্মে তিনি আরও বলেছেন, নবী করিম (ﷺ) এর নূরানী চেহারাখানা এতো উজ্জ্বল যে, সূর্যের উজ্জ্বলতা ও তার কাছে হার মেনেছে। যেমন কবি বলেন, রাতের পর এমন কোনো দিবসের অভ্যুদয় ঘটেনি যা মহানবী (ﷺ) এর নূরানী চেহারার চেয়ে উজ্জ্বল।

- মোটকথা তার নূরানী চেহারার জ্যোতির্ময় এর তুলনায় অন্য সবকিছুর উজ্জ্বলতা নেহায়েতই নগন্য।


সহীহ বুখারী শরীফের হাদীসে উল্লেখ আছে, হযরত বারা ইবনে আযিব (رضي الله عنه) কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো, হুজুর আকরাম (ﷺ) এর নূরের আভাকে স্বচ্ছতা ও উজ্জ্বলতার দিক দিয়ে কি তরবারীর সাথে তুলনা করা যেতে পারে? তিনি বলেন, না। বরং তার চেহারার উজ্জ্বলতা ছিলে চন্দ্রের ন্যায়। তরবারির সাথে চেহারার তুলনা যথাযথ হতে পারে না। কেননা তরবারিতে গোলাকৃতি অনুপস্থিত। তাই তিনি চেহারা মুবারককে চন্দ্রের সাথে তুলনা করেছেন। চন্দ্রের মধ্যে চাকচিক্য আছে। তদুপরি গোলাকৃতি বিদ্যমান। সহীহ মুসলিম শরীফের বর্ণনায় রয়েছে, তিনি (বারা ইবন আযিব) উত্তরে বললেন, না। বরং হুজুরের চেহারা মোবারক চন্দ্র ও সূর্যের ন্যায় ছিলাে। অর্থাৎ গােলাকার। যদিও চন্দ্রের তুলনায় সূর্যের মধ্যে কিরণ ও চাকচিক্য অধিক, তথাপিও চন্দ্রের মধ্যে যে লাবণ্য বিদ্যমান সূর্যে তা নেই। আর লাবণ্য এমন এক সৌন্দর্য যা দেখলে অবর্ণনীয় পুলকানুভূতি লাভ করা যায় এবং অন্তর আকৃষ্ট হয়, যার অনুভূতি লাভ কেবল সুস্থ সৌন্দর্যবোধ বিশিষ্ট ব্যক্তির পক্ষেই সম্ভব। সীরাত বিশেষজ্ঞগণ উজ্জ্বলতা ও লাবণ্য শব্দ দুটির মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ করে থাকেন। সাবাহাতে হযরত ইউসুফ (عليه السلام) এর গুণ ছিলাে আর মালাহাত গুণটি হুজুর আকরম (ﷺ) এর শানে প্রযােজ্য হয়ে থাকে। এমর্মে স্বয়ং হুজুর (ﷺ) এরশাদ করেছেন 'আনা মালিহ ওয়া আখি আছবাহ—অর্থাৎ আমি লাবণ্যময় আর আমার ভাই ইউসুফ (عليه السلام) উজ্জ্বল।


‘নবী করীম (ﷺ) এর চেহারা মুবারক গােল ছিলাে' একথার অর্থ এই নয় যে, চেহারা বৃত্তের ন্যায় ছিলাে। কেননা বৃত্তাকার গােল হওয়াটা রূপ ও সৌন্দর্যের পরিপন্থী। বরং চেহারা মুবারক গোল ছিলো মানে এমন এক ধরনের গােল ছিলাে যা দেখতে লম্বা নয়। এ ধরনের চেহারা রূপ, লাবণ্য, পৌরুষ ও মহত্বের নিদর্শন। কথিত আছে যে, তার চেহারা মুবারক ছিলাে مكلثم 'মুকালছাম' مطهم ‘মুতহাম' নয়। مكلثم 'মুকালছাম' গোলগাল চেহারাকে বলা হয়। 

