শামায়েলে তিরমিজি


১. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর দৈহিক গঠন 


📌পরিচ্ছেদঃ

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বেশী দীর্ঘ ছিলেন না, আবার বেশী খাটোও ছিলেন না


قَالَ الْحَافِظُ أَبُو عِيسَى مُحَمَّدُ بْنُ عِيسَى بْنِ سَوْرَةٍ التِّرْمِذِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو رَجَاءٍ قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ رَبِيعَةَ بْنِ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّهُ سَمِعَهُ يَقُولُ: «كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيْسَ بِالطَّوِيلِ الْبَائِنِ، وَلَا بِالْقَصِيرِ، وَلَا بِالْأَبْيَضِ الْأَمْهَقِ، وَلَا بِالْآدَمِ، وَلَا بِالْجَعْدِ الْقَطَطِ، وَلَا بِالسَّبْطِ، بَعَثَهُ اللَّهُ تَعَالَى عَلَى رَأْسِ أَرْبَعِينَ سَنَةً، فَأَقَامَ بِمَكَّةَ عَشْرَ سِنِينَ، وَبِالْمَدِينَةِ عَشْرَ سِنِينَ، وَتَوَفَّاهُ اللَّهُ تَعَالَى عَلَى رَأْسِ سِتِّينَ سَنَةً، وَلَيْسَ فِي رَأْسِهِ وَلِحْيَتِهِ عِشْرُونَ شَعْرَةً بَيْضَاءَ»


আনাস ইবনে মালিক (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিতঃ


তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) খুব দীর্ঘ ছিলেন না আবার খাটোও ছিলেন না। তিনি ধবধবে সাদা কিংবা বাদামী বর্ণেরও ছিলেন না। তাঁর চুল একেবারে কোঁকড়ানো ছিল না, আবার একদম সোজাও ছিল না। ৪০ বছর বয়সে আল্লাহ তা'আলা তাকে নবুওয়াত দান করেন। এরপর মক্কায় ১০ বছর এবং মদিনায় ১০ বছর কাটান। আল্লাহ তা'আলা ৬০ বছর বয়সে তাকে ওফাত দান করেন। ওফাতকালে তাঁর মাথা ও দাড়ির ২০টি চুলও সাদা ছিল না। [১]


ব্যাখ্যা : রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর মাঝে যেমন উত্তম গুণাবলির সর্বাধিক সমাবেশ ঘটেছিল, তেমনি তার দৈহিক সৌন্দর্যও ছিল অতুলনীয়। এ হাদীস থেকে বুঝা যায় যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বেমানান দীর্ঘকায় ছিলেন না। আবার অতি খাটোও ছিলেন না। বরং মাঝারি গড়নের চেয়ে একটু দীর্ঘ ছিলেন। উল্লেখ্য যে, নবী (ﷺ)এর ইন্তেকাল হয়েছে ৬৩ বছর বয়সে। তিনি মক্কায় ১৩ বছর এবং মদিনায় ১০ বছর অতিবাহিত করেছেন। এ সংক্রান্ত হাদীসগুলো এ গ্রন্থের শেষের দিকে উল্লেখ করা হয়েছে। বর্ণিত হাদীসটিতে দশকের পরের সংখ্যা ৩ বাদ দিয়ে মক্কায় অবস্থানকাল ১০ বছর এবং নবী (ﷺ) এর মোট বয়স ৬০ উল্লেখ করা হয়েছে।


[১] সহীহ বুখারী, হাদিস/৫৯০০; সহীহ মুসলিম, হাদিস/৬২৩৫; মুয়াত্তা মালেক, হাদিস/১৬৩৯ ইবনে মাজাহ, হাদিস/১৩৫৪৩, মুসনাদুল বাযযার, হাদিস/৬১৮৯; শারহুস সুন্নাহ, হাদিস/৩৭৩৫; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদিস/৬৩৮৭।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 

📌পরিচ্ছেদঃ

তিনি ছিলেন গৌরবর্ণের


حَدَّثَنَا حُمَيْدُ بْنُ مَسْعَدَةَ الْبَصْرِيُّ قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ الثَّقَفِيُّ، عَنْ حُمَيْدٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ: «كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَبْعَةً، لَيْسَ بِالطَّوِيلِ وَلَا بِالْقَصِيرِ، حَسَنَ الْجِسْمِ، وَكَانَ شَعْرُهُ لَيْسَ بِجَعْدٍ وَلَا سَبْطٍ أَسْمَرَ اللَّوْنِ، إِذَا مَشَى يَتَكَفَّأُ»


