আম্বিয়া কেরামের বিভিন্ন সহীফায় সুন্দর আলোচনা
তিনখানা আসমানী কিতাব অর্থাৎ তৌরিত, ইঞ্জীল ও যবুর শরীফে যে রকম সাইয়্যেদে আলম (ﷺ) এর গুণাবলী উলেখ করা হয়েছে, তেমনি প্রত্যেক নবীর সহীফার মধ্যেও তাঁর গুণাবলী সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এমনকি আবুল আম্বিয়া হজরত আদম (عليه السلام) এর সহীফায়ও তাঁর কথা উলেখ করা হয়েছে। এ মর্মে হকতায়ালা তাঁর নিকট ওহী প্রেরণ করলেন যে, আমি মক্কার খোদাওয়ান্দ। সেখানকার অধিবাসী আমার প্রতিবেশী। খানায়ে কাবার যেয়ারতকারী আমার মেহমান। সে আমার সাহায্য সহযোগিতার আশ্রয়ে আমার ছায়ায় অবস্থান করবে। আমার হেফাযত ও রক্ষণাবেক্ষণে থাকবে। আমি সে ঘরকে পৃথিবীবাসী ও আকাশবাসীদের দ্বারা আবাদ রাখবো। গভীর প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দলে দলে মানুষ আলুথালু কেশে ধূলায় ধূসরিত হয়ে ‘লাব্বায়েক’ বলতে বলতে তকবির দিতে দিতে চোখে অশ্রুর ঢল নামিয়ে সেখানে উপস্থিত হবে। খানায়ে কাবার যেয়ারতকারীদের উদ্দেশ্য বাইতুলাহ্র যেয়ারত এবং আমার সন্তুষ্টি ছাড়া আর কিছুই থাকবে না। কেননা আমিই তো সে ঘরের মালিক। আমারই যেয়ারতে এসেছে বলে তারা আমারই মেহমান। সে আমার করমের উপযোগী ও অধিকারী হবে। তার অর্থ হচ্ছে, আমি তাঁকে অনুগৃহীত করবো। তাঁকে আমি বঞ্চিত হতে দিবো না। সেই খানায়ে কাবার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব আমি প্রদান করবো তোমারই বংশধর একজন নবীর উপর যাঁকে বলা হবে ইব্রা হীম। তাঁর মাধ্যমে আমি খানায়ে কাবার বুনিয়াদকে উঁচু করাবো এবং তাঁর হাত দিয়েই আমি সে ঘরকে আবাদ করাবো। তাঁর জন্য আমি যমযমের কূপ প্রকাশিত করবো। খানায়ে কাবার হেরেম ও হেল তাঁরই উত্তরাধিকারীত্বে অর্পণ করবো। মাশআরে হারামকে তাঁরই হস্তে সজ্জিত করবো। হজরত ইব্রাহীম (عليه السلام) এর পরবর্তী প্রত্যেক যমানায়ই লোকেরা তাঁকে আবাদ রাখবে। সে ঘরের দিকে যাত্রা করার কসদ ও ইচ্ছা রাখবে। এমনকি পার্যা ক্রমে এর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব তোমার ফরযন্দগণের মাধ্যমে ঐ নবী পর্যন্ত পৌঁছবে যাঁকে বলা হবে মোহাম্মদ সালালাহু আলাইহি ওয়া সালাম। তিনি নবুওয়াতের ধারাক্রম সমাপ্তকারী হবেন। র্যা রা উক্ত ঘরে অবস্থান করবে, যাঁরা তার রক্ষণাবেক্ষণ করবে, মুতাওয়ালী হবে, উক্ত ঘরের হজ পালন করবে, তাঁদের সকলের মধ্যে আমি সেই নবীকেই সর্বাধিক সম্মান প্রদান করবো। যাঁরাই আমাকে অন্বেষণ করবে তাদের উপর অপরির্হায হবে সেই নবীর জামাতের সাথে একাত্ম হওয়া। যাঁর কেশরাজি হবে উম্মতের চিন্তায়, বিক্ষিপ্ত, ধূসরিত। তিনি আলাহ্ তায়ালার দরবারে তাঁর মান্নত ও নযর পূর্ণ করবেন।”
➥[কিতাবঃ মাদারেজুন নবুওয়াত। মূলঃ ইমাম আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী (رحمة الله)]
© | সেনানী এপ্স |