কাযী আয়ায (رحمة الله) কর্তৃক রচিত কিতাবুশ শিফা গ্রন্থে مكلثم 'মুকালছাম' এর বর্ণনা দেয়া রয়েছে। যার চেহারায় চিবুক ছােট হয়ে থাকে তাকে মুকালছাম বলে। আর চিবুক ছােট হওয়া মানে চেহারা গােলগাল হওয়া। কেননা চিবুক লম্বা হওয়ার কারণেই চেহারা লম্বাটে হয়। আর مطهم ‘মুতহাম' বলা হয় মাংসল চেহারা যা দৃশ্যতঃ স্ফীত বলে মনে হয়।


অভিধানে 'মুকালামা' শব্দটি বৃত্তাকার ও সমন্বিত করে অর্থে এসেছে।আবার অভিধানে উক্ত শব্দটির অর্থ ‘দুর্বল' বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এদুটি অর্থই সৌন্দর্যের পরিপন্থী। নবী করীম (ﷺ) এর চেহারা মোবারক এক বর্ণনায় এসেছে, তিনি মুলায়েম মৃত্তিকা খন্ড সদৃশ ছিলেন। سهل ‘সহল' গরম ও সমতল ভূমিকে বলা হয়। কোন কোন বর্ণনায় পাওয়া যায় سيل الحدت ‘সাইলুল হাদীস’ ‘প্রবাহিত গন্ড'।سيلان 'সাইলান' 'প্রবাহিত হওয়া' শব্দ থেকে যার উৎপত্তি। মাওয়াহেবে লাদুন্নিয়া কিতাবে হযরত ইবন আছীর (رضي الله عنه) এর বর্ণনায় পাওয়া যায়, اساله درخدين   যার অর্থ গন্ডদেশ এমন লম্বা ছিলাে যা উঁচু নয়। বেরিয়ে পড়ে এমন নয়।


শায়েখ ইবন হাজার আছকালানী (رحمة الله) বলেন, উপরােক্ত বর্ণনা অনুসারে প্রত্যেকের এ অনুসন্ধিৎসা হওয়া স্বাভাবিক যে, নবী করীম (ﷺ) এর চেহারা মুবারক তরবারির মতো ছিল কি না? ব্যাপারটা চিন্তা ভাবনার দাবী রাখে।