আনাস ইবনে মালিক (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিতঃ


তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মধ্যমাকৃতির ছিলেন। বেশি লম্বা কিংবা বেশি খাটোও ছিলেন না। তাঁর দেহ ছিল খুব আকর্ষণীয়। আর তাঁর চুল বেশি কোকড়ানো কিংবা একেবারে সোজাও ছিল না। তিনি ছিলেন গৌরবর্ণের। পথ চলতে তিনি সামনের দিকে কিছুটা ঝুঁকে চলতেন। [২]


[২] মুসনাদে আবু ই'আলা, হাদিস/৩৮৩২ শারহুস সুন্নাহ, হাদিস/৩৬৪০।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 

📌পরিচ্ছেদঃ

তিনি ছিলেন মধ্যমাকৃতির


حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ قَالَ: حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ قَالَ: سَمِعْتُ الْبَرَاءَ بْنَ عَازِبٍ يَقُولُ: «كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَجُلًا مَرْبُوعًا بَعِيدَ مَا بَيْنَ الْمَنْكِبَيْنِ، عَظِيمَ الْجُمَّةِ إِلَى شَحْمَةِ أُذُنَيْهِ الْيُسْرَى، عَلَيْهِ حُلَّةٌ حَمْرَاءُ، مَا رَأَيْتُ شَيْئًا قَطُّ أَحْسَنَ مِنْهُ»


বারা ইবনে আযিব (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিতঃ


তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মধ্যমাকৃতির ছিলেন। তার দুই কাঁধের মধ্যবর্তী অংশ ছিল তুলনামূলক প্রশস্ত। তার ঘন চুলগুলো কানের লতি পর্যন্ত লম্বা ছিল। তার দেহে লাল লুঙ্গি ও লাল চাদর শোভা পেত। আমি তার তুলনায় সুদর্শন কাউকে কখনো দেখিনি।” [৩]


ব্যাখ্যা : এ হাদীসে লাল চাদর ও লুঙ্গি পরিধান করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) পুরুষের জন্যে লাল রংয়ের কাপড় পরিধান করতে নিষেধ করেছেন। এ বিরোধ সমাধানে কেউ কেউ বলেন, উজ্জ্বল লাল পরিধান করতে নিষেধ করা হয়েছে। এখানে যে কাপড়দ্বয়ের কথা বলা হয়েছে, সেটা লাল ডোরাকাটা ছিল, উজ্জ্বল লাল বর্ণের ছিল না।


[৩] সহীহ বুখারী, হাদিস/৩৫৫১ সীহ মুসলিম, হাদিস/৬২১০; নাসাঈ, হাদিস/৫২৩২।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 

📌পরিচ্ছেদঃ

তাঁর দু’কাঁধের মধ্যবর্তী স্থান প্রশস্ত ছিল


حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلَانَ قَالَ: حَدَّثَنَا وَكِيعٌ قَالَ: حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ قَالَ [ص: 31] : «مَا رَأَيْتُ مِنْ ذِي لِمَّةٍ فِي حُلَّةٍ حَمْرَاءَ أَحْسَنَ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ، لَهُ شَعْرٌ يَضْرِبُ مَنْكِبَيْهِ، بَعِيدُ مَا بَيْنَ الْمَنْكِبَيْنِ، لَمْ يَكُنْ بِالْقَصِيرِ وَلَا بِالطَّوِيلِ»


বারা ইবনে আযিব (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিতঃ


তিনি বলেন, আমি কাঁধ পর্যন্ত লম্বা চুলবিশিষ্ট লাল চাদর ও লাল লুঙ্গি পরিহিত অবস্থায় রাসুলুল্লাহ (ﷺ) এর চেয়ে সুদর্শন কাউকে দেখিনি। তাঁর কেশগুচ্ছ ছিল কাঁধ বরাবর। তাঁর দু’কাঁধের মধ্যবর্তী স্থান অন্যদের তুলনায় কিছুটা প্রশস্ত ছিল তিনি অধিক খাটো বা অধিক দীর্ঘাকৃতির ছিলেন না।" [৪]


