পবিত্র হস্তের সুঘ্রাণ


নবী করীম (ﷺ) এর হস্ত মুবারকের বর্ণনায় হযরত জাবির ইবনে সামুরা (رضي الله عنه) এর হাদীসে আরে উল্লেখ করা হয়েছে, একদা নবী করীম (ﷺ) আমার গণ্ডদেশে স্বীয় হস্ত মুবারক সঞ্চালন করলেন। তাতে আমি এতে শিথিলতা এবং সৌগন্ধ অনুভব করলাম যেন হুজুর তার হাত খানা এই মাত্র আতরের শিশি থেকে বের করে এনেছেন। এ অবস্থায় যদি কেউ তার সাথে মুসাফাহা করতেন তাহলে সমস্ত দিন হাতের মধ্যে সেই সুবাস লেগে থাকতো। তিনি কখনো কোনো শিশুর মাথায় যদি স্নেহের হাত বুলিয়ে দিতেন, তাহলে ঐ শিশুটি অন্যান্য ছেলে মেয়েদের মধ্যে এক স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হয়ে যেতে।


কোন কোন হাদীসে বর্ণনা এসেছে, হুজুর আকরাম (ﷺ) এর পবিত্র স্বেদ থেকে গোলাপ ফুলের জন্ম হয়েছে। আরেক জায়গায় এরকম বর্ণনা এসেছে, হুজুর পাক (ﷺ) এরশাদ করেছেন, আমার ঘাম থেকে শবে মেরাজে সাদা ফুল অর্থাৎ চামেলী এবং লাল ফুল অর্থাৎ গোলাপের জন্ম হয়েছে। 

জিব্রাইল (عليه السلام) এর ঘাম থেকে জন্ম হয়েছে জরদ রঙের ফুল অর্থাৎ চাঁপা ফুল। এতােছিন্ন এ সম্পর্কে আরও বর্ণিত আছে, নবী করীম (ﷺ) এরশাদ করেছেন, মেরাজের ভ্রমণ শেষে আমি যখন পৃথিবীতে পদার্পণ করি, তখন আমার ঘামের একটি ফোঁটা মাটিতে পড়ে গোলাপের সৃষ্টি হয়। কেউ যদি আমার দেহের ঘ্রাণ গ্রহণ করতে চায়, তবে সে যেনাে গোলাপের ঘ্রাণ গ্রহণ করে। আরেক বর্ণনায় আছে, তিনি ইরশাদ করে, আমার ঘামের একটি ফোঁটা যখন মাটিতে পড়ে, তখন মৃত্তিকা মাতাল হয়ে উঠলাে এবং গোলাপ ফুল জন্ম দিলাে। তবে উপরােক্ত হাদীস সমূহ সম্পর্কে মুহাদ্দিসগণের স্ব স্ব পরিভাষায় দস্তুর মতো বিশ্লেষণধর্মী বক্তব্য রেখেছেন।


মাওয়াহেবে লাদুন্নিয়া নামক গ্রন্থে আবুল ফারাহ নাহরওয়ানী থেকে বর্ণিত আছে, উপরােক্ত হাদীস সমূহে যা যা বর্ণনা করা হয়েছে, তা নবী মুখতার (ﷺ) এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্যের সাগর থেকে এক বিন্দু মাত্র। পরওয়ারদিগার আলম তার প্রিয় হাবীব (ﷺ) কে যে সীমাহীন বৈশিষ্ট্য দ্বারা সম্মানিত করেছেন তার তুলনায় উপরোক্ত বর্ণনা নিতান্তই অপ্রতুল। ঐ সমস্ত বর্ণনা সম্পর্কে মুহাদ্দিসগণের যা বিচার বিশ্লেষণ করেছেন তা তাদের তৈরি পরিভাষার আলোকে সনদের বিশুদ্ধতা সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। তারা এ দৃষ্টিকোণ থেকে অবশ্যই আলােচনা করেন নি যে, নবী করীম (ﷺ) থেকে এরপর সংঘটিত হওয়া বা সুদূর পরাহত। ওয়াল্লাহু আ'লামু।


➥[কিতাবঃ মাদারেজুন নবুওয়াত। মূলঃ ইমাম আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী] 

© | সেনানী এপ্স |

Top