কোন কোন হাদীসে নবী করীম (ﷺ) এর চেহারা মোবারকের উপমা স্বরূপ ‘এক ফালি চাঁদ’ বা ‘অর্ধচন্দ্র ইত্যাদি বর্ণনা এসেছে। বিভিন্ন কবিতায় এরকম উপমা উপস্থাপন করা হয়েছে। হযরত কা'ব ইবন মালিক (رضي الله عنه) যিনি সাহাবাগণের মধ্যে অন্যতম বিখ্যাত কবি ছিলেন তাঁর কবিতায় এ ধরনের উপমা দৃষ্টিগোচর হয়। কাজেই এর প্রয়োগ ও যথার্থতার ব্যাপারে একটি সামঞ্জস্য শীল সমাধানে পৌঁছানো উচিত। সুতরাং সমাধান স্বরূপ কেউ কেউ এরকম বলেছেন যে, উপরোক্ত উপমা সমূহ দ্বারা হুজুর পাক (ﷺ) কখনও কারাে প্রতি পূর্ণ অভিমুখী হয়েছেন বা কারও প্রতি আংশিকভাবে মুখ ফিরিয়েছে সকল অবস্থাগুলি কে বুঝানাে হয়েছে। জাতীয় সমাধানের পক্ষে সহায়ক দলিল স্বরূপ তাবরানী শরীফে প্রাপ্ত হযরত জুবায়ের ইবন মুনইম (رضي الله عنه) এর হাদীস খানি গ্রহণ করেছেন। তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাদের দিকে এমনভাবে মুখ ফিরিয়ে তাকালেন, মনে হলাে যেনাে একখানা অর্ধচন্দ্র। তবে সর্বোৎকৃষ্ট সমাধান এটাই যে, চন্দ্র বা অর্ধচন্দ্র বা একফালি চাঁদ, এ জাতীয় যে উপমা গুলি উপস্থাপন করা হয়েছে, তা হুজুর পাক (ﷺ) এর ললাট মুবারকের উপমা। অর্থাৎ তার ললাটখানি ছিলাে যেমন একফালি চাঁদ। সহীহ বুখারী শরীফে হযরত কা'ব ইবন মালিক (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর ললাট মুবারকে যখন ভাজ পড়তাে তখন চেহারা মুবারক চন্দ্রের ফালির মেরে ঝকমক করতো। সারাহ' নামক আরবী অভিধানে ‘দুই ফাতহা যােগে' শব্দটির অর্থ লিখা হয়েছে ললাটে ভাজ পড়া'। তার বহুবচন হচ্ছে -اسرار ‘আসরার’ আর মুনতাহাল জমু হচ্ছে اسارير ‘আসারীর। হাদীস শরীফে শব্দটি পাওয়া যায়, তার নূরানী কপাল মুবারক ভাঁজগুলো চমকাতে থাকতাে। হুজুর পাক (ﷺ) এর চেহারা মুবারককে একফালি চাঁদের সাথে উপমা দেয়ার ব্যাপারটিকে কেউ কেউ এভাবে সমাধান দিয়েছেন যে, এক ফালি চাঁদে যেরূপ কলংক খুঁজে পাওয়া যায় না, তেমনি হুজুর পাক (ﷺ) এর চেহারা মুবারক ছিলো কলঙ্কহীন। এ ধরনের সমাধান অবশ্যই দুর্বল তাতে সন্দেহ নেই। কেননা, কোন কিছুর সৌন্দর্য যখন চন্দ্রের সাথে তুলনা করা হয়, তখন চন্দ্রের কলঙ্ককে বাদ দিয়ে শুধু তার জ্যোতির্ময় তাকে বোঝানো হয়ে থাকে।


সাইয়্যেদুনা হজরত আবু বকর সিদ্দীক (رضي الله عنه) বর্ণনা করেছেন, রসূলুল্লাহ (ﷺ) এর চেহারা মুবারক ছিলাে আলােকোজ্জ্বল বৃত্তাকার চন্দ্রের ন্যায়। دا ديراه قمر'দায়েরায়ে কামার' বলা হয় পুর্ণিমার চন্দ্রকে। ফারসী ভাষায় যাকে বলা হয় খিরমনশাহ। (আল্লামা শায়েখ আব্দুল হক মুহাদ্দিস দেহলভী (رحمة الله) বলেন, আমার মনে হয় চন্দ্রের জ্যোৎস্না এবং তার আলােকময় বৃত্তকে দেহের সাথে তুলনা করার মাধ্যমে হুজুর পাক (ﷺ)-এর চেহারার ঐ আভার প্রতিই প্রকাশ্যভাবে ইঙ্গিত করা হয়েছে বা নূরের- আকৃতিতে চন্দ্রের বৃত্তের ন্যায় চেহারা মুবারককে বেষ্টন করে নিয়েছে। উপমা প্রদান করাটা হচ্ছে হুজুর পাক (ﷺ) এর নূরের ধারার পূর্ণ কিরণ, তার মহত্বের ভাবগাম্ভীর্য এবং শান শওকত প্রকাশের একটা পদ্ধতি মাত্র। চেষ্টা করে ও লক্ষ্য করে দেখতে হবে, উক্ত উপমার প্রতি আত্মিক দৃষ্টি প্রদান করার পর কি অবস্থা উদ্ভাসিত হয়। আর দৃষ্টিপাতকারীর দৃষ্টিতে তার সৌন্দর্য ও শান শওকত কিভাবে প্রতিভাত হয়। কেননা এ আত্মিক দৃষ্টি নয়নযুগলকে পরিতৃপ্ত করে আর অন্তরকে মহানবী (ﷺ) এর প্রেম ভালোবাসা ও আজমতের নূর দ্বারা কানায় কানায় ভরপুর করে দেয়।