ব্যাখ্যাঃ ৩ নং হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর মাথার চুল কানের লতি পর্যন্ত দীর্ঘ ছিল। আর এ হাদীসে বলা হয়েছে, কাঁধ পর্যন্ত দীর্ঘ ছিল। উভয় বক্তব্যই ঠিক। কেননা, চুল সব সময় এক অবস্থায় থাকে না। কখনো কম হয়, কখনো বেশি হয়। আবার ইচ্ছাকৃতভাবেও বড় ছোট রাখা হয়। চুলের ভিন্ন ভিন্ন অবস্থার ব্যাখ্যা এভাবে করা যায় যে, তিনি সর্বোচ্চ কাধ পর্যন্ত লম্বা করেছেন, যাকে জিম্মা’ বলা হয়। আর সর্বাধিক ছোট করার পরিমান ছিল কানের লতি, যাকে 'ওয়াফরা' বলে। আর এর মাঝামাঝি অবস্থানকে লিম্মা’ বলা হয়।


[৪] সহীহ মুসলিম, হাদিস/৬২১১; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস/১৮৫৮১।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 

📌পরিচ্ছেদঃ

তাঁর হস্তদ্বয় ও পদদ্বয়ের তালু এবং আঙ্গুলসমূহ ছিল মাংসল


حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ قَالَ: حَدَّثَنَا الْمَسْعُودِيُّ، عَنْ عُثْمَانَ بْنِ مُسْلِمِ بْنِ هُرْمُزَ، عَنْ نَافِعِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ قَالَ: «لَمْ يَكُنِ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالطَّوِيلِ وَلَا بِالْقَصِيرِ، شَثْنُ الْكَفَّيْنِ وَالْقَدَمَيْنِ، ضَخْمُ الرَّأْسِ، ضَخْمُ الْكَرَادِيسِ، طَوِيلُ الْمَسْرُبَةِ، إِذَا مَشَى تَكَفَّأَ تَكَفُّؤًا كَأَنَّمَا يَنْحَطُّ مِنْ صَبَبٍ، لَمْ أَرَ قَبْلَهُ وَلَا بَعْدَهُ مِثْلَهُ [ص: 32] ، صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ» .


আলী ইবনে আবু তালিব (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিতঃ


তিনি বলেন, নবী (ﷺ) বেশি দীর্ঘ কিংবা বেশি খাটো ছিলেন না। তার হস্তদ্বয় ও পদদ্বয়ের তালু এবং আঙ্গুলসমূহ ছিল মাংসল। তাঁর মাথা ছিল কিছুটা বড় এবং হাত-পায়ের জোড়াগুলো ছিল মোটা। বুক হতে নাভি পর্যন্ত পশমের একটি সরু রেখা প্রলম্বিত ছিল। যখন পথ চলতেন মনে হতো যেন কোন উঁচু স্থান হতে নিচে অবতরণ করছেন। বর্ণনাকারী বলেন, তার পূর্বে কিংবা পরে আমি তার মতো (অনুপম আকর্ষণীয়) আর কাউকে দেখিনি।


[৫] মুসনাদে আহমাদ, হাদিস/৭৪৬; মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদিস/৪১৯৪; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদিস/৬৩১১।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 

📌পরিচ্ছেদঃ

তিনি ছিলেন প্রশস্ত মুখ, ডাগর চক্ষু এবং সরু গোড়ালি বিশিষ্ট


حَدَّثَنَا أَبُو مُوسَى مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ قَالَ: سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ سَمُرَةَ يَقُولُ: «كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ضَلِيعَ الْفَمِ، أَشْكَلَ الْعَيْنِ، مَنْهُوسَ الْعَقِبِ» [ص: 39] . قَالَ شُعْبَةُ: قُلْتُ لِسِمَاكٍ: مَا ضَلِيعُ الْفَمِ؟ قَالَ: عَظِيمُ الْفَمِ، قُلْتُ: مَا أَشْكَلُ الْعَيْنِ؟ قَالَ: طَوِيلُ شِقِّ الْعَيْنِ، قُلْتُ: مَا مَنْهُوسُ الْعَقِبِ؟ قَالَ: قَلِيلُ لَحْمِ الْعَقِبِ


জাবির ইবনে সামুরা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিতঃ


তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর মুখ প্রশস্ত ছিল। চোখের শুভ্রতার মাঝে কিছুটা লালিমা ছিল। পায়ের গোড়ালি স্বল্প মাংসল ছিল। শু'বা (رحمة الله) বলেন, আমি সিমাক (رحمة الله)-কে বললাম, (যলীউল ফাম) কী? তিনি বললেন, বড় মুখগহ্বর বিশিষ্ট। আমি আবার বললাম, (আশকালুল ‘আইন) কী? তিনি বললেন, ডাগর চক্ষুবিশিষ্ট। আমি বললাম, এ (মানুহূসুল ‘আক্কিব) কী? তিনি বললেন, সরু গোড়ালি বিশিষ্ট । [৬]


[৬] সহীহ মুসলিম, হাদিস/৬২১৬; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস/২১০২৪ সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদিস/৬২৮৯; জামেউস সগীর, হাদিস/৮৯৫২: মিশকাত, হাদিস/৫৭৮৪।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 

📌পরিচ্ছেদঃ

তিনি ছিলেন পূর্ণিমার চাঁদের চেয়েও চমৎকার


حَدَّثَنَا هَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْثَرُ بْنُ الْقَاسِمِ، عَنْ أَشْعَثَ، يَعْنِي ابْنَ سَوَّارٍ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ قَالَ: «رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي لَيْلَةٍ إِضْحِيَانٍ، وَعَلَيْهِ حُلَّةٌ حَمْرَاءُ، فَجَعَلْتُ أَنْظُرُ إِلَيْهِ وَإِلَى الْقَمَرِ، فَلَهُوَ عِنْدِي أَحْسَنُ مِنَ الْقَمَرِ»


জাবির ইবনে সামুরা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিতঃ


তিনি বলেন, আমি একবার পূর্ণিমা রাত্রির স্নিগ্ধ আলোতে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) -কে লাল চাদর ও লুঙ্গি পরিহিত অবস্থায় দেখলাম। তখন আমি একবার তার দিকে ও একবার চাঁদের দিকে তাকাতে থাকলাম। মনে হলো তিনি আমার কাছে পূর্ণিমার চাঁদের চেয়ে অধিকতর চমৎকার। [৭]


[৭] মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদিস/৭৩৮৩; মারেফাতুস সাহাবা, হাদিস/১৪৩৫; মিশকাত, হাদিস/৫৭৯৪।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 

حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ وَكِيعٍ، قَالَ حَدَّثَنَا حُمَيْدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الرُّؤَاسِيُّ، عَنْ زُهَيْرٍ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ قَالَ: سَأَلَ رَجُلٌ الْبَرَاءَ بْنَ عَازِبٍ: أَكَانَ وَجْهُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِثْلَ السَّيْفِ؟ قَالَ: «لَا، بَلْ مِثْلَ الْقَمَرِ»


আবু ইসহাক (رحمة الله) থেকে বর্ণিতঃ


তিনি বলেন, একবার বারা ইবনে আযিব (رضي الله عنه)-কে এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর চেহারা কি তরবারির ন্যায় ছিল? তিনি বললেন, না; বরং তা ছিল চাঁদের মতো। [৮]


ব্যাখ্যাঃ তরবারির সাথে সাদৃশ্য করা এ জন্য ক্রটিযুক্ত ছিল যে, এতে চেহারা অধিক লম্বা হওয়ার ধারণা সৃষ্টি হতে পারে। তাছাড়া তরবারির চমকে শুভ্রতা বেশি থাকে, কিন্তু উজ্জ্বলতা থাকে না। তাই বারা ইবনে আযিব (رضي الله عنه) তরবারির কথা অস্বীকার করে চাঁদের সাথে তুলনা করেছেন।


[৮] সহীহ বুখারী, হাদিস/৩৫৫২; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস/১৮৫০১; দারেমী, হাদিস/৬৪; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদিস/৬২৮৭।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 

📌পরিচ্ছেদঃ

তাঁর শুভ্রতা ছিল রৌপ্যের ন্যায়


حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ الْمَصَاحِفِيُّ سُلَيْمَانُ بْنُ سَلْمٍ قَالَ: حَدَّثَنَا النَّضْرُ بْنُ شُمَيْلٍ، عَنْ صَالِحِ بْنِ أَبِي الْأَخْضَرِ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: «كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَبْيَضَ كَأَنَّمَا صِيغَ مِنْ فِضَّةٍ، رَجِلَ الشَّعْرِ»


আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিতঃ


তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ও শুভ্রতায় ছিলেন রৌপ্যের ন্যায় এবং তার চুলগুলো ছিল কিছুটা কোকড়ানো। [৯]


ব্যাখ্যা : আনাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত এ অধ্যায়ের সর্বপ্রথম হাদীসে উল্লেখিত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর গায়ের রং নিরেট সাদা ছিল না। তাই এ হাদীসে তাকে রূপার সাথে তুলনা করা হয়েছে। তিনি লাল মিশ্রিত সাদা ছিলেন এবং উজ্জ্বল সুন্দর ছিলেন।