হজরত কা'ব ইবনে মালিক (رضي الله عنه) এর হাদীছেও চন্দ্রের বৃত্ত এই উপমা বিদ্যমান। আর চন্দ্রের সাথে যেসব উপমা এসেছে সেগুলি দ্বারা সাধারণতঃ পূর্ণিমার চন্দ্র বুঝানাে হয়েছে এবং এটাই প্রসিদ্ধ। যেমন ইমাম বায়হাকী (رحمة الله) হজরত আবু ইসহাক থেকে বর্ণনা করেছেন, একদা এক হামাদানী মহিলা আমাকে বললেন, আমি রসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সঙ্গে হজ করেছি। তা শুনে আমি তাকে বললাম তাহলে তার চেহারা মুবারকের বর্ণনা দাও দেখি। তখন মহিলাটি বললেন, তার চেহারা মুবারক পূর্ণিমার শশীর ন্যায় সুন্দর। আমি এরূপ সৌন্দর্য পূর্বেও দেখিনি। পরেও দেখিনি।


অনুশীলনকারী সন্ধানীগণ সর্বদাই তার ললাটে নূরের জ্যোতির্ময় ধারাকে আত্মিক দর্শনের মাধ্যমে অবলোকন করে শত্রুপক্ষের রজনীর ন্যায় প্রাপ্ত হতেন। এমন আত্মিক দর্শন থেকে কখনো অমনোযোগী হবেন না, কখনও বিচ্ছিন্ন হতেন না। কেননা 'দীদার হচ্ছে নগদলভ্য।


হযরত ইবন আবী হালা (رضي الله عنه) বর্ণিত হাদিসে আছে, দর্শনকারীর দৃষ্টিতে হুজুর পাক (ﷺ) ছিলেন একজন মহিমান্বিত ব্যক্তিত্ব। তার চেহারা মুবারক পূর্ণিমার শশীর ন্যায় ঝকমক করতাে।


দুজাহানের সৌন্দর্য হুজুর পাক (ﷺ) কে সূর্যের সাথে উপমা না দিয়ে চন্দ্রের সাথে উপমা দেয়ার কারণ সম্পর্কে সীরাত বিশেষজ্ঞগণ অভিমত প্রদান করেছেন। তারা বলেন, চন্দ্র তার জ্যোৎস্নার মাধ্যমে চোখকে শীতল করে।হৃদয়কে পুলকানুভুতি প্রদান করে। মনে আনে প্রেম ভালোবাসা এবং অনুভবে আনে পরম অস্বাদ। জ্যোৎস্নার প্রতি দৃষ্টিপাত করা সম্ভব। কিন্তু সূর্যের আলোর দিকে তাকানাে সম্ভব নয়। এতে চোখ ঝলসে যায়। অন্তরে বিস্বাদ সৃষ্টি হয়। অবশ্য হুজুর পাক (ﷺ) কে সূর্যের সাথে উপমা দেয়া যেতে পারে অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে। তা হচ্ছে এই, হুজুর পাক (ﷺ) এর ব্যক্তিত্ব মহান গুণাবলীর প্রকাশস্থল। শান শওকত ও অবিসংবাদী কর্তৃত্ব দিক দিয়ে তিনি সূর্যের মতো। পৃথিবী প্লাবিত আলোর ছটায় সূর্য যেমন জগতকে বেষ্টন করে নেয়। তিনিও তেমনি তার নূরের কিরণের মাধ্যমে সারা জাহানকে বেষ্টন করে নিয়েছেন। মহানবী (ﷺ) এর ব্যক্তিত্বের হকিকতের (প্রকৃত তত্ত্ব) রহস্য অবহিত হতে মানুষ অক্ষম। এ দিক দিয়েও তিনি সূর্যের মতাে। দূরবর্তী বা নিকটবর্তী যে কেউ হােক না কেন, তার মর্যাদা ও পূর্ণতার শেষপ্রান্ত সম্পর্কে অবহিত হতে বা অনুধাবন করতে সকলেই অক্ষম ও সামর্থ্যহীন—এদিক দিয়ে তাকে সূর্যের সাথে তুলনা করা যেতে পারে। যেমন কবির ভাষায় বলা হয়েছে, মােহাম্মদ (ﷺ) এর যথাযথ মর্যাদা নিরূপণ করতে সৃষ্ট জগত অক্ষম।' দূরের ও নিকটের কেউই তাঁর প্রকৃত পরিচিতি লাভ করতে পারেনা। তিনি এক সূর্যতুল্য মহান সত্তা, যা দূর থেকে ক্ষুদ্রাকৃতিতে মানুষের দৃষ্টিতে প্রতিভাত হয়। কিন্তু সোজাসুজি কেউ যদি তার প্রতি দৃষ্টিনিক্ষেপ করে তাহলে দৃষ্টি অবসন্ন হয়ে যাবে। ফলকথা তিনি হচ্ছেন এমন এক উজ্জ্বল রবি, যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করতে সৃষ্টিকুল অক্ষম।