[৯] জামেউস সগীর, হাদিস/৮৭৪৮; সিলসিলা সহীহাহ, হাদিস/২০৫৩।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 

📌পরিচ্ছেদঃ

তিনি ছিলেন ইবরাহীম (عليه السلام) এর সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ


১০

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ قَالَ: أَخْبَرَنِي اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «عُرِضَ عَلَيَّ الْأَنْبِيَاءُ، فَإِذَا مُوسَى عَلَيْهِ السَّلَامُ ضَرْبٌ مِنَ الرِّجَالِ، كَأَنَّهُ مِنْ رِجَالِ شَنُوءَةَ، وَرَأَيْتُ عِيسَى ابْنَ مَرْيَمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ، فَإِذَا أَقْرَبُ مَنْ رَأَيْتُ بِهِ شَبَهًا عُرْوَةُ بْنُ مَسْعُودٍ، وَرَأَيْتُ إِبْرَاهِيمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ، فَإِذَا أَقْرَبُ مَنْ رَأَيْتُ بِهِ شَبَهًا صَاحِبُكُمْ، يَعْنِي نَفْسَهُ، وَرَأَيْتُ جِبْرِيلَ عَلَيْهِ السَّلَامُ فَإِذَا أَقْرَبُ مَنْ رَأَيْتُ بِهِ شَبَهًا دِحْيَةُ»


জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিতঃ


তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, আমার কাছে নবীগণকে পেশ করা হয়। মূসা (عليه السلام) এর মধ্যে বিভিন্ন লোকের সাদৃশ্য বিদ্ধমান ছিল। তিনি যেন শানুয়াহ গোত্রের লোক। আমি ঈসা ইবনে মারইয়াম (عليه السلام)-কে উরওয়া ইবনে মাসউদের সাদৃশ্যপূর্ণ দেখতে পাই। তারপর আমি ইবরাহীম (عليه السلام)-কে দেখতে পাই এবং তাকে পাই তোমাদের সঙ্গীর সাথে সর্বাধিক সাদৃশ্যপূর্ণ। তোমাদের সঙ্গী বলে তিনি নিজেকে বুঝিয়েছেন। আর আমি জিবরাঈল (عليه السلام)-কে দিহইয়া (কালবী) এর সাথে সদৃশ্যপূর্ণ দেখতে পাই। [১০]


[১০] সহীহ মুসলিম, হাদিস/৪৪১; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস/১৪৬২৯; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদিস/৬২৩২; জামেউস সগীর, হাদিস/৭৪৫১ মিশকাত, হাদিস/৫৭১৪ জামেউস সগীর, হাদিস/৮৭৫১; মিশকাত, হাদিস/৫৭৮৫।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 

📌পরিচ্ছেদঃ

তিনি ছিলেন শুভ্রকায় ও লাবণ্যময়


১১

حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ وَكِيعٍ ، وَمُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ ، الْمَعْنَى وَاحِدٌ ، قَالا : أَخْبَرَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ ، عَنْ سَعِيدٍ الْجُرَيْرِيِّ ، قَالَ : سَمِعْتُ أَبَا الطُّفَيْلِ , يَقُولُ : " رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَمَا بَقِيَ عَلَى وَجْهِ الأَرْضِ أَحَدٌ رَآهُ غَيْرِي " ، قُلْتُ : صِفْهُ لِي ، قَالَ : " كَانَ أَبْيَضَ , مَلِيحًا , مُقَصَّدًا " .


আবু তুফায়েল (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিতঃ


তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ঐ কে দেখেছি- তবে তাকে যারা দেখেছেন তাদের মধ্যে আমি ছাড়া কেউ ভূপৃষ্ঠে বেঁচে নেই। (বর্ণনাকারী বললেন) আমি বললাম আপনি আমার কাছে তার বিবরণ পেশ করুন। তিনি বললেন, তিনি ছিলেন শুভ্রকায় ও লাবণ্যময় সুসামঞ্জস্যপূর্ণ। [১১]


[১১] সহীহ মুসলিম, হাদিস/৬২১৮; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস/২৩৮৪৮; আদাবুল মুফরাদ, হাদিস/৭৯০; শারহুস সুন্নাহ, হাদিস/৩৬৪৮; জামেউস সগীর, হাদিস/৮৭৫১; মিশকাত, হাদিস/৫৭৮৫।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

Top