এক বিশেষ দৃষ্টিকোণ থেকে এসেছে সূর্যের উপমা। তবে অবলোকন ও অনুভূতির দিক দিয়ে চন্দ্রের উপমাই শোভনীয়।


মাওয়াহিবে লাদুন্নিয়া নেহায়া কিতাব থেকে সংকলিত হয়েছে, হুজুর পাক (ﷺ) যখন আনন্দিত হতেন, তখন তার চেহারা মুবারক আয়না সদৃশ হয়ে যেতে। এমনকি দেয়াল দরজার নকশা এবং মানুষের চেহারার প্রতিবিম্ব তাতে ঝলমল করতে থাকতাে।


হযরত জাবির ইবনে সামুরাহ (رضي الله عنه) বলেন, একদা এক চাঁদনী রাতে আমি হুজুর পাক (ﷺ) কে দেখলাম তখন তার শরীর মুবারকের উপর দু'খানি লাল কাপড় ছিলাে । আমি কখনও তাঁর দেহ মুবারকের প্রতি তাকাই আবার কখনও চাঁদের জ্যোৎস্নার প্রতি তাকাই। আল্লাহর কসম চাঁদের উজ্জ্বলতা অপেক্ষা রাসূলে পাক (ﷺ) কেই আমার কাছে বেশী সুন্দর মনে হলাে। বর্ণনাকারী সাহাবীর ‘আমার কাছে’ শব্দটিতে নবী করীম (ﷺ) এর রূপলাবণ্য দ্বারা তিনি যে পরম স্বাদ উপভোগ করছিলেন তার ইঙ্গিত, খুঁজে পাওয়া যায়। এটি তার আনন্দ উপভােগের বহিঃপ্রকাশ বটে। তবে প্রকৃত অবস্থাও এর ব্যতিক্রম নয়।। রাসূল (ﷺ) এর রূপ লাবণ্য সর্বোপরি এতে কোনাে সন্দেহ নেই।


হুজুর আকরম (ﷺ) এর উন্নত মানের গুণাবলী কবিতার দৃষ্টিকোণ দিয়ে ব্যাখ্যা করা কাব্যিক ধারণা ও স্বভাবের অন্তর্গত। নতুবা তার চারিত্রিক সৌন্দর্যাবলী এবং আঙ্গিক গুণাবলীর তুলনা তাে হতেই পারে না।


➥[কিতাবঃ মাদারেজুন নবুওয়াত। মূলঃ ইমাম আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী] 

© | সেনানী এপ্স |

Top